বজ্জাত_বউ
লেখিকা #বিলকিস
পর্ব ৩৩
পরশ : এই মেয়েটা এখানে কি করে আসলো। তারমানে আমি যাকে বিয়ে। হায় খোদা শেষমেশ আমার কপালে জুটলো( বলে ওয়াশ রুমে গিয়ে এক বালতি পানি এনে অথৈর মুখে ডেলে দিলো)
অথৈ: আহ্ এটা কি করলেন। ( জ্ঞান ফিরে পরশের দিকে তাকিয়ে বললো)
পরশ: পানি ডাললাম।
অথৈ: এভাবে কেউ পানি ঢালে। পুরা ভেজে দিয়েছে। আমার বুঝে শীত করে না। আপনি মানুষ না কি। ইশ পুরা ভেজে গিয়েছি।
পরশ: আমি একটা রক্ত মাংস গড়া মানুষ। ওঠো
অথৈ: উঠেছি ( মেজে থেকে উঠে বললো)
পরশ: কেনো করলে আমাকে বিয়ে।
অথৈ: আপনাকে বিয়ে আমি করিনি। আমাকে দিয়ে বিয়ে করিয়েছে। তাছাড়া আমি যদি আগে জানতাম আপনার সাথে বিয়ে জীবনের বিয়ে করতাম না। জেনে শুনে কেউকি সাপের লেজের পিছনে পা দেই।
পরশ: সাপ কে ( ধমক সুরে)
অথৈ: আ আ আপ আপনি। তাও বিষক্ত সাপ।
পরশ: এই মেয়ে ইচ্ছে করছে তো তোমাকে(চোখ রাঙিয়ে বললো)
অথৈ: একদম রাগ রাঙাবেন না
। কি করবেন আপনি আমি ভালো করে জানি আপনি কচু করতে পারবেন। এই শুনুন আমি ইচ্ছেবিয়ে টা করেনি আমি তো আপনার টাকা টা ফেরত দেওয়ার জন্য বিয়ে করেছি এখন তো দেখছি যার জন্য বিয়ে করলাম তার কাছে এসে ফেসেছি।
পরশ: আম্মু কি আর মেয়ে খুজে পেলো এই মেয়েকে কেনো আমার জন্য ( রাগী গলায় বললো) এই মেয়ে বের হও আমার রুম থেকে।
অথৈ: না না আমি বের হবো না। আর কেনো বের হবে এটা আমারো ঘর।
পরশ : বের হবে না ( বলে অথৈর কাছে এগিয়ে গেলো)
অথৈ: না। এমন ভাবে আসছে মনে হচ্ছে আমাকে পানি দিয়ে গিলে খাবে।
পরশ: চলো ( বলে হাতটা চেপে ধরলো)
নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”
অথৈ: হাত ধরছেন কেনো। ছারুন বলছি। আমি যাবো না। মামনি দিশা আপি আমাকে বাঁচাও। আহ্ হাতটা ছারুন আমার হাতে হার ভেঙে গেলো। মামনি দিশা এ্যা এ্যা (বলে পরশের হাতে একটা কামুর দিলো)
পরশ: আহ্ ( হাত ছেড়ে দিয়ে বললো) তোমার সাহস হহয় কি করে আমার হাতে ককামুড় দেওয়ার। চলো ( বলে আবার হাতটা ধরেটানতে টানতে ঘরে বাইরে রেখে ভেতর থেকে দরজায় বন্ধ করে দিলো)
অথৈ: আরে আরে দরজায় বন্ধ করছেন কেনো( বলে দরজায় উপর হাত দিয়ে ধাক্কালো) কি ভেবেছেন আপনি এ্যা। আমি আপনাকে ভয় পাবো মোটোই না এই অথৈ কাউকে ভয় পাই না।
পরশ: অসভ্য মেয়ে। কামুড় দিয়ে সবগুলো দাঁত বিধে দিয়েছে। মালম কোথায় রেখেছি ও শিট মালম টা শেষ হয়ে গেছে। ইচ্ছে করছে সবগুলো দাঁত ভেঙে দেই(বলে বিছানাতে শুয়ে পড়লো।)
অথৈ: কি শীতরে বাবা। তারপরও ভেজা কাপুর। মনে হচ্ছে বরফ মতো জমে যাচ্ছে। আমাকে বাইরে বের করে দেওয়া দেখে নেবো তোকে। আমি কালকে তোকে ডির্ভোজ দিয়ে চলো যাবে। ( বলে একটা চেয়ারে বসলো) একটা বাচ্চা মেয়ে সাথে কেউ এমন করে। করে করে ওই পঁচা কুমড়ো আঙ্কেলটার মতো মানুষ না না মানুষ না ডাইনোসোর করে। আচ্ছা উপর আল্লাহ তুমি কেনো এটা করলে বলো। ও বুঝতে পেয়েছি আমি বলেছিলাম যে আমার মুখ দেখে ওনাকে প্রতিদিন উঠতে হবে এর জন্য আচ্ছা আমি তো কতো অভিসাপ দেই কউ কাজে লাগে না ওনাকে দেওয়া অভিসাপ টা কেনো কাজে লাগলো ( বলতে বলতে চেয়ার পর ঘুমিয়ে পড়লো)
সকালে
দিশা: অথৈ এই অথৈ
অথৈ: please আর একটু ঘুমাবো।
দিশা: অথৈ আমি দিশা বলছি।
অথৈ: ও আপু তুমি ( চোখ খুলে বললো) তুমি এখানে এভাবে আর তোমার শাড়িটাও তো ভেজা
অথৈ: আমাকে রাতে বের দিয়েছে। দেখে আমার ঠান্ডা লেগেগিছে। হাঁচি
দিশা: ইস উঠো আমি দেখছি ( বলে পরশের রুমে সামনে গেলো) ভাইয়া এই ভাইয়া দরজায় খুল বলছি ভাইয়া।
পরশ: ওহ্ ডাকায় সময় পেলো না। খুলছি ( বলে বিছানা থেকে ওঠে দরজায় খুলে দিলো) কি হয়ে ডাকছিস কেনো
দিশা: ওকে রুম থেকে বের করে দিয়েছিলি কেনো।
পরশ: আমার ইচ্ছা তাই ( বলে রুম থেকে বের হয়ে গেলো)
দিশা: অথৈ তুমি এসো চেন্জ করে নেবে। এসো যাও ওয়াশ রুম থেকে সাওয়ার করে এসো। আর এই নাও শাড়ি ( বলে একটা শাড়ি বের করে দিলো)
অথৈ: আপু আমি তো শাড়ি পড়তে পারি না।
দিশা: ও ঠিক আছে তুমি ফ্রেস হয়ে এসো আমি তোমাকে শাড়ি পরিয়ে দিচ্ছি।
অথৈ: ঠিক আছে( বলে ওয়াশ রুমে চলে গেলো। একটু পর ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে আসলো)
দিশা: এসেছো ( বলে অথৈ কে নিজের কাছে এনে শাড়ি পরিয়ে দিলো আর হালকা সাজ করিয়ে দিলো) দেখো কেমন লাগছে নিজেকে ( ড্রেসিং টেবিলে সামনে নিয়ে গিয়ে বললো)
অথৈ: বাহ্ আমাকে তো বেশ সুন্দর লাগছে( মনে মনে বললো)
দিশা: চলো এবার নিচে যাই। ( বলে অথৈকে নিচে নিয়ে গেলো)
পরশের আম্মু: এসো মা আমার কাছে এসো। বাহ্ খুব সুন্দর লাগছে তো ( বলে কপালে একটা চুমো খেলো) এখানে বসো মা ( বলে সোফার বসিয়ে দিলো)
পাড়াপরশিরা: আসবো
দিশা: আরে চাচী মা আপনারা আসুন।
পারাপশড়িরা: আসলাম তোমাদের নতুন বউ কে দেখতে। এই বুঝি নতুন বউ। দেখি তো মুখটা ( বলে অথৈর মুখটা দেখলো) বাহ্ বেশ সুন্দর তো। আসমা ভাবী আপনার কপালটা বেশ ভালো এক ছেলে দিয়ে দু দুটো বউমা দেখছেন। তাই দুটো বেশ সুন্দর বটে। আগে টা মতো দেখতে পায়।
অথৈ: এক ছেলে দু বউ মানে। কি বলছে এরা সব কিছুতো বুঝছি না। আমি ছবি তে দেখছিলাম দুই বধু এক স্বামী। আরে কি ভাবছি আব্বু আম্মু কখনো আমাকে আগে বিয়ে করা ছেলের সাথে বিয়ে দেবে না। এরা আমার সাথে মজা করছে ( মনে মনে)
পারাপরশিরা: তা যে বিয়ে করলো সে কোথায়।
দিশা: এইতো ভাইয়া নিচে নামছে।
পারাপরশিরা: কি পরশ তোমার তো দেখছি কপালটা বেশ ভালো। আজকাল কে পাই এতো সুন্দর বউ। তবে আগে বউটাও বেশ সুন্দর ছিলো। তোমার তো কপালে সাথে আমাদের ছেলেদের কপালটা ঘষতে হবে ( বলে হাসতে লাগলো)
পরশ: আপনারা কি এখানে এই কথা বলতে এসেছিলেন। বলা হয়ে গেছে এখন আসতে পারেন। দরজায় খুলাই আছে আসুন।
পড়াপরশি: এই তো চল। এভাবে অপমান না করলে পারতে পরশ। আসি আসমা ভাবি ( বলে চলে গেলো)
পরশ: আম্মু আমি আসছি
পরশের আম্মু: কোথায় যাচ্ছি তুই। আর গতো রাতের বা কোথায় গিয়েছিলি।
পরশ: তোমাদের ইচ্ছা ছিলো আমি বিয়ে করি করেছি। এরপর আমি কি করবো কোথায় যাবো এটা আমার ব্যাপার। ( বলে চলে গেলো)
অথৈ: দিশা আপু ওনারা কেনো বললো আগে বউ। ওনি কি আগে বিয়ে করেছিলো।না আমার সাথে সবাই মজা করলো।
পরশের আম্মু: কেনো মা তোমাকে জানাই নি। আমরা তো সবটা জানিয়ে ছিলাম যে আমার ছেলে এর আগে একটা বিয়ে করেছিলো।
অথৈ: এ্য( বলতে অথৈর চোখের কোনার পানি চলে আসলো) মামনি আমি আসছি ( বলে দৌড়ে দিয়ে ছাদে চলে আসলো) আব্বু আম্মু কেনো করলো এটা আমার সাথে। আগে বিয়ে করা ছেলের সাথে আমাকে বিয়ে দিলো। আমি এতো বুঝা হয়েগিয়েছিলাম তোমাদের আম্মু ( বলে কাঁদতে লাগলো) আমি এখানে এক মুহুর্তের জন্য এখানে থাকবো। আমি চলে যাবে ( বলে পিছন ফিরে তাকালো)
পরশের আম্মু: অথৈ মা অথৈ
অথৈ: আমি যাবো না ( বলে ছাদের চিলেকোঠায় রুমে গিয়ে বসলো)
পরশের আম্মু: অথৈ মা অথৈ মা। না ছাদে নেই তো কোথায় গেলো মেয়েটা।( বলে ছাদ থেকে চলে গেলো)
অথৈ: কি ময়লা। কতোদিন পরিষ্কার করে না। মামনি চলে গেছে আমিও যাই ( বলে উঠতে যাবে তখনি হাতের সাথে একটা পুরাতন আলমাতে ধাক্কা লাগতে ডায়রিটা অথৈর সামনে পড়লো) কি এটা মনে হচ্ছে একটা ডায়রি। দেখতো ( বলে হতে তুলে নিলো) ইশ কতো ময়লা জমেছে ডায়রিতে। কতো দিন আগে কর ডায়রি কে জানে ( বলে ডায়রিটা খুলতেই প্রথম পেজটা চোখ বুলাতেই অথৈ শকড)……………………(চলবে)