বজ্জাত_বউ
লেখিকা #বিলকিস
পর্ব ৪৩
অথৈ: আপনি
রাফান : হ্যা আমি লাল পরি
অথৈ: আপনি এখানে কেনো আর আমার পথ আটকালেন কেনো।
রাফান : তোমার কথা আছে লাল পরি।
অথৈ: আপনার সাথে আমার কোনো কথা নেই। ( রাগী লুকে)
রাফান: তোমার না কথা না থাকতে পারে কিন্তু আমার আছে।
অথৈ: পথ ছাড়ুন আমি বাড়ি যাবে।
রাফান: বাড়ি যাবে তবে আমার কথা শুনার পর।
রিয়া: অথৈ তুই
অথৈ: আমি কোনো কথা শুনবো না চল রিয়া ( বলে সামনে দিকে পা বাড়াতে অথৈ হাতটা চেপে ধরলো রাফান)
রাফান: আমার কথা না শুনে তুমি এখান থেকে এক পা যেতে পারবেনা লাল পরি
অথৈ: হাত ছাড়ুন বলছি
রাফান: ছাড়ার জন্য হাতটা ধরিনি।
অথৈ: হাত ছাড়ুন না হলে কিন্তু
রাফান: ছাড়বো না কি করবে তুমি ( বলতে অথৈ রাফানের গালে ঠাস করে একটা থাপ্পার দিলো)
অথৈ: চল রিয়া ( বলে সামনে দিকে হাটতে লাগলো হঠ্যৎ পেছন থেকে আবার হাতটা চেপে ধরলো রাফান)
রাফান: বলেছি না আমি না চাইলে তুমি এখান থেকে এক পা যেতে পারবেনা।
অথৈ: আপনার দেখছি একটা থাপ্পারে কিছু হয়নি( বলে অথৈ আর একটা থাপ্পার দেওয়ার জন্য হাত তুলতে রাফান হাতটা চেপে ধরলো বললো)
রাফান: এই লাল পরি কি ভাবো নিজেকে। তোমার ধারনা নেই এই রাফান চোধুরী সাথে ঘুড়া জন্য কতো মেয়ে পেছনে লেগেছে কিন্তু রাফান চোধুরী কাউকে পাত্তা দেই নি। প্রথম যেদিন তোমাকে দেখিছিলাম সেদিন তোমাকে আমার ভালো লেগেছিলো। আড়াল থেকে তোমাকে রোজ দেখি তুমি ভার্সিটিতে না আসলে তোমার এক পলক দেখার নেওয়ার জন্য তোমার বাড়ি সামনে দাড়িয়ে থাকি। তোমার জন্য gift পাঠাই।
অথৈ: ছাড়ুন বলছি আমি কিন্তু চিৎকার করবো।
রাফান : চিৎকার করবে করো তোমার চিৎকারে কেউ আসবে না। আর এই ভার্সিটি তে কারো সাহস নেই আমার উপরে কথা বলা। তুমি আমাকে থাপ্পার মেরেছো না। আমাকে সবার সামনে আপমান করেছো না এই রাফান চোধুরীকে আপমান করেছো এই শাস্তি তো তোমাকে পেতে হবে লাল পরি। তুমি এতোদিন আমার ভালোমানুষি দেখছো আজ দেখবো রাফান চোধুরী কতোটা খারাপ। আজ তোমাকে এমন আপমান করবো না তুমি কারো কাছে মুখ দেকাতে পারবেনা। চলো
অথৈ: আমি যাবো না বাঁচান আমাকে এই শয়তান টা আমাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে please বাঁচান। রিয়া আমাকে বাঁচা ছাড় বলছি ছাড়।
রিয়া: অথৈ কে ছেড়ে দিন ছেড়ে দিন
রাফান: এই মেয়ে নিজের ভালো চাওতো এখান থেকে চলে যাও।
অথৈ: না রিয়া তুই যাবি ছাড় আমাকে ( বলে রাফানে হাত কামুড় বসিয়ে দিলো অথৈ)
রাফান আঃ ( হাত ছেড়ে দিয়ে আবার অথৈর হাতটা চেপে ধরলো) চলো বলছি চলো
অথৈ: ছাড়ুন বলছি ( বলে অজোড়ে কাঁদতে লাগলো। আশে পাশে সবাই তাকিয়ে দেখছিলো কিন্তু কেউ সাহ্স্য জন্য এগিয়ে আসলো না। রাফান অথৈ ভার্সিটি ৩য় তালায় নিয়ে গেলো)
রিয়া: অথৈ ( বলে নিচে বসে পড়লো) কে বাঁচাবে অথৈ কে। ( বলতে রিয়া চোখ পড়লো অথৈর ব্যাগের উপর) ওটাতো অথৈর ব্যাগ। ও ব্যাগে ফোন আছে ওর বরকে ফোন করলে হবে ( বলে ব্যাগটা তুলে ব্যাগে থেকে ফোনটা বের করলো) কিযেনো নাম দিয়ে সেভ করা হ্যা মনে পরেছে পঁচা কুমড়ো ( বলে ফোন থেকে নাম্বার বের করে কল দিলো)
পরশ: আসলাম সাহেব আমি ল্যাপটপ টা চালু করুন।
আসলাম সাহেব: জি স্যার ( বলে ল্যাপটপ চালু করলো)
রিয়া: কি ব্যাপার ওনি ফোন ধরছে না কেনো। ( বলে আবার কল দিলো)
পরশ: দুর ( বলে ফোনটা কেটে দিলো)
রিয়া: ফোনটা কেটে দিচ্ছে কেনো ভাইয়া please ফোনটা ধরুন না হলে যে অনেক বড় সর্বনাশ হয়ে যাবে। ( বলে আবার কল দিলো)
আসলাম সাহেব: স্যার এতো বার ফোন বাজছে একবার ধরে কথা বলুন দরকারি কিছু হতে পারে।
পরশ: ok. ( ফোন টা রিসিভ করে বললো) অথৈ আমি একটা দরকারি ফাইল নিয়ে ব্যাস্তে আছি কেনো ফোন দিয়ে ডিস্টার্ব করছো ( রাগী গলায়)
রিয়া: ভাইয়া আমি অথৈ না রিয়া। ভাইয়া please আপনি এখনি একবার ভার্সিটিতে আসুন।
পরশ: ভার্সিটিতে আসবো মানে কি হয়েছে আর অথৈ বা কোথায়।
রিয়া: ভাইয়া অনেক বড় সর্বনাশ হতে চলেছে আপনি যতে তাড়াতাড়ি সম্ভাব আসুন। ( বলে ফোনটা কেটে দিলো)
পরশ: আসলাম সাহেব আপনি আফিস দেখুন আমি আসছি ( বলে পরশ আফিস থেকে বের হয়ে গাড়িতে বসে চালাতে শুরু করলো)
আসলাম সাহেব: স্যার এভাবে চলে গেলো কেনো অথৈর মায়ে কিছু হয়নিতো
রাফান: চিৎকার করো আরো জোড়ে জোড়ে চিৎকার করো তোমার চিৎকার শুধু দায়ালগুলো শুনবে আর কেউ শুনবে না। ( বলে অথৈর দিকে আগাতে লাগলো)
অথৈ: আমার দিকে আসবেন না কিন্তু আর এক পা এগাবেন না বলছি ( বলে কাঁদতে লাগলো)
রাফান: আরে লাল পরি তুমি এতো কেদোনা তোমার চোখের কাজলজে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কেদো না তুমি কাঁদলে আমার কষ্ট হয়। ( বলে অথৈর খুব কাছে চলে আসলো)
অথৈ: হে আল্লাহ তুমি আমাকে সাহা্য্য করো আল্লাহ সাহায্য করো ( বলে চোখ বন্ধ করে ফেললো)
রাফান: ইশ কেদে কি করেছে দেখ ( বলে হাসতে লাগলো)
অথৈ: পঁচা কুমড়ো আপনি কোথায়। ওরা আমাকে ( বলে চোখ বেয়ে অজোড়ে পানি পড়তে লাগলো) পঁচা কুমড়ো বাঁচান আমাকে এই শয়তানটার হাত থেকে হে আল্লাহ তুমি আমাকে বাঁচাও। ( বলতে রাফান অথৈর ওড়নাটা হাত দিয়ে টেনে ফেলে দিলো) বাঁচান আমাকে বাঁচান( চোখ বন্ধ করে বললো)
রাফান: দেখ দেখ তোরা লালপরি এই লালপরি ( বলে অথৈর দিকে হাত বাড়াতে কেউ একজন এসে রাফানকে ঠাস করে একটা থাপ্পার মারলো।
রাফান: তুমি
পরশ: হ্যা আমি মিস্টার রাফান চোধুরী।
অথৈ: পঁচা কুমড়ো আপনি ( চোখ খুলে বললো) পঁচা কুমড়ো আপনি এসেছেন ( বলে পরশকে জড়িয়ে ধরলো আর কাঁদতে লাগলো)
পরশ: অথৈ অথৈ আমি এসেগেছি তোমার কিছু হবে না। তোর সাহস হয় কি করে ওর গায়ে হাত দেওয়া ( বলে আবার রাফানকে থাপ্পার মাড়লো)
অথৈ: মারো ওকে ও আমার সাথে বাজে ব্যাবহার করেছে।
রাফান: পরশ ভাই
পরশ: চুপ একদম চুপ তোর মুখে আমি ভাই শব্দ শুনতে চাইনা। ( বলে আবার থাপ্পার মড়লো)
রাফান: ভাই এই মেয়ে কে হয় তোমার।
পরশ: এই মেয়েটা নয় ভাবি বল। ও আমার wife .( বলে আবার মড়লো)
রাফান:ভাই আমার ভুল হয়ে গেছে আর কখনো অথৈ না ভাবির দিকে চোখ তুলে তাকাবো না।
পরশ: আফিসার এসেছন এই নিন আপরাধী ও আমার wife সাথে বাজে ব্যবহার করেছে।
পুলিশ আফিসার: এই ওকে নিয়ে যাও।
পরশ: তুই আমার খালাতো ভাই বলে তোকে পুলিশে দিলাম না হলে তো আমাকে চিনিস। নিয়ে যান।
পুলিশ আফিসার: চলো( বলে চলে গেলো)
পরশ: অথৈ চলো আমরা বাড়ি ফিরে যাই আর আজ থেকে কেউ তোমার সাথে বাজে ব্যবহার করবে না ( বলে অথৈকে নিয়ে বাড়ি চলে আসলো। বাড়িতে এসে পরশ আম্মু আর দিশাকে সবটা খুলে বললো। তারপর আম্মু আর দিশা মিলে অথৈকে সান্তনা দিয়ে অথৈকে ঘুম পাড়িয়ে দিলো।
রাত ১২ টা
অথৈ: আমাকে ছাড়ুন বলছি ছাড়ুন আমাকে( ঘুমের মধ্য বলতে লাগলো)
পরশ: অথৈ এই অথৈ কি বলছো তুমি
অথৈ: ছাড়ুন বলছি ( বলে চিৎকার দিয়ে ওঠলো)
পরশ: অথৈ চোখ খুলে দেখো এখানে কোউ নেই
অথৈ: ওরা আমাকে
পরশ: ওরা তোমাকে কিছু করবে না তুমি এখন বাড়িতে ( বলে অথৈকেজরিয়ে ধরলো) অথৈ চোখ খোলো অথৈ।
অথৈ: ওরা( চোখ খুলে বললো)
পরশ: ওরা নেই তুমি স্বপ্ন দেখছিলো। আমি তোমার মাথার হাত বুলিয়ে দিচ্ছে তুমি ঘুমাও।( বলে অথৈকে শুয়ে দিলো। অথৈ শুয়ে যাবে এমন সময় বুমি করতে লাগলো) অথৈ তুমি বমি করছো কেনো কি হয়েছে শরীর খারাপ করছে অথৈ।
অথৈ: আমি আসছি ( বলে ওয়াশরুমে চলে গেলো কিছু সময় ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আসতে পরশ বললো)
পরশ: অথৈ ঠিক আছো তো তোমার বমি হচ্ছে কেনো নিশ্চয় সারাদিন তেমন কিছু খাওনি না তুমি বসো আমি খাবার নিয়ে আসছি।
অথৈ: না পঁচা কুমড়ো আমি ঠিক আসি আর কেনো খাবার এখন খাবো আমি একটু ঘুমাবো ( বলে শুয়ে পড়লো পরশ অথৈ মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে নিজেও অথৈ পাশে ঘুমিয়ে পড়লো)
সকালে………(চলবে)