
অনির কলমে আদ্রিয়ান পর্ব ৪
লেখিকা: অনিমা কোতয়াল
.
আদ্রিয়ান ভাই আমাদের বাড়ি থেকে যাওয়ার দু-দিন পরের কথা। বাইরে হালকা ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি পড়ছিল। স্বভাবতই আমি অলস। তাই বাইরের হালকা বৃষ্টি আর ঘরে ঠান্ডা পরিবেশ পেয়ে গায়ে একটা কাঁথা জড়িয়ে আরামে শুয়ে ছিলাম। চোখটা লেগেই এসেছিল এমন সময় মা এসে ডেকে তুলল আমাকে। সন্ধ্যায় নাকি আদ্রিয়ান ভাইদের বাড়িতে যাবে। প্রথমত আমার আরামের ঘুমটা আর দেওয়া হল না, তারওপর ঐ বাড়ি যেতে হবে। দুটো কারণেই বড্ড বেশি বিরক্ত হয়েছিলাম আমি। কিন্তু বাবার কড়া নির্দেশ ছিল, যেতে তো হবেই। তাই মনের ভেতর বিশাল এক ড্রাম বিরক্তি পুষেই তৈরী হয়ে নিয়েছিলাম। ঐ বাড়িতে পৌঁছাতে পৌঁছাতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। যাওয়ার পর পরই মামনী স্ন্যাকস দিয়েছিল আমাদের। কিছুটা খেয়ে বাবা আর মানিক আঙ্কেল গল্প করতে করতে বাইরে চলে গেলেন। মা আর মামনী মিলে ওনাদের প্রিয় আলাপে মন দিলেন। ইংরেজিতে যাকে বলে গসিপিং। আমিও কোলড্রিংকস খেতে খেতে জাবিন আর সারার সাথে বসে গল্প করছিলাম। কিন্তু ওদের দুজনেরই এক্সাম টার্ম চলছে তাই ওরাও বেশিক্ষণ গল্প করতে পারল না, পড়তে চলে গেল। আমি একাই একাই বসে বসে বোর হচ্ছিলাম আর ফোন স্ক্রল করছিলাম। তখন মামনী উঠে গিয়ে রান্নাঘর থেকে একটা ছোট্ট ট্রেতে করে কফি আর বিস্কুট নিয়ে এসে মাকে বলেছিলেন,
” ভাবি একটু বসো আমি আদ্রি কে এগুলো দিয়ে আসছি। ঘুম থেকে উঠে পড়েছে মনে হয়। বেশি দেরী করলে সাহেবের আবার মেজাজ বিগড়ে যাবে।”
সবটা ঠিকঠাক-ই ছিল। কিন্তু জানেনই তো, আমার মা চিরকালই আমাকে ফাঁসাতে ওস্তাদ। সেদিনও উনি সেটাই করেছিলেন। আন্টিকে বলে বসেছিলেন,
” তোমাকে যেতে হবেনা এখন আবার। অনিতো বসেই আছে। অনি? যাও ভাইয়াকে গিয়ে এটা দিয়ে এসো একটু।”
আমি অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলাম মায়ের দিকে। আমাকেই চোখে পড়ে ওনার? কিন্তু যথারীতি ভদ্রতার খাতিরে নিজেও আমার মায়ের কথার পূর্ণ সমর্থন করে ট্রে টা নিয়ে অসহায় খরগোশ ছানার মতো চলে গিয়েছিলাম সিংহের গুহায়। গুহার মুখ মানে তার রুমের দরজার সামনে গিয়ে হালকা করে উঁকি দিয়ে দেখেছিলাম সাহেব ঘুম থেকে উঠে পড়েছেন। কিন্তু দেখে মনে হচ্ছিল না যে বিছানা থেকে নেমেছেন। এলোমেলো সিল্কি চুলগুলো কপালের অনেকটা অংশ ঢেকে রেখেছে, চোখ গুলোও হালকা ফোলা, পরনে একটা এস কালার স্লিভলেস গেঞ্জি আর থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট। বিছানায় হেলান দিয়ে ল্যাপটপে কিছু করছিলেন হয়তো। আমি দ্বিধায় ছিলাম যে ভেতরে কী করে যাবো? এমনিতেই সেই কাঠবাগানের ঘটনার পর থেকে আমার সাথে কোন কথা বলছিলেন না। যদি রেগে যায়? বেশ অনেক্ষণ ভাবনা-চিন্তা করে হালকা গলা ঝেড়ে বলেছিলাম,
” আসবো?”
উনি আমার আওয়াজ পেয়ে একটু অবাক হয়ে দরজার দিকে তাকিয়েছিলেন। হয়তো ভাবেননি আমি আসবো। অবাক হয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে পরক্ষণেই আবার নিজের কাজে মন দিলেন। আমি স্বাভাবিকভাবেই চরম বিরক্ত হয়েছিলাম। অভদ্র লোক একটা। ভেতরে আসতে না বলে উল্টো ভাব দেখালো। ইউজলেস পিপল। তাই আমিও আর ভদ্রতা না দেখিয়ে তার অনুমতির অপেক্ষা না করে ভেতরে গিয়ে বলেছিলাম,
” আপনার কফি আর বিস্কিট। মামনী দিয়ে গেছে।”
কিন্তু আদ্রিয়ান ভাই এমন একটা ভাব করেছিলেন যেন আমার কথা শুনতেই পান নি। আমার মনটা নিজের অজান্তেই খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তবুও আমি কথা না বাড়িয়ে ট্রে টা রেখে চলেই যাচ্ছিলাম। কিন্তু আমি স্বভাবতই কৌতূহলী। আর একটা মানুষ হঠাৎ করেই আমার সাথে কথাবার্তা বন্ধ করে দিল আমার ব্যপারটা কেমন একটা লাগছিল। যদিও আমি চাইতাম উনি আমার থেকে দূরে দূরেই থাকুক। কিন্তু হঠাৎই এভাবে চুপ হয়ে যাওয়াটা মানতে পারছিলাম না। কেমন একটা ফাঁকা ফাঁকা লাগছিল। তাই কিছুক্ষণ মনের সাথে যুদ্ধ করে অনেকটা সাহস করে বলেছিলাম,
” আপনি কী আমার ওপর রেগে আছেন?”
প্রশ্নটা কোন প্যাঁচ ছাড়া সরল মনেই করেছিলাম আমি। তবে কথাটা শুনে ল্যাপটপের কিবোর্ডে চলতে থাকা ওনার হতের আঙুলগুলো থেমে গেল। চোখ তুলে আমার দিকে তাকিয়ে ওনার সেই বিখ্যাত আড়াআড়ি স্টাইলে ভ্রু বাঁকিয়ে বলেছিলেন,
” তোর ওপর রাগ করব কেন? হু আর ইউ?”
‘ হু আর ইউ?’ ওনার এই তিন শব্দের কথাটায় সামান্য কষ্ট হলেও পেয়েছিলাম সেদিন। সামান্য বললেও কষ্টটা সত্যিই সামান্য ছিল কি-না সেটা আমি নিজেও বুঝিনি। মাথা নিচু করে চলে এসেছিলাম ওখান থেকে। প্রচন্ড খারাপ লাগার মেঘ এসে ভীড় করেছিল মনে।
প্রায় দুটো সপ্তাহ কেটে গেল এরপর। আমার সবকিছুই স্বাভাবিকভাবেই চলছিল। মন খারাপ ভাবটাও কেটে গিয়েছিল। কারণ ব্যাপারটা আমার কাছে ঠিক ততটাও গুরুত্বপূর্ণ ছিলোনা। কিন্তু ওনার সাথে আমার কথাবার্তা আর হয় নি। তবে দু-বার বাড়ি এসেছিলেন ঠিকই। আর আমিও সেই আগের মতোই লুকিয়ে দেখতাম ওনাকে। যদিও তখন সেটা শুধুমাত্রই কৌতুহলবশত। লোকটাকে নিয়ে আমার কৌতূহলের শেষ ছিলনা ঐসময়। ছোটবেলা থেকে এর গুনগান শুনে শুনে বড় হয়েছি কি-না। কিন্তু উনি আর আগের মতো তাকাতেন না আমার দিকে। সেটা নিয়ে মোটেও কোন মাথাব্যথা ছিলোনা আমার। না তাকালে আমার কী? আমিতো শুধু একে একটু অবজার্ভ করে চাই। কী এমন মানুষটা যে সবাই আদ্রিয়ান বলতে অজ্ঞান প্রায়। সেদিন বড় মামার বাড়িতে মামা আমাদের সবাইকে ডেকেছিলেন ও বাড়িতে। সোহেল ভাইয়ের শ্বশুর বাড়ির লোক, সবাইকেই। ছোট্ট করে গেট টুগেদার যাকে বলে। আগেও বহুবার বলেছি মানিক আঙ্কেল বড় মামারও বেশ ক্লোজ। তাই ওনাকে ছাড়া গেট টুগেদার প্রায় অসম্ভব। সুতরাং স্বপরিবারে ওনাদেরও ডাকা হয়েছিল। আর ওনারা এসেছিলেনও। সেদিন আর আমার আদ্রিয়ান ভাইয়ের দিকে তেমন খেয়াল ছিলোনা। আমি বাড়ির সবার সাথে মজা করতে ব্যস্ত ছিলাম। দুপুরের খাওয়াদাওয়ার পর সবাই নিজেদের কাজে ব্যস্ত। আপিও আমার সুইট জিজুর সাথে ফোনে কথা বলছিল। তাই আমি হিমুর সাথে দুষ্টুমি করছিলাম। আমার ছোট মামার মেয়ে হিমু। তখন ওর বয়স তিন বছর ছিল। হিমুর সাথে দুষ্টুমি করার সময় ওর ক্লিপটা নিয়ে পালাচ্ছিলাম। তখনই ঘটল আরেক ঘটনা।দৌড়ে সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় হঠাৎ করেই আমার পা স্লিপ করে গিয়েছিল। প্রায় তিনটে সিঁড়ির ধাপ পেরিয়ে উল্টে পরেছিল আমার পা, শুধু তাতেই হয়নি গড়িয়ে পড়ে নিচে সিঁড়ির পিলারের সাথে মাথাটা গিয়ে লেগেছিল। পা এবং মাথা দুটোটেই মারাত্মক ব্যথা পেয়েছিলাম। আশেপাশের পরিস্থিতি বুঝে উঠতে উঠতে কেউ একজন এসে ঐ অবস্থাতেই আমার হাত ধরে টেনে তুলে গালে ঠাটিয়ে একটা চড় মেরে দিল এবং সাথেসাথেই হাত ছেড়ে দিয়েছিল। পায়ের ব্যথার জন্যে দাঁড়িয়ে থাকতে পারিনি আমি ওখানেই বসে পরেছিলাম। বুঝেছিলাম পা-টা গেছে। গালে হাত রেখে হতভম্ব দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখেছিলাম এটা অন্যকেউ নয় স্বয়ং আদ্রিয়ান ভাই। চারপাশে তাকিয়ে দেখলাম যে সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। পুরো ব্যাপারটায় তারাও বেশ অবাক। সবকিছু এতো তাড়াতাড়ি হয়েছিল যে আমি বোকা বনে গিয়েছিলাম। খুব কান্না পাচ্ছিল। কিন্তু পায়ের ব্যথায় কাঁদবো, মাথার ব্যথায় কাঁদব নাকি চড়টার জন্যে? সেটা ঠিক করে উঠতে পারছিলাম না। শেষে সিদ্ধান্ত নিতে না পেরে তিনটার জন্যেই ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠেছিলাম। ঐ নিষ্ঠুর লোকটা আমার দিকে একপলক তাকিয়ে ওখান থেকে চলে গিয়েছিলেন। সবাই কিছুক্ষণের জন্যে থমকে গেছিল পুরো ঘটনায়। বিশেষ করে হঠাৎই ওনার এমন থাপ্পড় দেওয়াটাই হয়তো কারো হজম হয়নি, আমার নিজেরই হয়নি। উনি চলে যেতেই সবাই আমার কাছে তাড়াতাড়ি এলো। হাঁটতে পারছিলাম না তাই সজীব ভাই কোলে তুলে একটা রুমে নিয়ে গেল সাথে বাকি সবাইও সাথে গেল। সবকিছু দেখে বোঝা গেল পা ভাঙে-টাঙে নি শুধু মচকে গিয়েছিল,আর কপালের এক পাশ ফুলে গিয়েছিল। ভাগ্য ভালো ছিল কপাল কেটে যায়নি বা পা ভাঙেনি। তবে পা নাড়াতে পারছিলাম না আমি। মা তো কন্টিনিউয়াসলি বকেই চলছিল আমাকে। সব দোষ নাকি আমার ছোটাছুটির। সে যাই হোক, সমস্যা বাঁধলো সেদিন সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার পরেও কাউকে পায়ে হাত লাগাতে দিচ্ছিলাম না আমি। সবাই এতো বোঝাচ্ছিলো যে ধরতে না দিলে পা ঠিক হবেনা। কিন্তু কে শোনে কার কথা। পায়ের ব্যাথায় ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিলাম, আর কেউ ধরতে আসলেই চেঁচিয়ে রুম ছাড়া করছিলাম তাকে। একমাত্র আপিই থাকতে পেরেছিল আমার কাছে। কিন্তু আমার কান্নার জন্যে আপিও হাত দেওয়ার সাহস পায়নি। সবাই বেশ ঝামেলায় পড়ে গিয়েছিল আমাকে নিয়ে। কিন্তু সন্ধ্যার পর কোথা থেকে আদ্রিয়ান ভাই চলে এলেন। এতোবার বারণ করেছিলাম, অনুরোধ করেছিলাম কিন্তু আমার চিৎকার আর কান্নাকে কানে না তুলে আমার পা ধরে কয়েক সেকেন্ড চেক করে, মোচড় দিয়েছিলেন। ব্যাথায় মনে হচ্ছিল আমার প্রাণপাখি ওখানেই ফুড়ুৎ হয়ে যাবে। তবে ব্যাপারটা ফিল্মি ছিল বেশ। আমিও বোকার মতো ভেবেছিলাম যে ফিল্মের মতো হয়তো এই এক মোচড়ের পর আমি আবার ধেই ধেই করে নেচে বলতে পারব আমার পা ঠিক হয়ে গেছে। কিন্তু না! তেমন কিছুই হয়নি। পা নাড়াতে পারছিলাম ঠিকই কিন্তু ব্যথা মোটেও কমেনি। পেইন-কিলার খেয়ে সেই ব্যাথা কমাতে হয়েছিল আমাকে। তবে আমাকে চড় মারার জন্যে। সেদিন মানিক আঙ্কেল বাড়ির সবার সামনেই ধমক দিয়েছিলেন আদ্রিয়ান ভাইকে, মামনীও বকেছে। আর খুব সিরিয়াসভাবেই বকেছেন। আর উনিও ভদ্র ছেলের মতো মাথা নিচু করে চুপচাপ শুনেছিলেন। বাড়ির বাকি কেউও কেউ আটকায় নি কারণ সবাই বেশ অবাক ছিল উনি আমাকে আচমকা এভাবে থাপ্পড় মারাতে। হঠাৎ তখন ওনার কী হয়েছিল সেটা না বাকিরা কখনও জানতে পেরেছে আর না আমি।
আরও কয়েকদিন কেটে গেল নিজের নিয়মে। একদিন আবার উনি এসেছিলেন আমাদের বাড়িতে। গলার আওয়াজ পেয়েই বুঝেছিলাম। কিন্তু সেদিন সেইমুহূর্তে আমি ছবি আঁকছিলাম। এটা আমার অন্যতম শখ। শেষ না করে উঠতেও পারছিলাম না। একমনে ছবি আঁকা শেষ করে বুঝতে পেরেছিলাম কথার আওয়াজ আসছেনা আর। ভেবেছিলাম চলে গেছে নাকি? আস্তে আস্তে গিয়ে বসার ঘরের দিকে উঁকি দিয়ে দেখেছিলাম কেউ নেই। মনে করেছিলাম যে চলে গেছে। তবুও বেশ অনেকক্ষণ উঁকিঝুকি মেরে ফিরে আসতে যাবো তখনই কেউ একজন হ্যাঁচকা টান দিয়ে সরিয়ে আনলো আমাকে। আচমকা এমন হওয়ায় প্রচন্ড ভয় পেলেও তাকিয়ে দেখলাম বরাবরের মতো এই উদ্ভট কাজটা উনিই করেছেন। তবে তাকে দেখে মনে হচ্ছিলো বেশ রেগে আছেন। আমি কিছু বলতে নেব তার আগেই আমার দিকে তেড়ে এলেন উনি। আমি ভয় পেয়ে পিছিয়ে দেয়ালের সাথে আটকে গেলাম। উনি আমার দুপাশ দিয়ে দেয়ালে হাত রেখে বলেছিলেন,
” বারবার! বারবার ইগনোর করেছিলাম তোকে। কিন্তু তোর সুখ তোর নিজেরই সহ্য হয়না। অন্যকেউ আর কী করবে? প্রথম ভুল ছিল আমার রুমে আসা, দ্বিতীয় ভুল ছিল নিজের কান্না দেখিয়ে আমার দুর্বল জায়গাটা আমায় ভালো করে চিনিয়ে দেওয়া, আর তৃতীয় ভুল এইযে বারবার উঁকিঝুকি মেরে আমায় অবজার্ভ করা। অনেক চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু তোর জন্যে আর হলোনা। এবার আমার পক্ষে আর সম্ভব না, যা হবার হবে। এন্ড ইউ আর রেসপন্সিবল ফর অল দিস!”
সেদিনের পর আদ্রিয়ান ভাই আবার আগের মতো হয়ে গিয়েছিল। ওনার মতো স্বাভাবিক আচরণই করেছিলেন আমার সাথে। আমিও ওনার বলা ঐ কথাগুলো নিয়ে দু-দিন অযথা ভাবলেও পরে সব ভুলে গিয়েছিলাম। স্বাভাবিকই চলছিল সবটা। সময়ের সাথে সাথে ওনার সাথে আমার নামহীন অদৃশ্য এবং অদ্ভুত সম্পর্কটাও একটু একটু করে দৃঢ় হচ্ছিলো।ঈদের কয়েকদিন পর উনি আবার ইউকে চলে গেলেন। আর আমিও কলেজে ভর্তি হয়ে গেলাম। এরপর প্রায় চার বছর পেরিয়ে গেছে। প্রায় আট হাজার কিলোমিটারের দূরত্ব থাকার পরেও ওনার প্রতি অনুভূতি একটুও কমেনি বরং প্রতিনিয়ত বেড়েছে। নিজেদের অজান্তেই এক নামহীন সম্পর্কে রয়ে গেছি আমরা। যেখানে না আছে কোন কনফেশন, না আছে কোন কমিটমেন্ট আর না আছে কোন ভিত্তি। আছে শুধু অনুভূতিটুকুই। ওনার দিক থেকে অনুভূতির কথা নিশ্চিত জানা নেই কিন্তু একটা অকারণ অধিকারবোধ ঠিকই আছে। আদ্রিয়ান ভাই ঠিকই বলেছিলেন, আমার নিজেরই নিজের সুখ সহ্য হয়না। তাইতো এরকম এক জালে ইচ্ছে করেই নিজেকে জড়িয়েছি। যেখান থেকে না এগোনোর রাস্তা আছে আর না পেছানোর।
#প্রেমের সাতকাহন- ৪
.
[ * রি-চেক হয়নি। অনেকদিন পর ‘অনির কলমে আদ্রিয়ান’ দিলাম। এতোদিন পর পেজে পোস্ট হওয়ায় রিচ প্রবলেম হতে পারে। তাই যাদের যাদের কাছে এই পর্বটা পৌঁছাবে অবশ্যই রেসপন্স করবেন আর বেশি করে শেয়ার করবেন।
* কমেন্টবক্সে আগের তিনটা অংশের লিংক দেওয়া আছে। যারা পড়েননি পড়ে নেবেন।
* নতুন উপন্যাস/গল্প কবে দেব?
– শীঘ্রই দেব। ১৮ তারিখের পর আমি একদম ফ্রি আছি। সুতরাং ২৫ তারিখের মধ্যে নতুন উপন্যাসের প্রথম পর্ব পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ। ]