বজ্জাত_বউ
লেখিকা #বিলকিস
পর্ব ২০
অথৈ: আমাদের পা টিপে টিপে যেতে বলে বাড়ির দরজায় সামনে দাড়াতে পেছন থেকে কেউ একজন অথৈ এর কাধে হাত রাখতে অথৈ ভয় পেয়ে পেছন দিকে তাকাতে চোখ বড় বড় হয়ে গেলো।
আম্মু: কোথায় ছিলেন এতো সময় আপনারা বলে অথৈ এর কান ধরলো
অথৈ: আঃ আম্মু লাগছে আমার।
আম্মু: লাগছে না। লাগায় জন্য ধরেছি। বদমাইশ মেয়ে
অথৈ: আব্বু আব্বু দেখো আম্মু আমাকে মারছে ( চিৎকার করে)
আম্মু: আব্বু কে ডাকা না।
আব্বু: কি করছো তুমি মেয়েটা কান ধরেছো কেনো ( সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে বললো)
আম্মু: ধরবো না। তুমি জানো ও কি করেছে।
অথৈ: কি করেছি আমি
আম্মু: কি করেছো তোর জন্য আজ পাশের বাড়ির ভাবি কাছ থেকে এতো কথা শুনতে হয়েছে। ও দিন দিন শয়তান হয়ে যাচ্ছে।
আব্বু: আগে ওর কান ছাড়ো।
অথৈ: আব্বু তুমি বলো আমি কি বেশি দুষ্টুমী করি একটু খালি দুষ্টুমী করি।
আম্মু: এই মেয়ে আমি পেটে ধরেছিলাম।
অথৈ: না তুমি ধরো নি আমার আব্বু বউ সালমা ইসলাম আমাকে পেটে ধরেছে। বলে হাসতে লাগলো।
আম্মু: তুমি দেখেছো
আব্বু: আরে সালমা তুমি ও না
আম্মু:তোমরা বাবা মেয়ে দুজনে একরকম। আর শুনো আমি ঠিক করেছি আমি এবার অথৈর এর বিয়ে দেবো।
অথৈ: বিয়ে আমার।তাও আবার তুমি দেবে। পরবে তো।
আব্বু: তুমি পাগল হয়ে গেলে নাকি। অথৈ এখনো ছোটো।
আম্মু: আমি কোনো কথা শুনবো না। আমি কাল সকালে ভাইজান কে ফোন দিয়ে বলবো ওর জন্য ভালো পএ দেখতে বলে অথৈ এর আম্মু চলে গেলো।
আব্বু: অথৈ তুই ঘরে যা আমি দেখছি
অথৈ: ঠিক আছে বলে নিজের রুমে এসে বিছানাতে শুয়ে চোখ বন্ধ করলো।
আসলাম সাহেব: কতো দিন পর স্যারকে এই চেয়ারে বসতে দেখলাম। কিন্তু একি হাল করেছে স্যার নিজের। মুখ ভারা দাড়ি, চুল গুলো কেমন যেনো এলোমেলো, চোখে মায়া নেই। মনে হচ্ছে স্যারে জীবন থেকে সব রং হারিয়ে গেছে। যাবে না বা কেনো স্যার যে মিষ্টি মাকে খুব ভালোবাসতো। ( পরশের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো)
পরশ: আসলাম সাহেব কি দেখছেন এভাবে।
আসলাম সাহেব: আপনাকে স্যার। অনেক দিন পর দেখলাম আপনাকে।
পরশ: আসলাম সাহেব স্যার কোথায়।
আসলাম সাহেব: স্যার তো সিলেট গিয়েছে আজকে ফিরবে।
পরশ: ও। আপনি এক কাজ করুন আফিসে ফাইল গুলো নিয়ে আসুন।
আসলাম সাহেব: ok স্যার বলে ফাইল আনতে চলে গেলো।
অথৈ: ওই আঙ্কেল টাকে । কেনো বা ওনাকে দেখে আমার মনে মধ্য অন্য রকম লাগলো। চোখ বুজলে আঙ্কেল টা কে কেনো দেখছি। না কেনো এমন হচ্ছে আগে তো এমন হয়নি। দুর কি ভাবছি আমি। বলে অথৈ বিছানা থেকে উঠে ছবি আঁকতে বসলো।
আসলাম সাহেব: স্যার এই যে ফাইল।
পরশ: দিন বলে হাত বারিয়ে ফাইল গুলো নিলো। তারপর একটা ফাইল নিয়ে দেখতে লাগলো।
আসলাম সাহেব: আর কিছু লাগবে স্যার।
পরশ: না আপনি আসুন।
আসলাম সাহেব: ok.স্যার বলে দরজায় দিকে যেতে আবার ফিরে আসলো।
পরশ: কিছু বলবেন।
আসলাম সাহেব: হ্যা স্যার। স্যার আমরা কি আগে স্যার কে ফিরে পেতে পারি না।
পরশ: না পারেন না। আগে পরশ আর এখন নেই। এখন নতুন পরশের জম্মু হয়েছে। কেউ একজন চলে গিয়ে এই নতুন পরশকে জম্ম দিয়েছে। আপনি এখন আসতে পারেন বলে আবার ফাইলের দিকে মনোযোগ দিলো।
আসলাম সাহেব: কেউ কি পারবে না আগের স্যার কে ফিরে আনতে বলে আফিস রুমে থেকে বের হয়ে আসলেন।
পরশ: সবগুলো ফাইল গড়মিল। আসলাম সাহেব আসলাম সাহেব।( চিৎকার করে)
আসলাম সাহেব: জি স্যার বলুন
পরশ: আমি এই ফাইল গুলো নিয়ে যাচ্ছি। আর আফিসে বাকি দের বলে দেবেন কাল থেকে আফিসের আমি যা বলবো সেটাই হবে আমি স্যারে সাথে কথা বলে নেমে বলে পরশ আফিস থেকে বের হয়ে গেলো।
রাতে
অথৈ: আম্মু আম্মু আমার খিদে পেয়েছে। খেতে দাও।
আম্মু:…. চুপ
আব্বু: সালমা তোমাকে ডাকছে
আম্মু: আবির তোর খাওয়া হয়ে গেলে পড়তে বসবে। আর একজনের তো পড়ার নাম নেই।
অথৈ: আব্বু পরীক্ষা পর কেউ পড়ে তুমি বলো
আব্বু: ঠিক তো পরীক্ষার পর কেউ পড়াশুনা করে না।
অথৈ: আরে আম্মু আমার সোনা আম্মু বলে জরিয়ে ধরলো।
আম্মু: ছাড় আমাকে
অথৈ: না ছাড়বো আগেবলো আমার পর আর তোমার রাগ নেই।
আম্মু: হয়েছে আর রাগ নেই এবার বসো আমি খাইয়ে দিচ্ছি বলে খাইয়ে দিলো।
অথৈ: আমার চিতাবাঘ আম্মু।
আম্মু: কি আমি চিতা বাঘ।
অথৈ: মুখ দিয়ে বেরিয়ে গেছে আর বলবো না। তবে আম্মু তোমার কে দেখতে প্রায় চিতা বাঘের মতো
আম্মু: কি ( রাগী গলায়)
অথৈ: আমার খাওয়া শেষ আমি ঘরে যাচ্ছি বলে চলে গেলো।
দিশা: আম্মু আম্মু যানো আসলাম সাহেব আজ ফোন করে বললো ভাইয়া নাকি আফিসে গিয়েছিলো।
পরশের আম্মু: কি বলছেন। আল্লাহ তুমি আছো।
দিশা: হ্যা আম্মু উপর আল্লাহ আছে।
পরশের আম্মু: তা তোর ভাই কোথায়।
দিশা : কোথায় আবার গতে দু বছর ধরে যেখানে যাই মদ খেতে।
পরশ: ওয়েটার আর এক বোতল।
ওয়েটার: ভাই আর মদ খাবেন না। গতো দু বছর ধরে আপনি দু বোতল করে মদ খান। এভাবে খেলে আপনি অসুস্থ হয়ে যাবেন।
পরশ: অসুস্থ হলে হবে বলে আর এক বোতল মদ নিয়ে বের হয়ে আসলো।
সকাল ৮ দিকে অথৈ এর আম্মু অথৈর মামু কাছে ফোন দিলো।
অথৈর মামু: হ্যালো সালমা ( ফোন রিসিভ করে)
অথৈর আম্মু: ভাইজান তুমি কোথায়।
অথৈর মামু : বাড়িতে কেনো।
অথৈর আম্মু: আসলে ভাইজান তোমার ভাগ্নী তো দিন দিন বড় হচ্ছে আর দুষ্টমী গুলো বেড়ে চলেছে। আমি চাই ওর এবার বিয়ে দেবো। তোমার তো অনেক জানা শুনা মানুষ আছে তুমি একটা ভালো ছেলে দেখো তো।
অথৈর মামু: সব তো বুঝলাম। কিন্তু আমার ভাগ্নী তো ছোটো।
অথৈর আম্মু: আমি কিছু শুনতে চাই না তুমি পএ দেখো বলে ফোন কেটে দিলো।
অথৈ: কার সাথে কথা বলছিলে আম্মু ( পেছন থেকে বললো)
আম্মু: তোর মামু সাথে
অথৈ: মামু সাথে সাথে। আম্মু আমি আজকে মামু আফিসে যাবো।
আম্মু: না যাবে না। সারাদিন রোদে রোদে ঘুরে চেহারা কি হাল করেছো আজ তুমি আমার সাথে পার্লারে যাবে।
অথৈ: আম্মু আমি কাল যাবো পার্লারে আজ মামু আফিসে যাই। যাই না আম্মু
আম্মু : ঠিক আছে তবে ওখানে যেয়ে দুষ্টুমী করবে না।
অথৈ: ঠিক আছে আম্মু আমি রেডি হয়ে আছি।
এদিকে পরশ রেডি হয়ে সিড়ি দিয়ে নিচে নামতে পেছন থেকে পরশের আম্মু বললো
পরশের আম্মু: পরশ গতো দু বছর ধরে আমাদের সাথে ব্রেকফাস্ট করিনিস নাই। আজ নয় একসাথে ব্রেকফাস্ট করি।
পরশ: ok বলেড্রাইনিং টেবিলে বসলো। হাতে একটা আপেল নিয়ে খেতে লাগলো।
পরশের আম্মু: পরশ বলছিলাম দিশা পক্ষে দু সংসার সামলানো সম্ভাব নয়। আর আমার শরীলটাও ভালো না আমি চাই তুই আবার বিয়ে কর।
বিয়ে কথা শুনে যেনো পরশের মাথায় রাগ চড়ে গেলে। পরশ টেবিল থেকে ওঠে দাড়ালো
দিশা:দাড়িয়ে পড়লি কেনো। আম্ম্মু তো ঠিক বলেছে তোর এবার বি
পরশ: Enough ( চিৎকার করে) আর যেনো বিয়ে শব্দ টা না শুনি বলে চলে গেলো
অথৈ: আম্মু আমি আসছি বলে অথৈ বেরিয়ে পড়লো। আড়াই ঘন্টা পর অথৈ আফিসে এসে দাড়াতে আসলাম সাহেব বললো
আসলাম সাহেব: আপনি কি অথৈ: জি আমি অথৈ মামু কোথায়
আসলাম সাহেব: স্যার ফোন করেছিলো আপনি আসবেন।স্যারের আসতে একটু দেরি হবে আপনি একটু বসুন।
অথৈ: আমি বরং আফিসটা ঘুরে দেখি বল্টু চল
আসলাম সাহেব: মা আপনি তো একা তো বল্টু কাকে বললেন।
অথৈ:কেনো এই যে ওর নাম বলটু বলে আফিস ভিতরে চলেগেলো। বাহ্ মামু আফিস টা অনেক সুন্দর। ওই রুমটা বলতে ( পরশের আফিস রুমে ঢুকলো) বাহ বেশ সুন্দর তো এই লোকটা দেখতেে প্রায় ওই আঙ্কেলটার মতো( পরশের ছবি দেখে বললো) তবে একে তো সালমান খানের মতো আর ওই আঙ্কেল টা তো অমিরেশ পুরি। ওহ বল্টু তুই এখানে বসবলে পরশের চেয়ারে বসিয়ে দিলো।
অপর দিকে পরশ আফিসে ঢুকে নিজের রুমে ঢুকতে. ………(চলবে)