আজও আমাদের দেশে অনেকে কষ্ট করে পড়াশুনা করে কিন্তু যখন প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়, যোগ্যতা থাকাসত্ত্বেও শিক্ষিত মানুষগুলো বেকার হয়ে ঘুরে। তখন মনে হয় সমাজের প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজদের জুলুমে নিরীহ মানুষগুলো নিষ্পেষিত। আর আমরা ও আমাদের অভিভাবকরা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মত করেও যদি দ্বীনী শিক্ষাকে গুরুত্ব দিত তার জন্য শ্রম, অর্থ খরচ করত তাহলে ইনশাআল্লাহ জান্নাতের পুরস্কার পেত। হয়তো দুনিয়ার রিজিকও সহজ হতো। সমাজব্যবস্হা, রাষ্ট্রব্যবস্হায় অযোগ্য লোকদের বসিয়ে যতই উচ্চশিক্ষিত হোক না কেন মানুষ- শিক্ষিতরা বেকার হবে আর সৎরা অবহেলিত, অপমানিত হবে। আর এই দুর্গতির জন্য দায়ী হল ইংরেজদের চাপিয়ে দেওয়া শিক্ষাব্যবস্হা এবং অনেক আলেমদের শিক্ষা নিয়ে ভুল ফাতওয়া। আমাদের দেশে দুনিয়ার শিক্ষা ও দ্বীনি শিক্ষা নামক মতবাদ প্রচলন ঘটেছে। অথচ প্রত্যেক কাজ নিয়তের উপর নির্ভর করে। মুমিনের কোন কাজেই দ্বীনের বিপরীত দুনিয়ামুখী নয়।
কেউ যদি হালাল রিজিক অর্জনের জন্য, মুসলিমদের সেবা ও উপকারে জ্ঞান অর্জন করে তাও দ্বীনের জন্য হয়, আল্লাহও নেকী দেন। রসুলের (সা) হাদীসে রয়েছে- “যে ব্যক্তি নিজের রুজি উপার্জনের জন্য কাজ করে সে কাজে লক্ষ্য থাকে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন, তার দৃষ্টান্ত মুসা (আঃ) এর মায়ের মত। তিনি নিজের সন্তানকে দুধ পান করান এবং তার বিনিময় লাভ করেন।” (তিবরানী, বায়হাকী)। হালাল রিজিক অন্বেষণকারী আল্লাহর সন্তুষ্টি পায় এবং রিজিকও অর্জন করে। রসুলের (সাঃ) সাহাবীদের কেউ ছিলেন হালাল ব্যবসায়ী, কেউ কৃষিজীবী, কেউ রাখাল। তাদের ব্যবসা, কৃষি, পশুপালন বিষয়ে উত্তম জ্ঞান ছিল। এগুলো দিয়ে তারা যেমন হালাল জীবনযাপন করতেন তেমনি জেহাদ, যাকাত, দান সদকদাসহ দ্বীনের কাজে লাগাতেন। রসুল (সাঃ) নিজেই টেকনোলজির উন্নত শিক্ষা পছন্দ ও গ্রহণ করতেন। তার তালোয়ার জুলফিকার ছিল দুমুখী তাৎকালীন সময়ে উন্নত সমরাস্ত্র।
খন্দকের যুদ্ধের সময় সালমান ফারসী (রাঃ) এর পরামর্শক্রমে খন্দক খনন করেন যা সালমান ফারসী (রাঃ) কাফেরদের হতে শিখেছিলেন। আজও বিশ্বে ডাক্তার, প্রকৌশলী, কেমিস্ট আছে যারা একইসাথে কুরআন, হাদীস বিশেষজ্ঞ এবং ইসলাম জানে।
কাফেররা আমাদের তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ কিনে পারমাণবিক শক্তি, টেকনোলজি ও সামরিক খাতে উন্নতি করেছে। অপরদিকে আরব বিশ্বসহ মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলো বড় বড় দালান, বিলাসী পোষাক ও খাদ্যে অপচয় করেছে। তাই আমরা আজও চাইলে ওদের টেকনোলজি, পন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছি। ভারত, পশ্চিমাদের কিছু পন্য বয়কট করলেও টেকনোলজি ও মোবাইল কি বয়কট সম্ভব? অধিকাংশ পণ্য চীন হতে আসে যারা উইঘুরের মুসলিম নির্যাতন করে চলছে।
আসলে আমাদের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন এমন উন্নত শিক্ষাকেন্দ্রের যেখানে সকল ধরনের ইসলামী শিক্ষা ও মুসলিমদের শক্তিশালী করে এমন সব কার্যকর শিক্ষা শেখানো যাবে। ইনশাআল্লাহ বহু দ্বীনদার ডাক্তার, প্রকৌশলী আজও আছে বিনা টাকায় এসব শিক্ষকতা করবে শুধু প্রয়োজন সম্মোলিত উদ্যোগের। একটু খেয়াল করুন শিয়া রাষ্ট্র ইরান এত বাধার পরও অর্থনীতি, সামরিক খাতে শক্তিশালী। কারন তারা উন্নত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আধুনিক শিক্ষা চালু রেখেছে।