®রোজা রহমান
‘
সকাল সাতটা বেজে পয়ত্রিশ মিনিট। মালিথা ভিলার সকল সদস্যই ঘুম থেকে উঠে পড়েছে৷ বড়রা তো ফজরের নামাজ আদায় করে আর বিছানা শরীর এলোয় না। নামাজ শেষে বাড়ির গিন্নিরা রান্নার কাজে লেগে পড়েন। কারণ, বাড়ির প্রতিটা সদস্য-ই নিজ নিজ দৈনন্দিন কাজে-কর্মে বেরোবে। কেউ স্কুল-কলেজে তো কেউ অফিস-আদালতে। ছোটরা নামাজ আদায় করে আরেকটু ঘুমিয়ে নেয়৷ সবাই না অবশ্য। যার যার ইচ্ছে হয় তারা ঘুমোয়। বাড়ির একমাত্র বড় ছেলেবউ এখন বৃষ্টি। তার জন্য এ বাড়িতে সকল রকম সুযোগ-সুবিধা আছে৷ কুয়াশার মতো করেই তাকে দেখা হয়৷ রান্না-বান্নার কাছে তেমন একটা তাকে যেতে হয়না। সব শ্বাশুড়ি, চাচি শ্বাশুড়িরাই করেন। মূলত উনারাই তাকে কিছু করতে দেন না। তাকে বলা হয়েছে, রান্নার কাজ তাকে না দেখলেও চলবে। এমনকি, বাড়ির ঘর-দোর ও পরিস্কার করা লাগে না।
এত বড় যৌথ পরিবারের বাড়ি পরিস্কার করার জন্য আলাদা লোক রাখা আছে৷ কাজের খালা এসে পরিষ্কার করে দিয়ে যায় । শুধু রান্নার কাজ গিন্নিগুলো করেন। এটা বংশের নিয়ম। এই বংশের কোনো পুরুষ কাজের লোকের হাতের রান্না খান না। বৃষ্টির শ্বাশুড়িরা এখনো যোয়ান বলা চলে। বয়সের ছাপ সবার মুখে পড়েছে কিন্তু এখনো কর্ম ক্ষমতা থেকে পিছিয়ে পড়েন নি। সকলে বেশ কর্মঠ। নিজেদের কাজ নিজেরাই করে নেন। বৃষ্টি তবুও বসে থাকে না। বাড়ির একমাত্র বউ হয়ে বসে বসে খাওয়াটা দৃষ্টিকটু। বসে খেতে তারও ভালো লাগে না৷ এমনকি সারাদিন বসে থাকতেও ভালো লাগে না। তাই শ্বাশুড়িদের হাতে-পিতে যতটুকু পারে করে দেয়। সাহায্য করে সকলকে। মাঝে মাঝে তিন শ্বাশুড়ির দুই শ্বশুরের জামা কাপড়ও কেঁচে-কুঁচে দেয়। ছেলেবউ হিসেবে বৃষ্টি বেশ আন্তরিক। হবে না কেন? মেয়েটার মা নেই। বাবা মানুষ করেছেন৷ মধ্যেবিত্ত পরিবারের মেয়ে বৃষ্টি। সৎ মায়ের ঘরে বড় হয়েছে। এজন্য শ্বশুর-শ্বাশুড়ির কদর একটু বেশি তার কাছে। এই যে এখন তিন শ্বাশুড়ির সাথে কাজ করছে হাতে হাতে। মেজো শ্বাশুড়িকে একটু বেশি সাহায্য করে। কারণ তিনি ঘরের কাজ সামলে আবার বাইরের কাজ সামলাতে গেলে একটু বেশিই হিমসিম খান।
‘
এরই মাঝে কুয়াশা ঘুম থেকে উঠে গুঙিয়ে গুঙিয়ে কাঁদছে সাথে অস্পষ্ট স্বরে চেঁচাচ্ছে। কেমন অস্বাভাবিক লাগছে শুনতে। কাঁদতে কাঁদতে উপর থেকে নিচে নেমে আসছে। কান্নার সাথে জোরে জোরে চেঁচানোর ফলে চেঁচানোর শব্দটা কেমন
‘উমম, উমম’ মতো বেরোচ্ছে। নিচে নেমে সোজা মায়েদের কাছে চলে গেল। তার অবস্থা দেখে রান্নাঘরে উপস্থিত সবাই ভ্রু কুঁচকে তাকাল। বিষয়টা সবাই কিছুক্ষণ ধরে পরখ করল বুঝতে, ঠিক বিষয়টা কি? যখন চোখে পড়ল তখন হতভম্ব হয়ে গেল। এ কি অবস্থা! বৃষ্টি তড়িঘড়ি করে বেড়িয়ে এলো কুয়াশার কাছে। এসে জিজ্ঞেস করল,
” এ্যাই কুয়াশা এ কি হয়েছে তোমার? এমন হলো কিভাবে? কোথা থেকে লাগল? ”
কুয়াশা মুখে উত্তর করতে পারছে না। ওর মুখের বাক্য শুধু,
” উমম উমম ”
আজমিরা বেগম কাছে এসে বললেন,
” এটা তো কাঁঠালের আঠা। তোর হাতে, মুখে কিভাবে লাগল? তুই তো কাঁঠাল খাইস না, তবে আঠা লাগল কিভাবে? ”
মায়ের প্রশ্নের উত্তরও করতে পারল না কুয়াশা। জাকিয়া বেগম এগিয়ে এলেন। বিষয়টা বোঝার চেষ্টা করলেন। কুয়াশার মুখের দিকে তাকালেন৷ দেখলেন চোখটা টলমল করছে পানিতে। মেয়েটা কাঁঠালের আঠাতে ভয় পায়। এটা জব্বর একটা জিনিস৷ কোথাও লাগলে আর ছাড়ে না। কথায় আছে না? ‘কাঁঠালের আঠা লাগলে পরে আর ছাড়ে না’ কথাটা যথাযথ সত্য।
‘
কুয়াশার কাঁঠালের আঠাতে ভয় পাবার কারণ একবার ছোট বেলায় কাঁঠাল নেড়ে তার পুরো হাত সহ চুলে মেখে গেছিল৷ সেটা কিভাবে কি হয়েছিল কে জানে? বেচারা পাঁকা কাঁঠাল-ই তো শুধু নেড়েছিল! কে জানত পাঁকা কাঁঠালের আঠার আবার এত তেজ!! অপছন্দ থাকা স্বত্তেও সখের বসে পাঁকা কাঁঠাল ছড়াতে গিয়ে বোটার অংশ ধরার পরে সারা হাত সহ জামা এবং চুলে পর্যন্ত মেখে একাকার অবস্থা। হাতের গুলো তেল দিয়ে তুলতে পারলেও চুলগুলো রক্ষা করতে পারেনি। কেটে ফেলতে হয়েছিল চুল। তখন চুল অনেক ছোট ছোট ছিল বলে সমস্যা হয়নি। বেচারি সেস্তোক থেকে কাঁঠালের ধারে কাছেও যায় না। এমনকি সহ্য করতে পারেনা। এছাড়া শুধু যে আঠা লাগার ভয় তা না, পাকা কাঁঠালের গন্ধ-ই সে সহ্য করতে পারে না আর। তার নাকি বমি আসে গন্ধে। তার ভাষ্যমতে দুনিয়ায় সব থেকে অসহ্যকর, বিরক্তকর এবং জঘন্যতম ফল কাঁঠাল। এমনকি তার ধারণা, কোন আবা-ল ব্যক্তি এই কাঁঠালের মতো অসহ্যকর একটা ফলকে জাতীয় ফল করেছিল?? এর থেকে আম, লিচু তো ঢেঁঢ় ভালো। কি সুন্দর সুগন্ধ আর খেতে মজা!
‘
জাকিয়া বেগম কুয়াশার হাত ধরে বসার ঘরে এলেন। সেখান থেকে জোরে জোরে শিশিরকে ডাকতে লাগলেন। শিশির তখনো ঘুমে। ঘুমের মাঝে মায়ের ডাক কানে পৌঁছাতেই সে উঠে এলো। বসার ঘরে জাকির মালিথা, জাহিদ মালিথা সহ তুষার, তুহিন ছিল। এরপর জাকিয়া বেগমের বাজখাঁই কন্ঠ পেয়ে শিশির সহ নীহার, হিমেল উঠে এলো। জাকিয়া বেগম রাগে ফুঁসছেন। কতবড় সাহস ছেলেটার! কিছু না বলে একদম সাহস বেড়ে গেছে। জাকির মালিথা জিজ্ঞেস করলেন,
” কি হয়েছে জাকিয়া? ওভাবে চেঁচাচ্ছ কেন? আস্তে চেঁচাও। দরকারে উপরে উঠে গিয়ে ডাকো। ”
” তুমি তোমার ছেলের কাণ্ডজ্ঞান দেখেছ? কি করেছে?”
” কি করেছে কি? “
” সেটা তোমার ছেলে আসলেই জিজ্ঞেস করো। কি করেছে, আর কেন করেছে! “
স্ত্রীর কথায় জাকির মালিথা ভ্রু কুঁচকে রাশভারি মুখ নিয়ে চেয়ে রইলেন। জাহিদ মালিথাও সভাব সুলভ চুপচাপ বিষয়টা বুঝতে তাকিয়ে রইলেন। তুষার, তুহিন ভেবেছিল প্রশ্ন করবে কিন্তু জাকিয়া বেগমের কথা শুনে আর করল না। বিষয়টা দেখার জন্য চুপ রইল৷
এর মাঝে শিশির নেমে আসতে আসতে প্রশ্ন করল,
” কি হয়েছে আম্মু? এমন করে ডাকছ কেন? ভাবে লাগছে ডা-কাত পড়েছে বাড়িতে ”
ছেলের এমন ভাবলেশহীন কথা শুনে জাকিয়া বেগম রাগে ফুঁসে ওঠলেন। বললেন,
” তোমাকে আদর দিয়ে একটু বেশি বাদর করা হয়েছে না? এসব কি করেছ কি তুমি? ওর মুখে আর হাতে কাঁঠালের আঠা কেন দিয়েছ? তুমি ভালোমত জানো ও এগুলো সহ্য করতে পারে না। তারপরেও এত বড় স্পর্ধা কি করে পাও তুমি? “
শিশির মায়ের কথায় চুপ রইল। বুঝল মা আজ প্রচণ্ড রেগে গেছে৷ মা যখন প্রচণ্ড রেগে যায় তখন তুমি করে বলে। সে একনজর কুয়াশাকে দেখে নিয়ে চুপচাপ সোফায় গিয়ে বসল। তুষার, তুহিন সহ সবাই হতভম্ব হয়ে গেছে। সবার নজর শিশিরের উপর। জাকির মালিথা ছেলের ভাবভঙ্গি দেখে যা বোঝার বুঝে গেছেন। বললেন,
” কি হলো? মায়ের কথার উত্তর দাও! কুহেলির মুখে, হাতে আঠা কেন দিয়েছ? “
শিশির নির্বিকার। এদিকে নীহার, বৃষ্টি, হিম বিষয়টা বুঝতে পেরেছে যে, কেন এমনটা করেছে!
তুষার, তুহিন কথা বললন না। কারণ তারা এমনি দুই পক্ষের কাউকে কখনো এক দিক হয়ে বকে না৷ তারা শিশির কুয়াশা দু’জনকেই সমান ভাবে দেখে। দু’জনকেই প্রটেক্ট করে এবং দু’জনেরই সমান দোষ দেখে৷ তারা জানে এরা একে ওপরে কেউ কাউকে কম হেনস্তা করে না। তাই কখনো কারো পক্ষ নেয় না। নয়তো বি’প’দ! এজন্য চুপই রইল।
শিশিরের ভাবভঙ্গি দেখে সবাই ওরই পানে তাকিয়ে রইল। সকলে বুঝল এ ছেলের মুখ থেকে একটা কথাও বের করতে পারবে না। সে আঁড়চোখে তাকিয়ে তাকিয়ে কুয়াশাকে পরখ করছে। দেখল চোখ থেকে অনবরত টুপটুপ করে পানি পড়ছে, নাকের পাটা লাল হয়ে গেছে ইতোমধ্যে। উপর ঠোঁটের সাথে নিচের ঠোঁটটা লেগে আছে আঠার জন্য। দুই হাত মুঠ পাকানো। এমন অবস্থায় ওরই পানে তাকিয়ে ফুঁসছে। শিশির বেশ মনে মনে হেসে মজা নিচ্ছে দেখেই বোঝা যাচ্ছে।
‘
শিশির জানে যে কুয়াশা কাঁঠালের আঠাতে ভয় পায়৷ বিরক্ত হয় অনেক কাঁঠাল দেখলে। ওর জন্য এবাড়িতে কাঁঠাল আনা হয়না। সেটাও অবশ্য শিশির কাছে আদিক্ষেতা মনে হয়। কেননা, একজনের জন্য সকলে কেন বছরের জাতীয় ফল খাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে? এটা একটা কথা হতে পারে? অবশ্য কাঁঠাল তারও খুব একটা পছন্দ না, কিন্তু খুব একটা অপছন্দও না। টুকটাক চলে তার কাছে ফলটা। তবে কথা হচ্ছে, এত বিরক্তই বা প্রকাশ করার কি আছে? অদ্ভুত!!
কুয়াশাকে কাঁঠালের আঠা মুখে এবং হাতে মাখানোর কারণ হচ্ছে, গতকাল এবং গত পুরশু সে তাকে কামড় দিয়েছে এবং চুল টেনেছে। এই জন্য যে মুখ দিয়ে কামড় দিয়েছে সেই মুখে আঠা লাগিয়েছে এবং যে দু’হাত দিয়ে চুল টেনেছে সেই দু’হাতে লাগিয়েছে। পারলে তার দাঁতেরও বারটা বাজাত কিন্তু আফসোস ; সেটার জন্য কিছু করতে পারেনি। এটা করেছে কুয়াশা যখন নামাজ পড়ে আবার শুয়েছিল তখন। কুয়াশা আবার নামাজ পড়ে ঘুমালে তার ঘুম হয় গাঢ়।
যায়হোক, এমন বুদ্ধি বোধহয় একমাত্র এই শিশির মালিথার মাথায়-ই পাওয়া যায় যে, হাত মুখের শাস্তি হিসেবে কাঁঠালের আঠা লাগিয়ে দেওয়া৷
কুয়াশাকে পর্যবেক্ষণ করতে করতে মনে মনে বিড়বিড়াল,
” ঢঙের শেষ নেই, যত্তসব। গোবর ঠাঁসা একটা ”
জাহিদ মালিথা এতক্ষণ চুপ করে থেকে আর পারলেন না কথা না বলে। তিনি এবার শিশিরের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করলেন,
” শিশির এটা কি ধরণের মজা করা বলে? এসব নিয়ে এরকম মজা করেছ কেন? মেয়েটার হাত মুখের কি অবস্থা হয়েছে দেখেছ? বাই এনি চান্স, ঘুমের ঘোরে যদি চোখের মধ্যে ঢুকে টুকে যেত তখন কি হতো? এত বড় হয়েও এতটা কেয়ারলেস কি করে হও তুমি? ”
এবার শিশির কথা না বলে পারল না। বলল,
” চাচু তোমরা জানো না এই গব.. না মানে তোমাদের মেয়ে কি করেছে৷ তাই ওর জন্য আমাকে বকো না। ওর জন্য আমাকে বকছ কেন এত? তোমরা শুধু আমার দোষ ধরো, ও যে আমার সাথে লাগে তখন চোখে পড়ে না তোমাদের। “
” শিশির তুমি যথেষ্ট বড় হয়ে গেছ। কুয়াশা এখনো ছোট। অন্তত তোমার থেকে ছোট। ও বাচ্চামি করে বলে তুমি কেন ওর সাথে তাল মিলিয়ে বাচ্চামি করো? আগে ছোট ছিলে যা করেছ, করেছ এখন তো যথেষ্ট বুদ্ধি এবং বড় হয়েছ এখনো কেন এরকম? অভ্যাস পাল্টাও।”
এই বলে জাহিদ মালিথা আবার কুয়াশার উদ্দেশ্যে বললেন,
” কুয়াশা মামনি তুমিও নিজেকে সামলাও। এখন বড় হচ্ছ, যথেষ্ট বড় হয়েছ। বাচ্চামি করা বন্ধ করো বড় ভাই সে তোমার। মানতে শিখো “
মেজো চাচুর কথায় শিশির, কুয়াশা কেউ-ই প্রত্যুত্তর করল না। দু’জন দু’জনে একবার করে আঁড়চোখে দেখল৷ দু’জনে যতই মেজো চাচুর লেকচার গিলুক এ দু’জন কি আদৌ সুধরানোর বান্দা? উহু কখনো না। যে যাই বলুক তারা এক কান দিয়ে শোনে তো আরেকান দিয়ে বের করে। এমন কথা কতই তো শুনে আসছে! সেসব তাদের গায়ে-ই লাগে না। এত বছরেও নিজেদের এ অভ্যাস পাল্টাতে পারল না আবার এখন পাল্টাবে? তারা তো মা-রা মা-রি চুলোচুলি করবেই।
শিশির মনে মনে বলল,
” এই গোবর ঠাঁসার সাথে সক্ষতা!! কক্ষনো না “
একই ভাবে কুয়াশাও বিড়বিড়াল,
” এই বুনো ওলের সাথে সক্ষতা গড়ার প্রশ্নই আসে না “
তুষার পাশে থেকে আস্তে আস্তে প্রশ্ন করল,
” এমন করেছিস কেন? “
একই ভাবে শিশিরও উত্তর দিল,
” ঠিকই করেছি। ওর জন্য কিছু বলতে এসো না তো তোমরা। কি করেছে জানো? আমার বুকে কামড় দিয়েছে তোমাদের ঐ ব’দমায়েশ বোন। আবার কাল চুল ধরে টেনেছে তাই যে মুখ আর হাত দিয়ে কামড়েছে, চুল টেনেছে সেই হাতে, মুখে আঠা দিয়েছি। একদম ঠিক করেছি না? ইকুয়্যাল-ইকুয়্যাল “
কথাটা পাশে থেকে তুহিনও শুনল। কি আর বলবে? বললে তেনারও চটকা গরম হয়ে মুখ ফুলিয়ে রাখবেন ভাইদের উপর।
এদিকে আজমিরা বেগম এ নিয়ে কিছু বললেন না। তিনি আগাগোড়ায় এরকম। শিশিরকে তিনিও যথেষ্ট ভালোবাসেন। তবে মেয়েকেও যথেষ্ট ভালোবাসেন সাথে শাসন করেন। কিন্তু মেয়েটার লাফারমানি সম্পর্কে তিনি অবগত। এছড়া আজমির বেগম বেশি কথা বলেনও না। এ সংসার তিনি আগে থেকেই কথা কম বলেন এখন তো আরো স্বামী নেই!!
আম্বিয়া বেগম, জাকিয়া বেগম একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেললেন৷ এগুলোতে তারা অভ্যস্থ, হাজার শাসন করেও কিছু হয় না। ছেলে মেয়ে দুটো ছোট থেকে খুবই আদরের তাদের কাছে। শিশির ছোট থেকেই আদুরে টাইপ একটা ছেলে। দেখতেও কিউটের আস্থ একটা ডিব্বা।
তুষার দীর্ঘ একটা শ্বাস নিয়ে বৃষ্টিকে বলল,
” বৃষ্টি ওকে নিয়ে গিয়ে সরিষার তেল দিয়ে আঠাগুলো উঠায় দাও। ”
বৃষ্টি কুয়াশাকে নিয়ে গেল সেখান থেকে উপরে কুয়াশার রুমে।
সবাই আবার যে যার কাজে লেগে পড়ল৷ এসব নিত্য দিনের কার্বার দেখতে দেখতে সয়ে গেছে। জাহিদ মালিথা বড় ভাইকে বললেন,
” ভাই..! “
” হু বল “
” শুক্রবারে ওদের মামার বাড়ি গেলে কিরকম হয়? উনারা বার বার ফোন করছেন। উনারা চাচ্ছেন জলদি তুহিনের সাথে উনাদের মেয়ের বিয়ের কাজ সেরে ফেলতে৷ আমিনুল ভাই এ বিষয়ে জোর দিচ্ছেন৷ “
” আচ্ছা যাব। তুই বলে দিস৷ তুই কি থাকতে পারবি? “
” দেখি, চেষ্টা করব ”
” আচ্ছা, তবে জানিয়ে দিস আমরা শুক্রবারে যাব৷ আর পাকা কথা সহ তারিখও ঠিক করে আসব। “
” আচ্ছা ভাই বলে দেব ”
দুই ভাইয়ে কথপোকথন সবটাই শুনল উপস্থিত থাকা ভাই গুলো। সবাই তুহিনের দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে। অর্থাৎ
” বিয়ের ফুল তোমারও ফুটতে চলেছে বাছাধন সাথে সাঁনাইও বাঁজতে চলেছে৷ “
| চলবে |
বুনো ওল বাঘা তেতুল গল্পের লিংক ( all part )
পিরিতি যে কাঁঠালের আঠা লাগলে পরে আর ছাড়ে না
কি? ওদের মাঝে কি পিরিতি নামক কাঁঠালের আঠা লাগার সম্ভবনা আছে? তোমাদের মনে হয় এটা হবে!