®রোজা রহমান
‘
সকাল ছয়টা। সকলে উঠে পড়েছে। ঈদেরদিন বেশি সময় বিছানায় কেউ থাকে না৷ মালিথা বাড়ির তিন জা সহ বৃষ্টি নামাজ আদায় করেই রান্নার কাজে লেগেছেন। রান্নাঘরে টুংটাং শব্দ তুলে রান্না করছেন তারা। ঈদেরদিন সকাল থেকে হরেকরকম পদ রান্না হয়। সেমাই থেকে শুরু করে নানান পদ। সেগুলোই রান্না করছেন৷ সারা বাড়ি সুগন্ধে ম-ম করছে।
ইয়াসমিন, ঈশাকে রাত তিনটার দিকে দিয়ে এসেছিল তুহিন। তারা রাত এবাড়িতে থাকে নি।
বাড়ির পুরুষগুলো গোসলে ব্যস্ত। ঈদের নামাজে যাবে সকলে। আটটার সময় ঈদের নামাজের সময় ধার্য করা হয়েছে।
‘
সময় সাতটা। উপর থেকে একে একে সব পুরুষ গুলো নেমে এলো। এসে একে ওপরকে সালাম দিল। কোলাকুলি করে ঈদ মোবারক জানাল ভাইয়ে-ভাইয়ে। জাকির মালিথা এবং জাহিদ মালিথার পরনে সাদা পাঞ্জাবি ও সাদা পাজামা। আর সকল ছোটদের পরনে হরেকরকম রঙের পাঞ্জাবি ও চুড়িদার। সোফায় কুয়াশা আর অনি বসে আছে। কুয়াশা মেহেদী রঙ দেখতে ব্যস্ত আর অনি শিশিরকে দেখতে ব্যস্ত।
শিশিরের পরনে এ্যাস কালারের পাঞ্জাবি তারসাথে সাদা চুড়িদার। হাতে সেদিনের কেনা ঘড়িটা যেটার বেল্ট কফি কালার। চুলগুলো হালকা ভেজা। ভেজা চুলে চিরুনি করে উপরে তুলেছে। চুল ভেজা থাকার জন্য কিছু অবাধ্য চুল কপালের উপর এসে পড়ে আছে। বাম হাতে টুপি আর ফোন ধরে রেখেছে। টুপিটা এখনো মাথায় দেয় নি। আতর দিয়েছে বোধহয় শরীরে সুন্দর স্মেইল আসছে। হেসে হেসে ভাইদের সাথে কথা বলছে।
‘ইশশ কি স্নিগ্ধ লাগছে ছেলেটাকে! ‘
অনি তাকিয়ে থেকে সবার উদ্দেশ্যে বলল,
” ঈদ মোবারক ভাইরা”
একটু থেমে আবার বলল,
” ঈদ মোবারক খালু, ঈদ মোবারক বড় খালু। সালামি চাই কিন্তু! ”
সকলে ওকেও ঈদ মোবারক জানাল৷ এরপর জাকির মালিথা বললেন,
” হ্যাঁ অবশ্যই বাবা। এদিকে এসো “
অনি আনন্দে এগিয়ে গেল। জাকির মালিথা সহ জাহিদ মালিথা অনিকে সালামি দিলেন।
এরপর জাকির মালিথা, জাহিদ মালিথা সহ ছোটরা খাবার টেবিলের দিকে গেল। বৃষ্টি এসে সেমাই পরিবেশন করল। সেমাই খেয়ে নামাজে যায় সকলে। কিন্তু জাকির মালিথা ও জাহিদ মালিথা কোরবানি ঈদে সকালে কিছু খান না৷ এর কারণ কোরবানি যিনি বা যারা দেন তাদের সকালে না খাওয়াটা নিয়ম এবং তা অতি উত্তম। এটা দুই ভাই প্রতি কোরবানি ঈদে করেন। নামাজ পরে এসে কোরবানি দিয়ে এবং সেটার কাজ সম্পন্ন করে তবেই খাবার খান। এমনটা করা সুন্নাহ।
( আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ সাঃ এমনটা করতেন। বিস্তারিত হাদিসের বই কিংবা গুগল করলে জানতে পারবেন সম্পুর্ন বিস্তারিত লিখলাম না আমি )
যেহেতু কোরবানি দুই ভাই-ই দেন সেহেতু দু’জন এ নিয়ম মানেন৷ বাকিরা খেয়েই যায়৷
বৃষ্টি পরিবেশন করার পর জাকির মালিথা আর জাহিদ মালিথা কুয়াশাকে ডাকলেন৷ যেটা হরহামেশা প্রতি ঈদে হয়ে আসছে। কুয়াশাও এই ডাকের আশায় থাকে৷ চাচুরা ডাকতেই একদম চিলের মতো দৌড়ে এলো। কুয়াশা আসতেই জাকির মালিথা সেমাই মুখে দিলেন কুয়াশার। কুয়াশাও বিনা বাক্যে মুচকি হেসে নিল। এরপর জাহিদ মালিথা দিলেন৷ এই আদরটা শুধু আর শুধু মাত্র কুয়াশার জন্য বরাদ্দ। জালাল মালিথা এমনটা করতেন। একমাত্র নাতনীর জন্য আদরের অভাব রাখতেন না। কুয়াশার বাবাও খাওয়াতেন। এখন বাবা নেই তো কি হয়েছে একমাত্র ভাতিজার আদর কি কম পড়বে? উহু কখনো না। প্রতি ঈদে চাচুরা ভালোবেসে এমন নিজেরা না খেয়ে কুয়াশাকে খাওয়ায়।
এরপর জাকির মালিথা বৃষ্টিকে ডাকলেন৷ বৃষ্টি বেশ অবাক হলো। এই প্রথম ঈদ বৃষ্টির শ্বশুরবাড়িতে। তাই ঈদে এই বাড়ির নিয়মকানুন থেকে অনবগত সে। বৃষ্টির শাশুড়ী বললেন যেতে। বৃষ্টিও গেল।
বৃষ্টি আসতেই জাকির মালিথা একইভাবে সেমাই দিলেন বৃষ্টিকে৷ মুখের সামনে ধরতেই মেয়েটার আবেগে চোখটা ভিজে এলো। এবাড়িতে একদম কুয়াশার মতো করেই তাকে দেখা হয়। কুয়াশা হেসে বলল,
” ভাবি নাও! “
বৃষ্টি আর কথা না বলে নিল। জাহিদ মালিথাও দিলেন। উপস্থিত সবাই মুখে হাসি নিয়ে সবটা দেখল। তুষারের মুখেও তৃপ্তিময় হাসি। মা ম-রা মেয়েটাকে সে ভালোবেসে বিয়ে করে এনেছিল। এখানে এতো মানুষের মাঝে সে নিজেকে কিভাবে রাখবে এটা অনেক ভাবাতো তুষারকে। কিন্তু এত জলদি যে সকলকে আপন করে নেবে সেটা ভাবনায় ছিল না। তুষারের দিকে তাকাল বৃষ্টি। দেখল তার দিকেই তাকিয়ে আছে। বৃষ্টি কৃতজ্ঞতার চোখে তাকিয়ে হাসি দিল একটা তুষারকে।
অনি দৌড়ে এসে বলল,
” এমা আমি কি দোষ করলাম তাইলে? ”
হেসে ফেলল সবাই। জাকির মালিথা বললেন,
” তোমাকেও ডাকতাম বাবা। এসো..! ”
অতঃপর অনিকেও সেমাই খাইয়ে দিল।
এরপর জাকির মালিথা জাহিদ মালিথা সেখান থেকে চলে এলেন৷ এসে সোফায় বসলেন৷
বাকিরা এক-দুই চামচ খেয়ে একে একে উঠে পড়ল সকলে।
‘
সকলে মিনিট দশেক বসল সোফায়। তার মাঝে জাকির মালিথা বাড়ির তিন জা’কে ডাকলেন। এটাও হরহামেশাই হয়ে আসছে। উনারা ঈদের নামাজের আগে তিন জা’য়ের হাতেই সালামি দিয়ে তবেই নামাজে যান৷ নামাজের আগে নাকি স্ত্রীর হাতে সালামি দিয়ে গেলে বরকত হয় এবং সোওয়াব পাওয়া যায় সেটাই মানেন জাকির মালিথা ও জাহিদ মালিথা সেই সাথে আজমিরাকে দু’ইভাই সালামি দেন।নয়তো বিষয়টা দৃষ্টিকটু।
জাকির মালিথা ও জাহিদ মালিথা আজমিরাকে সালামি দিলেন। আজমিরা বেগমের চোখ ভিজে উঠল। এই দু’ইটা মানুষ এতগুলো বছর ভাইয়ের সন্তান ও তাকে আগলে রাখছেন। কোনো কিছুর কমতি নেই। যদি মানুষ পা’য়ে হাত দিয়ে সালাম করা জায়েজ হতো তো সারাক্ষণ, সারাজীবন এই দুটো মানুষের পা জড়িয়ে ধরে শুকরিয়া আদায় করতেন। কিন্তু সেটা তো জায়েজ না তাই তিনি প্রতি ওয়াক্তে মহান আল্লাহর কাছে দু’হাত তুলে শুকরিয়া আদায় করেন এবং উনাদের জন্য হাজার বছরের হায়াত চেয়ে মোনাজাত করেন।
তিন জা আবার সেখান থেকে প্রস্থান করলেন। এরপর ছোটদের সকলকে সালামি দিলেন। তুষার, তুহিন সবাইকে দিল। তুষার আগেই বৃষ্টিকে ঘর থেকে সালামি দিয়ে এসেছিল।
এই সালামি নিতে গিয়ে বাঁধল এক চালান শিশির আর কুয়াশার মধ্যে। কিন্তু বেশিক্ষণ তা টিকল না। এমনিতে নামাজ টাইম তারউপর চাচুরা আছেন। কুয়াশা ভেঙচি দিয়ে উপরের পথ ধরল।
সকলে বেড়িয়ে গেল একসাথে নামাজের জন্য।
______
দুপুর দু’টো। এই সময়ে জাকিয়া বেগমের ভাই, বোনের ছেলে-মেয়েরা এলো। জাকিয়া বেগমের দুই ভাই ও এক বোন আছে৷ ছোট অর্থাৎ শিশিরের ছোট মামার দুই ছেলে এবং খালার দুই ছেলে ও এক মেয়ে এসেছে। শিশিরের খালার আরো একটা ছেলে আছে তার বিয়ে হয়ে গেছে। সে আসবে একবারে বিয়েতে। বড় ভাই অর্থাৎ বড় মামার এক ছেলে এক মেয়ে তাদের বিয়ে হয়ে গেছে। জাকিয়ার ভাই বোনরা আগামীকাল আসবেন৷ জাকিয়ার মা-বাবা বেঁচে নেই।
আম্বিয়া বেগমেরও মা-বাবা নেই৷ তার বোন আগামীকাল ভাইয়ের ওখানে যাবেন এরপর দুইদিন থেকে এখানে আসবেন।
আর এদিকে আজমিরা বেগমের তো মা-বাবা নেই-ই! তারউপর বোনরাও কোনো সম্পর্ক রাখেন নি। তিনি আর কাকে দাওয়াত করবেন? তবুও বিয়ের দাওয়াত করেছেন বলেছেন আসবে না। হতভাগা কপাল তার। এসব মনে করে মনটা বিষিয়ে উঠলেও সংসারে সকলের কথা মনে করে তিনি নিজেকে দমিয়ে নেন৷
‘
কাজিন গুলো এসে বাড়িতে হৈ হুল্লোড় বাঁধিয়ে দিল। কুয়াশা ঘরে ছিল সে বেড়িয়ে এসে সবাইকে পেয়ে বেশ খুশি হয়ে গেল। জাকিয়া বেগমের বোনের মেয়েটা ক্লাস টেনে পড়ে এবার এসএসসি দেবে। নাম শশী। বেশ চঞ্চল মেয়েটা। কুয়াশার খুবই ভক্ত। শশী কুয়াশাকে নামতে দেখে দৌড়ে গিয়ে বুবু বলে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরল। কুয়াশা ধরল ভালোমন্দ জিজ্ঞেস করল।
চারিদিকে চোখ বুলাল শশী। কাঙ্ক্ষিত দুইটা মানুষকে খুঁজতে চোখ বুলাল। কিন্তু পেল না এখানে। এরই মাঝে দেখল শিশির আসছে। সে বাইরে ছিল যেখানে কোরবানির কাজ চলছে। শিশিরকে আসতে দেখে মৃদু চেঁচিয়ে ডাকল,
” শিশির ভাইয়া..! “
শিশিরের শরীর আপাতত নোংরা। শিশির শশীকে দেখে চোখ মুখ উজ্জ্বল করে হেসে উঠল। শশী দৌড়ে গিয়ে কেবল-ই ধরতে যাবে তখন শিশির বলল,
” এ্যাই, এ্যাই আমার শরীর নোংরা। ধরিস না ”
শশী তাকিয়ে দেখল হাতে, টি-শার্টে রক্তের ছাপ। শশী বলল,
” তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে তুমি একায় সকল কাজ করে আসলে। লাইক ক-ষায়”
কুয়াশা তা শুনে ফিক করে হেসে দিল। শশীও হেসে ফেলল। শিশির চোখ গরম করে কুয়াশার দিকে তাকাল। কুয়াশা একটু শিক্ষা দেবার জন্য ওর দিকে তেড়ে গেল উদ্দেশ্য ওকে ঐ নোংরা হাতে ধরে ওকেও নোংরা করে দেবে। কুয়াশা মাত্রই গোসল করে শুধু ড্রেসটা পড়েছে। চুল থেকে টপটপ করে এখনো পানি পড়ছে। শিশির বলল,
” গোবর ঠাঁসা তোর হাসি বের করছি আমি, ওয়েট “
” এ্যাই বুনো ওল দেখ একদম আমাকে ছু্ঁবি না৷ কেবল গোসল করলাম আমি ”
এই বলে দৌড়াতে লাগল বসার ঘর জুড়ে৷ শিশির তো এবার আরো রেগে গেল তুই শুনে। বাড়িতে মেহমান ভর্তি আর এই গোবর ঠাঁসার ভাষার কি অবস্থা!!
এখানে বড়রা বা তুষার, তুহিন, নীহার, হিমেল, অয়ন কেউই নেই আপাতত। তারা সব বাহিরে কোরবানির কাছে। শুধু জাকিয়া, আম্বিয়া আর আজমিরা আছেন। তারাও চলে গেলেন কাজে এবার৷ এরা করুক মা-রা মা-রি। এসব দেখে দেখে চোখে ঘুন ধরে যাচ্ছে।
শিশির কুয়াশার দৌড়া দৌড়ির মাঝে নীহার এলো সাথে হিমেল। ওদের ওভাবে দৌড়াতে দেখে ভিতরে এসে থামল। থামল ঠিক শশীর পাশে। শশীকে নীহার এখনো খেয়াল করে নি। তার নজর শিশির, কুয়াশার দিকে।
এদিকে শশী পাশে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে তাকাল৷ দেখল তার সেই আরেকজন কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তি। মনটা নেচে উঠল৷ এই মানুষটাকে দেখার জন্যই তো এত জলদি এখানে আসার বায়না। মুগ্ধ নয়নে শশী তাকিয়ে রইল। তাকিয়ে থেকে দৃষ্টি, প্রাণ সব জুড়িয়ে নিল। নীহার শশীর পাশে থেকেই চেঁচিয়ে বলল,
” আরে করছিস কি তোরা? পড়ে যাবি তো কুশু? ”
” তোমার ভাইকে বলো আমাকে না ছুঁতে। বুনো ওলের বাচ্চা আমাকে নোংরা মাখাবে বলছে ”
নীহার বিড়বিড়াল,
” এই ফাজিল দু’টোকে নিয়ে আর পারি না। “
শশী তা শুনে পাশ থেকে বলল,
” এদের মাঝে নির্ঘাত কিছু আছে৷ এরা যেমন নিজেদের দেখায় তেমন না ”
কথাটা নীহারের কানে যেতেই পাশ ফিরে চায়লো৷ শশীকে দেখে অবাক হয়ে হেসে বলল,
” আরেহ শশী তুমি! কখন এলে? আমি তোমাকে খেয়ালই করি নি ”
শশী বিড়বিড়াল,
” তা করবেন কেন? আমাকে তো আপনার চোখে পড়ে না ”
এইটুকু বিড়বিড় করে বলে হেসে নীহারকে বলল,
” এইতো কিছুক্ষণ আগে। এসে এদের একে ওপরের অলিম্পিক ম্যাস দেখছি ”
নীহার হেসে ফেলল তারপর বলল,
” তুমিও ঐ কথা বললে? “
” কোন কথা? ”
” ঐ যে এদের মাঝে কিছু একটা আছে। এরা যেমন নিজেদের দেখায় তেমন না ”
” হ্যাঁ, আমার কেন জানি এমনটা মনে হয়”
” ইঁচড়েপাকা মেয়ে একটা ”
নীহার বিড়বিড় করে কথাটা বলল। তারপর বলল,
” না কিছু নেই। এরা একে ওপরের জন্মের শত্রু ”
শশী বলল,
” এদের মাঝে কিছু না থাকলেও ভবিষ্যতে কিছু একটা হবার চান্স নির্ঘাত আছে। আমি হলফ করে বলতে পারি”
নীহার তা শুনে বলল,
” সাদ্দাম আর বুশের যু-দ্ধ আরো একবার হবার চান্স থাকলেও এদের মাঝে কিছু হবার চান্স জম্মেও সম্ভব না ”
বলা শেষ করে শশীকে বলল,
” দাঁড়িয়ে আছো কেন এদিকে এসো ”
বলে চলে গেল নীহার শিশির, কুয়াশাকে থামাতে
নীহার যেতেই শশী বিড়বিড় করে বলল,
” কিন্তু আপনার আর আমার মাঝে কিছু হলেও হতে পারে নীহার ভাই। এবং হবার চান্স আমি বানিয়ে নেব। সেটা হলে তো আর দোষের কিছু নেই!!”
‘
এই শশী দুই বছর আগে খালার বাড়ি গরমের ছুটিতে বেড়াতে এসেছিল। আর সেই দুই বছর আগে এসে নীহারকে দেখে নীহারের উপর ক্রাস খেয়ে ঠাঁস করে পড়েছিল।
______
বিকেল সাড়ে পাঁচটা। সকল কাজিনরা ঘুরতে যাবার প্লান করেছিল। সেই অনুযায়ী সকলে এখন তৈরী হয়েছে উদ্দেশ্য ঘুরতে যাবে৷ ইয়াসমিনকে আজ আর আসতে দেয়নি। ইয়াসমিন নিজেও আসেনি। ঈশা এসেছে। এদের সাথে ঘুরতে যাবে। তুহিন বলেছে সে যাবে না। তুষারও যাবে না সে ক্লান্ত এখন। বৃষ্টিকে সকলের সাথে যেতে বলেছে৷
সকলে দুপুরের খাওয়া দাওয়া করে বিকেল অবধি জিড়িয়ে নিয়ে এখন বের হবে৷ কুয়াশা তৈরি হয়ে নিচে আসল। তাকে দেখে অয়ন থমকে গেল। মেয়েটার চেহারা অনেক মায়াবী। গোলগাল বাটি জোড়া ফোলা ফোলা গালের মুখটা অতি মায়াবী৷ শরীরের গড়ন একহারা লম্বা অনেকটা কুয়াশা। পাঁচ ফিট পাঁচ পাড় হয়ে যাবে। আজ সে পড়েছে হালকা আকাশী রঙের পাকিস্তানী বারিশ লং থ্রিপিচ। হালকা মেকাপ সাথে পাথরের বড় দুল, চুলগুলো ছেড়ে দেওয়া।
অয়ন দেখতে দেখতে ঘোর লাগা কন্ঠে বিড়বির করে বলল,
” ঠিক যেন একটুকরো আকাশ খসে জমিনের মাটিতে পড়েছে ”
কথাটা পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শিশির শুনে নিয়েছে। সে ফোন থেকে মুখ তুলে ভ্রু কুঁচকে অয়নের দিকে তাকাল। দেখল কি জানি এক দৃষ্টিতে দেখছে। অয়নের নজর লক্ষ্য করে সেদিকে তাকাল শিশির। দেখল কুয়াশা শশীর সাথে কথা বলছে। মেজাজটা গরম হয়ে গেল। জ্বলে উঠল কেন জানি ভেতরে সব। এই আ-বা-ল-টা কুয়াশাকে দেখে এমন মন্তব্য করল? কথাগুলো মনে মনে ভেবে নিয়ে শিশির আপন মনে বিড়বিড়াল ,
” এই আ-বা-ল-টার মন্তব্যও আ-বা-ল-টার মতোই জঘন্য”
|| চলবে ||
বুনো ওল বাঘা তেতুল গল্পের লিংক ( all part )