®রোজা রহমান
‘
রাত বারটা প্রায়। শিশির, রিজভী, নীহার,অয়ন ছাদের রেলিঙের উপর বসে আড্ডা দিচ্ছে। অনেকরকম কথায় সোভা পাচ্ছে সেখানে। কিছুক্ষণের মাঝে নীহার বলল,
” শরীরটা ভালো লাগছে না সারাদিন ধকল গেছে আমি শুতে গেলাম। “
রিজভী, অয়নও সায় দিল। শিশির বলল তোরা যা আমি আসছি। ওরা সম্মতি দিয়ে চলে গেল। শিশির বসে ভাবনাতে ডুবল। তার মস্তিষ্ক যখন অনেকরকম ভাবনা ভাবতে ব্যস্ত তখন তার কানে কারো পদধ্বনি ভেসে এলো। আস্তে আস্তে তার দিকেই এগিয়ে আসছে সে বুঝতে পারল। অতি নিকটে আসতেই সে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাল। লাইট বিহীন শুধু জোৎস্নার আলোতে আগন্তুকের মুখাবয়ব স্পষ্ট দৃষ্টিয়মান হলো৷ তাকে দেখে ভ্রু কুঁচকে ফেলল সে। এত রাতে এখানে একা কি করছে এ? প্রশ্ন ছুঁড়ল,
” তুমি? ”
থেমে আবার বলল,
” এত রাতে তুমি এখানে কী করছো অনি?”
প্রশ্ন ছুঁড়ে সে উত্তরের আশার রইল। অনি আমতাআমতা করে বলল,
” আমি এখানে, মানে আমি কিছু বলতে চাই শিশির ভাইয়া ”
ভ্রুদ্বয় আরো কিছুটা কুঞ্চিত হলো শিশিরের৷ সে বোধহয় আঁচ করতে পারল কী কথা বলতে চাইছে অনি! শিশিরকে চুপ থাকতে দেখে অনি বলল,
” শিশির ভাইয়া..!”
ডেকে আবার ঠোঁটদ্বয়সহ শুকনো ঢোক গিলে গলা ভেজানোর চেষ্টা করল মেয়েটা। শিশির উত্তর নিল,
” বলো অনি! “
নিজেকে শক্ত করার আপ্রাণ চেষ্টা করছে মেয়েটা। ভয় হচ্ছে যদি মে-রে টেরে দেয়! কিংবা রিজেক্ট করে? তাহলে সে সহ্য করবে কি করে? তার যে এই সামনে থাকা ছেলেটাকে অতি পছন্দ হয়। জীবনসঙ্গী করে সারাজীবন কাটানোর স্বপ্ন বুনে সে৷ অনি নিজেকে সামলিয়ে বলল,
” আপনাকে আমার ভালো লাগে ”
শিশির অতি স্বাভাবিক। বিচলিত ভাব একটুও আসল না তার মাঝে। অনি আবার বলল,
” ভালো লাগা অবধি না ভাইয়া। আপনাকে আমি জীবনসঙ্গী হতে চাই। আমাকে সুযোগ দিবেন? প্লিজ! ভালোবাসি আপনাকে”
শিশির এবার শান্ত স্বরে বলল,
” অনি আমার কথা তুমি মন দিয়ে শুনবে। তারপর কথা বলবে ওকে? ”
অনি তাকিয়ে রইল কথা না বলে৷
” অনি আমার তরফ থেকে তোমার প্রতি কোনো ইতিবাচক কিছু পেয়েছ কখনো? পাও নি তাই তো? তবে আমি বলি এবার, তোমার আমাকে ভালো লাগতেই পারে, পছন্দও হতে পারে এটা অতি স্বাভাবিক অনি। তোমার বয়সটাই এখন এমন। এই বয়সে সকল ছেলে মেয়ে আবেগে গা ভাসায়, যেটা ভালো লাগে সেটা পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে তোমারও হয়তো এমনটা মনে হচ্ছে। কিন্তু বিশ্বাস করো আমার তরফ থেকে তোমার প্রতি কোনো ইতিবাচক মনোভাব নেই৷ তোমাকে আমি বোনের নজরেই দেখি৷ বাচ্চা একটা মেয়ে তুমি। আমি তোমার অনুভূতি, ভালোলাগাকে সম্মান করছি অনি। হয়তো ভালোও বাসো এটাই বললে মাত্র সেটাকেও আমি সম্মান জানাচ্ছি, কিন্তু অনি আ’ম এক্সট্রিমলি স্যরি, আমি তোমার অনুভূতি, ভালোলাগা, ভালোবাসা কোনোটাতে আমাকে জড়াতে পারছি না। তোমার প্রতি ফিলিংস আমার বোন অবধি৷ তুমি ভুল জায়গায় অনুভূতি, ভালোবাসা ব্যায় কোরো না অনি। আমি জানি তুমি ছোট হলেও বুঝদার মেয়ে আমার কথা বুঝবে৷ দেখো এসবের কোথাও আমি ছিলাম না তুমি নিজেই আমার প্রতি অনুভূতি জন্মিয়েছ। আমার উপর অভিযোগ না করে নিজেকে গুছিয়ে নাও বোন। আ’ম স্যরি ”
অনি অপলক, অনিমেষ চেয়ে রইল৷ চাঁদের আলোই এই পুরুষটাকে অতি সুদর্শন লাগছে৷ সে শিশিরের পানে চেয়ে থেকে সব কথা শুনল এবং বুঝল এই ছেলে তাকে বোনের নজরেই দেখে। সত্যি তো তার দিক দিয়ে কখনো তো কোনো পজিটিভ কিছুই পাই নি! সবসময় যতটুকু প্রয়োজন তার থেকে দ্বিগুণ দূরে থাকার চেষ্টা করেছে। সে নিজেই অনুভূতি জন্ম দিয়ে নিজেই এতদূর এগিয়েছে। যাকে বলে একপাক্ষিক অনুভূতি, ভালোলাগা, ভালোবাসা। যেটা অতি কষ্টদায়ক।
আবার এটা ভেবেও সে অবাক হচ্ছে ছেলেটা কী সুন্দর করে বুঝাল! কোনো প্রকার সিনক্রিয়েট না করে শান্ত স্বরে, শান্তভাবে তার উত্তরটা কী সুন্দর বুঝিয়ে দিল। সে চাইলে এই অপরাধে তাকে চড়, থাপ্পড় ও দিতে পারত! তা না করে বুঝিয়ে বলল। আবার মুগ্ধ হলো সামনে থাকা এই ছেলেটাতে। কী অমায়িক!!
শিশির বলল,
” কোনো অভিযোগ রেখো না বোন৷ সব ভুলে বিয়ের অনুষ্ঠানটা এনজয় করো। আর এত রাতে তোমার এ্যকা এখানে আসা উচিত হয় নি একদম৷ কেউ দেখলে অনেক খারাপ হবে বিষয়টা এবং পরিস্থিতিটা। তুমি একটা মেয়ে ভুলে যেয়ো না। এখন যাও নিচে গিয়ে শুয়ে পড়ো। অনেক রাত হয়েছে। ”
শেষের কথাগুলো কঠিন ও ভারী স্বরে বলল। অনির মনটা বিষিয়ে গেছে। কষ্ট হচ্ছে অনেক৷ ভারী হয়ে এলো অন্তর৷ এখানে আর কিছুক্ষণ থাকলে সে চোখের পানি আটকাতে পারবে না। তার দূর্বলতা আর সে জানাবে না। তাই পিছন ঘুরে দ্রুত পায়ে চলে গেল। অনি যেতেই শিশির দীর্ঘ একটা শ্বাস ফেলল। কয়েকদিন পর সব ঠিক হয়ে যাবে। এগুলো সব অল্প বয়সের আবেগ।
‘
ছাদ থেকে নেমে শিশির কুয়াশার ঘর পাড় হয়ে যাবার সময় দেখল ওর ঘরের দরজা ভীড়ানো আলো জ্বলছে। ভ্রু কুঁচকে গেল। এত রাত অবধি আলো জ্বলছে আবার ঘরও খোলা কেন? বিষয়টা দেখতে এগিয়ে গেল। উঁকি দিয়ে দেখল ঘরে বাকিরা কেউ নেই, শুধু কুয়াশা ঘুমচ্ছে। সব কোথায় গেছে? শশীর, স্মৃতির তো থাকার কথা কুয়াশার সাথে! তারপর আরেকটু উঁকি দিল না নেয়। শিশির ভেতরে ঢুকল এসেছে যখন কুয়াশার অবস্থা দেখে যাওয়া যাক!
শব্দহীন পায়ে কুয়াশার সিথানে গিয়ে দাঁড়াল। দৃষ্টি দিল কুয়াশার উপর। মুখটা শুকিয়ে গেছে। মনে মনে একটা কথা ভাবল সে, এতটা রাগ উঠিয়ে এমনটা না করলেও পারত৷ এবারকার মতো না হয় একটু ছাড় দিত! মজা করেছে, করেছেই৷ যদিও বুনো ওল খেয়ে তার খুবই কষ্ট হচ্ছিল। রাগটাতো এই জন্যই আরো উঠেছে। শুধু নিমপাতা হলে মেনে নিত৷ যায়হোক তবুও রাগটা একটু কন্ট্রোল করা উচিত ছিল। ডোজটা একটু বেশি হয়ে গেছে। দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে কুয়াশা সিথানে শব্দহীনভাবে বসল৷ কপালে আলতো হাত রেখে দেখল জ্বর হালকা আছে এখনো৷ কুয়াশা বুঝল কেউ তার মাথায় হাত রেখেছে এবং পাশে বসা। কিন্তু কড়া ডোজের ঔষধে সে চোখ খুলে তাকাতে পারল না। চোখ জোড়া যেন চাচ্ছে না মেলতে। কিন্তু শরীরের স্মেলে বুঝল এটা তার ভাষায় বলা বুনো ওল৷ বুঝেই নিজেকে গুটিয়ে নেবার চেষ্টা করল৷ শিশির কি তা বুঝল? বুঝল বোধহয়। সে একটু অবাক হলো। তবে বেশি একটা পাত্তা দিল না। এবার মাথার নিচে চেক করার চেষ্টা করল। তবে বেশিকিছু বুঝল না শুধু ফোলাটায় চোখে পড়ল৷ অনেকটায় ফুলে আছে। জ্বরটা মূলত এটার জন্যই যাচ্ছেনা সহজে।
কুয়াশার শরিরের কাঁথাটা আরেকটু টেনে ঠিক করে দিল৷ এরপর উঠে যেতে নিয়েও আবার ফিরে তাকাল৷ কী হলো কে জানে? কুয়াশার মাথায় দুইবার হাত বুলিয়ে দিল। সেই হাতটা পুরোটা স্নেহমাখা ছিল। যেই স্নেহ আজ পর্যন্ত দেখায় নি, আজ এমনটা মন চাইল কেন কে জানে!
শিশির আর দাঁড়াল না৷ দ্রুত পায়ে বেড়িয়ে এলো। বেড়িয়ে পেছনে থেকে ডাক পড়ল। মায়ের কন্ঠ। ঘুরে তাকাল। দেখল তার মায়ের বিস্মিত নজর। প্রশ্ন করল,
” আম্মু তুমি এত রাত অবধি জেগে? ঘুমোও নি?”
” আমি পানি নিতে বেড়িয়েছিলাম তারপর উপরে দেখলাম কুয়াশার ঘরে আলো জ্বলছে আর ঘর খোলা ভাবলাম মেয়েটার কোনো অসুবিধা হলো কিনা দেখে আসি আর শরীরের হালচাল দেখে আসি। তো তুই এখানে কি করছিস? কুয়াশার ঘরে কি করছিলি? ওখানে তো আরো মেয়ে আছে জানিস না? কেন ঢুকেছিলি? ”
শেষের কথাগুলো একটু সন্দেহ এবং কঠিন শোনাল। শিশির ভড়কে গেল। বলল,
” স্মৃতিরা কেউ নেই ঘরে। আর তুমি যে কারণে এসেছ, সে কারণে আমিও ঢুকেছিলাম ”
” হ্যাঁ?? ”
শিশির অপ্রস্তত হলো মায়ের বিস্মিত প্রশ্নতে। বলল,
” আহ আম্মু! বলছি তো ওর ঘর খোলা আর আলো দেখে উঁকি দিয়ে কাউকে না পেয়ে ঢুকেছি। আম্মু তুমি তোমার ছেলেকে অবিশ্বাস করছ? “
শেষে কথাটা বলে কথা ঘুরাল সে৷ জাকিয়া বুঝলেন ছেলে চুরি করতে গিয়ে ধরা পরে এখন বলছে,’ আমি চুরি করি নি৷’ জাকিয়া বললেন,
” নাহ্ আমি আমার ছেলেকে চিনি। আমার ছেলে সোনার খনি। তার দাঁড়ায় ভুল কাজ কখনো হবে না৷ সে মেয়েদের অসম্মান করতে পারবে না৷ তবে আমার ছেলের সব অসম্মান একটা মেয়েতে গিয়ে আটকে যায়৷ আর সেটা তারই বোন কুয়াশা। এমনকি তাকে বোন বলে মানেও না আর আজ কিনা তার অসুস্থতার হালচাল দেখতে গেছিল? আশ্চর্য!!”
জাকিয়ার ব্যাঙ্গ করা শিশির বুঝল। শিশির নিজেকে লুকানোর চেষ্টা করল। কিন্তু সক্ষম হচ্ছে না। সত্যি এই একটা মেয়েকে সে মানতে পারে না। কেন পারে না সেটার উত্তর তার কাছে নেই। শুধু জানে যেটা ছোটবেলা থেকে করে আসছে সেটা এখন অবধি রয়েই গেছে। যা অভ্যাস, স্বভাবে পরিণত হয়েছে। মাকে সে বলল,
” আম্মু তেমন কিছু না। ছাড়ো তো। যাও তুমি ঘুমোতে যাও। কুয়াশার গায়ে এখনো একটু জ্বর আছে। মে’বি মাথার ব্যথাটার জন্য ”
বলে জাকিয়াকে কিছু বলতে না দিয়ে সে চলে গেল। জাকিয়া ছেলের যাবার পানে তাকিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ফেললেন। একটা কথা আউড়ালেন,
” কে বলবে এই ছেলের বোনের প্রতি দরদ নেই?? ”
______
সকাল সাতটা। আজ তুহিন, ইয়াসমিনের বৌভাত। ভোর থেকে উঠে সকলে কাজে লেগে পড়েছে৷ রান্না বান্নার কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। আত্নীয় স্বজনরাও উঠে সাহায্য করছে, কেউ নিজেদের কাজে ব্যস্ত। ছোটরা এখনো উঠে নি। বৃষ্টি গিয়ে কুয়াশাকে দেখে এসেছে, অন্যদেরও ডেকে এসেছে৷
কিছুক্ষণের মাঝে ইয়াসমিন নিচে নেমে এলো। বৃষ্টি গিয়ে তাকে বসাল সোফায়৷ তারপর একটু আড্ডা দিল। কারণ তার কাজ নেই আপাতত কোনো। ইয়াসমিনের সাথে আড্ডাতে ফাজলামিও করল একটু বৃষ্টি। মজা করে কিছু কথাও জিজ্ঞেস করল যা শুনে ইয়াসমিন লজ্জায় রাঙা হয়ে উঠতে লাগল৷ কিন্তু কোনো উত্তর করল না। ভাবিরা এমন মজা করেই থাকে৷
‘
নয়টার সময় কুয়াশা উঠে ফ্রেশ হলো। স্মৃতি, শশী সাহায্য করল৷ শরীর অতি দূর্বল তার। মাথা ঝিমঝিম করছে। জ্বরের জন্য মাথাটা ভারী হয়ে আছে। মনে হচ্ছে কখন পড়ে যাবে৷ তারউপর মাথায় আঘাতটা অতিরিক্ত ব্যথা৷ ঔষধ নিয়েও মনে হচ্ছে একচুলও কমেনি। সেসময়ে আজমীরা এলেন। মেয়েকে দেখে বুকটা মুচড়ে উঠল৷ কাছে গিয়ে শরীরের উত্তাপ মেপে বলল,
” জ্বরটা ছুটে গেছে৷ দেখি মাথাটা!”
বলে মথা চেক করল। ফুলে আছে সাথে রক্ত জমাট বেঁধে আছে।
” চল নিচে কিছু খেয়ে ঔষধ খাবি। হঠাৎ এমন জ্বর বাঁধালি কিসে এটাই বুঝে আসছে না আমার আর পড়লি কি করে রে তুই? আল্লাহর শুকরিয়া, মাথাটা ফেটে যায়নি। কী অবস্থা হয়েছে দেখেছিস? পরে স্মৃতি না বললে তো জানতামই না! ”
মায়ের কথা শুনে গতকালকের কথা মনে উঠে গেল৷ ভেতর থেকে বিষিয়ে উঠল মন। ওর শাস্তি তো ও পাবেই। ভাবনার মাঝে আজমীরা আবার তাড়া দিলেন৷ দূর্বল পায়ে মায়ের সাথে চলতে লাগল। আজমীরা স্মৃতিদেরও ডেকে গেলেন।
নিচে গিয়ে দেখল সকলে ব্যস্ত পায়ে কাজ সারছে৷ সকলে উঠে পড়েছে৷ এ্যকে এ্যকে সকলকেই নজরে এলো। শিশিরের দিকে নজর যেতেই চোখ মুখ কঠিন করে ঘুরিয়ে নিল। শিশির তাকিয়ে দেখল তা৷ সে কুয়াশার পাত্তা না দেওয়াটা সে নিজেও পাত্তা দিল না। বসার ঘরে থাকা সকলেই একে একে তার শরীরের হালচাল জিজ্ঞেস করল, মাথার অবস্থা জিজ্ঞেস করল। কাল স্মৃতি জানানোর পর ডক্টর এনে মাথা দেখিয়েছিল কুয়াশার৷ ডক্টর জানিয়েছে তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে, তবুও একবার যেন সিটিস্কেন করে আসে। তাহলে নিশ্চিন্তে থাকা যাবে।
এরপর আজমীরা খাবার এনে খাইয়ে দিয়ে গেল সোফায় বসেই।
_______
দুপুর চারটা। ইয়াসমিনের পরিবার ও আত্নীয় স্বজন চলে এসেছে তাদের বাড়ি থেকে। এসে সবার সাথে কথা টথা বলে খাওয়াদাওয়ার পর্ব সেরে এখন জিড়িয়ে নিচ্ছে। কিছুক্ষণ পর মেয়ে ও মেয়ে-জামাই নিয়ে রওনা হবে।
‘
বিকেল সাড়ে পাঁচটার পর সকলে ইয়াসমিনদের নিয়ে যাবার জন্য বের হলো৷ ইয়াসমিনের সাথে অনি চলে যাবার জন্য তোড়জোড় বাঁধিয়েছে। আম্বিয়া অনেক করে বলেও আটকাতে পারছেন না৷ অনি চলে গেলে এখানে এ্যকা অয়ন থাকতে পারবে না। অয়নও বলল আগামীকাল চলে যাবে তবুও শুনছে না৷ সে যাবেই৷ অয়ন বিরক্ত হলো অনেক৷ আজকের দিনটা তার থাকার প্রয়োজন ছিল৷ কুয়াশাকে তো মনের কথা জানানোই হলো ন! তবে সে আজকের সুযোগটাও হাত ছাড়া করল না।
সময়, সুযোগ বুঝে অয়ন কুয়াশাকে ডেকে নিয়ে জানালো তার মনের অনুভূতি। তাড়াহুরো করে সে সাথে সাথে উত্তর চাইল না। জানিয়ে গেল ফোনে যেন তার উত্তর জানায়। কুয়াশা অসুস্থ শরীর নিয়েও বেজায় বিরক্ত হলো অয়নের কাজে।
সব ঠিকঠাক করে ইয়াসমিনদের বেরোতে বেরোতে সন্ধ্যা হয়ে এলো। তাদের বের করে দিয়ে অনেক আত্নীয় স্বজনরাও চলে যেতে লাগল। আস্তে আস্তে বাড়ি ফাঁকা হয়ে এলো। জাকিয়ার ভাইয়ের ছেলে মেয়েরা সহ ভাইরা সকলে চলে গেছেন। বোন আর তার স্বামীও যাবার জন্য তৈরি হলেন। জাকিয়া অনেক করে আজকের দিনটা থেকে যেতে বললেন কিন্তু থাকতে নারাজ উনারা।
এদিকে সবটা শুনে নীহারের মুখটা শুকিয়ে গেল৷ শশী কোথায় তবে? আশেপাশে খুঁজল কোথাও শশী নেই। রাত হয়ে গেছে তবুও শশীর বাবা মা থাকবেন না। যখন যাবার হবে তখন শশীকে খুঁজতে লাগলেন কিন্তু কোথাও শশী নেয়। শিশিরও কোথাও পেল না। কুয়াশা সহ সকলেই তো এখনে তবে সে কোথায়? নীহার দিকে তাকালে নীহারও ইশারায় জানাল সে জানে না। রিজভী, স্মৃতি এখনো যায় নি। স্মৃতিও জানাল অনেকক্ষণই দেখেনি। কথাটা শুনে সকলের মনে ভয় ঢুকে গেল৷ নীহার দিশেহারা হয়ে উঠল৷ ঘরে ঘরে খুঁজেও পেল না কেউ। গেল কোথায় মেয়েটা? সকলের মুখে একটাই কথা শশী কোথায়?
| চলবে |
বুনো ওল বাঘা তেতুল গল্পের লিংক ( all part ) click
ফ্রি ছিলাম লিখে ফেললাম তাই। সকলের ঈদ কেমন কাটছে?
ঈদ মোবারক