ভ্রমণ কাহিনীঃ
Akbar Hossain
Euro Trip by Bus:
Netharlands- Switzerland-Italy- France
September 2019:
Part 1:
২০১৬ তে ফ্রান্স ভ্রমন দিয়ে আমার আন্তর্জাতিক ভ্রমণ শুরু হয়। আর ২০১৮ থেকে আন্তর্জাতিক চাকুরী শুরু করার পর থেকেই অনেকগুলো দেশ ভ্রমন করা হলো। প্রায় ১৩ টি দেশ ভ্রমন করা হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। প্রতিটি দেশ ভ্রমনই ছিল আলাদা আলাদা অভিজ্ঞতা কিন্তু গতবছর বাসে করে নেদারল্যান্ডস টু সুইজারল্যান্ড টু ইতালি টু ফ্রান্সের ভ্রমনটাই এযাবৎকালের সবচেয়ে সুন্দর ভ্রমন ছিল। আজক সেই ভ্রমণের বাস ভ্রমনটা সবার সাথে শেয়ার করবো। আশা করা যায় এ অভিজ্ঞতাটা যারা পরবর্তীতে ইউরোপ বাসে ভ্রমন করতে চান, তাদের জন্য কাজে দিবে।
২০১৯ এর এপ্রিল থেকে আগস্ট , টানা ৫ মাস যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়ায় কাজ করার পর সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে অফিসিয়াল কাজে নেদারল্যান্ডস আসলাম। আগে থেকেই পরিকল্পনা করা যে আমস্টারডাম অফিসে কাজ শেষে ইউরোট্রিপ দিব। সে অনুযায়ী আগে থেকেই বাস টিকেট গুলো করে রাখা। Omio নামে একটা এপস থেকে ইউরোপের বাস ট্রেন এর টিকেট কাটা যায়। আমিও সে এপস থেকে মোটামুটি রুটটা ঠিক করি। সেটা হলো আমস্টারডাম থেকে রোম, রোম থেকে মিলান, মিলান থেকে সুইজারল্যান্ডের লুগানো এবং এবং মিলান থেকে প্যারিস। সে অনুযায়ী টিকেট কাটার জন্য Omio apps থেকে চেষ্টা করি। কিন্তু আমার ক্রেডিট কার্ড না থাকায় আমি টিকেট কাটতে পারি নাই।
পরে মিলানের এবং প্যারিসের বন্ধুর সহোযোগিতায় টিকেট গুলো কাটলাম এরকমঃ
আমস্টারডাম টু জুরিখ (সুইজারল্যান্ড) – ৪৬ ইউরো
জুরিখ টু মিলান – ১৯ ইউরো
মিলান টু ভেনিস- ৪৫ ইউরো (আসা যাওয়া, হাইস্পিড ট্রেন)
মিলান টু লুগানো (সুইজারল্যান্ড) ৩৫ ইউরো (ট্রেন)
মিলান টু প্যারিস- ২৯ ইউরো
যত আগে টিকেট কাটা যায়, তত কমমূল্যে পাওয়া যায়। এ জন্য আপনার পরিকল্পনা নিশ্চিত হলে আগেই এই এপস দিয়ে টিকেট নিশ্চিত করতে পারবেন। অনেক সাশ্রয় হয়। আর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টিকেট ফেরত ও দেয়া যায়।
আর যেহেতু আমি প্রায় ২ সপ্তাহের মত ইউরোপ ঘুরবো তাই ২০ ইউরো দিয়ে লাইসামোবাইল সীম কিনে নিলাম ১০ জিবি ডাটা সহ।
আমস্টারডাম টু জুরিখঃ ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯
৫ সেপ্টেম্বর রাত ৯.১৫ টায় আমস্টারডাম সল্টারটেক থেকে Flixbus এ করে জুরিখের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার কথা। আমি ছিলাম প্লানটেজ মিডেল্লাম এর ওটিস এ। অফিসের কাজ শেষ করে ৬ টার দিকে হোটেল থেকে বের হয়ে আমস্টারডাম সেন্ট্রাল স্টেশন থেকে আমস্টারডাম সল্টারটেক এ ট্রেন এ করে আসলাম। স্টেশন থেকে বের হয়ে বাস স্টান্ড খুজে পেতে অনেক বেগ পেতে হলো। এদিক সেদিক খোঁজাখুঁজি করেও বাস স্টান্ড খুঁজে পেলাম না। সময় ও ঘনিয়ে আসতেছে। অস্থিরতা বাড়তেছে। অনেকেই জিজ্ঞেস করতেছি, কেউ বলতে পারতেছে না। পরে একজন গুগল মেপ এ গিয়ে দেখে আমাকে সাহায্য করলো। বাস স্টান্ডে গিয়ে দেখলাম যে এটা দেখতে বাস স্টান্ডের মত না। এ জন্য আমি খুজে পাই নাই।
বাস স্টান্ডে গিয়ে দেখলাম অনেক মানুষ জন অপেক্ষা করতেছে। ৯ টায় বাস চলে আসলো। লাগেজ ২ টো বক্সে রাখলো ড্রাইভার। সে ড্রাইভার আবার সবার পাসপোর্ট চেক করে ভিতরে ঢুকালো। নিদিষ্ট কোন সিট না থাকায় আমি মাঝামাঝি বাম পাশের একটা সিটে বসলাম। মাত্র সন্ধা হলো, শহরের নিয়ন আলো জ্বলে উঠলো। প্রথমবার বাসে করে ইউরোপ ভ্রমণ শুরু করলাম, অনেক পুলকিত। খুব দ্রুত বাস চলা শুরু করলো।
আরও কয়েকটা স্টপেজ থেকে লোক উঠলো। আমার পাশের সীট এখনও খালি৷ প্রথম ইউরোপ টুরের পাশের যাত্রীর জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষা করতেছি। পরে আরেকটা স্টপেজ থেকে একটা কাপল উঠলো। ড্রাইভার উঠে এসে আমাকে তুলে নিয়ে একটা আফ্রিকান যুবতী সুন্দরীর পাশে বসতে অনুরোধ করলেন। উপায় না দেখে বসে পড়লাম। অবশেষে আমার সীটমেট কে পেয়ে গেলাম। আমি আমার মত মোবাইল এ বিজি। হঠাৎ করে মেয়েটা আমাকে জিজ্ঞেস করলো আমি ইন্ডিয়ান কিনা৷ আমি উত্তর দিলাম এবং কথাবার্তা শুরু হলো। যা জানলাম মেয়েটা নাইজেরিয়ান, থাকে বেলজিয়ামে। আমস্টারডামে তার বোনের কাছে বেড়াতে গেল। এখন সে ব্রাসেলস যাচ্ছে৷ মনটা কিন্চিত খারাপ হয়ে গেল যখন শুনলাম সে ব্রাসেলস এ নেমে যাবে। গল্প করতে করতে ব্রাসেলস চলে আসলে মেয়েটা নেমে পড়লো। আমি আবার একা হয়ে গেলাম এবং চারপাশের রাত্রি কালিন দৃশ্য দেখতে লাগলাম। এবং অধরা ভালবাসার কথা চিন্তা করতে করতে ঘুমিয়ে পড়লাম।
ঘুম ভেঙে বাহিরের দৃশ্য দেখে এতই ভাল লাগলো বলে বোঝাতে পারবো না। ইউরোপের গ্রাম্য দৃশ্য গুলো অনেক সুন্দর আর সবুজের সমারোহ। লুক্সেমবার্গ হয়ে বাস সকাল আনুমানিক ৭ টার দিকে সুইজারল্যান্ডের বর্ডার বাসেলে পৌছে। বর্ডারে সুইজারল্যান্ড পুলিশ আমাদের বাসটা চেকিংয়ের জন্য থামায়। ৩ জন পুলিশ উঠে সবার পাসপোর্ট নিয়ে নিল। একটু পর সবাই কে বাস থেকে নামতে বললেন। এবং সবার লাগেজ বের করতে বললেন। প্রচন্ড হিমশীতে আমি কুকড়ে যাচ্ছিলাম। লাগেজ থেকে সুয়েটার নিয়ে গায়ে দিলাম। ৫ মিনিট পর পুলিশরা এসে রেন্ডমলি ৩ জনকে লাগেজ সহ একটা রুমে নিয়ে যায়। ঐ তিন জনের একজন হলাম আমি পোড়াকপাইল্লা। এক বাস মানুষের মধ্যে আমি পুলিশের ৩ জনের হিট লিস্টে উঠলাম। ভিসা সহ সব কিছুই আমার ঠিক ছিল তবুও প্রথমবার এরকম চেকিং এ পড়াতে খুবই নার্ভাস লাগতেছিল এবং আমি কাঁপতেছিলাম, ভয়ে না, শীতে।
আমি ছাড়া আর দুজনের একজন হলো আফ্রিকান, আর একজন এরাবিক কোন এক দেশের।
একজন একজন করে লাগেজ নিয়ে একটা রুমে ঢুকাচ্ছে। ২য় হিসেবে আমি ঢুকলাম ২ টা লাগেজ নিয়ে। সুন্দর করে আমাকে একটা চেয়ারে বসতে বল্লো। এরপর ৩ জনে আমার ব্যাগপ্যাক সহ চেক করা শুরু করলো৷ প্রতিটি আইটেম বের করলো। বড় লাগেজটা খুব চাপাচাপি করে মালামাল নিয়েছিলাম গুচিয়ে। বড় লাগেজের ভিতর ২ বোতল অলিভ ওয়েল ছিল। ওটা নিয়ে জিজ্ঞেস করতেছে এটা কি, কোথা থেকে আনলা। আমি সিরিয়া থেকে ঐ অলিভ ওয়েলটা একজনের জন্য নিয়ে আসছিলাম। সব কিছু চেক করার পর এখন বড় লাগেজে মালামাল গুলো ওরা রাখতে পারতেছে না। আমি সহযোগিতা করতে চাইলে আমাকে ধরতে দেয় নি। অনেক চেষ্টা করে, একজন লাগেজের উপরে উঠে চেপে ধরে তারপর লাগেজ লক করতে পারছে….
প্রায় ৯০ মিনিটের মত আমরা চেকিং এ ছিলাম। এ সময় এখানে তরল বিসর্জন দিলাম, ছবি তুললাম। তারপর স্বপ্নের সুইজারল্যান্ডে পদার্পন করলাম। এত্ত সুন্দর সবকিছু, চারপাশের সবুজ নৈসর্গিক সৌন্দর্য, সাজানো গোছানো রাস্তা, নিয়মতান্ত্রিক ট্রাফিক সব কিছুই স্বপ্নের মত লাগলো। চারপাশের নৈসর্গিক দৃশ্য দেখতে দেখতে জুরিখে পৌঁছে গেলাম। সকাল ৯ টায় পৌছার কথা থাকলেও পৌছতে পৌঁছতে ১১ টা বেজে গেল। সঠিক সময়ে পৌঁছলে ভাবলাম ৩ ঘন্টা সময় পাব আর ঐ সময়ে জুরিখ ঘুরে দেখবো কিন্তু সেটা হলো না।
জুরিখ সেন্টাল বাস স্টেশন এ গিয়ে দেখলাম মিলানের বাস ও লেইট। আর এটাকে কোন ভাবেই বাস স্টেশন মনে হয় না৷ কি সুন্দর সাজানো গোছানো!! আশে পাশে একটু ঘুরলাম, ছবি তুললাম। মিলানের বাসের রুট নাম্বার ছিল N 24 আর এটা যেখানে গ্রাউন্ডে লিখা সেখানেই মিলানের বাস এসে থামলো। লেইটে বাস আসায় সবাই উঠার জন্য লাইনে দাঁড়ালো এবং ড্রাইভার সবার টিকেট চেক করে ঢুকাচ্ছে। এ লাইনে হঠাৎ এক বাংলাদেশীর সাথে দেখা যে মিলান যাচ্ছে কিন্তু তার টিকেট আনতে ভুলে গেছে। পরে সে আমার মোবাইল দিয়ে তার বন্ধু কে কল করে ইমুতে টিকেট আনিয়ে বাস এ উঠলো। জুরিখের শেষ বাস স্টপেজ এ বাসটা ১০ মিনিটের জন্য দাঁড়ালে সেখানে একটা রেস্তোরাঁ থেকে ৬ ইউরো দিয়ে একটা বাটারবনের মত কিছু একটা কিনে খেলাম। ৬ ইউরো!!! প্রায় ৫০০ টাকা দিয়ে আকবর সাহেব সকালের নাস্তা করতেছে!! এটা ভাবা যায়!!! বাট ইউরোপে আসলে এমনটা হয়ই। বাসে সবার জন্য পানি কমপ্লিমেন্ট ছিল। তাই পানি কিনতে হয় নি।
বাস চলতে শুরু করলো। সাজানো জুরিখের রাস্তা শেষ করে শহরের বাহিরে বাস ছুটতে লাগলো। আহা কি বলবো!!! সারা জীবন সুইজারল্যান্ডের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা শুনে আসলাম, আলহামদুলিল্লাহ আজকে আল্লাহ আমাকে নিজ চোখে দেখার তাওফিক দিয়েছেন। এ সৌন্দর্যটা আমি বর্ণনা করতে পারতেছি না, এত সুন্দর সৌন্দর্য, রাস্তাঘাট গুলো সাজানো, পাহাড়ের পর পাহাড় সবুজ আর সবুজ। সবুজ পাহাড়ের গায়ে ছোট ছোট ঘরগুলো যেন স্বর্গের কথা মনে করিয়ে দেয়। আর প্রেমিক মন হয়তবা অধরা ভালবাসার হাত ধরে এ নৈসর্গিক সৌন্দর্যমন্ডিত পাহাড়ের ছোট্ট ঘরে একান্তে থাকার ইচ্ছে টা তীব্রতর হয়ে উঠবে। আমিও স্বপ্ন দেখা শুরু করলাম যে ভবিষ্যতে আমার অধরা ভালবাসার হাত ধরে এ পাহাড়ি ঘরে এসে ভালবাসায় নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করবো।
বাস ছুটছে স্বর্গের ভিতর দিয়ে, নীল আকাশ, আর নীল হ্রদ গুলো পাহাড়ি সৌন্দর্যের সাথে প্রেমলীলায় মেতে উঠছে। এরকম সৌন্দর্যের লীলাভূমি আমার জীবনে আমি দেখিনি। রাস্তায় একপাশে লেক, লেকের ওপাড়ে পাহাড়…. আহা চোখ জুড়িয়ে যায়। এন্ডারমেট নামক একটা জায়গায় এসে বাস ১৫ মিনিটের জন্য বিসর্জন বিরতি দিল। বিসর্জন করতে গিয়ে দেখলাম ১ ইউরো লাগে টয়লেটে ঢুকতে। ডিজিটাল টয়লেট, কয়েন দিলে দরজা খোলে না হলে না। ক্যালকুলেশন মাথায় চলে আসলো যে বিসর্জন করতে ৯৫টাকা দিব???? ৯৫ টাকা???? বেশ চিন্তিত হয়ে আসে পাশে সুযোগ খুজতেছিলাম ৯৫টাকা বাঁচানোর। হঠাৎ করে বাংলাদেশী ঐ ভাই এসে ১ ইউরো দিয়ে দরজা খুলে দিল। ত্যাগেই যে প্রকৃত সুখ সেটা ৯৫ টাকার বিনিময়ে আবার বুঝতে পারলাম। দ্রুত বিসর্জন দিয়ে নিচে নেমে আসলাম। সুইজারল্যান্ডের সৌন্দর্য এতক্ষণ বাসে বসে দেখলাম, এবার বাসের বাহির থেকে সরাসরি দেখতে লাগলাম। আল্লাহ সুইজারল্যান্ডকে স্পেশাল ভাবে বানিয়েছেন। হয়তবা স্বর্গের একটু সৌন্দর্য এখানে দিয়েছেন। ফটাফট কিছু ছবি তুললাম। সেলফি তুললাম। ভিডিও করলাম। ভাললাগা টা ভাষায় লিখে প্রকাশ করা সম্ভব না।
১৫ মিনিট বিরতির পর বাস আবার চলা শুরু করলো। পাহাড়ের ভিতর দিয়ে সুড়ঙ্গ গুলো অনেক সুন্দর, কিছু কিছু সুড়ঙ্গ পার হতে ১০/১৫ মিনিট ও লেগে যায়। এবং সুইজারল্যান্ডের সুড়ঙ্গগুলোর ভিতরটাও এত্ত সুন্দর যেটা আমি ইতালি এবং ফ্রান্সের সুড়ঙ্গে দেখি নাই। সুড়ঙ্গের ভিতর যখন বাস ঢুকে তখন চিন্তা করি কত্ত সুন্দর প্রযুক্তি ব্যবহার করে এত বড় বড় পাহাড় কেটে এ সুড়ঙ্গ গুলো বানালো।
দেখতে দেখতে সুইজারল্যান্ড পার হয়ে সম্ভবত Valico di Brogeda বর্ডার দিয়ে ইতালি তে চলে আসলাম। আবার চেকিং এর ভয়টা মনে আসলো। কিন্তু এবার আর আমাদের বাসটা থামায় নি। ইতালি ঢুকেই সুইজারল্যান্ডের সাথে পার্থক্য টা দৃশ্যমান বুঝতে পারলাম। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পুরোই আলাদা, সুড়ঙ্গ গুলো ও সুন্দর না। বাট আমার জন্য যেহেতু নতুন সব কিছু তাই ইতালি উপভোগ শুরু করলাম। অন্য রকম একটা ভাললাগা কাজ করলো যে এ ইতালিতে আসার জন্য বাংলাদেশের অনেক যুবক জীবনের ঝুঁকি নেয়। লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে, দালাল ধরে, সাগর পাহাড় মরুভূমি হয়ে ইতালিতে আসার চেষ্টা করে, কত জন মারা ও যায়। আর আমার মত হতদরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা, লক্ষীপুরের ছোট্ট একটা গ্রামের আকবর এখন ইতালি পৌঁছে গেছে। শুকরিয়া আল্লাহর দরবারে।
মিলানের ল্যামপুগনানো বাস স্টান্ডে এসে বাস থামলো।নেমে পড়লাম, মেট্রোরেল ষ্টেশনে ঢুকে ঐ বাংলাদেশী ভাই ৩ ইউরো দিয়ে টিকেট কেটে দিলেন। গন্তব্য পোর্তো রোমানা। এক বন্ধুর বাসায়। বাংলাদেশী ভাইটার একটা উপকার করার কারনে উনি আমার পিছনে ৪ ইউরো খরচ করলেন৷। অনেক কথা হলো উনার সাথে৷ উনার বাড়ি ফরিদপুর, সুইজারল্যান্ডে ২০ বছরের উপরে আছে। পুরোটা রাস্তায় উনি বিভিন্ন জনের সাথে মোবাইল এ কথা বলতেছেন।
উনার আপন বউ সহ অনেকের সাথেই। উনার কথা শুনে একটা সন্দেহ হলো আমার যেটা বিদায়বেলা নিশ্চিত হলাম। একদম শেষ মুহুর্তে উনি আমাকে এসে বললেন, তুমি আমার ছেলের বয়সী, তোমার বয়স আমিও পার করে আসছি, এখানে ঘুরতে আসছো, বান্ধবী টান্দবি লাগলে লজ্জা কইরো না, আমাকে কল দিও। অত্যাধুনিক ফ্ল্যাট সহ ব্যবস্থা করে দিব। দেশি বিদেশি ইউরোপীয়ান, কচি, কাচা সবই আছে। হা হা হা….. আমি অবাক না হয়ে যথেষ্ট শান্ত ভাবে তার অফারটা নেগিটিভলি গলাধঃকরণ করে তার থেকে বিদায় নিলাম। সে জোর করেই তার নাম্বার দিয়ে দিল আমাকে।
তারপর মেট্রো, বাস হয়ে আনুমানিক ৯ টার দিকে গন্তব্যে পৌছলাম। আমার বন্ধু একটা রেস্টুরেন্টে জব করে, সেখানে পৌছে খাওয়া দাওয়া করে তার মেস বাসায় পৌছলাম।
মিলান টু ভেনিস, মিলান টু লুগানো এবং মিলান টু প্যারিসের ভ্রমন অভিজ্ঞতা তা পরের পর্বে লিখবো।
সবাই কে অনেক ধন্যবাদ।