- রোমান্স প্রেমের গল্প
- একটি রোমান্টিক গল্প
- রোমান্টিক প্রেমের গল্প
- দুষ্টু মিষ্টি রোমান্টিক প্রেমের গল্প।
১.রোমান্স প্রেমের গল্প
ভাড়াটিয়া
মেয়েটিকে দেখেই লম্বা সময় ধরে তাকিয়ে রইলেন আনোয়ারা বেগম। এমন সুন্দরী মেয়ে হয়!
হালকা সিম রংয়ের একটা থ্রি পিস পরেছে মেয়েটা। লম্বাও তো কম না। পাঁচ ফুট পাঁচ হবে মনে হয়। গায়ের রংটাও কী সুন্দর কাঁচা হুলুদের মতো।
মনে মনে একটা পরিকল্পনা করে ফেলেছেন আনোয়ারা বেগম। ছেলেটা তার খারাপ না। এবার মাস্টার্স শেষ করেছে।
চাকরি -বাকরি এখনো হয়নি। না হলেই বা কী? তাদের কী কম আছে। ঢাকা শহরে চারটা বাড়ি। সবই তো ওই ছেলের।
মেয়েটার বিয়ে হয়েছে কি-না কে জানে? মনে হয় হয়নি। বিয়ে হলে নিশ্চয়ই বাবা -মার সাথে থাকত না।
আজই নতুন ভাড়াটিয়া আসছেন বাসায়। ভাড়াটিয়াদের দেখার জন্য আনোয়ারা বেগম বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। ওনাদের এমন সুন্দর একটা মেয়ে আছে কে জানত।
আনোয়ারা বেগম ঠিক করলেন। নতুন ভাড়াটিয়া কে দুপুরে বাসায় দাওয়াত দিবেন। ওরা বাসা চেঞ্জ করার ঝামেলায় নিশ্চয়ই রান্না বান্না করতে পারবেন না।
কী যেন নামটা বলেছিল লোকটা? মনে পড়েছে আসলাম। এটা তো মনে হয় মুসলমান নাম। অবশ্য আজকাল নাম দেখে হিন্দু মুসলমান বুঝা যায় না।
কিছুদিন আগে রায়হানের বাবার এক কলিগ আসল। নাম সান্তানু ধর। ধর-টর এ সব হিন্দুদের নামেই থাকে। তিনি হিন্দু মনে করেই রান্না বান্না করলেন। পরে জানা গেল উনি মুসলমান!
ধর্মটা জনা দরকার আছে। ধর্মের সাথে খাবারের একটা সম্পর্ক আছে। মুসলমান হলে গরুর মাংস খাওয়ান যায়। হিন্দু হলে বিরাট সমস্যা।
আনোয়ারা বেগম চিন্তা করলেন তিনি মুরগির মাংস করবেন তাহলে সমস্যা হবে না। মুরগির মাংস হিন্দু মুসলিম উভয়ই খেতে পারে।
সাথে কী করবেন? পোলাও না সাদা ভাত। মেহমান আসলে পোলাও করতে হয়। এক কাজ করা যায় পোলাও করল সাথে সাদা ভাতও থাকলো। অনেকে আবার পোলাও খেতে পারে না।
আনোয়ারা বেগম ভিতরে ঢুকে রহিমা কে ডাকলেন। রহিমা এ বাড়িতে কাজ করে। অবশ্য তাকে কাজের মেয়ে বলে মনে হয় না। কারণ রহিমা খুব ছোটোবেলা থেকে এ বাড়িতে বড়ো হয়েছে। আনোয়ারা বেগম কে মা বলে ডাকে। অনেকটা বাড়ির মেয়ের মতো থাকে।
আনোয়ারা বেগমের কোনো মেয়ে নাই। রহিমা কে মেয়ে মনে করে। শুধু যে মেয়ে মনে করে তা না। মানুষও করেছে মেয়ের মতো। রহিমা এবার এইচ,এস সি পরীক্ষা দিয়েছে। ছাত্রী হিসাবে সে ভালো। এস এস সি তে জিপিএ ফাইভ পেয়েছে। এবারও মনে হয় ভালো রেজাল্ট করবে।
ডাক শুনে ছুটে আসল রহিমা। ‘কী হয়েছে মা?’
‘ফ্রিজ থেকে মুরগির মাংস বের কর তো মা। আর দেখ তো বাসায় পোলাও চাল আছে কি না? না থাকলে আব্বাস কে দিয়ে পোলাও চাল আনা।’
‘পোলাও চাল দিয়ে কী করবা?’
‘বাসায় মেহমান খাবে।’
‘এ সময় মেহমান পেলে কোথায়! কে আসবে বলো তো?’
‘নতুন ভাড়াটিয়াদের দুপুরে খাওয়াব। ওরা তো এসেই রান্না করতে পারবে না। দুপুরের খাবারটা আমাদের এখানে খেল। রাতের মধ্যে রান্নার ব্যবস্থা করে ফেলবে। ‘
রহিমা একটুও অবাক হলো না আনোয়ারার কথায়। রহিমা জানে তার মার খুব মায়া।
আনোয়ারা বেগম আবার বারান্দায় এসে দাঁড়ালেন। বড়ো একটা ট্র্যাক থেকে মালামাল নামান হচ্ছে। মেয়েটাকে দেখা যাচ্ছে না।
মেয়ের বাবা আসলাম দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নির্দেশনা দিচ্ছেন। আনোয়ারার মেয়েটা কে দেখতে ইচ্ছে করছে! মেয়েটা কী করছে? মায়ের সাথে জিনিসপত্র গোছাচ্ছে। নাকি শুয়ে পড়েছে?
অনেক মেয়ে আছে একটু জার্নি করলেই ক্লাত হয়ে যায়। এরা অলস ধরনের মেয়ে। এ মেয়েটা কেমন কে জানে?
অলস মেয়ে হলে একটু সমস্যা। রায়হান অলস মানুষ পছন্দ করে না।
একবার গিয়ে দেখে আসা যায়। বাড়িওয়ালা হিসাবে সে খবর -টবর নিতেই পারে। সাথে দুপুরের দাওয়াতটাও দিয়ে এলো।
চলবে–
## ভাড়াটিয়া
Nabil Mahmud
সকল পর্বের লিংক একসাথে
https://kobitor.com/category/uponas/varatia/
2. একটি রোমান্টিক গল্প
বসুন্ধরা শপিং মলে গেছি একটা কাজে। কাজ সেরে লেভেল এইটে উঠে খাওয়া দাওয়া করে লিফটে নিচে নামলাম। বেড়িয়ে আসব,চোখে পড়ল smartex ব্র্যান্ডের দোকানে ৫০ পারসেন্ট ডিসকাউন্ট দিচ্ছে। ভাবলাম একটু ঢুঁ মেরে যাই।
বেশ কিছু পান্জাবী চোখে পরল। তিনটা পান্জাবী সিলেক্ট করলাম, তিনটাই পছন্দ হয়েছে। কোনটা নেব ভাবছি। আমার পাশে একজন সুন্দরী মহিলা পান্জাবী দেখছিলেন। হঠাৎ আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,একটু পিছনে ঘুরুন তো!
আমি অবাক হয়ে বললাম,ম্যাডাম পিছনে ঘুরব কেন?
তিনি ধমকের সুরে বললেন, আহা,ঘুরুন না!
অন্যকে ধমক দিয়ে কথা বলা সুন্দরীদের জম্মগত অধিকার। এই অধিকার হরন করার ক্ষমতা কোন পুরুষের নাই।
সুন্দরী মেয়েদের কথা অবশ্যই শুনতে হয় বিবেচনা করে আমি ঘুরলাম, তিনি তার হাতের সাদা পান্জাবীটা আমার পিঠের উপর বিছিয়ে দিলেন, চলবে, এই সাইজটা ঠিক আছে। আমার হাসবেন্ড দেখতে অনেকটা আপনার মত, স্বাস্হ্যও একই রকম।
আমি মজা করে বললাম, আপা, আপনার চয়েজ আছে।
মেয়েটা অবাক হয়ে বলল, মানে কী?
এই যে আমার মত একজন হ্যান্ডসাম, গুড লুকিং, মাইডিয়ার টাইপ মানুষের মত হাজবেন্ড বেছে নিয়েছেন!
মেয়েটা ফিক করে হেঁসে ফেলল। হাসতে হাসতে বলল, আপনি তো বেশ মজার মানুষ!
আমি দুঃখের ভান করে বললাম, এই কথা আপনি বললেন ম্যাডাম! অথচ আমার বউ বলে আমার মা নাকি সারাজীবনে এক ফোঁটা মধু আমারে খাওয়ায় নাই। আমি যা বলি সবই নাকি করলার রসের মত তিতা!
মেয়েটা আবারও হেসে ফেলল। আমার মনে হল, মেয়েটার হাসি অনেক সুন্দর।
হাসি থামার পর বলল, আপনি পান্জাবী পছন্দ করেছেন?
আমি বললাম, না। তিনটাই চয়েজ হয়েছে। কোনটা নিব ডিসিশন নিতে পারছি না। কোনটা নেই বলেন তো। নীলটা নিব?
নাহ, নীলটা আপনাকে মানাবে না।
তাহলে হলুদটা নেই কী বলেন?
ধুর মিয়া! এই বয়সে হিমু সাজবেন?রাস্তা দিয়ে হাটবেন,সবাই আপনাকে হিমু বলে ডাকবে। আপনার রুপা তো ঘরে।
মহা যন্ত্রনা, তাহলে কোনটা নেই!
আপনি এক কাজ করেন,সাদাটা ট্রায়াল দিয়ে আসেন।
আমি সাদা পান্জাবী নিয়ে ট্রায়াল রুমে ঢুকলাম। সাদা আমার প্রিয় রং নয়।সুন্দরী মহিলা বলেছে,ফেলতে তো আর পারি না! তাছাড়া মহিলার মধ্যে এক ধরনের কর্তৃত্বের ভাব আছে। আমার ধারনা এই মহিলা সব সময় তার হাজবেন্ডকে তিনশো মিটার দৌড়ের উপর রাখে।
আমি সাদা পান্জাবী পরে বের হলাম।
মেয়েটা বলল, ওয়াও,আপনাকে তো সেই রকম লাগছে। একেবারে বোম্বের হিরো,আপনি এটাই নিন।
আমি বললাম, আমার বউ কিন্তু সাদা রং পছন্দ করে না।
দূুর! সাদা রংয়ের উপর রং হয় নাকি! আপনি এটাই নিন। পরে আরাম পাবেন। বউ কিছু বললে আমার কথা বলবেন।
সাহস দিচ্ছেন? আমি কিন্তু বউকে ভয় পাই,,
দুর! ভয় কীসের? আপনি পুরুষ মানুষ না?
ঠিক আছে ম্যাডাম,ভরসা যখন দিচ্ছেন তাহলে এটাই নিই।
তিনি সেলসম্যানকে ডাকলেন,দুইটা সাদা পান্জাবী প্যাকেট দাও।
দুইটা না ম্যাডাম,আমি তো একটা পান্জাবী কিনবো।
আরে মিয়া,একটা আমার উনির জন্য।আজ আমার জম্মদিন। মার্কেট করতে বের হয়েছি। আমার হাজবেন্ড বাইরে একজনের সাথে কথা বলছে। উনি খুবই ব্যস্ত মানুষ,আমাকে সময় দিতে পারেন না। আজকে জোর করে ধরে নিয়ে এসেছি। এক্ষুনি চলে আসবে।
আমার কাছে নগদ টাকা নাই। কার্ড শো করতে হবে। আমি কার্ড বের করে কাউন্টারের দিকে যাচ্ছি, মেয়েটা পিছনে থেকে ডেকে বলল,একেকটার দাম কত?
সেলসম্যান বলল, ডিসকাউন্ট বাদ দিয়ে সতের শ টাকা ম্যাডাম।
মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়ে বলল, সম্ভব হলে দুইটার দাম পে করে দিন। আমার হাজবেন্ড এক্ষুনি চলে আসবে। আমি একটার দাম দিচ্ছি আপনাকে।আমি দেখি আরেকটা চয়েজ হয় কি না।
আমি কাউন্টারে গেলাম। কার্ড দিয়ে দুটোর বিল পরিশোধ করে বেরিয়ে এলাম।
বাইরে বেরিয়ে আসার পর মনের মধ্যে খচখচ করতে লাগল,সাদা পান্জাবী কিনলাম!একুশে টিভি অফিসের সামনে চলে এসেছি,খচখচ ভাবটা কাটছে না।
মহিলা বলল আর আমি রাজী হয়ে গেলাম।সাদা রং আমার দু,চোখের বিষ। বউ দেখলেও হাউকাউ করবে। চেন্জ করে আনলে কেমন হয়?এখন তো বোধহয় মহিলা চলে গেছে।
আমি আবার smartex দোকানের সামনে আসলাম।দোকানে ভিতরে সামান্য ভীড় দেখা যাচ্ছে।
সেই মহিলাকে দেখা যাচ্ছে,তিনি সেলসম্যানের সাথে রাগারাগি করছেন।
সেলসম্যান বলছে, বিশ্বাস করেন আপা,আপনার হাজবেন্ড পান্জাবী নিয়ে গেছে। আল্লাহর কসম।
বিটলামী করস আমার সাথে!চড় মেরে তোর সব দাঁত ফেলে দেব।আমার হাজবেন্ড আসবে কোথা থেকে!দোকানে আমি একা এসেছি।
না আপা, সাথে আপনার হাসবেন্ড ছিল,পান্জাবী ট্রায়াল দিল,আপনি পছন্দ করে দিলেন,,, হঠাৎ আমাকে দেখে বলল, ঐ তো আপনার হাজবেন্ড!
সেলসম্যান দরজার দিকে আঙুল তুলে আমাকে দেখাল।
লে হালুয়া! আমি আবার ঐ মহিলার হাজবেন্ড হলাম কবে!
সেলসম্যান আমার দিকে এগিয়ে এল,এই যে ভাইজান আপনাকে আমি দুইটা পান্জাবী দিয়েছি,আপনার ওয়াইফ বিশ্বাস করছে না,ব্যাগ খুলে দেখুন, দুইটা পান্জাবী আছে।
ব্যাগ পিন করা ছিল। ব্যাগ খুলে দেখি সেখানে দুইটা পান্জাবী।
এক মিনিট লাগল ব্যাপারটা বুঝতে।সেলসম্যান আমাকে মহিলার হাজবেন্ড মনে করে দুই পান্জাবী এক ব্যাগে দিয়েছে যা আমি খেয়াল করিনি। একটার দাম যে মহিলা দিবেন বলেছেন, সেটাও খেয়াল ছিল না।
সরি বলব, না সেলসম্যানকে বকা দিব বুঝতে পারলাম না।
আমি বোকার মত দাড়িয়ে রইলাম।সেলসম্যান দুই ব্যাগে দুই পান্জাবী ভরে দু,জনের হাতে দিয়ে দিল। আমি আর পান্জাবী চেন্জ করার কথা বলতে পারলাম না।
মেয়েটাও বোধহয় বিষয়টা ধরতে পারছে, তাই কোন উচ্চবাচ্য করল না। লজ্জিত গলায় বলল, আপনি কোথায় গিয়েছিলেন? দেখেছেন অবস্থা, উনি এখনো আসেননি। আপনি এক কাজ করুন ভাই, একটার টাকা আপনি ফিরিয়ে নিন। আমার জন্য আপনি কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন? আজ আমার জম্মদিন। আজকেও তাকে এত কাজ করতে হবে?
অবস্থা দেখে মনে হল, তার চোখে পানি চলে এসেছে। আমি অস্বস্তিতে পড়ে গেলাম। হাসিখুশি মেয়েটা কাঁদছে, বিষয়টা আমার মনে নাড়া দিল।
আমি বললাম,শুভ জম্মদিন ম্যাডাম।
সে অবাক হয়ে আমার দিকে তাকাল।
আমি বললাম,আজ আপনার জম্মদিন, এই দিনে মন খারাপ করতে নাই। আশা করছি দিনটা আপনার ভাল কাটবে।ভাল থাকবেন। বলেই আমি হাঁটা দিলাম।
মেয়েটা বলল, আপনার টাকা?
মনে করেন, এক ভাই তার বোনকে জম্মদিনের উপহার দিল।
মেয়েটা লজ্জিত গলায় বলল, ছিঃ ছিঃ কী বলছেন? আমি এটা কখনোই নিব না,ভাই।
আমি বললাম, ঠিক আছে,আপা। যদি কখনো আবার আপনার সাথে দেখা হয়,তখন টাকাটা ফেরত দিয়েন। এখন একটু হাসুন তো !
তিনি হেসে ফেললেন। আমি বাইরে বেরিয়ে আসতে আসতে বললাম, ভালো থাকবেন, আপা।
আপনিও ভাল থাকবেন ভাই।
আজ সেই নাম না জানা মহিলার জম্মদিন।
শুভ জম্মদিন, ম্যাডাম।
#হানিফ_ওয়াহিদ
৩.রোমান্টিক প্রেমের গল্প
টুনটুনির বিয়ে ঠিক হয়েছে। এই কথা জানার পর গত তিনদিন ধরে আমি ঘুমাতে পারছি না। আমার ভেতরটা মনে হয় কেউ ছিঁড়ে নিয়ে যাচ্ছে। অনেক যুদ্ধ করেছি নিজের সাথে, কিন্তু সাহস করে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। শেষ পর্যন্ত টুনটুনির জন্য আমি কিছুই করতে পারছি না। কি করে করবো! টুনটুনি’যে একজন কাজের মেয়ে, তার জন্য আমার মতো ভদ্রঘরের ছেলের কিছুই যে করার থাকেনা!
টুনটুনিকে যখন আমাদের বাসায় কাজ করতে আনা হয়েছিলো তখন আমি ক্লাস এইটে পড়তাম। আর আমার ছোটবোন নীলা পড়তো ক্লাস সিক্সে । আর টুনির বয়স তখন হয়তো বারো পেরিয়ে তেরো হলো।
সেদিন টুনিকে নিজেদের বাসায় দেখে আমি ঘাড় শক্ত করে নিজের রুমে বসে ছিলাম সারাদিন । টুনি এভাবে এই বাড়িতে আসুক সেটা আমি কখনো চাইনি। আমার ছোট্ট মনের ভেতরে ওর জন্য বিশাল একটা জায়গা রেখেছিলাম। সে জায়গাটা খুবই আপন একান্ত আমাদের নিজের। কিন্তু টুনিকে শেষ পর্যন্ত কাজের মেয়ে হতে হলো ! কাজের মেয়ে!
আমার ছোটবেলা সবচেয়ে প্রিয় খেলার সাথি টুনি। যে কিনা খেলার সময় রানী সেজে থাকতেই বেশি পছন্দ করতো! ভাগ্য তাকে এখন তাকে আমাদের বাসার কাজের মেয়ে করে দিয়েছে। মানতে পারছিলাম না সেদিন। আমার ছোট্ট বুকে সেদিন ঝড় উঠেছিলো! ভীষণ তোলপাড় করা আর সব ভেঙে ফেলার ঘূর্ণিঝড়।
টুনিদের বাড়ী আমার নানার বাড়ীর কাছেই। টুনির দাদা আর আমার নানা ছিলো। দূরসম্পর্কের ভাই।
প্রতিবেশীও ছিলো ওরা। যখনই আমি নানার বাড়ি যেতাম টুনি হতো আমার সকল কাজের সঙ্গী এবং সকল খেলার সাথি। টুনটুনিকে সবাই আদর করে টুনি ডাকে। ওর মা খুব মজার মজার পিঠা বানাতো, টুনি ফ্রকের নিচে লুকিয়ে সেই পিঠা এনে আমাকে খাওয়াতো। বলতো আমি বড় হলে তোমাকে নিজের হাতে পিঠা বানিয়ে খাওয়াবো। তখন প্লেটে তুলে তুলে তোমাকে পিঠা দেবো।
আরও একটু ছোটবেলা আমরা যখন ছোটছোট মাটির হাঁড়িপাতিল দিয়ে রান্নাবাটি খেলতাম , তখন ছটফটে টুনিকে সবাই রান্নাবাটি খেলায় সঙ্গী হিসাবে চাইত। কারন টুনি দেখতে যেমন সুন্দর ছিলো তেমনি খেলার ঘরকন্নার কাজে ছিলো পটু।
হাসলে টুনির গাল ভেতরে ঢুকে এক অপার্থিব সৌন্দর্য সৃষ্টি করতো। তাইতো টুনি ছিলো সমবয়সী সকলের পছন্দের সাথি। কিন্তু টুনি শুধু আমার জন্যই রান্না করতে ভালোবাসতো। এই নিয়ে ঝগড়া করে আমার বড় খালার ছেলে রাজিব ভাইয়ের সাথে একবার মারামারিও হয়েছিলো।তখন থেকে সবাই টুনিকে সাকিবের বৌ বলে ক্ষেপাতো, কিন্তু টুনি একদম রাগ করতো না। কারন আমি তাকে চুপি চুপি বলেছিলাম বড় হয়ে আমি তোকে সত্যিকারের বিয়ে করবো। বাড়ীর বড়রাও আমাদের দুজনকে নিয়ে অনেক মজা করতেন।
কিন্তু হঠাৎ বলা- কওয়া ছাড়াই টুনির মা মারা গেলেন । টুনি পাশে বসে থেকেও বুঝতে পারেনি তার মা মারা যাচ্ছে। ভাত খেতে বসে হঠাৎ কাশতে কাশতে মানুষ কিভাবে মরে যায় এটা টুনি বুঝতেই পারেনা। সে নিজেওতো খাওয়ার সময় বিষম খায়,কই মরেতো যায় না! শুধু মা মারা গেলো।
তারপর টুনির বাবা কয়েকমাসের মধ্যেই আবার বিয়ে করলেন। বিয়ে করে নতুন শ্বশুরবাড়ীতে ঘরজামাই হয়ে চলে গেলেন। আর সেই নতুন শ্বশুর বাড়ীতে টুনির কোন জায়গা হয়নি।
টুনির মা যখন মারা গিয়েছিলো তখন মাত্র টুনি ক্লাস ফাইভের ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েছিলো। তারপর কিছুদিন অসহায় টুনি তার খালাদের কাছে ছিলো। কিন্তু অর্থনৈতিক অসচ্ছল খালারা টুনিকে বেশিদিন কাছে রাখেননি।
কয়েকমাস করে তাদের কাছে থাকার পর টুনির জায়গা হলো আমার মায়ের কাছে। বড় খালা আমার মাকে বুঝালেন টুনিকে নিয়ে গেলে বিনা পয়সায় একটা পার্মানেন্ট কাজের মেয়ে পাবেন। আমার মা তাই খুব আগ্রহ নিয়ে টুনিকে নিজের কাছে নিয়ে এলেন। বাসার কাজের জন্য এর চাইতে ভালো মেয়ে কোথায় পাবেন।
আমাদের বাসায় টুনির নতুন জীবন শুরু হলো। ঘরের ফুটফরমাশ থেকে বড় কাজ সবকিছুই সে হাসিমুখে করতে থাকে। এখানে আসার পর আমি একদিনও টুনির সাথে কথা বলিনি। টুনি সামনে এলেই আমি মুখ শক্ত করে বসে থাকি। টুনিও কখনও আগ বাড়িয়ে আমার সামনে আসেনি।
ছোটবেলার সকল কথা যেন অলৌকিক জাদুতে সে ভুলে গেছে। যেন সে সত্যিই একজন কাজের মেয়ে। টুনি সারাদিন কাজ করে অবসরে
নীলার বই নাড়াচাড়া করে সময় কাটায়। পুরোনো খাতায় ছবি আঁকে। আমার সবচেয়ে কষ্ট লাগতো যখন আমার মা টুনিকে কাজের মেয়ে বলে সকলের কাছে পরিচয় দিতো।
একদিন আমি আমার প্রাণের বন্ধু বিপ্লবকে বলেছিলাম টুনির প্রতি আমার ছোটবেলার ভালোলাগার কথা। এখনও বয়ে বেড়ানো আমার কিশোর মনের গহীনে লুকিয়ে রাখা প্রেমের কথা আরেক কিশোরকে বলে কিছুটা হালকা হয়েছিলাম সেদিন।
বিপ্লব বললো, —–তুই বড় হয়ে বিদেশে চলে যাস,সেখানে কেউ কাউকে নিয়ে মাথা ঘামায় না। তখন টুনিকে তুই নিজের কাছে নিয়ে যেতে পারবি ।
বিপ্লবের কথাটা সেদিন খুব মনে ধরেছিলো।
আমি স্কুল ছেড়ে কলেজে উঠে গেলাম।
কয়েকদিন যাওয়ার পর আমি একদিন দেখলাম আমার খাতায় একটা ছবি আঁকা, ছোটছোট দুজন ছেলেমেয়ে হাঁড়িপাতিল খেলছে, মেয়েটা মাথায় ঘুমটা টেনে একজনকে পাতে খাবার তুলে দিচ্ছে। ছবিটা দেখে আমার মনটা আরও খারাপ হলো।
একদিন আমি মাকে বললাম,
——মা টুনিকে স্কুলে ভর্তি করে দাও। শুধু কাজ করলেই হবে পড়তে হবেনা? টুনিতো পড়ালেখায় বেশ মনোযোগী ছিলো।
——এতদিন পর আবার কি পড়বে? আর লেখাপড়া করলে ঘরের কাজ কে করবে শুনি? ওকেতো বাসার কাজের জন্যই এনেছিলাম।
-আমি বললাম
—–মা তুমি যদি এখন টুনির মায়ের মতো মরে যাও তবে কি নীলাকে আমার কোন খালা কাজের মেয়ে বানাবে?
সেদিন মা আর কিছু বলেননি, আমার সাথে তর্ক না করে টুনিকে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে নাইনে ভর্তি করে দিলেন। আমাকে বললেন পড়া বুঝানোর নামে টুনিকে যেন না ডাকি। তারপর পাশের বাসার একটা ভার্সিটি পড়ুয়া মেয়েকে রাখলেন টুনিকে পড়াতে। তারপর
তিনি কি বুঝলেন কে জানে। টুনির কাজের পরিমান আরও বাড়িয়ে দিলেন। আর নজর রাখতে লাগলেন টুনির প্রতি।
আমি পড়ালেখা করতে চলে এলাম দেশের বাইরে। শুনেছি অনেক কষ্টের পর একসময় টুনি এসএসসি পাশ করেছে। আমার মায়ের সুনাম এখন ঘরে ঘরে। একটা কাজের মেয়েকে যে পড়ার সুযোগ দিয়েছেন,এটা এই যুগে কে করে? এখানে আমি পড়ার ফাঁকে চাকরি করি। মনে মনে এখনও ছোটবেলার মতো ঘরকন্না খেলি। মনের গহীনে স্বপ্নের বীজ বুনি একদিন টুনিকে বিদেশে নিয়ে আসবো। যেখানে কেউ ওকে কাজের মেয়ে বলবে না। শুধু আমার শৈশবের সাথীকেই সবাই চিনবে।
কয়েকদিন আগে মা ফোন করেছেন। অনেক বছর পর নাকি টুনির এক খালা এসেছেন টুনির খবর নিতে। টুনি এখন পূর্নাঙ্গ যুবতী। বিয়ের বয়সও হয়েছে। সুন্দরী টুনিকে তিনি তার ছেলে জামালের বৌ করতে চাইলেন । টুনির খালাতো ভাই জামাল আমারই বয়সি। শান্তশিষ্ট জামালকে আমি ভালোকরেই চিনি। সে আমাদের রান্নাবাটি খেলায় সবসময় দোকানদার হতো। এতদিন সে সৌদি আরবে থাকতো। এখন একেবারে দেশে চলে এসেছে। কিছু কৃষিজমি কিনেছে আর গ্রামের বাজারে একটা মুদির দোকান দিয়েছে। টুনিযে তারও খেলার সাথি।
তাই ছোটবেলায় হারিয়ে যাওয়া খেলার সাথি টুনির জন্য জামাল বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে তার মায়ের কাছে।
আমার মা এই প্রস্তাবে যেন হাতে চাঁদ পেলেন। তিনি বুঝলেন টুনির জন্য এরচেয়ে ভালো ছেলে আর পাওয়া যাবেনা। তাই তড়িঘড়ি করে রাজি হয়ে গেলেন,,, আর টুনি! ওর কি বলার থাকবে! আমি নিজেইতো আজ পর্যন্ত কিছু বলতে পারিনি।
গল্প
টুনটুনির বিয়ে
সুস্মিতা মিলি
৪.সেরা প্রেমের গল্প
নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও পুরুষ মৌমাছি কেন স্ত্রী মৌমাছির সাথে মিলন করে?
এরা মৃত্যুর জন্য মোটেও ভয় পায় না।একজন মানুষকে মারতে হলে প্রায় ১১০০ হুলের বিষ প্রয়োজন। আনুমানিক ১ কেজি মধু সংগ্রহের জন্য ১১০০ মৌমাছি প্রায় ৯০ হাজার মাইল পথ ঘুরতে হয়। যা কিনা চাদের কক্ষপথের প্রায় তিনগুণ!
ফুলের হিসাব করলে দেখা যায় ১ কেজি মধু সংগ্রহের জন্য প্রায় ৪০ লক্ষ ফুলের পরাগরেণু স্পর্শ করতে হয়। সবকিছু ঠিক থাকলে ভালো মৌসুমে প্রায় ৫৫ কেজি মধু জমা হয়। এসব তথ্য থেকে আমরা বুঝতে পারি কর্মী মৌমাছি কি পরিমাণ পরিশ্রমী।
অপরদিকে রাণী মৌমাছি শুধু খায় আর ডিম পারে!
রাণী প্রতিদিন ১৫০০ থেকে ২৫০০ ডিম দেয়। পুরুষ মৌমাছির স্বভা বেশ অদ্ভুত। এরা জীবনেও কোন কাজ করে না, এমনকি কর্মী মৌমাছিকে এদের খাবার পর্যন্ত মুখে তুলে দিতে হয়। এদের জীবনের একমাত্র লক্ষ হলো রাণী মৌমাছির সাথে মিলিত হওয়া!
মিলন মৌসুমে প্রতিদিন দুপুরবেলা চাকের সর্বাধিক সক্ষম পুরুষ মৌমাছিগুলো একটি নির্দিষ্ট স্থানে ভিড় জমায় যাকে বলা হয় পুরুষ ধর্মসভা!
ঠিক একই সময়ে চাক থেকে রাণী মৌমাছি ঘুরতে বের হয়, যাকে বলা হয় “দি মিটিং ফ্লাইট”
রাণী মৌমাছি হঠাৎ করে ঢুকে পড়ে পুরুষ ধর্মসভা এলাকায়। সে এসেই এক বিশেষ ধরণের গন্ধ ছড়িয়ে দেয়, যার ফলে শত শত পুরুষ মৌমাছি উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এর পরপরই রাণী মৌমাছি উড়ন্ত অবস্থায় পছন্দমত পুরুষের সাথে মিলন করে। রাণী মৌমাছি একেবারে পর্যায়ক্রমে ১৮-২০টা পুরুষ মৌমাছির সাথে মিলিত হতে পারে!
অদ্ভুত ব্যাপার হল, যৌন মিলনের সময় পুরুষ মৌমাছির এন্ডোফেরাস বা যৌনাঙ্গ ভেঙ্গে যায় এবং তখনই মারা যায় পুরুষ মৌমাছি। এজন্যই এই মিলনকে বলা হয় “দি ড্রামাটিক সেক্সুয়াল সুইসাইড”।
একটি মৌচাক একটি মাত্র রাণী আ স্ত্রী মৌমাছি থাকে। রাণীকে কেন্দ্র করেই মৌচাক গড়ে ওঠে।
যদি কোন ডিম থেকে স্ত্রী মৌমাছির জন্ম হয় সে শিশু স্ত্রী মৌমাছিকে কর্মী মৌমাছিরা লুকিয়ে রাখে যেন রাণীর নজরে না আসে। রাণীর নজরে পড়লে ঐ শিশু স্ত্রী মৌমাছির নিশ্চিত মৃত্যু । শিশু রাণী মৌমাছিটি বড় হলে দুই রাণীর মধ্যে যুদ্ধ হয়। এতে দুটি পথ খোলা থাকে । হয় যুদ্ধে মৃত্যু ( একজন অপর জনকে হত্যা করে মৌচাকের কর্তৃত্ব গ্রহণ করে) না হয় দুজন আলাদা হয়ে পৃথক দুটি মৌচাক গড়ে তোলা।
অনাকাঙ্খিতভাবে যদি কোন রাণী মৌমাছি মারা যায় তবে সে খবর ১৫ মিনিটের মধ্যে সকল কর্মী মৌমাছি জানতে পারে এবং সম্মিলিতভাবে নতুন রাণী মৌমাছি তৈরি করার উদ্যোগ নেয়।
আরো কিছু অদ্ভুত বিষয় রয়েছে, যা জানলে আপনারা অবশ্যই অবাক হবেন,,, ৫০০ গ্রাম মধু তৈরিতে ২০ লক্ষ ফুল লাগে। শ্রমিক বা কর্মী মৌমাছি সারা জীবনে আধা চা চামচ মধু তৈরি করতে পারে। আরো একটা মজার ব্যাপার হলো, পৃথিবীতে মধু একমাত্র খাদ্য যা কখনোই পঁচে না!!!
সংগৃহীত
৫.দুষ্টু মিষ্টি রোমান্টিক প্রেমের গল্প
দেড়দিনের পরিচয়ে সে সরাসরি বিয়ের প্রপোজাল দিল।
এক পলক চোখে চোখ রাখা আর ৩৬ ঘণ্টায় তার সাথে টুকটাক মেসেঞ্জারে চ্যাটিং ছাড়া ভিন্ন কোনো পরিচয় নেই।বিরক্ত হয়ে বললাম,
– কি জন্যে বিয়ে করতে চাইছেন বলুন তো, আমার মুখটাও দেখেন নি। হিজাবে মুখ ঢাকা ছিল। তাও আপনার সামনে ছিলাম কয়েক সেকেন্ড।
-চোখদুটো দেখেছি।ওই যথেষ্ট।আপনার বাড়ির ঠিকানা দিন।
-দিব না।
-ঠিক আছে। আপনার আম্মুর নাম্বারটা দিন।
-আমি বিয়ে করব না।
-বিয়ে করতে বলি নাই নাম্বার চাইছি।
-তাও দিব না।
-উফ! আপনি এত্ত জেদী।
সেই কলেজ লাইফ থেকে ইনসমোনিয়া সঙ্গী।রাত জেগে বই পড়ছি আর তার প্রশ্নের জবাব দিচ্ছি । একসময় সে নিজেই বলল,
-ঠিক আছে।ব্লক করুন। বার বার আপনাকে বিরক্ত করতে নিজেরই খারাপ লাগছে।
হেসে ফেললাম।কেউ যখন বলে আমাকে ব্লক করুন তাকে ব্লক করার ইচ্ছাটাই যেন মরে যায়। তারপরও সকালে উঠে ব্লক করব ভেবে ঘুমাতে গেলাম।
“শুয়ে ছিলাম। পাশ ফিরতে অনুভব করলাম কাঁধের নিচে কারো হাত। তার ঘুম ভাঙল।
-পানি খাবে?
-না।
-তোমার হয়ত গরম লাগছে।
সে উঠে গিয়ে জানালা খুলে দিয়ে এল।”
ঘুম ভাঙার পর স্বপ্নের আবেশ থাকে কয়েক সেকেন্ড। ঘুম থেকে উঠার পরই সারা শরীর শিরশির করে উঠল। একী স্বপ্নে দেখেছি আমি!
ধাতস্থ হতে সারা সকাল লাগল। এরমাঝে স্বপ্নের ব্যাখা খুঁজতে লাগলাম। ঘুমানোর আগে তারসাথে কথা হয়েছিল অনেকক্ষণ, সে বিয়ে করতে চায় এব্যাপারটা মাথায় ঘুরছিল।তাই অচেতন মন এধরনের স্বপ্ন দেখাতে সাহায্য করেছে।
“
“
সে এসে রোজ কলেজ গেটে দাঁড়িয়ে থাকে।
আমিই সামনে যাই।
-ভালো আছেন?
-হুম। ভালো।
-কেন এসেছেন?
-ইচ্ছা। আপনাকে তো আসতে বলি নি।
আর কোনো কথা না বাড়িয়ে বাড়ি এসে পড়ি।
তার পাগলামোর সংজ্ঞা খুঁজে পাই না।সে বাংলাদেশ এসেছে মাত্র কয়েকদিনের ছুটিতে। এরমাঝে পরিবার-বন্ধুবান্ধব ছেড়ে অপরিচিত কাউকে এক পলক দেখার জন্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে কি শান্তি পায়,ঈশ্বর জানে।
অথচ ঘুমালেই স্বপ্নে দেখি, আমি তার স্ত্রী।দুজনে ঘনিষ্ঠ ভঙ্গীতে গল্প করছি, সে চুলে বেনী করে দিচ্ছে। কি যেন অপরাধে তারসাথে ভীষণ রাগারাগি করছি। একদিন স্বপ্নে দেখলাম,সে অনেকদূরে নিয়ে যাচ্ছে আমায়। তারকোলে আমার মাথা।
-কোথায় নিয়ে যাচ্ছ আমায়?
-কোথাও না।তুমি ঘুমাও।
সে আলতো করে চুলে বিলি কেটে দিতে লাগল।
ঘুম ভাঙার পর নিজেই লজ্জা পাই। এধরনের স্বপ্নের কথা কারো কাছে শেয়ারও করা যায় না।
;
;
ছেলেবেলার স্কুল ফ্রেন্ড নক করে বলল,
-দোস্ত প্লিজ। ভাইয়ার সাথে একদিন বস, অত্যন্ত আমার খাতিরে।যদি ভালো না লাগে আমি নিজে তাকে না করে দিব। প্রমিজ।
অতঃপর বসলাম। যতবার তার দিকে তাকিয়েছিলাম, মনে হচ্ছিল এমানুষটা চেনা। কত জন্ম থেকে চিনি তাকে।কয়েক হাজার যুগ। রেস্টুরেন্ট থেকে বের হবার সময় সে বলল,
-প্লিজ, তোমার পরিবারের কারো ফোননাম্বার দিয়ে যাও।
-তুমি নয় আপনি।
-ঠিক আছে,আপনি। এবার দিন।
নাম্বার দিয়ে আসলাম।
পরিচয়ের ঠিক ২১ দিনের মাথায় আমাদের বিয়ে হল। ফুল নেই, লাইটিং নেই, বাসর সাজানোর লোক নেই।দুজনের উপর দিয়ে সারাদিন প্রবল ঝড় বয়ে গেছে। কোথাও কেউ নেই। সে ঘুমাচ্ছে । আড়াইদিন পর তার ফ্লাইট। পাসপোর্ট হারিয়ে ফেলেছে। তার এবং আমার বাড়ির কারোর চোখে আজ ঘুম আসবে না। অথচ সে ঘুমাচ্ছে।ঠোঁটের কোণায় হাসি,রাজ্য জয়ের হাসি। তার পাশে শুয়ে একদৃষ্টিতে তাকে দেখছিলাম।এই কি সে মানুষটা যাকে আমি স্বপ্নে দেখতাম। ছুঁয়ে দেখতে ভয় করছে। এই বুঝি স্বপ্ন ভেঙে যাবে।
#তোমার _আমার একদিন
হাবিবা সরকার হিলা