আজ থেকে দুই বছর আগে যে প্রেমিকার থেকে ৩ হাজার টাকা মেরে দিছিলাম। সে আজ হুট করে বাসায় এসে উপস্থিত। আব্বার সামনে আমাকে মালিহা বললো ” এক্ষুনি সুদে আসলে ৫ হাজার টাকা দেও নাহলে আমি এলাকার মানুষজন ডাকতে বাধ্য হবো”।
আব্বা হুজুর আমার মুখের দিকে তাকায় জিজ্ঞেস করলেন, কিরে সত্যি তুই এই মাইয়ার থেকে টাকা নিছিস? আমি আমতা আমতা করে উত্তর দিলাম। জ্বী আব্বা হুজুর, আজ থেকে দুই বছর আগে এই আপুর থেকে ৩ হাজার টাকা নিয়ে গাইবান্ধা ট্যুরে গেছিলাম। কথা ছিল ট্যুর থেকে এসে টাকা ফিরত দিবো। কিন্তু যথা সময়ে দিতে পারিনাই বলে নাম্বার অফ করে যোগাযোগ বন্ধ করে দিছি।
এরমধ্যে সাবেক প্রেমিকা চিল্লায় বলে উঠলো আরে রাখেন নিজেদের মধ্যে বকবকানি। আমি আমার টাকা ফিরত চাই ই চাই। নাহলে এক্ষুনি চিৎকার দিবো। আমি কিছু বলার আগে আব্বাই বললো, আরে থামেন থামেন আম্মাজান। আমি এক্ষুনি টাকা নিয়ে আসতেছি৷ আপনাকে চিৎকার দিতে হবে না। আমরা খানদানি লোক। কারও এক টাকা মেরে খাইনা। বলেই আব্বা রুমে গিয়ে ১ হাজার টাকার ৫ টা নতুন নোট এনে প্রেমিকার হাতে দিলে সে চলে গেলো।
মালিহা চলে যেতেই ফারিয়া, নাদিয়া আর সাদিয়া এসে উপস্থিত। এদের দেখেই আমার মুখ শুকিয়ে কাঠ। আব্বা হুজুর বললেন এরা কারা? ফারিয়া,নাদিয়া ও সাদিয়া একসাথে উত্তর দিলো আমরা আপনার ছেলের সাবেক প্রেমিকা। আপনার ছেলে আমার থেকে ৪ হাজার নাদিয়ার থেকে ৫ হাজার আর সাদিয়ার থেকে ৬ হাজার টাকা নিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দিছে।আমরা আমাদের টাকা ফিরত চাইতে এসেছি।
আব্বা আমার দিকে তাকাতেই আমি বলে উঠলাম ফারিয়ার টাকা দিয়ে সাজেক। নাদিয়ার টাকা দিয়ে সিলেট আর সাদিয়ার টাকা দিয়ে কক্সবাজার ট্যুর দিছিলাম আব্বা।যথা সময়ে টাকা দিতে পারিনাই এইজন্য ওদের সাথে যোগাযোগ রাখিনাই।
ফারিয়া কিছু একটা বলতে যাবে এর আগে আব্বাই বলে উঠলো বুঝেছি তোমরা টাকা চাইতে এসেছ। টাকা না দিলে চিৎকার করে লোকজন ডাকবা। তোমরা অপেক্ষা করো আমি আসতেছি বলে ঘরে ঢুকে টাকা নিয়ে এসে ফারিয়াকে ৬ হাজার।নাদিয়াকে ৭ হাজার আর সাদিয়াকে ৮ হাজার টাকা দিয়ে দিলেন।
ওরা চলে গেলে আব্বা তার পুরাতন জুতা জোড়া খুঁজতে লাগলেন। আমার বুঝতে বাকি রইলো না মাইর আজ একটাও মাটিতে পরবে না। সোজা বাসা থেকে দৌড়ে পালালাম বোনের বাসার দিকে।
আজ এক মাস বোনের বাসায় আছি৷ আব্বা অবশেষে মাফ করে দিয়ে বাসায় নিয়ে যেতে এসেছে। আব্বা হুজুর বলছে জীবনে কোনো মেয়ের থেকে যেন আর এক টাকা না নেই। এগুলো খারাপ কাজ।
অনেক দিন পর বাসায় এসে মেজাজ খুব ফুরফুরে লাগছে। বান্ধবীদের সবাইকে কল নিয়ে রেস্টুরেন্টে আসতে বললাম। ওদের ট্রিট দিতে হবে। ওরা না থাকলে এই ফোনটা কিনাই হইতো না। বিশেষ করে সাদিয়া না থাকলে। কিপটে বাপের থেকে টাকা আদায় করার বুদ্ধি এই সাদিয়াই বের করছে। যাক অবশেষে ফোনটা তাও হাতে পেলাম।
আব্বার সাথে একদিন
রিফাত আহমেদ