ইসলামিক সেরা গল্প 1
তুমি আমার জন্য খেজুর এনেছো কিন্তু এগুলোর বীচি ফেলো নি !
এটা একটি বিখ্যাত আরবী প্রবাদ, কিন্তু এই প্রবাদটির উৎপত্তি কীভাবে হয়? আর কিভাবেই বা এটি বিখ্যাত হয়ে উঠে?
উমার বিন খাত্তাব ( রাঃ ) কে কেউ একজন জানালো যে, আবু বকর ( রাঃ ) ফজরের সালাত শেষ করে মদীনার সীমানার দিকে যান; একটা ছোটো বাড়িতে বেশ কিছু সময় কাটান; তারপর নিজের ঘরে ফিরে আসেন।
আবু বকর ( রাঃ ) কী করতেন না করতেন তার সব খবরই উমার ( রাঃ ) রাখতেন; শুধুমাত্র এই বাড়িতে কী হতো- তা তাঁর অগোচরে ছিলো।
দিন যায়, কিন্তু খলীফা আবু বকর ( রাঃ ) এর ঐ বাড়িতে গমন বন্ধ হয় না। উমার ( রাঃ ) সিদ্ধান্ত নিলেন- ফজরের পর আবু বকর ( রাঃ ) ঐ বাড়িতে গিয়ে কী করেন, তা তিনি নিজের চোখে একবার দেখে আসবেন।
উমার ( রাঃ ) ঐ ঘরে গিয়ে দেখতে পেলেন- ওখানে একজন বৃদ্ধা বাস করেন। বৃদ্ধার কেউ নেই, তারউপর বৃদ্ধা অন্ধ।
উমার ( রাঃ ) অত্যন্ত আশ্চর্যান্বিত হলেন। বৃদ্ধার সাথে আবু বকরের কী সম্পর্ক- তা জানার জন্য তিনি আগ্রহী হয়ে উঠলেন। উমার ( রাঃ ) বৃদ্ধাকে জিজ্ঞাসা করলেন,
এই লোক আপনার বাড়িতে প্রতিদিন কী জন্য আসে?
বৃদ্ধা জবাব দিলেন,
আল্লাহ্র কসম ! আমার জানা নেই। সে প্রতিদিন আসে, তারপর আমার ঘর ঝাড়ু দেয়, সবকিছু পরিষ্কার করে, তারপর আমার জন্য খাবার তৈরি করে, তারপর কোনো কথা না বলেই চলে যায়।
আবু বকর ( রাঃ ) এর মৃত্যুর পর আমীরুল মুমিনীন উমার ( রাঃ )ও একইভাবে বৃদ্ধার সেবা করতে আরম্ভ করলেন। বৃদ্ধা কিছু একটা টের পেয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, ” তোমার বন্ধু কি মারা গেছেন?
উমার ( রাঃ ) অন্ধ বৃদ্ধার প্রশ্ন শুনে প্রচণ্ড অবাক হলেন। উমার ( রাঃ ) বৃদ্ধাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ” আপনি কীভাবে বুঝলেন?
বৃদ্ধা জবাব দিলেন,
তুমি আমার জন্য খেজুর এনেছো, কিন্তু খেজুরগুলোর বীচি ফেলো নি।” ( অথচ এই সামান্য বিষয়টাও তোমার বন্ধুর নজর এড়াতো না )
উমার ( রাঃ ) হাঁটু গেঁড়ে বসে পড়লেন। তাঁর চোখ অশ্রুতে পরিপূর্ণ হয়ে গেলো। আর এই অবস্থায় উমার ( রাঃ ) তাঁর বিখ্যাত উক্তিটি বললেন,
হে আবু বকর ! আপনি পরবর্তী খলীফাদের কাজ অত্যন্ত কঠিন করে গেছেন।
( আল্লাহ্ তাঁদের উপর রহম করুন )
ইসলামিক সেরা গল্প 2
একবার পড়ে দেখুন, আনন্দে মনটা ভরে যাবে!
একবার নবিজি (সাঃ)কে খুবই প্রফুল্ল দেখে আয়িশা রাযিয়াল্লাহু আনহা বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ, আপনি তো খুবই খোশ মেজাজে আছেন, আমার জন্য এখন একটু দুআ করুন না.!
আয়িশা (রাঃ) এমন আবদারে মুচকি হেসে রাসুল (সাঃ)আল্লাহকে বলতে লাগলেন -ইয়া আল্লাহ্, আয়িশা পূর্বে করেছে এমন সকল গুনাহ আপনি ক্ষমা করে দিন। আয়িশা পরে করবে এমন সকল গুনাহও আপনি ক্ষমা করে দিন। আয়িশা প্রকাশ্যে করেছে এমন গুনাহ আপনি ক্ষমা করে দিন। আয়িশা গোপনে করেছে এমন গুনাহও আপনি ক্ষমা করে দিন। আয়িশা বুঝে করেছে এমন গুনাহ আপনি ক্ষমা করে দিন, না-বুঝে করেছে এমন গুনাহও আপনি ক্ষমা করে দিন।
নবিজি (সাঃ) এর মুখে নিজের জন্য এত সুন্দর দু’আ শুনে খুশিতে আয়িশা (রাঃ) আত্মহারা। আম্মাজান আয়িশা (রাঃ) কে খুশি হতে দেখে প্রীত হলেন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও।
তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ‘আয়িশা, আমার দু’আয় তুমি খুশি হয়েছো.? আয়িশা (রাঃ) বললেন, ‘আমি খুবই খুশি হয়েছি ইয়া রাসুলাল্লাহ।’
তখন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, জানো আয়িশা! তোমার জন্য যে দু’আ করলাম, ঠিক একই দুআ প্রতি সালাতের পর আমি আমার প্রতিটা উম্মতের জন্যই করি।’
(সহিহু ইবনি হিব্বান ৭১১১; মুসনাদুল বাযযার ২৬৫৮)