- সুন্দর শিক্ষনীয় গল্প।
- নতুন শিক্ষনীয় গল্প।
- হাদীসের শিক্ষনীয় গল্প।
- শিক্ষনীয় গল্প বাংলা।
- শিক্ষনীয় প্রেমের গল্প।
- শিক্ষনীয় গল্প facebook
1. সুন্দর শিক্ষনীয় গল্প
ভার্সিটিতে পড়ার সময় ক্লাস টেনে পড়ুয়া একটা মেয়েকে টিউশনি করাতাম, নাম ছিলো অর্পিতা। ৪-৫ দিন পড়ানোর পর বুঝতে পেরেছিলাম যে মেয়েটার মাঝে যথেষ্ট ব্রিলিয়েন্সি আছে কিন্তু কোনো একটা কারণে মেয়েটা পড়ায় তেমন মনোযোগ দিতে পারছে না।
আমি মেয়েটাকে অনেকবার বলেছিলাম,
“তোমার মত আমারও একটা ছোট বোন আছে। সে তার সব সমস্যার কথা আমার কাছে শেয়ার করে। তোমার যদি কোন সমস্যা থেকে থাকে তাহলে আমায় বলতে পারো।”
কিন্তু মেয়েটা সব সময় আমার কথা এড়িয়ে যেতো। আমি ধরেই নিয়েছিলাম হয়তো প্রেমঘটিত কোনো সমস্যা, তাই শেয়ার করতে চাইছে না।
একদিন অর্পিতার বাসায় পড়াতে গিয়ে দেখি বাসা ভর্তি মেহমান। অর্পিতার মামা মামী এসেছে। অর্পিতার মা বললো আজ পড়াতে হবে না। আমি যখন চলে যাচ্ছিলাম তখন অর্পিতা বলেছিলো,
– ভাইয়া একটু দাঁড়ান।
কিছুক্ষণ পর অর্পিতা একটা হলুদ খাম আমার হাতে দিয়ে বলেছিলো,
– ভাইয়া, আপনার এই মাসের বেতনটা..
মেসে এসে খাম খুলে যখন টাকা বের করতে যাই তখন দেখি টাকার সাথে একটা চিঠি। চিঠিতে লেখা ছিলো,
প্রিয় ভাইয়া,
কথাটা কিভাবে বলবো বুঝতে পারছি না। অনেকবার ভেবেছি আপনাকে বলবো কিন্তু কেন জানিনা বলতে পারি নি। তাই আজ বাধ্য হয়ে চিঠিতে বলছি। ছোটবেলা থেকেই আমার বড় মামা আমায় খুব আদর করে। আমায় মা মা বলে ডাকে আর দামী দামী সব জিনিস গিফট করে। যখন ক্লাস সেভেনে উঠি তখন থেকেই আসলে বুঝতে পারি মামা যখন আমায় জড়িয়ে ধরে তখন ইচ্ছাকৃত ভাবেই আমার স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেন। আমি ক্লাস টেনে উঠার পরেও উনি আমাকে হুট করেই জড়িয়ে ধরে চুমু খান আর সেই চুমুটাও খুব আপত্তিকর। আমি অনেকবার চেষ্টা করেছি বাবা মাকে বিষয়টা বলতে কিন্তু বলার সাহস পাই নি। কারণ বাবা মার চোখে বড়মামা ফেরেশতার মত। বড় মামা গতকাল বাসায় এসেছে। আমি যত উনার থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করি উনি ততই মা মা বলে আমার কাছে আসেন। আমি এখন কি করবো ভাইয়া?
চিঠিটা পড়ার মত কয়েকমিনিটের জন্য স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। বুঝতে পারছিলাম না কিভাবে একটা পুরুষ একটা মেয়েকে মা ডেকে সম্বোধন করে নর পশুর মত এমন একটা কাজ করতে পারে?
পরের দিন যখন অর্পিতাকে পড়াতে গেলাম তখন অর্পিতা আমার চোখের দিকে তাকাতে পারছিলো না। আমি অর্পিতাকে বলেছিলাম,
— অর্পিতা, তোমারও একটা ছোট বোন আছে। তোমায় যেমন তোমার মামা আদরের বাহানা করে এমন করে। তোমার বোন যখন বড় হবে তার সাথেও তোমার মামা ঠিক এমন কাজটাই করবে। আর এর জন্য একদিন তুমি নিজেই নিজেকে দোষারোপ করবে। তাই কি হবে না হবে এইসব চিন্তা বাদ দিয়ে তুমি প্রতিবাদ করো। নেক্সট টাইম তোমার মামা এমন করলে তুমি উনারকে সরাসরি বলো..
সেদিন রাতেই অর্পিতা আমায় ফোন দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলো,
“ভাইয়া আমি আজ প্রতিবাদ করেছি। কিন্তু বাবা মা আমায় ভুল বুঝলো এমনকি মা আমার গায়েও হাত তুলেছে!”
পরের দিন সকালে আমি অর্পিতাদের বাসায় গিয়ে ওর মার হাতে অর্পিতার চিঠিটা দিয়ে বলেছিলাম,
— আন্টি, অর্পিতা এখন ছোট নেই। ও এখন বুঝতে পারে কোনটা ভালো স্পর্শ আর কোনটা খারাপ। একটা মেয়ে কখন অসহায় হয়ে পড়ে জানেন? যখন একটা মেয়ে তার নিজের মাকেও তার সমস্যাটার কথা বলতে পারে না।
আমি কথাগুলো বলে যখন বাসা থেকে বের হয়ে আসি তার কিছুক্ষণ পরেই আন্টি আমায় ফোন দিয়ে বলে আমি যেন কাল থেকে অর্পিতাকে পড়াতে না যাই। আমিও তখন কিছু বলতে পারি নি। তখন শুধু একটা কথায় বারবার মাথায় আসছিলো আর সেটা হলো, মাঝে মাঝে একটা মেয়ে কতটাই না অসহায় হয়ে যায়….
|
|
একটা দোকানে কম্পিউটার চালানো শিখতাম। দোকানদারটা মধ্যবয়সী লোক। প্রতিদিন বিকাল ৪টার দিকে বোরখা পড়া একটা মেয়ে দোকানের সামনে দিয়ে হেঁটে যেতো আর ঐ মেয়েকে দেখেই উনি চিৎকার করে ‘শরীফের একটা বোরখা পড়া মেয়ে পাগল করেছে’ এই গানটা গাইতেন। পর্দা করলে মেয়েরা অনেক বাজে কথা শুনা থেকে মুক্তি পায়। কিন্তু কিছু জানোয়ার আছে ওরা পর্দা করা মেয়েদেরকেও ছাড়ে না। একবার খেয়াল করলাম দোকানে একটা বোরখা পড়া মেয়ে এসেছে। আর দোকানদার মেয়েটাকে এটা ওটা সমানে কিনে দিচ্ছে। মেয়েটা যখন চলে যাবে তখন আমি পিছন থেকে গাইতে লাগলাম, একটা বোরখা পড়া মেয়ে পাগল করেছে। আমার গান শুনে লোকটা দৌঁড়ে এসে আমায় একটা থাপ্পড় মারলো।
আমি অবাক হয়ে বললাম,
–আপনি আমায় থাপ্পড় মারলেন কেন? আপনিও তো বোরখা পরা মেয়ে দেখলে এইভাবে গান গান। কই আমি তো আপনাকে থাপ্পড় মারি নি। আজ যে আমায় থাপ্পড় মেরেছেন সেটা মনে রাখবেন কারণ আজকের পর আপনাকে যদি কোনো মেয়েকে দেখে ঐ রকমভাবে গান গাইতে দেখি তাহলে এই থাপ্পড়টা আপনাকে ফিরিয়ে দিবো।
এরপর আর কখনো দেখি নি ঐ দোকানদারকে বোরখা পরা মেয়ে দেখে গান গাইতে। বরং ঐ মেয়েটাকে দেখে এখন মাথা নিচু করে রাখে…
|
|
আমার স্ত্রী শ্রাবণীর অফিসের নিচে অনেকক্ষণ ধরে বসে আছি । হয়তো কোনো মিটিং চলছে তাই ওর আসতে দেরী হচ্ছে। তাই পাশের দোকানে গিয়ে একটা সিগারেট কিনলাম। সিগারেটে যখনি আগুন ধরাবো তখনি শ্রাবণী নিচে নামলো। আমি সিগারেটটা ফেলে দিয়ে ওর কাছে গিয়ে বললাম,
— কি ব্যাপার, তোমাকে দেখতে বাংলা সিনেমার ডায়নী রিনা খানের মত লাগছে কেন?
শ্রাবণী আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
– পিয়াস, আমি চাকরিটা ছেড়ে দিবো। প্রতিদিন বসের খারাপ নজর গুলো আর আপত্তিকর কমেন্ট গুলো আমি আর নিতে পারছি না।
আমি মুচকি হেসে শ্রাবণীকে বললাম,
— হেরে যাবে?
শ্রাবণী অবাক হয়ে বললো,
-মানে?
আমি শ্রাবণীর হাতটা ধরে বললাম,
— তোমার মনে আছে। তোমার সাথে প্রেম করার সময় ভুলে একবার তোমার ঠোঁটে কিস করে ফেলেছিলাম। তুমি তখন আমার নাক বরাবর ঘুষি মেরেছিলে। সেদিন কিন্তু তুমি আমার অন্যায় কাজটা মেনে নাও নি। তাহলে আজ কেন মেনে নিয়ে হেরে যাবে?
শ্রাবণী কতক্ষণ চুপ থেকে তারপর আমার হাতটা শক্তকরে চেপে ধরে বললো,
– চলো এক জায়গায় যাবো…
শ্রাবণী কলিংবেল বাজাতেই এক ভদ্রলোক দরজা খুললো। শ্রাবণীকে দেখেই ভদ্রলোক অবাক হয়ে বললো,
~আরে তুমি এইখানে?
শ্রাবণী মুচকি হেসে ভদ্রলোককে বললো,
– আসলাম, এমনিতেই।
ভদ্রলোক আমাদের ভিতরে আসতে বললেন। ভিতরে ঢুকে শ্রাবণী ভদ্রলোককে বললো,
– স্যার ভাবীকে একটু ডাকেন। উনার সাথে পরিচিত হই।
ভদ্রলোকের স্ত্রী আসতেই শ্রাবণী ভদ্রলোকের স্ত্রীকে বললো,
– ভাবী, আপনার স্বামী আজ সকালে আমার গলার নিচে তাকিয়ে বলেছে আমার গলার নিচের তিলটা না কি খুব সুন্দর। তাই আমিও আমার স্বামীকে নিয়ে এসেছি আপনার গলার নিচে কোনো তিল আছে কি না সেটা খুঁজে বের করার জন্য।
শ্রাবণীর কথা শুনে ভদ্র মহিলা চমকে গেলো আর ভদ্রলোক চোরের মত মাথা নিচু করে রইলো। শ্রাবণী তখন ভদ্রলোককে বললো,
– স্যার, নেক্সট টাইম আমাকে বাজে কোনো কমেন্ট করলে আমি আমার স্বামীকে নিয়ে আপনার বাসায় আসবো আর আপনার চোখের সামনে আপনার স্ত্রীকেও আমার স্বামী ঠিক একইভাবে কমেন্ট করবে, যেটা আপনি আমায় করেছিলেন…
ভদ্রলোকের বাসা থেকে বের হয়ে আমি রিকশা খুঁজতে লাগলাম। এমন সময় শ্রাবণী আমার হাতটা ধরে বললো,
– পিয়াস, চলো না আজ হেঁটে বাসায় যাই…
কালো পিচঢালা পথের পাশে হলুদ সোডিয়ামের বাতিগুলো জ্বলে উঠেছে। শ্রাবণী এক হাতে আমায় শক্ত করে ধরে রেখেছে, আর আরেক হাতে ধরে রেখেছে আইসক্রিম। আমরা বাসার দিকে হেঁটে যাচ্ছি…
একটা মেয়েকে কখনো করুনা না করে একটু সাপোর্ট দিন। বিশ্বাস করেন, মেয়েটা ঠিকই সব সমস্যার সমাধান করবে; ওর আপন নারী শক্তি দিয়ে।
হয়তো এমন একটা দিন আসবে যেদিন সমাজের প্রতিটা পুরুষ নারীদের জৈবিক চাহিদা মেটানোর বস্তু কিংবা সন্তান উৎপাদনকারী যন্ত্র মনে না করে মানুষ হিসাবে সম্মান করবে.
#নারী
আবুল বাশার পিয়াস
2. নতুন শিক্ষনীয় গল্প
অফিসে বের হবার ঠিক আগ মুহূর্তে মা আমায় ডেকে বললো,
-“তোর বউয়ের তো ৭মাস চলছে। তা বউমাকে কবে বাপের বাড়ি দিয়ে আসবি?”
আমি কিছুটা অবাক হয়ে মাকে বললাম,
–ঠিক বুঝলাম না মা! এই অবস্থায় শ্রাবণীকে(আমার বউ) বাপের বাড়ি দিয়ে আসবো কেন?
মা তখন বললো,
-“দেখ আমাদের বংশের একটা নিয়ম হলো বাড়ির বউয়ের প্রথম সন্তান বাপের বাড়ি হয়। প্রথমবার বাচ্চার মা হবে বলা তো যায় না কখন কি হয়। কিছু একটা হলে দেখা যাবে তোর শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমাদের দায়ী করবে”
আমি মাকে বললাম,
— মা, তুমি তো জানোই আমার শ্বশুরবাড়ি গ্রামে তাছাড়া ওদের বাসা থেকে হাসপাতাল ক্লিনিক অনেক দূরে। আল্লাহ না করুক, দেখা গেলো শ্রাবণীর কোন সমস্যা হলে ওরা সময় মত হাসপাতালেই নিয়ে যেতে পারবে না। তারচেয়ে শ্রাবণী এইখানেই থাকুক। তাছাড়া শ্বাশুড়ি বেঁচে থাকলে একটা কথা ছিলো। এই অবস্থায় ও বাপের বাড়ি গেলে ওর দিকে কে খেয়াল রাখবে?
আমার কথা শুনে মা বিরক্ত হয়ে বললো,
-” জানিস বাচ্চা হলে কত টাকা খরচ হয়? আজকাল মেয়েরা তো নবাবজাদী হয়ে গেছে। একটু ব্যাথা সহ্য করতে পারে না। তাই ব্যাথা উঠার আগেই পেট কেটে বাচ্চা বের করে ফেলে। তাছাড়া এইসব সিজার করতে অনেক টাকা পয়সা লাগে। তাই আমার কথা মত বউমাকে ওর বাপের বাড়ি দিয়ে আয়। ওদের মেয়ে ওরা এইসব ঝামেলা দেখুক
আমি মুচকি হেসে মাকে বললাম,
— শ্রাবণী ওদের বাড়ির মেয়ে হলেও সে এখন আমার স্ত্রী আমার অনাগত সন্তানের মা। তাই ওদের থেকে আমার দায়িত্ব আর কর্তব্যটা অনেক বেশি। মা, আমার অফিসের দেরি হয়ে যাচ্ছে আমি গেলাম। আর কয়েকটা টাকা পয়সার জন্য আমি আমার স্ত্রী আর সন্তানকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবো না
এই কথা বলে আমি যখন মা’র রুম থেকে বের হলাম তখন খেয়াল করি শ্রাবণী দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে আছে। আমায় দেখে শ্রাবণী শুকনো হাসি হেসে বললো,
-“পিয়াস, আল্লাহ রহমতে আমার কিছু হবে না। তুমি আমায় আমার বাপের বাড়ি দিয়ে এসো”
শ্রাবণীর শুকনো হাসির পিছনে কতটা কষ্ট আর অভিমান জমা ছিলো সেটা আমি ঠিক বুঝতে পেরেছিলাম।
আমি তখন ওর হাতটা ধরে বললাম,
— তোমার মুখে শুকনো হাসি মানায় না, সতেজ হাসিটা বেশি মানায়। চিন্তা করো না আমি আছি তো তোমার পাশে ….
অফিস থেকে ফিরতে ফিরতে বিকাল ৫টা বেজে গেলো। আমি তড়িঘড়ি করে বাসায় ঢুকে শ্রাবণীকে বললাম,
–তুমি তৈরি হয়ে নাও তো ডাক্তারের কাছে যেতে হবে
শ্রাবণী তখন বললো,
-” আমি ঠিক আছি তো। শুধু শুধু ডাক্তারের কাছে যেতে হবে না”
শ্রাবণীর কথা শুনে আমি কিছুটা রেগে গিয়ে বললাম,
— তোমার এত বুঝতে হবে না। ডাক্তার বলেছিলো ১৫ দিন পর পর একবার চেকাপ করাতে আর আজ ১৭ দিন চলছে। যাও তৈরি হয়ে আসো
শ্রাবণীকে নিয়ে বাসা থেকে বের হবার সময় মা আমাদের দেখে বললো,
-” তোদের ঢং দেখে আর বাঁচি না। আমিও দুই সন্তানের মা হয়েছি। আমার কখনো দুইদিন পর পর ডাক্তারের কাছে তোদের মত দৌড়াতে হয় নি
মা’র কথা শুনে আমি হেসে বললাম,
— মা, দরজাটা লাগিয়ে দাও। আমাদের আসতে ১ঘন্টার মত দেরি হবে…
ডাক্তারের চেম্বারের সামনে যখন বসে ছিলাম তখন খেয়াল করি শ্রাবণী মাথা নিচু করে নিরবে চোখের জল ফেলছে। আমি তখন ওর হাতটা শক্ত করে ধরে বললাম,
– প্লিজ মা’র কথায় কিছু মনে করো না। সেকালের মানুষ তাই এত কিছু বুঝে না। আমি আছি তো তোমার পাশে…
—
—–
অফিসের বস এপ্লিকেশনটা হাতে নিয়ে পড়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
-” বাচ্চা হবে আপনার স্ত্রীর আর আপনি ছুটি চাইছেন একমাসের। ব্যাপারটা কি?
আমি বসকে বললাম,
— স্যার, আমি এখন থেকে পুরোটা সময় আমার স্ত্রীর পাশে থাকতে চাই
বস কিছুটা অবাক হয়ে বললো,
-” তাই বলে এক মাসের ছুটি আমি আপনাকে কিভাবে দিবো?” আপনি মহিলা হলে আপনাকে না হয় গর্ভকালীন ছুটি দেওয়া যেতো কিন্তু আপনি তো পুরুষ। আপনাকে কিভাবে এত দিনের ছুটি দেই?
আমি বসকে তখন বললাম,
— গর্ভকালীন ছুটিটা একজন গর্ভবতী মহিলার পাশাপাশি একজন পুরুষেরও সেটার প্রাপ্য। প্রতিটা পুরুষের দায়িত্ব স্ত্রীর গর্ভকালীন এইসময়ে স্ত্রীর পাশে থাকা। তেমনি প্রতিটা স্ত্রীও চায় এই সময়টাতে তার স্বামী যেন তার পাশে থাকে। ৬ বছর চাকরি করে এই কোম্পানিকে আমি অনেক কিছু দিয়েছি। কোম্পানি কি আমায় এখন ১মাস সময় দিতে পারে না? আমি তো বেশি কিছু চাই নি
বস আমার কথাগুলো চুপচাপ শুনে বললো,
– ঠিক আছে, আপনি যান আমি বিষয়টা দেখছি..
|
|
কয়েকদিন হলো বড় আপা আমাদের বাসায় এসেছে। আমি অদ্ভুতভাবে খেয়াল করছি বড় আপার যে কাজ গুলো নিজের করা উচিত সেই কাজ গুলো শ্রাবণীকে দিয়ে করাচ্ছে। সেদিন খেয়াল করি বড় আপা একমনে টিভিতে সিরিয়াল দেখছে আর শ্রাবণীকে বলছে,
~”আমার বাচ্চার দুধটা একটু গরম করে দাও তো”
আরেকদিন শুনি বড় আপা বিছানায় শুয়ে থেকে শ্রাবণীকে ডেকে বললো,
~”আমার মাথাটা খুব ব্যাথা করছে। আমায় এককাপ কড়া করে কফি বানিয়ে দাও তো”
আজ সকাল থেকেই শ্রাবণীরর শরীরটা একটু খারাপ। এই অবস্থায় বড় আপা শ্রাবণীকে বললো,
~” তোমার হাতের পাটিসাপটা পিঠা তোমার দুলাভাই খেতে খুব পছন্দ করে৷ তুমি আজ আমায় কতগুলো পাটিসাপটা পিঠা বানিয়ে দিও তো”
আমি খুব অবাক হচ্ছিলাম আমার বড় বোনের কথা শুনে। তাই কিছুটা রেগে গিয়ে বললাম,
— তোর জামাইকে তুই নিজে পিঠা বানিয়ে খাওয়া তুই আমার বউকে বলছিস কেন?
বড় আপা তখন মুখ বাঁকিয়ে বললো,
~” বউয়ের চামচামি করছিস নাকি?”
আমি বললাম,
— আমি কোন চামচামি করছি না। শুধু তোর মত একটা শিক্ষিত মেয়ের ভুলগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে চাইছি। তুই নিজেও একবাচ্চার মা। তুই তো বুঝিস এই সময় একটা মেয়ের কত রকম সমস্যা হয়৷ তুই কি করে এই অবস্থায় আমার বউকে বলিস তোর বাচ্চার দুধ গরম করে দিতে, তোর জন্য কফি বানিয়ে দিতে, আর আজ বলছিস তোর জামাইয়ের জন্য পিঠা বানাতে? মেয়েটা প্রথমবার মা হচ্ছে। মনে কত রকমের ভয় থাকতে পারে। কোথায় তুই শ্রাবণীকে একটু সাহায্য করবি, একটু মনে সাহস দিবি যেন সে ভয় না পায়। তা না করে উল্টো তুই ওকে পিঠা বানাতে বলছিস
এমন সময় মা খুব রেগে গিয়ে বললো,
-” আমি এমন ছেলে পেটে ধরেছি যে কিনা নিজের বউয়ের জন্য নিজের বড় বোনকে কথা শোনাচ্ছে। কি এমন তোর বউকে বলেছে যে তুই তোর বোনকে কথা শোনাচ্ছিস? কয়েকটা পিঠা বানিয়ে দিতেই তো বলেছে। অথচ তোরা যখন পেটে ছিলি তখন আমি সংসারের সমস্ত কাজ একা হাতে করতাম”
আমি মা’র দিকে তাকিয়ে হেসে বললাম,
— মা আমার বোন যখন প্রেগন্যান্ট ছিলো তখন তুমি ৫ মাস যেতে না যেতেই আপা কে শ্বাশুরবাড়ি থেকে আমাদের বাসায় নিয়ে এসেছিলে যাতে আপার ওখানে সংসারের কোন কাজ করতে না হয়। আমি দেখেছি আপাকে দিয়ে তুমি কাজ করাবে দূরে থাক আপাকে কখনো রান্নাঘরে যেতে দাও নি। সেই তুমিই ছেলের বউয়ের বেলায় এতটা বদলে গেলে…
আমি যখন মা আর আপাকে কথা গুলো বলছিলাম তখন শ্রাবণী আমাকে বারবার থামতে বলছিলো তখন আপা শ্রাবণীকে বললো,
~” থাক থাক নিজেকে স্বামীকে মা বোনের উপর খেপিয়ে দিয়ে এখন আমাদের চোখে ভালো সাজতে হবে না”
কথাটা শুনে শ্রাবণী মাথা নিচু করে অন্য রুমে চলে গেলো। আমি তখন আপার দিকে তাকিয়ে বললাম,
–মূর্খ মানুষ অবুঝ হলে তাকে বুঝানো সহজ। কিন্তু কোন শিক্ষিত মানুষ অবুঝ হলে তাকে বুঝানো সত্যি খুব কঠিন
—
—-
রুমে ঢুকে দেখি শ্রাবণী জানালার গ্রীল ধরে বাহিরে তাকিয়ে আছে। আমি ওর কাঁধে হাত রেখে বললাম,
— চিন্তা করো না আমি আছি তো তোমার পাশে…
শ্রাবণী আমার দিকে ফিরে শুকনো হাসি দিলো আর আমি তখন বললাম,
— তোমার মুখে শুকনো হাসি মানায় না, সতেজ হাসিটা বেশি মানায়
পাশে_থাকা
আবুল_বাশার_পিয়াস
3. হাদীসের শিক্ষনীয় গল্প
বিয়ে বাড়িতে দাওয়াত খাওয়ার সময় আমি যখন খাবারের প্লেট পরিষ্কার করে চেটেপুটে খাচ্ছিলাম তখন কোথা থেকে একলোক এসে একবাটি মাংসের তরকারি আমার প্লেটে ঢেলে দিলো। আমি অবাক হয়ে লোকটাকে বললাম,
— আমি তো আপনার কাছে তরকারি চাই নি। আপনি শুধু শুধু আমার প্লেটে তরকারি ঢেলে দিলেন কেন?
লোকটা হেঁসে উত্তর দিলো,
-” আপনার খাওয়ার সিস্টেম দেখে খুব মায়া হচ্ছিলো। আমার মনে হলো, আপনার পেটে আরো খিদে আছে। তাই তরকারি দিলাম।”
এই কথা বলে লোকটা অন্য একজনকে ডেকে বললো,
-“অই এইখানে ভাত দিয়ে যা।”
এইখানে আমি লোকটাকে পুরো দোষ দিবো না। কারণ আমরা বাঙালিরা বিয়ে বাড়িতে খাবার খাওয়ার চেয়ে নষ্ট করি বেশি। ৩০০ জন লোকের আয়োজন করা বিয়ের দাওয়াতে যে পরিমাণ খাবার নষ্ট হয় সে খাবার দিয়ে অনাহাসে আরো ৫০-৬০ জন লোককে ভরপেট খাওয়ানো যাবে। ১০টা বাঙালি বিয়েতে গেলে দেখা যাবে ৮টা বিয়েতেই শেষে খাবার কম পরেছে। অথচ খাবার যদি ভালোভাবে পরিবেশন করা হতো আর মানুষ যদি প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার না নিতো তাহলে খাবার কম পরার প্রশ্নই আসতো না। আমি এমনো দেখেছি ৪ বছরের বাচ্চার প্লেটে দুইপিস মুরগীর রোস্ট দিতে। বাচ্চার মা ভালো করেই জানে বাচ্চা জীবনেও এই খাবার খেতে পারবে না।কিন্তু তবুও লোক ডেকে বলবে, “আমার বাচ্চাটাকে আরো দুই টুকরো মাংস দেন তো।”
যেখানে সবাই প্লেটে অর্ধেক খাবার রেখে উঠে পরছে সেখানে আমি চেটেপুটে খাচ্ছি সেটা দেখে লোকটার ধারণা হতেই পারে আমার পেটে আরো খিদে আছে। আমি তখন লোকটাকে ডেকে বললাম,
–ভাই এমন মায়া অন্তত আমার সাথে দেখান না যে। আমি আপনার বাড়ির নতুন জামাই না যে, আমি না চাইতেও পুরো বাটির তরকারি আমার প্লেটে ঢেলে দিবেন। আমি পেট ভরে তৃপ্তি সহকারেই খেয়েছি। তাহলে শুধু শুধু এতোটা তরকারি নষ্ট করলেন কেন?
লোকটা মাথা চুলকাতে চুলকাতে আমতা-আমতা করে বললো,
-“আসলে আপনার খাওয়া দেখে মনে হচ্ছিলো…
আমি লোকটাকে থামিয়ে দিয়ে বললাম,
— ভাই, আমি জানি আপনার কি মনে হচ্ছিলো। কেউ অর্ধেক খাবার প্লেটে রেখে উঠে পরলেই সে জমিদার বংশের লোক আর আমি প্লেট চেটেপুটে পরিষ্কার করে খাচ্ছি বলেই যে আমি ফকিন্নি বংশের লোক এমন চিন্তাটা মন থেকে বাদ দেন। যে খাবার খেয়ে আমরা বেঁচে থাকি সে খাবার নষ্ট করার কোন অধিকার আমাদের নেই।
লোকটা আমার কথা শুনে কিছুটা রেগে গিয়ে বললো,
-“ভাই আপনি মেহমান দেখে এতক্ষণ কিছু বলি নি। খাবার তো আপনার নষ্ট হয় নি যে এতো জ্ঞান দিচ্ছেন। আপনায় খাবার দিয়েছি ইচ্ছে হলে খাবেন না হলে ফেলে চলে যাবেন। এত কথা বলার তো কিছু নেই এইখানে।”
আমি আর কিছু না বলে চুপচাপ চলে এলাম। এক বন্ধুর সাথে আড্ডা দিয়ে বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত ১১টা বেজে গেলো। বাসায় ঢুকতে দেখে বাবা আমায় ডেকে বললো,
-” কিরে, খাওয়া-দাওয়া কেমন হয়ছে?”
আসলে বিয়েটা বাবার বন্ধুর মেয়ের ছিলো। বাবা অসুস্থ ছিলো তাই যেতে পারে নি। তাই আমি গিয়েছিলাম।আমি বাবাকে বললাম,
–সবাইকে যত্ন করে জামাই-আদর করে খাইয়েছে।
বাবা তখন চিন্তিত গলায় বললো,
-” ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দামের গরু, ২৫০টা মুরগী আর ৫টা খাসী জবাই করেও ৪০০ জন লোকের খাওয়া হলো না। হামিদ( বাবার বন্ধু) ফোন দিয়েছিলো কিছুক্ষণ আগে। ও বললো শেষে নাকি খাবার কম পরেছিলো আর এজন্য নাকি ছেলে বাড়ির লোক নানা রকম কথা শুনিয়েছে।”
আমি হেঁসে বাবাকে বললাম,
— যারা উপরওয়ালার নিয়ামতকে বিনষ্ট করে তাদের ১টা কেন ৫টা গরু জবাই করে খাওয়ালেও ওদের তৃপ্তি হবে না…।
—
——
আমার ফুফাতো বোন ওর ৫বছরের বাচ্চাটাকে নিয়ে আমাদের বাসায় এসেছিলো। মা ওদের জুস বানিয়ে দিলো। বাচ্চা ছেলেটা জুসের গ্লাসটা হাতে নিয়ে যখন খাবে তখন আপু চোখ বড়বড় করে বাচ্চাটার দিকে তাকালো। আমি খেয়াল করলাম বাচ্চা ছেলেটা তখন অল্প একটু জুস খেয়ে রেখে দিলো।
দুপুরে যখন সবাইকে ভাত খেতে দেওয়া হলো বাচ্চা ছেলেটা অল্প একটু খেয়েই রেখে দিলো। আমি তখন বললাম,
— বাবা, পুরো প্লেটের খাবারটা খাও। খাবার নষ্ট করতে নেই।
বাচ্চাটা তখন বললো,
-” পুরো খাবার শেষ করলে আম্মু বকা দিবে। আম্মু বলেছে, বাসায় যত ইচ্ছে খাও কিন্তু বাহিরে কারো বাসায় গেলে অল্প খাবে। বেশি খেলে মানুষ নাকি আমায় রাক্ষস বলবে। তাই আম্মু বলেছে কারো বাসায় গেলে কোন খাবার পুরো না খেয়ে অল্প খেয়ে রেখে দিতে।”
বাচ্চাটার কথা শুনে আমি অবাক হয়ে গেলাম। খেয়াল করে দেখি, আপু চোখ বড়বড় করে বাচ্চাটার দিকে তাকিয়ে আছে।
বিকাল দিকে আপু যখন চলে যাবে তখন আমি আপুকে বললাম,
— বাচ্চাটাকে এইসব কি শিখাচ্ছো? বাচ্চাদের যেখানে শিখাবে খাবার কখনো নষ্ট করতে নেই আর তুমি সেখানে শিখাচ্ছো কিভাবে খাবার নষ্ট করতে হয়!
আপু তখন বললো,
-” আসলে সবাইতো আর সমান না। বাচ্চা যদি সমানে এটা ওটা খেতে থাকে তাহলে মানুষ ভাবতেই পারে, বাচ্চাকে হয়তো কখনো ভালো কিছু খাওয়ায় না তাই বাচ্চা রাক্ষসের মতো ভালো খাবার দেখে এটা ওটা খাচ্ছে।”
এইকথা বলে আপু চলে গেলো আর আমি অবাক হলাম শিক্ষিত বোনের অশিক্ষিত মন-মানসিকতা দেখে….
—
——
রেস্টুরেন্টে খাওয়ার সময় আমাকে মুরগীর হাড্ডি চিবাতে দেখে আমার গার্লফ্রেন্ড অর্পিতা রাগী চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
— ক্ষেত মানুষের মতো হাড্ডি চিবাচ্ছো কেন?
আমি অবাক হয়ে বললাম,
— এইখানে ক্ষেতের কি আছে? মুরগীর হাড্ডি চিবিয়ে খেলে কি কেউ ক্ষেত হয়ে যায়?
অর্পিতা আরো রেগে গিয়ে বললো,
-“এটা তোমার বাসা না যে হাড্ডি সহ খেয়ে ফেলবে। এটা একটা রেস্টুরেন্ট। এইখানে একটু স্মার্ট ভাবে খেতে হয়। একটু পরে যখন ওয়েটার এসে প্লেট গুলো নিয়ে যাবে তখন তোমার চিবানো হাড্ডিগুলো দেখে মনে মনে তোমাকে সহ আমাকেও ক্ষেত বলবে।”
অর্পিতার কথা শুনে আমি অর্পিতার প্লেটের দিকে তাকিয়ে দেখি অর্পিতা অল্প খেয়েছে আর বেশিভাগ খাবারটা প্লেটে রয়েছে। আমি অর্পিতাকে বললাম,
— তুমি খাবারটা শেষ করো
অর্পিতা রাগে লাল হয়ে বললো,
-আমি তোমার মতো এতো ক্ষেত না যে রাক্ষসের মতো পুরোটা খাবো।
আমি শান্ত গলায় অর্পিতাকে বললাম,
— খাবারটা আমি আমার টাকাতে খাওয়াচ্ছি। আমার টাকাতে কিনা খাবার তুমি আমার চোখের সামনে নষ্ট করবে তা তো হবে না।যদি খাবারটা খেতে ভালো না লাগে তাহলে সেটা অন্য বিষয় কিন্তু স্মার্টনেস দেখাতে গিয়ে খাবার নষ্ট করবে সেটা তো হবে না।তাই ভালোই ভালোই পুরো খাবারটা শেষ করো।তা নাহলে সমস্যা আছে বলে দিলাম।
আমার কথা শুনে অর্পিতা কিছুটা ভয় পেয়ে পুরো খাবারটা শেষ করলো। খাবার শেষ করে ও বললো,
-“তোমার মত একটা ছোটলোকের সাথে আমি কখনোই সম্পর্ক রাখবো না। নিজের টাকায় খাওয়াচ্ছো বলে জোর করে পুরো খাবার খাওয়াবে নাকি?”
আমি হেঁসে বললাম,
— তোমার মতো বড়লোকের সাথে আমিও সম্পর্ক রাখতে চাই না। যে খাবার খেয়ে বেঁচে থাকো সে খাবারকে অসম্মান করো কোন সাহসে? আমি টাকার প্রসঙ্গ তুলতাম না যদি তুমি এমন ব্যবহারটা আমার সাথে না করতে। খাবারটা যদি তোমার খেতে ভালো না লাগতো তাহলে সেটা আমি প্যাকেট করে নিয়ে গিয়ে বাহিরে কোন অনাহারে থাকা পথ শিশুকে নিয়ে দিতাম। কিন্তু তুমি তো স্মার্টনেস দেখাতে গিয়ে খাবার রেখে দিয়েছিলে তাই জোরে করে খাইয়েছি। এখন তুমি আসতে পারো। আজকের পর তোমার মতো মেয়ের সাথে আমিও সম্পর্ক রাখবো না….
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, প্রতিমাসে সারা বিশ্বে ১০হাজার শিশু মারা যায় খাদ্যের অভাবে। প্রতিদিন সারাবিশ্বে ৮২কোটি মানুষ রাতে না খেয়ে ঘুমায়। অথচ প্রতি বছর সারা বিশ্বে ২২কোটি ২০লাখ টন খাদ্য মানুষ নষ্ট করে। আমাদের দেশে কিছু আল্ট্রা-মর্ডাণ বড়লোক আছে যাদের খাবার নষ্ট করতে নিষেধ করলে ওরা বলে,
“আমার টাকার কিনা খাবার আমি নষ্ট করবো তাতে তোমার কি?”
হয়তো এমন একদিন আসবে যেদিন মানুষ আর ক্যান্সার, এইডস, ব্রেইন-টিউমারে মরবে না, মরবে খাদ্যের অভাবে
#খাদ্য
আবুল_বাশার_পিয়াস
4. শিক্ষনীয় গল্প বাংলা
সকালে মা আমায় রান্নাঘরে নাস্তা বানানো অবস্থায় দেখে চমকে গিয়ে বললো,
~ তুই নাস্তা বানাচ্ছিস কেন? বউমার কি হয়েছে?
আমি পানি দিয়ে ময়দা গুলতে গুলতে বললাম,
— শ্রাবণীর শরীরটা মা খারাপ লাগছে। রাতে হালকা পেট ব্যথা করেছিলো তাই সারা রাত ঘুমাতে পারে নি। এখন একটু ঘুমিয়েছে।
মা আমার কথা শুনে রেগে চিৎকার করে বলতে লাগলো,
~বউ এসি রুমে আরামে ঘুমাচ্ছে আর জামাই এই গরমে নাস্তা বানাচ্ছে। বাহ্ জমিদারের মেয়েকে ভুল করে পুত্রবধূ করে বাড়িতে নিয়ে এসে পড়েছি।
আমি মা’কে থামাতে চেষ্টা করলাম কিন্তু মা আমার কথা না শুনে একের পর এক উল্টো পাল্টা কথা বলতে লাগলো। মার এইসব কথা শুনে শ্রাবণী তাড়াতাড়ি রান্না ঘরে আসলো। আর আমাকে কানে কানে বললো,
– ঘুমিয়ে ছিলাম একটাবার তো আমায় ডাকতে পারতে না কি? শুধু শুধু কেন আমার কাজ করতে গিয়ে আমায় কথা শুনাও
সকালের নাস্তার পর শ্রাবণীকে বললাম,
— তাড়াতাড়ি তৈরি হও তো একটু ডাক্তারের কাছে যাবো।
আমার কথা শুনে মা বললো,
~সবে তিন মাস এখনি দুইদিন পর পর ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে না কি?
আমি মাকে বললাম,
— মা রাতে ওর পেট ব্যথা করেছিলো। হঠাৎ কেন ব্যথা করলো সেটা তো জানা দরকার।
মা আমার কথাতে রেগে গিয়ে বললো,
~এই সময় একটু আধটু পেট ব্যথা করবেই। সহ্য করতে হয়। আমরাও তো মা হয়েছি।
মার কথা শুনে শ্রাবণী আমায় বললো,
-আমার পেট ব্যথা নেই এখন। শুধু শুধু ডাক্তারের কাছে যেতে হবে না।
এইকথা বলে শ্রাবণী অন্য রুমে চলে গেলো। আমি জানি শ্রাবণী অভিমানে কথাটা বলেছে। আসলে আমার আর শ্রাবণীর প্রেমের বিয়ে। যেটা আমার বাবা মা মেনে নেয় নি। মেনে না নেওয়ার অবশ্য কয়েকটা কারণ আছে প্রথম কারণ হলো শ্রাবণীর বাবার চরিত্র তেমন একটা ভালো না। সমাজে উনার যথেষ্ট বদনাম আছে। আর দ্বিতীয় কারণ হলো ওদের আর্থিক অবস্থা আমাদের থেকে অনেক নিচে। এইজন্যই বাবা মা শ্রাবণীকে তেমন একটা সহ্য করতে পারে না। অথচ বাবা মা এটা বুঝে না এতে শ্রাবণীর কোন দোষ নেই।
রুমে এসে দেখি শ্রাবণী জানালার গ্রিল ধরে আনমনে বাহিরে তাকিয়ে আছে। আমি পিছন থেকে ওকে জড়িয়ে ধরে বললাম,
— মা’র কথায় রাগ করে আমাদের লাড্ডুকে কেন কষ্ট দিচ্ছো বলো? চল না ডাক্তারের কাছে জেনে আসি আমাদের লাড্ডু কেমন আছে।
আমার কথা শুনে শ্রাবণী রাগে কুনই দিয়ে আমার বুকে আঘাত করে বললো,
– একদম মেরে ফেলবো আমার বাচ্চাকে উল্টো পাল্টা নামে ডাকলে।
শ্রাবণীর কথা শুনে আমি হাসতে হাসতে বললাম,
— এখন আসো তো দেরি হয়ে যাচ্ছে…
|
|
সময় যত যাচ্ছে শ্রাবণীর শরীরটা একটু একটু করে ততখারাপ হচ্ছে। ইদানীং চেষ্টা করি শ্রাবণী টুকটাক কাজ গুলো আমি করে দিতে। মাঝে মধ্যে ওর চুল গুলো বেণী করে দেওয়া। গোসলের পর ওর ভেজা কাপড় গুলো ধুয়ে দেওয়া। খাবার খেতে না চাইলে নিজ হাতে খাইয়ে দেওয়া। এজন্য বাবা মা আমাকে অনেক কথা শুনায়। অবশ্য সে গুলো আমি তেমন একটা পাত্তা দিই না।
সেদিন শ্রাবণীর ময়লা কাপড় গুলো ধুয়ে যখন ভেজা কাপড় গুলো ছাদে শুকাতে নিয়ে গেলাম তখন মা বললো,
– তোর লজ্জা করে না পুরুষ হয়ে বউয়ের শাড়ি ব্লাউজ ধুয়ে দিতে?
আমি মুচকি হেসে মাকে বললাম,
— না মা, একদম লজ্জা করে না। তুমি যখন বাবার কাপড় গুলো ধুয়ে দাও তখন কি তোমার লজ্জা লাগে?
আমার কথা শুনে মা বললো,
– স্বামীর কাপড় ধুঁয়ে দিতে লজ্জার কি আছে?
আমিও তখন বললাম,
–তাহলে স্ত্রীর কাপড় ধুয়ে দিতে লজ্জার কি আছে?
|
|
রাতে ৩০ মিনিট ধরে খাবার প্লেট হাতে নিয়ে বসে আছি কিন্তু শ্রাবণী খাবে না। ওর শুধু এক কথা এখন খাবার খেলেই ও বমি করবে আমিও ওকে না খাওয়ানো পর্যন্ত জোরাজোরি করতে লাগলাম। এমন সময় মা রুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বললো,
~বউকে যে আদর করে মুখে তুলে এত খাওয়াচ্ছিস
পরে যে সমস্যা হবে সেটা বুঝিস কি?
আমি অবাক হয়ে বললাম,
— পরে কি সমস্যা হবে?
মা তখন বললো,
~বেশি খেলে পেটের বাচ্চা বড় হয়ে যাবে তখন ডেলিভারির সময় তোর বউ বুঝবে কষ্ট কি জিনিস
আমি মুচকি হেসে বললাম,
— মা যাও তো যা বুঝো না তা নিয়ে কথা বলো না…
মা চলে যাবার পর শ্রাবণী আমার হাত ধরে বললো,
– মা হয়তো ঠিকিই বলেছে। আমি খাবো না। পরে যদি কোন সমস্যা হয়
আমি শ্রাবণীকে জোরে একটা ধমক দিয়ে বললাম,
– চুপচাপ খাও বলছি। তা না হলে খবর আছে.
|
|
সকালের দিকে শ্রাবণী হঠাৎ করে বললো ওর পেট ব্যথা করছে। আমি যখন ওকে দিয়ে ডাক্তারের কাছে যাবো তখন বাবা বললো,
– কোথায় যাচ্ছিস?
আমি বললাম,
— একটু ডাক্তারের কাছে। ওর পেট ব্যথা করছে।
বাবা আমার কথা শুনে রেগে গিয়ে বললো,
– প্রতিদিনিই কি তোর বউয়ের পেটে ব্যথা ওঠে? জগতে কি তোর বউ শুধু মা হচ্ছে আর কি কোন মেয়ে মা হয় নি?
তাড়াতাড়ি দোকানে যা। দোকানে মাল নিয়ে কি যেন একটা সমস্যা হয়েছে।
আমি বাবাকে বললাম,
— বাবা, শ্রাবণীকে ডাক্তার দেখিয়ে পরে যাই?
কিন্তু বাবা আমার কথা শুনলো না। জোর করে দোকানে পাঠিয়ে দিলো।
নিরুপায় হয়েই দোকানে গেলাম। দোকানে যাওয়ার ঘন্টা খানিক পরেই বাবা ফোন দিয়ে বললো শ্রাবণীর শরীর বেশি খারাপ আমি যেন তাড়াতাড়ি হাসপাতালে আসি। ওরা শ্রাবণীকে নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছে।
কথাটা শুনে আমি যে কিভাবে হাসপাতালে আসলাম আমি নিজেও জানি না৷ হাসপাতালে এসে পাগলের মত ছুটাছুটি করতে লাগলাম। বাবা মাকে ইমারজেন্সি রুমের বাহিরে দেখে জিজ্ঞেস করলাম শ্রাবণী কোথায়? মা আমার মাথায় হাত রেখে বললো, ভিতরে আছে…
দেড়ঘন্টা পর ডাক্তার এসে বললো,
-দুঃখিত বাচ্চাটাকে আমরা বাচাতে পারি নি। মনে হয় পেটে অনেকক্ষণ ধরে ব্যথা হচ্ছিলো। আপনারা যদি ব্যথা হওয়ার পরপরই নিয়ে আসতেন তাহলে হয়তো বাচ্চাটাকে বাঁচাতে পারতাম।
আমি অস্পষ্ট স্বরে শুধু ডাক্তারকে বললাম,
–শ্রাবণী ঠিক আছে তো?
ডাক্তার বললো,
– হ্যাঁ ঠিক আছে…
|
|
বাচ্চাটা মারা যাওয়ার পর শ্রাবণী একটু অন্যরকম হয়ে গিয়েছে। সারাক্ষণ চুপচাপ থাকে। মা মাঝে মাঝে শ্রাবণীকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলে,
– আমি আগেই বলেছিলাম একটু কম খাওয়া দাওয়া করতে। বিছানায় শুয়ে না থেকে কাজ কর্ম করতে। এখন তো তার ফল পেলো।
মার এইসব কথা বার্তা বাবার ধমক কেন জানি আর সহ্য করতে পারছিলাম না। তাই আজ সকালে বাবা মা যখন টিভি দেখছিলো আমি উনাদের সালাম করে মাকে বললাম,
— মা আমি চলে যাচ্ছি।
মা অবাক হয়ে বললো,
~কোথায় যাচ্ছিস?
আমি মা বললাম,
— আমি শ্রাবণীকে নিয়ে চলে যাচ্ছি। কিন্তু যাবার আগে তোমায় কিছু বলতে চাই। মা, শ্রাবণী যদি আজ তোমার মেয়ে হতো তাহলে ওর সাথে এমনটা করতে পারতে? আমি ওকে খাইয়ে দিলে তোমার সমস্যা হয়, ওর টুকটাক কাজ করে দিলে তুমি শ্রাবণীকে যা তা বলো। মা, তুমিও তো আমায় জন্ম দিয়েছো। একটা মেয়ে যখন প্রথম গর্ভবতী হয় তখন ওর মনে কত রকম ভয় কাজ করে সেটা তো তুমিও জানো। তারপরও তুমি শ্রাবণীকে সাহস না দিয়ে উল্টে ভয় দেখিয়েছো। নিজের মেয়ে হলে এমনটা করতে পারতে মা?
বাবার দিকে তাকিয়ে বললাম,
— বাবা, আমি জানি শ্রাবণীর বাবার চরিত্র ভালো না। আর এর জন্য তোমাকে সমাজের অনেক মানুষদের থেকে নানা রকম কথা শুনতে হয়। কিন্তু এতে শ্রাবণীর কি দোষ বাবা বলতে পারো? ঐ রকম লোকের ঘরে শ্রাবণীর জন্ম হয়েছে এটাই তো শ্রাবণীর দোষ তাই না? বাবা আমি যেমন তোমার অনুমতি না নিয়ে শ্রাবণীকে বিয়ে করে অপরাধ করেছি তেমনি কিন্তু বাবা তুমিও অপরাধ করেছো। সেদিন যদি আমাকে দোকানে জোর করে না পাঠিয়ে ডাক্তারের কাছে যেতে দিতে তাহলে হয়তো আমার সন্তানটা বেঁচে যেতো।
বাবা মা আমার কথা শুনে কিছু না বলে চুপচাপ বসে আছে। আমি তখন উনাদের বললাম,
— তোমরা আমার বাবা মা। তোমাদের প্রতি আমার যেমন কর্তব্য আছে তেমনি যে মেয়েটা পরিবারের সবাইকে ছেড়ে আমার হাত ধরে এইখানে এসেছে তার প্রতিও আমার একটা দায়িত্ব আছে। ওর প্রতি অবিচার কিভাবে করি বাবা?
|
|
রাস্তার মধ্যে হঠাৎ শ্রাবণী আমার হাতটা ধরে কাঁদতে কাঁদতে বললো,
-আমার বাচ্চাটা মারা গিয়েছে এটা আমার কপালের দোষ। শুধু শুধু মা বাবাকে অপরাধী বানিও না। আমি বাবা মার সাথেই থাকতে চাই।
আমি শ্রাবণীর চোখের জলটা মুছে মুচকি হেসে বললাম,
— পাগলি, মাঝে মধ্যে কাছে আসার জন্য হলেও দূরে যেতে হয়। বাবা মা যখন ওনাদের ভুল বুঝতে পেরে যখন অনুতপ্ত হবেন তখন আমরা ঠিকিই চলে আসবো। মাত্র কয়েক দিনেরই ব্যাপার…
শ্রাবণী আমার হাতটা শক্ত করে ধরে আমার কাঁধে মাথা রেখে কাঁদছে। আমার ও খুব কষ্ট হচ্ছে মা বাবাকে ছেড়ে যেতে। আচ্ছা লাড্ডু যখন আমাদের ছেড়ে চলে যায় তখন মনে হয় এমনটাই কষ্ট পেয়েছিলো যেমনটা আমি এখন পাচ্ছি বাবা মাকে ছেড়ে যেতে..
দায়িত্ব
আবুল_বাশার_পিয়াস
5. শিক্ষনীয় প্রেমের গল্প
ছেলেরা বিয়ে করে হয় মেয়ের সৌন্দর্য দেখে নয়তো মেয়ের বাবার টাকা পয়সা দেখে। তা তুই কি দেখে বিয়ে করলি?
রাফির কথায় আমি সহজভাবে উত্তর দিলাম,
–নর্দমার ড্রেন থেকে কুকুরের বাচ্চা তুলতে দেখে
রাফি অবাক চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
-“মানে কি!”
আমি বললাম,
— ঝুম বৃষ্টির দিনে আমি যখন ছাতা নিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম তখন খেয়াল করি একটা মেয়ে নর্দমার ড্রেনে নেমে একটা কুকুরের বাচ্চাকে টেনে তুলছে। যে মেয়ে একটা কুকুরকে বাঁচানোর জন্য নোংরা নর্দমার ড্রেনে নামতে পারে সেই মেয়ে একটা মানুষের জন্য কতটা করতে পারে একটাবার ভেবে দেখেছিস?
রাফি আমার কথায় কিছুটা বিরক্ত হয়ে বললো,
-” তুই তোর ডায়গল মার্কা কথা বন্ধ কর। আরে সারাদিন পরিশ্রম করে বাসায় ফিরবো। কলিংবেল বাজালে সুন্দরী বউ দরজা খুলে যখন একটা মিষ্টি হাসি দিবে সেটা দেখে তখনি তো শরীরের সব ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে। কিন্তু তোর বউয়ের মতো যদি পেত্নী টাইপের কেউ দরজা খুলে তখন তো তারে দেখে মেজাজ আরো খারাপ হয়ে যাবে
রাফির এমন অপমান জনক কথা শুনার পরেও আমি সাবলীল ভাবে হেসে ওরে বললাম,
— ধর তুই খুব সুন্দরী একটা মেয়ে বিয়ে করলি। সারাদিন পরিশ্রম করার পর বাসায় এসে ফিরে দেখলি তোর বউ তোর রুমে, তোর বিছানার মধ্যে অন্য একটা ছেলের বুকের উপর শুয়ে আছে।তখন তোর কেমন লাগবে? ২০২১ সালে এসেও যদি একটা মেয়েকে তুই গায়ের চমড়া দিয়ে বিবেচনা করিস তাহলে এর চেয়ে লজ্জা আর কি হতে পারে? সৌন্দর্য কিন্তু কখনোই স্থায়ী হয় না। নিজের পরিহিত চকচকা আয়রন করা শার্টটাও একসময় মলিন হয়ে যায়। তাই চমড়ার রঙ না খুঁজে বরং চরিত্র খোঁজার চেষ্টা কর। কারণ একজন চরিত্রবান স্ত্রী তোর জীবনটাকে সুন্দর করে তুলবে। আর যদি টাকা পয়সার কথা বলিস তাহলে আমাকে একবেলা ভালোমন্দ খাওয়ানোর ক্ষমতা আমার শ্বশুরের আছে আর আমি তাতেই খুশি…
আমার বলা সেদিনের কথা গুলো রাফি বুঝতে পেরেছিলো কিনা জানি না। তবে সে বিয়ে করেছিলো খুব বড় লোকের সুন্দরী মেয়েকে। বিয়ের পর রাফিকে ওর শ্বশুর সংসারে যাবতীয় যা যা লাগে ফ্রীজ, টেলিভিশন, এসি সব উপহার দিয়েছিলো। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো রাফির স্ত্রী বিয়ের ৫দিন পরেই ওর প্রমিকের সাথে পালিয়েছিলো। আর আরো দুঃখজনক বিষয় হলো একসময় রাফির শ্বশুর মেয়ের প্রেমিককে মেনে নেয় আর রাফিকে যে জিনিস গুলো উপহার দিয়েছিলো সেগুলো ফিরত নেয়
মাস তিনেক পর মানিকগঞ্জ যাওয়ার পথে রাফীর সাথে আমার দেখা হয়েছিলো। আমায় দেখে রাফি মাথা নিচু করে অন্য দিকে চলে যাচ্ছিলো। আমি কয়েকবার ডাকার পর ও আমার কাছে এসে মাথা নিচু করে বললো,
– “ভাই, দয়া করে লজ্জা দিস না। যদি পারিস একটা চরিত্রবান মেয়ের সন্ধান দিস আমি চোখ বন্ধ করে বিয়ে করবো। মেয়ের গায়ের রঙও না দেখবো শ্বশুরের টাকা পয়সাও দেখবো না
আমি তখন বললাম,
— সে না হয় দেখবো, তা এখন যাচ্ছিস কোথায়?
রাফি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,
-” কোথায় আর যাবো নর্দমার ড্রেনের আশেপাশে ঘুরাঘুরি করবো যখনি দেখবো কোন মেয়ে ড্রেনে নেমে কুকুরের বাচ্চা তুলছে অমনি মেয়ের সামনে হাতু গেরে বসে বললো,
উইল ইউ ম্যারি মি”
রাফির এমন কথা শুনে আমি পাগলের মতো হাসতে লাগলাম আর রাফি একের পর এক দীর্ঘশ্বাস ফেলতে লাগলো….
—
——
পাশের বাসার আন্টি একটু উপহাস করে আমার মাকে বললো,
-” ভাবী একটা কথা বলি কিছু মনে করেন না যে। সেদিন আমার মেয়ে বলছিলো আমাদের বাসায় যে নতুন কাজের মেয়েটা এসেছে সেই মেয়েটা যদি আপনার ছেলের বউয়ের পাশে দাঁড়ায় তাহলে আপনার ছেলের বউকে মনে হবে কাজের মেয়ে আর কাজের মেয়েটাকে মনে হবে আপনার ছেলের বউ”
এই কথাটা বলে আন্টি এমনভাবে হাসতে লাগলো মনে হলো দুনিয়ার সেরা জোকসটা উনি বলেছেন। আন্টির কথা শুনে মা শান্ত গলায় জবাব দিলো,
-” ভাবী আপনার মনে আছে, আপনার একবার হঠাৎ করে শরীর ভিষণ খারাপ করেছিলো? আপনার অবস্থা এতোটাই খারাপ হয়ে গিয়েছিলো যে বিছানায় প্রস্রাব করে দিয়েছিলেন। আমি গিয়ে দেখি আপনার নিজের পেটের অতি সুন্দরী মেয়ে লিজা আপনার কাছে আসে নি। নাক মুখ কাপড় দিয়ে ঢেকে কাজের মেয়েটাকে বলেছিলো পরিষ্কার করতে। অথচ মাসখানের আগে আমার ভিষণ রকম পেট খারাপ করেছিলো। আমি দিনে দুই-তিনবারের বেশিও বিছানা নষ্ট করে ফেলতাম। আমার ছেলের বউ তখন নিজ হাতে এইগুলো পরিষ্কার করতো আমায় নিজ হাতে গোসল করাতো। অথচ কাজের মেয়ে আমার বাসাতেও ছিলো।
আপনার মেয়েকে বলে দিবেন হতে পারে আমার ছেলের বউয়ের গায়ের রঙটা একটু কালো কিন্তু পরের মেয়ে হয়েও এই দুইবছরে আমার ছেলের বউ আমার যতখানি সেবা যত্ন করেছে সে ২৪ বছরের জীবনেও এতোটা সেবা যত্ন ওর নিজের জন্মদানকারী মাকেও করে নি..
—
——-
আমার স্ত্রী শ্রাবণী যখন চায়ের কাপটা আমার ফুফাতো বোনের হাতে দিলো তখম আমার ফুফাতো বোন ভ্রু কুচকে শ্রাবণীর দিকে তাকিয়ে বললো,
-” চা বানানোর আগে হাতটা কি ধুঁয়ে নিয়েছিলে?”
কথাটা শুনে আমার ছোটবোন জান্নাত সাথে সাথে বললো,
-“কেন আপা, তোমার কি মনে হচ্ছে ভাবী তোমাকে ময়লা হাত দিয়ে চা বানিয়ে দিয়েছে?
আমার ফুফাতো বোন তখন ঠোঁট বাকিয়ে বললো,
-“তোর ভাবীকে তোরা যদি ১ঘন্টা ধরে ভিম সাবান দিয়ে ঘষামাজা করিস তবুও আমার মনে হবে তোর ভাবীর গায়ে ময়লা লেগে আছে “
সেদিন জান্নাত আমার ফুফাতো বোনকে কিছু বলতে পারে নি। অথচ প্রকৃতির কি সুন্দর নিয়ম। ফুফাতো বোনের বাচ্চা হওয়ার সময় জরুরী ভাবে Oনেগেটিভ রক্ত লাগে। কোথাও রক্তের ব্যবস্থা হচ্ছিলো না। আমার স্ত্রী শ্রাবণী তখন তাকে রক্ত দিয়েছিলো।
সুস্থ হবার পর আমার ফুফাতো বোন যখন বাসায় ফিরে তখন জান্নাত সবার সামনে ফুফাতো বোনকে বলেছিলো,
– ” তোমার চোখে আমার ভাবীর সারা গায়ে সারাক্ষণ ময়লা লেগে থাকে অথচ আজ সেই ময়লা মেয়েটার রক্তই তোমার শরীরের ভিতর ঘুরাঘুরি করছে। সেদিনের অপমানের প্রতিশোধ সরূপ ভাবী যদি বলতো তোমায় রক্ত দিবে না তাহলে আজ তুমি এই দুনিয়ায় হেটে বেড়াতে পারতে না। তাই আমার ভাবীর গায়ের রঙটাকে বড় করে না দেখে তার ভিতরের মহানুভবটাকে বড় করে দেখো….
মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গেলে খেয়াল করি শ্রাবণী বিছানায় নেই। বেলকনিতে এসে দেখি শ্রাবণীর বেলকনির গ্রীল ধরে
বাহিরে তাকিয়ে আছে। আমি ওর কাঁধে হাত রেখে বললাম,
–তোমার গায়ের রঙ কালো বলে সেজন্য তুমি মন খারাপ করো?
শ্রাবণী হেসে বললো,
-“মোটেও আমি এজন্য মন খারাপ করি না। আল্লাহ তালা আমায় অন্য সবার মতোই অতি যত্ন করেই বানিয়েছেন। আল্লাহতালা কারো মাঝে অপূর্ণতা রাখে না। একদিকে না হলেও অন্যদিকে আল্লাহতালা ঠিকিই পুষিয়ে দেন। আমি কালো হয়েও স্বামী শ্বাশুড়ি ননদীর থেকে যে পরিমাণ ভালোবাসা পেয়েছি ততটা ভালোবাসা হয়তো পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী মেয়েটাও পায় নি…
আকাশে আজ পূর্ণ জোছনা। বেলকনি দিয়ে সেই জোছনার আলো যখন শ্রাবণীর মুখের মাঝে পড়লো আমি তখন অবাক হয়ে ভাবতে লাগলাম,
এই মেয়েটা এত্তো সুন্দর কেন?
#রঙ
#আবুল_বাশার_পিয়াস
বিঃদ্রঃ- দয়া করে আমায় কেউ ভুল বুঝবেন না। আমি এটা বলি নি ফর্সা মেয়েরা খারাপ হয়। ভালো খারাপ সব চামড়ার মানুষরাই হয়। কিন্তু ২০২১ সালে এসেও মানুষ এখনো মেয়েদেরকে গায়ের রঙের উপর বিবেচনা করে।
6. শিক্ষনীয় গল্প facebook
আমাকে সিগারেট খাওয়া অবস্থায় পাশের বাসার সুমি আন্টি দেখে ফেলে। রিক্সা থামিয়ে উনি আমার দিকে বিরক্তিকর চোখে তাকিয়ে আবার রিক্সা নিয়ে চলে গেলো। মুভির পোস্টার দেখে যে আন্টি মুভির পুরো কাহিনী বানিয়ে বানিয়ে মাকে বলে দেয় সেই আন্টি আজ কিনা আমাকে সিগারেট খাওয়া অবস্থায় দেখেছে। উনি তো আজ মাকে গিয়ে বলবে, আপনার ছেলে ইয়াবা, হিরোইন,গাঁজা একসাথে যুগলবন্দী করে সিগারেটের ভিতর ভরে খাচ্ছে।
আমি সিগারেটটা নিভিয়ে দৌড়ে বাসায় গেলাম। বাসায় গিয়ে দেখি আন্টি সোফায় বসে আছে। কতবড় বদ মহিলা।বিচার দিতে বাসায় এসে গেছে। আমি ভয়ার্ত স্বরে ছোট বোনকে ডেকে বললাম,
— মা কোথায় রে?
ছোট বোন বললো,
-” মা গোসল করছে”
কথাটা শুনে একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেললাম। তারমানে আন্টি মাকে এখনো কিছু বলে নি। কিছুক্ষণ পর গোসল সেরে মা যখন আন্টির কাছে গেলো তখন আমি তড়িঘড়ি করে ড্রয়িংরুমে ঢুকে মাকে বললাম,
— মা ঘটনা না তো ঘটে গেছে..
মা আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
-“কি হয়েছে?”
আমি তখন বললাম,
–আমার বন্ধু রাকিব পাশের বাসার আন্টিকে হাফ-মার্ডার করে ফেলেছে।
মা অবাক হয়ে বললো,
– “মানে!”
আমি তখন একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললাম,
— রাকিব গলির মোড়ে সিগারেট খাচ্ছিলো। সেটা ওর পাশের বাসার আন্টি দেখে ওর মায়ের কাছে ইনিয়ে-বিনিয়ে বিচার দেয়। ওর মা তখন ওরে বকাঝকা করে। রাকিব সেটা সহ্য করতে না পেরে পাশে বসে থাকা আন্টিকে ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে মাথায় ভারি মারে। বেচারি আন্টির মাথা ফেটে যায়।শুনেছি মাথায় ৬টা সেলাই লেগেছে…
এমন সময় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ছোট বোন বললো,
-“ঠিকিই আছে। এই ডাইনী মহিলার এতো কথা লাগাতে হয় কেন! আরে ভার্সিটিতে পড়ে একটা ছেলে টুকটাক সিগারেট খেতেই পারে তাই বলে সেটা ছেলের মায়ের কাছে এসে ইনিয়ে-বিনিয়ে লাগাতে হবে নাকি। যাইহোক, তোর ক্রিকেট ব্যাটটা যেন কোথায়? “
আমি তখন বললাম,
— এইতো দরজার কোণায় আছে ব্যাটটা।
সুমি আন্টি তখন ভয়ার্ত চোখে একবার আমার দিক তাকায় আরেকবার দরজার পাশে রাখা ক্রিকেট ব্যাটের দিকে তাকায়। মা তখন আন্টিকে বললো,
-” শুনলেন ভাবী আজকালকার ছেলেরা কতটা নিষ্ঠুর। তা ভাবী আপনি যেন কি বলতে এসেছিলেন?”
আন্টি আমতা-আমতা করে বললো,
-“না না ভাবী কিছু না। আমি যায় এখন। চুলোয় তরকারি বসিয়ে এসেছি…”
আন্টি চলে গেলো। আমি নিজের রুমে হাত পা ছড়িয়ে শুয়ে রইলাম। এমন সময় ছোট বোন এসে বললো,
-” তাড়াতাড়ি ২০০টাকা দে”
আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম,
— মানে! টাকা কিসের?
ছোট বোন মুচকি হেঁসে বললো,
-” তোকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য। গলির মোড়ে আর কেউ না তুই সিগারেট খেয়ে আন্টির কাছে ধরা খেয়েছিলি। এখন তুই যদি আমায় টাকা না দিস, মাকে পুরো সত্যিটা বলে দিবো।”
আমি কোন উপায় না দেখে ছোট বোনকে ২০০টাকা দিয়ে দিলাম…
|
|
রেস্টুরেন্টে আমার গার্লফ্রেন্ড শ্রাবণী যখন আমায় নিজ হাতে খাইয়ে দিচ্ছিলো তখন খেয়াল করি সুমি আন্টি দূর থেকে সেটা দেখছে। হঠাৎ সুমি আন্টি রেস্টুরেন্টে থেকে বের হয়ে গেলো। আমি তখন শ্রাবণীকে বললাম,
— আমায় এই মুহূর্তে তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে হবে
শ্রাবণী অবাক হয়ে বললো,
-” আরে খাবারটা শেষ করে যাও।”
আমি যেতে যেতে বললাম,
–রেস্টুরেন্টের খাবার সব সময় খেতে পারবো তবে এই মুহুর্তে বাসায় না গেলে বাসার খাবার আর কপালে জুটে কিনা সন্দেহ
বাসায় ঢুকে দেখি সুমি আন্টিও সবে মাত্র বাসায় ঢুকেছে। আমি তড়িঘড়ি করে মাকে বললাম,
— মা তোমার রক্তের গ্রুপ কি?
মা বিস্মিত হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
-” 0 পজেটিভ! কিন্তু কেন?
আমি কপালে হাত দিয়ে বললাম,
— সর্বনাশ আমার তো 0 নেগেটিভ রক্তের দরকার ছিলো। আসলে ঐদিন যে আন্টিকে আমার বন্ধু রাকিব হাফ- মার্ডার করেছিলো। আজ সেই আন্টিকেই রাকিব ৯৫% মার্ডার করে ফেলেছে।
মা অবাক হয়ে বললো,
-” মানে কি!”
আমি একটু দম নিয়ে বললাম,
–আর বলো না রাকিব ওর এক মেয়ে বান্ধবীকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে খাচ্ছিলো। ঐ মহিলা রাকিবের মায়ের কাছে বিচার দিয়েছে সে নাকি গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলো। এমন মিথ্যা অপবাদ শুনে রাকিব সহ্য করতে পারে নি। তাই পাশে থাকা ফুলদানি নিয়ে রাকিব ঐ আন্টির মাথায় মেরেছে। বেচারি আন্টি এখন আইসিইউতে মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে। ইমারজেন্সি 0নেগেটিভ রক্তের দরকার।
এমন সময় ছোট বোন চিৎকার করে বললো,
-” উচিত শিক্ষা হয়ছে ঐ মহিলার। আরে ভার্সিটিতে পড়ে একটা ছেলে মেয়ে বান্ধবীকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে খেতেই পারে তাই বলে মিথ্যা অপবাদ দিবে। তা ভাইয়া কিসের ফুলদানি ছিলো রে?”
আমি আমতা-আমতা করে বললাম,
— এই মানে! মাটির ছোট ফুলদানি ছিলো আর কি।
ছোটবোন চিন্তিত স্বরে বললো,
-” মাটির ফুলদানি ছিলো বলেই ঐ মহিলা আইসিইউতে ভর্তি। আমাদের বাসার মতো পিতলের ফুলদানি থাকলে এই মহিলা এতক্ষণে ইন্না-লিল্লাহ।”
ছোট বোনের কথা শুনে সুমি আন্টি একবার বোনের দিকে তাকায় আরেকবার টেবিলে রাখা ফুলদানির উপর তাকায়। একবার আমায় দেখে আবার ফুলদানি দেখে..
এমন সময় মা বললো,
-“দেখলেন, ভাবী। ছেলেটা কতবড় অমানুষ “
সুমি আন্টি তখন ভয়ার্ত গলায় বললো,
-“ভাবী আমার একটা দরকারী কাজ আছে পরে কথা হবে”
এইকথা বলে আন্টি তাড়াতাড়ি আমারদের বাসা থেকে চলে গেলো। আমি রুমে আসতেই ছোট বোন আমায় বললো,
-“তাড়াতাড়ি ৫০০টাকা দে”
আমি অবাক হয়ে বললাম,
–২০০টাকা থেকে একলাফে ৫০০টাকায় চলে গেলি? বেকার ভাইটার দিকে একটু দয়া কর।
ছোট বোন তখন ভেংচি কেটে বললো,
-” প্রেমিকাকে নিয়ে যখন রেস্টুরেন্টে খেতে যাস তখন মনে থাকে না তুই বেকার? “
আমি আর উপায় না দেখে ছোট বোনকে ৫০০টাকা দিয়ে দিলাম….
|
|
আমি জানি না বারবার শুধু আমার সাথে কেন এমন হয়। পাশের বাসার আন্টি কেন বারবার আমাকেই কেন দেখে ফেলে। শ্রাবণীকে বিয়ে করে যখন কাজী অফিস থেকে বের হলাম তখন দেখি সুমি আন্টি ভূত দেখার মতো আমার দিলে তাকিয়ে আছে। তারপর রিকশাওয়ালাকে বললো তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে। আমি কোন উপায় না দেখে রাস্তার পাশে বসে পড়লাম। শ্রাবণী কিছুটা ভয় পেয়ে বললো,
-“পিয়াস, তুমি ঠিক আছো?”
আমি পকেট থেকে ফোনটা বের করতে করতে বললাম,
— আমি ঠিক আছি।
ছোটবোন ফোন রিসিভ করতেই আমি ওরে বললাম,
— রাকিব পাশের বাসার আন্টিকে খুন করে ফেলেছে।
ছোট বোন হাই তুলতে তুলতে বললো,
-” সেটা না হয় বুঝলাম তা আজ কি অবস্থায় ধরা খেলি?”
আমি হালকা গলা কেঁশে বললাম,
— শ্রাবণীকে বাসা থেকে বিয়ের জন্য প্রেশার দিচ্ছিলো। তাই আজ আমরা গোপনে বিয়ে করে ফেলেছি। ভেবেছিলাম কয়েকদিন পরে সবাইকে জানাবো কিন্তু আন্টি তো দেখে ফেললো.
ছোট বোন আবারও হাই তুলতে তুলতে বললো,
-“খুব সওয়াবের কাজ করেছিস এখন আমার বিকাশে তাড়াতাড়ি ১০০০টাকা দে। টাকা হাতে পেলেই কাজ শুধু করবো”
আমি কিছুটা বিনীত সুরে বললাম,
— আমি বেকার ছেলে সদ্য বিয়ে করেছি। কিছু তো সেক্রিফাইজ কর
ছোট বোন বললো,
-” বিয়ে করার সময় মনে ছিলো না তুই বেকার। আচ্ছা যা ৮০০ দে।”
আমি আর কিছু না বলে হাঁসতে হাঁসতে ফোনটা কেটে দিলাম। পাশে বসে থাকা আমার নববিবাহিতা স্ত্রী আমায় প্রশ্ন করলো,
-” কি হয়েছে! হাঁসছো কেন?”
আমি আবারও হেঁসে উত্তর দিলাম,
— কিছু না বউ
আমার মুখ থেকে বউ ডাক শুনে শ্রাবণী লজ্জায় মাথা নিচু করে মিটমিট করে হাসতে লাগলো…
আমি ভাবতে লাগলাম নববিবাহিত মেয়ের সৌন্দর্য্য প্রকৃতি হয়তো দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয়। শ্রাবণীকে আজ খুব সুন্দর লাগছে…
#পাশের_বাসার_আন্টি
#আবুল_বাশার_পিয়াস