প্রিয় পাঠক আশা করি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অশেষ মেহেরবানী ও দয়ায় আপনারা সবাই ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের পিপীলিকা (Ant) সম্পর্কে কিছু তথ্য দেয়ার চেস্টা করব।
পিপীলিকা (Ant) , যা অতি ক্ষুদ্র একটি প্রাণী অথচ ডাইনোসর এর যুগ থেকে বর্তমান পৃথিবীতে সক্রিয়ভাবে প্রতিনিয়ত এই ক্ষুদ্র প্রাণী কাজ করে চলেছে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন যে হজরত আদম (আ.) পৃথিবীতে আসার কয়েক কোটি বছর আগে থেকে পৃথিবীতে পিপীলিকা (Ant) এর বসবাস ছিল।
এই পিপীলিকা (Ant) মানুষের আগাম ভবিষ্যতের বার্তা বহন করে। এমনকি বাড়িতে যেই পিপড়ার সারি দেখতে পাওয়া যায় তার মধ্যেও লুকিয়ে রয়েছে অনেক অজানা তথ্য। যার দ্বার আমরা অনেক সময় বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিকম্প সহ অনেক প্রাকৃতিক দূর্যোগ এর পূর্ব সতর্কতা পেতে পারি। হ্যাঁ প্রিয় পাঠক, এটা শুধু নিছক কল্পনা নয়; এমনটাই তথ্য উঠে এসেছে বর্তমান জ্ঞান বিজ্ঞানের গবেষণার ফলে।
আজকের এই গল্পের পাঠের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন ; পিপীলিকা (Ant) মানব জীবনে কোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে? পবিত্র কোরআনে পিপীলিকা সম্পর্কে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কি বলেছেন।
বাড়িতে পিঁপড়ার সারি দেখলে বা পিঁপড়ার আচরণ লক্ষ্য করলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ব্যাপারে বাড়তি কি সুযোগ সুবিধা বা তথ্য পাওয়া যায় জ্ঞান বিজ্ঞানে এবং কোরআন কি বলে? সর্বোপরি এই অতি খুদ্র প্রাণী থেকে আমরা প্রকৃতপক্ষে কোন শিক্ষা লাভ করতে পারি কি? যার মাধ্যমে আমরা আমাদের ভবিষ্যতের পথ কে আরো সুগম করতে সক্ষম হব। চলুন বিস্তারিত আলোচনায় প্রবেশ করা যাক।
সবার প্রথমে আমরা জেনে নেই এ অতি ক্ষুদ্র প্রাণী সম্পর্কে কিছু তথ্য। জানেন কি, পিঁপড়ার কোন কান নেই। পিঁপড়ার হাটু এবং পায়ের মধ্য রয়েছে বিশেষ এক ধরণের ফ্রেন্সিং ভাইব্রেশন, যার মাধ্যমে পিপীলিকা আশেপাশের পরিস্থিতি অনুধাবন করতে পারে। আরো একটি মজার তথ্য হলো, যদি মানুষের পরে পৃথিবীতে দ্বিতীয় কোন বুদ্ধিমান প্রাণি থাকে, তাহলে সেটা হচ্ছে পিপড়া। অন্যান্য সমস্ত পোকামাকড়ের মধ্যে সব থেকে বড় মস্তিষ্কের অধিকারী এই পিঁপড়া।
আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো পিপীলিকা (Ant) নিজের শরীরের ওজনের চেয়ে ১০গুন বেশি ওজন বহন করতে সক্ষম। আরো একটি আশ্চর্যজনক বিষয় হলো মৌমাছিদের মতো পিপড়াদের ও একজন রানী থাকে।যার থেকেই লক্ষাধিক বাচ্চা জন্মগ্রহণ করে এবং এই পৃথিবীতে সবথেকে বেশি সংখ্যক যে প্রাণী রয়েছে সেই প্রাণীটির নাম পিপীলিকা ।
পিপীলিকা (Ant) সম্পর্কে সবথেকে মজার তথ্য হচ্ছে পিপীলিকা (Ant) কখনো ঘুমায় না। জলের তলদেশে এর ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত জীবিত থাকতে পারে। আরেকটি তথ্য শুনলে আরো অবাক হবেন পিঁপড়ার দুটি পেট থাকে। পৃথিবীতে পিঁপড়ায় একমাত্র প্রাণি যার পেট দুটি। একটিতে নিজের জন্য খাদ্য জমা রাখে অন্যটিতে অন্যের জন্য খাবার জমা রাখে।
এছাড়া পিঁপড়ার কোন ফুসফুস নেই, তাদের শরীরে অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র থাকে যার মাধ্যমে শরীরের ভিতরে এবং বাহিরে অক্সিজেন চলাচল করে। পৃথিবীর আদিমতম অতিক্ষুদ্র এ প্রাণীটি থেকে আমাদের অনেক কিছুই শেখার আছে।
প্রিয় পাঠক চলুন এবার কোরআনের দিকে নজর দেই। এতো গুরুত্বপূর্ণ আর এতো জ্ঞান বিজ্ঞানে ভরপুর অতীব ছোট প্রাণী সম্পর্কে রাব্বুল আলামিন কি বক্তব্য দিয়েছেন।
সূরা নামলের ১৭এবং১৮ নম্বর আয়াতের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, “সোলাইমানের সামনে তার সেনাবাবিনীকে জড় করা হল।জ্বিন,মানুষ ও পাখীকূলকে অতঃপর তাদের ভিন্ন ভিন্ন কাজের জন্য বিভক্ত করা হল।যখন তারা পিপীলিকা বা পিঁপড়া অধ্যুষিত উপত্যকায় পৌছাল, তখন এক পিপীলিকা বলল, হে পিপীলিকার দল,তোমরা তোমাদের ঘরে প্রবেশ কর। অন্যথায় সোলায়মান ও তার বাহিনী অজ্ঞাতসারে তোমাদের পিষ্ট করে ফেলবে।“
পূর্বে কেউ হয়তো কুরআনের প্রতি এই বলে বিদ্রুপ করে থাকতে পারে যে, কোরআন পৌরানিক কাহিনীর গল্পের বই। যাতে পিঁপড়ার নিজেদের মধ্য কথোপোকথন এবং উন্নত বার্তা বিনিময়ের বিষয়ে বর্ণনা আছে।
কিন্তু প্রিয় পাঠক আপনাদের জানার উদ্দেশ্যে বলে রাখছি অতিসম্প্রতি গবেষণার মাধ্যমে পিঁপড়ার জীবন পদ্ধতি সম্পর্কে এমন সব প্রকৃত ও বাস্তবসম্মত তথ্য উদঘাটিত হয়েছে, যা আগে মানুষ অবগত ছিলনা।
গবেষণায় বলা হয়েছে, মানুষের জীবনের সাথে যে সকল প্রাণী ও কীটপতঙ্গের অধিকতর মিল রয়েছে তার মধ্য পিঁপড়ার (ant)অন্যতম। এডওয়ার্ড উইলসন এর হলডোবলর বইতে এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য রয়ছে।
বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে জানতে পেরেছেন- ১। পিঁপড়ার মানুষের মত মৃত দেহ দাফন করে। ২। তাদের মধ্য শ্রম বিভক্তি দেখা যায়। তাদের মধ্য রয়েছে, পরিচালক তত্ত্বাবধায়ক ও শ্রমিক ইত্যাদি। ৩।তারা কোনকোন সময় এক সাথে বসে গল্প গুজব করে। ৪।নিজেদের মধ্য যোগাযোগের জন্য তাদের রয়েছে অগ্রিম যোগাযোগ পদ্ধতি। ৫।দ্রব বিনিময়ের জন্য তাদের বাজার বসে। ৬। শীতকালে দীর্ঘ সময়ের জন্য তারা খাদ্য দ্রব্য গুদামজাত করে। খাদ্য শস্যের মুকুল বের হলে, এবং মুকুলিত অবস্থায় রেখে দিলে যদি শষ্যটি পোঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তখনই তারা মুকুলটির গোড়া কেটে দেয়। তাদের গুদাম জাতকৃত শস্যদানা যদি বৃষ্টির কারণে ভিজে যায়, তখন তারা এটাকে রোদে নিয়ে শুকায় এবং শুকানোর পর পুনরায় ভিতরে নিয়ে আসে।
মনে হয় তারা এটা জানে যে, আর্দ্যতার কারণে শষ্যদানায় মুকুল বের হতে পারে। ফলে শষ্য দানাটি পোঁচে যেতে পারে। তাই তারা আগে থেকেই এটাকে শুকিয়ে নেয়। এই বিষয়ে তাদের নির্দেশনা দেয় খাবার গুদামে নিয়োজিত প্রহরীগণ।
কুরআনের আয়াতগুলো ভাষাতাত্ত্বিকদের জন্য তথ্যের খনি। আল্লাহ খুব সাধারণ কিছু আয়াতে, সাধারণ কিছু গল্প বা কথোপকথনের মধ্য দিয়েই অসাধারণ সব তথ্য প্রকাশ করে দিয়েছেন রাব্বুল আলামিন। এই আয়াতিটির দিকে লক্ষ্য করুন- যেখানে আল্লাহ আমদেরকে একটি স্ত্রী পিঁপড়ার একটি মাত্র কথার মধ্য দিয়ে পিঁপড়াদের সম্পর্কে কত ধরণের তথ্য দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, আর যখন তারা পিঁপড়াদের উপত্যকায় পৌছিয়েছিল, একটি স্ত্রী পিঁপড়া বলেছিল, হে পিঁপড়ারা(ants) তোমাদের ঘড়গুলোতে প্রবেশ কর, যাতে সুলায়মান এবং তার বাহিনী তোমাদেরকে না বুঝে পিষে না ফেলে।
প্রিয় পাঠক আপনার কাছে মনে হবে, এতো ছোটদের কোন গল্পের বইয়ের লাইন। পিঁপড়া(ant) আবার কথা বলে নাকি? এখানে পিঁপড়াদের সম্পর্কে আল্লাহ নতুন কিই বা জানালেন আমাদেরকে যা আমরা জানিনা?
লক্ষ্য করুন এই আয়াতে আল্লাহ আমাদেরকে পিঁপড়াদের সম্পর্কে কতগুলো তথ্য দিয়েছেন-
পিঁপড়াটি স্ত্রী পিঁপড়া ছিল এবং সেই কথা বলছিলো। আল্লাহ পাক এখানে উল্লেখ করেছেন পিঁপড়াটি স্ত্রী পিঁপড়া। এখান থেকে পরবর্তীতে জানা যায় বাসার বাহিরে স্ত্রী পিঁপড়া থাকে,পুরুষ পিঁপড়া নয়। আমরা এখন জানি স্ত্রী পিঁপড়ারা কর্মী পিঁপড়া, পুরুষেরা শুধু প্রজননের জন্য কাজ করে। এই তথ্যটি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক এর ১৬৫নং ভলিউম এর ৭৭৭ পৃষ্ঠায় রয়েছে।
‘হে পিঁপড়ারা’ এই বাক্যটি বহুবচন যার অর্থ একটি স্ত্রী পিঁপড়া এক সাথে অন্য একাধিক পিঁপড়াদের নির্দেশ দিতে পারে। পিঁপড়ারা মূলত ফেরোমোন নামক একটি রাসায়নিক পদার্থের প্রতি সংবেদনশীল এবং এর দ্বারা তারা একে অন্যের সাথে যোগাযোগ করে।
এছাড়াও কিছু প্রজাতির পিঁপড়া নিয়ার-ফিল্ড শব্দ তৈরি করে আশেপাশের পিঁপড়াদের সাথে যোগাযোগ করে। এভাবে একটি পিঁপড়া একই সাথে একাধিক পিঁপড়াকে সংকেত দিতে পারে।
এই আয়াতে আল্লাহ ‘বলেছিল’ শব্দ ব্যবহার করেছেন। একই শব্দ মানুষের কথা বলার বেলাতেও ব্যবহার করা হয়। যার অর্থ মানুষ যেমন শব্দ দিয়ে কথা বলে, সে রকম পিঁপড়াও শব্দ ব্যবহার করে যোগাযোগ করে।এটি বিজ্ঞান আজ আবিষ্কার করল আর আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা ১৪শ বছর আগেই কোরআনে বলে দিয়েছে। কিছুদিন আগেও বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করতেন পিঁপড়া কোন শব্দ তৈরি করতে পারেনা এবং তাদের শব্দ শোনার ক্ষমতা নেই।
আরেকটি আয়াতের দিকে আমরা লক্ষ্য করি, “তোমাদের ঘড়গুলোতে প্রবেশ কর”। অর্থাৎ পিঁপড়াদের একাধিক ঘর রয়েছে। একটি পিঁপড়ার বাসা অনেকগুলো সংযুক্ত ঘর এবং আল্লাহ বলেছেন তোমাদের ঘরগুলোতে প্রবেশ কর।এমনটাই বলছে স্ত্রী পিঁপড়া।“
বর্তমান বিজ্ঞান বলছে কথাটি একশত ভাগ সত্য। পিঁপড়া এক ঘরে বসবাস করেনা, তাদের একাধিক ঘর রয়েছে এবং কতকগুলো গুদাম রয়েছে যেখানে খাদ্য সংরক্ষন করা হয়। খাদ্যের গুদামে আবার প্রহরীও রয়েছে।
স্ত্রী পিঁপড়া জানে পিঁপড়ারা(ants) যদি বাসায় ঢুকে পড়ে, তাহলে তাদের কোন ক্ষতি হবেনা। তাদের বাসার উপর দিয়ে সুলাইমান (আ.) হেঁটে চলে যাবেন কিন্তু কোন পিঁপড়া পিষে যাবেনা, তাদের কোন ক্ষতি হবেনা। পিঁপড়ার বাসা আর্কিটেক্টের জন্য এক বিস্ময় এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ারং এর অসাধারণ নিদর্শন।যা বর্তমান বিজ্ঞান বলছে।
পরের আয়াতে আল্লাহ কি বলছেন দেখুন- ‘’যাতে করে সুলাইমান” অর্থ্যাৎ স্ত্রী পিঁপড়াটি নবী সুলাইমান(আ.) কে চিনতে পেরেছিল। যার দাঁরা বুঝা যায় স্ত্রী পিঁপড়া অনেক মানুষের মধ্যে কোন একজনকে চিনতে পারে।
মানুষের শরীর থেকেও ফেরোমোন নিঃসৃত হয়।ধারণা করা হয় স্ত্রী পিঁপড়া হয়তো নবী সুলায়মানের গা থেকে বের হওয়া ফেরোমোনের সিগনাল বুঝতে পেরেছিল। যেভাবে কুকুর প্রতিটি মানুষকে চিনতে পারে গন্ধ শুকে।
এছাড়াও এখানে লক্ষণীয় যে স্ত্রী পিঁপড়া আগাম বিপদ অনুধাবন করে সংকেত দিতে পারে। অর্থ্যাৎ তাদের এতটুকু বুদ্ধিমত্তা আছে যে তারা বিপদ আগে থেকেই আঁচ করতে পারে এবং তারা এও বুঝতে পারে একটি বাহিনীতে কতোজন মানুষ আসছে।
যেমন কোরআনের আয়াতে আল্লাহ তালা বলছেন ‘এবং তার বাহিনী’ এটাই স্ত্রী পিঁপড়া বলেছিলো। অর্থ্যাত পিঁপড়া বুঝতে পেরেছিল একটি বাহিনী আসছে।
পিঁপড়ারা তাদের পা দিয়ে মাটিতে কম্পন অনুভব করতে পারে। একারণে কতো জন লোক বাহিনীতে আসছে, বাহিনীতে কোনজন ব্যক্তি আছে, কে আছে আগে থেকেই জেনে গিয়েছিল।
মাটিতে প্রচুর কম্পন থেকে স্ত্রী পিঁপড়া অনেক কিছু আঁচ করে ফেলেছিল। তাই স্ত্রী পিঁপড়া আগে থেকেই বলে দিয়েছে তোমাদেরকে না বুঝে পিষে না ফেলে তার আগেই তোমরা গর্তে প্রবেশ কর। স্ত্রী পিঁপড়া আগে থেকেই বুঝতে পেরেছিল যে নবী সুলায়মান এবং তার বাহিনী না বুঝে পিঁপড়াদেরকে পিষে ফেলবে। সুতরাং স্ত্রী পিঁপড়া তার আশেপাশের অবস্থা পর্যালোচনা করে বিপদের প্রকৃতি সম্পর্কে আগে থেকেই বুঝতে পারে।
বিজ্ঞানিদের জন্য এই আয়াতে আল্লাহ অনেকগুলো ইংগিত দিয়ে রেখেছেন। প্রথমত,বাসার বাহিরে যে পিঁপড়ারা থাকে তারা সবাই স্ত্রী-পিঁপড়া। পুরুষ পিঁপড়া সবসময় বাসার ভিতরে থাকে। সমস্ত কর্মী পিঁপড়া স্ত্রী পিঁপড়া।
দ্বিতীয়ত, কিভাবে একটি পিঁপড়া হাজার হাজার পিঁপড়ার সাথে যোগাযোগ করে রাসায়নিক পদার্থ এবং গন্ধ দিয়ে যা একটি সফল মাধ্যম। নির্ভরযোগ্য ভাবে তথ্য সম্প্রচার করার জন্য তারা এটা করে থাকে।
তৃতীয়ত, কিভাবে হাজার হাজার পিঁপড়া সংকেত পেয়ে মুহুর্তের মধ্যে বাসায় ঢুকে পড়ে খুবই অল্প সংঘর্ষে করে।যা বিজ্ঞানিদেরকে যানবাহনের ট্রাফিক ব্যবস্থা উন্নততর করে দিয়েছে। বর্তমান ট্র্যাফিক ব্যবস্থা বিজ্ঞানীরা মূলত তৈরি করেছে পিঁপড়ার কাছ থেকে।
চতুর্থত, এককভাবে প্রতিটি পিঁপড়ার বুদ্ধি অল্প, কিন্তু হাজার হাজার পিঁপড়া সম্মিলিত ভাবে উচ্চতর বুদ্ধিমত্তার পরিচিয় দেয় যাকে ‘সোয়ার্ম ইন্টেলিজেন্স’ বলে।
পঞ্চমত, পিঁপড়ার কোন সামাজিক শ্রেণী বিন্যাস নেই।তাদের কোন দলনেতা নেই। কিভাবে হাজার হাজার পিঁপড়া কোন দলনেতা , রাজা বা রাণী পিঁপড়ার নিয়ন্ত্রণ ছাড়া প্রত্যেকে নিজের নিজের কাজ সুশৃঙ্খল ভাবে করে যাচ্ছে, তাও একটি বিরাট বিস্ময় এবং এনিয়ে বিগত বিশ বছর ধরে গবেষণা চলছে।
মানুষ যদি এরকম উন্নততর যান্ত্রিক ব্যবস্থা তৈরি করতে পারে যার কোন কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রোণ ব্যবস্থার প্রয়োজন নেই এবং একটি বিশাল যন্ত্রের প্রতিটি অংশ নিজে থেকেই সব সময় সঠিক কাজ করে, তাহলে ইঞ্জিনিয়ারিং অনেক সমস্যার সমাধান করা যাবে।
সম্ভবত এ কারণেই আল্লাহ্ কুরআনে বলেছেন- “যিনি তাঁর প্রত্যেকটি সৃষ্টিকে নিখুঁত করেছেন।“
যখনই কুরআনের কোন আয়াতে কোন কথোপকথন আসে, তখনই দেখবেই আল্লাহ্ আমাদেরকে কথোপকথনের শব্দ,বাক্যগুলোর মধ্য দিয়ে কমপক্ষে এই তথ্যগুলো দেন- বক্তার সংখ্যা,প্রকৃত,জ্ঞান,মানসিকতা। শ্রোতার সংখ্যা,প্রকৃতি, জ্ঞান,মানসিকতা। বক্তা ও শ্রোতার মধ্য সম্পর্ক। কথোপকথনের আগে কি ঘটে গেছে এবং অনেক সময় তাঁর পরে কি ঘটবে। আশপাশের অবস্থা,প্রেক্ষাপট।
এছাড়াও বিকৃত প্রায় আগের আসমানি কিতাবগুলোতেও পিঁপড়ার উল্লেখ আছে। যেমন উল্লেখ আছে, যদি তুমি অলস হও তবে তুমি পিঁপড়ার কাছে যাও।তার উপায় বিবেচনা করে জ্ঞানী হও।কারণ এই অতি ক্ষুদ্র প্রাণীটি বহুগুনে গুণান্বিত। পিঁপড়া আমাদেরকে দলবদ্ধতা শেখায়,পিঁপড়ার শৃঙ্খলা বোধ অনেক বেশি। খাবার যোগাড় থেকে শুরু করে সকল কাজে এরা দলবদ্ধ ভাবে করে থাকে।
পিঁপড়া শীতকালে খাবার সংগ্রহে কষ্ট হবে বলে সারা বছরই অল্প অল্প করে খাবার সংগ্রহ করে থাকে। এ থেকে আমাদের প্রধান শিক্ষণীয় বিষয় হলো, যদি আমরা বিপদের দিনের জন্য সার্ধ মত সঞ্চয় করি তাহলে অনিশ্চিত ভবিষতে আমাদের খুব একটা বিপদের সম্মুখিন হতে হবে না।
পিঁপড়ারা বিপদের আভাস পেলেই মুহুর্তের মর্ধেই তা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়। যা থেকে প্রধান শিক্ষণীয় বিষয় হলো, জীবন যুদ্ধে জয়ী হবার জন্য শুধু মাত্র নিজের বুদ্ধি দিয়ে চলবেন না। অন্যের বুদ্ধি এবং পরামর্শ অবশ্যই আমাদের কাজে লাগানো প্রয়োজন।
প্রতিটি পিঁপড়ার মধ্য রয়েছে নেতৃত্ব দানের প্রবল মেধা,সঠিক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত এবং দলের পরস্পরের প্রতি মায়া,মমতা, সহনশীলতা উদারতা এবং পরোপকারীতা। যার জন্য পিঁপড়ারা অতি প্রাচীনকাল থেকে টিকে রয়েছে। সময়ের সাথে বিলীন হয়ে যাচ্ছে নাম না জানা অনেক প্রাণী কিন্তু পিঁপড়ারা টিকে থাকছে যুগের পর যুগ ধরে।
মানুষের পিঁপড়ার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। এজন্যই হয়তো আল্লাহ্ তা’য়ালা পিঁপড়াকে নিয়ে বেশ কিছু আয়াত নাজিল করেছেন। শেষ করছি আজকের পর্ব।
ব্যাঙ সম্পর্কে জানতে ক্লিক
আমাদের গল্প যদি আপনাদের ভাল লাগে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ