®রোজা রহমান
‘
জুন মাস চলছে। রোদের তাপে টেকা যাচ্ছে না বাহিরে৷ কেউ ইচ্ছে করেও বাহিরে বের হতে চায় না৷ এই গরম, রোদ সব মিলিয়ে মানবজীবন ত্যানা-ত্যানা৷ প্রতিটা মানুষের দিকে নজর দিলে বোঝা যায় কতটা যন্ত্রণাময় জীবন পাড় করছে এই দিনে। তবুও চলতে হচ্ছে।
‘
কুয়াশা, স্মৃতি, ঈশা ক্লাস শেষ করে কলেজ থেকে বের হয়ে হাঁটছে। এই রোদ,গরম যেন ওদের ছুঁতেই পারছে না৷ তিব্র রোদে ছাতাবিহীন তিন বান্ধবী গল্পে মজে হেঁটে চলেছে। ওদের কলেজ থেকে বের হয়ে দুই-তিন মিনিট হাঁটার পর ডানে একটা গলি পড়ে সেই গলি দিয়ে দশ-পনের মিনিট হাঁটলে কুষ্টিয়া স্টেশন পড়ে। তারপর কুষ্টিয়া ইসলামীয়া গলি। কলেজ ছেড়ে সেই গলি দিয়ে হাঁটছে এখন। উদ্দেশ্য স্টেশন দিয়ে হেঁটে ইসলামীয়া গলি দেন আবারও হেঁটে মৌবন মাসালা রেস্টুরেন্টে যাবে৷ যেটা এন.এস রোডে বঙ্গবন্ধু শপিংমলের সামনে অবস্থিত। ওখান থেকে চিকেন গ্রিল সহ ঠান্ডা কিছু খাবে। সেগুলোই এখন তাদের মধ্যে প্ল্যান চলছে। তিন বান্ধবীর গল্পের মাঝে হঠাৎই সেখানে সাইকেল নিয়ে উপস্থিত হলো রনি আর ওর বন্ধু৷ তা দেখে বিরক্তে চোখ মুখ কুঁচকে ফেলল কুয়াশা। বিড়বিড়াল,
” কোনো জায়গায় শান্তি নেই এই উগান্ডার বা’ন্দ’রের জন্য ”
প্রশ্ন করল কুয়াশা,
” এখানে কি তোদের? পিছু নিয়েছিস কেন? “
” আমার হবু প্রেমীকা এই রোদে হেঁটে হেঁটে যাচ্ছে এজন্য ভাবলাম আমিও সঙ্গ দিই “
কথাগুলো রনি হেসে হেসে বলল। বলা শেষে চোখ টিপল।
রাগ মাথার চাঁন্দির উপর উঠে তা সপ্তম আসমানে পৌঁছে গেল কুয়াশার৷ একে তো পিছু নিয়েছে এখন আবার ওর ঘ্যানঘ্যনানি প্যানপ্যানানি শুরু হয়েছে! হাঁটা বন্ধ করে দাঁড়িয়ে পরল কুয়াশা। রেগেমেগে বলল,
” দেখ রনি অসহ্য লাগছে কিন্তু। দিন দিন লিমিট ক্রোস করছিস। এক কথা বার বার বলতে ভালো লাগে না। দূরে থাক আমার থেকে। আর এভাবে আসছিস সামনে আমার ভাইয়ারা থাকতে পারে দেখলে কি হবে ভাবতে পারছিস? তাই বলছি দূরে সর আর এখান থেকে বিদায় হ “
বলে আবার হাঁটা ধরল৷ স্মৃতি রনিকে বলল,
” দেখিস মেয়েটা তোকে পছন্দ করে না, সহ্য করতে পারে না তবুও কেন জ্বালাচ্ছিস? মনের উপর কারো জোর খাটে না রনি। তোকে আগেও বলেছি এখনো বলছি। ”
” তুই চুপ থাক তো। ওকে আমি ভালোবাসা বুঝিয়েই ছাড়ব। তুই বড় বড় কথা বলিস না। নয়তো বাড়ি গেলে তোর খবর করব আমি ”
স্মৃতি বিরক্তিতে ভ্রু কুঁচকে দীর্ঘ শ্বাস ফেলল। এ ছেলেকে আর বোঝাতে পারল না সে। এত করে বলা হয় তবুও শোনে না৷ কেমন নির্লজ্জের মতো ব্যবহার করে।
স্মৃতির চাচাতো ভাই রনি৷ কুয়াশাকে জ্বা’লানোর জন্য কত মানা করে কিন্তু সে বান্দা শোনার নামই নেই না৷ কুয়াশা তার একমাত্র বান্ধবী তাকে এভাবে জ্বালায় বলে স্মৃতিও যথেষ্ট বিরক্ত হয়৷
স্মৃতি বিরক্ত নিয়ে কুয়াশার পিছু নিল। রনিও কথা না শুনে আবার গেল। কিছুক্ষণ হাঁটার পর তারা স্টেশন পেল। সেখানে রেলপথ পাড় হবার সময় সামনে শিশির পড়ল। শিশিরের সাথে রিজভীও আছে। এখানে হয়তো কোনো দরকারে এসেছে। শিশিরকে দেখে কুয়াশা ভূত দেখার মতো করে চমকাল। গলা শুকিয়ে গেল মেয়েটার। সেই অবস্থাতে ঘাড় ঘুরিয়ে একবার রনিকে দেখল। সে সাইকেল নিয়ে তারই পেছনে দাঁড়িয়ে আছে৷ এবার আরো ভয় পেল। কারণ তাদের বাড়ির কেউ ছেলে নিয়ে ঘোরা একদম পছন্দ করে না। ফ্রেন্ড থাকুক সমস্যা নেই কিন্তু রাস্তা ঘাটে ছেলে ফ্রেন্ড নিয়ে ঘুরে অযথা লোক-চোখের কাছে খারাপ মন্তব্য পাবার কোনো প্রয়োজন নেই৷
এখনকার দিনে সামান্য নিজের ভাই নিয়ে মেয়েরা বের হলেই না জেনে না বুঝে একটা বাজে মন্তব্য করে দেয় এই সমাজ। সেখানে ছেলে ফ্রেন্ড নিয়ে ঘুরাঘুরির কোনো মানেই হয় না। এই সমাজের মানুষের ভাবনা চিন্তা হয় আকাশ-পাতাল। দেখে এক আর বানায় আরেক। অযথা লোকমুখে নিজেকে খারাপ মেয়ে বলে পরিচয় দেবার দরকার কি? এতে বংশ, পরিবার, মা-বাবার শিক্ষার উপর আঙ্গুল তোলা হয়। এটাই ভাবেন কুয়াশার চাচু, ভাইয়ারা। এই জন্য বলা হয়েছে রাস্তা ঘাটে কোনো অপরিচিত বা বন্ধু সাথে করে ঘুরাঘুরি না করতে৷
কিন্তু কথায় আছে না?
” যেখানে বা’ঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যা হয়!!”
ঠিক এই কথাটাই ফলে গেল কুয়াশার সাথে৷
এদিকে শিশির কুয়াশাকে এসময় এখানে দেখে ভ্রু কুঁচকাল আরো কুঁচকাল পেছনে থাকা ছেলেটাকে দেখে৷ রনিকে শিশির চেনে না এমনকি রনিও চেনে না শিশিরকে, কখনো দেখেনি কেউ কাউকে। শিশির প্রশ্ন করল,
” তুই এখানে? কোথায় যাচ্ছিস? ”
কুয়াশার গলা আরো শুকিয়ে গেল৷ যদি অন্য সময় হতো তবে এই প্রশ্নের জবাব কেন? এখানে দাঁড়াত-ই না সে। শিশিরের প্রশ্ন শুনে আরেকবার রনিকে দেখে নিয়ে আশেপাশে জায়গা, ক্ষণ সহ মানুষ জনকে দেখে নিল। না অনেক মানুষজন৷ এত মানুষের সামনে সিনক্রিয়েট করার মানে হয় না৷ তাই নরম সুরে আমতা আমতা করে বলল,
” মৌবনে যাচ্ছি। খিদে পেয়েছে ”
ব্যস হয়ে গেছে, আর কি লাগে? শিশিরের মাথা গরম হতে? কুয়াশার এই কথাটুকুই যথেষ্ট ছিল। রাগ যেন তড়তড়িয়ে উঠল মাথায়। কত বড় সাহস!! বন্ধু নিয়ে যাচ্ছে মৌবনে? সেখানে বন্ধু নিয়ে যাবার মানে কি? এত সাহস কোথা থেকে পেয়েছে এই গোবর ঠাঁসা!!
মাথার ভেতর ঠিক এই কথাগুলোই বারি দিল। রাগে ফুঁসে উঠে বলল,
” সেটা তোদের তিনজনে হতো না? নাকি বিল পে করার জন্য অন্যকারোর দরকার পরেছে? “
এমন কথায় কান্না পেল কুয়াশার। এটা পুরো অপমান। কত বড় কথাটা বলল!! চোখে পানি টলমল করে উঠল। সেটা যেন শিশিরের চোখে ধরা দিল না। এদিকে শিশিরের বাজখাঁই কন্ঠ শুনে ঈশা সহ স্মৃতিও ভয় পেয়ে গেল। আর রনি ওর বন্ধু ভয় না পেলেও ঘাবড়ে গেল। বিষয়টা বুঝল না, এটা কে? এমন করে কথাই বা বলছে কেন? কুয়াশার ভাই? রনি ধরে নিল কুয়াশার ভাই। কিছু বলতে যাবে তখন রিজভী কুয়াশার চোখে পানি টের পেয়ে বলল,
” আহ শিশির, কি হচ্ছে? রাস্তার মধ্যে সিনক্রিয়েট করিস না। আশেপাশে দেখ৷ মানুষ তাকিয়ে আছে।”
বলা শেষ করে বলল,
” কুয়াশা ওরা কারা? ওদের সাথে যাচ্ছ তুমি? “
রিজভীর কথার উত্তরে কুয়াশা কান্না ভেজা কন্ঠে কিছু বলতে যাবে তখন রনি বলল,
” আপনারা ভুল ভাবছেন ভাইয়া। আমরা ওদের বন্ধু। আর ওরা আমাদের ডাকেনি বা বলেনি যাবার কথা। আমরা নিজে থেকে আসছিলাম। রোডে ওরা একাই হাঁটছিল আমরা দেখে জাস্ট সঙ্গ দিয়েছি। নাথিং এলস। ভুল বুঝবেন না আপনারা প্লিজ ”
রনির কথায় স্মৃতি, ঈশাও সায় দিল।
শিশির বোধহয় একটু শান্ত হলো। রাগটাকে দমিয়ে নিল। তারপর ভারি স্বরে বলল,
” চল আমার সাথে ”
বলে কুয়াশার হাত চেপে ধরল। কুয়াশা মাথা নিচু করে আছে। ভেতরে ভেতরে রাগ হচ্ছে কিন্তু খারাপও লাগছে৷ না জেনে শুনে কতবড় কথাটা বলল! আগে বিষয়টা জিজ্ঞেস করে নিতে পারত৷ তাকে খারাপ মেয়ে বলে গণ্য করল!!
শিশির সবার উদ্দেশ্যে বলল,
” তোমরাও এসো “
রনি বাঁধ সেধে বলল,
” না ভাইয়া আমরা যাব না। এই পর্যন্তই আসতাম আমরা। ”
এ পর্যন্ত বলে পিছেনে বামের রোড দেখিয়ে বলল,
” এই রোডে আমাদের বাসা। আমরা চলে যাচ্ছি। আপনারা যান। আসছি ভাইয়া, আসসালামু আলাইকুম”
বলা শেষ করে সাইকেল ঘুরিয়ে আবার বলল রনি,
” আর হ্যাঁ, আমি স্মৃতির চাচাতো ভাই। আমরা সবাই একই ইয়ারে। কুয়াশা খুব ভালো মেয়ে ভাইয়া। আসছি!”
বলা শেষে চলে গেল ওরা। ওরা সত্যি এই পর্যন্তই আসতো। ভেবেছিল রেলপথ পাড় করে কুয়াশাকে আরেকটু জ্বা’লিয়ে তারপর বাসার রাস্তা ধরবে। কিন্তু তারআগেই শিশিরের সাথে দেখা হয়ে গেল। শেষ কথাগুলো বলল যাতে কুয়াশাকে ভুল বুঝে বকাঝকা না করে। রনি ছেলেটা সত্যি ভালো। কিন্তু সে মরিচিকার পেছনে দৌড়চ্ছে। কুয়াশা তো তাকে চাই না! অনেক কষ্ট পাবে ছেলেটা৷
শিশির আর কিছু বলল না। কুয়াশার হাত ধরেই রেলপথ পাড় হয়ে গলির রোড ধরল। পেছনে রিজভী সহ স্মৃতি, ঈশা। কুয়াশা চোখ মুখ লাল করে দাঁতে দাঁত চেপে শিশিরের সাথে পায়ে পা মিলাচ্ছে।
কিছুক্ষণ হাটার পর তারা নিদিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাল। মৌবনের সামনে গিয়ে রিজভীকে বলল,
” তুই খাবি? তাইলে আমিও ঢুকব। নয়তো ঢুকব না “
” চল এই গরমে ঠান্ডা কিছু খেয়ে আসি ”
শিশির আর প্রত্যুত্তর করল না। কুয়াশার হাত এখনো ছাড়ে নি। হাত ধরেই ভেতরে ঢুকল। ঢুকে এক ঘন্টার জন্য একটা টেবিল বুকিং করল। এসছে যখন একটু জিড়িয়ে যাক, এই ভেবেই বুকিং করল৷ সেই টেবিলে কুয়াশাকে বসিয়ে নিজেও কুয়াশার পাশে বসল। অন্যরাও পাশাপাশি, সামন-সামনি বসল। কুয়াশা মনে মনে বিড়বিড়াল,
” যত্তসব আদিক্ষেতা দেখানো হচ্ছে, যে আমি বোনকে কত কেয়ার করি, ভালোবাসি হুহ। বুনো ওল কোথাকার৷ বাড়ি চল না একবার এই অপমানের প্রতিশোধ যদি না নিছি তবে আমার নামও কুহেলিকা কুয়াশা মালিথা নাহ।”
তারপর সেখান থেকে খাবার অর্ডার করে খাওয়া দাওয়া করে টুকটাক গল্প গুজব করল। কুয়াশা শুধু চুপচাপ খেল। কথা বলল না।
‘
খাওয়া দাওয়া শেষ করে কিছুক্ষণ বসে গল্প করার মাঝে বাঁধল বিপত্তি। কুয়াশার শরীরের অবস্থা খারাপ হতে লাগল। পেটে কেমন মোচড় দিয়ে ব্যথা শুরু হলো। বমিও আসছে। চোখ মুখ অস্বাভাবিক হয়ে হাসফাস করতে লাগল। কিন্তু কিছু বলল না তবুও শিশিরকে। দমানোর চেষ্টায় লাগল।
এমন হবার কারণ, তিব্র রোদের মধ্যে হেঁটে এসে এখানে আবার তৈলাক্ত চিকেন গ্রিল সহ ঠান্ডা কোল্ড ড্রিংক খেয়ে বেচারার ঠান্ডা গরম শরীরে বসে এমন হচ্ছে। তারউপর মেয়েটার আবার গ্যাসট্রিকের সমস্যা আছে৷ তেলের জিনিস খেলেই খবর হবে। এদিকে আবার রোদ থেকে এসে সরাসরি এসির হাওয়া শরীরে লেগেছে এর জন্যই আরো কুলাতে পারছে না শরীর। কুয়াশার অবস্থা সামনে থেকে রিজভী সহ স্মৃতির চোখে পরল। রিজভী প্রশ্ন করল আগে,
” কুয়াশা..! কি হয়েছে? ঠিক আছো তুমি? “
কুয়াশা মাথা তুলে তাকাল রিজভীর পানে৷ শিশিরও রিজভীর কথা শুনে তাকাল। দেখল কেমন যেন লাগছে মেয়েটাকে৷ চোখে পানি এসে গেছে। শিশির এবার বলল,
” ঠিক আছিস তুই? কি হয়েছে এমন লাগছে কেন? “
কুয়াশা শিশিরের পানে অসহায় ভাবে তাকাল। চোখে পানি টলমল করছে৷ বহু কষ্টে উত্তর করল,
” কষ্ট হচ্ছে ভাইয়া ”
তারপর আর কিছুই বলতে পারল না পেছনে ওয়াশরুম আছে সেখানে দৌড় দিল। ওয়াশরুমে গিয়ে হরহর করে বমি করে দিল। ওর এরকম কাজে আশে পাশের অনেকেই তাকিয়ে আছে৷ রেস্টুরেন্টের দুইটা স্টাফ জিজ্ঞেস করল শিশিরকে,
” কি হয়েছে স্যার? “
শিশির সেখানে উত্তর না করে দ্রুত পায়ে চলে গেল ওয়াশরুমে। গিয়ে দেখল একেরপর এক বমি করে চলেছে কুয়াশা৷ শিশির হতভম্ব হয়ে গেল। এমন করার কারণ কি? খাবার তো ঠিকই ছিল!! ভাবতে ভাবতে কুয়াশার কাছে এগিয়ে গেল। কিছুটা বিচলিত লাগল যতই হোক বোন তো? হাজার ঝগড়া করুক কোনো ভাই-ই বোনের এমন করুন অবস্থা সহ্য করতে পারবে না৷ এসব সময়ে শত্রুতা আসে না। বিপদে রক্ত কথা বলে। তেমনি শিশিরি পারল না কুয়াশার শরীর খারাপ হতে দেখে। বিস্ময় দিয়ে জিজ্ঞেস করল,
” এ্যাই কুশু..! কি রে কি হলো তোর? বমি করছিস কেন? শরীর খারাপ লাগছিল আগে থেকে বলবি না? “
কুয়াশা নেতিয়ে গেছে। বেসিন ধরে দাঁড়িয়ে আছে। শিশির ওর দুই বাহু ধরেছে। বমি কমে এসেছে। বেসিন থেকে পানি নিয়ে চোখে মুখে দিল। তারপর কমল কন্ঠে নিচু স্বরে শুধু বলল,
” ভাইয়া খুব কষ্ট হচ্ছে। মনে হচ্ছে ম’রে যাব আমি “
তারপর আর কিছু বলতে পারল না এলিয়ে দিল মাথা শিশিরের বুকে আর শিশিরের শরীরের সাথে নিজের শরীর ভর ছেড়ে দিল। তড়িঘড়ি করে ধরল শিশির। ওর এই অবস্থা দেখে বিস্ময়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছে। নিশ্চয়ই বেশি খারাপ লাগছে৷ নয়তো এ মেয়ে এমন করার মেয়ে না। কথাটা ভেবে কুয়াশাকে নরম স্বরে বলল,
” হাঁটতে পারবি? “
কুয়াশা কোনো উত্তর করল না। শিশির যা বুঝার বুঝে গেছে। কথা না বাড়িয়ে কোলে তুলে নিল। কোলে নিয়ে বেড়িয়ে এলো।
এদিকে স্টাফ সহ ম্যানেজারদের রিজভী সামলাচ্ছিল। এরই মাঝে শিশিরকে কুয়াশাকে কোলে করে নিয়ে বেরোতে দেখে হতভম্ব হয়ে গেল সাথে ঘাবড়ে গেল সবাই। তড়িঘড়ি করে স্মৃতি, ঈশা এগিয়ে এসে প্রশ্ন করল,
” ভাইয়া কি হয়েছে কুশুর?”
বলে আবার কুয়াশাকে ডাকতে লাগল। রিজভীও একই কথা জিজ্ঞেস করল। ম্যানেজার এসে জিজ্ঞেস করতেই শিশির বলল,
” বমি করেছে। মেবি গ্যাসট্রিকের সমস্যা হয়েছে। আপনারা বিচলিত হবেন না। খাবারের দোষ নেই৷ আমরাও খেয়েছি। আর হ্যাঁ আমি এক্সট্রা টাকা পেমেন্ট করে দিচ্ছি আপনারা কাইন্ডলি ওয়াশরুমটা পরিষ্কার করিয়ে নিয়েন, প্লিজ। “
তারপর রিজভীকে বলল,
” টাকা পেমেন্ট করে ওদের নিয়ে বেরিয়ে আয়। আমি কুশুকে নিয়ে হসপিটালের যাচ্ছি। “
বলা শেষ করে আর কোনো কথা না বলে বেরিয়ে গেল। রিজভী সেখানে সামলে স্মৃতি, ঈশাকে নিয়ে অন্য একটা সিএনজিতে হসপিটালের উদ্দেশ্যে গেল৷
| চলবে |
বুনো ওল বাঘা তেতুল গল্পের লিংক ( all part )
আজ কিন্তু ঝগড়াবিনা পর্ব