পর্ব ২
®রোজা রহমান
‘
শুক্রবারের জুম্মার নামাজ আদায় করে মালিথা ভিলার সকল ছোট বড় পুরুষগুলো একসাথে বাড়িতে ঢুকলেন। এই বাড়ির নিয়ম এটা, শুক্রবারে সবাই একসাথে নামাজে যাবে। আর বাড়ির ছোট বড় সকলের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা বাধ্যতামূলক। যত কাজই থাকুক নামাজ আদায় করা চায়-ই চায়। এটা বংশ পরম্পরা থেকে চলে আসছে।
‘
বাড়িতে ঢুকে শিশির আর হিমেল বাদে একে একে সবাই কুয়াশা আর বৃষ্টিকে ডাকতে লাগল। কারণ আজ মসজিদে জিলেপি দিয়েছে যেটা কুয়াশার ভিষণ প্রিয়। গরম গরম জিলেপি তার ভিষণ প্রিয় আর মসজিদ থেকে দিলে সেটা সে আনন্দের সাথে লাফিয়ে লাফিয়ে খায়। তার ভাষ্যমতে বাজারে দোকানের জিলেপির থেকে মসজিদে ছিন্নি দেওয়া জিলেপির স্বাদ বেশি থাকে এবং সাথে আনন্দ মেশানো থাকে। বাড়ির প্রত্যেকে ওর এরকম ছোট ছোট পাগলামো গুলোতে বেশ আনন্দ নিয়েই সায় দেয়। আগে চাচুরা, ভাইরা ওকে ডাকত বৃষ্টি আসার পর থেকে বৃষ্টিকে সহ ডাকে। বৃষ্টির এ বাড়িতে আসা ছয় মাস মতো হচ্ছে। তুষারের বিয়ে দেড় বছর পড়িয়ে রেখেছিল। ছয় মাস আগে ধুমধামে উঠানো হয়েছে৷ তাদের প্রেমের বিয়ে।
মেজো চাচু অর্থাৎ জাহিদ মালিথার বড় ছেলে তুহিন কুয়াশাকে জোরে জোরে ডেকে বলছে,
” কুহেলি..! এ্যাই কুহেলি এই দেখ গরম গরম জিলেপি এনেছি৷”
এই বাড়িতে তিনটা মানুষ কুয়াশাকে কুহেলি ডাকে। এক ওর বাবা ডাকত। বাকি দুইজন ওর বড় চাচু এবং তুহিন।
তুহিনের কথা শুনে শিশির হিংসুটে নজরে চোখ মুখ কুঁচকে তাকিয়ে থেকে জিলেপি খেতে খেতে বিড়বিড় করে বলল,
” ঢং দেখলে আর বাঁচি না, গোবর ঠাঁসাকে নিয়ে আবার যত্তসব আদিক্ষেতা হুহ “
কথাগুলো আস্তে বিড়বিড় করে বললেও পাশে থাকা হিমেল শুনে নিল। হিমেলও জিলেপি খেতে খেতে বলল,
” ভাই, কথাটা মন্দ বলোনি “
এই একটা শিশিরের দিকে থাকে সব সময়। কুয়াশার ভাষায় যাকে বলে, ভাই কা চামচা।
হিমেলের কথা শুনে শিশির হিমেলের কাঁধ জড়িয়ে ধরে বলল,
” এই না হলে আমার ভাই! বুঝছিস হিম এ বাড়িতে আমার অবুঝ মনের দুঃখটা তুই একমাত্র বুঝিস। আমার সুখের সংসারে ঐ শ’কু’নি’ এসে নজর দিয়েছে।”
হিম তা শুনে খেক খেক করে হেসে দিল। কুয়াশা উপর থেকে দৌড়ে এলো। এসে একে একে সবার কাছে থেকে জিলেপি নিয়ে নিল। শিশির আর হিমের দিকে তাকাল। দেখল, তারা নিজেদেরটা বেশ আরাম করে খাচ্ছে। এরা দুটো জীবনেও দেয় না তাকে। তা দেখে শিশিরের দিকেই তাকিয়ে মুখ ঝামটাল এবং হাতের জিলাপি ওদের দেখাল। অর্থাৎ,
” এই দেখ আমার তোদের থেকে বেশি হুহ”
আপাতত এখন ঝগড়া বন্ধ। কারণ সামনে বড় চাচু আর মেজো চাচু আছে। এই দু’জনকে কুয়াশা ভয় পাই। উনাদের সামনে ঝগড়া করতে পারেনা। আর শিশির জাহিদ মালিথাকে একটু ভয় পায়। মেজো চাচু অনেক ডে-ঞ্জারাস পার্সোন। ডিআইজি মানুষ তিনি। জাহিদ মালিথার ছোট ছেলে নীহার বলল,
” ভাবিকে ডাক কুশু “
উত্তরে কুয়াশা বলল,
” ভাবি রান্নঘরে, ঐ তো আসছে “
বৃষ্টি চলে এসেছে। দু’জন বসে খাবে। ভাবি ননদের ভালোই মিল। সবাই ড্রয়িং রুমে সোফায় বসে। বাড়ির বউরা ডাইনিংএ খাবার বাড়ছে। সকলে একসাথে দুপুরের খাবার খাবে৷ শুক্রবারে মালিথা ভিলাতে ঈদ ঈদ আমেজ আসে। বিভিন্ন পদের খাবারের আয়োজন করা হয় দুপুরে। নামাজ পড়ে ভাইরা, চাচুরা একসাথে খায়৷ যদিও জাহিদ মালিথা মিস করে ফেলেন তুবুও মাঝে মাঝে থাকার চেষ্টা করেন। খাবার বেড়ে সকলকে ডাকলেন জাকিয়া বেগম। একে একে সকলে খাবার টেবিলের উদ্দেশ্যে গেল। কুয়াশা গিয়ে একে একে খাবারের দিকে নজর দিল। তার প্রতি দিনের অভ্যাস এটা। দেখল প্রায় আট-দশ রকমের পদ রান্না হয়েছে। তারমধ্যে তার সব থেকে প্রিয়, ডিম ভুনা ও খাসির মাংস ভুনা। এই দুটো খাবার শিশিরেরও প্রিয়। কুয়াশা গিয়ে আগে আগে খাসির মাংসের বাটিটা নিয়ে বসল। তা দেখে শিশির ভ্রু কুঁচকাল৷ এদিকে আজমিরা বেগম চোখ রাঙিয়ে তাকালেন। কুয়াশা দু’জনের একজনকেও পাত্তা দিল না। সে তো আগে খাবে তারপর কথা। শিশির ওকে একা খেতে দেখে উঠে গিয়ে ওর সামনে থেকে বাটিটা নিয়ে চলে এলো। সবার নজর ওদের দু’জনের দিকে। মনে মনে কেউ কেউ ভাবছে,
“আবার বাঁধবে একচালান “
হিমেল কুয়াশার মুখের অবস্থা দেখে খেক খেক করে হেসে দিল। কুয়াশার মেজাজ গেল আরো বিগড়িয়ে। উঠতে যাবে আজমিরা বেগম দিলেন এক রাম ধমক। ধমক খেয়ে বসে ফুঁপাতে লাগল। তা দেখে জাকির মালিথা আজমিরাকে বললেন,
” আহ আজমিরা, বকো কেন? “
এই বলে শিশিরের উদ্দেশ্যে বললেন,
” এ্যাই বেয়াদব ছেলে! তুমি ওর মুখের খাবার কেন কেঁড়ে নিলে? “
” বাবা ও একাই খাবে নাকি? দেখলে না কি হারে একা একাই খাচ্ছিল। ওমন খেলে তো দুইদিনেই ফেঁটে ফুঁটে বেড়িয়ে যাবে। কম কম করে খেতে বলো তোমার ভাতিজিকে। নয়তো বিয়ে হবে না। “
তারপর আবার কুয়াশাকে বলল,
” ন্যাকারাণী কম করে ঢং কর “
বলা শেষে মন দিল খাওয়াতে। কুয়াশা তা শুনে আরো ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগল ঢং করে।
জাকিয়া ছেলের দিকে চোখ মুখ কুঁচকে বললেন,
” তো, আর কি ছিল না? ওর থেকেই কেন নিতে হলো তোর? “
” আমার এগুলোতেই হয়ে যাবে। যাও এই রাক্ষসীকে আর সবাইকে এনে দাও আবার। “
বলে ভাবলেশহীন ভাবে খাওয়া ধরল। সত্যি সত্যি দিল না কাউকে। শিশিরের খাবার দিকে সবাই তাকিয়ে থাকল। আর এদিকে সে তো আপন মনে খেয়ে চলেছে৷ এ ছেলেকে আর কি বলবে? সবাই বুঝে গেছে পাল্লা দিয়ে কেঁড়ে নিয়ে খাচ্ছে। কেউ আর কথা বলল না। চুপচাপ খেতে লাগল। কেউ কেউ মিটমিট করে হাসছে আর খাচ্ছে। এদিকে কুয়াশা রোস্টের লেগপিসে শিশিরের দিকে তাকিয়ে কামড় দিচ্ছে যেন সে লেগপিসে না আস্থ শিশিরকেই কামড়ে চিবায় চিবায় খাচ্ছে। শিশির খাবার মাঝে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে বিষয়টা। সেও এমন ভাবে তাকাল যেন তাকানোটা বলছে,
” আগে খেয়ে নিই তারপর তোর খবর করছি ”
_____
বিকেল পাঁচটা৷ সূর্য ডুবুডুবু। সারাদিন সূর্যিমামা আ-গুন ঝরা রূপ দেখিয়ে এখন নেতিয়ে পড়েছে৷ অতিরিক্ত গরম পড়ছে। জাকির মালিথা এই সময় হাটতে বের হন। তিনি একজন সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা। জাহিদ মালিথা বাড়িতে থাকলে ভাইকে সঙ্গ দেন। আজ বাড়িতে আছেন বলে তিনিও বের হয়েছেন।
তিন জা মিলে গল্প করতে করতে পাশের বাড়িতে গেছেন৷ শুক্রবারটা তিন জা এক সাথে কাটান৷ অন্নান্য দিন মেজো জা অর্থাৎ আম্বিয়া বেগম থাকতে পারেন না। কারণ তিনি একজন প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা।
এদিকে বাড়ির ছোট সদস্যের মধ্যে মেয়েরা মুভি দেখবে বলে ঠিক করল। বাড়ির বড় বউ বৃষ্টি, কুয়াশা আর তুহিনের হবু বউ ইয়াসমিন, ইয়াসমিনের ছোট বোন ইশা এসেছে বিকেলে। ইয়াসমিন, ইশা তুহিনের মামাতো বোন সম্পর্কে। তাদের বাড়ি খুব একটা দূরে না। কুয়াশাদের বাড়ি থেকে হেঁটে যেতে পনের মিনিট কিংবা একটু বেশি সময় লাগে। তুহিনের সাথে ইয়াসমিনের বিয়ে অনেক আগে থেকেই ঠিক করা৷ বলতে গেলে ছোট থেকেই। ইয়াসমিন অনার্স চতুর্থ বর্ষে রসায়ন নিয়ে পড়ছে। আর তুহিন বছর খানেক হচ্ছে পড়াশোনা শেষ করে ব্যাংকে জব করছে। খুব জলদিই তাদের বিয়ের আয়োজন শুরু হবে। বাড়ির বড় ছেলে তুষার এএসপি অফিসার। হিমেল নবম শ্রেণিতে উঠেছে। নীহার আর শিশির তো এখনো পড়াশোনা করছে। নীহারের ইচ্ছে নৌবাহিনীতে যোগ দেওয়ার।
‘
তারা শুক্রবার দিনটা এভাবেই কাটায়। হয় মুভি দেখবে নয়তো ছাদে এক সাথে বসে গল্প করবে আর নয়তো বড় ভাইদের কাছে আবদার করবে ঘুরতে নিয়ে যেতে। যদিও সব কিছুতে শিশির, কুয়াশার মা-রা মা-রি আর ঝগড়া দেখেই কাটে সকলের।
বৃষ্টি বলল,
” কুয়াশা, ইশা, ইয়াসমিন কি মুভি দেখবে?”
” ভাবছি কি মুভি দেখব। হলিউড নাকি বলিউডের মধ্যে? ”
ইশা বলল,
” যাই দেখবি রোমান্টিক কিছু সিলেক্ট কর”
কুয়াশা ইয়াসমিনকে বলল,
” বুবু তুমি ঠিক করো। আমার মাথায় আসে না ”
বৃষ্টি বলল,
” আশিকি নয়তো আশিকি টু? মুভি দু’টো কিন্তু পুরোনো হয়ে গেলেও এখনো ভালো লাগে৷ ইমোশন সহ রোমান্টিক, রোমান্টিক ফিল দেয়।”
ইয়াসমিন বলল,
” কি ভাবি? আজ এমন ব্লাশিং করছো? ব্যাপার কি? ”
” ব্যাপার তেমন কিছু না হবু দেবরাণী। চলো মুভি চালু করো “
অতঃপর তারা মুভি দেখা ধরল আশিকি টু। ছেলেরা কেউ নেই। বাইরে গেছে। বেশ সুন্দর করে মনোযোগ দিয়ে দেখছে বসার ঘরে সোফায় বসে সাথে বৃষ্টি চা, সিঙ্গারা আর মুড়ি মাখিয়ে এনেছে। খাচ্ছে আর দেখছে। ইশা বলল,
” কুশু, কাল কলেজে যাব না আমি। তুই যাইস৷ ”
উত্তরে কুয়াশা বলল,
” আচ্ছা ”
কুয়াশা আর ইশা একসাথে একই কলেজে পড়ে। তারা সেম ইয়ার।
গল্পে গল্পে বেশ সুন্দর মুভি দেখছে। মুভির মাঝে আদিত্য আর শ্রদ্ধার সেই বিখ্যাত সিন আসল, বৃষ্টির মধ্যে ভিজে রোমান্টিক কিসিং সিন। তারা বেশ ভালোই রোমান্টিক মুডে চলে গেছে। টিভিতে চলছে, আদিত্য শ্রদ্ধাকে আরোহী, আরেহী বলে ডাকতে ডাকতে আসছে৷ এসে শ্রদ্ধার হাত ধরল। কিছুক্ষণের মাঝে নিজের ব্লেজার খুলল এবং শ্রদ্ধার মাথার উপর দিল এখন একই ব্লেজারের মধ্যে দু’জন৷ গান শুরু হয়েছে, হাম তেরে বিন আব রেহে নাহি সাকতে। দু’জন দু’জনের দিকে তাকিয়ে। এবার অধর চুম্বনে লিপ্ত হয়েছে আর ঠিক সেই সময় কুয়াশার মাথা চা-টি পড়ল। কুয়াশা চমকে তো উঠেছেই তারসাথে ব্যথাও পেয়েছে। বেশ জোরে মে-রেছে ‘আহ’ বলে শব্দ করে উঠেছে। ওর চেঁচানোতে সবাই চমকে উঠছে। আচানকের উপর ঘটেছে কারণ তারা সবাই মুভির মাঝে বিভোর হয়ে ছিল। কে মা-রল সেটার উৎস খুঁজতে কুয়াশা সহ সবাই তাকাল। দেখল শিশির কুয়াশার পিছনে দাঁড়িয়ে।
ল্যাহ হয়ে গেল!! তাদের মুভি দেখা, সাথে রোমান্টিক সিন দেখা। তাদের রোমান্টিক মুডের দি এন্ড করতে স্বয়ং শিশির মালিথা দাঁড়িয়ে। সবাই একবার কুয়াশার দিকে তাকাচ্ছে তো একবার শিশিরের দিকে। আর ওদিকে টিভিতে নায়ক নায়িকাকে কোলে করে ভিজতে ভিজতে রুমে নিয়ে চলে এসেছে। কি এক্টা অবস্থাতে সবাই দাঁড়িয়ে! না পারছে টিভি বন্ধ করতে আর না পারছে কিছু বলতে। ইশা তো লজ্জায় মরি মরি। সে শিশিরকে একবার দেখছে আর একবার টিভি। শিশির সবাইকে একবার করে দেখে নিয়ে দিল এক ধমক কুয়াশাকে। বলল,
” এ্যাই বে-য়াদব গোবর ঠাঁসা এগুলো দেখিস সবসময়? এগুলো দেখে দেখেই তাইলে এমন ইঁচরেপাকা হয়েছিস? অকাল পক্ক কোথাকার। “
সকলে ভড়কে গেল৷ আর কুয়াশা? সে রাগে তো ফুঁসছেই সাথে একটা জিনিস ভাবছে, মুভি কি সে একা দেখছে? এখানে তো আরো মানুষ আছে তারা পাকছে না? সে একা কি করে পাকছে? ফরমালিন কি সে একাই গ্রহণ করছে? ভাবনার মাঝে শিশির এবার ওর চুল টেনে ধরল। ব্যথায় আবারও আহ করে উঠল। আর কুয়াশার চোখে পানি এসে গেল। সে চুল ধরা অবস্থাতেই উঠে দাঁড়াল। চেঁচিয়ে বাজখাঁই কন্ঠে বলে উঠল ,
” এ্যাই!! এ্যাই বুনো ওলের বাচ্চা চুল ছাড়৷ ছাড় চুুল! তোর বাবাতি চুল আমার মাথায় লাগিয়েছি আমি? সব সময় চুল ধরবি? “
বলতে বলতে শিশিরের চুল ধরতে গেল কিন্তু পারল না কারণ শিশির ওর থেকে অনেকটা লম্বা। চুল না পেলে কি হবে? থেমে থাকবে কুয়াশা? কখনো না৷ সে চুল ধরতে না পেরে শিশিরের কান ধরল। বেশ জোরেই ধরেছে৷ আচ্ছা জোরেই ব্যথা পেল শিশির। শিশির আরো গেল রেগে। একে তো তুই তুকারি করছে তার উপর বাজে ভাষা ছাড়ছে আবার এখন তার কান ধরল? কতত বড় সাহস!!
আর এদিকে বাকিরা হতভম্ব, হতবুদ্ধি, হতবিহ্বল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তারা কিছু বলতে এবং করতে যেন ভুলে গেছে৷ কিছুক্ষণ কারোরি মাথা কাজ করল না৷ পরিস্থিতি বিগড়াতে দেখে একসময় ইয়াসমিনের হুস এলো। সে তড়িঘড়ি করে এগিয়ে গেল। বলল,
” এ্যাই, শিশির কি করছিস? ছাড় লাগছে ওর। আরে ছাড়!”
ইয়াসমিনকে বলতে দেখে বৃষ্টিও এবার এগিয়ে এলো। টেনে সরানোর চেষ্টা করছে দু’জনেকে কিন্তু কেউ কাউকে ছাড়ার নাম গন্ধই নিচ্ছে না৷ মা-রা মা-রির সাথে দু’জনের মুখে ননস্টপ বকবক চলছে৷ এরই মাঝে তুহিন আর তুষার এলো। এসে বাড়িতে ওরকম অবস্থা দেখে তারাও হতভম্ব হয়ে কিছুক্ষণ বোধশক্তি হারিয়ে ফেলল৷ তারপর বোধ হতেই দু’জনেই চেঁচাতে চেঁচাতে এগিয়ে এলো। এসে তুহিন, তুষার পেছন থেকে শিশিরকে ছাড়িয়ে নিল৷ ছাড়া পেয়েও কুয়াশা ক্ষান্ত হচ্ছে না আবার তেড়েমেরে যেতে গেল তুষার ওকে জরিয়ে নিল নিজের মাঝে। নিয়ে বসল সোফায়। সামনে থেকে পানি নিয়ে খাওয়ালো। ঢকঢক করে পানি খেল কুয়াশা। মা-রা মা-রি করে হাঁপ ধরে গেছে তার। শিশিরও হাঁপাচ্ছে। তাকে অন্যপাশে তুহিন নিয়ে বসেছে। দু’জন দু’জনের দিকে ঈগল চোখে তাকিয়ে আছে। দু’জনকে এখন বাজপাখির থেকে কম কিছু লাগছে না৷ যেন শ-কুনের ন্যায় শিকারী শিকার করবে ভাবটা এমন।
| চলবে |
all part
ওদের মা-রা মা-রি সেই না!!