®রোজা রহমান
‘
মালিথা ভিলার সকলে ঘুম থেকে উঠে গেছে। শীতের দিন তবুও আজ একটু জলদি উঠেছে। বাড়িতে মিলাদের আয়োজন করা হয়েছে। সে-সবরই তোড়জোড় চলছে। রান্না বান্নার কাজ সহ পেন্ডেল করা হচ্ছে বাহিরে। পাড়া-প্রতিবেশী সহ আত্মীয়-স্বজনরা আসবে। মসজিদের জামাতের লোকও ডাকা হবে এছাড়া কিছু এতিমদেরও ডাকা হবে। অনেক সংখ্যক লোক হবে বিধায় পেন্ডেলের আয়োজন৷
বসার ঘরে ছোটরা সকলে বসে আছে। নেই শুধু বৃষ্টি। এত শীতের মাঝে সে বাহিরে আসে না। কুয়াশা নামতে নামতে দেখল রিজভীরা গল্প করছে সাথে চা- কফি নাস্তা। কুয়াশাকে নামতে দেখে সকলে মুগ্ধ হয়ে গেল। কালো শাড়িতে মেয়েটাকে তো অপূর্ব লাগছেই সাথে নাকে হিরার নাকফুল দূর থেকে জ্বল জ্বল করছে। আর সাজাতেও অপূর্ব লাগছে। শশী তা দেখে দৌড়ে কুয়াশাকে জড়িয়ে ধরল। বলল,
” বুবু, শুভ জন্মদিন। তোমাকে কী অপূর্ব যে লাগছে! বলার মতো না “
কুয়াশা অমায়িক হাসল। সে-ও সৌজন্যে জড়িয়ে ধরে ধন্যবাদ দিল। হিম এসে বোনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাল। একে একে রিজভী, স্মৃতি, ঈশা, মিহির সহ সবাই জানাল উপস্থিত। নীহার গিফট দিয়ে শুভেচ্ছা জানাল৷ তুষার, তুহিন শুভেচ্ছা জানাল৷ ইয়াসমিন জানিয়ে বৃষ্টিকে আনতে গেল। কুয়াশা সকলেকে হাসি মুখে ধন্যবাদ জানিয়ে বসল। কিছুক্ষণ পরে জাকিয়া এলেন। বাটিতে পায়েশ নিয়ে। এক চামচ মুখে তুলে দিয়ে বললেন,
” শুভ জন্মদিন মা। আমার বৌমাটাকে কী দারুন লাগছে শাড়িতে সেজে! নাকফুল আমার ছেলের পক্ষ থেকে গিফট বুঝি? “
” হ্যাঁ ওটাকেই সব শুভেচ্ছা জানাও। আর আমি তো বানের জলে ভেসে এসেছি! ও’কে নিয়ে তোমাদের সবার আদিক্ষেতা আর গেল না। কোনো ভালোবাসা নেই আমার এ-বাড়িতে।”
শিশির নেমে আসতে আসতে কথাগুলো বলল। কুয়াশা জাকিয়ার কথার উত্তর করতে গিয়েও থেমে ঘুরে শিশিরের কথাগুলো শুনছিল আর চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে আছে৷ শিশির একপলক তাকিয়ে দেখেও পাত্তা দিল না। সে গিয়ে রিজভীর পাশে জায়গা ছিল সেখানে বসে পড়ল।
কুয়াশা বলল,
” হ্যাঁ, সে-তো তোমারও যায়নি আমাকে নিয়ে হিংসে করা। হিংসুটে বুনো ওল একটা “
কিড়মিড় করতে করতে বলে মুখ ঝামটাল। শিশির কিছু বলতে যাবে নীহার ধমকে থামাল। বলল,
” আরে থামত! তোদের এই জন্মদিন নিয়ে প্যাচাল জীবনেও যাবে নাহ্? এবারও করতে হবে? “
” হ্যাঁ, করতে হবে। কোনো ছাড়াছাড়ি নেই। আমাদের ঝগড়ার পরম্পরা ধরে রাখতে হবে। “
শিশির, কুয়াশা একসাথে বলে উঠল। এদিকে সকলে মাথা চাপড়ে বসে রইল। মানে ঝগড়ারও পরম্পরা ধরে রাখতে হবে? ওটারও কী বংশ টংশ আছে নাকি? এ’দুটোর কথা শুনে তো তাই-ই মনে হচ্ছে! কুয়াশা মুখ বাঁকাল জোড়া কথা বলতে দেখে৷ শিশিরও পাত্তা দিল না। সে কফি ঢেলে নিয়ে খাওয়া ধরল। শশী শিশিরকে পেছন থেকে গিয়ে কাঁধের উপর হাত দিয়ে গলা জড়িয়ে ধরে বলল,
” শুভ জন্মদিন ভাইয়া “
শিশির হাসল অমায়িক। ঘুরে শশী মুখের উপর হাত রেখে ধন্যবাদ জানাল৷ একে একে হিম সহ সকলে শিশিরকে শুভেচ্ছা জানাল৷ জাকিয়া উঠে ছেলের মুখে পায়েশ তুলে দিয়ে বললেন,
” আমার ছেলে বানের জলে আসেনি। সে আমার মূল্যবান কোহিনূর। ভাগ্যিস আজকের দিনে সেই কোহিনূরকে আমি কোল জুড়ে পেয়েছিলাম! “
শিশির মুখ খুলে অমায়িক হাসল। মা’কে পাশে বসাল। কাঁধ জড়িয়ে ধরে বলল,
” ভাগ্যিস সেই কোহিনূরের হয়ে এই মালিকের পেটে এসেছিলাম? নয়তো হিরার মতো মা আমি কোথায় পেতাম? “
জাকিয়া হেসে দিলেন। মুচকি হাসল শিশির। সকলেই হাসল। শিশির মা’কে জড়িয়ে ধরল। আজমিরা, আম্বিয়া এলেন। জাকিয়ার থেকে বাটি নিয়ে শিশিরের মুখে তুলে তুলে দিয়ে শুভেচ্ছা জানাল। এদিকে তা দেখে কুয়াশা ফুলে ঢোল হলো৷ ঢং করে বলল,
” কেউ আমাকে ভালোবাসে না৷ আমি কারো কেউ নাহ্। “
বলেই উঠে হাঁটা ধরল উপরে বড় চাচুর ঘরের উদ্দেশ্যে। সে এখন বড় চাচুর কাছে নালিশ জানাবে আর আদর খাবে একাই। আজমিরা, আম্বিয়া আহাম্মকের মতো তাকিয়ে রইলেন। আম্বিয়া বললেন,
” যাক বাবাহ্ ওর কাছে তো যেতেই পারলাম নাহ্? আগেই আহ্লাদীর অভিমান হয়ে গেল?”
সকলে হেসে দিল। শিশির কফি খেতে খেতে মুচকি হাসল। তার আহ্লাদী বউটা সত্যি আহ্লাদ করে৷ তিন জা চলে গেলেন রান্না ঘরে। বৃষ্টিকে নিয়ে এলো ইয়াসমিন। মিহির আর ঈশা পাশা-পাশি বসে আছে। এদের সম্পর্কের কথা অনেকেই জানে না। শুধু জানে এরা বন্ধু হিসেবে ক্লোজ৷ অবশ্য স্মৃতি, কুয়াশা, শিশির, রিজভী জানে। নীহার, শশী, ইয়াসমিন, বৃষ্টি এরা জানে না। ঈশা কুয়াশাকে মানা করে রেখেছে। জানিয়েছে আরো দুই-এক বছর পর জানাবে। বৃষ্টিকে নামতে শশী গিয়ে সাহায্য করল। অত বড় পেট নিয়ে অতগুলো সিঁড়ি ভেঙে নামতে একটু বেশিই কষ্ট হয়। বসল এসে। সকলের সাথে কথা বলতে লাগল।
কিছুক্ষণ পরে কুয়াশা নেমে এলো। এসে ধাপ-ধুপ করে বৃষ্টির পাশে বসল। শিশির দেখে বলল,
” এ্যাই, বেয়াদব ওমন ধাপ-ধুপ করে হাঁটছিস কেন? আহ্লাদ বেশি বেড়ে গেল?”
” এ্যাই, বুনো ওল থামো তোহ্! “
বলেই বৃষ্টির সাথে কথা বলতে লাগল। ভালো মন্দ জিজ্ঞেস করল। এদিকে ওরা গল্প করছে আর শশী রান্না ঘরে গেছিল কী যেন করতে। এসে বসে থাকা নীহারের দুই গালে ঠান্ডা বরফওয়ালা হাত চেপে ধরে বলল,
” এ্যাই দেখেন দেখেন আমার হাত কত গরম! “
নীহার ঠান্ডার প্রকোপে চেঁচিয়ে উঠল। বলল,
” এ্যাইহ্…! এ কী অবস্থা তোমার হাতের? এত ঠান্ডা কেন? আবার বলছ কত গরম! ফাজিল ইঁচড়েপাকা মেয়ে একটা।”
শশী খিলখিল করে হেসে দিল। নীহারকে ঠান্ডার প্রকোপে তিড়িং বিড়িং করে নাচতে দেখে। শিশির হেসে বলল,
” শশী, এক মগ টাঙ্কির পানি নিবি সাথে আইস কিউব মেশাবি কয়েকটা। মিশিয়ে এনে ঢেলে দে যাহ্ পারমিশন দিলাম। “
শিশিরের কথা শুনে সকলে হাসল। শশী হেসে আনন্দে আটখানা হয়ে গদগদ হয়ে বলল,
” এ্যাই ভাইয়া এটা তো ভেবে দেখি নি! সেই বুদ্ধি দিলে তোহ্! এখনি যাচ্ছি…”
নীহার হতবাক হয়ে গেল।শশীর হাত পেরে ধরল তড়িঘড়ি করে। মানে কী! এই ফাজিল ভাই-বোন দুটো তার পেছনে পড়ল কেন? তাকে নাকানিচুবানি খাওয়াতে লাগল! নীহার রেগেমেগে চেঁতে উঠে বলল,।
” এ্যাই বেয়াদব! তোর পারমিশন কেন শুনবে আমার বউ? খবরদার যদি আজেবাজে পোকা ঢুকিয়েছিস তোহ্!”
বলে শশীকে ধমকে বলল,
” বসো এখানে চুপচাপ! “
” বাহ্ ভয়ে ভাই আমার বউয়ের সুর তুলছে!”
শিশিরের কথায় নীহার ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল। আর সকলে হেসে ফেলল। নীহারও এবার শিশিরকে জব্দ করতে বলল,
” এ্যাই.. কুশু! “
যেই না শুনল কুয়াশাকে ডাকছে নীহার অমনি শিশির তড়িঘড়ি করে বলল,
” এ্যাই..! তুই আমার বউকে ডাকছিস কেন? খবরদার তোর ঐ পাঁজি রা-জাকার মার্কা বুদ্ধি আমার বউয়ের মাথায় ঢুকাবি নাহ্!”
লেও ঠ্যালা! এরা একে অপরের বউ নিয়ে ঝগড়া শুরু করল। সকলে বিনা পয়সায় লাইভ বিনোদন নিতে থাকল৷ কুয়াশা ভ্রু কুঁচকাল। বলল,
” তোমার বউ কে? আমার ভাইকে তুমি একা পেয়ে নাকানিচুবানি খাওয়াবে আমি চুপ করে দেখব? “
নীহার এবার দাম্ভিকতার হাসি দিল। শিশির চোখ গরম করে কিড়মিড় করতে লাগল। নীহার মেরুদণ্ড সোজা করল৷ কলার ঝাকানোর মতো করে বলল,
” শোন কুশু! রাতে যখন ঘুমাতে যাবে তখন এক বালতি পানি নিবি আর সাথে আইস কিউব নিবি নিয়ে পুরোটা ঢেলে দিবি। তখন বুঝবে কত ধানে কত চাল! অন্যের বউয়ের কানে কুমন্ত্রণা দেয়ার কত ঝাল! ”
কুয়াশা তো শুনে সেই খুশি হলো। এই বুনো ওলটাকে নাকানিচুবানি খাওয়াতে পারলেই তার আনন্দ। সে কিছু বলতে যাবে শিশির বলল,
” ভুলেও এসব ভাবিস নাহ্, আমি তুলে নিয়ে গিয়ে একদম বালতির মধ্যে চুবিয়ে আসব এরপর ফ্রিজিং করব।”
কুয়াশা ফুঁসে উঠল। নীহার বলল,
” আর আমি কী হারিয়ে যাব?”
শিশির সে-কথার পাত্তা দিল না। শশী চোখ ছোট ছোট করে এগিয়ে গিয়ে বসল। নীহার ঠোঁট কামড়ে দুষ্টু হাসল। সকলে হেসে কুটিকুটি হচ্ছে। আরো কিছুক্ষণ আড্ডা, হাসি মজা চালিয়ে গেল৷ অনেকদিন পর সকলে একসাথে হয়েছে। মালিথা ভিলায় এমন মজা, হাসি ঠাট্টা না থাকলে মানায়? উহু, একটুও মানায় না৷ মালিথা ভিলা মানেই একরাশ আনন্দ, হাসি, ঠাট্টা, খুশি সর্বপরি একরাশ প্রশান্তি।
একটুপর ভালোভাবে রোদ উঠলে শিশির সহ নীহার, হিম, রিজভী, মিহির বাহিরে হালচাল দেখতে চলে গেল। থাকল শুধু মেয়েরা। ওদের আপাতত কাজ নেই। আড্ডা দিতে লাগল। শশী প্রশ্ন করল,
” বললে না তো বুবু! এই নাকফুল ভাইয়া দিয়েছে গিফট?”
” হ্যাঁ তোর ভাইয়া-ই দিল৷ জন্মদিন উপলক্ষে “
” আরে বাহ্! কী উন্নতি তোদের? জন্মদিন যারা মানত না এবার আবার গিফটও দেওয়া নেওয়া হচ্ছে? “
ইয়াসমিনের কথায় কুয়াশা ভরকে গেল। লজ্জা পেল। মাথা নিচু করে নিল৷ বৃষ্টিরা হাসল। স্মৃতি বলল,
” অসাধারণ মানিয়েছে ওটাতে তোকে “
প্রশংসা পেয়ে আরেকটু লজ্জা পেল৷ উত্তরে শুধু হাসল। বৃষ্টি বলল,
” থাক আর লজ্জা পেতে হবে না। তোমরা যে চুলোচুলির থেকে সংসারে মন দিয়েছ এতে সকলের স্বস্তি, আনন্দ “
ইয়াসমিন টিপ্পনী কেটে বলল,
” আজ তুই একটু বেশি গ্লো করছিস ব্যপার কী বলতো! আবার একটু বেশি-ই স্পেশাল লাগছে! কাহিনী কি? “
কুয়াশা ভরকে গেল। থতমত খেয়ে বলল,
” আজ আমার জন্মদিন সাথে প্রথম স্বামীর থেকে গিফট এবং উইশ পেয়েছি। আর সেই গিফট আমার নাকে শোভা পাচ্ছে তো গ্লো করব না? স্পেশাল তো লাগারই কথা! এসব কিছু তোমাদের দেবরের কামাল, বুঝছ!”
” ওওও আচ্ছা..! আমাদের দেবরকা কামাল! ”
বৃষ্টি, ইয়াসমিন এক সাথে কথাটা সুর ধরে বলে উঠল। কুয়াশা আবার ভরকাল৷ তবে বুদ্ধির সাথে উত্তর দিতে পেরে সে-ও চুপ থাকল। স্মৃতি ঠোঁট টিপে হাসল।
কুয়াশা আর কিছু বলল না। এরা ডেঞ্জা-রাস পাবলিক। এদের সাথে বেশি কথা বলা যাবে না। লাগামহীন পাবলিক এক্কেবারে! এরপর টুকটাক গল্প করল।
‘
‘
সকাল দশটার দিকে জাকির মালিথাকে নিচে নামিয়ে আনা হলো। সকালের খাবার সকলে নিচে খেলেও জাকির মালিথাকে উপরে খাওয়ানো হয়েছে। জাকিয়া জাকির মালিথাকে নিয়ে বাহিরে রোদের উপর গেলেন। সেখানে গিয়ে গরম তেল মালিশ করতে লাগলেন হাতে, পায়ে, শরীরে। ম্যাসাজ সহ হাত পায়ের ব্যায়াম করাতে লাগলেন। কুয়াশা বাহিরে এসে তা দেখে শাশুড়ীকে বলল,
” আম্মু, আমি করব দাও ”
” থাক, তোকে করতে হবে না। আমি করে নেব “
” আম্মু, চাচুর দায়িত্ব একা তোমার না, আমাদের সকলের। তুমি ভেতরে যাও। আজ থেকে ব্যস্ততা না থাকলে এই কাজ আমার।”
জাকিয়া হাসলেন। জাকির মালিথা হেসে কাছে ডাকলেন৷ ভালো হাতটা মাথায় রেখে বললেন,
” দেখলে জাকিয়া! আমার ছোট ছেলের জন্য আমি যোগ্য মেয়ে খুঁজেছি! আমার মেয়েটা বড়ও হয়ে গেছে কত! “
স্বামীর কথায় মুচকি হাসলেন জাকিয়া। বললেন,
” হ্যাঁ আমার ছেলে বউ পাক্কা গিন্নী হয়েছে। আজ তার ঊনিশতম জন্মদিন। একা হাতে আমার ছেলেকে সুস্থ করেছে৷ দেখভাল করেছে। আমি তো আমার ছেলের দেখভাল করতে পারিনি “
কুয়াশা একটু লজ্জাবোধ করল এভাবে বলাতে। আসলে এমন সব কথা শুনে সে অভ্যস্থ না। জাকির মালিথা দীর্ঘ শ্বাস ফেললেন। একটা ঝড়ে সব উলোটপালোট করলেও উড়িয়ে নিয়ে যায়নি একেবারে। ওসব কথা রেখে বললেন,
” জাকিয়া, আমার মা’টাকে কিন্তু সত্যি গিন্নী লাগছে! শাড়িতে কী সুন্দর মানিয়েছে দেখো! মেয়েটা আমার এত বড় কবে হলো? দেখতে দেখতে আঠার বছর পূর্ণও হয়ে গেল। সেদিনও কোলে করে নিয়ে ঘুরলাম মনে হচ্ছে। “
কুয়াশা লজ্জা পেয়ে গেল আবার। শাড়ি পরেও বিপদে পড়ে গেল। সত্যি কী এতটাই সুন্দর লাগছে তাকে! জাকিয়া বললেন,
” হ্যাঁ অপূর্ব লাগছে। কখনো পরে না আজ পরেছে একজন্য আরো সুন্দর লাগছে৷ “
তেল মালিশ করতে করতে উত্তর করলেন। কুয়াশা শাড়ির আঁচল কোমড়ে গুঁজে বাটি থেকে তেল নিয়ে চাচুর পায়ের কাছে বসে পড়ল। মালিশ সহ পায়ের ব্যায়াম করতে লাগল। জাকিয়া কিছু আর বললেন না৷ জাকির মালিথা অমায়িক হাসলেন। এই দৃশ্য দূর থেকে শিশির দেখল৷ সে দেখে প্রশান্তিময় একটা শ্বাস টানল সাথে হাসি। কী সুন্দর একটা দৃশ্য! বাড়ির সকলকে ছায়া দেয়া মানুষটা সবার মাঝে আছে এতেই সকলের আনন্দ, প্রশান্তি৷
___________
দুপুরে নামাজ পর হুজুর ডাকা হলো৷ সকল আত্নীয়রা এসেছে। জিনিয়ারা সহ বৃষ্টি বাবা, মা জাকিয়ার ভাইরা সকলেই এসেছে৷ আম্বিয়ার বোন আর বোনজামাই এসেছে৷ অনিরা আসেনি। তারা এই বাড়িতে আর আসতে চায় না। অয়নও সেদিন শিশির, কুয়াশার থেকে ওমন কথা পেয়ে আর কথা তো বলেই না আসতেও চায় না৷ যতোই হোক সেটা পুরোটাই অপমান ছিল৷ সে-তো আর জেনেছিল না যে শিশির কুয়াশার বিয়ে হয়েছে! সে দিনের করা ব্যাবহারটা একটু বেশি হয়ে গেছে৷ যদিও গায়ে পড়া টাইপ ছিল বলে শিশির, কুয়াশা কেউই পছন্দ করত না। কিন্তু এখন সেদিনের করা কাজটাতে নিজেরা ভুল বুঝতে পেরে লজ্জিতবোধ করে। আজ দু’জনেই যখন ওদের না আসা নিয়ে শুনল তখন বুঝল বিষয়টা। ভাবল এটা নিয়ে সময় করে কথা বলে নিতে হবে।
‘
দুপুর তিনটার পর সকল মেহমানদের খাওয়া দাওয়া হলো। মিলাদ পড়ানোও হয়ে গেছে। আত্মীয়রা জাকির মালিথাকে দেখে দোয়া করে ভালো মন্দ কথা বলল৷ কিছুক্ষণ থেকে সন্ধ্যার আগে অনেকেই চলে গেল।
স্মৃতি রিজভীরাও চলে গেছে৷ শশীরা আজ থাকবে। আগামীকাল যাবে। মিহির থাকছে বলে ঈশা রয়ে গেল৷
| চলবে |
কেউ ছোট বলবা না৷ সমস্যার কারণে এমন দিতে হলো।
বুনো ওল বাঘা তেতুল গল্পের লিংক ( all part ) click