#ইশরাত_জাহান_জেরিন
#পর্ব_২০
ঘরভর্তি মানুষ। বৃষ্টির কারণে আত্মীয়-স্বজনের অনেকেই বাড়ি ফিরতে পারেননি, তাই সবাই বসে অপেক্ষা করছে। তবে তাদের আগ্রহ কি শুধু নতুন বউকে দেখার ? চিত্রার স্বামীকে দেখার ইচ্ছে কি নেই? চিত্রার স্বামী দেখতে হবে না? স্বামী খারাপ হোক বা ভালো হোক পাড়ায় তো ঢোল পিঠিয়ে পরনিন্দা করতে হবে? মহিলারা একটু পর পর চিত্রার স্বামীর কথা জিজ্ঞেস করছে। কোথায় সে?কেনো অনুপস্থিত বার বার জিজ্ঞেস করছে। মার্জিয়া কোনোভাবে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করলেও, মারিয়ার মুখ গম্ভীর। তার বিয়েতে কোনো আয়োজন করা হয় নি। অথচ দেখো ছেলের বিয়েতে কত খরচা হচ্ছে? এসব টাকা আসছে কোথা থেকে? তার ওপর চিত্রাটাকেও দেখে আফসোস হচ্ছে। ওই মুখপুড়ির ও শেষে গিয়ে এত বড় বাড়িতে বিয়ে হয়ে গেল? মাত্র ক’দিন হলো বিয়ে হয়েছে। এরই মাঝে গা ভরতি স্বর্ণের গহনা পড়ে এই বাড়িতে এসেছে। সব যে ইচ্ছে করে দেখানোর জন্য এসব করছে মারিয়া কি তা বুঝে না? মারিয়ার রোগটে চেহারা। লম্বাচওড়া উজ্জ্বল শ্যামলা দেখতে। একটা গজদাঁত আছে। ওই গজদাঁতের হাসি দেখেই তো মাহদী তার জন্য দেওয়ানা হয়েছিল। তারপর দু’জনে প্রেম করে পালিয়ে বিয়ে করে। মারিয়ার পরিবারের অবস্থা সাধারণ মধ্যবিত্তের মতোই ছিল। তবে বাবা মাকে কখনো সাহস করে বলতেই পারে নি,মাহদীকে সে ভালোবাসে। তারপর হুট করে একদিন সব ছেড়ে মাহদীর হাত ধরে চলে আসে। সেই গাজীপুর ছেড়ে কিশোরগঞ্জ।
চিত্রা ও ফারাজ বাড়ি ফিরল সন্ধ্যা আটটার দিকে। ভেজা শরীর নিয়ে দরজা পেরোতেই যেন সবাই তাদের ঘিরে ধরল। কেউ একজন ফারাজের দিকে তাকিয়ে বলে উঠল,
“আহারে পোলাডা এমন ভিজল কি কইরা? ওরে এক গেলাস গরম দুধ দে। জোয়ান মরদের ঠান্ডা লাগলে হয়? জলদি দুধ খাইয়া বাঘের ব্যাটা হইয়া যাও।”
ফারাজ এত মহিলা মানুষ দেখে একটু হতভম্ব হয়। এখানে কি মহিলাদের গোপন বৈঠক হচ্ছে? মনে হচ্ছে কোথাও বোমা নিক্ষেপের পরিকল্পনা চলছে। চিত্রার অবস্থাও সুবিধার নয়। তার চোখ-মুখ ফুলে আছে, স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, সে কেঁদেছে। সবাই তাকে আড়চোখে দেখে ফিসফিস করছে। ফারাজের এসব একদমই ভালো লাগছে না। অভ্রকে যে ডাক দিবে তার ও উপায় কই?ব্যাটা তো কাঁদায় ডুব দিয়ে উঠেছে।
” সাইট প্লিজ। আপনাদের সঙ্গে পড়ে কথা বলব।”ফারাজ স্পষ্ট গলায় বলল।
সোহাগ অনেক আগেই বন্ধুদের সঙ্গে সেখান থেকে উঠে গিয়েছিল। জান্নাত বসে আছে। চিত্রার দিকে অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে আছে। এত সুন্দর মেয়েকে ছেড়ে তাকে কেন বিয়ে করল সোহাগ? যদি ওই মেয়ের মায়া কাটাতেই না পারে তাহলে ছাড়ল কেন? আর কেনোই বা তার মতো একজন কে বিয়ে করে বাড়ি আনল? জান্নাতের খুব ইচ্ছে হচ্ছে চিত্রার সঙ্গে একান্ত কথা বলার। তবে পরিস্থিতি স্রোতের বিপরীতে। কিন্তু একদিন ঠিকই জান্নাত চিত্রার মুখোমুখি দাঁড়াবে, কঠোর গলায় প্রশ্ন করবে তার জীবনটা নিয়ে খেলার কারন কি? কি শান্তি লুকিয়ে ছিল তার সর্বনাশে?
জান্নাতকে ঘিরে এতক্ষণ যারা বসে ছিল সবাই এখন ফারাজকে দেখার জন্য উতলা। ফারাজের আকাশি রঙের শার্টটা গায়ের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। ব্লেজারটা সে চিত্রার গায়ে জড়িয়ে দিয়েছে। সাদা ব্লাউজের কারনে চিত্রার শরীর নিখুঁত ভাবে বুঝা যাচ্ছিল। কোনো নোংরা চোখ তার স্ত্রীর সর্বাঙ্গে চোখ বুলিয়ে যাবে স্বামী হিসেবে এসব মোটেও সহ্য করার পাত্র ফারাজ এলাহী নয়। তার স্ত্রী কেবল তার। তাকে অন্য পুরুষ দেখা তো দূরের কথা, কল্পনা করলেও ফারাজ এলাহীর চোখটা কোঠর থেকে বের করে আনতে এক মুহুর্ত খরচ হবে না। ফারাজ বাড়ি ভরতি মানুষ কে উপেক্ষা করে চিত্রাকে নিয়ে রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দেয়। এত মানুষ গুনে চলার সময় নেই তার। নিজের খেয়ে অন্যের পা চাটাচাটি তারাই করে যাদের মনমানসিকতা নিচু। তাই কে কি বলল,কে কিসে দুঃখ পেল সেই সব ফারাজ এলাহীর হিসাব করার সময় নেই।
চিত্রা আলমারি খুলে ফারাজের জন্য একটি প্যান্ট বের করে দিল। কাল তো চলে যাবে, সবকিছু আবার গুছিয়ে রাখতে হবে। নিজের জন্য একটি সুতির কামিজ হাতে নিয়েই ফারাজের দিকে ফিরে বলল,
“আপনি আগে গোসলটা সেরে আসুন। আমি পড়ে যাচ্ছি।”
ফারাজ ভ্রু কুঁচকে তাকাল।”পরে কেনো? একসঙ্গে সমস্যা কোথায়?”
চিত্রা একদমই প্রস্তুত ছিল না এই প্রশ্নের জন্য। লজ্জায় মুখ লাল হয়ে উঠল তার।”আপনার সঙ্গে গোসলে যেতে পারব না।”
ফারাজ হেসে এগিয়ে এসে বলল,”দু’দিন পর যেই সুন্দরী আমার গেডার মা হবে সে কিনা বলছে আমার সঙ্গে গোসলে যাবে না? ধুর বউ চলো তো।”
“আপনি না..”
চিত্রা কিছু বুঝে উঠার আগেই ফারাজ তাকে কোলে তুলে ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁইয়ে দেয়। গোসলখানার দিকে এগোতে এগোতে ফারাজ ফিসফিস করে বলল,
” আমি তোমার মনের মালিক,দেহের উত্তরাধিকারী। তুমি আমার অর্ধাঙ্গিনী আর আমি তোমার অর্ধাঙ্গ।”
“নামান প্লিজ। পড়ে যাবো।”
“হিশশশশশশ আগুন সুন্দরী! আর কথা নয়।”
–
চিত্রা ফারাজ কেউ ঘুমায় নি। ফারাজের একটা পার্সেল এসেছিল বিদেশ থেকে। অভ্র দিয়ে গিয়েছিল। টেবিলের ওপর রাখা সেই পার্সেল। চিত্রার অনেকবার ইচ্ছে করছিল খুলতে কিন্তু সে খুলে নি। যদি ফারাজ আবার কিছু মনে করে? ফারাজ হুট করে চিত্রাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরল। বলল, “কি ভাবছো বিবিজান?”
“ভাবছি ওই পার্সেলে কি এমন আছে?”
“ওহ ওইটা? তুমি আনবক্স করো।”
“সত্যি।”
“হুম। আমার ওইসব খুলতে ভালো লাগে না।”
“লাগবেও না। আপনার তো অন্য কিছু ভালো লাগে।”
“এইতো আসল পয়েন্টে এসেছো।”
চিত্রা পার্সেল খুলে। তাতে বিদেশে দামি সব প্রডাক্ট। এগুলো সব ফারাজের। হুট করে চিত্রা চমকে উঠল। বলল, “আপনি মেয়েদের সিরাম লাগান মুখে?”
ফারাজ অবাক হয়। দেখে বলে,”কসম বউ এসব পাপ কাজ আমি করি না।”
পার্সেলের মধ্যে ছোট্ট একটা চিরকুট। তাতে লিখা “এই লেডিস সিরামটি পারফিউমের সঙ্গে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছে। এটি হারবাল উপাদানে তৈরি। মুখের ময়লা দূর করে এবং ত্বক উজ্জ্বল রাখে।” ফারাজ খানিকটা সিরাম হাতে নিয়ে দেখে বলল, “এমা এ তো দেখছি তেল।”
“ধ্যাৎ আপনি চিনেন কিছু? এটা সিরাম তেল নয়।”
“আমি যেহেতু তেল বলেছি মানে তেলই। ওয়েট এটার একটা ভালো নামকরণ করি।”
ফারাজ চিত্রাকে দিয়ে কাগজ কলম আনিয়ে তাতে ভালো করে লিখে, “ফারাজ স্পেশাল পিরিতের তেল।”
গ্লু দিয়ে কাগজ লাগিয়ে দেয়। তারপর বলে, “এবার ঠিক আছে। এটা বউ রোজ রাতে মাখবে। বুঝলে?”
“হ্যাঁ বুঝলাম তবে নামকরণ একেবারে বিশ্রী হয়েছে। এই নামকরণের মানে কি?”
“এমন নাম করণ করেছি যাতে রোজ রাতে এটা মুখে মাখার সময় মনে স্বামীর নাম সরণ হয়। আর ওই তেলে লটপটি মন্ত্র পড়ে ফু দিয়েছে। যাতে জলদি আমার প্রেমে পরে নিজের কোমর ভেঙে ফেলো।”
“দেখা যাবে। দেখবেন কোনো ফয়দা হবে না।”বলেই মুখ ভেংচি কাটল চিত্রা।
“ওহ তাই নাকি?” বলেই ফারাজ রুমের বাতি বন্ধ করে দেয়। তারপর টেনে দেয় প্রিয়তমা প্রিয় বিবিজানকে নিজের একান্ত কাছে।
–
মাঠের কোণের প্রাচীন বটগাছটির নিচে বসে আছে জোহান। তার চারপাশে জড়ো হয়েছে বন্ধুরা। বাতাসে স্যাঁতসেঁতে গন্ধ। আকাশে মেঘের ঘনঘটা। সবুজ ঘাস বৃষ্টির পানিতে ভিজে স্নিগ্ধতা ছড়ালেও জোহানের তা পছন্দ নয়। বর্ষার প্রতি তার বিতৃষ্ণা প্রবল। একেবারেই সহ্য করতে পারে না সে এই সিক্ত বিষণ্নতা। বিপরীতে শীতকাল তার হৃদয়ে জাগিয়ে তোলে আনন্দ, বৈরাগ্যের অনুপম শিহরণ। সে একমনে গিটারের তারে আঙুল চালিয়ে যাচ্ছে, গভীর স্বরে গান তুলেছে। শব্দগুলো ঝরে পড়ছে রাতের নিস্তব্ধতার মধ্যে। বন্ধুরা কেউ কেউ উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে গানের অনুরোধ করছে। প্রিয় কোনো সুর, কোনো নস্টালজিক সঙ্গীত। কিন্তু জোহান সে অনুরোধে সাড়া দেবে কিনা সে সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ তার নিজের। তার সুরের রাজ্য সে গড়ে তোলে নিজস্ব নিয়মে, আবেগের তীব্রতা অনুযায়ী। জোহান ফোনটা হাতে নিয়েই বিরক্তিতে মুখ কালো করে ফেলল। গিটারের তারে আঙুলের খেলা থামিয়ে দিল। চোয়াল শক্ত হয়ে এলো। ফোনের স্ক্রিনের নামটা দেখে তার ঠোঁটের কোণে বিরক্তিকর একটা ‘চ’ শব্দ বেরিয়ে এলো। কল রিসিভ করতেই কপালের ভাঁজ আরও গভীর হলো।
“এই অসময়ে মেয়ে মানুষ কই থেকে জোগাড় করবো? গন্ডারের বাচ্চা, তোরা একটা মেয়ে ঠিকমতো সামলাতে পারিস না? কিসের বেডা মানুষ হইছিস?”
ওপাশ থেকে একটা আতঙ্কিত কণ্ঠস্বর শোনা গেল।
“ভাই, কিছু একটা করেন। মাইয়া না জোগাড় করতে পারলে ভাই আমারে জবাই করবো। আপনে সাহায্য করেন। গোলাম হইয়া থাকমু।”
“ফোন রাখ শা*লা। দেখি কি করা যায়।”
জোহান বিরক্তিতে চোখ ঘুরিয়ে ফোনটা কেটে দিল। সিগারেটের প্যাকেটটা পকেট থেকে বের করে একটা ধরালো। ধোঁয়ার কুণ্ডলী পাকাতে পাকাতে ভাবল। মেয়ে জোগাড় না করতে পারলে ব্যবসায়ে দাঙ্গা বেঁধে যাবে। আর এই বালগুলো সাহায্যের জন্য সবসময় তার কাছেই কেন আসে? ধ্যাত দুনিয়া তাকে ভালো হতে দিবে না বোধহয়। মাঠের পাশেই বড় রাস্তা। রাস্তার ওপাশে একটা কলেজ। কলেজের পাশেই বাস স্ট্যান্ড। জায়গাটা কেমন যেন সুবিধাজনক মনে হলো। স্ট্যান্ডে তাকাতেই চোখ সরু হয়ে এলো। বোরকা পড়া একটা মহিলা আর কামিজ পড়া একটা মেয়ে। বয়স ষোলো -সতারো হয়ে হয়ত। জোহান চারিদিকে একবার তাকায়। না বৃষ্টির কারনে মানুষের আনাগোনা এদিকটায় নেই বললেই চলে। জোহানের ঠোঁটের কোণে বাঁকা হাসি খেলে যায়। সে একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে সিগারেটের শেষাংশ মাটিতে ফেলে পায়ে চাপা দিয়ে উঠে দাঁড়ায়।
“ভাই কই যাচ্ছেন?”
“আহার জোগাড় করতে। পেট চালাতে হবে না?”
–
ফারাজ রাতে বেরিয়েছিল জরুরি কাজে। ফিরেছে গভীর রাতে। ফিরে আসার পর থেকেই নিশ্চল ঘুমিয়ে আছে। ক্লান্ত শরীর আর নড়তে পারছে না। চিত্রা একবার চোখ বুলিয়ে নেয় ওর দিকে। এত ক্লান্তি কেন? মাছের ব্যবসা কি সত্যিই এত পরিশ্রমসাধ্য? আলনাতে ফারাজের খোলা রাখা শার্টটি ঝুলছে। চিত্রা সেটি হাতে তুলে নিলো। ধীরে নাকের কাছে আনলো। এলাচের মিষ্টি কড়া একটা গন্ধ চিত্রার নাকে ধাক্কা দিল। ফারাজ মাছের ব্যবসা করে। অথচ আজ পর্যন্ত তার শরীরে মাছের আঁশটে গন্ধ পায়নি চিত্রা। এমনকি মাছ খাওয়া নিয়েও বাড়ির মানুষের খুব একটা আগ্রহ দেখা যায় নি। আর ফারাজকে কি বলবে চিত্রা? সে তো আল্লাহর ওয়াস্তে গরুর মাংস আর কলিজা ভুনা ছাড়া কিছুই বুঝে না। ফারাজ মুরগীও অপছন্দ করে। একেবারে রান্না করে গরম গরম এক পিস মন চাইলে শখ করে কখনো কখনো খায়। তাও আবার হাড় ছাড়া পরিষ্কার মাংস।
চিত্রা ফারাজের পাশে গিয়ে বসল। উপুড় হয়ে থাকা লোকটার পিঠের দিকে নজর পড়ল। পিঠে আচরের দাগ। এই নকশা কোন শিল্পী করেছে? চিত্রা? বড্ডা লজ্জা লাগে চিত্রার। ফারাজের চুলগুলো অত্যন্ত সুন্দর। বেশিরভাগ ছেলেদের চুলে ঘামের সময় কাকের বিষ্ঠার মতো গন্ধ আসে। চিত্রার একটি অভ্যাস আছে। ছেলে হোক বা মেয়ে কারো সঙ্গে কথা বলার সময় হঠাৎ করেই সে তাদের চুলের গন্ধ শুঁকে দেখে। আগে এই অভ্যাসের মাধ্যমে বন্ধুত্বের সূচনা করত সে। যাদের চুল থেকে সুন্দর ঘ্রাণ আসত তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ত চিত্রা। এই কারনেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ছেলেদের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গড়ে ওঠেনি। কারণ, ছেলেদের মাথায় এক ধরনের গন্ধ থাকে ঘামের পচা, আঠালো, ভেজা গন্ধ। যা চিত্রার একেবারে অপছন্দ।
চিত্রা ফারাজের চুলে হাত বুলিয়ে মুখ গুঁজতেই এক অদ্ভুত অপরিচিত গন্ধ পেল। ফারাজের সম্পর্কে চিত্রা লক্ষ্য করেছে, সে নোংরামি পছন্দ করে না; শরীরের প্রতি অতিরিক্ত যত্নশীল, খুঁতখুঁতে। চিত্রা উঠতে যাবে, তার আগেই ফারাজ নড়েচড়ে উঠল। লোকটার ঘুম পাতলা। যে বাড়িতে সে আছে সেখানে চোর আসতে সাহস পাবে না। ফারাজ সোজা হয়ে শোয়। চিত্রার দিকে তন্দ্রাচ্ছন্ন ভঙ্গিতে তাকিয়ে ভগ্নস্বরে বলে,
“বউ… ক্লোজ আপ।” ফারাজ চিত্রার চুলে হাত বুলিয়ে দেয়।
“উঠে তৈরি হন। নাস্তা খেতে হবে না?”
“কাছে আসো প্রিয়তমা। আগে তোমার কপালে একটা চুমু খাই। তোমার কপালে ঠোঁট না ছোঁয়ালে আমার শরীরের আড়মোড়া ভাব ভাঙবে না। শরীরে এনার্জি নেই। কাছে আসো একটু রিচার্জ হই।”
ফারাজ চিত্রার কোমড় ধরে তাকে কাছে টেনে আনে। ঘাড়ে মুখ ডুবানোর আগেই হঠাৎ দরজা খুলে যায়। কেও একজন চিৎকার করে ওঠে,
“আস্তাগফিরুল্লাহ! পোলাপাইনরা এখন আর রাতদিন মানে না।”
চলবে?