- দারুন মজার গল্প।
- ডাক্তারের মজার গল্প।
- অফিসিয়াল জোকস।
- রোমান্টিক হাসির জোকস।
- মজার জোকস স্ট্যাটাস।
- বর বউ জোকস।
- ডার্টি জোকস।
1.দারুন মজার গল্প
আমি যখন ক্লাস নাইনে সাইন্স নিছিলাম তখন ক্লাসমেটদের অনেকেই হাসি ঠাট্টা করছিলো- শুধু একটা ছেলে হাসি তামাশা করে নাই, কারন সেও সাইন্স নিছিলো।
অথচ আজ আমি কোথায় আর যারা সাইন্স নিছিলাম বলে হাসি তামাশা করছিলো তারাই বা কোথায়! তারা বড়জোর হয়তো কোনো প্রাইভেট কম্পানিতে ছোট খাটো চাকরি করে বউ বাচ্চা পালতেছে; এরচেয়ে বেশি কিছু হবে না। কিন্তু আমি? ওরা যে সব কম্পানিতে চাকরি করতেছে ঐরকম কয়েকটা কম্পানির হেড অফিস ওয়ালা আট তলা একটা বাড়ির নিচে টং দোকানে বসে বসে ম্যাচের কাঠি দিয়া দাঁত খু’চাইতেছি, যখন সাইন্স নিছিলাম তখনও এই অবস্থাই ছিলো। আর ঐযে যেই ছেলেটা হাসি তামাশা করে নাই- সেই ছেলেটা এখন একজন সফল চা বিক্রেতা, ওর চায়ের খুব ট্যাশ মা*ইরি।
2.ডাক্তারের মজার গল্প
‘বৌদি কেস’*
এককালে, যখন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ইনটার্ন ছিলাম,তখনকার একটা মজার গপ্পো বলি, শুনুন।
রোগীর সাথে যাঁরা আসেন, তাঁদের আমরা ‘পেশেন্ট পার্টি’ বলি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পেশেন্ট পার্টির সংখ্যা- দুই থেকে পাঁচের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। তবে মাঝেমাঝে তার ব্যতিক্রমও হ’তো বইকি।
পেশেন্ট পার্টি আসতো- ট্রাক বোঝাই হয়ে। এদেরকে আমরা বলতাম–” বৌদি কেস।”
পাড়ার জনপ্রিয় কোনো বৌদি অসুস্থ হলে, হইহই রইরই করে, “দুপুর ঠাকুরপো”রা আসতো- পাড়া ঝেঁটিয়ে। ট্রাক থেকে নেমেই, চিৎকার শুরু করতো–” কোথায় ডাক্তার! কোথায়-য়-য় ডাক্তার”; আর টেবিল চাপড়াতো- দুড়ুম দাড়াম।
এসব ঐ ছাত্রজীবনেই আমাদের গা-সওয়া হয়ে গেছ্ল। ‘ঠাকুরপো বাহিনী’কে বিন্দাস হ্যান্ডেল করে, গম্ভীর মুখে- রুগি দেখতাম আমরা।
একদল ঠাকুরপো-কে অমুক ওষুধ আনতে দিতাম, তো অন্যদলকে তমুক। এইসব করে করেই, মাঠ ক্রমশঃ ফাঁকা হ’তো।
এগুলো হলো- আমাদের চিকিৎসা বিজ্ঞানের- প্রধান পাঠ; এবং এই প্রধানপাঠের পরীক্ষাটিতে ডিস্টিংশনসহ পাশ করেছিলেন- আমাদের এক সিনিয়ার। তাঁকে আমরা চোখে দেখিনি; কিন্তু তাঁর পার্টিহ্যান্ডেল– এক কিংবদন্তীর পর্যায়ে পৌঁছেছিল।
তাঁর নাম- ধরা যাক, বিলেদা।
সেই বিলেদারই গপ্পো বলবো এখন।
একবার এক ‘বৌদি কেস’ এসেছে। বৌদি গায়ে আগুন দিয়েছেন। ভগবানের অসীম করুণা, একাধিক ঠাকুরপো তাঁর উপর “ঝাঁপিয়ে” পড়ে, সেই আগুন নিভিয়েছেন। আগুন- জাস্ট চুমু খেয়ে গেছে- ডান পায়ের পাতাতে। কিচ্ছুটি হয় নি। পেটি কেস।
কিন্তু ঠাকুরপোদের বোঝায় কে? বৌদির কাছে কিছু একটা করে প্রমাণ দিতে হবে তো? চললো হুঙ্কার।
–“এই শাল্লা, ডাক্তারের বাচ্চা,দ্যাখ্ –ভালো করে।”
তার সাথে সাথেই চললো- বরাহ, সারমেয় প্রভৃতির নন্দনের সাথে ডাক্তারের তুলনা।
এসব আমরা গায়ে মাখিনা। এসব বলা- পেশেন্ট পার্টির জন্মগত অধিকার। তাছাড়া, আমি মনে করি, ডাক্তার আর শুয়োরের বাচ্চার মধ্যে- বিশাল কোনো তফাত নেই। দুই দলই চারিপাশে ভরে যাওয়া- পাঁকের প্রতি উদাসীন থেকে, কাজ কম্মো করে।
তা সে যাগ্গে। মোটমাট কথা হলো, খানিক বাদে দ্যাখা গেল, ঠাকুরপোরা আজ একটু বেশিই মরিয়া। একটা কিছু ভাঙচুর হবেই, যদি না এই মুহূর্তে ছত্রভঙ্গ করা যায়।
ওষুধের স্লিপ ধরানোর ট্যাকটিক্স ফেল করে গ্যাছে। পাহারারত পুলিশ নিয়মমাফিক- প্রাণের ভয়ে, মাথার টুপি আর হাতের লাঠি লুকিয়ে, পাবলিকের মাঝে “আমি তোমাদেরই লোক” সেজে, চুপটি করে বসে আছে।
ঠিক এইরকম একটা “ইয়েতি অভিযান” মার্কা সময়ে, “শক্তিমান”এর মতো আবির্ভূত হন- বিলেদা।
এসেই, প্রথমে ঠাকুরপোদের নেতাকে ডেকে বলেন– “শুনুন, কেস খুব সিরিয়াস। পা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আপনারা এক কাজ করুন…এক এক করে, পাশের ঘরে আসুন।”
সবাই একটু থমকালো।
নেতা বললো–“ক্যানো, পাশ্শের ঘড়ে জাবো ক্যানো- দাদ্দা?”
বিলেদা একটু দম নিলেন। চিত্রনাট্য মাপা তুমুল তুখোড় পজ। তারপর বললেন–
“না আসলে, পুড়ে যাওয়া জায়গায় চামড়া পাল্টাতে হবে। আসুন, আপনাদের- এক এক করে, চামড়ার স্যাম্পেল নিয়ে- দেখি, কারটা ম্যাচ করবে….”
ঠাকুরপোরা এরকম কথা আগে শোনেনি। বুঝতেও পারছে না– সত্যি, নাকি গাঁজা!
বিলেদাও এইবারে নিক্তি মেপে, গর্জে উঠলেন–
“কই, আসুন। দেখছেন্– পেশেন্ট খারাপ আছে…”
মিনিট খানেকের মধ্যে ময়দান ফাঁকা। ট্রাক এবং বৌদি ফেলে, ঠাকুরপোরা উধাও।
৩.অফিসিয়াল জোকস
– অফিসের বস খুব কড়া।
প্রথম দিন অফিসে ঢুকেই দেখল সবাই কাজে ব্যস্ত। একটা হাঁদা টাইপ আনস্মার্ট ছেলে শুধু এদিক ওদিক ঘুরছে এবং ১১ টায় office এ এসেছে।
বস প্রচন্ড রেগে গেল। চিৎকার করে ছেলেটাকে ডেকে বলল কত মাইনে পাও?
৬ হাজার স্যার
বস পকেট থেকে ৬ হাজার বার করে ছেলেটাকে দিয়ে বলল আর কোনোদিন তোমার মত ফাঁকিবাজকে অফিসে দেখতে চাই না। কাল থেকে তুমি আর আসবে না। এক্ষুনি বিদেয় হও।
ছেলেটা কিছু না বলে মাথা নিচু করে চলে গেল।বস ক্যাশিয়ার কে ডেকে বলল কোন ডিপার্টমেন্ট? ওর নাম কেটে দাও।
ম্যানেজার মাথা নিচু করে জানালো, ছেলেটা পিৎজা ডেলিভারি দিতে এসেছিল স্যার!
– লে বস
৪.রোমান্টিক হাসির জোকস
রায়হান আর তমার প্রেমটা একটু অন্যরকম। অদ্ভুতও বটে। তারা একজন আরেকজনকে ভালোবাসে। অনেক বেশিই ভালোবাসে। তমার সাথে একদিন কথা না হলে রায়হানের বুকের ভেতর খালি খালি লাগে। দিনশেষে তমা তার সারাদিনের কথা রায়হানকে বলতে না পারলে রাতে তার ভালো ঘুম হয় না। ওদের এই আড়াই বছরের প্রেমের একটাই সমস্যা, একজন আরেকজনকে কখনো সামনাসামনি দেখেনি। রায়হান থাকে ঢাকা। তমা নেত্রকোনা। রায়হানের সমস্যা হলো সে অনেক লাজুক। কোনো মেয়ের সামনে গিয়ে দাঁড়ানোর সাহস তার নেই। একবার এক মেয়ে ওকে সামনে থেকে হাই বলেছিলো, রায়হানের লজ্জায় দুইঘন্টার মধ্যেই কাপুনি দিয়ে জ্বর চলে এসেছিলো। সেই জ্বর সারতে সাতদিন লেগেছিলো। কমপ্লিট করা লেগেছিলো এন্টিবায়োটিক এর ডোজ।
তমার সমস্যা হলো তার বাবা আব্দুস সামাদ। প্রচন্ড রাগি মানুষ। দোতলা থেকে নীচে নামতে হলেও তমাকে তিনবার অনুমতি নেয়া লাগে। শেষবার অনুমতি পায় দশ মিনিটের জন্য। তাও তার সাথে দিয়ে দেয়া হয় ছোটভাই সীমান্তকে। তমা বাসার বাইরে গিয়ে অন্য ছেলের সাথে দেখা করার কথাই কল্পনা করতে পারেনা, ঢাকা শহর তার কাছে দূরত্বে আফ্রিকার জোহানেসবার্গ।
.
এর ফলে প্রেম করার জন্য দুইজনই মাধ্যম হিসাবে বেছে নিয়েছে ফেসবুক। ফেসবুকে পরিচয়, কথা বলা, ভালোলাগা। নাম্বার আদানপ্রদানের পর হোয়াটসঅ্যাপে প্রেমে পড়া। প্রেম হওয়ার আটমাস পর ফোনে কথা বলা শুরু। এখন প্রতিদিন রাতেই ফোনে কথা হয়। ঘন্টার পর ঘন্টা। কত কল্পনা দুজনের, কত স্বপ্ন৷ ছোট্ট একটা সংসার হবে। দুইটা বাচ্চা। একটা ছেলে, একটা মেয়ে। সাথে একটা কিউট কুকুর। যার নাম রাখা হবে, বিড়াল। প্রেম চলতে থাকে। চার বছর পর ভিডিও কলে প্রথম একজন আরেকজনকে দেখে। রায়হানের মনে হয়, এই পৃথিবীর কোনো মেয়ে এতো সুন্দর হতে পারে না। তমা ভাবে, তার প্রেমিকের কাছে পৃথিবীর সব নায়কের চেহারাও দেখতে নায়কের বখাটে বন্ধুর মত।
.
রায়হান তমা একে অন্যকে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে উপহার পাঠায়। বিভিন্ন উৎসবে। ঈদ, পহেলা বৈশাখ, ভালোবাসা দিবস। রায়হানের সবথেকে প্রিয় পাঞ্জাবিটাই তমার গিফট দেয়া। তমার ভালো লাগে রায়হানের পাঠানো শোপিস দিয়ে ঘর সাজাতে। রাতে শুয়ে শুয়ে জিনিসগুলোর দিকে তাকালে ওর মনে হয় রায়হান যেন ঠিক তমার পাশেই আছে৷ হাত বাড়ালেই ছোয়া যাবে৷
.
একদিন কথা বলার মাঝে খুব রোমান্টিক মুহুর্তে তমা বলে, রায়হান শুনো, আমার না তোমার স্পর্শ পেতে ভীষণ ইচ্ছা করছে। তোমার শরীরের ছোয়া, গায়ের গন্ধ, কবে যে পাবো।
পরদিন রায়হান তমাকে কুরিয়ারে তার একটা ব্যবহৃত টিশার্ট পাঠিয়ে দেয়। তমা সেটাকে জড়িয়ে ধরে রাতে ঘুমায়। রায়হানের স্পর্শ ফিল করে, গায়ের গন্ধ পায়৷ তমার অসম্ভব ভালো লাগে।
.
একদিন ভিডিও কলে তমা সুন্দর করে সেজে আছে৷ গাঢ় লাল লিপিস্টিক তার ঠোটে। চার বছরের সম্পর্কে রায়হানের লজ্জা কিছুটা কমেছে। তারপরও সে হালকা লাজুক গলায় বলে, ‘আমার খুব ইচ্ছা করছে তোমার ঠোটে ঠোট রাখতে। তোমার লিপিস্টিকের স্বাদ পেতে।’
দুইদিন পর রায়হান কুরিয়ার থেকে তমার পাঠানো লিপিস্টিক টা পায়। বাসায় এসে প্রতিদিন রাতে অল্প অল্প করে খায় ও। খুব মজা লাগে। চুমু খাওয়া আসলেই অনেক আনন্দের।
.
ওদের প্রেম চলতে থাকে। পাঁচবছর, ছয়বছর। দুজনের ভেতরে এখন সম্পর্ক অনেকটাই সহজ৷ অনেকধরনের লজ্জা আর অস্বস্তি ভেঙে গেছে৷ এক রাতে রায়হান দুষ্টুমি করে বলে, ‘আমরা সামনাসামনি থাকলে এক প্লেটে ভাত খেতাম। এক ব্রাশে দাত মাজতাম!’
কথাটা মনে লাগে তমারও৷ ওরা একটা প্লান করে। ভাত খেয়ে প্লেটটা, আর দাত ব্রাশ করে ব্রাশটা তমা পাঠিয়ে দেয় রায়হানকে কুরিয়ারে। একদিন পর ঢাকায় সেটা রায়হান পায়। সে ঐ প্লেটে ভাত খায়। ঐ ব্রাশে দাত মাজে। তারপর সেটা পাঠিয়ে দেয় তমাকে। পরদিন তমা আবার একইভাবে ভাত খায়, দাত মাজে। ব্যাপারটাতে দুইজনই খুব মজা পায়। ভালোও লাগে ওদের। প্রেম যেন আরো মজবুত হয় দুজনের মাঝে।
.
তমার বিয়ের বয়স হয়ে যায় ততোদিনে৷ বাসা থেকে ছেলে দেখা শুরু করে৷ প্রেমিক প্রেমিকার মাঝে সবথেকে পুরাতন এবং কমন সমস্যার সূচনা। তমা নানাভাবে বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে ছেলেদেরকে না করতে থাকে। কিন্তু তমার বাবাও নাছোড়বান্দা। একের পর এক ছেলে উনি প্রতিদিনই হাজির করেন। টেনশনে পড়ে রায়হান। এখন কি হবে? সত্যি সত্যিই কি ওর নিজের বিয়ের ব্যাপারে ভাবতে হবে? এতে দুইটা সমস্যা। বাসায় নিজে থেকে বিয়ের কথা ও কিভাবে বলবে? তার থেকে লজ্জায় মরে যাওয়াও ভালো। আরো বড় সমস্যা হলো, বিয়ে করলে একটা রক্তমাংসের মেয়ের সামনে ও কিভাবে থাকবে। কিভাবে তার চোখের দিকে তাকাবে, হাত ধরবে, চুমু খাবে। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ফোন পর্যন্ত ঠিক আছে। তাই বলে সামনাসামনি! একদিন কল্পনায় ভেবেছিলো, ও তমাকে সামনাসামনি আদর করছে। দশমিনিট কল্পনার পরই ওর শুরু হয়ে তীব্র বমি। সাথে পাতলা পায়খানা৷ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে স্যালাইন ধরানো লেগেছিলো। সাতদিন পর যখন বাসায় ফিরেছে, ততদিনে ওর অবস্থা খারাপ। প্রচন্ড দূর্বল। সেই অবস্থা থেকে রিকভার হয়ে পুরোপুরি শক্তি পেতে লেগেছিলো আরো দেড়মাস।
.
তমার বিয়ে প্রায় হয়েই যাচ্ছিলো। রায়হানও ঠিক করে ফেলেছিলো তমার বিয়ের রাতে দুই পাতা ঘুমের ঔষধ খাবে। ঠিক তখনই দূর্ঘটনাটা ঘটল৷ এক রাতে হার্ট এটাকে মারা গেল তমার বাবা আব্দুস সামাদ৷ বিয়ে ভেঙে গেল৷ তবে উনি মরার আগে তমার হাত ধরে বলে গেলেন, ‘মা, তুই আমার বড় মেয়ে। এই সংসারের দায়িত্ব এখন থেকে তোর হাতে। তোর মা আর ছোট ভাইকে তুই দেখে রাখিস৷ এই বাসা ছেড়ে কোথাও যাস না।’
টাকাপয়সা নিয়ে সমস্যা ছিলো না৷ তমার বাবা যা সম্পত্তি রেখে গেছেন তা দিয়ে তমাদের খুব ভালোই চলবে। চলতেও থাকে। তমা আগের মতই বাসায় থাকে। ফ্যামিলির দেখাশোনা করে৷ তমার আম্মু অসুস্থ। ভাই স্কুলে পড়ে। অনেক কাজ। ঢাকা যাওয়া সম্ভব না এসব ছেড়ে। আর যাওয়ার দরকারও পড়েনা। রায়হানের সাথে প্রেম ভালোভাবেই চলছে৷ বিয়ের ঝামেলা চলে যাওয়াতে রায়হানও খুব খুশি৷
রায়হানের বাসা থেকে বিয়ের কথা বললেও ও তেমন গুরুত্ব দেয় না। বাবা মা ও ওকে খুব বেশি চাপ দিচ্ছে না৷ ছেলেমানুষ, যখন ইচ্ছা হয় বিয়ে করবে।
.
কিছুদিন পর অবশ্য আবার তমাকে বিয়ের জন্য চাপ দেয় ওর আম্মু। বলে, মা রে, আমাদের আর কতদিন দেখাশোনা করবি। তোর নিজের একটা লাইফ তো আছে৷ তুই এবার বিয়েশাদি কর৷ তোর পছন্দের কেউ থাকলে বল, নাহয় আমি তোর মামাদের বলি ছেলে দেখতে।
তমা বাবাকে ভয় পেলেও মায়ের সাথে সম্পর্কটা অনেকটাই সহজ৷ সে লাজুক মুখে মা কে রায়হানের কথা বলে। রায়হানের ছবি দেখায়। তমার মা ও রাজি হয় খুশিমনে।
এদিকে রায়হানকেও বাসা থেকে চাপ দেয়া শুরু হয়ে গেছে বিয়ের জন্য।
সুতরাং একদিন ওরা ঠিক করে বিয়ে করে নেবে। পরদিন রাতে ওদের বিয়ে হয়। ভিডিও কলের ওপাশ থেকে তমা লাজুক মুখে কবুল বলে।
তমার আম্মু শাড়ির আচলে মুখ চেপে ফিসফিস করে বলেন, কি দিনকাল আসলো! ছি ছি!
.
রায়হানের বাবা মা প্রথমে রাজি হতে চান না৷ তবে ছেলের জেদের কাছে হার মানেন৷ ভিডিও কলে বিয়েও তো বিয়ে, নাকি! সময় সুযোগ মত উঠিয়ে আনা হবে মেয়েকে।
সেই সময় আর সুযোগ আসেনা। তাতে রায়হান বা তমার কোনো সমস্যা হচ্ছেনা। তাদের বিবাহিত জীবন ফোনকলে আর চ্যাটিং এ বেশ আনন্দেই কাটছে। নতুন নতুন বিয়ের পর জীবনটা আসলেই অন্যরকম হয়ে যায়। এখন আর রায়হান বেশি রাত পর্যন্ত বাইরে থাকে না৷ সন্ধ্যার পরপরই ঘরে ফিরে আসে। তমাও লাজুক মুখে রায়হানের জন্য অপেক্ষা করে থাকে। ভিডিও কলের ওপাশে শাড়ি পরা তমার মুখটা একটু পরপর লজ্জায় লাল হয়ে ওঠে। বাসায় ফেরার সময় রায়হান মনে করে তমার জন্য একটা গোলাপ, দুটো রজনীগন্ধা বা একটা শিউলি মালা নিয়ে আসে। তমাকে ছবি পাঠায়। তমাও রায়হানের পছন্দের খাবার রান্না করে ছবি তুলে দেয়। খুব ভালো লাগে রায়হানের। রাতে দুজন বিছানায় পাশাপাশি দুটো বালিশ রাখে। একপাশে ল্যাপটপে ভিডিও কল অন করে রাখে। দুইজন দুজনের দিকে তাকিয়ে গল্প করতে করতে ঘুমিয়ে যায়। এভাবে কয়েক বছর কেটে যায়। তখন শুরু হয় আরেক সমস্যা। রায়হান আর তমার বাসা থেকেই তাদের বাচ্চা নেয়ার জন্য প্রেশার শুরু করে। জামাই বউ কেন একসাথে থাকছে না, না থাকলে বাচ্চা কিভাবে হবে, এই নিয়েও সবাই নানান কথা শোনায়৷ ওরা বাধ্য হয়ে দুজন মিলে বাচ্চার নাম ঠিক করে। ছেলে হলে ফেসবুক, মেয়ে হলে ইন্সটাগ্রাম। যেহেতু ওদের সবকিছু অনলাইনে, সেহেতু বাচ্চার নামও এমনই হওয়া উচিত। কিন্তু আর যাই হোক, ভার্চুয়ালি বাচ্চা হওয়া তো সম্ভব না। এখন উপায়?
.
উপায় আছে৷ অনেক ভেবেচিন্তে বের করে রায়হান। অনেক রিসার্চ করে ইন্টারনেটে৷ ভিকি ডোনার সিনেমাটা ওকে আইডিয়া দেয়। নিজের স্পার্ম একটা স্পার্ম ফ্রিজিং এন্ড স্টোরেজ কিট কিনে সেটাতে ভরে পাঠিয়ে দেয় নেত্রকোনা। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে। বাকি কাজ করে তমার পরিচিত এক ক্লিনিক। খুব দ্রুতই প্রেগন্যান্ট হওয়ার সুসংবাদ দেয় তমা। খুশিতে সারা পাড়ায় মিষ্টি বিতরন করে রায়হান। শুধুমাত্র রায়হানের বাবা মা মিষ্টি খায় না। মুখ গোমড়া করে বসে থাকে। নাতি বা নাতনি হবে এমন সংবাদেও কিভাবে দাদা দাদি খুশি না হতে পারে এটা ভেবে খুব অবাক হয় রায়হান৷
.
দশ মাস পর তমার কোলজুড়ে আসে ফুটফুটে ইন্সটাগ্রাম। ইন্সট্রাগ্রাম ওর ভালো নাম হলেও ডাকনাম রাখা হয় ইমোজি। ইন্সটাগ্রাম আহমেদ ইমোজি বুঝতে শেখার পর আম্মুর ফোনকে বাবা ডাকা শুরু করে। ফোনের ওপাশে বাবা ডাক শুনে আনন্দে আপ্লুত হয় রায়হান। একজন পুরুষ সারাজীবন এই ডাকটা শোনার অপেক্ষাতেই থাকে৷ তার আর কিছু চাওয়ার নেই পৃথিবীর কাছে।
আরো তিন বছর পর একই পদ্ধতিতে তমার কোল জুড়ে আসে ফেসবুক আহমেদ রিল। রিল বড় হয়ে বাবা হিসাবে ল্যাপটপকে মেনে নেয়। বাবার মুখে গল্প না শুনলে রিলের ঘুমই আসে না। অন্যদের বাবার থেকে রিল আর ইমোজির বাবা আরো বেশি এডভান্স৷ তারা বাবার ওপরে গেমসও খেলতে পারে৷ রায়হান আর তমার বড় সুখে সময় কাটে।
.
রায়হানের মা রায়হানকে কথা শোনাতে শোনাতে প্রায় পাগলের মত হয়ে গেছে। দুইদিন আগেও এই ল্যাপটপ আমার নাতি না বলে ল্যাপটপ ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। রায়হান মা কে ডাক্তার দেখাচ্ছে৷ বাবা তেমন কথাবার্তা বলে না কারো সাথে। শোনা যাচ্ছে উনি মক্কায় চলে যেতে চান। এই দুনিয়ায় আর কিছু দেখার আশা নাকি উনার নেই।
.
পঞ্চাশ বছর পর। রায়হান মৃত্যুপথযাত্রী। তার জীবন পরিপূর্ণ হয়ে ধরা দিয়েছে তার কাছে। কিছুদিন আগেই মেয়েটার বিয়ে দিয়েছেন। গুগল মিটের মাধ্যমে৷ জামাই থাকে আমেরিকা। মেয়ে জামাইয়ের আট বছরের প্রেম ছিল। কখনো সামনাসামনি দেখা হয়নি৷ ল্যাপটপের স্ক্রিনে মেয়ে আর জামাইয়ের সুখি সুখি মুখ দেখে উনার ভালো লেগেছে। ছেলেকে নিয়ে ভাবনা নেই। সে ঘরে বসে অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং করে ভালো ইনকাম করছে৷ নিজেই নিজের খরচ চালায়৷
মৃত্যুশয্যায় শুয়ে আছে রায়হান৷ পাশে রাখা ল্যাপটপের স্ক্রিনে স্ত্রী সন্তানের চিন্তিত মুখ। তমা খুব কাঁদছে। রায়হান গম্ভীর মুখে সবাইকে শান্ত থাকতে বললো। তার খুব শ্বাসকষ্ট হচ্ছে৷ রায়হানের খুব ইচ্ছা করছে স্ত্রীর হাত টা ধরতে। সে মুখ ফুটে কথাটা বলে ফেললো৷ তমা হাত বাড়ালো। রায়হানও হাত বাড়ালো। গভীর মমতায় স্ত্রীর হাত স্পর্শ করলো। বরাবরের মতই কাচের মত পিচ্ছিল স্পর্শ। বেশিক্ষণ ল্যাপটপ চালানোর জন্য হাতটা গরম হয়ে আছে। রায়হান দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করলো।
.
রায়হানের কবর হলো দুইটা৷ একটা ঢাকাতে, আরেকটা নেত্রকোনা। তমা রায়হানের সাথে কথা বলার জন্য ব্যবহৃত ফোন আর ল্যাপটপটা সযত্নে কবর দিয়ে দিয়েছে৷ আপনারা যদি কেউ নেত্রকোনা কেন্দ্রীয় কবরস্থানে যান তাহলে একটা কবর দেখতে পাবেন। যেটার এপিটাফে লেখা রয়েছে, ‘এখানে চিরনিদ্রায় শায়িত ফেসবুক আর ইন্সটাগ্রামের বাবা রায়হান আহমেদ। মৃত্যুকালে উনার বয়স হয়েছিলো ৭২ বছর, আর চার্জ ছিলো ২১ পার্সেন্ট!’
৫. মজার জোকস স্ট্যাটাস
আমার যে বন্ধু ইন্টারমিডিয়েট লেভেলেই পড়াশোনা ইস্তফা দিয়ে প্রবাসে গেসিলো। তার বেতন এখন লক্ষ টাকা ছুঁইছুঁই। কয়েকবছর পর দেশে ফিরে এসে ব্যবসায় টাকা ইনভেস্ট করবে বলতেসে।
আরেক বন্ধু তো এসএসসির পরই প্রবাসে চলে গেসিলো। সে মাঝখানে এসে বিয়ে করলো। এবার ছুটিতে গিয়ে দেখলাম তার বাচ্চাকাচ্চা আব্বা কইয়া ডাকে।
আর আমি সকাল থেইকা কারক বিভক্তির বই সামনে নিয়া বইসা আছি। কারক ছয় প্রকার। বিভক্তি সাত প্রকার।
‘বাবাকে বড্ড ভয় পাই’ এই বাক্যে ‘বাবাকে’ হচ্ছে অপাদান কারকে দ্বিতীয়া বিভক্তি।
© শাহরিয়ার জামান সৈকত
৬.বর বউ জোকস
খুব বিপদে আছি। হাইস্কুলে থাকতে আমার হাতের লেখা কত সুন্দর ছিলো তা প্রমাণ করার জন্য বউকে নিজের হ্যান্ডনোটগুলো দেখাচ্ছিলাম। প্রথম হ্যান্ড নোটের প্রথম পৃষ্ঠার কোনায় লেখা ছিলো, নাজমুল+স্বর্ণা !
এখন আমি কী করবো?
৭.ডার্টি জোকস
নেশা (প্রাপ্তবয়স্ক ও প্রাপ্তমনস্কদের জন্য)
শোভন মাহমুদের কোনো নেশা নেই। সে সুখেই আছে বলা যায়। মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে ভালো বেতনের চাকরি, স্মার্ট সুন্দরী স্ত্রী রিনা আর একমাত্র মেয়ে নুহাকে নিয়ে ঝামেলা বিহীন সংসার। পুরো সপ্তাহ কাজ, উইকেন্ডে এদিক ওদিক ঘুরতে যাওয়া, কোনো বড়ো ছুটিতে এদিক ওদিক বেড়াতে যাওয়া—আর কী চাই একজন মানুষের জীবনে সফল হতে? আত্মীয়স্বজন আর বন্ধুবান্ধবের কাছেও ওর বেশ সুনাম! সুখেই আছে শোভন। তবু কেন যে মাঝে মাঝে ইউনিভার্সিটি লাইফের উদ্দাম সময়ের কথা মনে পড়লে বুক ঠেলে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে, আর বাকি সব এত পানসে আর বোরিং লাগে, বুঝতে পারে না শোভন।
মোটামুটি সুপুরুষ শোভন বি বি এ’র ছাত্র ছিল, মিরপুরে বাড়ি আছে নিজেদের, আর তার উপরে সে তার মা-বাবা’র একমাত্র সন্তান। তাই মেয়েমহলে বেশ জনপ্রিয়ই ছিল শোভন। বেশ কিছু খুচরো সম্পর্কও হয়েছিল। ওর ইউনিভার্সিটির মেয়েরাও ছিল খুব স্মার্ট—বিশেষ করে যাদের সাথে ও ঘোরাঘুরি করত। কারোরই কোনো ছুঁতমার্গ ছিল না। অনেকের সাথেই সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা শোবার ঘর পর্যন্তও পৌঁছেছিল। সবাই একে একে কেটে পড়লেও রিনা শেষ পর্যন্ত লেগে ছিল। ওর আগের বান্ধবীদের কথা ও একদম জানত না, তা নয়। তবে নিজেও তো একই পথের পথিক ছিল, তাই আর সেসব পুরনো ব্যাপার ঘেঁটে কেউই নিজেদের ছন্দময় জীবনে অশান্তি আনে না।
###
সেদিন লাঞ্চ করতে করতে নানা পুরনো কথা আনমনে ভাবছে শোভন, তখন পাশের টেবিল থেকে অফিসের বস নাহিদ ভাই ওকে ডাকলেন। বস হলেও উনি শোভনের ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র ভাই, তাই আগে থেকেই চেনা।
“শোভন, আমার সাথে একজায়গায় চলো আজকে অফিসের পর।“
“আজকে তো একটু বউবাচ্চাকে নিয়ে বেরোনোর কথা, নাহিদ ভাই। জরুরি কিছু?”
“না, না। তেমন কিছু না। তুমি কোনো এক সময়ে একটু আমার রুমে এসো তো! কথা আছে।“
কী কথা বলবে বস সেটা ভাবতে ভাবতে লাঞ্চের একটু পরেই ফাঁক পেয়ে নাহিদ আকবরের ঘরে উঁকি দিলো শোভন। সামনের চেয়ারে সে এসে বসতেই নাহিদ কথা শুরু করলেন। “তোমাকে ছোটো ভাইয়ের মতো দেখি বলেই বলছি, শরীরের সাথে সাথে মনকেও যে ভালো রাখা দরকার, সেটা জানো তো?”
হঠাত এরকম কথায় অবাক হলো শোভন। “জানি, নাহিদ ভাই।”
“জানো, তাহলে মানো না কেন?”
শোভনের চেহারায় প্রশ্ন দেখে নাহিদ একটা ফোন নাম্বার দিলেন। বললেন, “এখানের প্রত্যেকটাই দারুণ জিনিস! একদম ঘরোয়া পরিবেশে, কিন্তু ভীষণ প্রাইভেট, আর ব্যবস্থাও চমতকার। এখানে যাও। আর কতদিন দীর্ঘশ্বাসের ঝড় উঠাবে অফিসে, ভাই? তোমার গত দুইটা মান্থলি রিপোর্টেও কয়েকটা ভুল ছিল। আমি কোনোমতে সামলে নিয়েছি। তাই তোমার জন্য ঔষধের ব্যবস্থা করলাম।”
তারপরেও শোভনের চোখে বিস্ময় দেখে একটু নিচু কণ্ঠে নাহিদ বললেন, “তোমার ইতিহাস তো আমি জানি। ডিপার্টমেন্টের সবচেয়ে এলেমদার ছিলে তুমি। আমরা তোমার নিত্য নতুন বান্ধবী দেখে তোমাকে কী হিংসা করতাম, জানো? তোমার যখন আর কোনো কিছুরই অভাব নেই, তখন মনে হচ্ছে এটাই তোমার একমাত্র মেডিসিন!” যেন খুব হাসির কথা বলেছেন, এমনভাবে হাসতে লাগলেন তিনি।
সেই শুরু। প্রথম কয়েকবার নাহিদ নিজে সঙ্গে করে নিয়ে গেছেন। ব্যবস্থা সত্যি চমতকার। তার ওপর প্রত্যেককে দেখে, কথা বলে বুঝা যায় যে সবাই সমাজের মোটামুটি উঁচু দিককার বাসিন্দা। এরাও হয়ত শখে কিংবা হাতখরচ মিটাতে এখানে আসে। কে কেন আসে সেসব নিয়ে শোভনের মাথাব্যথা নেই একটুও। ও নাহিদের কাছে রীতিমত কৃতজ্ঞ এই “প্রেসক্রিপশন” দেওয়ার জন্য। আজকাল সত্যিই ওর মনমেজাজ অনেক ফুরফুরে থাকে। কাজেও মনোযোগ বেড়ে গেছে।
নাহিদ ভাই ঠিকই বলেন, “ভাই, বউ তো আছেই। কিন্তু রোজ কি ঘরের খাবার ভাল লাগে? মাঝে মাঝে রেস্টুরেন্টে খাও না? এটাও তেমন।” সত্যি তাই।
শোভন রোজ যায় না। সপ্তাহে নির্দিষ্ট দু’তিন দিন যায়। না গিয়ে পারে না। একেকটা মেয়ে একেক রকম! এ এক অন্যরকম নেশা! বউ আছে তার সংসার, মেয়ে আর শখের বুটিকের চাকরী নিয়ে। থাক না। ঘরের বউয়ের তো সবকিছু জানার দরকার নেই! আজকে অবশ্য শোভনের আসার কথা নয়, কিন্তু কালকে আবার অফিসের কাজে তিনদিনের জন্য যাচ্ছে চিটাগাং, তাই ফোন করে যখন শুনেছে ওর অপরিচিত একজনকে পাবে, চলে এসেছে। সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে হাসিহাসি মুখে শোভন কলিং বেলে চাপ দিল। একজন সুন্দরী দরজা খুলে মিষ্টি হাসি দিয়ে ভেতরের দরজাটা দেখিয়ে দিয়ে বললো, “আপনার এ্যাপয়েন্টমেন্ট ওঘরে।” মেয়েটির দেখানো দরজায় টোকা দিল শোভন।
###
লাস্যময়ী ভঙ্গিতে আয়নার দিকে তাকিয়ে একটা কটাক্ষ করলো রিনা। নিজেকে দেখে আজকাল নিজেই চোখ ফেরাতে পারে না। ভাগ্যিস নুহা’র স্কুলে সীমা ভাবী’র সাথে আলাপ হয়েছিল! সীমা ভাবী আসলে কোনো বাচ্চার মা নয়। সেটা রিনা পরে বুঝেছে। ভদ্রমহিলা নানারকম কসমাটিক্স বিক্রির ভান করত। গল্পে গল্পে বন্ধুত্ব জমে উঠেছিল ওদের। ভাগ্যিস! নয়তো এত সহজে এত টাকা রোজগার করার কথা ভাবতেও পারতো না রিনা।
রূপযৌবন তো অনেকেরই থাকে, কিন্তু ক’জন তার মত সেটা কাজে লাগানোর সুযোগ পায়? শুধু টাকা আসছে তা নয়। রিনা তো অনেক আগে থেকেই এই নিষিদ্ধ আনন্দে অভ্যস্ত ছিল। কম পুরুষবন্ধু ছিল ওর? বিয়ের সময় যখন এলো, তখন সব দেখেশুনে শোভনকেই বিয়ে করল। ততদিনে দু’জনের সবকিছুই দু’জনের অতিপরিচিত। তবু, ভালোই আছে দু’জন।
এতদিন পর আবার সেই পুরনো খেলায় ফিরে রিনা’র কেমন নেশা লেগে গেছে। আর শোভনও কী বোকা! ভাবে সপ্তাহে দুইদিন সীমা’স বুটিকে কাজ করে রিনা এত টাকা আয় করে। তাও তো আসল হিসেবটা গোপনই আছে। থাক না। পুরুষমানুষের এত জানার দরকারটাই বা কী?
একটু আগে কলিং বেলের আওয়াজ পেয়েছে। এবার ওর জন্য বরাদ্দ ঘরের দরজায় টোকা পড়ল। আজ সীমা ভাবী’র বাসায় ঢুকতেই ভাবী জানিয়েছে রিনা’র নতুন ক্লায়েন্ট আসছে। সে-ই নিশ্চয়ই।
দরজা খুলল রিনা॥
আমাদের ছোটগল্পের লিংক