নেকড়ে তার সন্তানকে নিয়ে বের হয়েছে খাবারের সন্ধানে। হাঁটতে হাঁটতে নেকড়ে তার শাবককে বলছে-ঘাস খেতে পারলে তোমার বেঁচে থাকা সহজ হতো বাবা। কিন্তু তোমাকে খেতে হয় মাংস। এটাই তোমার জন্য অভিশাপ। জঙ্গলতো সাফ হয়ে গেলো- এতো খাবার পাবো কোথায়? বাঁচবো কেমন করে?
মানুষ যত আমাদের মেরেছে । আমরা তত মানুষ মারিনি। দুয়েকটা দূর্ঘটনা ছাড়া। তারপরও মানুষ হলো সভ্য। আর আমরা হলাম হিংস্র।
হাঁটতে হাঁটতে মা আর ছেলে একটা মুক্ত খামারের পাশে আসে। ভেড়ার পাল চড়ে বেড়াচ্ছে।
ছেলে মাকে বলে – মা আমি যাই। তোমার জন্য খাবার নিয়ে আসি।
মা বলে- না বাবা। তুমি এখনো ভালো শিকারী হওনি। ধরা পড়লে নির্ঘাত মৃত্যু। আমি যাই। তুমি এখানে অপেক্ষা করো।
মা বলে- ঐ যে লোকটা দেখছো । ও হলো রাখাল। আর ওর হাত যে দণ্ডটা দেখছো- ওটা হলো লাঠি। এটাই হলো ওর অস্ত্র।
তোমার বাবাকে এমন পিটিয়েছে। লাঠি দিয়ে বেদম প্রহারের যন্ত্রণা বড়ই নির্মম। মাঝে মাঝে মানুষরা খুব ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। আর লাঠি দিয়ে যখন ওরা প্রহার শুরু করে। তখন ওদের শরীরে দানবীয় শক্তি এসে ভর করে।
নানা বিষয়ে ওদের মাঝে অনৈক্য থাকে। কিন্তু কাউকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মারার ক্ষেত্রে ওরা সবাই এক হয়ে যায়। বৃষ্টির ফোটার মতো অগনিত লাঠির প্রহার গায়ে এসে পড়ে। কাউকে পিটিয়ে মারা তখন একটা উৎসবে পরিণত হয়। সে মানুষ হোক কিংবা আমাদের মতো কোনো হিংস্র পশু।
সুতরাং সবসময় সাবধানে থেকো। কোনো অবস্থাতেই কোনো মানুষের লাঠির আওতার ভিতরে গিয়ে পড়ো না।
নেকড়ে শাবক এবার ওর মাকে বলছে- কিন্তু মা । ঐ যে রাখালের পাশে আরেকটা প্রাণী দেখছি। ঐ প্রাণীটা কে ?
ওর নাম হলো কুকুর। আর এই কুকুরই হলো তোমার আসল শত্রু বাবা ।
কিন্তু মা । ও তো দেখতে অবিকল আমাদের মতো। সে কি আমাদের কেউ না।
না বাবা। এটাই হলো জীবনের চরম দূর্ভোগের কারণ ।
দেখতে
“আমাদের মতো হওয়া “, আর “আমাদের হওয়া” – এই দুয়ের মাঝে যোজন যোজন পার্থক্য আছে বাবা।
𝑪𝒐𝒍𝒍𝒆𝒄𝒕𝒆𝒅