- লোডশেডিং নিয়ে স্ট্যাটাস।
- লোডশেডিং নিয়ে ফানি পোস্ট
- লোডশেডিং নিয়ে কবিতা
- গরম নিয়ে ইসলামিক স্ট্যাটাস
- বিদ্যুৎ বিভ্রাট নিয়ে কবিতা
১.লোডশেডিং নিয়ে স্ট্যাটাস
মনডাই কইতাছে আমার ঘাম দিয়া পল্লি বিদ্যুৎ এর বেডারারে এক গ্লাস সরবত বনাইয়া খাওয়াইতাম।
……………………
………………………..
লোডশেডিংয়ের ১০টি ফজিলত পড়ুন
১. কারেন্ট বিল কম আসে। লাইট, ফ্যান, টিভি ইত্যাদির ব্যবহার কম হওয়ায় টেকে বেশিদিন।
২. অন্ধকার থাকলে জোছনা দেখার সুবিধা হয়।
৩. গরমে ঘেমে গেলে শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের হয়ে যায়। যার কারণে রোগবালাই কম হয়।
৪. হাতপাখা ব্যবহার করায় হাতের ব্যায়াম হয়।
৫. খালি গায়ে থাকার কারণে কাপড়চোপড় কম ময়লা হয়।
৬. লোডশেডিংয়ে সহজে ঘুম আসে না, এতে বাড়িতে চুরির আশংকা কমে যায়।
৭. চাইলেও গরমের কারণে অনেক বেলা পর্যন্ত ঘুমানো যায় না। লোডশেডিং আছে বলেই সকালের আলোবাতাস গায়ে লাগে।
৮. পড়তে বসা লাগে না।
৯. কারেন্টের জন্য অনেক কাজই থেমে থাকে। কারেন্ট আসতে না আসতেই তড়িঘড়ি করে সবাই কাজগুলো করতে থাকে। এতে কাজ ফেলে রাখার প্রবণতা কমে, মানুষ পরিশ্রমী ও কর্মঠ হয়।
১০. লোডশেডিং আছে বলেই আবারও কারেন্ট আসে।
……………………………
……………………………
মাত্র চার হাজার কোটি টাকার বকেয়া শোধ না করার জন্য ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কবলে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
অথচ এর রকম কত লাখ কোটি টাকা লোন শোধ না করে ঘুরে বেড়াচ্ছে ঋণখেলাপীরা ।
কতজন নেতা ব্যবসায়ীর সুইস ব্যাংক ঝাড়া দিলে এমনিতেই বের হয়ে আসবে কত শত কোটি টাকা।
জনগণের জন্য পারলে জান দিয়ে ফেলা জনদরদীরা তো একেকজন কয়লার মতই, শত ধুলেও এদের ময়লা( দুর্নীতি) কাটে না । কয়লার বিকল্প হিসেবে এদের সাপ্লাই দিলে খারাপ কি!
#লুনালাবিব……..
………………………..
…………………..
আমাদের আত্মীয় স্বজন সবার মধ্যে একমাত্র বড়খালার বাসায় এসি আছে। আমাদের বাসা থেকে সামান্য দূরে। আমি সকাল থেকে এই নিয়ে তিনবার নানান অজুহাতে খালার বাসায় হাজির হয়েছি। শেষবার গেছি দেড়টার দিকে, ইফতারি দিতে।
খালা আমাকে দেখে অবাক। এতো তাড়াতাড়ি কেউ ইফতার নিয়ে আসে নাকি?
আমি এসির নিচে বসতে বসতে বললাম, ‘আজ বিকালে বাসায় থাকব না। কাজ আছে। তাই আগেই দিয়ে গেলাম!’
‘বিকালে কই যাবি?’
‘এখনো জানিনা। গ্রামিনফোন কাস্টোমার কেয়ার অথবা কোনো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে!’
খালা আমার কথা না বুঝতে পেরে অবাক হয়ে চেয়ে রইলেন। টপিক চেঞ্জ করে বললেন, ‘তামান্নার কি হয়েছে একটু দেখ তো। দুইদিন ধরে পাগলামি করতেছে!’
তামান্না আমার খালাতো বোন। ক্লাস নাইনে পড়ে। ওকে আশেপাশে না দেখে অবাক ই হলাম। এসি কেনার পর থেকে তাকে এই রুম ছাড়া দেখিইনি। আমাদের বাসায় গিয়ে একটু পরপর ঢং করে বলতো, ‘খালা, আমাদের তো এসি ছাড়া থাকার অভ্যাসই নেই। আপনারা কিভাবে যে থাকেন। উফ!’
তামান্নাকে খুজে পেলাম ছাদের চিলেকোঠার রুমে। এমনিই যে রুম তীব্র গরমে হিট হয়ে থাকে। তার ওপর ফ্যানও চালায়নি।
আমি বললাম, ‘এখানে কি করিস?’
ও চোখ নামিয়ে বলল, ‘কিছুনা।’
‘চল, এসির নিচে বসবি।’
‘উহু।’
‘আরে চল। ঝামেলা করিস না।’
তামান্না কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল, ‘এসি সহ্য হয়না। ঠান্ডা লেগে যাবে।’
আমি অবাক হলাম, ‘কি বলিস এসব। ভুতের মুখে রাম নাম। যে ঘামা ঘামছিস, তাতে আরো বেশি সমস্যা হবে।’
ও আমার কথা শুনল না কোনোভাবেই। পরে খালার কাছে জানলাম বিস্তারিত। গত দুইদিন ধরে কোনোভাবেই ও এসি রুমে আসছে না। খালু কারেন্ট বিল কমানোর জন্য ঘোষণা করেছে, অন্য কোনো ঘরে ফ্যানও চালানো যাবেনা। সবাই এক রুমে এসি ছেড়ে বসে থাকতে হবে।
তাতেও ও আসছে না। ফ্যান ছাড়াই অন্য রুমে থাকছে। গতকাল বিকালের দিকে নাকি গরমে হিট স্ট্রোকের মত হয়েছিল। তাতেও তাকে আনা যায়নি এসি রুমে৷
আমি রহস্যের গন্ধ পেলাম। তামান্নাকে গিয়ে ধরলাম ভালোমতো।
‘দেখ, আমি তো তোর ভাইয়া। কখনো রাগ করেছি তোকে?’
‘উহু।’
‘আমাকে বল কি হয়েছে৷ আমি কাউকে কিছু বলব না।’
কিছুক্ষণ একটু নরম কণ্ঠে রিকুয়েস্ট করতেই তামান্নার আবেগের বাধ ভেঙে গেল। ঝরঝর করে কেঁদে ফেল। কাঁদতে কাঁদতে বললো, ‘আমি কিভাবে এসির বাতাস খাই ভাইয়া? ও তো গরমে কষ্ট পাচ্ছে। ওর মেসে তো এসি নেই!’
‘ও টা কে?’
‘শিহাব!’
‘কি করে?’
‘জগন্নাথে পড়ে। অনার্স থার্ড ইয়ার।’
‘পরিচয় কিভাবে?’
‘ফেসবুকে।’
‘কতদিনের প্রেম?’
‘তিন মাস এগারো দিন আঠারো ঘন্টা উনিশ….’
‘চুপ, চুপ থাক।’
জি, আপনারা ঠিকই ধরেছেন। বেচারির প্রেমিক ঢাকায় মেসে থাকে। প্রচন্ড গরমে সিদ্ধ হচ্ছে। তাই ইনার এই সেক্রিফাইস।
কথার ফাকেই চোখ মুছে খুব আবেগী গলায় বললো, ‘এসির ঠান্ডা হাওয়া আমার গায়ে কাটা হয়ে ফোটে। আমার ওর কথা মনে পড়ে যায়। কি যে কষ্ট পাচ্ছে ও। ওকে রেখে আমি কিভাবে একা একা এসিতে বসব ভাইয়া? যদি ওর কষ্টটা না বুঝতে পারি, এটুকু সেক্রিফাইস না করতে পারি, তাহলে কিসের ভালোবাসা৷ ভালোবাসার অর্থই তো একে অন্যের জন্য সকল কষ্ট…
‘চুপ, একদম চুপ!’
আমি খালার বাসা থেকে বের হয়ে এসেছি। এসি লাগবে না আমার। রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি প্রচন্ড রোদে। মাথা ঘুরছে। এই ভালোবাসা মহান, এই ভালোবাসা নি:স্বার্থ! মানুষ রোমিও জুলিয়েট, শিরি ফরহাদের কথা মনে রাখে। তামান্না আর শিহাবের কথা তারা জানেই না। তাদের নিয়ে লেখা হবেনা কোনো গল্প কবিতা মহাকাব্য। বড় নিষ্ঠুর জাতি আমরা!
প্রচন্ড গরমে আমার মাথা এলোমেলো লাগছে। হিট স্ট্রোক হতে পারে। ছায়ায় যাওয়া উচিত। কিন্তু আমি যাব না। যে ভালোবাসার সাক্ষী আমি হয়েছি, তার পর আর বেঁচে থাকার কোনো শখ আমার নেই।
ধন্যবাদ
২. লোডশেডিং নিয়ে ফানি পোস্ট
ঠিকমত গরমটাকে উপভোগ করতে পারছিনা । মাঝে মাঝে কারেন্ট এসে বিরক্ত করছে!
©Robi
……………………
………………………….
এভাবে গরম চলতে থাকলে স্বামী স্ত্রী সম্পর্ক আর বেশি দিন টিকবে না।
………………….
………….
অতি মাত্রায় গরমে বাসায় ছিড়া সুতি জামা আর চুল তাল গাছের মতো খোপা করে ফ্লোরে শুয়ে থাকা আমি,এদিকে আমাকে দেখতে এসে কাজের বুয়া ভেবে সেখান থেকে তাড়িয়ে দিয়ে অন্য কোথাও গিয়ে শুইতে বলা পাত্রের ফুফু
……………
………………….
রফিক এলাকায় ঢুকেই দেখে লোডশেডিং চলছে।
সে নস্টালজিক হয়। এই লোডশেডিং তার জীবনে কত ব্রেকআপ ঘটিয়েছে তার কোন শেষ নেই।
সে তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষে পড়ে এবং তার জীবনের প্রথম ছাত্রী দোলা। ক্লাস টেনের মেয়েটাকে পড়াতে গিয়ে সে নিজেই দোলার প্রেমের ছাত্রতে পরিণত হয়। দোলা তাকে শিখায়।
স্যার সবসময় সন্ধ্যায় পড়াতে আসবেন। এই সময় ঘন ঘন লোডশেডিং হয়। আমরা হাতে হাতে খেলা খেলবো।
দোলা গুনগুন করে গান গায়
ছিঁড়বে না কভু এই বাঁধন, আসলে আসুক তুফান।
রফিকের কি যে ভালো লাগতো। সে মনে মনে দোয়া করতো এই লোডশেডিং এর দিন যেন কোনদিন শেষ না হয়। সে বিদ্যুৎমন্ত্রীর লম্বা আয়ুর জন্য দোয়া করতো। টিউশনির টাকা থেকে প্রতিমাসে দশ টাকা দান করতো উনার নামে।
একদিন লোডশেডিং এ সে প্রচণ্ড আবেগি কণ্ঠে বলতে থাকে
জানো দোলা স্রষ্টার যে আমার প্রতি প্রচণ্ড মায়া তাতে আমি নিশ্চিত। প্রতিদিন তোমাদের বাসায় ঢুকার আগেই প্রার্থনা করি যেন আজকে পড়ানোর সময় আর কারেন্ট না আসে। আমি পীর বংশের ছেলেতো। তাই প্রার্থনা বিফলে যায় না। আসো তোমার ঠোঁটে ফু দেই।
রফিক অবাক হয়; দোলা তার কান ধরে টানছে। মেয়েটা বায়োলজিতে দুর্বল। জানে না কি করা উচিত। খসখসে হাত। তাতে রশুন এবং আদার কি বিদঘুটে গন্ধ।
এই কান ধরে টানছও কেন? তোমার হাতে মশলার গন্ধ কেন? তুমি আমার সংসারে রাজরানী হয়ে থাকবে, তুমি কি তোমার আম্মার মতো সারাদিন বাসার কাজ করবে নাকি?
বদের হাড্ডি বদ। আমি আগেই সন্দেহ করছিলাম। এই বদ পোলা প্রতিদিন তিন ঘণ্টা আমার মেয়েকে পড়ায় তারপরেও আমার মেয়ে সব বিষয়ে ফেল করে? আজকে তোরে যদি পুঁতা দিয়ে না পিষি তাইলে আমার নাম সখিনা বেগম না। তোর ফু দেয়া আমি ছুটাচ্ছি।
রফিক কোনভাবে নিজেকে উদ্ধার করে পালায়। এই মহিলা পিষা ছাড়া আর কিছুই জানেন না। তাই উনার স্বামী চ্যাপ্টা হয়ে হাঁটে। সবাই তাকে চ্যাপ্টা খালেক ডাকে। রফিক দীর্ঘশ্বাস ফেলে। দোলার সঙ্গে তার বিয়ে হলে সবাই তাকে চ্যাপ্টা খালেকের জামাই ভোঁতা রফিক ডাকতো। তার চেহারার মধ্যে ভোঁতা ভাব প্রবল।
নীলার ফোনে সে বর্তমানে ফেরত আসে।
শুনো আমি একটু শপিং এ আসছি। ছেলেকে উপর তালার ভাবীর কাছে রেখে এসেছি। উনি ওকে পড়াবেন। তোমার উপর তালায় গিয়ে ছেলেকে দেখে আসার কোন দরকার নাই।
আর শুনো আজকে আমার বাসায় আমার মামাতো বোন নিতু আসবে। ও কিন্তু প্রেমিকের কাছ থেকে সিরিয়াস ছ্যাকা খাইছে। সুইসাইড করার মতো অবস্থা। তুমি ওকে সান্ত্বনা টান্তনা দিবা। তবে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে আবার
আয় শালী বুকে আয় এমন কিছু করার চেষ্টা করবে না।
কি যা তা বলছো? তুমি জানো আজকে লিফটে কবিতা ভাবি উঠেছে দেখে আমি আর উঠেনি।
তাই নাকি? খুব ভালো। তোমার উন্নতি হয়েছে দেখি।
নীলা ফোন রেখে দিয়েছে। রফিকের ভালো লাগছে। নীলাকে খুশী করার পদ্ধতি সে রপ্ত করছে।
আসলে আজকে কবিতা ভাবী লিফটে উঠার পর আর জায়গা ছিল না। তাই তার উঠার চান্সও ছিল না। তবুও সে ফ্যালফ্যাল করে ভাবীর দিকে তাকিয়ে ছিলো।
আহা তিনি যদি লিফট থেকে নেমে বলতেন
আচ্ছা রফিক ভাই পরের লিফটে আমরা দুজন একসঙ্গে যাবো।
তিনি তা না করে বরং তার দিকে তাকিয়ে বলেছেন
ভাই হেটে নামেন। লিফটের উপর চাপ কমান।
রফিক দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে উপর তালায় যায় ইহানের খোঁজ নিতে। না বাসায় কেউ নেই। ছাঁদে গিয়ে দেখে ইহান সামান্থার হাত ধরে বসে আছে।
কি অবস্থা ইহান? পড়াশুনা কই?
বাবা আমরা এখন মঙ্গল গ্রহে আছি। এখানে বিদ্যুৎ নেই। সামান্থা ভয় পাচ্ছে। যেকোনো সময় এলিয়েনরা আমাদের আক্রমণ করবে। তাই আমি সামান্থার হাত ধরে বসে আছি। ওকে সাহস দিচ্ছি।
পাশের থেকে বিউটি ভাবীর হাসির আওয়াজ।
দেখেছেন এখনকার ছেলেরা কেমন স্মার্ট?
ঠিক বলেছেন ভাবী। জানেন লোডশেডিং হলেই আমার না ভয় লাগে। সেই ছোটবেলা থেকেই। মনে হয় কেউ এসে আমাকে উড়িয়ে নিয়ে যাবে।
তাই নাকি? তাহলে আপনাকে সাহস দিতে হবে আমার?
বিউটি চোখ নাচায়।
রফিক ফিসফিস করে গান গায়
ছিঁড়বে না কভু এই বাঁধন, আসলে আসুক তুফান।
ঠিক সেই সময় নীলার ফোন। রফিকের দুঃখে কাঁদতে ইচ্ছে করে। তার জীবনে এমন ঘটনা বেশী ঘটে। সেদিন তার কলিগ সোনিয়া অফিস থেকে বের হয়েই তাকে ডাকছিল রফিক ভাই বৃষ্টি পরছে। চলেন আপনাকে রিক্সা করে সামনে এগিয়ে দেই। ঠিক তখনি নীলার ফোন।
শুনো আসার সময় বাবুর জন্য গ্লিসারিন সাপোজিটর নিয়ে আসবে। ওর হাগু আটকে আছে।
হাগু আটকে আছে? রফিক জোরে বলে।
রিক্সা থেকে সোনিয়া বলছে
কি বলছেন? ছ্যা ছ্যা রফিক ভাই। এই বয়সেও আপনার এই অবস্থা। এই ভাই রিক্সায়ালা তাড়াতাড়ি টানো।
রফিক আর ফোন ধরে না। নিশ্চিত নিতু বাসার গেটে এসে দরজা ধাক্কাচ্ছে। নিতুকে সে দেখেছে বহু বছর আগে। এখন মেয়েটা কেমন হয়েছে দেখতে কে জানে?
ঠিক ধরেছে সে। দরজার সামনে নিতু দাঁড়িয়ে। মেয়েটার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। বোরকা পরা শুরু করেছে।
নিতু কেমন আছো। তোমার আপু আমাকে ফোন করে জানিয়েছে তুমি আসবে। কারেন্ট নেই। বিল্ডিং এর জেনারেটর নষ্ট। দাড়াও মোমবাতি খুঁজে নিয়ে আসি।
না না দুলাভাই আপনি বসেন।
নিতু আমি সব শুনেছি তোমার কথা। তুমি দুঃখ পেয়েছো। কিন্তু দেখো প্রেম ভালোবাসার কোন প্রয়োজন নেই জীবনে। এই যে সংসার জীবন কি যে প্যারাময়। তোমাকে কি বলবো? তুমি মনে করো আমি তোমার সেই প্রেমিক এবং তুমি আমার প্রেমিকা। আমাদের বিয়ে হয়েছে। আসো আমরা সংসার সংসার খেলি।
আসেন দুলাভাই।
নিতু ডার্লিং আমার জন্য চা বানাও। মাথা ব্যথা করছে। একটু টিপে দাও। পা টা মাসাজ করে দাও।
আপনি আরাম করে বসেন। আমি আপনাকে রোপ মাসাজ দেই।
এটা আবার কেমন? রফিক মনে মনে খুশী হয়। আহা কতদিন মাসাজ করানো হয়না।
নিতু তাকে ঘিরে ঘুরতে থাকে। কিছুক্ষণ পর রফিক আবিষ্কার করে সোফার মধ্যে তাকে নিতু দড়ি দিয়ে বেঁধেছে। এটাই কি রোপ মাসাজ? সে আবেশে চোখ বন্ধ করে। আড়চোখে দেখে নিতু বোরকা খুলছে।
সে ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করে
এই মাসাজ কি জামা কাপড় খুলতে হয় নাকি? সে চোখ বন্ধ করে রাখে।
টাকা পয়সা কই রাখছেন? নিতুর পুরুষালি কণ্ঠে রফিক চোখ খুলে। নিতু ছেলে হলো কিভাবে?
নিতু তুমি কি জেন্ডার চেঞ্জ করছো?
আমি আপনার শালী নিতু না। আমার নাম মতি চোর। আগে রাতের-বেলায় চুরি করতাম। এলাকা ভিত্তিক লোডশেডিং এ এখন সন্ধ্যার সময় চুরি করি। রাত জাগার কষ্ট নাই।
কি বলতেছো?
জী স্যার। কথা বলে আমাকে ডিস্টার্ব দিয়েন না। তাহলে যাওয়ার সময় আপনার চেহারায় লিপস্টিক দিয়ে আঁকাআঁকি করে যাবো। তখন আবার ঝামেলায় পরবেন। এমনি আপনার চরিত্রে মহা সমস্যা আছে।
রফিককে যখন নীলা সে উদ্ধার করে তখন রফিকের অবস্থা গরমে কেরোসিন। এদিকে মতি চোর কি চুরি করে নিয়ে গিয়েছে আল্লাহ জানে।
একা থাকতে ভালো লাগছিলো না দেখে কি চোরকে নিমন্ত্রণ করে নি এসেছো ? নীলা জিজ্ঞেস করে।
তুমি না বললে তোমার কাজিন নিতু আসবে। তোমার ফোন পেয়েইতো দরজার সামনে গিয়ে দেখি নিতু বোরকা পরে দাড়িয়ে আছে।
নীলা রাগে গজগজ করতে থাকে।
আরে গাধা ফোনটাতো ধরবে। এটা বলার জন্যইতো ফোন দিয়েছিলাম যে আজকে নিতু আসবে না।
#লোডশেডিং
#আমিনুলের_গল্প_সমগ্র
বিঃ দ্রষ্টব্যঃ যারা বউয়ের ফোন সাধারণত ধরতে চান না এই গল্প তাদের জন্য। বউরা শুধুমাত্র আপনাকে বকাঝকা করার জন্য ফোন করে না মাঝে মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কথা বলার জন্যও ফোন করে।
…………………..
……………………………………….
একসময় গরমকালে কারেন্ট যেত না মাঝে মাঝে কারেন্ট আসত।শুক্র,শনিবারে বিকালবেলা বিটিভিতে সিনেমা দেখতে বসলে কয়েকবার লোডশেডিং হয়ে যেত। সালমান শাহ সিনেমা হলে আল্লাহ আল্লাহ করতাম, কারেন্ট যেন না যায়। সন্ধ্যায় কারেন্ট গেলে তো খুব মজা ! পড়তে বসে মোববাতি নিয়ে খেলা করা। কুপির সলতে পোঁড়ানো,আহ কিযে ঘ্রাণ!
সেই সময় তো ফেসবুক,টুইটার এইসব ছিল না। কারেন্ট গেলেই পাড়ার সব মা-চাচীরা উঠোনে আড্ডা মারতে বসে পরত। রঙবেরঙের গল্প করত। ঝোপজঙ্গল জোনাকি পোকা নিভত-জ্বলত। দূর মসজিদের এশার আযানের শব্দ শুনলেই মায়েদের হাসি-ঠাট্টা, বাচ্চাদের হুটোপুটি কয়েকমিনিটের জন্য চুপ হয়ে যেত।মায়েরা মাথায় আঁচল তুলত। ঠোঁটে আঙুল ধরে কড়া চোখে বাচ্চাদের দিকে তাকিয়ে শাসন করত,
-এই তোরা থাম! আযান দিচ্ছে।
কয়েক মুহূর্তের জন্যে আল্লাহু আকবর ধ্বনি ছাড়া সারা গ্রাম নিশ্চুপ৷ ঠিক সেই সময় অন্ধকারের গান শোনা যেত। কোনোদিন অন্ধকারে দাঁড়িয়ে গাছগাছালি ঘেষা প্রান্তরে কান চুপটি হয়ে দাঁড়িয়ে কান পাতবেন দেখবেন, গাছেরাও কথা কইতে পারে। গাছের পাতায় পাতায় মৃদুমন্দ বাতাসের ছুঁইছুঁই পাতার মর্মর শব্দ,নাম না জানা পোকামাকড়ের কুটুর কুটুর ডাক আর গাছের ডালে বাস করা রাত জাগা পাখির রক্ত হিম করা চিৎকার মিলে তৈরি হয় অন্ধকারের গান। সেই গান ভেতরটা কেমন উদাস করে দেয়।
দিন বদলায়,ছয় ইঞ্চি স্মার্ট ফোনের নীল আলো অন্ধকারের গান হরণ করে ফেলেছে আমাদের অজান্তে বা জান্তে। যাই হোক সেই অন্ধকারের দিনগুলোতে টুপ করে কারেন্ট এসে পরলেই বাচ্চারা হৈ হৈ করে উঠত।
মায়েরা তখন তড়িঘড়ি করে নামাজ সারত। রাতের খাবারের পার্টটুকু বাতির আলো থাকতে থাকতে সেরে ফেলা।খাওয়াদাওয়া সেরে মশারি গুঁজে বালিশের পাশে তালপাখা নিয়ে শুয়ে পরা। দখিনের জানালা খুলে ঘুমাতে কিন্তু ভুল হত না।মাঝরাতে কারেন্ট চলে গেলে ওই জানালার ঘুপচি গলে হাওয়াটুকুই তো ভরসা।
সারাদিন তিরিংবিরিং করে নাচা বাচ্চারা কয়েক মিনিটের মধ্যেই ঘুমিয়ে যেত। না ঘুমিয়ে গেলেও মায়ের প্রধান অস্ত্র তো ছিলই।
-ওই দেখ, জানালার পাশে কে দাঁড়িয়ে আছে?
দেবদারু,মেহগনি,নিম গাছ ডালপালা মেলে রাতের আবছা আলোতে কেমন জ্বীন-ভূতের আকৃতি নিয়েছে।তাকালেই গা ছমছম করে৷পোষা বেড়ালটার ম্যাও ম্যাও আদুরে ডাকও তখন অদ্ভুত লাগে। টিনের চালে খোক্কসের বাচ্চারা হুটোপুটি নৃত্য জুড়ে দিয়েছে। তাড়াতাড়ি মাকে জাপ্টে ধরে মায়ের আঁচলের ঘ্রাণ শুঁকতে শুঁকতে ঘুমিয়ে যাওয়া। আহা! কি দিন ছিল!
রাতে আরো দু’তিনবার কারেন্ট যেত। মায়েরা পরম স্নেহে ঘুম ঘুম চোখে তালপাখার বাতাস করে যেত। গরমে ঘেমে গেলে বুক, পিঠ ভেজা গামছায় মুছে দিত। ভোররাতে আর বাতাস করার প্রয়োজন হত না।দক্ষিণের খোলা জানালা দিয়ে ভেসে আসা শীতল হাওয়ায় ঘর জুড়িয়ে গেছে। বরঞ্চ জৈষ্ঠ্যের গরমেও পায়ের পাতায় ভোররাতে শীত শীত আবেশ। মা পাতলা কাঁথা টেনে দিত।
ফজরের আযানের পর পুব আকাশে সূক্ষ্ম আলোর রেখা মানে মায়েদের কর্মব্যস্ত দিনের শুরু।বাচ্চারা উঠত আরো পরে। মসজিদ থেকে হুজুর সাহেব কায়েদা পড়ার জন্যে মাইকে ডাকাডাকি শুরু হলেই আর ঘুমানোর জো ছিল না। পুকুরঘাটে চোখ ঢলতে ঢলতে ওজু সেরে কায়েদা বুকে নিয়ে মসজিদে ছোটা।তারপর স্কুল।
বিকেলে ভাতঘুমের আগে কারেন্ট কখন গেল, কখন এল কেউ মনে রাখবার প্রয়োজনবোধ করত না। তখন তো আর ওয়াইফাইয়ের যুগ ছিল না যে দফায় দফায় কারেন্টের প্রয়োজন হবে।
আজকালের মত এক, দুই ঘণ্টা লোডশেডিংএর সময়কেও এত দীর্ঘ মনে হত না যদি আমাদের জীবনযাত্রা অতিরিক্ত যন্ত্র নির্ভর না হয়ে যেত।রোজ নিউজফিড স্ক্রলিং করে আর ইউটিউবে অযাচিত টিকটক দেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় ব্যয় করে দিচ্ছি অথচ এক ঘণ্টা কারেন্ট চলে গেলে রাজ্যের কাজ মনে পরে।
দুই ঘণ্টার লোডশেডিং অসহনীয় মাত্রা নয় কেননা আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা কারেন্ট ছাড়া জীবনকে উপভোগ করা প্রজন্ম।কিন্তু উপভোগ করার জন্যে ফোন নামক বস্তুটার আমদানি হবার পর থেকেই আমাদের গরমও লাগে জাতিগতভাবে। বৃষ্টি আসলে অনুভূতিও আসে নিউজফিডে, শরৎকালে যেমন কাশফুল আসে ট্রেন্ড হিসেবে।
এই যে আপনার, আমার কোটি কোটি নিউরন সেলে ভর্তি মাথাকে অবশ করে দিতে বিলিয়ন ডলার ব্যয় হচ্ছে এবং তারা সফল হচ্ছে এর প্রমাণ কি জানেন?
অনন্ত জলিলের সিনেমাকে একজন ট্রল করেছে তাই আপনাকেও করতে হবে।
পরাণ সিনেমার রেটিং ভালো তারমানে সিনেমা ভালো।
তানিয়া-টুটুলের বাইশ বছরের সংসার ভেঙে গেছে তাই ওদেরকে সবাই আজেবাজে মন্তব্য করছে।আপনাকেও করতে হবে।
লোডশেডিং নিয়ে কয়েকজন পোস্ট করছে তাই আপনাকেও করতে হবে।
এইযে লোক দেখাদেখি বা অপ্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে ভেবে জীবন পাড় করে দিচ্ছি আর ধার করা ধারণা নিয়ে জীবন চলে যাচ্ছে আর কত! নিউরনগুলো আসলে নিউজফিড ঘাটতে ঘাটতে ফ্রীজ হয়ে গেছে। এর বাইরের কিছু আর আমরা ভাবতে পারি না। এখনকার বাচ্চারা হয়ত আর রাতের বেলা গাছের ছায়া দেখে ভূত-প্রেত কল্পনা করতেও ভুলে গেছে। ওরা জানে, ভূত বলে কিছু নাই।ওরা অন্ধকারের গান শুনতে পারে না।
ওরা জেনে গেছে,গাছের প্রাণ আছে ঠিক তবে কথা বলতে জানে না।
যত দিন যাচ্ছে আমাদের ভাবনা ছোট হচ্ছে। আমরা কল্পনা করতে ভুলে যাচ্ছি৷ বৃত্তের বাইরে গিয়ে ভাবতে ভুলে যাচ্ছি। আমাদের নিজেদের কোনো গল্প বেঁচে নেই। অন্যদের গল্প ছানাছানি করে একটা জীবন পাড় করে দিচ্ছি।
গল্পহীন জীবন! কি চরম নিঃসঙ্গতা! কি দুবির্ষহ একাকীত্ব! এক একটা মুঠোফোনের কি অপ্রতিরোধ্য শক্তি!লক্ষ বছরের মানব শৃঙ্খল ভেঙে এক একজনকে জালের ভেতর আষ্টে-পৃষ্ঠে বন্দী করে ফেলেছে।চুড়মাড় করে ভেঙে ফেলছে ব্যক্তিসত্তাকে।
আমরা রোজ বিকারহীনভাবে বিষপান করছি আর অসুখী জীবন যাপন করে যাচ্ছি। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বাস করেও তালপাখার শীতল করা হাওয়া খুঁজে পাচ্ছি না। আমাদের যন্ত্রের সাথে অতি মাত্রায় শখ্যতা দেখে প্রকৃতিও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
বান্ধবহীন এ জীবন ভয়াবহ বিপর্যস্ত!
হাবিবা সরকার হিলা
৩.লোডশেডিং নিয়ে কবিতা
লা লা লা লা
লোড শেডিংয়ের জ্বালা
কারেন্ট যাইতাছে গো বারে বারে
পাগল করতাছে হ্যায় পুড়ে পুড়ে
হায় বিদ্যুতের জ্বালা
মরতে হবে
হু হু হু হু এ লা লা লা লা
বিদ্যুতের ঘন্টা জানা যে
ঘন্টায় ঘন্টায় সে যাইতছে
সূর্য ও তেজ লইয়া জ্বলতাছে
পুড়ে পুড়ে সব মারতাছে
ওরে বলি কারেন্ট
মেরে পেয়ারে কারেন্ট
যাসনে কারেন্ট
থেকে যা রে কারেন্ট
ঘামে ঘামে শরীর হ্যায় ভিজে গেছে
মাথা থেকে পা সব পুড়ে পুড়ে
হায় বিদ্যুতের জ্বালা
মরতে হবে
৪.গরম নিয়ে ইসলামিক স্ট্যাটাস
দেশ জুড়ে তীব্র দাবদাহ চলছে। নিকট অতীতে এই ধরনের গরম পরিলক্ষিত হয়নি। সবাই বেশি করে পানি পান করি। খেটে খাওয়া শ্রমিকদের প্রতি সদয় হই। গরমের তীব্রতা আমাদেরকে জাহান্নামের উত্তাপের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
সুরা রুমের মধ্যে মহান আল্লাহ বলেছেন, জলে-স্থলে যত বিপর্যয় ঘটে, সব মানুষের হাতের কামাই।
একদিকে আমাদের জাগতিক বিশৃঙ্খলা ও অনিয়মের কারণে প্রকৃতি তার ভারসাম্য হারিয়ে বিপর্যয় সৃষ্টি করে। অপর দিকে আমাদের গুনাহের কারণে আল্লাহ প্রাকৃতিক শাস্তি দেন।
এমতাবস্থায় জাহান্নামের কথা স্মরণ করে আমাদের তাওবা ও গুনাহ বর্জন করা প্রয়োজন। এর পাশাপাশি বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন এবং অনাবৃষ্টি ও গরমের কারণ চিহ্নিত করে জাগতিক পদক্ষেপ নিতে হবে। অপরিকল্পিত নগরায়ণের মাধ্যমে ব্যাপক হারে বৃক্ষ নিধন করা হচ্ছে। এতে আমরা নিজেরাই নিজেদের সর্বনাশ ডেকে আনছি।
সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি, ব্যাপকভিত্তিক বৃক্ষরোপণ ও বনায়ন কর্মসূচি গ্রহণ এবং পরিকল্পিত নগরায়ণের দিকে ধাবিত না হলে দাবদাহের এই অভিশাপ থেকে আমরা সহজে পরিত্রাণ পাব না।
খাদ্যের জন্য এখনো আমাদেরকে আমদানির ওপর নির্ভর করতে হয়। তার উপর খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হলে একদিকে দরিদ্র কৃষকেরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবে, আমরাও খাদ্য সংকটে পড়ব।
তাই আসুন, আমরা গুনাহ বর্জন করি, আল্লাহর কাছে ফিরে আসি এবং দাবদাহ দূরীকরণে সামাজিক সচেতনতা ও শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করি।
হে আল্লাহ, আমাদের উপর উপকারী বৃষ্টি বর্ষণ করুন। কৃষিনির্ভর এই ছোট্ট দেশটিকে আপনার রহমত দিয়ে সজীব বানিয়ে দিন। আমীন।
৫.Summer funny status bangla
#ছড়া_কবিতা “কারেন্টের ভালোবাসা”
আমার বাসায় কারেন্ট কিন্তু
মাঝে মাঝে আসে,
বুঝে গেছি সে আমাদের
খুবই ভালোবাসে।
অঙ্গ আমার এ আনন্দে
উঠছে কেবল ভিজে,
কি আনন্দ! কি আনন্দ!
লাগছে ভালো কি যে!
মন চাইছে গুটিকয়েক
ডিগবাজি দেই তাই,
এমনতর ভালোবাসার
তুলনা যে নাই।
অমন করে বারেবারে
না-ই আসতো যদি,
ঘামের জলে এতো ক্ষণে
হতো ফোরাত নদী।
প্রিয় মানুষ অমন কষ্ট
নাহি যেন পায়,
ঘণ্টাখানেক পরে সে তাই
দেখা দিয়ে যায়।
চলে গিয়ে ক’জনইবা
আবার ফিরে আসে?
তাই তো বলি সে আমাদের
খুবই ভালোবাসে।।
আবদুল্লাহ আল মামুন
আমাদের সকল ছোটগল্পের লিংক
https://kobitor.com/category/sotogolp/
আমাদের সকল কবিতার লিংক