পাক ফৌজ বাড়ি বাড়ি ঢুকে সার্চ করছিল। মুজিবের ছবি আছে কিনা খুঁজছিল।
দেয়ালে একটা ছবি দেখিয়ে জিগ্যেস করলঃ ইয়ে কৌন্ হ্যায়? (সর্বনাশ! রবীন্দ্রনাথের ছবি!)
গৃহস্বামী তাড়াতাড়ি ঢোঁক গিলে বললেনঃ মেরা দাদা হ্যায়।
কাছে গিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে যে (সর্বনাশ করেছে!)। ঘাড় অবধি চুল। একমুখ দাড়ি। গৃহস্বামী মনে মনে তখন আল্লার নাম করছে।
উও বহুৎ আচ্ছা আদমি হ্যায়, বহুৎ শরীয়তী আদমি হ্যায়। (যাক বাবা! ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ল।)
পাশে আরেকটা। পাক ফৌজ কাছে সরে গেল। (সর্বনাশ! নজরুলের ছবি!)
কাছে গিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে। দাড়ি নেই। গোঁফ পর্যন্ত কামানো।
ইয়ে কৌন হ্যায় ?
গৃহস্বামীর গলায় ততক্ষণে জোর এসেছে। হেসে বললেনঃ মেরা নানা হ্যায়।
বহুৎ খারাব আদমি, বহুৎ বেশরীয়তী আদমি।
গৃহস্বামীর মুখ ভয়ে সাদা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পাক ফৌজ কিছু না বলে বেরিয়ে পাশের বাড়িতে ঢুকল।
পর পর তিনটি বাড়িতে একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি এবং পুনরাভিনয় হল।
শুধু চতুর্থ বাড়িতে গিয়ে তাদের বলতে শোনা গিয়েছিল, সব শালা বাঙালী লোককো এক হি দাদা, এক হি নানা হ্যায়?
– ‘ক্ষমা নেই’ (সুভাষ মুখোপাধ্যায়)