শব্দর নাম উল্লেখ করে যখন জুলফার সম্পর্কে বলে, নাভেদ অজানা কারণে আশ্চর্য ও বিমূঢ় হয়ে যায়। জমিদার বধূর সাথে সে পরিচিত নয়। তবে, তার চোখ দুটি অত্যন্ত পরিচিত। এই মুহূর্তে চোখ দুটি তার দিকে বিস্ময়ে চেয়ে আছে। একটা অস্বস্তি নাভেদকে চারিদিক থেকে সংকুচিত করে তোলে।
শব্দর হেসে আশিককে বলল, ‘এদিকে চলুন।’
তার আচরণ অভিজ্ঞ এবং মনোহর। সে অতিথিদের নিয়ে প্রফুল্লচিত্তে বৈঠকখানার দিকে যাচ্ছে৷ প্রধান দরজা থেকে বৈঠকখানা অনেকখানি দূরে। ভেতরে প্রবেশের পূর্বে নাভেদ না চাইতেও পেছনে ঘুরে তাকাল। জুলফা নামের জমিদার বধূটি তার দিকে নিনির্মেষ চেয়ে আছে৷ ব্যাপার কী! তাছাড়া মেয়েটিকে এতো চেনা কেন লাগছে! রহস্যের কোন গুথিতে পরস্পর জড়িয়ে আছে?
আশিক জামান পেছনে ফিরে বলেন, ‘দাঁড়ালে কেন?’
নাভেদ অপ্রস্তুত হয়ে গেল, কিছু বলল না। পিতার পিছু পিছু বৈঠকখানায় প্রবেশ করল।
জমিদার বাড়ির দুটি বিশাল আকৃতির ঘোড়া হ্রেষাধ্বনিতে ফেটে পড়ায় জুলফা ঘোর কাটল। সে অবাক বিস্ময়ে চেয়ে দেখে, শঙ্খিনী ছাড়া পাশে কেউ নেই।
নানা ধরনের অনুভূতির দাপাদাপিতে তার শ্বাস-প্রশ্বাস বিঘ্নিত হচ্ছে৷ এলোমেলো ঠেকছে সবকিছু। সে সবকিছুকে উপেক্ষা করে ছুটে নিজের কক্ষের দিকে যায়।
পিছু পিছু যায় শঙ্খিনী। জুলফা দরজা বন্ধ করার আগে ভেজা কণ্ঠে শঙ্খিনিকে বলে, ‘কেউ খুঁজলে বলবে মাথা ধরেছে তাই চলে এসেছি। কেউ যেন না ডাকে৷’
কথা শেষ করে মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দেয়। দুটি চোখে মুহূর্তে জমে গেছে জনম জনমের গহন বিষণ্ণতা। যে মুখটা দেখার জন্য সে তৃষ্ণার্থ পাখির মতো অপেক্ষা করত আজ সেই মুখটা দেখে বুকের ভেতর কেন যে অমন বিষণ্ণতার মেঘলা আকাশ নেমে এসেছে কে জানে! কিছু ভালো লাগছে না৷ হৃদয়কুঞ্জ থরথর করে কাঁপছে। হঠাৎ করেই জীবনটাকে বন্দী মনে হচ্ছে৷ যেন চারিদিকে জাগ্রত টহলরত প্রহরী ঘুরছে, পালানোর কোনো পথ নেই।
আত্মা চিৎকার করে বলছে, এ জীবন থেকে নিষ্কৃতি চাই, নিষ্কৃতি চাই।
অতীত||
কালীগঞ্জের সোনামুখি নদীর তীরে সমতল ভূমিতে দলবদ্ধভাবে মাচা তৈরি করে বসবাস করে বাজিকর বেদেরা৷ তাদের প্রত্যেকের আছে নিজস্ব নৌকা৷ পশ্চিমের মাচায় থাকে জুলফা ও তার বোন জুঁই৷ এক শীতের শুরুতে নারী বেদেরা দলবেঁধে গাওয়ালে যায়। (ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যে বেদেরা বাংলাদেশের গ্রামে-গঞ্জে পরিভ্রমণ করে। এই পরিভ্রমণকে গাওয়াল বলে।)
পথে একটি ছোট অনুষ্ঠানে ষোড়শী জুলফাকে নাচতে দেখে এক বুড়ো লোক মান্নাতকে প্রশংসার সুরে জানায়, অমন সুন্দর, প্রতিভাবান জুলফাকে যাত্রাপালার নায়িকা করতে চায়৷ বিনিময়ে ভালো অর্থ দিবে।
বুড়ো পশ্চিম কালীগঞ্জের স্থায়ী বাসিন্দা। সেখানে তার প্রযোজনায় এক যাত্রামঞ্চে পালা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রথমে মান্নাত প্রস্তাব নাকচ করে দেয়। তাদের বহরে গোত্রের বাইরে গিয়ে কাজ করা অমর্যাদার।
তাদের দলবদ্ধ পেশা চিকিৎসা ব্যবসা, সাপের খেলা ও ওষুধ বিক্রয়। কোন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে ঔষধ বিক্রি নয় বরং বিভিন্ন ভেষজ উপায়ে ও ঝাড়ফুঁকই তাদের চিকিৎসার একমাত্র ও প্রধান পদ্ধতি। এসব পেশায় তাদের সংসার যে খুব ভালো করে চলে যায় তা নয়। কিন্তু বহরের নিয়মের বাহিরে গিয়ে কিছু করা তাদের জন্য অগোত্রীয় কাজ। তাই মান্নাত সেদিন সাফ সাফ জানিয়ে দেয়, সে রাজি নয়।
কিছুদিন পর বুড়ো খুঁজে খুঁজে সোনামুখি নদীর তীরে গিয়ে মান্নাতের সঙ্গে দেখা করে। সেদিন মান্নাতের সঙ্গে রঞ্জনও উপস্থিত ছিল। জুলফার একদিনের পারিশ্রমিক তাদের সাতদিনের আয় শুনে রঞ্জন তাৎক্ষণিক রাজি হয়ে যায় তবে বিনিময়ে এক শর্ত আরোপ করে। জুলফা নাচবে অভিনয় করবে কিন্তু তার মুখ ঢাকা থাকবে পাতলা কাপড়ের আড়ালে। বহরের কেউ যেন জুলফার নাচের ব্যাপারে জানতে না পারে। ভালো নাচতে পারে এরকম শিল্পী বা নতর্কীর বড় অভাব। তাছাড়া বাংলাদেশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হওয়ায় মেয়েরা বাইরে বের হয় না৷ তারা ঘরে থাকে৷ নয়তো বড় বড় প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে। তার কাছেও ভালো শিল্পী নেই। এমতাবস্থায় জুলফা বুড়োর জন্য একমাত্র নিখুঁত বিকল্প। তাই রাজি হয়ে গেল। সেদিন থেকে যাত্রামঞ্চে জুলফার নাচগান শুরু হয়।
মহুয়া সুন্দরী, খাইরুন সুন্দরী, রূপবান, কৃষ্ণলীলার মতো বেশ কয়েকটি যাত্রাগানের মুখ্য নারী চরিত্র হয়ে উঠে সে৷ তার ছদ্মনাম দেয়া হয় জেসমিন। কালীগঞ্জ সহ দূর দূরান্তের অনেক শৌখিন মানুষ তাকে জেসমিন বলে চিনত।
বয়স আঠারো হতেই রূপবান-রহিম, মালকা বানু, কমলা রানীর বনবাস, কাজল রেখা, তাজমহল, সিরাজের বেগম, বনবিবির মতো পালার অভিনেত্রী হয়ে উঠে। সহজে চলিত ভাষা রপ্ত করে নেয়ার সঙ্গে ভালো অভিনয় ও নাচের জন্য ডাকনাম ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। অন্যান্য পালামঞ্চে তার চাহিদা বেড়ে যায়। তবে বুড়ো তাকে কোথাও যেতে দেয় না। সবরকম আর্থিক সুবিধা দেয়ার চেষ্টা করে। জুলফার সুন্দর মুখশ্রী ঢাকা থাকার কারণে পুরুষদের মধ্যে তাকে দেখার আগ্রহ অধিক কাজ করে। তারা একবার শিল্পী জেসমিনকে দেখার আশায় বার বার আসে, যদি কখনো অসাবধানতাবশত পর্দার আবরণ সরে গিয়ে উন্মুক্ত হয় নায়িকার মুখ! ঘুঙুরের শব্দে মঞ্চে ঝড় তোলা জেসমিনের মুখ দেখার জন্য ছুঁতো করে বেড়ায়। কিন্তু সেই সৌভাগ্য কারো হয় না।
এরই মধ্যে যাত্রামঞ্চের নাচগানের খবর পৌঁছে যায় বহরের সর্দারের কানে। তাৎক্ষণিক বহর থেকে জুলফাকে বের করে দেয়া সপরিবারে৷ তখন তারা শিয়াইল্যা বেদেদের দলে যোগ দেয়। শিয়াইল্যারা সর্বভুক বলে অন্য বেদেদের সাথে তাদের বনিবনা বা লেনদেন হয় না। এরা গরু, শূকর, সাপ খায়। হিন্দু দেবদেবীর উপাসনা করে। জুলফার পরিবার মুসলমান হলেও ধর্মকর্ম সম্পর্কে তারা অজ্ঞ। তাই শিয়াইল্যাদের সঙ্গে সহজে মানিয়ে নেয়। তবে সাপ খাওয়ার মতো রুচি জুলফা বা তার পরিবারের হয় না।
মান্নাত তার ছেলে বউ ও ছোট মেয়েকে নিয়ে সুগন্ধি মশলা বিক্রি এবং ঝাড়ফুঁকের চিকিৎসা করে। রঞ্জন গঞ্জে গঞ্জে ঘুরে বিভিন্ন জাদু, সাপের খেলা দেখায়। তবুও সংসারের সব খরচের একটা বিরাট অংশ বহন করতে হয় জুলফাকে।
সেবছর হঠাৎ খরার কারণে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে দুর্ভিক্ষ শুরু হয়। খাদ্যের ঘাটতি দেখা দেয়। কৃষক, দিনমজুরদের যাত্রাপালা দেখতে আসা বন্ধ হয়ে যায়। বনেদি পরিবারের হাতেগোনা কয়জন মানুষ এলেও তাদের দেয়া অর্থে যাত্রামঞ্চের শিল্পীদের বেতন উঠে না। স্বাভাবিকভাবে জুলফার আর্থিক অবস্থা শোচনীয় হয়ে দাঁড়ায়। ইতিমধ্যে পরিবারের সবার আয় শূন্যের তলানিতে ঠেকে আছে। নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা।
একদিন যাত্রা শেষে জুলফা বুড়োকে ধরে তার গত পাঁচ পালার অর্থ দিতে, যেভাবেই হোক অর্থ প্রয়োজন, খাদ্য প্রয়োজন। তার পরনে ছিল একটা নীল ব্লাউজ, নীল পুঁথির কাজ করা ঘাগড়া। ওড়নাটা ঝুলছিল কাঁধের এক পাশে৷ পায়ে ঘুঙুর। সে রীতিমতো বুড়োর গলায় ছুরি ধরে হুমকি দেয়, ‘আমার টাকা না দিলে তোকে মেরে দেব। এরপর উত্তরের সিরাজের পালায় চলে যাব, আর কখনো তোর পালায় আসবনে।’
জুলফার নাচের ঝড়ে, মনকাড়া অভিনয়ে এই পালা টিকে আছে। বুড়ো কিছুতেই চায় না জুলফা চলে যাক।
অনুনয় করে বলে, ‘ওমন অলক্ষুণে কথা বলিস না। আমি তোকে যেভাবে হোক টাকা দিয়ে দিব।’
জুলফা তার পায়ের গোড়ালি ছুঁয়ে থাকা ঘাগরা হাত দিয়ে তুলে কোমরে গুঁজে বলে, ‘মনে থাকে যেন।’
বুড়ো কিছু বলার আগে তার নাতি টিংকুর চিৎকার শোনা যায়, ‘ঠাকুদা, ও ঠাকুদা…কে পইড়া আছে…ও ঠাকুদা।’
জুলফা দ্রুত পাতলা কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে নেয়৷ বুড়ো লাঠি হাতে সেদিকে যেতে যেতে একজন কর্মচারী ও টিংকু সুস্বাস্থ্যের অধিকারী, বাবরিছাঁটা মাতাল নাভেদকে জাপটে ধরে ভেতরে নিয়ে আসে৷ লোকটা মঞ্চের পাশে পরে ছিল সুরাপাত্র হাতে৷ সুরার নেশায় তার বোধবুদ্ধি, চিন্তাশক্তি অবশ হয়ে গেছে। দৃষ্টি ঝাপসা। নিজেকে সামলাতে পারছে না।
নেশাগ্রস্ত নাভেদকে মাটিতে বসানোর চেষ্টা করে। নাভেদ নিজের ভারসাম্য ধরে রাখতে না পেরে চিৎ হয়ে মাটিতে শুয়ে পড়ে।
পোশাক-পরিচ্ছদ দেখে মনে হচ্ছে, বনেদি পরিবারের ছেলে। মুখজুড়ে অদ্ভুত মায়া। ইষৎ গোলাপি ঠোঁট জোড়া বিড়বিড় করে কিছু বলছে।
প্রথম দেখাতেই জুলফার নামবিহীন এক অনুভূতি কাজ করে। বশীভূত, বিহ্বল চোখে চেয়ে থাকে মাতাল লোকটার দিকে।
সে আগ্রহভরে বুড়োকে জিজ্ঞেস করে, ‘একে চিনিস বুড়ো? ‘
বুড়ো বিকারহীন কণ্ঠে জানায়, ‘দেখেছি মনে হচ্ছে কিন্তু নাম তো জানি না। কোথা থেকে এসেছে কে জানে।’
টিংকু চটপটে কণ্ঠে বলল, ‘মাঝেমইধ্যে গঞ্জে দেখি। তয় মঞ্চে এই পরথম দেখলাম।’
জুলফা বলে, ‘তার পরিচয় জেনেই কী লাভ! সকালে হুঁশ ফিরলেই চলে যাবে, এখন এখানে পড়ে থাক।’
বুড়ো বিরক্তিমিশ্রিত কণ্ঠে বলল, ‘সারারাত এখানে থাকবে নাকি! চোখেমুখে পানি দিয়ে বিদেয় কর।’
হঠাৎ নাভেদ বমি করতে শুরু করে। বুড়ো চোখমুখ কুঁচকে বলে, ‘ইশশিরেএ, কোথাকার কোন হতচ্ছাড়া বমিতে ভাসিয়ে দিল সব। একে বের করে দে টিংকু।’
জুলফা প্রতিবাদ করে, ‘মাতাল লোক অসহায়ের মতো। রাতটা থাকলে কী এমন হবে? প্রথম খেয়েছে হয়তো তাই সামলাতে পারছে না।’
তারপর অতিব্যস্ত হয়ে টিংকুকে বলল, ‘পানি নিয়ে আয় টিংকু।’
জুলফার উদারতার কারণে বুড়ো বাধ্য হয়ে নাভেদকে পরিষ্কার করে এক কোণে শুতে দেয়।
কিছুক্ষণ পর সে পিটপিট করে তাকায়। নেশাচ্ছন্ন কুয়াশা ঢাকা দৃষ্টি মেলে সামনে নাকমুখ ঢাকা একটি নারী অবয়ব দেখতে পায়।
নারী দেহটি বুড়োকে বলছে, তাকে এগিয়ে দিয়ে আসতে।
নাভেদের চোখ পড়ে মাটির কাছাকাছি থাকা নারী দেহটির চিকন, মসৃণ খোলা পায়ে। এক পাশের ঘাগড়া হাঁটু অবধি তুলে রাখা৷ এইটুকু দৃশ্য নিখুঁত ছাঁচে ঢালা কোনো ভাস্কর্য মনে হচ্ছে। যেন সে কোনো মায়ালোকের রূপকথায় আছে।
অস্থির হয়ে হাত বাড়ায় পা ছুঁয়ে দিতে… স্পর্শ পেয়ে জুলফা ভয়ে সিটকে সরে যায়, ‘কী করছেন!’
এবার জুলফার কণ্ঠ ঐন্দ্রজালিক ঠেকে৷ নাভেদ চোখ তুলে চেয়ে রইল তার দিকে, তার সমস্ত সত্তা বিবশ। মুখে রা নেই, চোখের পলক পড়ে না। কারো চাহনি এতো মোহনীয় হয়? মেয়েটির চোখের যে দীপ্তি, সেই দীপ্তি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ফুটিয়ে তোলা পৃথিবীর কোনো শিল্পীর দ্বারা সম্ভব নয়।
চারটি চোখ এক হয়ে রইল, তৈরি হলো সেতু বন্ধন। হঠাৎ সেই সেতু ভেঙে দিয়ে নাভেদ চোখ বুজে অন্যদিকে ফিরে নিস্তেজ হয়ে গেল। ঘুমিয়ে পড়েছে হয়তো!
উদাসীন মন নিয়ে নৌকায় ফিরে জুলফা। মনের চোখে আটকে রয় রাতের ওই দৃষ্টি মিলনের সময়টুকু। তারপর থেকে প্রতিদিন যাত্রামঞ্চ থেকে আনমনে খুঁজে বেড়ায় সেই নাম না জানা মুখটিকে। রাত করে মঞ্চ ছাড়ে যাতে আবারও মাতাল অবস্থায় লোকটা আসে। নির্ঘুম রাতে ভাসা হৃদয়ে শুধু ভাসতে থাকে সেই রাত, পাল্টে যায় স্বপ্নের পথ। আরেকবার, আর একটিবার সেই দৃষ্টির মুখোমুখি হতে চায়।
লোকটার কী তাকে মনে নেই? অবশ্য সে কে ই বা মনে রাখার মতো! জুলফার বুক চিঁরে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে।
কেটে যায় দুটি বছর। স্মৃতিরাও ঝাপসা হয়।
তবে প্রকৃতি চেয়েছিল অন্যকিছু।
এক মেঘমণ্ডিত দিনে গাওয়াল পথে পুনরায় তাদের সাক্ষাৎ ঘটে।
চলবে…
[নেক্সট পর্ব এই সপ্তাহে তবে যেকোনো দিন।]
সম্পূর্ণ গল্পের লিংক