তুমিঅন্য কারো সঙ্গে বেঁধো_ঘর (৩২)
শীতের আগমনে প্রকৃতিতে শূণ্যতা দেখা দিয়েছে।ঝরে পড়ছে গাছের পাতারা।হুহু করে আসা উত্তরের হাওয়া কাঁপিয়ে দিয়ে যায় সকলের শরীর।শীত জানান দিচ্ছে আমি আসছি তোমাদের দুয়ারে।অন্য রকম এক আমেজে মেতে উঠবে সবাই।
অফিসে গিয়ে তামিম একেবারে নির্বিকার রইলো। নোটিশ দেখতে পেলো আগামীকাল জাফলং যাওয়া হবে।তামিমের ভ্রু কুঁচকে গেলো।
জাফলং!
শুধুমাত্র শফিক আহমেদের বিবাহবার্ষিকী উপলক্ষ্যে!
তামিমের মনে সন্দেহ দেখা দিলো।চাতকের ন্যায় সিলিং এর দিকে তাকিয়ে তামিম ভাবতে লাগলো রহস্য কি!
রহস্য উদঘাটন করতে তামিমের খুব একটা সময় লাগলো না।নবনীর শখ ছিলো জাফলং যাবার।প্রায় সময় নবনী বলতো,”আমাদের হানিমুনে আমরা জাফলং যাবো।”
বিয়ের পর দিশা,লুবনা তাদের বন্ধুদের সাথে জাফলং গিয়েছিলো ঘুরতে।নবনীর সেদিন ভীষণ মন খারাপ ছিলো।বারকয়েক তামিমের সামনে বলেছিলো,”জাফলং জায়গাটা কি ভীষণ সুন্দর! টিভিতে দেখলেই আমার যেতে ইচ্ছে করে।”
তাহেরা বেগম মুখ বাঁকিয়ে বলেছিলেন,”জাফলং যাওয়া আসা,থাকার জন্য যে টাকা লাগে,তোর বাপে জীবনে চোখে দেখছে সেই টাকা একসাথে?”ফকিরের মেয়ের স্বপ্ন দেখো না।!”
লজ্জায়,অপমানে নুইয়ে গিয়ে নবনী বলেছিলো,”আমি তো যেতে বলছি না মা।এমনিতেই বলেছিলাম আমার ভীষণ ভালো লাগে।”
লুবনারা ফিরার পর নবনী ভীষণ আগ্রহ নিয়ে ওদের ঘুরাঘুরির ছবি দেখছিলো।তামিমের সামনেই লুবনা নবনীকে বললো,”তোমার তো এসব দর্শনীয় জায়গায় যাবার ক্ষমতা হবে না ভাবী,তুমি বরং টিভিতে, আমাদের ছবি দেখেই মনকে বুঝ দাও।”
অপমানে নবনীর মুখ কালো হয়ে গিয়েছিলো। কাজ আছে বলে নবনী ছুটে রান্নাঘরে চলে গিয়েছিলো। তামিমের এখন ভাবতেই হাসি পায়।অথচ লুবনা আর দিশার ট্যুরের সম্পূর্ণ টাকা তামিম নিজেই দিয়েছিলো।
আর হানিমুন!
কখনোই তো তামিম ভাবে নি হানিমুন নিয়ে।
যাকে সবাই মিলে সব সময় ডমিনেট করে আসছিলো আজকে সেই মেয়েকে ইমপ্রেস করতেই কি না একটা অফিসের বস অফিসের মানুষ সবাইকে নিয়ে যাচ্ছে জাফলং!
তামিমের রাগ হলো খুব।নিজের উপর,মায়ের উপর।তবে সবচেয়ে বেশি রাগ হলো নবনীর উপর।এই মেয়েটা কেনো সবকিছু নীরবে সহ্য করে গেছে?কেনো কোনো প্রতিবাদ করে নি নিতুর মতো।কেনো নিতুর মতো সবার কথার দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয় নি?
তাহলে তো তামিমের তাকে হারাতে হতো না।
নিজের সব ভুল আজ তামিমের চোখে ধরা দিচ্ছে,সেই সাথে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে রাগ।যেভাবেই হোক নবনীকে চাই তার।
যেসব ভুলের জন্য নবনীকে হারিয়েছে আর একবার নবনীকে ফেলে সব ভুল শুধরে নিবে তামিম।
মেঘ নবনীকে টেক্সট দিয়ে জিজ্ঞেস করলো,”ট্রেনেই যাবো তো,ডিসিশন ফাইনাল?”
নবনী কিছুক্ষণ চুপ করে ভেবে বললো,”না,বাসেই যাবো।ট্রেনে অন্য সময় যাবো।এবার বাসে।”
মেঘ উৎফুল্ল হয়ে বললো,”হানিমুনে যাবার সময় ট্রেনে যাবে?আমরা কিন্তু ১ মাসের নিচে হানিমুনে যাবো না আগেই বলে দিলাম।”
নবনী ফিক করে হেসে বললো, “সবসময় এতো বেশি ভেবে নেন কেনো আপনি?একটু কম ভাবতে পারেন না এসব নিয়ে?”
মেঘ দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে বললো,”মোটেই না।আমি ভীষণ এক্সাইটেড এসব নিয়ে।বিয়ে,বাসর,হানিমুন,বেবি প্ল্যানিং এসবে সব পুরুষের মতো আমার ও ভীষণ ইন্টারেস্ট বিবিজান।হয়তো একটু বেশি ইন্টারেস্ট এসবে।
নিজের ভালোবাসার মানুষকে পেলে সব পুরুষের মনে হয় আমার মতো মাথা খারাপ অবস্থা হয়ে যায় নবনী।”
নবনী হেসে ফেললো মেঘের কথা শুনে।
কাঁচের দেয়ালের অপরপাশ হতে মেঘ মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলো নবনীর দিকে।নবনী মাথা নিচু করে নিজের কাজে মন দিলো।
কাজ করতে গিয়ে নবনীর মনে পড়লো,তামিম ও নিশ্চয় নিতুকে নিয়ে এভাবেই প্ল্যানিং করছে।ভালোবাসার মানুষকে তো তামিম ও পেয়েছে। নবনীকে নিয়ে না দেখা,না ভাবা স্বপ্ন হয়তো নিতুকে নিয়েই তামিম ভেবে রেখেছিলো।নবনীর মোটেও মন খারাপ হয় না এখন আর তামিম নিতুর কথা ভাবলে।
নবনী বরং খুশি হয় এই ভেবে তামিমের সাথে বিচ্ছেদ হবার কারনেই মেঘের মতো সুন্দর মনের একজন মানুষকে নবনী পেয়েছে। নবনীর মনের একটা সুপ্ত ইচ্ছে,মেঘের সাথে বিয়ে হবার পর নবনী তামিমকে ধন্যবাদ দিবে।
১০ মিনিট পর মেঘ ব্যস্ত হয়ে নবনীকে কেবিনে ডাকলো।নবনী যেতেই মেঘ একটা মেইল ওপেন করে বললো,”নিতু রেজিগনেশন লেটার পাঠিয়েছে,দেখো।”
নবনী অবাক হলো দেখে।হঠাৎ কি এমন হলো যে নিতু চাকর ছেড়ে দিলো!
নিতু মেয়েটাকে নবনীর এমনিতেই ভীষণ ভালো লেগেছে। কি ভীষণ বুদ্ধিমতী একটা মেয়ে,শুধু একটাই ভুল করেছে সে।সঠিক মানুষ চিনতে পারে নি।
কিন্তু তাতে কি?নবনীর জন্য তামিম হয়তো সঠিক মানুষ ছিলো না তাই নবনীর চোখে তামিম ভুল মানুষ কিন্তু নিতুর সাথে তো তেমন কিছু নয়।বরং নিতু আর তামিম মেইড ফর ইচ আদার।তাহলে কি এমন হলো যে নিতু চাকরি ছেড়ে দিলো?গতকাল ও তো নিতু অফিসে আসে নি।
নবনী নিজের ডেস্কে আসার কিছুক্ষণ পর মেঘের কল এলো।রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে নিতুর গলা ভেসে এলো।
কোনো ভণিতা ছাড়াই নিতু সালাম দিয়ে বললো,”আমি নিতু স্যার।একটু আগে আমি রেজিগনেশন দিয়েছি।আমার পক্ষে আর চাকরিটা করা সম্ভব নয়।”
মেঘ বললো,”আপনি কি অফিসিয়াল কোনো প্রবলেমের জন্য জব ছেড়ে দিচ্ছেন মিসেস নিতু?এরকম কিছু হলে আমাকে বলুন।আমি ব্যাপারটা দেখবো,কোনো প্রবলেম থাকলে তাও সলভ করবো।”
নিতু মলিন হেসে বললো,”না স্যার,এরকম কিছুই নয়।বরং আমার দৃঢ় বিশ্বাস আপনার অফিসের মতো ফেসিলিটিজ আমি অন্য কোথাও পাবো না।”
মেঘ বললো,”দ্যান আপনার অন্য কোনো প্রবলেম হলেও বলুন আমাকে।আপনি চাইলে ছুটি নিতে পারেন।কিছুদিন ছুটি কাটান না হয় মিসেস নিতু।”
নিতু হেসে বললো,”স্যার,আমি কিছুতেই আর এই জবটা করতে চাই না।আমার আর আমার হাজব্যান্ডের মধ্যকার সম্পর্ক ভেঙ্গে গেছে।আমি আমার জব ছেড়ে দেয়ার খবরটা বলার জন্য আপনাকে কল দেই নি স্যার।আমি কল দিয়েছি এটুকু বলতে যে,আমি জানি আপনি নবনী ম্যাডামকে ভীষণ ভালোবাসেন।আপনি নিশ্চয় ওনার অতীত সম্পর্কে ও সবটা জানেন।আমি সেই কালপ্রিট যার কারণে ম্যাডামের সংসার ভেঙে গেলো।তবে বিশ্বাস করুন স্যার আজকের আগে আমি ঘুণাক্ষরেও টের পাই নি তামিমের এক্স ওয়াইফ ছিলো। অথবা রিলেশন থাকাকালীন ও যদি আমি জানতাম তবে কিছুতেই নিজের হাতে কারো সংসার আমি ভেঙ্গে দিতাম না।অন্ধ ভালোবাসার মোহে পড়ে আমি বিয়ে করে ফেলেছি । গতকাল যখন সব জানলাম আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে যেনো।আমি কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।
এজন্যই জবটা ছেড়ে দেওয়া। আমি স্যার নবনী ম্যাডামের মতো সাহসী নই,তাই একই অফিসে থেকে তামিমকে সহ্য করার ক্ষমতা আমার নেই।আমি ভীষণ ভীতু স্যার।
স্যার,আপনাদের সম্পর্কটা যতো শীঘ্রই সম্ভব কাগজে কলমে স্বীকৃতি দিয়ে ফেলুন।তামিম উঠেপড়ে লাগবে ম্যাডামকে আবার নিজের করে নেয়ার জন্য।গতরাতে ড্রাঙ্ক হয়ে তামিম অনেক প্রলাপ বকেছে।ম্যাডামকে আর ওই নরকে যাতে যেতে না হয় স্যার,ওই নরকে ম্যাডামকে যাতে আর নিতে না পারে তামিম।আপনি স্যার একটু সতর্ক থাকবেন।রাখছি স্যার।”
একদমে সব বলে নিতু ফোন রেখে দিলো।
মেঘের চোয়াল শক্ত হয়ে গেলো ক্রোধে।ইচ্ছে করলো তামিমের টুঁটি চেপে ধরতে।
রেবেকা বেগম চিৎকার করে বরকত সাহেবকে ডেকে বললেন,”তোমার মেয়ে এখন ড্রামাকুইন হয়েছে।ড্রামা করার জন্য সংসার ভেঙ্গে এসেছে।এখন আবার চাকরিও ছেড়ে দিয়েছে তোমার মেয়ে।এটা কি নাট্যশালা পেয়েছে নাকি ও?জীবন কি ওর কাছে রঙ্গমঞ্চ?
ওর যখন যা মন চাইবে তাই করবে?”
বরকত সাহেব শান্তস্বরে বললেন,”তোমার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে রেবেকা?ওই কুলাঙ্গারের সাথে একই অফিসে আমার মেয়ে জব করবে এতো কিছুর পরেও?তুমি কি এটুকুও বুঝো না ওই ছেলেকে দেখলে আমার মেয়ের মানসিক অবস্থা কেমন হবে?
মেয়েটা আজকেই এসেছে, ওকে একটু পার্সোনাল স্পেস দাও।আমার মেয়ে একটু নিজেকে সময় দিক।লেখাপড়া যখন দুই কলম শিখেছে তোমার মাথায় বোঝা হয়ে থাকবে না আমার মেয়ে।”
রেবেকা বেগম চেয়ারে হেলান দিয়ে বললো,”তোমার মনে আছে,আমার ছোট বোনের ডিভোর্সের পর কি হয়েছিলো?
পুরো সমাজের মানুষ আমার বাবা মা’কে ছি ছি করতো।দোষ কার,সমস্যা কি,কেউ তা জানতে চাইতো না।আমার বোনটাকে যেই দেখতো সেই ভ্রু কুঁচকে বলতো, এই মেয়েটা তো ডিভোর্সি!
যেনো ডিভোর্সি মানেই একজন অপরাধী। মানুষ খুন করার চাইতেও বড় অপরাধ এটা।
তোমার মাও আমাকে সুযোগ পেলে এই নিয়ে কথা শুনিয়ে দিতো,আমার বাকি অন্য দুই বোনের শাশুড়ি ও এরকমভাবে আমার বোনদের কথা শোনাতেন।
অথচ কেউ জানতে চায় নি ৬ বছরের সংসার জীবনে আমার বোনটাকে কতো যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে।
সারা অঙ্গে মারের কালশিটে দাগ দেখে আমরা চার বোন হাউমাউ করে কেঁদেছি, আব্বা আম্মাকে ও সেসব জানাই নি।আমার বোনটা কোথাও স্বস্তি পায় নি।কেউ তাকে একটা বার কোমল স্বরে বলে নি,মন খারাপ করো না।তোমার জন্য আল্লাহ ভালো কিছু রেখেছে।
আমার বোনটা আমাদের তিন বোনের কাছে এসে দুটো দিন থাকতে পারে নি আমাদের শ্বশুর বাড়ির লোকের ভয়ে।তুমি হয়তো এসব জানতে না।আমি ও বিচার দিই নি কখনো এসব নিয়ে।কিন্তু বুকের ভেতর সেই যন্ত্রণা আজও রয়ে গেছে।
সবার এতো অপমান, অবহেলা সহ্য করতে না পেরে আমার রেণু,আমার ছোটবোন,আমার আদরের পুতুলটা গলায় দড়ি দিলো।আমার বোনের মৃত্যুতেও এই সমাজের মানুষের কথা শোনানো বন্ধ হলো না।আমরা তিন বোনেই পান থেকে চুন খসলেই শুনতাম সবাই বলছে,এর বোনের মতোই অবস্থা হবে এদের।সংসারী মেয়ে না এরা,এরকম হলে কি আর ছোট বোন সংসার ছেড়ে আসতো,কতো বড় পাপ করছে কে জানে,তা না হলে কি এমনি এমনি গলায় দড়ি দেয়!
তোমার বাবা মাও শিক্ষিত ছিলো,তোমাদের ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড ও ভালো ছিলো,আমার বাকি তিন বোনের শ্বশুর বাড়ির মানুষ ও শিক্ষিত।অথচ সবাই সুযোগ পেলেই আমাদের এই দুর্বল জায়গায় আঘাত দিতে ছাড়তো না।
সেই থেকে আমার ভীষণ ভয়।আমি এই শব্দটাকে ভয় পাই।আমার মেয়েটার কপাল পুড়লো একদিকে,অন্যদিকে বড় মেয়েটাকেও আজীবন এই খোঁটা শুনতে হবে।তুমি পুরুষ মানুষ, তোমাকে এসবে আঁচড় কাটবে না।কিন্তু ক্ষতবিক্ষত করে দিবে আমাকে।আমার নিতুও শান্তি পাবে না।যেদিকে তাকাবে সেদিকেই দেখবে সবাই নাক শিটকাচ্ছে ওকে ডিভোর্সি বলে।আমাকে তোমাদের খারাপ মনে হতে পারে,কিন্তু এটাই বাস্তবতা। একে তোমরা কিছুতেই অস্বীকার করতে পারবে না।
মাঝখান থেকে আমার মেয়ে মানসিক আঘাতে শেষ হয়ে যাবে।”
নিতু চুপ করে রইলো।মা যা বলেছে তার কোনোটাই মিথ্যে নয়।এই সমাজ বড়ই নিষ্ঠুর। তাই বলে কি সমাজের চোখ রাঙ্গানির ভয়ে নিতু এরকম অন্যায়,অপমান,প্রতারণা সহ্য করে ফিরে যাবে?
কিছুতেই না।
রাতে খাবার টেবিলে বসে শফিক আহমেদ মাসুমা বেগমকে বললেন,”এবার তো জানালে না তুমি কি গিফট চাও।”
মেঘ সায় দিয়ে বললো,”হ্যাঁ মা,অন্যবার তো আগে থেকেই বলতে থাকো তোমার কি গিফট লাগবে।”
মেঘলা মুরগির রান চিবুতে চিবুতে বললো,”মনে হয় মায়ের সব চাওয়া ফুলফিল হয়ে গেছে।তাই চাওয়ার মতো কিছু পাচ্ছে না।মা,তুমি এবার অন্তত বাবা আর ভাইয়াকে বলো যে মেঘলার জন্য একটা বর চাই এবার।ধরো যদি তোমাদের বিবাহবার্ষিকীর দিনে আমার ও এনগেজমেন্ট হয়ে যায়,তাহলে ভীষণ ভালো হবে না ব্যাপারটা? “
মেঘ বোনের মাথায় চাটি মেরে বললো,”অসম্ভব, আমি বড় তাই আগে আমার বিয়ে হবে।তুই আগে আমার থেকে এই পর্যন্ত যতো টাকা মেরে খেয়েছিস,তার বদলে আমার বউয়ের সেবা যত্ন করে তা সুদেআসলে শোধ করবি।তারপর তোর বিয়ে।”
মাসুমা বেগম চুপ করে রইলেন।তারপর থমথমে স্বরে বললেন,”আমি যা চাইবার আমাদের বিবাহবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সবার সামনে চাইবো।মেঘের কাছে চাইবো শুধু।বলতে পারো,এটাই আমার জীবনে ছেলের কাছে শেষ কিছু চাওয়া।মা হিসেবে আমি যদি কোনো দায়িত্ব পালন করে থাকি ওর,অথবা আমার প্রতি ওর কোনো দায় থাকে তাহলে সেটা যেনো মেঘ আমার ইচ্ছেটা পূর্ণ করার মাধ্যমেই পরিশোধ করে থাকে।”
সবাইকে হতভম্ব অবস্থায় রেখে মাসুমা বেগম টেবিল থেকে উঠে গেলেন।
পিছনে রেখে গেলেন চিন্তিত তিন জোড়া চোখ।
চলবে……..
রাজিয়া রহমান