# এক মুঠো রোদ .
# লেখিকাঃ নৌশিন আহমেদ রোদেলা
# পর্বঃ ৪১
৭৫.
মেজাজ খারাপ করে বসে আছে মৃন্ময়। সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত এগারোটা অব্দি হাজার চেষ্টা করেও একটা গোটা গান রেকর্ড করতে পারে নি সে। গানের অন্তরা পর্যন্ত গেয়েই সুর গুলিয়ে যায় নয়তো খেয় হারিয়ে ফেলে নয়তো লাইনই ভুলে যায়। আট বছর বয়স থেকে গান গাইছে সে। গানের জগতে তার আঠারোটা বছর কেটে গেলো অথচ এতো ভুল কখনো হয় নি। তবে আজ কেন?মৃন্ময়ের ভাবনার মাঝেই নরম কন্ঠে বলে উঠলো প্রদীপ,
—” দাদা? আজ বরং রেস্ট নেন। শরীর আর কতো কুলোবে আপনার? আজ বরং থাকুক?”
মৃন্ময় মৃদু হেসে বললো,
—” সরি প্রদীপদা রাতভর কষ্ট করলে অথচ কাজের কাজ কিছুই হলো না।”
প্রদীপ হেসে বললো,
—” কি যে বলেন না দাদা? কিসের কষ্ট? আপনি বরং বাড়ি যান দাদা। দুপুর থেকে সন্ধ্যো পর্যন্ত শুটিং করে আবার রেকর্ডিং! কিভাবে কুলাবে?”
জবাবে মিষ্টি করে হাসলো মৃন্ময়। স্টুডিও থেকে বেরিয়ে গাড়ি ছেড়ে হাঁটা দিলো সে। সোহেল প্রথম দফায় বিস্মিত হলেও কিছু বলার সাহস যোগাতে পারে নি। কোনো এক অজানা কারণে মৃন্ময় যে ক্ষেপে আছে তা বেশ আঁচ করতে পারছে সে। নয়তো শান্ত মৃন্ময় শুটিং স্পটে অযথা রাগারাগি করতো না। মৃন্ময় উদ্দেশ্যহীন হেঁটে চলেছে। চারদিকে গাঢ় নিস্তব্ধতা। মৃন্ময়ের হঠাৎ করেই মনে হলো, রোজা সাথে থাকলে বেশ হতো! কথাটা ভেবে নিজেই চমকে উঠলো। কেন এতো ভাবছে সে? এক শটে শুট শেষ করা মৃন্ময় আজ হাজারটা ভুল করেছে। সিনেমা জগৎ থেকে সরে আসবে, সেই নিয়ে পরিচালকের সাথে অযথা রাগারাগিও করেছে। নিজের আচরণে নিজেই বিস্মিত সে। নিজেকে বারবার একই প্রশ্ন করে চলেছে, “আমি তো এমন নই।” আচ্ছা? রোজার মতো বাচ্চামো কি করতে পারে না সে? রোজার হাতটা শক্ত করে ধরে কি বলতে পারে না,” আপনি আমার সাথে হাঁটবেন। রাতভর হাঁটবেন। যা হয় হোক, দুনিয়া ভেসে যাক।” মৃন্ময় একহাতে কপাল চেপে রাস্তার কিনারায় বসলো। রোজা পাশে থাকা অবস্থায় তাকে ভুলে যাওয়া যতটা সহজ মনে হয়েছিলো রোজা পাশে না থাকায় ব্যাপারটা ততটাই কঠিন এবং অযৌক্তিক মনে হচ্ছে মৃন্ময়ের। মৃন্ময়ের বাচ্চাদের মতো বায়না ধরতে ইচ্ছে করছে। কাঁদতে ইচ্ছে করছে। কাঁদাতেও ইচ্ছে করছে। আচ্ছা? রোজাকে কাঁদলে কেমন লাগবে? মেয়েটা কি কখনোই কাঁদে না? শুধুই কি হাসে? বাড়ি ফিরেই বিছানায় গা এলিয়ে দিলো মৃন্ময়। চোখদুটো বন্ধ করতেই মনে হলো — বিছানাটা অপূর্ণ। তার বামপাশে কাউকে চায়। এই বাড়ির প্রতিটি কোণায় কাউকে চায়। কিন্তু কে সে? রোজা? বিছানা ছেড়ে দু’ কাপ কড়া কফি খাওয়ার পর হঠাৎ করেই মনে পড়লো মৃন্ময়ের, ফ্রেশ হওয়া ছাড়া একগ্লাস পানিও তো খায় না সে, তবে? গোছালো মৃন্ময়ের সবকিছুই যেন অগোছালো হতে লাগলো। শান্ত মানুষটি ঘড়ির কাঁটার সাথে সাথেই হয়ে উঠতে লাগলো চঞ্চল। এই বুঝি প্রেম? উথাল-পাথাল করা অদ্ভুত শিহরণ!
______________
“আমি আর কোনো যুক্তি খুঁজে না পেয়ে বললাম, কিন্তু পাতালে যাবে কী করে? যা অন্ধকার–
কেন? টর্চ নেই?
শুকনো গলায় বললাম, তাহলে পৃথিবীর অভ্যন্তরে গেলেও যাওয়া যেতে পারে?”
এটুকু পড়েই খিলখিল হাসিতে মেতে উঠলো রোজা। বোনকে হাসতে দেখে নিজেও হাসলো রিদ। ভাইকে জুল বার্ন এর “জার্নি টু দি সেন্টার অব দি আর্থ” পড়ে শুনাচ্ছিলো রোজা। মাঝে মাঝে অযথাই হেসে উঠছিলো। হয়তো ভারি বুকটা ঢাকার প্রচেষ্টা চালাচ্ছিলো মাত্র। বইটা বন্ধ করে পাশের টেবিলে রেখে ভাইয়ের ঝাকড়া চুলগুলো আরো খানিকটা ঝাঁকিয়ে দিয়ে হাসিমুখে বললো রোজা,
—” কাল পড়ে শুনাবো কেমন? আজ বরং তুই তোর এক্স গার্লফ্রেন্ডদের নিয়ে স্বপ্ন দেখ। ইউ নো? মাঝে মাঝে সময় করে এক্সদেরও মনে করতে হয়। কেননা, তারা একসময় তোর প্রেজেন্ট এন্ড হ্যাপিনেস ছিলো।”
রিদ লজ্জায় লাল হয়ে বললো,
—” ধেৎ আপু! আমার কোনো এক্স নেই। আর না কোনো প্রেজেন্ট আছে। আই এম আ গুড বয়।”
রোজা উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বললো,
—” আমি বিশ্বাস করি না। এসব থার্ড ক্লাস মিথ্যা বন্ধ করে স্বপ্ন দেখ…সকালে কিন্তু আমি পুরোটা স্বপ্নই শুনবো। মনে মনে দারুন একটা স্বপ্ন সিলেক্ট করে দেখতে লেগে যা। “
রিদ ভ্রু কুঁচকে বললো,
—” স্বপ্ন কি সিলেক্ট করা যায় নাকি?”
—” অবশ্যই সিলেক্ট করা যায়। তুই যা ভাববি স্বপ্নে তুই তাই পাবি। স্বপ্ন হলো ব্রেনের খেলা। ইউর ব্রেন জাস্ট ট্রাই টু প্লে উইথ ইউ।”
৭৬.
ঘড়ির কাটা একটার ঘন্টায় পড়তেই উঠে বসলো রাফিন। কেন জানি ঘুম হচ্ছে না তার। বিছানায় ঠেস দিয়ে বসে বামপাশে ঘুমন্ত আরুর দিকে তাকালো সে। মেয়েটি তার স্ত্রী! কথাটা ভাবতেই ভেতরটা কেঁপে উঠলো তার। হঠাৎ করেই মনে পড়লো এসিস্ট্যান্টের চোখ ফাঁকি দিয়ে আরুর চেম্বারে ঢুকে যাওয়ার কথা। মেয়েটা তাকে ভালোবাসতো! আচ্ছা? এখনও কি বাসে? কি মনে করে আরুর কাছাকাছি গিয়ে আলতো ছোঁয়ায় ডাকলো রাফিন,
—” আরু? এই আরু? গেট আপ।”
আরু খানিকটা নড়েচড়ে আবারও ঘুমে মগ্ন হলো। রাফিন ভ্রু কুঁচকে তাকালো। মেয়েটা হঠাৎ এমন ঘুমকাতুরে হয়ে গেলো কেন? যে মেয়ে বাথরুমে ড্রেস চেঞ্জ করতে গিয়েও ঘুমিয়ে পড়ে সেই মেয়েকে শুধু ঘুমকাতুরে বলাটাও অন্যায়। রাফিন আবারও ডাকলো,
—” এই আরু? উঠো? নয়তো তোমার বরকে মেরে ফেলবো।”
আরু এবার চোখ পিটপিট করে তাকালো। আরুর ভয়মাখা চোখগুলো দেখে বুকের কোথাও বড্ড অস্বস্তি তাড়া দিলো তার। কেন এতো ভয় পায় মেয়েটা? রাফিন যে তাকে কিছুই করবে না বুঝে না নাকি মেয়েটা? রাফিন আরুর হাত টেনে ধরে বসালো৷ আরু বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে আছে। এই প্রথম আরুকে কাছে টেনে নিলো রাফিন। হালকা গলায় জিগ্যেস করলো,
—” রাফিনকে ভালোবাসো?”
আরু কেঁপে উঠলো। তার এই কেঁপে উঠাতেই বিমোহিত হলো রাফিন। আরুর দিকে যে প্রশ্নটা ছুঁড়ে দিলো সেই প্রশ্নটা একবারও নিজেকে করলো না সে। সে কি আরুকে ভালোবাসে?প্রশ্নগুলো তলিয়ে গেলো রাতের গহ্বরে, খুব গোপনে।
______________
নাস্তার টেবিলে বসে আছে রাফিন। তার সামনে জড়োসড়ো হয়ে বসে আছে আরু। চোখে-মুখে ভয়ের ছাপটা স্পষ্ট। রাফিন একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আরুর ভয়ার্ত মুখে। মাথায় চলছে একটি বাক্য —-” কাজটা ঠিক করে নি সে। একদম না।” রাফিন সাহস নিয়ে বললো,
—” আরু? তুমি ঠিক আছো?”
আরু উত্তর দিলো না। চোখদুটো টলমল করে উঠলো তার। রাফিনের বুকটা ভারি হয়ে এলো। এই প্রথম নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে তার। কিভাবে পারলো এমন একটা স্টেপ নিতে? ছি! খাবার টেবিল ছেড়ে ঝটপট উঠে গেলো রাফিন। আরুর সামনে বসে থাকা চলবে না তার। কিছুতেই না। হসপিটালে গিয়েও চুপচাপ বসে রইলো সে। কালকের রাতটাকে নিজেও বিশ্বাস করতে পারছে না রাফিন। চেয়ারে গা এলিয়ে চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ বসে থাকার পর হঠাৎ-ই চোখ খুললো রাফিন। মাথায় একটি প্রশ্নই তীক্ষ্ণ থেকে তীক্ষ্ণতর হয়ে উঠলো —- আরু তো এমন ছিলো না! রাফিন বিস্ময় নিয়ে উপলব্ধি করলো আগের আরুকে দেখতে ইচ্ছে করছে তার। যে আরু পাগলামো করতো। হাসতো। অযথা কথা বলতো কিন্তু কোথায় সেই আরু? কোথায়? আরুর বলা “মিষ্টার ভিলেন” শব্দটা কতোদিন শুনে না সে। আরু তো এখন আর ডাকে না তাকে। কেন ডাকে না? হসপিটালের সব কাজ ফেলে আবারও বাড়িতে ছুটে গেলো রাফিন। অস্থির লাগছে তার। বড্ড অস্থির।
আরু দু’হাতে মুখ ঢেকে ফোঁপাচ্ছিল। এমন সময় ঘরে ঢুকলো রাফিন। কিছুক্ষণ আরুকে দেখে নিয়ে হন্তদন্ত করে আরুর দিকে এগিয়ে যেতেই ভয়ে সিঁটিয়ে গেলো আরু। দু’হাতে বালিশ চেপে ধরে খানিকটা পিছিয়ে গেলো। সাথে সাথেই থেমে গেলো রাফিন। নরম গলায় বললো,
—” তুমি কি ভয় পাচ্ছো আরু? ভয় পেয়ো না প্লিজ। আমি তোমাকে টাচ করবো না, কাছেও যাবো না৷ শুধু একটু কথা বলবো। আমার সাথে একটু কথা বলবে আরু? আমি তোমার কন্ঠটা শুনতে চাই। আগের মতো করে একটু কথা বলো প্লিজ। আরু?”
আরু কথা বললো না। ভয়মাখা টলমলে চোখে এদিক ওদিক তাকাতে লাগলো। রাফিন ডেবিনে বসে একহাতে কপাল চেপে ধরে আরুর দিকে তাকিয়ে রইলো। সময়র সাথে পাল্লা দিয়ে আরুর কথা শুনার জন্য আরো বেশি ছটফট করতে লাগলো রাফিন। কেন হচ্ছে? কিভাবে হচ্ছে? কিচ্ছু জানে না রাফিন। তার শুধু আরুর কন্ঠটা শোনা চাই। আরুর নীরবতা,উদাসীনতা, ভয় যেন রাফিনের তৃষ্ণাটা বাড়িয়ে দিলো কয়েকগুণ। কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে থেকে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো রাফিন। অস্থিরতা কমাতে ডক্টর আনোয়ার হোসেনকে কল করলো। দু’বারের মাথায় কল উঠালেন আনোয়ার হোসেন। রাফিন কোনো বনিতা না করেই বললো,
—” আরু কথা বলছে না কেন ডক্টর?”
ডক্টর আনোয়ার হঠাৎ এমন প্রশ্নে অবাক হলেন। নিজেকে সামলে নিয়ে বললেন,
—“আপনি ঠিক আছেন ডক্টর চৌধুরী? “
—” না নেই ঠিক। আমার ওয়াইফ কথা বলছে না কেন? আপনি ওকে কথা বলানোর ব্যবস্থা করুন। নয়তো…নয়তো আই উইল কিল ইউ।”
আনোয়ার হোসেন বিস্ময় নিয়ে বললেন,
—” শান্ত হোন ডক্টর চৌধুরী। অস্থির হবেন না।”
—” অস্থির হবো না মানে? আপনি কি আমার কথাটা বুঝতে পারছেন না। আমি ওর কন্ঠ শুনতে চাই। এবং এখনই চাই।”
আনোয়ার হোসেন শান্ত গলায় বললেন,
—” তাহলে উনার কাছে যান। কথা বলুন…”
ডক্টরকে থামিয়ে দিয়েই বলে উঠলো রাফিন,
—” ও আমাকে ভয় পায়।”
—” কেন?কেন ভয় পায়?”
—” আমি…”
—” হ্যাঁ। আপনি?”
রাফিন অস্থির গলায় বললো,
—” জানি না। আমি জানি না কেন ভয় পায়।”
ডক্টর নরম গলায় বললেন,
—” উনার ভয়টা ধরতে চেষ্টা করুন। ভয়টা কেটে গেলেই কথা বলবেন উনি। অস্থির হবেন না ডক্টর চৌধুরী। “
রাফিন ফোনটা ছুঁড়ে মারে দেয়ালে। অস্থির হবেন না বললেই কি অস্থিরতা কমে নাকি? ডক্টর কেন বুঝতে পারছে না তাকে?
৭৭.
সারারাত পড়াশোনা করে শেষ রাতের দিকে ঘুমিয়ে পড়েছিলো রোজা। সকাল আটটায় ক্লাস অথচ ঘুম ভেঙেছে আটটা দশে। ব্যাপারটায় চরমরকম মেজাজ খারাপ হচ্ছে তার। ক্লাসটা মিস হবে জেনেও তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে পড়লো রোজা। যদি শেষ রক্ষটা হয়! এমনিতেও যে হারে ক্লাস মিস হয়েছে তাতে এটেন্ডেন্সেই আটকা পড়বে সে। বাসার গেইট পেরিয়ে রাস্তার মোড়ের দিকে এগুতোই হঠাৎ থমকে দাঁড়ালো রোজা। কপাল কুঁচকে পেছন ফিরে তাকালো। রাস্তার পাশে, জারুল গাছের নিচে কালো জ্যাকেট, ক্যাপ আর মাস্কে নিজেকে আড়াল করে দাঁড়িয়ে আছে মৃন্ময়। রোজা খানিক ইতস্তত করে সেদিকে এগিয়ে গিয়ে বললো,
—” আপনি? এখানে? এভাবে দাঁড়িয়ে আছেন কেন?”
মৃন্ময় উত্তরে ছোট্ট করে বললো,
—” আপনার জন্য।”
রোজা অবাক হয়ে বললো,
—” মানে?”
প্রশ্নটা এড়িয়ে গিয়ে উল্টো প্রশ্ন করলো মৃন্ময়,
—” আমার সাথে এক জায়গায় যাবেন? গাড়ি নয় রিক্সায়। যাবেন?”
রোজা কি বলবে বুঝতে পারছে না। বিস্ময়ে বোবা হয়ে যাবার উপক্রম তার। ছোট্ট নিশ্বাস ফেলে নিজেকে সামলে নিয়ে বললো,
—” কিন্তু কোথায়? আর এতো সকালেই বা কেন? আমার বাড়ির এড্রেসই বা কোথায় পেলেন আপনি?”
মৃন্ময় জবাব দিলো না। নরম গলায় বললো,
—” যাবেন?”
রোজা খানিকক্ষণ ভেবে বললো,
—” আমার ক্লাস ছিলো মিষ্টার.মৃন্ময়।”
—“প্লিজ!”
রোজা কাঁধ ঝাঁকিয়ে ঠোঁট উল্টে বললো,
—” বেশ তো। চলুন।”
________________
সেই নদীর পাড়টিতেই দাঁড়িয়ে আছে রোজা-মৃন্ময়। দু’জনের মাঝেই অদ্ভুত নীরবতা। সেই নীরবতা ঠেলে রোজাই কথা বললো প্রথম,
—” এখানে আনার জন্যই এতো তাড়া ছিলো মৃন্ময় সাহেব?”
মৃন্ময় হেসে বললো,
—” না। তাড়াটা এখানে আনার জন্য নয়। একটা প্রশ্ন জিগ্যেস করতে। উত্তরটা কি আপনি দিবেন মিস.রোজা?”
রোজা ভ্রু কুঁচকে বললো,
—” কি প্রশ্ন?”
মৃন্ময় রোজার চোখের দিকে তাকালো। দৃষ্টি স্থির রেখে বললো,
—” মিস.রোজা? যদি আপনার কাছে দুটো অপশন থাকে। এক. অন্যের খুশির জন্য নিজেকে তিলে তিলে মেরে ফেলা। দুই. অপরজনের কষ্ট হবে জেনেও নিজের সুখটা বেছে নেওয়া এবং তাকেও খুশি রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা। তাহলে আপনি কোনটা চুজ করবেন?”
রোজা খানিক ভেবে বললো,
—” সেকেন্ড অপশন। অন্যের জন্য নিজের সবটা উজার করা দেওয়াটা কখনোই পছন্দ নয় আমার। নিজের সুখের পাশাপাশি অন্যকে খুশি রাখাটাই বেটার অপশন। আমার তো এটলিস্ট তাই মনে হয়। আপনি কোনটা চুজ করতেন মিষ্টার মৃন্ময়? “
মৃন্ময় স্থির দৃষ্টি রেখেই বললো,
—” করতাম নয় করে ফেলেছি।”
রোজা জিগ্যেসু দৃষ্টিতে তাকাতেই হালকা হাসলো মৃন্ময়। রোজার চোখে চোখ রেখে স্পষ্ট গলায় বললো,
—” আপনাকে চুজ করে ফেলেছি মিস.রোজা।”
রোজা বুঝতে না পেরে বললো,
—” মানে?”
—” আই লাভ ইউ “
রোজা চোখ বড়বড় করে তাকালো। মৃন্ময় কি পাগল হয়ে গেছে নাকি? হঠাৎ এমন অদ্ভুত কথা… কেন?
# চলবে…