রুপকথা পর্ব ৩
মাহিয়াকে নিহালের রুমে নিয়ে যেয়ে খাটে বসিয়ে দিল নামিরা। মাহিয়ার কিছু লাগবে কিনা বা কোনো কিছু প্রয়োজন আছে কি না জেনে নিল ও। ওদের সাথে রুমে এই বাড়ির আরো অনেক আত্মীয়রাই ছিলেন। সবাই নিজেদের মাঝে কানাকানি আর হাসাহাসি করছিলো। এরই মধ্যে রুমে ঢুকলো নিহাল আর ওর মা । আয়েশা এসেই সবাইকে চাপা ধমক লাগালেন।
– এই তোমরা কেন এখনো এই রুমে জড়ো হয়ে আছ? বউমাকে এখন রেস্ট নিতে দাও সবাই। অনেক ধকল গেছে মেয়েটার ওপর এই কয় দিন। চলো চলো বের হও।
মাহিয়া আম্মু, তুমি ফ্রেশ ট্রেশ হয়ে রেস্ট নাও সুন্দর করে। কাল দেখা হবে। নিহাল, আব্বা দরজাটা লাগিয়ে দে।
সবাই বের হয়ে গেলে নিহাল দরজাটা লাগিয়ে দিল। ওখানে দাড়িয়েই একবার শুধু ঘাড়টা ঘুড়িয়ে মাহিয়াকে দেখলো ও। মেয়েটা এখনো খাটেই চুপ করে বসে আছে। একদম নড়ছে না। ওকে দেখে খুব মায়া লাগলো নিহালের। আস্তে করে নিজেকে খাটের কাছে নিয়ে গেল নিহাল।
– তুমি উঠে ফ্রেশ হয়ে নাও। অনেক রাত হয়ে গেছে। একটা ভালো ঘুম দরকার তোমার।
নিহালের কথায় মাহিয়া খাট থেকে নেমে পাশের টেবিলে রাখা ওর পার্স ঘেটে একটা চাবি বের করলো। সুটকেসের চাবি এটা। যেই না মাহিয়া সুটকেসের দিকে হাত বাড়ালো, নিহাল অমনি থামিয়ে দিল ওকে। এরপর নিজেই মাহিয়ার সুটকেসটা উঠিয়ে সামনের সোফায় বিছিয়ে দিল ও। যখন মাহিয়া নিজের কাপড় বের করতে ব্যস্ত হয়ে গেল তখন নিহালও আলমারি থেকে নিজের শোয়ার কাপড় বের করে মাহিয়ার পাশে এসে দাড়ালো।
– তুমি কি আগে কাপড় চেঞ্জ করবা নাকি ফ্রেশ হয়ে আসতে চাও?
– কাপড় চেঞ্জ করবো।
– তাহলে আমি ফ্রেশ হয়ে আসি আগে। তুমি এখানেই চেঞ্জ করে নিতে পার এ্যান্ড… টেইক ইওর টাইম।
নিহাল ওয়াশরুমে চলে যাওয়ার পর মাহিয়া ধপ করে ড্রেসিংটেবিলের সামনে বসে পড়লো। সারাটাদিনে প্রথমবারের জন্য নিজেকে আয়নায় ভালো করে দেখলো মাহিয়া। মেকআপেরর প্রশংসা আজ সবাই করেছে। আসলেই ভাল হয়েছে সাজটা। তবে পরিপূর্ণতা পায় নি। যেই চোখজোড়াকে এতো হাইলাইট করা হয়েছে অনেক শেডস্ দিয়ে, সেটাতে নেই কোনো খুশির ঝিলিক। যেই ঠোটটাকে লাল রঙ দিয়ে সাজানো হয়েছে তার মাঝে নেই কোনো উল্লাস। যেই গালদুটোতে আলগা আভা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সেখানে নেই কোনো লাজে লাল হয়ে যাওয়ার আলো। মাহিয়ার মনে হচ্ছিলো ওর উল্টো পাশে একটা নিষ্প্রাণ পুতুল বসে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।
একে একে সব গয়নাগুলো খুলে ফেললো মাহিয়া। লেহেঙ্গাটা খুলে সালোয়ার কামিজ পড়ে নিলো ও। ওড়নাটা খাট থেকে ওঠানোর সময় ওর চোখ খাটে বিছিয়ে রাখা ফুলগুলোর ওপর পড়লো। তারপর পুরো রুমটায় চোখ বোলালো মাহিয়া। অনেক ডেকরেট করা হয়েছে রুমটাকে। এটা ওর বাসর ঘর। আজ ওর বাসর রাত।
এই বাসর রাত নিয়ে নানান কথা শুনেছে মাহিয়া ওর জীবনে। কিছু হিন্দি মুভিতে ঝলকও দেখেছে ও। আর গত বছরইতো ওর বান্ধবী, মানহার বিয়ের পরে ওর বাসর রাত নিয়ে সেকি উত্তপ্ত আলোচনা বান্ধবীদের মাঝে! বেশ কৌতুহল নিয়ে সব শুনেছিল মাহিয়া, কারণ আর দশটা সাধারণ মেয়ের মতোই ওরও নিজের বিয়ে, বাসর ঘর, জীবনসাথী নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিলো। স্বপ্ন ছিলো সেই শিহরিত মুহূর্তগুলো নিয়ে যা ওর আর ওর স্বামীর মাঝে বয়ে যাবে এই রাতে। স্বপ্ন ছিল সেই ক্ষণ গুলোকে নিয়ে যার মাঝে থাকবে কিছুটা গল্প, কিছুটা খুনশুটি আর অনেক পরিমানে ভালোবাসার আবেশ।
কিন্তু মাহিয়ার জীবন থেকে সেই স্বপ্নগুলো ছিড়ে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে ছয় মাস আগের সেই ভয়ানক রাতেই যখন শাহেদ নামক সেই জানোয়ারটা ওকে রেপ করার চেষ্টা করেছিল। যেই আল্তো পরশ মাহিয়া মনে করেছিল ওর গায়ে শিহরণ জাগাবে, সেখানে সে রাতে সেই নখের খামছিগুলো একটা একটা তীরের মতন গেথেছিল। সেই সব ক্ষত গুলো শারীরিক ভাবে মিটে গেলেও মনের ভেতর আজও ব্যাথায় দপ দপ করে। সেই রাতে হয়তোবা পুরোপুরি রেপ করেই ফেলতো ওকে শাহেদ যদি নিহাল ঠিক সময় না চলে আসতো মাহিয়াকে বাঁচাতে।
শাহেদ! এই অমানুষকে জানোয়ার বললেও জানোয়ারদের অপমান করা হবে। আর ওই নিকৃষ্ট অমানুষটার প্রেমে পড়েছিল মাহিয়া। বিশ্বাস করেছিল ওকে। এতো বিশ্বাস যে ওই পিশাচ ওকে সেই পার্টি থেকে বের করে একা অন্য রুমে নিয়ে আসার পরেও আসল নিয়তটা প্রথমে বুঝে উঠতে পারে নি মাহিয়া। উফ! কিভাবে এই ভুল পথে চলে গিয়েছিল মাহিয়া? কেন এই শয়তানের চেহারাটা আগে বুঝেনি ও?
পেছনে দরজার নবের আওয়াজে বর্তমানে ফিরে আসলো মাহিয়া। নিহাল বের হয়েছে।
– মাহিয়া, তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও।
-হমম।
নিহালের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ওর গায়ের সেই চেনা সৌরভটা নাকে লাগলো মাহিয়ার।
নিহাল। নিহাল রহমান। মেয়েদের মুখে হার্টথ্রব অফ দা ভার্সিটি। তবে মাহিয়ার জন্য শুধুই একজন বন্ধু। এমন একজন বন্ধু যে মাহিয়ার জীবনের সবচাইতে অন্ধকার অধ্যায়ে ওর পাশে ছিল। এই নিহালের কাধে মাথা রেখে কতো অশ্রু ঝরিয়েছে মাহিয়া তার কোনো হিসাব নেই। নিহাল চুপচাপ শুধু সহ্য করতো আর শাহেদের ওপর ফুসতো। এছাড়া আর কিছু করারও ছিল না ওর।
ওদের বিয়েটা ঠিক হওয়ার পর থেকেই বন্ধুবান্ধবদের একটাই আলোচনা। নিহাল এত মেয়ের মন ভেঙে মাহিয়ার হয়ে গেল। কি এমন করলো মাহিয়া যাতে নিহাল ওকেই পছন্দ করলো? হ্যা, শুনেছে এবং দেখেছেও মাহিয়া কিভাবে নিহালের প্রেমে ডিপার্টমেন্টের অধিকাংশ মেয়েরা হাবুডুবু খেত। কতোজনের নিহালকে কাছে পাওয়ার বাসনার গল্প কানে আসতো ওর। অনেকেই নাকি মাহিয়ার প্রতি এখন ভীষণ জেলাস। তবে মাহিয়া যে এই সম্পর্কের ভাগিদার কখনো হতে চায় নি এটা কেউ জানে না।
যেইদিন নিহালের মা মাহিয়াদের বাসায় প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলেন, সেইদিন আড়াল থেকে বড়দের সব কথাই শুনেছিল মাহিয়া। পুরো থমকে গিয়েছিলো ওর দুনিয়া সেই মুহূর্তে। নিহাল এতোদিন ওকে এতো সাপোর্ট দিয়েছে কিন্তু একবারো তো এইসব ব্যাপারে কোনো কথা ওঠেনি? আর ওঠার তো কোনো প্রশ্নই ছিলো না। নিহাল সব জানতো। ও জানতো যে শাহেদের থেকে যেই ধোকা মাহিয়া খেয়েছে সেটার পর আরেকজনকে নিজের জীবনে নিয়ে আসা কোনোভাবেই ওর পক্ষে এখন সম্ভব না। আর নিহালই বা কেন আনবে মাহিয়াকে ওর জীবনে? ও তো জানে মাহিয়া এটাতে রাজি হবে না। তাহলে কেন মাহিয়ার বাসায় প্রপোসাল পাঠালো ও?
মাহিয়া এরপরে দৌড়ে নিজের রুমে ঢুকে তনুকে ফোন দিয়েছিল। ফোনে পেল না ওকে। কাকে দিবে কাকে দিবে চিন্তা করতে করতে অথইয়ের নামটা মাথায় আসলো ওর। নিহাল, শাহেদ আর অথই বেস্ট ফ্রেন্ডস ছিল ভার্সিটিতে। মাহিয়ার সেই ঘটনার পর নিহাল শাহেদের সাথে কোনো ধরনের সম্পর্ক রাখেনি শত্রুতার সম্পর্ক ছাড়া। তবে অথই এখনো নিহালের খুবই কাছের বন্ধু। এখন লন্ডনে থাকলেও নিহালের সাথে রেগুলার যোগাযোগ হয় অথইয়ের, এটা মাহিয়া জানে। নিশ্চই ও কিছু বলতে পারবে, এই চিন্তা করেই মাহিয়া অথইকে ফোন দিয়েছিল।
-হ্যালো।
-হ্যালো অথই? মাহিয়া বলছিলাম কেমন আছ?
ওপাশ থেকে কিছুমুহূর্তের জন্য কোনো আওয়াজ আসেনা।
-হ্যালো অথই? শুনতে পাচ্ছো?
– পাচ্ছি বলো। (অথইয়ের আওয়াজ ছিল বরফের মতন ঠান্ডা)
– অথই, তোমার সাথে একটু কিছু কথা ছিল। আজ নিহালের আম্মু আমাদের বাসায় এসেছেন। আমার জন্য নিহালের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে।
-ওয়াট? কি আবল তাবল বলছো তুমি?
– হ্যাঁ, সত্যি, আন্টি এসেছেন। আমি তো ভাবলাম নিহাল তোমাকে এই ব্যাপারে কিছু একটা বলেছে তাই আসল কারণটা জানতে তোমাকে ফোন দিয়েছিলাম। অথই, প্লিস নিহালের সাথে একটু কথা বলে জানতে পারবা এটা কেন হলো? কোনো কারণ ছাড়া আমার বাসায় বিয়ের প্রোপোজাল কেন পাঠালো ও?
– কোনো কারণ ছাড়া? মাহিয়া, তুমিই সব কারণের মূল হয়ে দাড়িয়ে আছো আর বলছো কারণ ছাড়া এগুলা ঘটছে?
অথইয়ের শীতল রাগান্বিত আওয়াজ শুনে মাহিয়া শিউরে উঠলো।
– তোমার জন্য এতো কিছু হলো, আর তুমি বলছো কোনো কারণ নেই?
– অথই কি বলছো এইসব…
-ওহ প্লিজ মাহিয়া… ডোন্ট এ্যাক্ট সো নাইভ। এমন ভাব নিয়ে কথা বোলো না যে কিছু বোঝোই না তুমি। আমাকে নিহাল কিছু না বললেও, শাহেদ সব জানিয়েছে।
আমাকে জানিয়েছে, কিভাবে তুমি নিজের প্রেমের জালে শাহেদকে জড়িয়ে ওকে ওর নিজের বাসাতেই ফ্রেম করেছিলা। কিভাবে ওকে প্রথমে সিডিউস করার চেষ্টা করে সবার সামনে ধরা খাওয়ার ভয়ে সেটাকে রেপ এর চেহারা দিতে চেয়েছিলা।
-অথই, চুপ করো প্লিজ। তুমি যা শুনেছো সব মিথ্যা। ঘটনাটা সম্পূর্ণ উল্টা…
– তুমি চুপ করো। আর এই কুমিরের কান্না নিহালকে যেয়ে দেখাও, আমার সামনে কাঁদবা না। নিহাল আমাকে এই বিয়ের ব্যাপারে কিছুই বলেনি বাট আমি জানি ও এই বিয়েটা কেন করছে। তোমার ওপর করুণা দেখিয়ে করছে মাহিয়া। দয়া দেখাচ্ছে ও তোমার ওপর। নিহাল প্রথম থেকেই তোমার খুব কেয়ার করতো, তুমিও নিশ্চয়ই জানো সেটা। জানো তো অবশ্যই, তাই তো ওর সিম্পেথি কুড়িয়ে বেড়াচ্ছো গত তিন চার মাস ধরে। সেই সিম্পেথির লিস্টে আজ এই বিয়েটাও এ্যাড করে নাও। নিহাল নিশ্চয়ই মনে করেছে, বেচারি, কাইন্ড অফ আ রেপ ভিক্টিম, এসব জানলে কে ওকে আর বিয়ে করবে, তাই আমিই ওকে বাচিঁয়ে দেই। তোমার তো বিশাল লাভ মাহিয়া, নিহালকে পেয়ে যাচ্ছো তুমি। কতো মেয়ে এই স্বপ্ন দেখেছে আর তোমার জন্য সেটা রিয়্যালিটি হতে যাচ্ছে। ওয়াও, ইউ আর ড্যাম লাকি ম্যান! ওয়েল প্লেইড।
এন্ড প্লিস আমার কাছে তোমার কোনো বিষয়ে হেল্প চাইতে ফোন দিবা না। আমি নিহালের সাথে কোনো কথাই বলবো না এই ব্যাপারে। যত্তসব ঢং!
মাহিয়া চুপ হয়ে গিয়েছিল এসব শুনে। পাথর হয়ে গিয়েছিল। প্রতিবাদ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিল ও। ফোনটা কখন হাত থেকে নিচে পরে গিয়ে বন্ধ হয়ে গেছে সেটা মাহিয়ার খেয়াল হলো না।
ওয়াশরুম থেকে মাহিয়া বের হয়ে রুমে নিহালকে খুজে পেল না। এদিক ওদিক দেখতেই ব্যালকনিতে নিহালকে দাড়িয়ে থাকতে দেখলো ও। টাওয়েল শুকিয়ে দিতে ওর নিজেরও ব্যালকনিতে যাওয়া লাগলো। মাহিয়ার পায়ের আওয়াজে ফিরে তাকালো নিহাল। একবার দেখেই আবার সামনের দিকে চোখ ফিরিয়ে নিলো ও।
মাহিয়া টাওয়েলটা মেলে দিতে গিয়ে আড়চোখে দেখলো একবার নিহালকে। তারপর গলা পরিষ্কার করার আওয়াজ করলো যেটায় নিহাল আবার ফিরে তাকালো ওর দিকে।
– আমি শুতে চাচ্ছিলাম। কালকে আবার সকাল সকালই উঠতে হবে।
মাহিয়ার কথায় নিহাল ব্যস্ত হয়ে পড়লো,
– হ্যাঁ হ্যাঁ চলো আমি খাটটা ঠিক করে দিচ্ছি। তুমি শুয়ে পড়ো।
মাহিয়া দাড়িয়ে রইলো একপাশে যখন নিহাল পুরো বিছানাটা ওর জন্য গুছিয়ে দিল। সব ছড়ানো ফুলগুলো বেড কভারে মুড়িয়ে নিচে রেখে দিল ও।
-যাও মাহিয়া শুয়ে পড়ো। আর কিছু লাগবে?
-না।
– গুড নাইট।
মাহিয়া আর কথা না বাড়িয়ে একপাশ হয়ে নিহালের দিকে পিঠ করে শুয়ে পড়লো। ওর ওপর একটা পাতলা চাদর মেলে দিল নিহাল। তারপর ওখান থেকে চলে গেল। মাহিয়া বুঝতে পারলো নিহালের পায়ের আওয়াজ দূরে সরে যাচ্ছে।
ভোরে ঘুম ভাঙলো মাহিয়ার। রাতে কোন সময় ঘুমিয়ে পড়েছিল খেয়াল নেই ওর। সারা রাতে আর ঘুমও ভাঙেনি। বিছানার আরেক পাশটা দেখলো মাহিয়া। খালি। চাদর একদম টানটান হয়ে আছে ওদিকটার। দেখেই বোঝা যাচ্ছে রাতে ওখানে শোয়া হয়নি। মাহিয়া আস্তে আস্তে পুরো রুমে চোখ বুলিয়ে নিহালকে খুজতে লাগলো। নিহালকে পাওয়া গেল ওর স্টাডি টেবিলে। মাহিয়ার দিকে পিঠ করে বসে ল্যাপটপে কিছু দেখছে।
মাহিয়া নিশব্দে ওঠার চেষ্টা করলো কিন্তু পারলো না। নিহাল ফিরে তাকলো। মাহিয়া উঠে গেছে দেখে খাটের একটু কাছে এসে দাড়ালো ও।
-গুড মর্নিং। ঘুম ভালো হয়েছে?
– হমম, হয়েছে।
– আচ্ছা, আমি গিজারটা অন করে দিচ্ছি তুমি হাত মুখ ধুয়ে নাও।
এই বলে নিহাল ওয়াশরুমের দিকে চলে গেল। মাহিয়া কাথা সরিয়ে বিছানা ছাড়লো। অগাস্ট মাসের শেষ ভাগ চলছে। সারাদিন গরম লাগলেও ভোর বেলাটা একটু শীত শীত লাগে ওর । বারান্দায় যেয়ে দাড়ালো মাহিয়া। নিহালদের বাসাটা একদম লেক ঘেষে দাড়ানো। মনোরম দৃশ্য চোখের সামনে। লেকের ধার দিয়ে যে পার্কটা সেখানে অনেকে হাটতে বের হয়েছে, অনেকে বেয়াম করছে। মাহিয়া এগুলো দেখতে দেখতেই নিহাল এসে জানিয়ে গেল পানি গরম হয়ে গেছে। নিহালের ওয়াশরুমের সাথে খুব ছোট্ট করে একটা ড্রেসিংরুমও আছে। মাহিয়া একবারে শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়ালো। হাতমুখ ধুতে চেয়েছিল প্রথমে কিন্তু পরে চিন্তা করলো সারাদিনে সময় পায় কি না পায় তাই এখনি গোসল সেরে ফেলা ভালো। তাই গোসল করে একেবারে শাড়ি পরে বের হওয়ার কথা চিন্তা করলো মাহিয়া।
চলবে।