রুপকথা পর্ব ৪
নিহাল ল্যাপটপেই বসে কাজ করছিলো। অফিসের। নিহালের বাবা মারা গেছেন যখন নিহাল এলেভেল্সে ছিলো। সেই তখন থেকেই নিহালদের সম্পূর্ণ ব্যবসার দায়ভার মায়ের আর বোনের ওপর পড়েছিল। এর মাঝে বোনের বিয়ে হয়ে ও লন্ডনে চলে যাওয়ায় মা ব্যবসা নিয়ে একদম একা পড়ে যান। কিন্তু আয়েশা রহমান অনেক কর্মঠ মহিলা। একাই ব্যবসা সামলে চলেছিলেন নিপুণ হাতে। বিবিএ শেষ করে যখন এমবিএ তে ভর্তি হলো তখন থেকে মায়ের হাত ধরলো নিহাল। গত এক বছরে বেশ অনেকখানি নিজের কাজ সামলে ফেলেছে ও। আশফাক রহমানের ছেলে হিসেবে নিজেকে সফল ভাবেই এসট্যাবলিশ করতে পারবে নিহাল সবার এটাই ধারণা।
গত রাতে মাহিয়া শুয়ে পড়ার পর নিহাল আবার বারান্দায় যেয়ে দাড়িয়েছিল। সারাটাদিনই আগের অনেক স্মৃতি একের পর এক ঘিরে ধরছিলো ওকে। মাহিয়া ওর স্ত্রী হয়ে গেছে, এখনো ব্যাপারটা স্বপ্নের মতোন লাগছিল ওর কাছে। কারণ মাহিয়াকে নিজের করে পাওয়ার আশা নিহাল অনেক আগেই ছেড়ে দিয়েছিল।
ছোটবেলা থেকেই নিহাল অসম্ভব সুন্দর চেহারার অধিকারী। ওর মনে আছে মায়ের বান্ধবীরা আসলে বার বার বলতো, এই আয়েশা তোর নিহালকে দেখে রাখিশ কিন্তু। বড় হলে বাসায় মেয়েদের লাইন লেগে যাবে তখন সামলাতে পারবি না।
আন্টিদের সেই কথা মোটামোটি বিফলে যায়নি। বাসায় না হলেও স্কুল, কলেজ আর ভার্সিটিতে মেয়েদের ফ্যান ফলোইং কম ছিল না নিহালের। মেয়েদের ওর প্রতি আকর্ষণ দেখে এমণি অভস্ত হয়ে গিয়েছিল ও যে নিজে থেকে সিরিয়াসলি কারো জন্য ফিল করতে পারে নাই কখনো। সবাইকেই গায়ে পড়া মনে হতো ওর কাছে। কিন্তু নিহালের জীবনে ব্যতিক্রম ঘটলো সেই বসন্তের দিন যখন ও মাহিয়াকে প্রথমবার দেখেছিল। কি যেন ছিল মেয়েটার মাঝে যেটা নিহালকে এক দেখাতেই মাহিয়ার দিকে আটকে দিয়েছিল। নিহাল সেটা আজ অব্ধি ফিগার আউট করতে পারে নাই। লাভ এট ফার্স্ট সাইট না হলেও কিছু একটা স্পেশাল হয়েছিল সেদিন।
মাহিয়ার সাথে পরের সেমিস্টারে সেই কোর্সে বন্ধুত্ব হয় নিহালের। চোখ আর হাসি ছাড়াও ভালো লাগতো মাহিয়ার চঞ্চচলতা। মেয়েটা এতটাই মনখোলা ছিলো যে ওর মনের ভাবগুলো চোখে মুখে ঝিলিক দিত। যখন মাহিয়া খুশি থাকতো, তখন ওর চোখ হাসতো ওর সাথে। যখন রাগ করতো ওর ভুরুজোড়া টানটান হয়ে যেত। কখনোই ওর অনুভূতিগুলো লুকাতে পারতো না মাহিয়া। সবাই ধরে ফেলতো একবারেই।
ঠিক এভাবেই মাহিয়ার ভালোবাসার অনুভূতিটাও ধরা পরে গিয়েছিল নিহালের কাছে। তবে দুর্ভাগ্য, মাহিয়ার মনে নিহাল ছিল না। ছিল ওর বেস্ট ফ্রেন্ড শাহেদ। মাহিয়া শাহেদকে দেখলে একদম চুপ হয়ে যেত। স্বাভাবিক হতে পারতো না। কয়েকদিন এই বিষয়টা লক্ষ্য করেছে নিহাল। তারপর একদিন তনুর সাথে মাহিয়ার কথা শুনে ফেলেছিল ও। তনুকে মাহিয়া শাহেদের প্রতি ওর ফিলিংস এর ব্যাপারে বলছিল। নিহাল চুপচাপ শুনেছিল সেদিন। বলার তো আসলে কিছু ছিলোও না ওর। মাহিয়াকে ভালোবেসে ফেলেছিলো ততদিনে নিহাল তবে আরেকটু ভালো করে জানতে চাচ্ছিলো বলে মাহিয়াকে আগে প্রপোজ করেনি। কিন্তু শাহেদের ব্যাপারটা জানার পর বুঝে গিয়েছিল নিহাল যে প্রোপোজ করেও কোনো লাভ হতো না। বরঞ্চ ওদের মাঝে একটা বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।
নিহালের মনের ভাব আবার অথই খুব ভালো বুঝতো। কলেজ লাইফ থেকে বেস্ট ফ্রেন্ডস ওরা দুজন। নিহাল যে কাউকে পছন্দ করেছে সেটা ও না বুঝলে কে বুঝবে তাহলে? তবে মেয়েটা কে, তা ঠাওর করতে পারছিলো না অথই। একদিন ক্লাসের শেষে কথাটা সবার মাঝে উঠিয়েই ফেললো ও।
– এই নিহাল? তোর কি হয়েছে রে?
– মানে?
– তোর ইদানিং হাবভাব একটু চেঞ্জ চেঞ্জ মনে হয়। প্রেমে ট্রেমে পড়লি নাকি?
– আচ্ছা অথই, তোর মাথায় কি এগুলো ছাড়া আর কিছু চলে না?
সেই দিন অনেক কষ্টে পাশ কাটিয়েছিল নিহাল। তারপর থেকে তৎপর থাকতো ও। কাউকে বুঝতে দেয়নি ওর মনের ভাবনা।
মাহিয়ার শাহেদকে পছন্দ থাকলেও শাহেদের তরফ থেকে কোনো কিছু প্রথমে ছিল বলে নিহালের মনে পরে না। মাহিয়ার ভালোবাসাটা একতর্ফাই ছিল। নিহালের মতন ভার্সিটির হার্টথ্রব না হতে পারলেও শাহেদও দেখতে সুদর্শন ছিল। কিন্তু ওর ব্যবহারে কিছু মেয়েরা ওকে পছন্দ করতো না। ওর মেন্ট্যালিটিতে মেয়েদের প্রতি যে তেমন একটা সন্মান নেই তা বোঝা যেত ওর কিছু কিছু কাজে। কিন্তু নিহাল আর অথইয়ের সাথে ওর বন্ধুত্ব ছিল তুখোড়। তাই নিহাল জানতো শাহেদ সেভাবে মাহিয়াকে পছন্দ করে না। কিন্তু হঠাৎ একদিন শাহেদ কে মাহিয়ার সাথে করিডোরে কথা বলতে দেখলো ও। তারপর আরেকদিন দেখলো ক্যান্টিনে। শাহেদকে খুজতেই নিহাল ক্যান্টিনে এসে দেখেছিল ওদের। কথার ভঙ্গিতে বোঝা যাচ্ছিলো কিছু একটা চলছে হয়তো তাদের মাঝে। নিহাল আর ঘাটায়নি বিষয়টা নিয়ে। শাহেদকেও কিছু জিজ্ঞেস করেনি, এই চিন্তা করে যে ওদের দুইজনের মাঝের কথা শুনলে হয়তোবা খারাপ লাগতে পারে নিহালের। কিন্তু একটু অবাক লেগেছিল এইটা দেখে যে শাহেদও নিজের আর মাহিয়ার ব্যাপারে নিহাল বা অথই কারোর সাথেই কোনো কথা বলে নাই। ওদের একান্ত ব্যাপার ভেবে ছেড়ে দিয়েছিল তখন নিহাল কিন্তু এখন বোঝে কি বড় ভুলটাই না করেছিল ও। যদি তখন শাহেদের সাথে কথা বলতো তাহলে জানতে পারতো নিহাল, যে শাহেদ মাহিয়াকে শুধু ইউস করার প্ল্যান করে রেখেছিলো। মাহিয়াকে শুধুই মাত্র শারীরিকভাবে পাওয়ার চাহিদা ছিল ওর। নিহাল যদি আগে এগুলো বুঝতো তাহলে মাহিয়াকে যেভাবেই হোক থামাতো ও। শাহেদের জালে কখনোই ফাঁসতে দিত না মেয়েটাকে।
সেইদিনের কথা মনে পড়লো নিহালের। শাহেদের বাসায় পার্টি ছিলো। শাহেদের বাবা মা গ্রামে গিয়েছিলো বিধায় বাসাটা সম্পূর্ণ ফাঁকা ছিল। ওদের ব্যাচের কিছু সংখ্যক বন্ধুদেরই ডেকেছিলো ও। অথই ততদিনে লন্ডনে পাড়ি জমিয়েছে।
হঠাৎ সেই পার্টিতে মাহিয়া আর তনুকে দেখে বেশ অবাক হয়ে গিয়েছিল নিহাল। শাহেদ মাহিয়াকে পার্টিতে ডাকা মানে ওদের মাঝে কথা অনেক দূর এগিয়েছিল। নিহাল ব্যাপারটা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করলো। মনোযোগ দিল অন্য বন্ধুদের গল্পে। কিন্তু কেন যেন মাহিয়ার দিকে বার বার চোখ পরে যাচ্ছিলো ওর। মেয়েটা একটু ইতস্তত ফিল করছিলো বোধহয়। এক সময় নিহাল দেখলো শাহেদ মাহিয়ার সাথে কথা বলতে বলতে ওকে রুম থেকে বাইরে নিয়ে গেল। এরপর প্রায় দশ মিনিটের মতন পার হয়ে গেলেও মাহিয়া আর শাহেদ ফিরলো না। নিহালের কেন যেন ব্যাপারটা ভালো লাগছিল না। তনুকে যেয়ে মাহিয়া কই জানতেই তনুও একই বিষয়ে চিন্তা করছে বললো । মিউসিক প্রচুর জোড়ে বাজছিল রুমে। বাকিরা সেটার তালেই নেচে অস্থির কিন্তু মাহিয়া আর শাহেদ কোথাও নেই। তনুকে নিয়ে নিহাল তখনি রুম ছেড়ে বের হলো।
এখনো স্পষ্ট সেই ভয়াবহ সময়টা নিহালের চোখে ভাসে। রুম থেকে সরে আসতেই মিউসিকের আওয়াজ ক্রমাগতো কমে যাচ্ছিলো। শাহেদের বাবাও নিহালের বাবার মতন বিশাল ব্যাবসায়ী। বিশাল বড় বাংলো বাড়ি ওদের। এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পৌছতে ভালোই সময় লাগে যেমন তখন লাগছিল নিহাল আর তনুর মাহিয়াকে খুজতে গিয়ে। কোথাও পাওয়া যাচ্ছিলো না ওদের। তনু ডেকে যাচ্ছিলো মাহিয়ার নাম ধরে। কেমন একটা কু ডাক দিচ্ছিলো নিহালের মনে।
এক সময় একটা চাপা গুঞ্জন কানে আসে নিহালের। সামনের একটা রুম থেকে আসছিলো সেটা। দরজার সামনে গিয়ে নক করলো নিহাল। ভেতর থেকে আবার সেই গো গো শব্দটা হলো। মনে হচ্ছিলো কেউ মুখ চেপে ধরে আছে কারও। নিহাল এবার জোড়ে জোড়ে ধাক্কা দিতে থাকলো দরজায়। সেই সাথে তনুও মাহিয়ার নাম ধরে চিৎকার করতে থাকলো। একসময় ভেতর থেকে কারো ব্যাথা পাওয়ার চিৎকার এবং তার পরক্ষণেই ওপাশ থেকে সিটকেনি খোলার আওয়াজ পাওয়া গেল। দরজা খুলতেই নিহাল আর তনুর সামনে এক ভয়ার্তক দৃশ্য দাড়িয়ে পড়লো। বেহাল অবস্থায় মাহিয়া ওদের সামনে দাড়ানো। চুল সম্পূর্ণ আওলা, কামিজের কয়েকটা জায়গা ছেড়া, হাতে আর ঘাড়ে লাল খামচির দাগ। রক্ত লেগে আছে কয়েক জায়গায়। ফ্লোরে ওর ওরনাটা ফেলানো। পেছনে শাহেদ নিজের ডান হাতটা ধরে ব্যাথায় কোকাচ্ছে।
মাহিয়া তনুকে দেখেই জড়িয়ে ধরলো। তনুও আগলে নিল ওকে। নিহালের মাথায় তখনো পুরোপুরি সব ঢুকছিল না। ও প্রথমে মাহিয়ার ওরনাটা তুলে ওর গায়ে জড়ায়ে দিল। ততক্ষণে শাহেদ সামলে নিয়েছে নিজেকে,
-ইউ বিচ! আমার বাসায় এসে আমাকেই সিডিউস করে। জানিস নিহাল, এই মেয়েটা আমাকে এই রুমে নিয়ে এসেছিল। আমার সাথে সেক্স করার জন্য তখন থেকে জোর দিচ্ছিলো। আমি চাই নাই করতে তাই এখন আমাকে ফ্রেম করতে…
শাহেদ বুঝতেই পারলো না কোন দিক থেকে জোড়ে ওর গালে একটা ঘুষি পড়লো। চোখে তারা দেখার মতন অবস্থা হয়ে গেল ওর। আবার আরেক গালে ঘুষি খেল ও। আবার আরেকটা। এভাবে নিহাল ওকে কতোবার মারলো তার হিসাব ছিল না। তনু না থামালে নিহাল মনে হয় শাহেদকে মেরেই ফেলতো সেই দিন। তনু নিহালকে যখন জানালো যে মাহিয়া অজ্ঞান হয়ে গেছে, ও শাহেদ কে শুধু এইটুকু বললো যে এইটার শেষ ও দেখে ছাড়বে। শাহেদকে নিহাল ছাড়বে না।
তারপর মাহিয়ার কাছে গিয়ে ওকে কোলে নিয়ে ওই বাসা থেকে বের হয়ে গিয়েছিল নিহাল। হাসপাতালেই যেতে চাচ্ছিলো ওরা কিন্তু রাস্তাতেই মাাহিয়ার জ্ঞান ফিরে। তনুকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়লো ও। তনুর ডিরেকশনে সোজা মাহিয়ার বাসায় চলে এসে থামলো নিহাল। মাহিয়ার বাবা মা একটা মেডিকেল কন্ফারেন্সে যাওয়ায় বাসায় মাহিয়ার সাথে তনুই ছিল। মাহিয়াকে রুমে নেওয়ার সময় নিহাল তনুকে বললো, ভালো করে ওর যত্ন নিতে। যতক্ষণ ওরা ভেতরে ছিল, নিহাল মাহিয়াদের ড্রয়িং রুমেই বসে রইলো। প্রায় এক ঘন্টা পর রুম থেকে বের হলো তনু। জানালো যে মাহিয়ার অবস্থা ভালো না। ওকে সব ঠিকঠাক করে দিয়েছে তনু কিন্তু অনেক বেশী শক্ড হয়ে আছে মাহিয়া যার কারণে অসম্ভব ভাবে কাঁপছে ও। নিহাল এটা শুনে দৌড় দিল ভেতরে। মাহিয়া কম্বল মুড়ি দিয়ে বসা থাকলেও ওর সারা শরীর কাঁপছিল। নিহাল তনুকে বললো ওকে জড়ায় ধরতে। তনু ধরতেই চিৎকার করে কেঁদে উঠলো মাহিয়া। নিহালের সেই ভয়াবহ মুহূর্তটা আজও মনে আসলে গা শিউরে উঠে। সেই রাতে বাড়ি ফেরেনি নিহাল। অনেক কষ্ট করে, নানান কিছু বুঝিয়ে সুঝিয়ে মাহিয়াকে ঘুম পাড়িয়েছিল ও আর তনু মিলে। রাতে যদি আবার কোনো সমস্যা হয় এই ভেবে মাহিয়াদের ড্রয়িংরুমেই বসে ছিল ও সকাল হওয়ার আগ পর্যন্ত। সকালে তনু উঠে জানালো, মাহিয়া কথা বলতে পারছে। যেই ভয়টা ওরা পেয়েছিল সেটা হয়নি। শাহেদ অতদূর যাওয়ার আগেই নিহাল আর তনু রুমের সামনে চলে এসেছিলো। হাফ ছেড়ে বেঁচেছিল নিহাল তখন। সারারাতের সব ভয়, শঙ্কা দূর হয়েছিল সেই সময়।
তবে সেই রাতের পর থেকে মাহিয়া বদলে গেল। আগের মাহিয়াটা কই যেন হারিয়ে গিয়ে ওর জায়গায় কেউ নতুন এসে বসলো। এই মাহিয়ার মাঝে নিহাল কোনো চঞ্চচলতা, দুষ্টুমি খুজে পায় না। এই মাহিয়া চুপচাপ, কম কথা বলে। এই মাহিয়া কেমন যেন…
নিহাল সেইদিন সকালে তনুর কাছ থেকে মাহিয়ার খবরটা নেওয়ার পর সোজা পুলিশের কাছে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু তনুই আটকে দিল ওকে। বললো, মাহিয়ার রেপ হয়নি। হলে অবশ্যই শাহেদকে গ্রেফতার করার দরকার হতো। কিন্তু এখন পুলিশের কাছে যাওয়া মানেই মাহিয়ার এবং ওর পরিবারের বদনামি আর হ্যারাসমেন্ট। মেয়েটা এমনিতেই শক্ড, পুলিশের জেরা ও সহ্য করতে পারবে না। আরো অনেক বোঝানোর পর নিহাল পুলিশের কাছে যাওয়ার বিষয়টা বিবেচনা থেকে বাদ দিয়েছিল। কিন্তু শাহেদকে তো ও ছাড়বে না। তনুকে সবসময় মাহিয়ার পাশে থাকতে আর কোনো দরকারে নিহালকে ফোন দেওয়ার কথা বলে নিহাল বের হলো বাসা থেকে। সোজা পৌছালো শাহেদের বাসায়। কিন্তু সেখানে যেয়ে শুনলো শাহেদ নাকি আজ ভোরেই চলে গেছে ওর বাবা মায়ের কাছে। নিহাল তখন ভেবে পাচ্ছিলো না যে নিহালের কাছ থেকে এতো মার খেয়ে শাহেদ ওর বাবা মার কাছে গেল কি করে? পরে অবশ্য জেনেছিল ও যে শাহেদকে রক্তিম নামের ওদের এক বন্ধু সেই রাতে সাহায্য করেছিল। রক্তিমকে শাহেদ অন্য একটা মিথ্যা বলেছিল মারপিটের কারণ হিসাবে। রক্তিমই নাকি ফার্স্ট এইড করে দিয়েছিল শাহেদের শরীরে। পরে ভোর বেলা ওদের দেশের বাড়ি পৌছে দিয়েছিল শাহেদকে।
শাহেদকে নিহাল আর দেখেনি সেইদিনের পর থেকে। এক মাস পর শুনেছিল ও দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। শাহেদের জন্য একদিক দিয়ে ভালোই হয়েছিল। নিহাল ওকে দ্বিতীয় বার সামনে পেলে শাহেদের বাঁচা দায় হয়ে পড়তো।
হঠাৎ পাখির কিচিরমিচিরের শব্দে বর্তমানে ফিরে এসেছিল নিহাল। ভোর হতে আর বেশি দেরী নেই। রুমে ঢুকে খাটে শুতে গিয়েছিল ও। তবে কেন যেন মাহিয়ার পাশে শুতে লজ্জা লাগলো ওর। পরে স্টাডি টেবিলেই চেয়ার টেনে বসে পরলো।
মাহিয়া যখন গোসল করে, শাড়ি পরে বের হলো তখনো স্টাডি টেবিলেই বসা নিহাল। মাহিয়া দরজা খুলে যেই না বের হয়েছিল, অমনি নিহালের চোখ আটকে গিয়েছিল ওর ওপর।
চলবে….