রুপকথা পর্ব ৫
মাহিয়া একটা গোলাপির মাঝে সোনালি পাড়ের শাড়ি পরে ড্রেসিংরুম থেকে বের হলো। নিহাল তখনো স্টাডি টেবিলেই কাজ করছিল। মাহিয়ার বের হওয়াতে নিজের অজান্তেই ওর ওপর চোখ পড়ে গেল নিহালের। দুই মুহূর্ত থমকে গেল ও। এই রঙটায় অস্বাভাবিভাবে সুন্দর লাগছিল মেয়েটাকে। গোলাপি ব্লাউসের হাতার নিচে হাতটা আরও ফর্সা মনে হচ্ছিলো।
নিহালের চোখে চোখ পড়লো মাহিয়ার। এটা দেখে নিহাল চোখ সরিয়ে ফেললো।
মাহিয়া ড্রেসিংটেবিলের কাছে যেয়ে চুল আচড়ে হাল্কা একটু মেকাপ করে নিল। নিহাল মাহিয়ার পিঠাপিঠী বসা ছিল। নিহালের সামনের ল্যাপটপে মাহিয়ার আবছা অবয়ব বোঝা যাচ্ছিলো দেখে স্ক্রিনটা বন্ধ করে দিল নিহাল। এবার মাহিয়ার সাজার মুহূর্তগুলো ল্যাপটপের কালো স্ক্রিণে ফুটে উঠলো নিহালের সামনে। চুপচাপ সেইদিকে তাকিয়ে রইলো নিহাল। মাহিয়া হাতে চুড়ি পড়ার মুহূর্তটা মনকাড়া লাগলো ওর। এই চুড়িভরা হাতটাই নিহালের প্রথম নজর কেড়েছিল সেই পহেলা বসন্তে।
মাহিয়া এরপর নিজের চুলে টাওয়েল চড়ালো। আশ্চর্য রকমের সুন্দর লম্বা চুল মাহিয়ার। ভেজা অবস্থায় খুবই মোহনীয় লাগছে। নিহালের প্রবল ইচ্ছা হচ্ছিলো মাহিয়ার চুলগুলো ধরতে, ওর হাত থেকে টাওয়েল টা নিয়ে আলতো করে পানিগুলো মুছে দিয়ে আদর করে ওকে শাষন করতে যে চুলে পানি থাকলে ওর ঠান্ডা লেগে যাবে। কিন্তু সেই অধিকার নিহালের নেই এটা ও জানে। কখনো হবেও কি না তা নিয়ে বেশ সন্দেহ আছে ওর।
মাহিয়া, সাজ শেষ হওয়ার পর বিছানাটা গুছিয়ে নিজের সুটকেসটা ঠিক করতে বসলো। নিহাল দেখছিল যে ওর সুটকেসের জিনিস গুলো আউলিয়ে গিয়েছে একদম। এরই মাঝে দরজায় টোকা পরায় ওইদিকে তাকালো দুইজন। নিহাল যেয়ে দরজা খুললে রুমে ঢুকলো নামিরা,
– গুড মর্নিং। মাহিয়া ভালো হয়েছে ঘুম আপু?
নামিরার সাথে ওদের কাজিন শান্তাও এসেছিল। সে মজা করে বললো,
কি যে বলো না আপু তুমি? কাল রাত কি ঘুমানোর রাত ছিল নাকি? আই এ্যাম শিওর নিহাল ভাইয়া, ভাবিকে ঘুমাতেই দেয় নাই।
– এই চুপ কর্ শান্তা। আর আমার ভাবীটাকে লজ্জা দিস নাতো? মাহিয়া, আম্মু তোমাদেরকে নাস্তার টেবিলে আসতে বলেছে। রেডি হয়ে এসে পড়।
মাহিয়া ঝটপট বললো,
-আপু, আমি রেডি হয়ে গিয়েছি। চলেন আপনার সাথেই যাই।
-বাহ্। আচ্ছা চলো। নিহাল চল্?
-আপু তোমরা যাও। আমি আসছি একটু পরে।
নামিরাদের সাথে মাহিয়া ডাইনিং টেবিলে আসলো। ওখানে বড়রা আগেই এসে বসেছেন। সবাইকে মাহিয়া একে একে সালাম করলো। কিছুক্ষণের মধ্যে নিহালও চলে আসলো ওখানে। একসাথে সবার নাস্তার পরে নতুন জামাই বউকে নিয়ে চললো ড্রয়িংরুমে জম্পেশ আড্ডা। নিহাল লক্ষ্য করলো, মাহিয়া সবার মাঝে বেশ মজা পাচ্ছিলো। ছোট ছোট কাজিনদের কৌতুকে হাসছিল ও। আগের সেই হাসিটা না থাকলেও মাহিয়ার এই হাসিটাও কম সুন্দর না। নিজের অজান্তেই ওর দিকে তাকিয়ে নিহালও হাসি ফুটিয়ে তুললো নিজের ঠোঁটে।
এই আড্ডা বেশ কিছুক্ষণ চলার পরে যে যার মতন আলাদা হয়ে গেল। মাহিয়া এই ফাঁকে একটু রুমে আসলো নিজের সুটকেসটা গোছাতে। এসেই রুমের অবস্থা দেখে অবাক হলো ও। বিছানায় নিহালের অনেক কাপড় স্তুপ করে রাখা আর আলমারির একটা পাল্লা খোলা। কাছে যেয়ে ভেতরে উকি দিয়ে দেখলো মাহিয়া যে আলমারির ওই পার্টটা একদম ফাঁকা।
-আমি এই পার্টটা তোমার কাপড়ের জন্য খালি করে দিয়েছি মাহিয়া। তুমি তোমার মতন করে গুছিয়ে নাও।
পেছনে ফিরে তাকালো মাহিয়া। নিহাল রুমে ঢুকে ওর পাশে এসে দাড়িয়েছে ।
-জানি জায়গাটা একটু ছোট তোমার জন্য। আসলে এতোদিন তো ব্যাচেলার্স রুমই ছিল এটা, তাই সরঞ্জামও সেরকম। আস্তে আস্তে তোমার পছন্দ অনুযায়ী রুমটা সাজিয়ে নিও তুমি। যা দরকার মনমতো অর্ডার দিয়ে দিও।
মাহিয়া মাথা নিচু করে কথাগুলো শুনলো। যে কোনো নতুন বউয়ের এই কথাগুলো ভালো লাগবে নিজের স্বামীর মুখ থেকে শুনতে তবে ওর ক্ষেত্রে সেটা প্রযোজ্য ছিলো না। মাহিয়া নিহালের রুমকে কখনো নিজের করতে পারবে বলে মনে হয় না। কারণ ও জানে নিহাল এগুলো করে শুধুই ওকে সিম্প্যাথি দেখাচ্ছে। আর এই সিম্প্যাথি গায়ে মাখানোর ইচ্ছা মাহিয়ার একদমই নেই।
মাহিয়ার বাসায় নিহালের প্রস্তাব আসার দিন অথইয়ের সাথে যা কথা হয়েছিল তা খুব ভালোভাবে মনে গেথে গেছে মাহিয়ার। অথই বলেছিল নিহাল মাহিয়াকে দয়া দেখিয়ে বিয়ে করছে। তখন খুব শক্ড হলেও পরে ভেবে দেখেছিল মাহিয়া। অথই ভুল বলেনি। নিহাল আসলেই এইটাই করছিলো ওর সাথে। আফটার অল, নিহাল একদম গোড়া থেকে মাহিয়ার ওই ঘটনার সাথে ইনভলভ্ড। ও মাহিয়ার ভেঙে পড়া সম্পূর্ণ রুপে দেখেছিলো। শাহেদের অত্যাচারের শারীরিক প্রমানটা পর্যন্ত নিহাল প্রত্যক্ষ করেছে মাহিয়ার হাতে আর গলায়। তাই হয়তো ও মনে করেছিল মাহিয়ার জীবনের আর কোনো ভবিষ্যত নাই। ওই নাহয় একটা গতি করে দিক।
বাবা মাকে প্রথমে যেয়ে বলতে চেয়েছিল মাহিয়া যাতে এই সন্মন্ধটা তারা সম্পূর্ণ রুপে মানা করে দেয়। কিন্তু না করার পেছনের যথাযথ কারণ দেওয়ার মতন অবস্থা ছিল না ওর। কি বলবে মা, বাবাকে? সেই ঘটনা তো বলতে পারবেই না। আর নিহালের মতন সব দিক থেকে গুণি ছেলেকে এমনি এমনি না করতে দেবেনা মাহিয়ার বাবা মা। তাই মাহিয়া কোনো ঝামেলায় না গিয়ে বিয়েতে রাজি হয়ে গিয়েছিলো।
বিছানায় রাখা কাপড়ের দিকে তাকালো মাহিয়া,
– এই কাপড়গুলো কোথায় রাখবা তাহলে?
– হমম। দেখি একটা ব্যবস্থা করে ফেলবো। আপাতত একসাইডে থাকুক। তুমি ওগুলো নিয়ে চিন্তা করো না। আইল ফাইন্ড আ ওয়ে।
নিহাল তারপরে মাহিয়াকে রুমে রেখে ওখান থেকে চলে গেল।
বিয়ের পরের এক দুই সপ্তাহ নানান দাওয়াত আর অনুষ্ঠানের মাঝেই কাটতে থাকলো নিহাল আর মাহিয়ার। এর মাঝে দুই দিন মাহিয়ার বাসাতেও যেয়ে থাকলো ওরা। মাহিয়ার বাবা মা নিহালকে জামাই হিসাবে পেয়ে অসম্ভব খুশি।
দিন ঘুরে সপ্তাহ আর সপ্তাহ ঘুরে মাসে পড়লো। মাহিয়া আস্তে আস্তে করে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করছিল। এবং এখন হয়েও গেছে অনেকটা। বিয়ের প্রথম সপ্তাহের মতন অতোটা খারাপ ওর লাগে না। তবে মাঝেমধ্যে কষ্ট হয়ে যায়। কষ্ট মনে হয় নিহালেরও হয়। যেমন সারাদিন সবার সাথে দুইজন পাশাপাশি থেকে মজা করলেও রাতে রুমে একা হলেই কথা বলতে পারে না ওরা। কেমন একটা জড়তা কাজ করে নিজেদের মাঝে। প্রথম কয়েকদিন তো মাহিয়া দেখেছে, নিহাল ওর পাশে ঘুমোতেই পারেনি। রুমের ডিভানেই শুতো। তাও আবার বেশ রাতে। পরে মাহিয়া নিজেই নিহালের সাথে এই ব্যাপারে কথা বললো একদিন।
নিহাল বরাবরের মতন ল্যাপটপে, কাজে ব্যস্ত ছিল সেইসময়। রাত আনুমানিক দুইটা। মাহিয়া শুয়ে ছিল অন্য পাশ ঘুরে। অপেক্ষা করছিল দেখার জন্য যে নিহাল কি করে।
যখন দুইটার পরেও নিহালের কোনো সারা শব্দ পেল না, তখন নিজেই উঠে ধীর পায়ে ওর কাছে গেল। নিহাল কাজে এতই মগ্ন ছিল যে প্রথমে বুঝতেই পারে নি, ওর পেছনে মাহিয়া এসে দাড়িয়েছে,
– নিহাল?
ঝট করে পেছনে তাকালো নিহাল। মাহিয়াকে দেখে ভিষণ অবাক হলো,
-তুমি ঘুমাওনি? কিছু লাগবে?
– না, আসলে একটু কথা ছিল।
-বলো।
– তোমার রুমে এসে আমি মনে হয় তোমাকে হ্যাসেলে ফেলে দিয়েছি। তুমি রাতে ঠিক করে ঘুমাতে পর্যন্ত পারছো না। তুমি কিন্তু… বিছানার আরেক পাশে শুয়ে পড়তে পারো। আই মিন তুমি যদি আমার কথা চিন্তা করে না শুয়ে…
মাঝ পথে মাহিয়াকে থামিয়ে দিল নিহাল,
-আরে না না। সেরকম কিছু না। আমি এমনিতেই রাত জাগি। তারওপর এই বিয়ের সময়ে অফিসের কাজ একদম ধরতে পারি নি। তাই সেইগুলো রাতে বসে ঠিক করতে হচ্ছে। তার ওপর সামনে সেমিস্টার শুরু হয়ে যাচ্ছে। তখন সব মিলিয়ে ঝামেলায় পড়ে যাব। তাই আগে থেকেই একটু গুছিয়ে নিচ্ছি। তুমি আমাকে নিয়ে চিন্তা করো না। আই এ্যাম ফাইন।
মাহিয়া নিহালের কথায় হাল্কা একটা হাসি দিল। নিহাল ওকে চিন্তামুক্ত করার জন্য এগুলোই বলবে, ও সেটা জানে।
পেছন ঘুরে যেই বিছানার দিকে পা বাড়াবে তখনই আবার থামতে হলো নিহালের আওয়াজে।
-মাহিয়া একটু শোন।
ঘুরে তাকালো মাহিয়া,
– এই বাসাটা, এখানের মানুষ সবাই তোমার জন্য নতুন। এডজাস্ট হতে সময় লাগাটাই স্বাভাবিক। আমি অফিস, পড়াশোনা সব মিলিয়ে খুব ব্যাস্ত থাকি তাই তোমার খেয়াল ঠিক মতন রাখতে হয়তোবা পারছি না। তাই যখন যা দরকার, যখন যে কোনো সমস্যা ফিল করো আমাকে নিজ থেকে সব জানাবে। আই উইল টেইক কেয়ার অফ ইট।
নিহালের চোখের দিকে নিজের চোখ কিছুক্ষণের জন্য আটকালো মাহিয়া। তারপর নামিয়ে নিয়ে শুতে চলে গেল। শোয়ার বিষয়টা নিয়ে আর ঘাটাবে না ঠিক করলো ও।
তবে ঘাটানো আর লাগলোও না। কিছুক্ষণ পরেই নিহাল এসে মাহিয়ার পাশে শুয়ে পরলো। ব্যাপারটা দেখে মাহিয়ার একটু মজা লেগেছিল তখন। নিজেকেই মনে মনে বলেছিল ও,
– এহ! আসছে অনেক অফিসের কাজ সামলাতে! খুব নাকি তিনি রাত জাগেন! আজও না কথা বললে ঠিকই ওই ডিভানে রাত কাটতো ওনার।
নিহাল আর মাহিয়ার মাস্টার্সের নতুন সেমিস্টার শুরু হয়ে গিয়েছিল এর মাঝেই। নিহালের এটাই শেষ সেমিস্টার আর মাহিয়ার দ্বিতীয়। দুইজন আলাদা ডিপার্টমেন্টের হলেও, ক্লাস টাইমগুলো এক হওয়ায় একসাথেই যাওয়া আসা করতে লাগলো ওরা। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নিহাল অফিসে থাকতো। বাসায় এসে লাঞ্চ করে চারটার মধ্যে রেডি হয়ে বের হয়ে যেত দুইজন। ক্লাস থাকতো ছয়টা থেকে। নয়টায় ক্লাস শেষ হলে একসাথেই আবার ফিরে আসতো।
সেমিস্টার শুরু হয়ে যাওয়াতে পড়াশুনার মাঝে অনেক ব্যস্ত হয়ে পড়লো মাহিয়া। আর নিহালের তো পড়াশোনার পাশাপাশি ফ্যাক্টরির কাজও চলছিল। তবে মাহিয়া একটা জিনিস খুব লক্ষ্য করছিল আর তা হলো, এত ব্যাস্ততার মাঝেও নিহাল ওর অসম্ভব খেয়াল রাখে। মাহিয়ার ছোট থেকে ছোট জিনিসের প্রতি নজর থাকে ওর। ইতি মধ্যেই ওদের রুমে নিহালের আগের ফার্নিচার সরিয়ে মাহিয়ার সুবিধা অনুযায়ী নতুন জিনিস সেট করা হয়েছে। মাহিয়াকে আয়েশা দোকানে নিয়ে গিয়ে সব অর্ডার দিয়ে এসেছিলেন। নিহালই নাকি তাকে বলে দিয়েছিল সব কিছু।
আশবাবপত্র ছাড়াও আরও অনেক কিছুরই কেয়ার করে নিহাল। যেমন মাহিয়ার সি ফুড খুব পছন্দ, এটা অনার্সে থাকতেই জেনেছিল নিহাল। তাই সপ্তাহে অন্তত একবার হলেও কোনো না কোনো বাহানায় বাসায় সি ফুড অর্ডার দেওয়া হয় অথবা বাজারের লিস্টে সি ফুডের কোনো আইটেম অবশ্যই রাখা হয়। মাহিয়া চুপচাপ শুধু অবসার্ভ করছিল এগুলো, কোনোকিছুই বলতো না।
কখনো বাইরে কারো সাথে ওদের দেখা হলে অথবা কোনো প্রোগ্রামে কারো সাথে পরিচয়ের সময় নিহাল মাহিয়া কে পাশে নিয়ে খুব সুন্দর ভাবে নিজের স্ত্রী বলে সন্মোধন করতো। আস্তে আস্তে কেন যেন এ কথাটা শুনতে খারাপ লাগতো না মাহিয়ার। এই অধিকার খাটানোটাই স্বাভাবিক মনে হতে লাগলো ওর কাছে।
এই সবের মাঝেই প্রায় আড়াই মাস হয়ে গিয়েছিল ওদের বিয়ের। ইতিমধ্যে সেমিস্টারও মাঝামাঝিতে চলে এসেছিল। মিড সামনে। একদিন বাসায় মাহিয়া পড়াশুনা করছিল মিডের জন্য। অফিস থেকে নিহালের ফোন এলো তখন,
-হ্যালো।
-হ্যালো, কি অবস্থা? বাসায়?
-হ্যা।
-কি করো?
-পড়ছি মিড এর জন্য।
– তাও ভালো। আমার তো পিপ্রারেশনের প টাও হচ্ছে না। আচ্ছা আম্মুকে ফোনে পাচ্ছি না। একটু আম্মুকে বলো তো ফোনটা ধরতে।
-মা তো বাসায় নেই। বড় খালার বাসায় গেছেন। বলে গেছেন দেরী হবে আসতে।
– ও আচ্ছা। ঠিকাছে, খালার বাসায় ফোন দিচ্ছি আমি।
মাহিয়া ফোন রাখতে যাবে নিহাল আবার ওকে ডাকলো,
– মাহিয়া
– হ্যা
– তুমি কি কোথাও বের হবা?
-না। বাসাতেই আছি।
– ওকে।
নিহালের সাথে কথা বলে আবার পড়ায় মন দিয়েছিল মাহিয়া। কখন যে দুই ঘন্টা পার হয়ে গেছে খেয়াল হলো বেলের আওয়াজে। শাশুরি এসেছে ভেবে দরজা খুললো ও। সামনে একজন অচেনা লোক একটা বড় ফ্লাওয়ার বুকে নিয়ে দাড়ানো। মাহিয়া অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো তাকে,
-কাকে চাচ্ছেন?
– আপনি মিসেস মাহিয়া রহমান?
– জ্বি
– ম্যাম এটা আপনার জন্য।
বলেই লোকটা বিশাল একটা হাসি দিয়ে ফুলের তোড়াটা মাহিয়ার দিকে এগিয়ে দিল।
মাহিয়া সম্পূর্ণ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো,
– আমার জন্য? কে পাঠিয়েছে?
লোকটা রিসিট দেখে বললো,
– মিস্টার নিহাল রহমান।
মাহিয়া স্তম্ভিত হয়ে গেল । রিসিটে সাইন করে দরজা বন্ধ করে দিয়ে ফুলগুলোর দিকে তাকালো ও। অনেকগুলো এক্সোটিক ফুল দিয়ে বানানো হয়েছে বুকেটা। প্রায় প্রত্যেকটাই মাহিয়ার পছন্দের। আজব তো? নিহাল জানলো কি করে যে মাহিয়ার এই ফুলগুলো খুব ভালো লাগে?
চলবে……