রুপকথা পর্ব ৯
মেসেজটা পড়ে ভুরু কুচকে গেল মাহিয়ার। ঘড়ির দিকে তাকালো ও। এগারোটা ছেচল্লিশ বাজে। এই মেসেজটা এসেছে আরও এক মিনিট আগে, তার মানে এগারোটা পয়তাল্লিশে। লেখাও তাই দেখাচ্ছে। মেসেজটা আবার পড়লো মাহিয়া,
– 15 more minutes to go. A special day of an awesome girl is about to begin.
মেসেজটা আবার পড়লো মাহিয়া। তারপর চুপচাপ চিন্তা করতে বসলো। আর পনেরো মিনিট পরে তো রাত ১২ টা মানে আরেকটি নতুন দিন শুরু হবে আর সেটা হলো ওর জন্মদিন। সো এই মেসেজটা ওর জন্মদিনকে ঘিরে করা। কিন্তু এটার প্রেরক কে? নাম্বারটা তো পুরাই অচেনা।
মাহিয়ার মনে নিহালের নামটাই কেন যেন প্রথমে আসলো। উকি মেরে নিহালের দিকে তাকালো ও। ছেলেটা নিজের স্টাডি টেবিলে বসে আপন মনে ল্যাপটপে কাজ করছে। কাজ করছে না মেসেজ লিখছে? এখান থেকে তো বোঝাও যাচ্ছে না। আরও একটু কাত হলো মাহিয়া দেখার জন্য। নিহাল ল্যাপটপেই কাজ করছে। মনে মনে বললো মাহিয়া,
– নাহ্ ও না। আর ও হবে কেন? আমার জন্মদিন যে কালকে এটাই মনে হয় জানে না ও।
আবার নিজের ফোনের দিকে তাকালো মাহিয়া। কে এটা?
পাঁচ মিনিট পর আবার মেসেজ আসলো। সেইম নাম্বার থেকে।
– 10 more minutes.
নড়েচড়ে বসলো এবার মাহিয়া। এটা কে করছে? কেন যেন মনে হচ্ছে নিহাল এটার সাথে জড়িত।
-নিহাল?
-হমম?
– কি করো?
– অফিসের কাজ।
-ওওও
ওর সুইভলিং চেয়ারটা ঘুড়িয়ে মাহিয়ার দিকে ঘুরলো নিহাল,
– কেন? কিছু দরকার?
– না… মানে। না কিছু না।
– তুমি ঘুমাওনি কেন? রাত অনেক হয়ে গেসে তো।
– হ্যা এখনি শুবো।
– ওকে। গুড নাইট।
এই বলে নিহাল আবার ঘুরে গেল ওর পড়ার টেবিলের দিকে।
পাঁচ মিনিট পরে আবার মেসেজের টুংটাং শব্দ। এবার ফোনটা হাতেই নিয়ে ছিল মাহিয়া। ওর বিষয়টা বেশ এক্সাটিং লাগছিল। কেউ একজন ওর জন্মদিনের কাউন্টডাউন করছে। মেসেজটা খুললো মাহিয়া।
– 5 minutes more to go.
এবার খাট ছেড়ে উঠলো মাহিয়া। হোক না হোক এটা নিহালের কাজ। সরাসরি নিহালের টেবিলের পাশে যেয়ে দাড়ালো ও।
– নিহাল কি করছো তুমি?
অবাক হয়ে যায় নিহাল।
– অফিসের কাজ করছি আর কি? বার বার জিজ্ঞেস করছো কেন?
– তোমার ফোন কোথায়?
-মানে?
– মানে তোমার ফোন লাগবে আমার।
-কেন?
-কাজ আছে।
নিহাল এক মুহূর্ত চুপ রইলো।
– বেড সাইড টেবিলে রাখা আছে চার্জে। নিয়ে নাও ওখান থেকে।
ওইদিকে তাকালো মাহিয়া। আসলেই ওর মোবাইল ওখানে। এতোদূর থেকে তো ও আর মেসেজ করতে পারবে না। একবারো এই টেবিল ছেড়ে উঠতে দেখেনি ওকে মাহিয়া।
-মাহিয়া? এই মাহিয়া? কি হইসে বলোতো?
-হমম? না কিছু না। এমনেই একটা জিনিস মনে পড়লো। তাই… আচ্ছা যাই শুইতে আমি। তুমিও শুয়ে পইরো।
এই বলে বিছানায় আবার বসলো মাহিয়া। মন কিছুটা নিরাশ হলো ওর। নিহাল হতেই পারে না। কনফার্ম। হওয়ার কোনো কারণই নেই। বেশী বেশী আশা করছে ও নিহালের থেকে। নিজের মোবাইলের দিকে তাকালো একবার। এগারোটা ঊনষাট। আর নতুন কোনো মেসেজ আসেনি। একটু হতাশ হলো মাহিয়া।
হঠাৎ আরেকটা মেসেজ এর আওয়াজ আসলো। সেই নাম্বার থেকে। ঝট করে ওপেন করলো মেসেজটা মাহিয়া। এবারেরটা একটা ভিডিও মেসেজ। দশ সেকেন্ডের কাউন্টডাউন হচ্ছে,
10
9
8
7
6
5
4
3
2
Happy Birthday To You. Happy Birthday To You. Happy Birthday Happy Birthday. Happy Birthday To You.
গানের সুরে রুমটা ভরে গেল পুরা। মাহিয়া পুরা নির্বাক হয়ে ভিডিওটার দিকে তাকিয়ে ছিল। চুপচাপ শুধু দেখেই যাচ্ছিলো ও। ঘটনার আকস্মিকতা ঘিরে ফেলেছে ওকে। ওর জীবনের সবচাইতে সুন্দর উইশ এটা। কিন্তু এভাবে করে ওকে কে সারপ্রাইজ দিচ্ছে?
গানটা শুনে নিহাল অবাক হয়ে তাকালো ওর দিকে।
-মাহিয়া? বার্থডে সং কেন বাজছে তোমার মোবাইলে?
– মমম… আজ আমার জন্মদিন নিহাল।
– তাই নাকি? আরে আমি তো জানতামই না। আগে বলবা না? তাহলে একটা কেক নিয়ে আসতাম তোমার জন্য।
আরে দেখ, আমি কথা বলেই যাচ্ছি।
নিহাল চেয়ার থেকে উঠে মাহিয়ার পাশে এসে নিজের হাত বাড়িয়ে দিল।
– হ্যাপি বার্থডে মাহিয়া। মে ইউ হ্যাভ আ লঙ এ্যান্ড ব্লেস্ড লাইফ।
ওর হাত নিজের হাতে নিয়ে ঝাকিয়ে দিল নিহাল। মাহিয়া শুধু শুকনা একটা হাসি দিয়ে থ্যাঙ্কস বললো।
-আচ্ছা বলো, কালকের দিনটা কিভাবে সেলিব্রেট করতে চাও।
– না না, কিছুই করবো না আমি। তুমি কোনো ঝামেলার মাঝে যেও না।
-আচ্ছা সেটা দেখা যাবে পরে। সকালটা হোক। এখন শুয়ে পর।
নিহাল চলে যাওয়ার পরও শুয়ে শুয়ে মাহিয়া মেসেজগুলো দেখতেই থাকলো। খুব ভালো লাগছিল ওর। এতো সুন্দর করে কয়জন জীবনে বার্থডে উইশ পেয়েছে তা ওর সন্দেহ আছে। তবে এটা করলো কে?
একবার চিন্তা করলো মাহিয়া ফোন দিবে ওই নাম্বারে। পরপরই চিন্তাটা বাতিল করলো ও। এভাবে ফোন করাটা ভালো দেখায় না। তার চাইতে থ্যাঙ্কস লিখে একটা মেসেজ দেয়া যেতে পারে। হমম, এটাই ভালো হবে।
যেই ভাবা সেই কাজ। মোবাইলটা হাতে নিল মাহিয়া।
– thank you for the wish. may। know who is this?
কিছুক্ষণ কোনো উত্তর আসলো না। তারপর,
– ভালো লাগলো জেনে যে আমার উইশটা তোমার পছন্দ হয়েছে। আমাকে কি চেনাটা খুব জরুরী?
– যে আমাকে উইশ করলো, তাকে চেনাটা কি আমার দরকার না?
– do you really want to know who I am? think once again.
– what’s there to think?। definitely want to know.
-ok then. I will reveal myself in the morning. now sleep tight and Happy Birthday.
মাহিয়া মেসেজটা পড়ে একটু বিরক্ত হলো। আরে এতো সাসপেন্সের কি আছে রে বাবা? বলে দিলেই তো হয় সে কে। বোঝাইতো যাচ্ছে পরিচিত কেউ। আশ্চর্য! আসলে মেসেজটা দেয়াই ভুল হয়েছে।
এইসব সাতপাঁচ চিন্তা করতে করতেই ঘুমিয়ে পড়লো মাহিয়া। তবে ঘুমানোর আগে ওর একবার নিহালের হাসিটা দেখা উচিৎ ছিলো।
সকালে নাস্তার টেবিলে নিহাল সবাইকে জানালো যে আজ মাহিয়ার জন্মদিন। শুনেই আয়েশা ব্যস্ত হয়ে নিজের বউকে জড়িয়ে ধরলেন আর নিহালকে বকতে থাকলেন ওনাদেরকে আগে এই ব্যাপারে না জানানোর জন্য। তারপর মাহিয়াকে কাছে নিয়ে বললেন তিনি,
-আম্মু আজকে রাতে তোমার জন্য অনেক বড় করে একটা পার্টি দিব আমি। বিয়াই, বিয়াইনকেও দাওয়াত দিব। এই নিহাল, নাবিল তোরা দুইজন সব অর্গানাইজ কর। আর তোদের ফ্রেন্ডসদের সবাইকে ডাকবি।
ভীষণ বিব্রতি তে পড়লো মাহিয়া এসব শুনে।
– মা, এতসব করার কোনো মানেই হয় না। আমি কি বাচ্চা নাকি?
– তুমি আমার বউ মাহিয়া, এন্ড দ্যাট মেকস্ ইউ স্পেশাল টু আস আম্মু। তোমার বিয়ের পর প্রথম জন্মদিন এমনেই কেটে যেতে আমি দেব না। নাবিল, বাসায় করি নাকি বাইরে, কি বলিস?
– আম্মু বাসায় তো খাওয়া হয়ই আমাদের। আজ ভাবির বিডে টা বাইরে কোথাও সেলিব্রেট করি চলো। ভাবী বলো তোমার ফেভারিট কুইসিন কি?
-হমম… সিফুড।
– ওকে ডান। তাহলে আমি সেই অনুযায়ী ভেন্যু ঠিক করছি। তোমরা তোমাদের ফ্রেন্ডসদের এ্যামাউন্ট জানিয়ে দিও।
এইসব কথার পর নিহাল আর নাবিল যে যার মতন, অফিস আর ভার্সিটির জন্য বাসা থেকে বের হয়ে গেল।
মাহিয়া নিজের রুমে যেয়ে দোলনায় বসলো। মন খারাপ হয়েছে ওর। একটু না বেশ। কেন যেন ও আশা করেছিল নিহাল স্পেশাল কিছু ওর জন্য করবে। বাস্তবে করার যদিও কোনো কারণ নেই। নিহাল আর ওর সম্পর্কটা তো একটা ফর্মালিটি। তারপরেও খুব ইচ্ছা হচ্ছিল মাহিয়ার, যদি কিছু একটা করতো ছেলেটা, শুধু ওর জন্য।
মোবাইলের মেসেজ টোনে চিন্তায় ছেদ হলো।
– a very good morning to the beautiful birthday girl.
মেসেজটা পড়লো মাহি। খুশি হবে না মেজাজ গরম করবে বুঝে উঠতে পারছিল না ও। এইদিকে নিজের স্বামীর ওর জন্মদিন নিয়ে কোনো চেতবেত নাই, অার ওইদিকে এই মহান ব্যক্তি একটার পর একটা সুন্দর মেসেজ পাঠিয়েই যাচ্ছে। কিন্তু নিজের পরিচয়টাও সামনে আনছে না। আজব!
আবার মেসেজ আসলো,
– আচ্ছা মাহিয়া বলো, আজ গিফ্ট হিসাবে তুমি কি চাও?
– ফর স্টারটার্স জানতে চাই আপনি কে?
– ঠিক আছে আজ তোমার সব কথাই যেহতু মানতে হবে সো আমি কে সেটা তোমাকে বলেই দিচ্ছি। একচুয়ালি না… বলবো না। তোমাকে দেখাবো। সেটার জন্য তোমাকে একটা ছোট্ট কাজ করতে হবে। করবা?
-কি কাজ?
– আগে রেডি হয়ে নাও and wait for my next message.
মাহিয়া চুপ হয়ে গেল। খুব অবাক লাগছে ওর। কে এটা? রেডি হতে বলা মানে তো বাসা থেকে বের হতে বলবে। জানা নেই কওয়া নেই, এভাবে বের হবে ও? তবে ভেতর ভেতরে যে ও খুবই এক্সাইটেড ফিল করছিল তাও তো ইগনোর করা যাচ্ছে না। কৌতুহলটাও জেকে ধরেছে ওকে। কি করা উচিৎ ওর?
এই কনফিউশানেই এক ঘন্টার বেশী সময় পার হয়ে গেল। সকাল সাড়ে এগারোটা বাজে। আর নতুন কোনো মেসেজ আসেনি এর মাঝে। মাহিয়া নিজের শাশুড়ির রুমে গিয়ে দেখলো যে তিনি রেডি হচ্ছেন।
-মা কই যাচ্ছেন?
-আম্মু ফ্যাক্টরি তে আজ আমার কিছু কাজ আছে। ওটা করতে হবে।
– আপনার ছেলেকে জানিয়ে দিন। ও করে দিবে?
– না মা। নিহাল এখনো বিজনেসের সব কিছু হাতে নেয় নি। তাই সবকিছু তে ওকে এখনি ইনভল্ভ করা যাচ্ছে না। তুমি চিন্তা করো না। আমি চলে আসবো সাবধানে। এনজয় ইউর ডে মা।
আয়েশা চলে যাওয়ার পরে মাহিয়া নিজের রুমে যেয়ে বসলো। তখনি এলো মেসেজ।
-তুমি রেডি?
-আপনি আমাকে রেডি হতে কেন বলছেন? আমি কোনো অচেনা মানুষের সাথে বাইরে যাই না। সো ড্রপ দা থট।
– আমি তোমাকে আমার নাম জানায়নি, বাট তোমার কি আসলেই মনে হচ্ছে যে আমি অচেনা? অচেনা হলে, তোমার নাম্বার, বার্থডে এগুলো জানলাম কিভাবে? আর অচেনা কারো জন্য এগুলো করবোই বা কেন আমি?
মেসেজটা পড়ে লজিকাল লাগলো মাহিয়ার কাছে।
-তাহলে বলে দিচ্ছেন না কেন আপনি কে?
-বলতেই তো চাচ্ছি। তাই তো ডাকছি তোমাকে।
-দেখুন I am married.
– হা হা হা। আমি সেটাও জানি যে তুমি ম্যারিড। তোমার বরকেও আমি চিনি। এখন এইসব কথা বার্তা বাদ দিয়ে আমি যেটা বলি করো।
come to Four Points by Sheraton and introduce yourself to the reception.
Trust me Mahiya. You will be very happy at the end. I am waiting.
মেসেজটা পড়ে হাল্কা হাসি দিল মাহিয়া। ঠিক করলো যাবে ও। পাবলিক প্লেসেই ডেকেছে ওকে। ওখানে উল্টাপাল্টা হওয়ার চান্স কম।
পিচ কালারের মাঝে সিকোয়েন্সের একটা কামিজ পড়লো ও। চুল গুলো সামনে থেকে একসাইডে আটকিয়ে পেছনে খোলাই রাখলো। মেকআপ টাও রাখলো হাল্কা। সব মিলিয়ে ভালোই মানাচ্ছিল ওকে।
গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লো মাহিয়া। নিহাল নিজের গাড়িটা রোজ অফিসে যেয়ে আবার বাসায় পাঠিয়ে দেয়। এই কাজ টা বিয়ের পর থেকে ও শুরু করেছে যাতে মাহিয়া গাড়িটা ইউস করতে পারে। এটাও ওর এক প্রকার কেয়ার মাহিয়ার প্রতি। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ড্রাইভারও রেখেছে মাহিয়ার সুবিধার্থে ।
জ্যাম ঠেলে দুপুর একটার একটু পরে হোটেলের সামনে পৌছালো মাহিয়া। লবিতে ঢুকে রিসেপশনের সামনে গেল ও। বেশ নার্ভাস লাগছিল ওর। কাকে দেখবে ওর সামনে? গাড়িতে বসেও ভেবেছে এটা। সব বুঝে শুনে মনে হচ্ছে ওর কোনো একটা ফ্রেন্ডই এই কাজ করছে। আর কে হবে?
রিসেপশনে দাড়ানো লোকটার কাছে গেল মাহিয়া। লোকটা সুন্দর একটা হাসি দিল ওকে,
– good afternoon maam. welcome to Four Points by Sheraton Dhaka. How may I help you?
– হ্যালো।মমম… আমি মাহিয়া। আমাকে বলা হয়েছিল এখানে জানাতে যে আমি এসেছি।
– জ্বী জ্বী ম্যাম। হ্যাপি বার্থডে টু ইউ। প্লিস ওয়েইট আ মিনিট।
এই বলে লোকটা একটা কল করতে ফোন ওঠালো। সাথে সাথে পাশে দাড়িয়ে থাকা মহিলাটা ডেস্কের ওপাশ থেকে বের হয়ে মাহিয়ার হাতে একটা বড় ফুলের তোড়া দিয়ে ওকে অভিনন্দন জানালো।
মাহিয়াতো প্রথমে লোকটার উইশেই অবাক ছিল এখন আবার ফুলের তোড়া পেয়ে একই সাথে ভিষণ লজ্জা লাগলো ওর। কোনোমতে মেয়েটাকে থ্যাঙ্কস বলতে পারলো মাহিয়া। এরই মাঝে আরেকজন স্যুট পরা লোক মুখ ভর্তি হাসি নিয়ে দাড়ালো মাহিয়ার সামনে।
– গুড আফ্টারনুন ম্যাম। ওয়েলকাম টু আওয়ার হোটেল। আই এম শিহাব। আই ওয়ার্ক ইনদা ম্যানেজিং ডিপার্টমেন্ট। প্লিস কাম দিস ওয়ে ম্যাম।
মাহিয়া একটা ছোট্ট হাসি দিয়ে লোকটার পাশে চলতে থাকলো। লোকটা লিফ্টের কাছে যেয়ে প্রথমে মাহিয়া কে জায়গা করে দিল ঢোকার জন্য তারপর নিজে ঢুকলো। মাহিয়া লক্ষ্য করলো সে লেভেল ২৬ এ চাপ দিয়েছে। মাহিয়ার ভয় হলো তখন,
– লেভেল ২৬ এ কি আছে?
– ম্যাম আমাদের ইন্টারনেশনাল রেস্টুরেন্টের মাঝে একটা লেভেল ২৬ এ অবস্থিত। ওখান থেকে অনেক সুন্দর সিটি ভিউটা আপনি পাবেন।
মাহিয়া আর কিছু জিজ্ঞেস করলো না। লিফ্ট যতো উপরে উঠছে ওর বুকের ভেতর ধরপরানি আরও বেড়ে যাচ্ছে।
এক সময় লিফ্টটা থেমে ওদের সামনে খুললো। আর একজন স্যুট পরিহিত লোক দাড়িয়েছিল মাহিয়াকে রিসিভ করার জন্য।
– গুড আফ্টারনুন ম্যাম। হ্যাপি বার্থওডে।ওয়েলকাম টু দা বিস্ট। দিস ওয়ে প্লিস।
যে মাহিয়াকে ওপরে নিয়ে এসেছিলেন সে লিফ্ট থেকেই ওকে বার্থডে উইশ করে চলে গেলেন। মাহিয়া এবার সেই দ্বিতীয় ব্যক্তির সাথে হেটে আসলো একটা নির্দিষ্ট জায়গায়। সেখানে একজন ওর অপেক্ষায় দাড়ানো।
মাহিয়া মানুষটাকে দেখে প্রথমে ঝট করে থেমে গেল। বলা যায় বড়সড় একটা হোচট খেল মনে মনে। চোখ কোটর থেকে বের হয়ে যাবার অবস্থা হলো ওর। এক মুহূর্ত কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছিল। তারপর কথা বের হলো মাহিয়ার মুখ থেকে। কথা না, একেবারে চাঁপা একটা চিৎকার দিল মাহিয়া,
-নিহাল, তুমি?
চলবে……