২৯.
রুমকির বাসার ড্রয়িং রুমে সবাই বসে ছিলো। টপিক একটাই, মলি ও তার সংসার। মেয়েটা সেদিনের পর একদম ভেংগে পরেছে। আগেও ভেবেছিলো কখনো মায়ের বাড়িতে যাবে না যত কিছুই হোক। কিন্তু সেদিন আবিদ সব কিছু এমন ভাবে মলির ভাই ও মায়ের সামনে তুলে ধরেছে যে সব কিছু মলির বিপক্ষে চলে গিয়েছে। না দোষ করেও মলিকেই অপরাধী বানানো হয়েছে।
এই মুহুর্তে মলির মনে হচ্ছে পড়াশোনা টা কন্টিনিউ করা প্রয়োজন ছিলো। তাহলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারতো। নিজের বলতে মলির কিছুই নেই। সবই আবিদের। এত বছর সংসার করার পর ও আজ আবিদ বের করে দিলে এই সংসারের কিছুই তার থাকবে না। গত কয়েক রাত নির্ঘুম কেটেছে মলির তারই নিশানা চোখে মুখে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে।
রুমকি ই নীরবতা ভাংগলো,
আন্টি কি তোমার হয়ে কিছুই বলল না? আর ভাইয়া ও।
বিষন্ন কণ্ঠে মলি বলে, কি বলবে? ওরা হয়তো এই ভয়ে আছে যে দুই বাচ্চা নিয়ে না জানি আবার তাদের সংসারে গিয়ে উঠি। আর মার তো এখন বয়স হয়েছে। ভাইয়া ভাবি যা বলবে সংসারের শান্তির জন্য তাই করবে। বুকের ভিতরে লুকিয়ে থাকা কান্নার ঢেউ দলা পাকিয়ে আছে গলাতে।
কিন্তু মা হয়ে মেয়ে কে বুঝবে না?? রুমকি হতাশ হয়ে বলল কথা টা।
ফাহাদ কথা বাড়ালো, দেখো আংকেল বেঁচে নেই, আন্টি ভাইয়াদের সাথে থাকেন। আন্টির হয়ত সেজন্য কোনো প্রকার অশান্তি না করে মলিকে বুঝাতে চেয়েছে।
তাই বলে আন্টি ও এই কথা বলবে? আর ভাইয়া??? থাপ্পড় দেয়া টা কি বাড়াবাড়ি না?
ফাহাদ দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লো, বাদ দাও এখন কি ভাবছো তুমি? কি করবে বলে ঠিক করেছো?
মলি আনমনে উত্তর দিলো,
— ভাবছি আর ভাবছি। আমি কি ভালো পারি যা দিয়ে নিজেকে নতুন ভাবে আবিষ্কার করতে পারি।
ফাহাদ মলি কে প্রস্তাব দিলো, তুমি চাইলে আমার অফিসে জয়েন করতে পারো। অন্য কোথাও করলে তো এক্সপেরিয়েন্স চাইবে অথবা লং টাইম গ্যাপের কারণে জব হবে না কিন্তু আমার অফিসে ইজিলি ঢুকতে পারবে।
আমি আসলে জবে ঢুকতে চাচ্ছি না। অন্য কিছু করতে চাই। মলি ঝটপট উত্তর করলো।
রুমকি একটু ভেবে বলল, আচ্ছা এখন ই তাড়াহুড়ো করে কিছু ভাবতে হবে না কিংবা কিছু করতে হবে না।
ফাহাদ বলে উঠলো তুমি জবের ব্যপারে আরেকটু ভাবো। যখন চাইবে তখন ই আমি জয়েনিং করাতে পারবো। আফটার অল আম দ্যা বস।
************
কোনো এক ব্যস্ত দিনে। অফিসের কাজে আবিদ তার সাইট ভিজিটে গিয়েছে। আবিদের এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার সোহেল সাহেব অনেকক্ষন যাবত আবিদ কে কল দিচ্ছে। কিন্তু আবিদ ধরছে না। সাইট ভিজিট করে ব্যাক করার সময় ভাবলো কেয়া কে নিয়ে রাতে ডিনার করে একেবারে বাসায় যাবে। ইদানীং কেয়া আরো সুন্দরী হয়ে উঠেছে। দিন দিন কেয়ার প্রতি তার নেশা বেড়েই চলছে।
আবিদ যখন ডিনারে বসলো মাত্র। খাবার অর্ডার দিয়ে কেয়ার সাথে আলাপ মাত্র জমে উঠেছে সেই ফাঁকে ফোন বের করে জাস্ট চেক করছিলো। এত গুলো কল দেখে সোহেলকে কল ব্যাক করলো,
হ্যালো সোহেল সাহেব, এত বার কল দিয়েছেন। সব ঠিক আছে তো?
স্যার একটা ঝামেলা হয়ে গিয়েছে।
কি ঝামেলা, বলে ফেলুন। আবিদ চিন্তিত গলায় বলল।
স্যার কানাডিয়ান ডিলটা আমরা পাই নি। খুসরু গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ পেয়েছেন।
হোয়াট!!! আবিদ উত্তেজনায় উঠে দাঁড়ায়। আপনি বুঝতে পারছেন এই ডিল টা আমার জন্য কতটা ইম্পরট্যান্ট ছিলো।
স্যার। যতটুকু জানি তারা আমাদের থেকে আরো অনেক ফ্যাসিলিটিস তাদের দিয়েছে। তাছাড়া প্রফিট ও তারা কম নিচ্ছে। আই মিন ডলারের মূল্য বেড়ে যাওয়াতে কানাডিয়ান রা আমাদের যে অফার দিয়েছিলো খুসরু গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ রা আরো কম প্রফিটের হিসেব দিচ্ছে। পন্যের রেট তারা অনেক কম ধরেছে।
কিন্তু আমি কত রেটে প্রডাক্ট ডেলিভারি করছি সেটা তারা জানলো কিভাবে?
স্যার জেনেছে কিনা তা তো জানি না। মুদ্দা কথা আমাদের পুরাই লস। অলরেডি আপনি নতুন গারমেন্টস এর সাইট দেখে ফেলেছেন, আবার অনেক প্রডাক্ট সেম্পল হিসেবে তারা নিয়েছে। আমি তো ভাবতেই পারছিনা তাদের পিছনে এত খরচ করার পর তারা ডিল কিভাবে ফাইনাল না করে থাকে।
মি সোহেল, শুধু তো কানাডিয়ান না। তারা দুবাই+ কানাডিয়ান জয়েন্ট প্রযেক্ট নিয়ে এসেছিলো। এনি ওয়েস আমি সকালে আসছি অফিসে। দেখছি ব্যপার টা।
আবিদ ওয়ালেট পকেটে নিয়ে কেয়ার দিকে তাকিয়ে বলল সরি উঠতে হচ্ছে। চলো।
গাড়িতে বসে কেয়ার সাথে কোনো কথাই বলল না আবিদ। চিন্তিত হয়ে ড্রাইভ করতে থাকে একমনে। কেয়াই আগ থেকে জিজ্ঞেস করলো,
এটা কি গাজীপুরের সেই প্রযেক্ট টা?
আবিদ শুধু হু বলল। মাথা কাজ করছে না কিন্তু মাথা ঠান্ডা রাখা জরুরী তাই মাথা ঠান্ডা রাখার চেষ্টায় আছে।
আমার মনে হয় এখানে মলি কিংবা তার ফ্রেন্ডদের হাত আছে। শুনেছি মলির ফ্রেন্ড ফাহাদ বড় বিজনেস হোলডার। কোনো ভাবে সে এখানে বাঁধা দিয়ে থাকতে পারে।
আবিদ অবাক চোখে বলে, সে জানবে কিভাবে আমি কি কি অফার করছি। আর যে কোম্পানি ডিল টা পেয়েছে সেটার সাথে ফাহাদ সাহেবের কি সম্পর্ক।
সেটা তো আমি জানিনা আবিদ।আমার মন বলছে, মলি কোনো ভাবে জানতে পারে আর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য এমন করাতে পারে ফ্রেন্ডকে দিয়ে। এমন ও হতে পারে ফাহাদের পরিচিত তারা। কেয়া কনফিডেন্স নিয়ে কথা গুলো বলতে থাকলো।
কি সব উলটা পালটা যুক্তি দিয়ে যাচ্ছো। এমনিতেই মাথা গরম আমার। প্লিজ আর মাথা খেয়ো না। আবিদের কর্কশ স্বরে কেয়া চুপ হয়ে গেলো। আবিদ জীবনেও বিশ্বাস করে না এসবে মলির হাত আছে। মলি যে যথেষ্ট অনেস্ট মেয়ে তা আবিদ ভালো করেই জানে। এসব উলটা পালটা কথা কেয়া ইচ্ছা করেই বলেছিলো। কেয়া চাচ্ছিলো আবিদ দিন শেষে স্বান্তনা খুঁজতে যেন কেয়ার কাছেই আসে। মলির কাছে না।
৩০.
সেই রাতে আবিদ বাসায় ফিরেই নিজের রুমে চলে এসেছে। ফ্রেস হয়ে চুপচাপ বিছানাতেই বসে ছিলো। শান্ত হয়ে বসে কিছু ভাবার সময়ই শুনতে পেলো তার মেয়ে তিতলি গান গাইছে।
“ভেংগে মোর ঘরের চাবি নিয়ে যাবি কে আমারে
ও বন্ধু আমার
না পেয়ে তোমার দেখা একা একা দিন যে আমার কাটে নারে
ভেংগে মোর ঘরের চাবি নিয়ে যাবি কে আমারে। “
বেশকিছু ক্ষণ গান চলার পর আবিদ ভাবছিলো ঘুমিয়ে পরবে। মাথাটা অনেক বেশি যন্ত্রনা দিচ্ছে। এই প্রযেক্ট হাতে নিবে বলেই অনেক বড় অংকের লোন নিয়ে ফেলেছে অলরেডি। ভেবেছিলো প্রযেক্টের প্রথম বছর ই ৪০ % শোধ হয়ে যাবে।
বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই নতুন কণ্ঠস্বর শুনতে পেলো,
“ওহে কি করিলে বলো পাইবো তোমারে
রাখিব আখিতে আখিতে
ওহে এত প্রেম আমি কোথা পাবো না
এত প্রেম আমি কোথা
তোমারে হৃদয়ে রাখিতে “
মলির কণ্ঠে বেজে চলছে গান। অনেক বছর বাদে নতুন করে তারই পছন্দের রবীন্দ্র সংগীত মলি গেয়ে চলছে। আবিদ ঘুমে তলিয়ে গেলো। উঠলো ভোরে পাখির কলতানে। সবার আগে নাকি দোয়েল পাখি ই জেগে উঠে। তার শিষ টা ও খুব মিষটি। বারান্দায় দাড়াতেই হিম বাতাস গা ঠান্ডা করে দিলো। বারান্দা থেকে বের হয়েই আবিদ হাটা ধরলো সিড়ির দিকে।
সকাল সকাল জগিং সেড়ে অফিসে যাবে সে। প্রায় ১ ঘন্টা পর বাসায় ফিরে এসে দেখলো টেবিলে নাস্তা রেডি করতে ব্যস্ত মলি। আবিদ তখনো কিছুই বলল না চলে গেলো ফ্রেশ হতে। আবিদ যখন ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নামলো ততক্ষণে মলি বাচ্চাদের নিয়ে বের হবে এমন অবস্থা। আবিদ গমগম কন্ঠে বলে উঠে,
তিতলিকে কি কোনো গানের টিচার দিয়েছো? নাকি তুমি ই শিখাচ্ছো?
মলি বেশ অবাক হলো। আজ কতদিন পর আবিদ কথা বলছে মলি দিন গুনেনি। ব্যাগ কাধে নিতে নিতে বলে উঠলো,
বাসায় টিচার দেই নি। বাংলাদেশ শিশু একাডেমী তে ভর্তি করিয়ে দিয়েছি। বাকিটা আমিই প্র্যাক্টিস করাই।
আবিদ মুখে পরোটা ডিম দিতে দিতে বলল,ভালোই।
এই পর্যন্ত ই। তারপর মলি তার গন্তব্যে চলে গেলো আর আবিদ তার অফিসে। অফিসে এসে শুনে কেয়া আসেনি। কেন আসেনি জানতেই ফোন দেয়া অথচ ফোন রিসিভ করছে না কেউ। আবিদ একটু বিরক্তই হলো। এমন সময় এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মি সোহেল তারাহুরো করে আবিদের কেবিনে ঢুকলো।
স্যার আপনি কি বিজি?
আবিদ চোখ তুলে তাকিয়ে বলল, কি ব্যাপার সোহেল সাহেব আপনাকে বেশ চিন্তিত মনে হচ্ছে।
সোহেল ঢোক গিলে বলল, স্যার কেয়া ম্যাম আর আসবেন না।
অবাক নয়নে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে আবিদ বলল, কেন আসবে না?
স্যার কেয়া ম্যাম জনাব খুশরু স্যারের আন্ডারে কাজ করতে জয়েন করেছেন।
আবিদ যেন কিছুই বুঝতে পারছে না। কেয়া কে মোটা অংকের মাইনে দেয়া হয় তারপর ও কেন কেয়া এমন করবে?
স্যার সেটা ত বলতে পারছিনা তবে এখন মনে হচ্ছে আমাদের অফিসের অনেক ইনফরমেশন লিক হয়েছে এই কেয়ার মাধ্যমেই।
আবিদ দাঁড়ানো থেকে বসে পরলো। কি থেকে কি হচ্ছে এসব। কেয়ার ত এমন করার কথা না। রাতের আগে কেয়া কে পাওয়া ও সম্ভব না। এখন নিশ্চয় তার নতুন অফিসে। সেখানে সিন ক্রিয়েট করা কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়। সোহেল সাহেব আরো কিছু জরুরী কথা সেড়ে কেবিন ত্যাগ করার পর থেকে আবিদের আবার মাথা ধরে আছে। কেয়ার নং এ অনেক বার ডায়েল করেছে সে। কিন্তু কেয়ার নং বন্ধ পাচ্ছে সে।
কথায় বলে না বিপদ একা আসে না। সব সময় বিপদ আসে তার সংগী সাথী নিয়ে। রাত ন টা। আবিদ কেয়ার বাসার ড্রয়িং রুমে অপেক্ষা করছে। কেয়া বাসাতে না থাকায় আবিদকে এখানেই অপেক্ষা করতে হলো। প্রায় ১ ঘন্টা অপেক্ষা করার পর আবিদ বাসা কেয়ার বাসা থেকে বের হয়ে যাবার ঠিক আগ মুহুর্তে কেয়া আসে। আজ হয়তো দেখা না হউয়াই ভালো হতো। আবিদ কে দেখে যেনো কেয়া মোটেও অবাক হয়নি। এই মুহুর্তের জন্যই যেন অপেক্ষা করছিলো সে।
হ্যালো আবিদ। কি অবস্থা তোমার?
আমার কি অবস্থা তুমি জানো না? ঝাঝালো স্বরে আবিদ বলে উঠে।
হুম জানলে কি আর আস্ক করতাম আমি? কতক্ষণ যাবত অপেক্ষা করছো?
আবিদ অধৈর্যের সাথে কেয়া সামনে গিয়ে দাড়ালো, কিভাবে পারলে তুমি এমন করতে?
কেয়া হামি তোলার মতোন করে কথা বলতে বলতে সোফায় গিয়ে বসল,
কি কিভাবে পারলাম? কেয়ার তাচ্ছিল্যের সুর বেজে উঠলো।
আবিদ কেয়ার দুই বাহুতে ধরে দাঁড় করায়। ঝাঁকি দিয়ে জিজ্ঞেস করে কিসের অভাব ছিলো তোমার? টাকা পয়সা গয়না গাটি কিংবা ফরেইন ট্রিপ কোনো কিছুর অভাব ছিলো তোমার? আমার অফিসের সব ইনফরমেশন কিভাবে পারলে লিক করতে।
কেয়া আবিদ কে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে বলে, আমি লিক করেছি কি প্রমাণ আছে তোমার কাছে? আর তুমি বলছো কিসের অভাব? তোমার কাছে কি আমি টাকা পয়সা ই চেয়েছি? ভেবে দেখো আমি কি চাইতাম।
আমি বিবাহিত এবং তোমার অফিসের বস তা জেনেই তুমি আমার কাছে আসতে। তাহলে এসবের জন্য তুমি প্রতিশোধ নিতে এমন করেছো?
তাচ্ছিল্যের সুরে কেয়া বলে, প্রতিশোধ! তোমার কি মনে হয়না তোমার প্রতি আমার এই আচরণ অনেক কম হয়ে গিয়েছে। তোমার পাশে থাকতাম বলে আমাকে সবাই যা না তা বলতো। আর তোমার ওয়াইফ আমাকে সেদিন কম অপমান করেনি। আর আমি ও ভালো ভাবে বুঝতে পেরেছি তুমি সারাজীবন আমাকে ভোগ করবে কিন্তু আমাকে গ্রহণ করবে না।
আবিদ এবার নিজের রাগ ধরে রাখতে পারেনি। চিতকার করে যায় কেয়া কে মারতে, বে*শ্যা মা*গী, টাকার জন্য ই তো এসব করতি। তুই তো সারাজীবন পায়ের নিচেই থাকবি। ঠিক এই জুতার মতোন। বেইমান মহিলা তুই। এত এত দেয়ার পর ও তুই নিজের অবস্থান দেখিয়ে দিলে। আবিদ রাগে কাপছিলো, তা দেখে কেয়া ও অনেক টা পিছিয়ে যায়। থাপপড়ের তোড়ে কেয়া ছিটকে পরে টি টেবিলের কোনায় গিয়ে মাথায় আঘাত পায়। এমন কিছুর আচ আগেই করতে পেরেছিলো সে। তাই মেন্টালি প্রিপেয়ার্ড ছিলো বোধহয়।
আবিদ, গায়ের কোটটা খুলে ফেলে, তারপর বের হয়ে আসার আগে বলে, তোদের মতোন মেয়েরা যে থালিতে খাস সেটাই নোংরা করিস। আবিদ চলে আসার ঠিক আগ মুহুর্তে ই কেয়া বলে উঠে,
অথচ এই বে*শ্যা ছাড়া আবার তোমাদের মতোন ব্যাবসায়ী দের চলে না। তোমরা আবার তোমাদের বউদের দিয়ে স্যাটিসফাই হউ না। আশ্চর্য। হাঁপাতে হাপাঁতে বলে,
কি চেয়েছিলাম আমি? আমি কি চেয়েছি যে তুমি মলি কে ছেড়ে দাও? আমি শুধু চেয়েছি তুমি আমাকে বিয়ে করো যাতে করে আমাকে কেউ খারাপ না বলুক। আমার ছেলে মিথ্যে হলেও একটা পরিচয় পাক। অথচ পেয়েছি শুধু অপমান। আমি ও আমার পথ খুঁজে পেয়েছি। তুমি আমাকে ছুড়ে ফেলে দেয়ার আগেই আমি তোমাকে ছেড়ে চলে এসেছি।
আর কখনো আমার গায়ে হাত তুলতে আসবে না। তোমার সর্বশান্ত হবার দিন কেবল শুরু। জাস্ট ওয়েট এনড ওয়াচ মি আবিদ হাসান চৌধুরী।
আবিদ নিজেকে কন্ট্রোল করার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে। সে গাড়ি চালাচ্ছিলো আর অস্থির হয়ে পড়ছিলো। কেয়া কে সে অনেক ট্রাস্ট করতো। তাই হয়তো অনেক ক্ষেত্রে টাকা পয়সার ভার ও তাকে দিতে। কোন খাতে কোন টা খরচ হবে কত উঠাতে হবে সবই কেয়া জানতো। একাউন্টস ডিপার্টমেন্টে সব ইনফরমেশন যাবার আগেই মলির কানে অনেক কিছুই আসতো। কারণ আবিদ তার সামনেই সব কাজ করতো। এখন এই রাতে ব্যাংকের কোনো ডকুমেন্টস চেক করা সম্ভব না তাই সকালের অপেক্ক্ষা করতে হবে। কিন্তু সকাল হবার আগেই কে জানতো আবিদের নসীবে কি আছে।
অতিরিক্ত রাগে প্রেশার বাড়িয়ে গাড়িতেই খারাপ লাগা শুরু হয় আবিদের। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাই সামনে ছুটে আসা ট্রাকের সাথে ধাক্কা লাগে। ছিটকে পরে আবিদ তার গাড়ি নিয়ে। শেষ সময় চোখ বন্ধ হবার আগে তিতলি তোতনের চেহারা টা ভেসে উঠে।
চলবে……
বি:দ্র: আমার বকা খাওয়ার দিন শুরু। নেক্সট পর্ব গুলো থেকে আমি বকা খাওয়ার জন্য প্রস্তুত।