#ভ্যাম্পায়ার বর পর্ব ১
#M_Sonali
রাত ১১.৪৮ মিনিট
খুব দ্রুতো পা চালিয়ে বাসায় ফিরছে নয়না। আজকে অফিসের কাজ একটু বেশি থাকায় কখন যে এত রাত হয়ে গেছে বুঝতেই পারেনি নয়না। কিছুদিন আগেই ঢাকা শহর থেকে টান্সফার হয়ে সিলেটে এসেছে ও। এখানকার কোনো কিছুই ঠিক করে চেনেনা এখনো নয়না। একে তো পাহাড়ি অঞ্চল তারওপর অনেক রাত হওয়ায় কোনো রিক্সা বা গাড়িও চোখে পরছে না নয়নার। বেশ ভয়ে ভয়ে দ্রুতো পা চালিয়ে বাসায় যাওয়ার জন্যে হেটে চলেছে নয়না। দুর দুরান্ত থেকে ভেসে আসছে শেয়ালের ডাক। এমন একটা পরিবেশে শেয়ালের ডাক শুনে যেনো ভয়ে গায়ে কাটা দিয়ে উঠছে নয়নার। তবুও মনে সাহস রেখে এক প্রকার দৌড়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ও। উদ্যেশ্য যত তারাতারি সম্ভব বাসায় পৌঁছানো।
নয়না যে রাস্তা ধরে হাটছে তার এক পাশে হালকা জঙ্গোলের মতো ঝোপঝাড় আরেক পাশে ঢালু পাহাড়। কেমন একটা নির্জন আর গা ছমছমে পরিবেশ। হঠাৎ নয়নার সামনের ঝোপঝাড়ের ভিতর থেকে দুটো জ্বলন্ত চোখ দেখতে পেয়ে থমকে দাঁড়ালো নয়না। তারপর ফোনের ফ্লাশলাইট জ্বালিয়ে ভালো করে বোঝার চেষ্টা করলো ওটা কি। এদিকে ভয়ে সারাশরীর ঘেমে একাকার অবস্থা হয়েছে নয়নার। হঠাৎ নয়নার সামনে লাফিয়ে ঝোপঝাড় থেকে বেরিয়ে এলো খুবই হিংশ্র দেখতে একটি প্রানী। প্রানীটির মুখ থেকে সমানে টপটপ করে লালা গড়িয়ে পরছে মাটিতে। ফোনের ফ্লাশলাইটের আলোতে ভালো করে বোঝারও উপায় নেই ওটা আসলে কি। তবে এই প্রানীটা যে নয়নার ওপর আক্রমন করার জন্যে বেরিয়েছে সেটা নয়না খুব ভালো করেই বুঝতে পারছে।প্রানীটা কেমন একটা গো গো শব্দ করতে করতে একপা একপা করে এগিয়ে আসছে নয়নার দিকে। আর নয়না ভয়ে ভয়ে একপা একপা করে পিছিয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ প্রানীটা দৌড়ে এসে জোরে একটা লাফ দেয় নয়নাকে আক্রমন করার জন্যে। ভয়ে নয়না নিজের মুখের ওপর হাত রেখে চোখ বন্ধ করে জোরে চিৎকার করে ওঠে।
বেশ কিছুক্ষণ পার হয়ে যাওয়ার পরেও যখন নিজের ওপর কোনো আক্রমন না হয় নয়নার। তখন মুখের সামনে থেকে হাত সরায় নয়না। আর দেখতে পায় ওর সামনের সেই হিংশ্র পশুটা নেই। ভয়ে এখনো নয়নার বুকের মাঝে যেনো হাতুরি পেটাচ্ছে কেউ। নয়না খেয়াল করে ঝোপের আড়াল থেকে কেমন একটা শব্দ আসছে। যেনো কেউ কোনো কিছু চুষে চুষে খাচ্ছে আর তারই ঢক ঢক শব্দ শুনতে পাচ্ছে নয়না। নয়নার আর সাহস হয়না জিনিটা দেখার মতো। তাই আর এক মুহুর্তও সেখানে না দাড়িয়ে দৌড়তে শুরু করে নয়না। প্রানপনে দৌড়ে চলেছে নয়না। ভয়ে ও কোন দিকে যাচ্ছে সে খেয়াল নেই ওর। তবুও জীবন বাচানোর ভয়ে দৌড়ে চলেছে। দৌড়াতে দৌড়াতে হাতে থাকা ফোনটার ফ্লাশলাইট অফ হয়ে যায় নয়নার। সাথে সাথে নয়না থেমে গিয়ে আবারও লাইট ওয়ান করার চেষ্টা করে কিন্তু ফোনের ব্যাটারি শেষ। ফ্লাশলাইট জ্বালাতে না পেরে ভয়ে ভয়ে আশেপাশে তাকিয়ে নয়না বোঝার চেষ্টা করে ও আসলে কোথায় দাড়িয়ে আছে এখন। ঘুটঘুটে অন্ধকারের কারনে প্রথমে কিছু বুঝতে না পারলেও একটু পর চোখে অন্ধকার সয়ে আসলে নয়না বুঝতে পারে ও দৌড়াতে দৌড়াতে কোনো এক জঙ্গলের মতো ঘনো ঝোপঝাড়ে ঢুকে পরেছে। ওর চারিপাশে জনমানব বা রাস্তাঘাটের চিন্হ টুকুও নেই। এই অন্ধকারে কি করবে বুঝে উঠতে না পেরে চিৎকার করতে শুরু করে নয়না
— কেউ আছেন, Please help me, আমি পথ হাড়িয়ে ফেলেছি দয়া করে কেউ এখানে থাকলে আমাকে একটু সাহায্য করুন। কেউ আছেন এখানে।
নাহ শত চিৎকার করেও কোনো লাভ হয়না। কেউ এগিয়ে আসে না ওকে সাহায্য করার জন্যে। আর আসবেই বা কি করে। এই এলাকার সবাই রাত ১০ টার আগেই দরজা জানালা লাগিয়ে ঘুমিয়ে পরে।
কোনো মানুষের সাড়াশব্দ না পেয়ে ভয়ে ভয়ে সামনের দিকে হাটা শুরু করে নয়না। আর তখনি নয়না অনুভব করে ওর পিছনে উড়ে এসে কিছু একটা নামলো।ভয়ে ভয়ে পিছনে ঘুরে দাড়ায় নয়না। আর তখনি দেখতে পায় হুডিওয়ালা কালো জ্যাকেট পরা একটা লোক দাড়িয়ে আছে ওর পিছনে। লোকটার মুখটা হুডির কারনে ঠিক দেখা যাচ্ছে না। তবে এটা একজন মানুষ তা বোঝা যাচ্ছে। নয়না ভয়ে ভয়ে কাপা কাপা গলায় বলে
— ক ক কে আ আপনি? আ আমি পথ হারিয়ে ফেলেছি। আ আমাকে এ একটু এই জঙ্গল থেকে বের হতে সাহায্য করবেন প্লিজ।
নয়নার কথা যেনো কান পর্যন্ত পৌঁছায়নি লোকটার। লোকটা সেই আগের মতই মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে। একটা কথাও বলছে না বা নড়াচড়াও করছে না। নয়না ভয়ে ভয়ে লোকটার কাছে এগিয়ে যায়। এদিকে নয়নার সারাশরীর ঘেমে একাকার অবস্থা।
লোকটার কাছাকাছি এগিয়ে যেতেই হালকা বাতাস এসে গায়ে লাগে নয়নার। আর নয়নার শরীরের গন্ধ গিয়ে আছড়ে পরে লোকটির নাকে। সাথে সাথে লোকটি মাথা তুলে নয়নার দিকে তাকিয়ে একটা জোরে নিশ্বাস নেয়। যেনো নয়নার গায়ের ঘ্রান নিচ্ছে লোকটা। হালকা চাঁদের আলো এসে পরেছে লোকটার মুখে। নয়না লোকটার দিকে ভালো করে তাকাতেই লোকটা দাঁত বের করে ঘার একদিকে কাত করে হেসে দেয়। আর তখনি নয়না খেয়াল করে ওর সামনে থাকা লোকটার চোখদুটো পুরোপুরি লাল। একদম তাজা রক্তের মতো। আর ঠোট ভেদ করে বাইরে বেরিয়ে এসেছে শুইয়ের মতো চিকন দুটি দাঁত। নয়নার আর বুঝতে বাকি রয়না যে এটা কোনো সাধারন মানুষ নয়। নয়না ভয়ে চিৎকার দিয়ে দুপা পিছিয়ে যায়। তারপর দৌড়াতে থাকে এমনি এক দিকে। কিন্তু তার আগেই ঐ লোকটি উড়ে এসে ধরে ফেলে নয়নাকে। তারপর একটি গাছের সাথে চেপে ধরে নয়নার গলায় নিজের শুচের মতো দাঁত দুটা বসিয়ে দেয়। তারপর চুষে চুষে ঢক ঢক করে খেতে থাকে নয়নার শরীরের রক্ত। নয়না চিৎকার করারও সময় পায় না। তার আগেই ভয়ে জ্ঞান হাড়ায় নয়না। আর শরীরের সব রক্ত চুষে নেওয়ায় কিছুক্ষণের মাঝেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে নয়না।
নয়নার রক্ত খাওয়া শেষ হলে নয়নার নিথর শরীরটা সেখানেই ফেলে রেখে তৃপ্তির হাসি দিয়ে সেখান থেকে উড়াল দিয়ে চলে যায় লোকটা। আর নয়নার রক্তহীন ফিকে হয়ে যাওয়া নিথর শরীরটা পরে রয় সেখানেই গাছের নিচে।
,
,
সকাল ৯.৩০ মিনিট
একটি বড় টেডিবিয়ারকে জরিয়ে ধরে বাচ্চাদের মত করে ঘুমিয়ে আছে চাঁদনী।
— চাঁদ এই চাঁদ আর কত ঘুমাবি বল তো? কলেজ যেতে হবে না আজকে। উফ এই মেয়েটাকে নিয়ে আর পারিনা। এত্ত ঘুম পাগলী হয়েছে না কি বলবো। বলছি তুই কি ভালোয় ভালোয় ঘুম থেকে উঠবি নাকি আমি তেলাপোকা ছেড়ে দিবো তোর গায়ে?
তেলাপোকার নাম শুনতেই লাফিয়ে উঠে বসে চাঁদনী। তারপর হাই তুলতে তুলতে ওর মাকে উদ্যেশ্য করে বলে
— ওহ আম্মু তুমি এত পঁচা কেনো বলোতো। প্রতিদিন সকালে এই তেলাপোকার কথা মনে না করালে বুঝি তোমার ভালো লাগে না। মাঝে মাঝে মনে হয় যেনো তুমি আমার সৎ মা। দাড়াও আমি আজকেই আব্বুকে বলবো আমায় ভালো আম্মু এনে দিতে।
— হ্যা হ্যা তা তো প্রতিদিনই বলিস আজকে না হয় আবার বলিস। এখন তারাতারি উঠে কলেজের জন্যে রেডি হয়ে নে। আমি ব্রেকফাস্ট দিচ্ছি।
কথাগুলো বলে চাঁদনীর রুম থেকে চলে গেলেন চাঁদনীর মা। আর চাঁদনী উঠে হাই তুলতে তুলতে ফ্রেশ হতে চলে গেলো।
বড়লোক বাবার একমাত্র মেয়ে এই চাঁদনী। দেখতে যেমন সুন্দরী তেমনিই সে অসম্ভব দুষ্টু আর চনচলা টাইপের মেয়ে। তবে তেলাপোকাকে ভিশন ভয় পায় চাঁদনী। তাই চাঁদনীকে দমন করতে এই তেলাপোকাই হলো প্রধান অস্ত্র। কলেজের সবাই চাঁদনীর দুষ্টুমির জন্যে ওকে দুষ্টুপাখি বলে ডাকে। সকল ছাত্র ছাত্রীকে তো জ্বালিয়ে মারেই, ওর দুষ্টুমি থেকে কলেজের স্যার ম্যাডামও বাদ পরে না। কিন্তু সবাই ওকে অনেক ভালবাসে। কারন চাঁদনী দুষ্টুমি করলেও পড়াশোনায় অনেক ভালো আর কখনো কারো ক্ষতি করে না। বরং পারলে সবাইকে সাহায্য করে।
সকালের ব্রেকফাস্ট শেষ করে কলেজের জন্যে নিজের স্কুটারে করে বেরিয়ে পরে চাঁদনী। বাসায় দু দুটা গাড়ি থাকা সত্যেও বাবার কাছে বায়না করে স্কুটার কিনিয়েছে চাঁদনী আর সেটাতে করেই প্রতিদিন কলেজ যায় সে।
কলেজে পৌঁছে স্কুটার টাকে এক সাইডে পার্ক করে রেখেই চাঁদনী দৌড়ে চলে যায় ওর বান্ধবীদের কাছে। মিতু আর শ্রাবনী ওরা দুজন হলো চাঁদনীর বেষ্টু। সাথে চাঁদনীর সব দুষ্টুমি সহ্য করার মেশিনও বলা চলে। চাঁদনী ওদের কাছে দৌড়ে গিয়েই দুজনের চুল ধরে টান দিয়ে বলে
— কি রে ফইন্নির দল আমাকে রেখে কি এত গুজুরগুজুর ফুশুরফুশুর করছিস হুমম।
চাঁদনীর কথা শুনে শ্রাবনী আর মিতু দুজনেই রাগ দেখিয়ে বলে উঠলো
— ঐ তুই আমাদের চুল ধরে টান দিলি ক্যান। তোর জন্যে কি একটু শান্তিতে থাকতে পারবো না আমরা। সব সময় একটা না একটা কিছু করেই চলেছিস। বলি তোর কি বিরক্ত লাগে না?
— হ্যা রে অনেক বিরক্ত লাগে, কখন যানিস যখন আমি কাউকে জ্বালাতন করতে না পারি। আমার তো ইচ্ছা করে সবাইকে জ্বালিয়ে মারতে। আর তোরা তো আমার বেষ্টু এতটুকু জ্বালাতন না হয় একটু সহ্য করলি।(বাচ্চাদের মতো ফেস করে)
চাঁদনীর কথা শুনে মিতু বললো
— দেখ চাঁদনী সব সময় এমন দুষ্টুমি ভালো লাগে না। আর এমনিতেই আমরা খুব টেনশনে আছি। কালকে রাতে কি হয়েছে জানিস? জানলে তোরও আর দুষ্টুমি করা আসবে না।
— এমন কি হলো রে? এই এই তোদের দুজনের বিয়ে ঠিক হয়েছে নাকি রে। ইশশ কত্তদিন হলো বিয়ে খাইনা।
— তুই কাকে কি বলছিস মিতু। এই ফাজিলের হাড্ডিকে কোনো কিছু বলে লাভ নাই। ও জীবনেও সিরিয়াস হবে না।(বললো শ্রাবনী)
— আচ্ছা এই নে আমি সিরিয়াস এবার বল কি হয়েছে কাল রাতে যে আমার বেস্টু দুজন এত চিন্তিত?
চাঁদনীর কথা শুনে মিতু বলতে শুরু করলো
— তোকে আমি বলেছিলাম না চাঁদ যে আমাদের বাসায় একজন নতুন ভাড়াটিয়া এসেছেন কিছুদিন আগে ঢাকা থেকে।
— হুমম বলে ছিলিই তো ঐযে নয়না না কি যেনো নাম মহিলাটার?
— হ্যা ঐ নয়নার কথাই বলছি।
— তো কি হয়েছে তার তোদের বাসার ভাড়া না দিয়ে পালিয়েছে নাকি? নাকি তোর হবু বরকে নিয়ে ভেগেছে? হিহিহি
চাঁদনীর কথা শুনে মাথায় হাত দিয়ে বসে পরলো শ্রাবনী আর মিতু। ওদের এমন করতে দেখে চাঁদনী ঠোট উল্টে বললো
— সরি রে দোস্ত আমার ভুল হয়ে গেছে। আচ্ছা এখন বলতো কি হয়েছে। সিরিয়াস কিছু নাকি?
— হুমম বলবো আগে তুই বল মাঝখানে আর উল্টাপাল্টা কথা বলবি না?
— আচ্ছা বলবো না এবার বলতো।
— কাল রাতে ঐ নয়নাকে কিসে যেনো মেরে ফেলেছে রে। সকালে ওনার লাশ পাওয়া গেছে ঝোপঝাড়ের মাঝে একটা গাছের নিচে। আর আশ্চর্যের বিষয় কি জানিস। ওনার শরীরটা একদম ফ্যাকাসে হয়ে আছে, যেনো কেউ ওনার শরীর থেকে সমস্ত রক্ত বের করে দিয়েছে। আর এর চাইতেও আশ্চর্যের বিষয় হলো নয়নার সাথে ঐ ঝোপঝাড়ের আশেপাশের ঝোপঝাড়ের মাঝ থেকে আরো দুটা হিংশ্র প্রানীর লাশ পাওয়া গেছে। আর সেই প্রানীগুলোর শরীরেও কোনো রক্ত নেই। আর সবারই গলার কাছে চিকন চিকন দুটো দাগ।
— আচ্ছা ঐ হিংশ্র প্রানী গুলোই তোদের ভাড়াটিয়াকে মেরে ফেলেনি তো?
— আরে সেটা কি করে সম্ভব? তাহলে ঐ প্রানী গুলোকে মারলো কে?
— আমি বলছি শোন। প্রথমে হয়তো ঐ হিংশ্র প্রানীগুলো তোদের ভাড়াটিয়াকে মেরেছে তারপর তোদের ভাড়াটিয়া মরে ভুত হয়ে ফিরে এসে ঐ হিংশ্র প্রানী গুলোকে মেরেছে সিম্পল ।
চাঁদনীর কথা শুনে শ্রাবনী রাগী গলায় বললো
— আমি একটা জিনিস কিছুতেই বুঝতে পারিনা বুঝলি মিতু। এই শাঁকচুন্নি চাঁদটা যে কি ভাবে এত ভালো রেজাল্ট করে আল্লাহই জানেন।ওর কথা শুনে তো মনে হয় ওর মাথায় গোবর ঠাসা আছে।
— কি বললি তুই পেত্নী, তোকে আজকে আমি কুচিকুচি করে কেটে ইদুরকে খাওয়াবো। দাড়া দাড়া বলছি।
কথাগুলো বলতে বলতেই শ্রাবনীকে তাড়াদিলো চাঁদনী। আর চঁদনীর হাতে চিমটি আর চুলে টান খাওয়ার ভয়ে দৌড়াতে লাগলো শ্রাবনী।
শ্রাবনীকে ধরার জন্যে দৌড়াতে দৌড়াতে গেটের বাইরে রাস্তার মাঝখানে চলে এলো চাঁদনী। আর তখনি চাঁদনীর ওপর দিক থেকে একটা ট্রাক দ্রুতো গতিতে এগিয়ে আসছে দেখে ভয়ে চাঁদনী নিজের চোখ দুটো বন্ধ করে চিৎকার দিলো। আর তখনি চাঁদনী অনুভব করলো ওকে কেউ একজন খুব দ্রুতো গতিতে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে রাস্তার পাশে এনে দাড় করালো।
চাঁদনী চোখ খুলে সামনে তাকিয়ে দেখলো কেউ নেই। তবে একটি লম্বা করে ছেলে পকেটে হাত গুঁজে কলেজের গেইট দিয়ে ভিতরে ঢুকছে এটা দেখলো। চাঁদনী বোঝার চেষ্টা করছে কি হলো ওর সাথে আর কেই বা ওকে বাঁচালো। তখনি শ্রাবনী দৌড়ে এসে চাঁদনীর পাশে দাড়িয়ে হাফাতে হাফাতে উত্তেজিত কন্ঠে বললো
— তুই ঠিক আছিস তো চাঁদ? তোর কোথাও লাগেনি তো? আমি তো ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলাম একটুর জন্যে ট্রাকের নিচে চাপা পরার হাত থেকে বেচে গেলি তুই। ঐ ছেলেটা এখন তোকে না বাঁচালে কি যে হতো আমার তো ভাবতেই ভয় করছে।
শ্রাবনীর কথা শুনে চাঁদনী গম্ভির গলায় বললো
— যে ছেলেটা কেবল কলেজের ভিতরে গেলো সে বাচিয়েছে আমায়? কিন্তু কেমন অদ্ভুত মানুষ উনি কিছু না বলেই চলে গেলো। কে ছেলেটা চিনিস ওকে?
চাঁদনীর কথার উত্তরে মিতু এগিয়ে এসে বললো
— হ্যা ঐ ছেলেটা সত্যিই খুব অদ্ভুত। কলেজে কারো সাথে কথা বলে না।ওর কোনো বন্ধুও নাই কলেজে। হাজার গরমের মাঝেও সব সময় হুডিওয়ালা জ্যাকেট পরে থাকে, আর চোখে কালো সানগ্লাস। আমি আজ অবদি ওনার চেহারাটাই দেখিনি ঠিক করে। তবে ঐ ছেলেটাই তোকে একটুর জন্যে বাচিয়ে নিয়েছে চাঁদ। নইলে আজকে কি যে হতো? ছেলেটাকে একটা ধন্যবাদ দেওয়া উচিৎ।
— হুমম, ছেলেটার নাম কি রে? কোথায় থাকে ও। জানিস কিছু?
কোথায় থাকে তা ঠিক জানিনা। তবে ছেলেটার নাম শুনেছি শ্রাবন। স্যারকে কয়েকবার ওকে শ্রাবন বলে ডাকতে শুনেছি।
— শ্রাবন, আচ্ছা চল এখন ক্লাসে যাই পরে কখনো দেখা হলে ধন্যবাদ দিয়ে দিবো।
তারপর তিন বান্ধবী মিলে ক্লাসে চলে গেলো,,,
চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
এই গল্পটা একদম ভিন্ন রকম একটি গল্প হবে। গল্পটাতে যেমন ভয়ংকর, রোমান্টিকতা থাকবে তেমনই হবে রহস্যময় ও ফানিও। আশা করি সবার ভালো লাগবে। গল্পের হিরোর নামটা অন্য নাম দিতে চাইছিলাম। বাট সবাই শ্রাবনের জন্যে পাগল তাই শ্রাবন নামটাই দিলাম।
যারা যারা ডেন্জারাস লাভার সিজন থ্রি গল্পটা চাইছিলেন। তাদের জন্যে বলছি এই গল্পটা শেষ হলে ওটা দিবো ইনশাআল্লাহ। ততদিন এটা পড়ুন কারন এটা হয়তো ঐ গল্পটার চাইতেও সুন্দর হবে। বাই দ্যা ওয়ে এই চাঁদনীটা কইলাম আমি নই
প্রথম পর্ব কেমন হলো জানাবেন সবাই। ভালো সারা না পেলে দ্বিতীয় পর্ব আর লিখবো না।
ধন্যবাদ
সকল পর্বের লিংক একসাথে