কাবিন শেষ করে বউ নিয়ে বাসায় ফিরতে প্রায় রাত দশটা বেজে গেল। নতুন বউ সাজে মুনিয়া মাথায় ঘোমটা টেনে শ্বশুরবাড়িতে ঢুকল। তবে চুপচাপ বাড়ি, তেমন আত্মীয় স্বজন আসেনি। সাব্বিরের নিজের খালা ফপু চাচীরাও আসেননি। অবশ্য দ্বিতীয় বিয়েতে এত আয়োজন করে দাওয়াতও করা হয় নি কাউকে। সাব্বিরের মা সবাইকে ফোন করেছেন, দোয়া চেয়েছেন এ পর্যন্তই।
বিয়ে বা বউ নিয়ে কারো কোনো উত্তেজনা নেই। মুনিয়া ঘরে ঢোকার পরে সাব্বিরের বড় বোন সুমাইয়া আপা এসে একটু মিষ্টি দুধ মুখে দিয়ে গেলেন। দায়সারা ভাবে একটু কালোজাম কেটে মুখে ঢুকিয়ে দিলেন সাব্বিরের বড় ভাবি।
তারপর সবাই ঘর থেকে চলে গেলেন একসাথে। আর কারো কোনো খবর নেই। সাব্বিরের দ্বিতীয় বিয়ে হলেও মুনিয়ার তো প্রথম বিয়ে! তা হোক বাপ মরা মেয়ে, চাচার বাড়িতে বড় হয়েছে। যদিও বাবা নেই, মুনিয়া এটা কখনো বুঝতে পারেনি। বিয়ে ঠিক হবার পরে খুব কেঁদেছিল। সারা পৃথিবীতে কি পাত্রের এতই অভাব পড়েছে যে মুনিয়াকে ডিভোর্সি ছেলের সাথে বিয়ে দিতে হবে! বাবা থাকলে কখনো এমন পারত না বোধ হয়।
মেজ চাচা এসে বললেন, ছেলেটা ভালো। সৎ ব্যবসায়ী, ভালো আয় ইনকাম করে। কোনো কারনে ডিভোর্স হয়ে গেছে, সেটা নিয়ে বসে থাকলে তো আর চলে না! ওই মেয়ের কপালে সাব্বিরের মতো ভালো ছেলে ছিল না। তাই হয়তো সংসার টেকেনি। তাছাড়া মা আমার অবস্থা তো জানিস, তোকে এক টুকরো সোনা দিতে পারব না। তোর সংসার সাজিয়ে দেওয়ার ক্ষমতাও আমার নেই। তোর নিজের পছন্দ থাকলে না হয় সেখানে বিয়ে দিতাম, তাও তো নেই। আমার কথা ভেবে রাজী হয়ে যা মা!
মুনিয়া চোখ মুছে বলেছে, আমি রাজী চাচা। কোনো সমস্যা নেই।
সাব্বিরের বাড়ি থেকে কোনো দাবি দাওয়া ছিল না। মুনিয়াকে দুটো লাল টুকটুকে লাগেজ ভরে শাড়ি, গয়না, পয়নামার জিনিসপত্র দিয়েছে। হলুদ হয়নি, মুনিয়ার খুব ইচ্ছে ছিল কাঁচা ফুলের গয়নায় সেজে একটা হলুদ সবুজ মেশানো রঙের জামদানি পরে গায়ে হলুদে সাজবে। সেটা আর হয়ে উঠল না। থাক, এক জীবনে সব আশা তো আর পূরণ হয় না! অবশ্য মুনিয়ার কোনো আশাই পূরণ হয় নি।
বাবা মারা যাওয়ার পরে মাকে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছে মামারা। আবার তাকে বিয়েও দিয়েছে। কিন্তু মুনিয়ার সেখানে জায়গা হয়নি। মামী তাকে একদিন বললেন, দেখ মুনিয়া, তোর মায়ের তেমন বয়স হয় নি। তার পুরো জীবনটা পড়ে আছে, এখন লোকে যদি দেখে তার এত বড় মেয়ে আছে, তাকে কে বিয়ে করতে আসবে বল! তার চাইতে তুই মা তোর মেজ চাচার বাড়িতে গিয়ে থাক।
মুনিয়া পরদিনই নিজের ব্যাগটা নিয়ে চলে এসেছিল।
চাচী নিজের সংসারে বাড়তি বোঝা আদর না করলেও ফেলে দেন নি। কিন্তু খুব টানে টানে জীবন কেটেছে। তবে আজ এসব ভেবে আর লাভ কি!
মুনিয়াকে বসানো হয়েছে সাব্বিরের ঘরে। সাব্বিরকে এখনো সামনাসামনি দেখেনি মুনিয়া। হোয়াটসএ্যাপে ছবিটা পাঠিয়েছিল বড় দাদা মানে মেজ চাচার বড় ছেলে। সাব্বিরের সাথে তার কি যেন ব্যবসা! সেখান থেকেই বিয়ের প্রস্তাব। না, সাব্বির দেয় নি বোধ-হয়, মেয়ে খুঁজছে এই খবর পেয়ে বড় দাদাই যোগাযোগ করেছে।
ঘরটা পুরো সাজানো গোছানো। একটা চার পাল্লার আলমারি, ড্রেসিং টেবিল, ওয়্যার ড্রোব, একটা শোকেস ভর্তি বিভিন্ন ধরনের বইপত্র, একটা তাকের মতো কাঠের কিছু একটা, নিচে কিছু রাখা, কিন্তু বোঝা যাচ্ছে না কি আছে, কর্ণারে একটা এক পাল্লার আলমারিও দেখা যাচ্ছে। আয়নাটা দেখে মুনিয়ার মনে হলো, এই আয়নাটায় দ্বিতীয়বার কোনো মেয়ে ব্যবহার করছে। আগের বারও হয়তো সাব্বিরের আগের বউ এই আয়নায় মুখ দেখেছে। এই ঘরের জানালার পর্দা থেকে চারপাশে একটা রুচিশীল ছাপ, কে সাজিয়েছে,হয়তো সাব্বিরের আগের বউয়ের কেনা জিনিসপত্র। সে তো নিশ্চয়ই বেডশিট বা জানালার পর্দা নিয়ে চলে যায় নি!
মুনিয়ার ক্লান্ত লাগছে, বালিশে হেলান দিতেই চোখ বন্ধ হয়ে এলো। সাব্বির ঘরে এলো অনেক রাতে। মুনিয়া তখন ঘুমিয়ে পড়েছে।
সাব্বির মুনিয়াকে না ডেকে পাশে শুয়ে পড়ল। মুনিয়ার ঘুম ভাঙল জানালা থেকে আসা সকালের রোদে, পাশে কেউ নেই, তবে বালিশের মাঝখানটা ডেবে আছে, মানে কেউ ছিল। নয়তো ভেবে নিতো সাব্বির নামের ভদ্রলোক কাল ঘরে আসেন নি। আশ্চর্য বিষয়, গতকাল বিয়ে হয়েছে, ভদ্রলোককে এখনো ভালো করে দেখেনি মুনিয়া।
বিছানায় বসতে বসতে সাব্বির টাওয়েল পরে বের হলো ওয়াশরুম থেকে। মুনিয়া চোখ নামিয়ে নিলো, এভাবে কোনো অপরিচিত ছেলেকে দেখে নি কখনো।
-ঘুম ভাঙল তোমার? রাতে দেখলাম গভীর ঘুমে৷ তাই আর ডাকিনি!
মুনিয়া ঘাড় নাড়ল।
-ওয়াশরুমে গরম পানি রাখা আছে, গোসল করে নিতে পারো। আমি এখন বের হয়ে যাব। ফিরতে ফিরতে রাত হবে।
মুনিয়া আবারো ঘাড় নেড়ে সায় দিলো।
এভাবেই মুনিয়ার সংসার শুরু হলো। খুবই অদ্ভুত বিষয়, সাব্বির সকালে মুনিয়া উঠতে উঠতে চলে যায়। আর ফেরে মাঝ রাতে। মুনিয়া বসে থাকতে থাকতে ডাইনিংয়েই ঝিমিয়ে যায়। সাব্বিরের কলিংবেলে সে ধরফর করে উঠে বসে।
কয়েকদিন এভাবে যাওয়ার পরে সাব্বির একদিন বলল, শোনো, তোমার এত রাত অবধি বসে থাকার দরকার নেই। আমি আগেও এমন রাত করেই ফিরেছি। কেউ অপেক্ষা করে থাকে নি। নিজেই নিয়ে খেয়ে নিতাম!
মুনিয়া নিচু স্বরে বলল, এখন তো আমি আছি!
সাব্বির হো হো করে হেসে উঠল। এই কথায় হাসির কি হলো! মুনিয়া বুঝতে পারল না।
সাব্বিরের সাথে মুনিয়ার শারিরীক ঘনিষ্ঠতা হয়েছে। সাব্বির তাকে উথালপাথাল ভালোবাসায় ভাসিয়েছে, এই সম্পর্ক, পুরুষালী গন্ধ, সিগারেট পোড়া ঠোঁটের টক টক চুমুর ছোঁয়া মুনিয়াকে মাতাল করেছে, খারাপ লাগে নি। তবে সাব্বিরের বোধ হয় মানসিক টান কম। বিশেষ মুহুর্তের পরে সাব্বির ঘুমিয়ে যায়। মুনিয়ার তখনো আরো কিছু ইচ্ছে করে। তখন ইচ্ছে করে ভালোবেসে কোমল স্পর্শ কেউ তাকে জড়িয়ে থাকুক! তীব্র কামনা নিয়ে উত্তাল চুমুর পরে কেই কপাল ছুঁয়ে উষ্ণ চুমু খেয়ে নিক। আলাদা বালিশে একহাত নয় যেন, এক পৃথিবী দূরত্বে সাব্বির ঘুমিয়ে থাকে। মুনিয়া প্রতিবারই দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
সাব্বিরের জামাকাপড়, জিনিসপত্র মুনিয়ার নাড়াচাড়া করতে ভালো লাগে। এ বাড়িতে মানুষের অভাব নেই, মুনিয়ার তাই কাজ কর্ম থাকেনা বললেই চলে। দ্বিতীয় বর্ষের অনার্স পরীক্ষা সামনে, কিছু পড়াশোনাও করে তবে পরীক্ষা দিতে পারবে কিনা এখনো নিশ্চিত না। কারণ বইপত্র দেখে সাব্বিরের ভাবী নাক সিটকিয়ে বলেছে, সাব্বিরের খালি বিদ্বান বউ জোটে, আগের বউ তো চাকরি পেয়েই ডানা গজিয়েছিল। এবারে আবার নতুন করে শুরু হলো!
মুনিয়ার প্রচন্ড কষ্ট লাগলেও ও কোনো উত্তর দেয় নি। সাব্বিরকে বলার মত সম্পর্ক তৈরি হয় নি এখনো। তবে মুনিয়া অনেক কষ্ট করে এতদূর পড়াশোনা চালিয়েছে। এসএসসি পরীক্ষার পর থেকেই বিয়ের জন্য পাত্র খোঁজা চলছিল। তবে খালি মেয়েকে নিয়ে আজকাল কোনো পাত্র ঠকতে চায় না। তাই এতদিন দেরী হলো। মুনিয়া একটু একটু করে পড়া চালিয়ে এতদূর এগিয়েছে। কে জানে, সাব্বির পড়তে দেয় কি না। না দিলে মুনিয়া জোরও করতে পারবে না। এ কারণ চাচার সামর্থ নেই ওকে আবার টানার। আহা, মুনিয়া ছেলে হলে, কিছু একটা নিশ্চয়ই করে ফেলত আর বিয়ের কথাও উঠত না!
সাব্বিরের জীবন যাপনে বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে। আগের বউ ইউনিভার্সিটির হলে থাকত, তার সাথে সংসার করা হয় নি। ফোনে আলাপে প্রেম, সেখান থেকে বিয়ে অবধি গড়িয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিয়েটা টিকল না। তাই এবারে ওর টান তৈরি হয় না। শারিরীক টান তো প্রাকৃতিক চাহিদা! তবে নিয়মিত সব জামা কাপড় গোছানো পায়, বাসায় ফিরে খাবার গরম করতে হয় না। প্লেটে ভাত বেড়ে দেওয়ার লোক আছে এখন। এসব ছোটো ছোটো বিষয়গুলোতেও সাব্বিরের ঘরে ফিরতে ইচ্ছে করে। মুনিয়াকে আদর করতে ভালো লাগে। মেয়েটা নিম্ন মধ্যবিত্ত ঘরের এতিম মেয়ে। তাই হয়তো সাব্বিরের সাথে কখনো তর্ক করতে যায় না। বেশি কথাও বলে না। সাব্বির প্রয়োজনীয় কিছু বললে, ঘাড় নেড়ে সায় দেয়।
একদিন ফিরতে বেশ রাত হয়ে গিয়েছিল। খেতে বসার পরে মুনিয়া আস্তে বলল, আমার অনার্স পরীক্ষার ডেট দিয়েছে, এই মাসের চৌদ্দ তারিখ শুরু হবে।
সাব্বির বলল, আচ্ছা।
আলিনগর কলেজে সিট পড়েছে, চাচার বাসা থেকে কাছে হবে।
হুম।
আমি কী পরীক্ষা দিব?
কেন দেবে না? পড়াশোনা করেছ তো দেখলাম।
তাহলে দুয়েক দিনের ভেতর যেতে হবে, এডমিট তুলতে হবে।
আচ্ছা যাও। কবে যাবে বলো, সোরাবকে পাঠাব, দিয়ে আসবে।
মুনিয়ার ইচ্ছে হলো বলে, আপনি যাবেন না? কিন্তু বলতে সাহস পেলো না। জামাই গেলে তার বাড়তি যত্ন আছে, মেজ চাচার উপর চাপ পড়বে। তারপর ওখানে মুনিয়া থাকত পেছনের বারান্দায়, খাবার রুমের পাশে ছোট্ট একটা ঘরে। একটা চৌকি আর একটা পড়ার টেবিল ছিল। এই বিশাল বাড়ি, এত সুন্দর রুম, এত আসবাবপত্র এসবে থাকা সাব্বিরকে ওখানে গিয়ে থাকতে বলতে লজ্জা লাগছে।
মুনিয়া চলে গেল দুদিন পরে। মুনিয়া যেদিন চলে গেল, সাব্বির একটু তাড়াতাড়িই ফিরেছিল। সবাই জেগেই ছিল কিন্তু তবুও বাসাটা কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগল। একটা দিক বোধহয় অন্ধকার হয়ে আছে, কিন্তু না তো, সব জায়গায়ই বাতি জ্বলছে। তাহলে এত নিরিবিলি লাগছে কেন!
খেতে বসে সাব্বির অনুভব করল, আজ খেতে ভালো লাগছে না। সবই ঠিক মতো আছে, কিন্তু কোনো খাবারই বোধহয় আজ রান্না ভালো হয় নি। অল্প খেয়ে উঠে পড়ল।
নিজের রুমে গিয়েও একই অনুভূতি। তাহলে কী মুনিয়ার জন্য খারাপ লাগছে! কই মেয়েটা তো এত কথা বলে না তার সাথে। রোজ রাতে শুয়ে মুনিয়াকে কাছে টেনে নেয় সাব্বির। ওর ঠোঁটে গভীর চুমু খায়। মুনিয়াও সাড়া দিতে শুরু করে। সাব্বিরের পশমাবৃত বুকে পোষা বেড়ালের মত মুখ ঘষে আদর করে দেয়! সাব্বিরের যে অনুভূতি হচ্ছে, সেটা শারিরীক নয়, বুকের ভেতর একটা কষ্ট কষ্ট লাগছে। ঠিক কী যে নেই ধরণের।
সাব্বির মনোযোগ ঘোরাতে চেষ্টা করে। কালকে কয়েকটা ক্যাশমেমো লাগবে। আগে ব্যবসার কাগজপত্রগুলো সব ছড়ানো ছিল, সেগুলো এখন একটা দেরাজে। আলাদা আলাদা করে রডের দোকানের ক্যাশমেমো, বালি চালানের কাগজপত্র রাখা। মেয়েটা সব কাগজ গুছিয়ে রেখেছে, সাব্বিরের সময় লাগে না খুঁজে পেতে।
পরের দেরাজ টেনে দেখে, এক পাশে শার্টগুলো রাখা, আরেক পাশে জিন্স। উপরের ছোটো দেরাজে সব মোজা, আন্ডারওয়্যার গোছানো। টাওয়েল দুটো ধুয়ে রাখা। মোবাইল, হেডফোন, ঘড়ি, ব্রেসলেট গুলো রাখার জায়গাটা একদম পরিপাটি। খুব যত্ন করে সাজিয়ে রাখা।
সাব্বির চারপাশে তাকায়, পড়ার টেবিলটা ফাঁকা। মুনিয়ার বইপত্র নেই এখানে। একটু কৌতূহল থেকে মুনিয়ার জামাকাপড় রাখার আলমারির দরজাটা খোলে সাব্বির। একটা মুনিয়া মুনিয়া সুবাস এখানে! কিছু না সড়িয়ে প্রাণভরে সুবাস নেয় সাব্বির। মুনিয়াকে কখনো ফোন করা হয় না! ওর চাচার বাসায়ও বিয়ের পরে কখনো যাওয়া হয় নি। সোরাব পৌছে দিয়ে এসেছে আজ।
সাব্বির চোখ বন্ধ করে একটা নিঃশ্বাস নিলো। তারপর সিদ্ধান্ত নিয়ে বাইক নিয়ে বের হয়ে পড়ল। রাত বারোটার বেশ কিছুসময় পরে মুনিয়ার চাচার বাসায় গিয়ে কড়া নাড়ল।
মুনিয়া জেগেই ছিল। বাইকের হর্ণটা ভীষণ পরিচিত হলেও মনে হলো, এটা মনের ভুল, এত রাতে কী আর সাব্বির আসবে!
কিন্তু অবাক হয়ে দেখল, সাব্বির এসেছে। এত রাতে জামাই এসেছে দেখে সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়ল। সাব্বির লজ্জিত ভঙ্গিতে বলল, আসলে আমি এত ব্যস্ত থাকি, দিনে একদম সময় পাই না। সাব্বিরের ব্যস্ততা মিথ্যে নয়, সবাই জানে।
মাঝরাতে কিছু না করলেও আনুষ্ঠানিক আলাপ আর জামাই আদরের পরে সাব্বির মুনিয়াকে কাছে পেল যখন, তখন রাত দেড়টা বাজে।
আজো মুনিয়া তেমন কোনো কথা বলে নি। মুনিয়ার রুমের চারপাশটা দেখে নিয়ে যেন সাব্বির মুনিয়ার বুকের ভেতরটাও এক ঝটকায় দেখে নিলো। কোনো কথা না বলে আজ মুনিয়াকে বুকে টেনে নিলো সাব্বির। আজ কোনো প্রাকৃতিক চাহিদার জন্য নয়, মুনিয়ার কপালে উষ্ণ চুমু খেয়ে এক হাতে ওকে জড়িয়ে রাখল। মুনিয়াও আজ দ্বিধা কাটিয়ে একটা হাতে সাব্বিরকে আঁকড়ে ধরল। দুজন চোখ বন্ধ করল একটা নিশ্চিন্ত নির্ভরতায়। আজ ওদের এক হাত এক পৃথিবী দূরত্ব দূরে সরে গিয়েছে নিশ্চিত।
দূরত্ব
শানজানা আলম
শানজানা আলম এর সকল গল্পের লিংক