#ফাবিয়াহ্_মমো.
নীতি প্রচণ্ড ভয় পেয়ে যায় মেসেজ দেখে। সে জানেনা মাহতিম কি করতে চাইছে। মনের মধ্যে অজানা ভয়ে উৎকন্ঠা অবস্থা ধারন করেছে, সেই সঙ্গে ভয়জড়িত অবস্থায় সংকোচ বোধ করছে নীতি। এদিকে মাহতিম কাঙ্ক্ষিত উত্তর জানার জন্য দ্বিতীয়দফায় মেসেজ পাঠালে নীতি সবকিছু ঠিকঠাক দেখে বলে দেয়, বাইরে আসতে প্রবলেম নেই, এখানে বড়দের মধ্যে কেউ নেই। মাহতিম ঠিক দুই মিনিটের মাথায় নিজের রুম থেকে বের হয়। গায়ের পোশাক ততক্ষণে পাল্টে নিয়েছে মাহতিম। টিশার্ট খুলে শার্ট গায়ে দিয়ে শার্টের দুইহাতা দ্রুততার সাথে কনুইয়ের ভাঁজে গুটাচ্ছে। নীতি আঙিনায় বসা অবস্থায় দোতলার দিকে তাকায়, মাহতিম যে বারান্দা পেরিয়ে সিড়ির কাছে এসে পরেছে সেটা সম্পূর্ণ দেখতে পায় নীতি। মাহতিম ততক্ষণে নিচে এসে দাড়ালে প্রীতি ও ফারিনের দৃষ্টি মাহতিমের দিকে থমকে যায়। তারা সুক্ষ্ম কারনে কৌতুহল ভঙ্গিতে জিজ্ঞেস করে,
– ভাইয়া তুমি কি কোথাও যাচ্ছো?
মাহতিম শুধু নীতির দিকেই তাকিয়ে থাকে। এইমূহুর্তে কাউকে না জানিয়ে কাজটা সারতে হবে। তাই প্রীতি ও ফারিনের কথায় উত্তর না দিয়ে চুপচাপ বাইরের বেরিয়ে যায় মাহতিম।নীতিকেও জানায় না কোথায় যাচ্ছে সে। নীতি বিমর্ষ চাহনিতে মাহতিমের যাওয়া দেখতে থাকে। ও কি কাল ভোরের জায়গায় আজই চলে যাচ্ছে? এসব ভাবতেই নীতি ঝট করে উঠা থেকে দাড়িয়ে পরে, দ্রুতপায়ে সৌভিকদের কাছে গিয়ে মাহতিমের ঘটনা বিস্তারিত বলে দেয়। কথাগুলো শুনতেই মেজাজটা সামলাতে না পেরে নীতির মাথার পেছনে চাট্টি মারে সৌভিক। স্বর নামিয়ে রাগান্বিত ভঙ্গিতে কটমট করে বলে,
– তোর মাথায় কি গোবর ভরে রাখছিস? ও যে চলে গেলো তুই আমাদের আগে বলবিনা? শা*লার মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেছে!
সৌভিকের কথায় আড়ি ভেঙ্গে মাঝখান থেকে তৌফ বলে উঠে,
– দোস্ত এবার কি হইবো? মাহতিম যদি এইবার চলে যায় তাহলে আর জীবনেও ওর কপালে শান্তি জুটবো না। শা*লা বাটপার তো আবারও বালের চাকরির পেছনে কুত্তার মতো খাটবো। না দোস্ত, কিছু কর। অনেক হইছে।
তৌফের উত্তেজিত কথার মধ্যে হঠাৎ থেমে যায়। চোখ বন্ধ করে মাথা নিচু করে ফ্লোরের দিকে মুখ করে থাকে। সবাই যখন একই চিন্তার রেশে প্রচণ্ড চিন্তিত হয়ে উঠে, তখন সিয়াম নিরবতা ভেঙ্গে চুরমার করে বলে,
– ও কি যাওয়ার সময় লাগেজ নিয়ে গেছে? ওই নীতি! শা*লী দামড়ি মনে কর, ও কি লাগেজ নিয়ে গেছে?
নীতি জলদি কিছু মনে করার ভঙ্গিতে চুপ থেকে হঠাৎ ব্যতিব্যস্ত ভঙ্গিতে জবাব দেয়,
– না না, ভাইয়া সঙ্গে কিচ্ছু নেয়নি। শুধু জিপের চাবিটা হাতে দেখছি, আর কিচ্ছু ছিলো না।
এটুকু কথা শুনে সবাই একসাথে স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়ালো। ভাবটা এমন করলো যেনো মাথায় তাক করা বন্দুকটা কেউ নামিয়ে ফেলেছে। সিয়াম বেতের চেয়ারে পিঠ হেলিয়ে ক্লান্ত ভঙ্গিতে বলে,
– লাগেজ না নিলেই শান্তি। লাগেজের চিপায় ওর পাসপোর্ট লুকিয়ে রাখছি। শালা ক্যামনে এই সুন্দরিখানা থেকে বাহির হয় আমিও দেখুম।
মাহতিম হনহন করে মাথার চুলগুলো ব্যাকব্রাশ করতেই জিপের কাছে এগুতে লাগলো। আঙিনার চৌকিতে বসা মারজা তখন ছেলের আকস্মিক গমন দেখে মারজা ভ্রুঁ কুন্ঞ্চন করে বলেন,
– এই তুই কোথায় যাচ্ছিস?
মাহতিম পকেটে হাত ঢুকিয়ে চাবি বের করতেই মারজার উদ্দেশ্যে শক্ত কন্ঠে বললো,
– তোমার বুঝা উচিত কেনো জিপ নিয়ে বের হচ্ছি। পেছন থেকে আর ডাকবেনা।
কথা শেষ করতেই জিপে গিয়ে উঠলো মাহতিম। চাবি ঢুকিয়ে জিপ ঘুরিয়ে শোঁ করে চলে গেলো রাস্তার দিকে। চারপাশে রাতের অন্ধকারে হতবাক হয়ে গেশেন মারজা। ছেলের এমন উগ্র আচরণে বিমূঢ় হয়ে বসে রইলেন তিনি। সুজলা সবটা খেয়াল করলেও না-দেখার ভান করে মাহমুদার সাথে কথা বলতে লাগলেন। অপরদিকে রুমে শুয়ে হাঁশফাস করছে মেহনূর। কোমরের যন্ত্রণাটা আবারও যেনো চাড়া দিয়ে উঠেছে। সাদা ব্যান্ডেজটা যেনো হালকা মতোন লাল হয়ে গেছে। মাহতিম যদি না আসতো শেফালী ওকে পীড়া দেওয়ার জন্য আরো কতো কি করতো কে জানে। কিন্তু এই ঘটনা কারনে দাদাভাই কেমন প্রতিক্রিয়া দিবে সেটা নিয়েই ভয় পাচ্ছে মেহনূর। ওর দাদাভাই যতোই শক্ত হয়ে থাকুক না কেনো, এসব কারনে অসুখ বাধানোর শঙ্কা আছে। মেহনূর সেটা নিয়েই চিন্তায় অস্থির হয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ কর্ণকুহরে জিপ ছুটানোর ভুমভুম আওয়াজ হলে কৌতুহল মনে বালিশ থেকে মাথা উঠিয়ে জানালার বাইরে তাকায়। মাহতিম অন্ধকারের মধ্যে জিপের ফ্রন্ট লাইট জ্বালিয়ে কোথায় যেনো যাচ্ছে, সেটা দেখে কিছুটা উদ্বিগ্ন হলেও পাত্তা না দিয়ে পুনরায় বালিশে শুয়ে পরে।
সময়ের প্রহর এশার ওয়াক্তের জন্য প্রস্তুত হলো, ঠিক ওইসময় আবারও সেই দাপুটে আওয়াজে চারপাশ মুখরিত হয়ে উঠলো। হিংস্র বাঘের মতো ছুটন্ত জিপের বেগ একেবারে বাড়ির সদর দরজা পেরিয়ে বিরাট উঠানের একপাশে এসে থামলো। জিপের অবস্থার জন্য উঠানের ওটুকু অংশ যেনো ধূলায় অন্ধকার হলো। মারজা, মাহমুদা, সুজলা সহ শানাজ-সাবাও চকিত দৃষ্টিতে জিপের পানে তাকিয়ে রইলো। ধূলো ভেদ করে হঠাৎ দুজন ব্যক্তির আগমন দেখে সুজলা তৎক্ষণাৎ চৌকি থেকে উঠে মাথায় ঘোমটা টানলেন। সেই সঙ্গে বাকি দুজন মহিলাও ঘোমটা টেনে বৃদ্ধের প্রতি সম্মান দেখিয়ে কিছুটা নতমুখে দাড়ালেন। হান্নানের মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে ঘটনা ইতিমধ্যে জানা শেষ। কাজটা যে মাহতিম-ই করেছে এটাও সবার কাছে পানির মতো স্পষ্ট হয়ে গেছে। হান্নান শক্ত ভঙ্গিতে বাড়ির ভেতরে পা দিয়েই জোর গলায় শেফালীকে ডাকলেন। নিজের রুমে দরজা বন্ধ করে থাকা শেফালী ভয়ে কেঁপে উঠলো। মিনমিন করতে-করতে শেষে দরজা খুলে আঙিনায় এসে হান্নানের সামনে দাড়ালো। দাদাভাইয়ের তীক্ষ্ণ গলার আওয়াজ শুনে পা টিপে-টিপে বারান্দায় আসলো মেহনূর। রেলিংয়ের কাছে এসে দেখলো, দাদাভাইয়ের মুখ যেনো রাগে লাল হয়ে গেছে। আর ঠিক পাশেই পকেটে দুহাত গুঁজিয়ে মাহতিম ক্রুদ্ধ দৃষ্টিতে শেফালীর দিকে তাকিয়ে আছে। সুজলা এসে সমস্ত ঘটনা আবার ব্যাখ্যা দিতেই হান্নান শক্ত গলায় প্রশ্ন করলেন,
– মেজো বৌ, আমি আজ পযর্ন্ত তোমার কান্ডজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলিনি। তোমার শ্বাশুরি যখন বেঁচে ছিলো, সেও তোমার কাজে অসন্তুষ্ট ছিলো। তবুও তোমার কাজে নিন্দাবাক্য শুনাইনি। তুমি কোন্ স্পর্ধা দেখিয়ে আমার মেহনূরকে মেরেছো? এই অধিকার তোমাকে কে দিয়েছে মেজো বৌ? তুমি কি জানোনা, আমি এখনো কর্তা হিসেবে মোল্লাবাড়িতে জীবিত আছি? নিজেকে তুমি এখনই সেয়ানা ভাবতে শুরু করেছো? জবাব দাও মেজো বৌ! আজ যদি তুমি চুপ করে থাকো, আমি হান্নান শেখ কড়ায়-গন্ডায় এর বিচার করবো।
হান্নানের কথা শুনে শেফালী এমন একটা ভাব করলো, সে ভুলবশত দোষ করে ফেলেছে, ইচ্ছাকৃত ভাবে করেনি। কিন্তু হান্নান শেখ কোনো কথাই শুনতে রাজি হয়নি, তিনি হামেশার মতোই শক্ত এবং অনড় মানুষ। শেফালীকে তিনি স্পষ্ট শব্দে বলে দিলেন,
– আমার নাতনীগুলোর দিকে এবাড়ির কোনো সদস্য যদি সামান্য আঙ্গুলও তুলে, আমি ওই ব্যক্তির আঙ্গুল তোলার সাহস ভালোভাবে বুঝিয়ে দিবো। এই কথা যেনো সকলের মনে থাকে। আমি আমার নাতনীদের এমন শিক্ষা দেইনি, যাতে তারা কখনো অন্যায় আচরণ করবে। শুধু সুরাইয়ার ব্যাপার নিয়ে আমি পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবো। মেজো বৌ খুব ভালো করেই জানো, তুমি আমার মেজো নাতনীকে কেমন উগ্র বানিয়েছো। আমি আর বিস্তারিত বলে নিজের রক্ত গরম করতে চাইনা। সবাই ভেতরে যাও। আর বড় বৌ, তুমি আমার অনুপস্থিতিতে আমার নাতনীদের প্রতি খেয়াল রাখবে। ছোট বৌ যাও, খাবার বাড়ো, আমি হাতমুখ ধুয়ে আসছি।
গজগজ মুখে হান্নান শেখ কলপাড়ের দিকে চলে গেলেন। সুজলা ও মাহমুদা রান্নাঘরের দিকে চলে গেলে মারজা ভাবীদের কাছে সাহায্য করতে গেলেন। মাহতিম নিজের রুমের জন্য পা বাড়ালে আচমকা শানাজ ও সাবা ওর পথ রোধ করে। শানাজ সবার আগে বলে উঠে,
– আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া। আপনি যদি দাদাভাইকে তাড়াতাড়ি আনতে না যেতেন, তাহলে মা বাড়ির বসে অপেক্ষা করতে-করতে অসুস্থ হয়ে যেতো। এজন্য —
শানাজকে কথার মাঝে থামিয়ে দিয়ে মাহতিম পকেট থেকে একটা মলমের টিউব বের করে বললো,
– ধন্যবাদ পাওয়ার জন্য এই কাজ করিনি। বাড়ির পরিবেশ খুবই গুরুতর ছিলো, এজন্য বাধ্য হয়ে নানাকে আনতে গিয়েছি। মলমটা ধরো। ওর কাটা জায়গাটায় দুই টাইম লাগিয়ে দিও। তাড়াতাড়ি শুকাতে হেল্প করবে।
টিউবটা শানাজের হাতে তুলে দিয়েই মাহতিম নিজের রুমে চলে গেলো। বাড়ির মধ্যে যেই থমথমে অবস্থাটা কায়েম ছিলো, সেটা কিছুটা যেনো সুস্থির হলো। রাতটুকু সকলে নির্বিঘ্নে ঘুমালেও শেফালীর তখন ঘুম আসেনি। বিছানায় বসে প্রচণ্ড রাগে বারবার মুষ্ঠিবদ্ধ হাতটা বালিশে ঘুষি মারছিলো। ইচ্ছে করছিলো মেহনূরকে ফ্লোরে ফেলে ইচ্ছামতো পিটাতে! কিন্তু রাগ সংবরন করে চুপচাপ বালিশে মাথা ঠেকালো শেফালী। এদিক রাগে সমস্ত শরীর জ্বলছে! মেহনূরকে ধরে যদি আজকের শোধ না তুলেছে, তাহলে শেফালী নিজের অস্তিত্ব মিটিয়ে ফেলবে! কাটা জায়গা একেবারে ক্ষতবীক্ষত করে ঝাঁঝরা করে দিবে ও! একটুও ছাড়বেনা মেহনূরকে! চিলতেখানিও না !
.
ফজরের টাইমে অন্ধকার থাকতে ঘুম থেকে উঠলো মেহনূর। কালরাত অনেক কষ্টে ঘুমাতে পেরেছে সে। ব্যথার জন্য রাতভর নিঃশব্দে কাতরাতে হয়েছে। কিন্তু এখন ব্যথা একটু কম বোধ হলে গোসলটা সবার আগে সারার জন্য উঠে যায়। এইসময় কেউই ঘুম থেকে উঠবেনা। কাল গোসল না করাতে গা ম্যাজম্যাজ করছে, মাথায় পানি না ঢালার জন্য তালুতে তাপ অনুভূত হচ্ছে। মেহনূর গামছা নিয়ে চুপিচুপি পা বাড়িয়ে সিড়ি ধরে নিচে নামে। আঙিনার বাতি নিভানো আছে, তারমানে কেউই উঠেনি এখন। মেহনূর এই সুযোগে সদর দরজা খুলে কলপাড়ে চলে গেলো। আকাশের কালো চাঁদরটা ধীরে-ধীরে সরে যাচ্ছে, পূর্ব আকাশে সোনালী সূর্য আগমনের জন্য অপেক্ষা করছে। আশেপাশে একটা মানুষ তো দূর, কুকুরের মতো প্রাণীও নেই। ছোট থেকেই ভৌতিক বিষয়ে ভয় নেই মেহনূরের, একা-একাই সব কাজ করতে পারে সে। হাতমুখ ধুয়ে ভেজা গামছাটা নিয়ে বাড়িতে ঢুকলো মেহনূর। গামছা দিয়ে চুল মুছতে-মুছতে আধো অন্ধকারের ভেতর নিজের রুমের দিকে যেতেই হঠাৎ গা কাঁপিয়ে শিউরে উঠে গামছা ছেড়ে দেয় মেহনূর। পায়ের সামনে ভেজা গামছা পরে যেতেই সেটার উপর পারা দিয়ে দাড়ালো শেফালী। চোখদুটো যেনো নির্ঘুমের কারনে ফুলে আছে, সেই সঙ্গে রক্তিম-লাল অবস্থা। মেহনূরের দিকে এমন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে যেনো হিংস্রভাবে আক্রমণের জন্য প্রস্তুতি সারছে। মেহনূর ভয়ের চোটে লম্বা-দীর্ঘ নিশ্বাস নেওয়া শুরু করলে হঠাৎ ওর চোখদুটো শেফালীর হাতের দিকে পরে। শেফালী একটা ভাঙ্গা কাঠের লম্বা লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। লাঠির দিকে চমকিত চাহনিতে তাকিয়ে থাকতেই আরো অস্থির হয়ে উঠে মেহনূর! পায়ে-পায়ে পিছাতে থাকে পিছনের দিকে! শেফালীও ওর ভয়ার্ত চেহারা দেখে মনের দগ্ধজ্বালা মিটাতে পৈশাচিক আনন্দে এগুতে থাকে। এদিকে তিন কদম না পিছাতেই শেফালী কেনো যেনো থমকে গেলো, ওর দৃষ্টি যেনো ভূত দেখার মতো পলকহীন হলো। মুখের সেই পৈশাচিকতার আভাসটুকুও হারিয়ে গিয়ে ভয়ের আবছায় মূর্ছিত হলো। শেফালীর অবস্থা দেখে মেহনূর কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেলে ওর স্থিরদৃষ্টি লক্ষ করে পেছনে তাকালো। ওমনেই মৃদ্যুভঙ্গিতে শিউরে উঠে শেফালীর দিকেই পিছিয়ে গেলো মেহনূর। সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বেহায়া ব্যক্তিটি কখন যে পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে, খেয়াল করেনি মেহনূর। তারমানে মেহনূর যখন পিছাচ্ছিলো, তখন ওর পেছনে মাহতিমকে দেখেই শেফালী হাতের লাঠিটা শাড়ির আচঁল লুকাচ্ছিলো। সম্পূর্ণ ব্যাপারটা বুঝতেই মেহনূর চুপ করে ঢোক গিলতে লাগলো। এদিকে মাহতিম রাগী দৃষ্টি ছুঁড়ে শেফালীকে ভয়ের জালে এফোড়-ওফোড় করতেই গম্ভীর গলায় বললো,
– মেজো মামী কি ভাঙা লাঠি দিয়ে ক্রিকেট খেলতে আসছিলেন? সবাইকে ডাকি? সবাই আপনার ক্রিকেট খেলাটা একটু দেখুক। কি বলেন মামী?
শেফালী অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে হাসি টেনে বললো,
– কি যে কও বাবা, কিসের কিরিকেট? আমি এগ্লা পারিনা।
মাহতিম একপা এগিয়ে আসলে মেহনূর সাথে-সাথে দুইপা পিছিয়ে শেফালী ও মাহতিমের মাঝখান থেকে সরে দাড়ায়। মাহতিম এতে সন্তুষ্ট হলেও মেহনূরের দিকে না তাকিয়ে শেফালীর দিকে তাচ্ছিল্যপূর্ণ হাসি দিয়ে বলে,
– আমার সামনে কাহিনী একটু কম-কম করবেন মামী। আমি আবার মানুষের খেলাধুলা একটু বেশি বুঝি। এইযে আপনি চুপিচুপি কাউকে না-জানিয়ে মেহনূরকে ক্রিকেট খেলা দেখাতে এসেছিলেন, সেটা আমি বুঝে গেছি। বলিকি, একটু সাবধানে থাকবেন মামী। আমি মানুষটা আবার বেশি একটা ভালো না। ঠান্ডা মেজাজে থাকি তো, এজন্য কেউ রাগিয়ে দিলে ছাড়িনা। মাঝেমাঝে নির্দয়ের মতো কর্মকাণ্ড করার রের্কড আছে, দেখতে চাইলে নীতিকে বলবেন, ও আপনাকে উসুল করে দেখিয়ে দিবে। চলি কেমন?
মাহতিম সুন্দর একটা হাসি দিয়ে কথাটুকু শেষ করলো। এবার মেহনূরের দিকে তাকিয়ে কপাল কুঁচকে মুখ তেঁতো করে বললো,
– আজীবন এভাবেই মানুষের লাত্থি-উষ্টা খেয়ে বড় হতে থাকো তুমি। তোমার মতো বলদের মুখ দেখলে আমার গা রি রিন করে জ্বলতে থাকে।
মেহনূরের মুখের উপর কড়া কথা শুনিয়ে সত্যি-সত্যিই বাইরে চলে গেলো মাহতিম। শেফালী মেহনূরের দিকে ভয়ংকর দৃষ্টি ছুঁড়ে শব্দ করে হাতের লাঠিটা সেখানেই ফেলে দিলো। আর দাড়ালোনা, চুপচাপ নিরুত্তাপ ভঙ্গিতে চলে গেলো। সকালের নাস্তা পর্ব চলাকালীন মাহতিম সবাইকে জানিয়ে দিলো ঠিক এগারোটার দিকে সে একাই চলে যাবে। মারজাসহ বাকিরা সব এখানেই কিছুদিন থাকবে। হান্নান একথা শুনে অনেক অনুরোধ করলেন মাহতিমকে, কিন্তু মাহতিম কোনোভাবেই রাজি হলোনা থাকার জন্য। তবে সময় পরিবর্তন করে দুপুর দুইটা ঠিক করে দিলো। অন্তত দুপুরের খাবার খেয়ে এখান থেকে বিদায় নিবে মাহতিম। মাহতিমের ‘ বিদায় ‘ শব্দ শুনে সবচেয়ে বেশি মন খারাপ হয় কাজিন ও বন্ধুদের। অপরদিকে সুজলাও মন খারাপ করে ফেলেন একথা শুনে। মাহতিম যে কোনোদিন এ পরিবারে যুক্ত হয়নি, এটা মনেই হয়নি ওর আচরণ দেখে। মাহতিম সবার সাথেই খোশমেজাজে আনন্দ উপভোগ করে গেছে। এদিকে নাস্তা সেরে শানাজ মেহনূরকে দেখতে যায়। মেহনূর তখন কোমরের ড্রেসিং খুলে নতুন ড্রেসিং লাগানোর জন্য কার্যত ছিলো। শানাজকে দেখে মেহনূর তৎক্ষণাৎ বললো,
– খবরদার বুবু, তুমি আমাকে ধরবেনা।
শানাজ থতমত খেয়ে অবাক হয়ে বললো,
– কি আজব! ব্যান্ডেজ তুই একাই পাল্টাবি? ব্যথা হবেনা? দে আমি করে দেই।
মেহনূর সঙ্গে-সঙ্গে দুপা পিছিয়ে গিয়ে বললো,
– লাগবে নাতো। তোমাকে এখান থেকে যেতে বলছি।
শানাজ অনেক চেষ্টা করেও যখন ব্যর্থ হিসেবেই উপনীত হলো, তখন আর সেখানে থাকতে পারলোনা। মেহনূর যে রেগেমেগে ভীষণ অভিমানে ওর সাথে এমন ব্যবহার করছে সেটা বুঝে গেছে শানাজ। তাই বিষণ্ণ মনে চুপচাপ সে আঙিনায় এসে মাহতিমের পাশে হাঁটু তুলে বসে। দুগালে হাতের তালু লাগিয়ে কনুইদুটো হাঁটুতে ঠেকিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে থাকে। মাহতিম ওইসময় ফোনে কথা বলছিলো, শানাজের এমন অবস্থা দেখে কল কেটে জিজ্ঞেস করলো,
– কি হয়েছে? এভাবে বসে আছো কেন? আবার মেজো মামী কিছু বলেছে নাকি?
এই কথা শুনে শানাজ তাড়াতাড়ি শশব্যস্তে বললো,
– আরে না না ভাইয়া, মেজো মা কিছুই বলেনি। আসলে —
– বলো শানাজ, আমার কাছে লুকানোর কোনো মানে হয়না।
শানাজ একটু চুপ থেকে কিছু একটা ভেবে তারপর ঠোঁট ভিজিয়ে বললো,
– আপনি কালরাতে যে মলম দিয়েছেন, ওই বান্দরটা নেয়নি। ব্যান্ডেজও পাকনামো করে নিজেরটা নিজেই খুলছে। কি করবো আমি, কিছুই যে বুঝতে পারছিনা ভাইয়া। আমার সাথে রেগে আছে কেনো এখনো ঠিকমতো জানিনা।
মাহতিম কোনো কথা না বলে শানাজের পাশ থেকে উঠে দাড়ালো। সোজা সৌভিকের রুমে যেয়ে দরজায় দাড়িয়ে বললো,
– সৌভিক, নীতি উঠে আয় তো।
সৌভিকের রুমে সবাই মিলে গান নিয়ে মেতেছিলো। হঠাৎ মাহতিমের আদেশ শুনে পুরো রুমে পিনপতন নিরবতা ছেয়ে গেলো। দুজন গানের সভা ভঙ্গ করে মাহতিমের সাথে বাইরে আসলে মাহতিম ওদের বুঝিয়ে বললো জরুরী একটা কাজ আছে। নীতি কাজটার বিষয়ে পুরোপুরি না বুঝলেও একটু-আধটু আঁচ করতে পারলো। পরক্ষনে নীতিকে সেদিনের মতো রুমের বাইরে পাহারাত্তয়ালা বানিয়ে দিলো, আর সৌভিককে পাঠিয়ে দিলো শানাজ,সাবা ও সুরাইয়ার সাথে আড্ডা জমিয়ে তুলতে। ভুলেও রুমের দিকে কেউ যেনো না আসে। সৌভিক ও নীতি মিটিমিটি হাসতেই ভ্রু নাঁচিয়ে নিজেদের মধ্যে চোখের ইশারায় কথোপকথন করে। এদিকে মাহতিম নীতিকে টেনে মেহনূরের দরজায় নক করতে বলে। নক করলে ভেতর থেকে জবাব দেয়,
– আসো ,
নীতি দরজা ঠেলে যেই পা ভেতরে রাখবে ওমনেই পেছন থেকে কান টেনে ধরে মাহতিম। চোখের ইশারায় বলে উঠে,
– চটকে গাল লাল করে দেবো! তুই ক্যান ভেতরে যাবি? তোর কাজ শেষ। যা!
নীতি কানের ব্যথায় আকুতি দৃষ্টিতে ঠোঁট নাড়িয়ে বললো,
– ভাই ভাই কান ছাড়ো, তোমার হাতে প্রচুর ব্যথা লাগে। আমি যাচ্ছি তো, আমি পাহারা দিচ্ছি।
মাহতিম তৎক্ষণাৎ কান ছেড়ে দিয়ে একটা শয়তানি মার্কা হাসি দিয়ে দরজা ঠেলে ঢুকলো। নীতি কান ডলতে-ডলতে কোমরে একহাত রেখে পাহারা দিতে শুরু করলো। কিন্তু কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই মাহতিম এমন চেহারা নিয়ে বের হলো, যেটা দেখে নীথি রীতিমতো ভয় পেয়ে অস্থির হয়ে বললো,
– ভাইয়া কি হয়েছে? আল্লাহ্, ভাই তুমি আবার ক্ষেপলে কেনো?
মাহতিম নীতির দিকে অগ্নিদদৃষ্টি ফেলে দরজা সম্পূর্ণ খুলে দিয়ে তর্জনি উঁচিয়ে ইশারা করে বলে,
– ও কোথায়?
নীতি উজবুকের মতো জবাব দেয়,
– কে কোথায়?
মাহতিম দুপাটি দাঁত চিবিয়ে উত্তর দেয়,
– বলদ কোথায়?
নীতি চকিতে ভঙ্গিতে উত্তর দেয়,
– মেহনূর কি ভেতরে নেই?
মাহতিম আরেকবার ক্ষুদ্ধদৃষ্টিটা তীব্ররূপে ছুঁড়ে সেখান থেকে চলে যায়। অনেক হয়েছে আর ওই বলদের পেছনে সহানুভূতির মানে হয়না। নীতি ভ্যাবাচ্যাকা দাড়িয়ে থাকলে ভেতরে গিয়ে দেখে কোথাও মেহনূর নেই, খুজঁতে গিয়ে আবিষ্কার করে সুরাইয়ার রুমে দরজা লাগিয়ে মেহনূর আরামসে ঘুমিয়ে আছে। কাজটা সে কেনো করেছে, এটা বোঝা শেষ।
.
আকাশের উত্তপ্ত অরুণটা দারুণ তেজ দেখাচ্ছে। কাঠ ফাটা গরমের জন্য পরিবেশে তপ্ততা বিরাজ করছে। হান্নান শেখ বিরসমুখে সকলের সঙ্গ বাদ দিয়ে দুপুরের খাবারটা মাহতিমের সাথে খেলেন। মাহতিম শার্ট-প্যান্ট একদম পরে রেডি হয়ে নেমেছে এখন। খাবারের কয়েক লোকমা শেষ করে সোফায় গিয়ে বিশ মিনিটের রেস্টের জন্য বসলো। ওকে ঘিরে সবাই তখন না যাওয়ার জন্য শেষ অনুরোধ করলো। মাহতিম ওদের বলে দিলো,
– আমি আর এখানে আসার নামও নিবো না। দয়াকরে এখানে থাকার জন্য বৃথা চেষ্টা করিস না। পাসপোর্টটা ভালোয়-ভালোয় ফিরিয়ে দে, নয়তো বাসায় পৌঁছে তোদের কি অবস্থা হবে বুঝে নিস।
কেউই মুখ খুললোনা, পাসপোর্ট দিলোনা। মাহতিমও পাসপোর্ট ছাড়া যাওয়ার জন্য উঠে দাড়ালো। সঙ্গে-সঙ্গে সদর দরজা দিয়ে একটা ছেলের কন্ঠ শোনা গেলো,
– দাদাজান কই? দাদাজান? ও দাদাজান?
আগত স্বরটার দিকে সবাই তাকিয়ে থাকলে মাহতিম পিছু ফিরতেই দেখে একটা হাসিখুশি সুন্দর ছেলে ‘দাদাজান’ বলে ডাকাডাকি করছে। সুজলা, মাহমুদা বাইরে বেরিয়ে আসলে খুশীতে পুলকিত হয়ে এগিয়ে গেলেন ছেলেটার দিকে। নীতি প্রশ্নবিদ্ধ চাহনিতে অন্যমনষ্ক ভঙ্গিতে বলে উঠে,
– এই ছেলেটা কে? সুরাইয়ার ভাই নাকি? কিন্তু সুরাইয়ার ভাইকে তো দেখেছি। ও তো সেই ছেলে না।
মাহতিম এখনো শান্তদৃষ্টিতে ছেলেটার দিকে আছে। ক্রমে নীতির নরে প্রীতি, সামিক, সৌভিক, সাবির একই প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করতে থাকে। তখনই সুরাইয়ায মা শেফালী রুম থেকে বেরিয়ে একদৌড়ে ছুটে এসে ছেলেটার গায়ে হাত বুলিয়ে বলেন,
– ও তরুণ, কতোদিন পর আসলা? আমগোর কথা কি ভুইলে যাও? একবার কি আসোন যায়না?
তরুণ হাসি দিয়ে কাধ থেকে ব্যাগ নামিয়ে বলে,
– আন্টি, কাজের চাপে তো সময় কুলায় না। আমি আব্বার সাথে দেখা করা বাদ দিয়ে আপনাদের আগে দেখা করতে আসছি। দাদাজান কই? মেহনূর কি গোয়াল ঘরে?
এবার শান্ত কপালটাতে অসংখ্য ভাঁজ পরলো মাহতিমের। কিন্তু মুখে কিছু না বলে পরিস্থিতি দেখতে লাগলো। মারজাও এসে তরুণকে দেখে খুশী হলেন। তরুণ সুরাইয়ার ভাইয়ের ছোটবেলার বন্ধু। তরুণরা যদিও পাশের বাড়িতে থাকতো, কিন্তু মা মা-রা যাওয়ার পর তরুণ চাকরী নিয়ে শহরে চলে যায়, তরুণের বাবাও ছেলের সাথেই থাকেন। হান্নান শেখ এসে উপস্থিত হলে বাড়ির পরিবেশই যেনো পাল্টে যায়। কেউ আর স্মরণে রাখেনা, মাহতিম এখান থেকে চিরদিনের মতোই বিদায় নিচ্ছে। তরুণের সাথে মাহতিমের কুশল বিনিয়ে ঘটে। সৌজন্যমূলক কুলাকুলি করলে মাহতিমের উদ্দেশ্যে তরুণ বলে,
– ব্রাদার, তুমি আমাকে চিনবে না। না চিনারই কথা। কিন্তু একি! তুমি কি কোথাও চলে যাচ্ছো?
মাহতিম ঠেলেঠুলে হাসি টেনে বললো,
– আমি তোমার চেয়ে কয়েক ইয়ারের বড় মেবি। তবে ফরমালিটি হিসেবে ‘ তুমি ‘ না বলে ‘ আপনি ‘ বললেই খুশি হবো।
কথাটায় তীক্ষ্ম খোঁচা ছিলো। তরুণ সেটা বুঝতে পেরে হাসি দিয়ে উড়িয়ে দিলো। কিন্তু মাহতিম তখনো সহজ হতে পারলৌ না। এদিকে মারজা তাগাদার সুরে বলে উঠলেন,
– কিরে মাহতিম? তুই না আড়াইটার মধ্যেই বের হবি? ঘড়িতে তো তিনটা বেজে যাচ্ছে।
মাহতিম তৎক্ষণাৎ বাঁ কবজির দিকে ঘড়িটার উপর চোখ রাখলো। একমিনিট ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে চিন্তার জন্য চুপ থেকে, হঠাৎ উদ্বেলিত কন্ঠে বললো,
– মা, আমার যাওয়া সম্ভব না।
মারজা বিচলিত ভঙ্গিতে প্রশ্ন ঝুলিয়ে বললেন,
– মানে? তুই না নিজেই যাওয়ার জন্য লাফালাফি শুরু করলি? এখন এই কথার মানে কি?
মাহতিম হাসিশূন্য মুখে তরুণের দিকে একপলক তাকালো। দৃষ্টি সরিয়ে মায়ের দিকে তাকাতেই পকেটে হাত গুজিঁয়ে বেপরোয়া ভঙ্গিতে বললো,
– আমার আদরের ভাইবোনগুলো আমাকে ছাড়া একটা সেকেন্ডও থাকতে পারেনা মা।
মাহতিমের কথা শুনে সবাই যেনো আকাশ থেকে ঠাস করে মাটিতে পরলো। নিজেদের মধ্যে অবাক চাহনিতে চাওয়া-চাইয়ি করতেই মাহতিম আবারও একই ভঙ্গিতে বলে উঠলো,
– নীতি তো পা পযর্ন্ত ধরে ফেলেছে। আর কি বলেছে জানো?আমি চলে গেলে ও নাকি খাবার পযর্ন্ত মুখে তুলবেনা। এবার বুঝো? ওদের মতো আদরের ভাইবোনগুলো ছেড়ে আমি কিভাবে একা থাকবো? আমার কষ্ট হবেনা বলো? সৌভিক তো একেবারে মেয়েদের মতো কান্না করে দিয়েছিলো, নাক দিয়ে পানি ছুটানো যেটা বলে। অনেক কষ্টে থামিয়েছি। সবশেষে চিন্তা করলাম, আমিতো নিষ্ঠুর হতে পারিনা। এজন্য ভেবেছি যাবো না। তোমরা যখন যাবে, তখনই আমি যাবো।
এই কথা শুনে সৌভিকের ইচ্ছা করলো, নিজের গালে মাতালের মতো থাপ্পড় মেরে স্মরণ করতে, সে কবে মেয়েদের মতো কেদেঁ দিয়েছে? কবে নাক দিয়ে পানি ছুটিয়ে কেদেঁছে? এই ঘটনা কবে হলো? মায়ের পেট থেকে বের হয়ে কেদেঁছিলো এইকথা সকলেই বলে, কিন্তু মাহতিমের ভাষ্যমতে কবে এভাবে পানি ছুটিয়ে কাঁদলো কবে?নীতির দুইকান দিয়ে যেনো ধোঁয়া বের হতে লাগলো। মাহতিমের পা সে কবে ধরলো? আবার খাওয়া বাদ দিবে বলেও কঠিন অনুনয় করেছে? সবার মুখের অবস্থা অমাব্যসার রাতের মতো কালো হয়ে গেছে। মানুষ এলিয়েন দেখলেও বোধহয় এতোটা আশ্চর্য হতোনা, যতোটা মাহতিমের বানোয়াট মিথ্যা শুনে আহাম্মক হয়ে গেছে।
– ‘ চলবে ‘
মন বাড়িয়ে ছুঁই গল্পের লিংক kobitor (all part)
#FABIYAH_MOMO
(#নোটাবার্তা : আরেকবার চেক দেওয়া সম্ভব হয়নি। চোখ ঘোলা এবং ঝাপসা হয়ে আসছে। ত্রুটিপূর্ণের জন্য দুঃখিত )