বাইরে রোমান্টিক ওয়েদার অথচ বউয়ের সাথে ঝগড়া চলে তিনদিন থেকে। মানে যাকে বলে আলাদা বিছানায় ঘুমানো টাইপ ঝগড়া । সকাল থেকে খুব চেষ্টা করছি কিভাবে ক্লোজআপ কাছে আসা গল্পের মতো বউয়ের কাছে আসা যায়। কিন্তু বারবার ব্যর্থ হচ্ছি।
সকাল সকালেই বউয়ের পছন্দের পাঙ্গাশ মাছ আর সাথে গরুর মাংস কিন্না আনছিলাম বাজার থেকে। ভাবলাম পছন্দের খাবার খেয়ে বউয়ের মুড সুইং করবে কিন্তু কাজ হয়নি। দুপুরে খাইতে বসে দেখি আলু ভর্তা আর ডাল রান্না করা। মনে মনে বুঝলাম আমার দিক থেকে গ্রীন সিগনাল দিলেও বউয়ের দিক থেকে রেড সিগনাল আসছে। চুপচাপ ভাত খেয়ে সহ্য করে গেলাম।
দুপুরবেলা শুয়ে শুয়ে ভাবছি কিভাবে বউয়ের মন গলানো যায়। আচ্ছা মাথাব্যথার ভান ধরলে কেমন হয়? যেই ভাবা সেই কাজ। উহ অহ করছি আর মাথায় হাত দিচ্ছি। অথচ বউয়ের এই রুমে আসার কোনো নাম নেই। আগে একটা টু শব্দ করলেই বউ দেখতাম ছুটে আসতো। আর আজ কোনো লক্ষণ ই নাই। ভাণের মাত্রা বাড়িয়ে দিলাম। একটুপর দেখি বউ কোথায় থেকে ছুটে এসে একটা বাঘমার্কা মলম কপালে চোখে ঘষে দিয়েই পাশের রুমে চলে গেলো।
ওরে আল্লাহ সেটা মলম না অন্যকিছু। চোখে কপালে আগুনের মতো জ্বলতে লাগলো। চুপচাপ দরজা লাগিয়ে দিয়ে বাথরুম গিয়ে ধুয়ে আসলাম। মনে মনে মলম কোম্পানির চোদ্দগুষ্টি উদ্ধার করলাম।
বউ পাগল বন্ধু রুদ্রকে কল দিয়ে ঘটনা সব খুলে বললাম। রুদ্র বললো এটা কোনো ব্যাপার ই না। ভাবীর জন্য দুই তিনটা শাড়ি কিনেদে। দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে। সাথেসাথেই বাইরে বের হয়ে দুইটা শাড়ি কিনে এনে ডাইনিং টেবিলে রেখে দিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম কখন বউ আসবে। এসে বলবে আরে এই সময় শাড়ির কি দরকার ছিল। কিন্তু না বউয়ের কোনো গ্রীন সিগনালের লক্ষণ ই নাই।
রাতে খেয়েদেয়ে চুপচাপ বসে আছি। বউ পাশের ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়েছে। কোনোকিছুই ভালো লাগছে না বলে ভাবলাম প্রিয় বন্ধু আরমান কে ফোন দেই৷ কিন্তু চারপাঁচবার কল দিয়েও ও ফোন ধরলো না৷ ভাবলাম যতক্ষণ ফোন রিসিভ করবে না ততক্ষণ ফোন দিয়েই যাবো।
২৫-২৬ বার কল দেয়ার পর ওপাশ থেকে আরমান ফোন ধরে বলে উঠলো ” ঐ শালা তুই ওয়েদার বুঝিস না? এই টাইমে কেউ এতবার ফোন দেয়। তোদের জ্বালায় কি বউয়ের সাথে একটু একা নিরিবিলি সময় কাটাতে পারবো না”। বন্ধুর কথা শুনে ফোন কেটে দিলাম।
একা একা শুয়ে আছি ঘুম ধরছে না। বাইরে টিপটপ বৃষ্টি হয়। মনে মনে ওয়েদার কে গালি দিতে লাগলাম। ঝগড়াঝাটির সময় এমন ওয়েদার হওয়া লাগে! ইসস আগেভাগেই যদি এই ওয়েদার আপডেট জানতাম তাহলে বউয়ের সাথে জীবনে ঝগড়া করতাম না।
টিভি ছেড়ে দিয়ে একটা ভূতের ছবি দেখতে লাগলাম। হঠাৎ ই মনে হলো” আরে আমার বউ না ভূতের ভয় করে”। দিলাম টিভির সাউন্ড বাড়িয়ে। একটু পর দেখি বউ আস্ত আস্তে রুমের ঢুকে সোজা বুকের মধ্যে।
ভূতের ছবি গুলাও না। শুধু ভয় দেখায় না। কাছেও আনে।
কাছে আসার গল্প
রিফাত আহমেদ