প্রিয়োসিনী পর্ব ৭
#নীরা_আক্তার
#পর্ব_৭
-তুমি নওরিনকে কেন বিয়ে করেছো তাকি জানি না ভেবেছো?
নীলাঞ্জনা এমন প্রশ্নে ইসরাক একটু নড়েচড়ে বসে।ইসরাক, নীলাঞ্জনা আর নোহা…(ইসরাকের ছোট চাচার মেয়ে তিনজন নোহার ঘরে আসর পেতেছে।হটাৎ নওরিনকে দেখে নীলাঞ্জনা এমন রিয়াক্ট করে বসবে তা ইসরাক বুঝতে পারে নি। অবস্থা বেগতিক দেখে নীলাঞ্জনা কে উঠিয়ে নিয়ে আসে।পিছু পিছু নোহাও আসে
ইসরাক চোখমুখ শক্ত করে প্রশ্ন করে,
-কি জানো?
-সব জানি আমি ইসরাক।তোমার চোখে আমি সেদিন অন্যকিছু দেখেছি।আমার দৃষ্টি ভুল করে না!
-দাদু কথা দিয়ে রেখেছিলো তাইবিয়েটা করেছি।
নোহা ইসরাকের পাশে বসে হাতটা নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে কাধে মাথা রাখে।
-ঠাট্টা করছো দাভাই?
-তোরা কি শুনতে চাস?
-যেটি সত্যি সেটা
-এটাই সত্য।দাদুর জন্য!
-তোমার জন্য দাদুভাই এমন হাজার লক্ষ্য কথাকে ছুড়ে ফেলার ক্ষমতা রাখে।
ইসরাক নোহার হাত থেকে হাতটা ছাড়িয়ে উঠে দাড়ায়,
–আমি শুধু চাই নওরিনকে শাস্তি দিতে চাই ভালোবাসার মানুষটা ঠকালে কতোটা যন্ত্রনা হয় এটা বুঝাতে ।ও বুঝে গেলেই হবে।আর কিছু চাই না।ভালোবাসা খেলার জিনিস নয়!!
নোহা একটু হাসে,
-তারপর??ছুড়ে ফেলে দেবে?
ইসরাক মাথা নিচু করে নেয়,
-ফেলে দিও।নওরিনের মতো ছুড়ে ফেলা ফুল আমি সযতনে তুলে রাখবো।যত্ন করবো।রোজ দিনে দুই দুইবার করে পানি দেবো।কখনো নুয়ে পড়তে দেবো না।
ইসরাক আর নীলাঞ্জনা দুজনই ভ্রু কুচকে তাকায় নোহার দিকে।নোহার বয়স খুব বেশি না।হিসেব করলে নওরিনের সমবয়সী কিংবা এক দুই বছরের বড় হবে।তবে এতো অল্প বয়সেই মেয়েটি বড্ড বড় হয়ে গিয়েছে।বড্ড হেয়ালি করে।কখনো কখনো তার অনেক কথায় কারো বুঝে আসে না।
নোহা মিচকে হেসে বলতে শুরু করে,
-কি দেখছো?আচ্ছা দা ভাই নীলাঞ্জনা আপাও তো তোমায় ঠকালো তাকেও কি তুমি বিয়ে করে শাস্তি দেবে?নওরিনের মতো?
ইসরাক দাঁত কিরমির করে উওর দেয়,
-নওরিন আর নীলাঞ্জনা দুজনের ব্যপ্যারটাই আলাদা।
নীলাঞ্জনা মাথা নিচু করে নেয়।
নোহা ইসরাকের গলা জরিয়ে ধরে,
-দাভাই পরশু তো আমার জন্মদিন আমায় উপহার দেবে না?
ইসরাক হাসে…
-কি চাই?
-তোমার সবচেয়ে দামী জিনিস চাই
ইসরাক পকেট থেকে কার্ড বার করে দেয়।যতো ইচ্ছে কেনা কাটা কর সমস্যা নেই।
-এটা নয়
–আচ্ছা যা চাস দেবো আপাতোতো এটা বোনাস হিসেবে রাখ।
-কথা দিলে কিন্তু….বলো পাক্কা প্রমিস!
-দিলাম!
নোহা মুচকি হেসে বেরিয়ে যায়।যেতে যেতে বলে যায়,
“তোমার বউকেও কিন্তু নিয়ে যাবো…তবে ইশাকে নেবো না।হিংসুটে বুড়িটা আমার সুখ সইতে পারে না”
ইসরাক হাসে….
নীলাঞ্জনা বিছানায় বসে কাঁদছিলো…ইসরাক নীলাঞ্জনার কাছে গিয়ে বসে।
-কাঁদো কেন?
–আমাকে কি সত্যিই ক্ষমা করা যায় না।
–না!
-ঠিক আছে।আজ সজল ওর বাবা মাকে নিয়ে আসবে বলেছে।বিয়ের কথা বলবে বলে।আমি জানি সবটা তুমি ম্যানেজ করেছো।আমি তোমার কাছে কৃতজ্ঞ।যদি বিয়েটা হয় তুমি এসো।আমার কষ্ট মিশৃত একটু সুখ লাগবে।আমার ভালো লাগবে।
ইসরাক হাসে।
–বিয়েটা হবে।ভয় পেয়োনা।আমি আছি।
-তুমি নেই ইসরাক।
-সত্যিই আমি নেই।তোমার কাছে নেই তবে তোমার পাশে আছি।বন্ধু হিসেবে,শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে।এর বেশি কিছু নয়।
ইসরাক ঘর থেকে বেরিয়ে যায়।নীলাঞ্জনা সেখানেই বসে আছে।ভীষন ঘামছে সে শরীর চলছে না।উঠে দাঁড়ানোর মতো ক্ষমতা নেই।জীবনটা সত্যিই বদলে গেলো।
*******
এতোক্ষন ইশা আর নওরিন তাদের ঘরে বসা ছিলো।নওরিন ইশাকে এটা সেটা প্রশ্ন করছে।ইশা উওর দেয় না।এক হাতের তালু দিয়ে আরেক হাতের তালু ঘসতে থাকে।
-মেয়েটা কে?
-(…)
-ওনার গফ কেন এসেছেন?
-(…)
-কি হলো ইশা কথা বলিস না কেন।আমি চললাম
নওরিন রেগে গেছে….নওরিন উঠে বসতেই নোহা এসে নওরিনের হাত ধরে,
-তুমি কিন্তু ভীষনরকম সুন্দর।
নওরিন অবাক হয়।ইশা নোহার দিকে তাকায়।
–আমি নোহা।তোমার ছোট চাচাশ্বশুরের একমাত্র মেয়ে।ইশার থেকে আমার ইন্ট্রোডাকশন চেও না নাইলে ওর মতো তুমিও আমায় ঘেন্না করবা।
নওরিন অবাক চোখে তাকিয়ে আছে।
-রেডি হও তোমায় নিয়ে শপিং এ যাবো।দাদা ভাই কার্ড দিয়ে দিয়েছে ইচ্ছে মতো শপিং করতে পারবো।
ইশা দাঁত কিরমির করে উওর দেয়,
-কোই আমাকে তো কখনো দেয় না!
-তোকে তো দাভাই ভালোইবাসে না তাই দেয়ও না আমায় বাসে তাই দিয়েছে।
নোহা চলে যায়।চিকন গড়ন মাথায় লম্বা চুল।ধবধবে সাদা গায়ের রং নোহার।ঠোঁট টা গোলাপের পাপড়ির মতো গোলাপি।
চোখের মুণিটা হালকা নীল চোখের দিকে তাকালে মনে হবে গোটা আকাশটায় যেন মেয়েটি নিজের চোখে ধারণ করেছে।যেকোনো পুরুষ মেয়েটির চোখের সমুদ্রে হারাতে বাধ্য।
নওরিন ইশাকে হালকা ঠেলে প্রশ্ন করে..
-কে রে এটা?কি সুন্দরী ঠিক যেন অপ্সরা….
ইশা মুখ বাকিয়ে উওর দেয়…
-ছাই!এই বাড়ির হেড মিস্ট্রেস ওনি।যখন যা চায় তাই দেয় সবাই।ছোটকা আর বাবার চোখে মুণি।তোর বরের হৃদপিণ্ড।সবাই ওকে এতো ভালোবাসে কেন বুঝি না।অসহ্য একটা….আমান ভাই তো ওকে পারলে মাথায় নিয়ে নাচতো….!!.এই টুকু বলে চুপ হয়ে যায় ইশা নওরিনের দিকে তাকায়..
-সরি মাফ করে দে জান
-কেন এই নামটা নিশ আমার সামনে….
নোহা ছুটে আসে…
-এখনো রেডি হওনি তুমি।
নওরিন হাসার চেষ্টা করে।নোহা ইশার দিক আড় চোখে তাকায়….
-ও নিশ্চয় তোমায় আমার নামে ভুজুংভাজুং বুঝিয়েছে।আমি ওর মনে মনে না হওয়া সতীন তাই আমার উপর ওর এতো রাগ… প্রিয়ো বোনটি আমার যা রেডি হয়ে নে তোকেও নিয়ে যাবো সমস্যা নেই…
ইশা মুখ বাকিয়ে উওর দেয়..
-দরকার নেই।
-দাভাইকে বলে দিয়েছি দাভাই আমাদের নিয়ে যাবে তুই না গেলে না যা নওরিনকে নিয়ে যাবো।
-ভাইয়ার নাকি ক্লাস আছে।
–আমি বলেছি নিয়ে যাবে
ইশা রাগে গজ গজ করতে করতে বলে উঠে,
–আমিও যাবো না আমার বেস্টু ও যাবে না।কেউ কোথাও যাবো না!তোর দরকার পড়লে তুই যা।
নোহা চোখ বড় বড় করে তাকায়।ইশা কিছু একটা ভেবে রাজি হয়ে যায়।
তিনজন রেডি হয়ে বেড়িয়ে পড়ে।
গাড়িতে ড্রাইভিং সিটে ইসরাক বসে আছে।নওরিন, ইশা,নোহা তিনজনই জিন্স আর লোং টপস পড়েছে।গলায় প্যাচ্যানো ওরনা। ইশা নওরিনের হাত ধরে এগিয়ে যেতে যেতে বলে…
-জান গিয়ে সামনে বস।দ্রুত যা এই খচ্চর পত্নী যেন ভাইয়ার পাশে বসতে না পারে।
নওরিন ভ্রু কুচকে তাকায়…
-বসলো বসুক তাতে কি…তবে আমি এই উগ্র পাগল বদমেজাজি গন্ডার,শয়তানের নানা,ছাগলের তিন নম্বর ছানা,বখাটে লোকের সাথে বসবো না আমরা পেছনে বসবো।
ইশা বোকার মতো হাসে।এক নিঃশ্বাসে তারই সামনে তারই ভাইকে কতোগুলো গালী দিলো।অন্যকেউ দিলে এতোক্ষণ মেরে নাক ফাটিয়ে দিতো।
নওরিনের ফেছনের ছিটে বসে…ইসরাক নওরিনের দিকে তাকায়।নওরিন মুখ বাঁকিয়ে অন্য দিকে তাকায়।
ইশা পেছনের ছিটে বসতে নিলে নোহা এসে দুম করে বসে পড়ে।
-তুই সব সময় বলিস না আমি তোকে দা ভাইয়ের পাশে বসতে দিই না আজ বস আমি তো নওরিন দ্যা নিম ফুলের পাশেই বসবো।
নওরিন নোহার অদ্ভুত আচরনে বার বার বোকার মতো হাসছে।
গাড়ি আপন মনে ছুটছে।নোহা আর নওরিন পেছনে বসা।নোহা বার বার নওরিনের দিকে তাকাচ্ছে।খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে।
নওরিনের একটু বিরক্ত লাগছে।
-কি দেখো এতো?
-তোমাকে?
-কিহ্
-তোমার কতো সাহস। সেদিন এতোগুলো ছেলের সামনে দাড়িয়েও একটুও ভয় পাওনি।কি সুন্দর করে সবটা বুঝিয়ে দিলে।তুমি কি জানো তুমি বড্ড বেশি সুইট….
নওরিন বোকার মতো প্রশ্ন করে…
-কিসের কথা বলছো?
-কক্সবাজার যাওয়ার পথে ভুলে গেলে?
নওরিন থতমত খেয়ে যায়।
ইশা পেছন ফিরে তাকায়।নোহাকে ধমক দেয়।
-এইসব বলিস কেন?
-সরি।
নোহাও কিছু বলে না…!নওরিন অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে নেয়।
*****
শপিং মলে যে যার মতো ঘুরছে।ইসরাক তিনজনকে একটা জুয়েলারি সপে এনেছে।সামনে নোহার জন্মদিন। জন্মদিনে বোনকে স্বর্ন না দিলে হয়।আর বিয়ের পর নওরিনকেও কিছু দেওয়া হয় নি।দুজনকে দিলে ইশা রাগ করবে তাই ইশাকেও দেবে।
নওরিন এক জোড়া কানের দুল কানে ধরে…
পেছনে ইসরাক এসে দাড়ায়।নওরিন আনমোনেই বলে উঠে,
-ভাল লাগছে?
ইসরাক হাত থেকে নামিয়ে রেখে অন্য একজোড়া নওরিনের হাতে দেয়।নওরিন সেটা পড়ে ফেলে
-এটা?
-তোমার রূপের আগুনে পুড়তে চাই।পুড়াবে আমায়?রাতে অপেক্ষা করবো?
-নির্লোজ্জ
-তোমার কাছেই তো?
-আমি কে হই আপনার?
-ব্যক্তিগত সম্পত্তি!!
নওরিন ভ্রুকুচকে তাকায়।নওরিন কিছু বলতে যাবে এর আগেই নোহা আসে নওরিনের কান থেকে দুল গুলো খুলে অন্য আরেক জোড়া দুল পড়িয়ে দেয়
-এবার দেখো কত্তোসুন্দর লাগছে যেন রূপকথার কোনো পরী।দাভাইয়ের চয়েজ একদম ভালো না।
ইসরাক হাসে।তবে ইসরাকের পছন্দ করা সেই দুল জোড়াও সে প্যাক করে নেয়।নওরিনকে এটা পড়তেই হবে,পছন্দ হলে হোক না হলে না হোক!
*****
শপিং মলে ঘুরাঘুরি করার সময় হটাৎ ই একটা হাত নওরিনকে নিজের দিকে টেনে নেয়,প্রথমে নওরিন ভয় পেলেও পরে নওরিনের চোখ দিয়ে ঝড়তে থাকে এক রাশ ঘৃনা।
-কেমন আছো?
-বেঁচে আছি
-রাগ করো না নওরিন
-রাগ কোই করলাম ঘেন্না করছি। রাগ নয়।এটা ঘৃনা।গভীর প্রেমের পঠ চুকিয়ে বুকিয়ে ফেলার পর যেটা হয় সেটা।
লোকটা মাথা নিচু করে নেয়,
–আমি পালিয়ে যাই নি নওরিন আমাকে পালাতে বাধ্য করা হয়েছিলো।তোমায় ছেড়ে যেতে চাই নি আমি।
-চান নি কিন্তু গিয়েছেন মিস্টার সাগর। বাদ দেন এইসব কথা বলতে ইচ্ছ করছে না আর এখন এই সব বলেও লাভ নেই।
নওরিন হাত ছাড়িয়ে ছুট লাগায়।
–আমি ফোন করবো তোমায়।প্লিজ অনেক কথা আছে আমার।
নোহা দূরে দাড়িয়ে সবটা লক্ষ করে।রাগে গা রিরি করছে।
*****
আসরা পথে রেড লাইটে তাদের গাড়ি দাড়িয়ে যায়।গাড়ির ঠিক পাশে একজোড়া নতুত বর বউয়ের গাড়ি দাড়ানো।নোহা সেদিকে তাকিয়ে আছে।একমনে দেখছে ।
ইসরাক হেসে বলে উঠে,
-তোরও বিয়ে দেবো।এর চেয়ে বড় গাড়িতে তুই শ্বশুর বাড়ি যাবি।
নোহা একটা লম্বা নিঃশ্বাস নেই।ইসরাকও নিজের মুখটা থম থমে করে নেই।নোহার গাল বেয়ে একফোটা পানি গড়িয়ে পরে।
-সেটা কখনোই সম্ভব নয় দাভাই।শুধু শুধু মিথ্যে বলো না।
নওরিন আনমনেই প্রশ্ন করে
-কেন?
কেউ কোনো উওর দেয় না
_______
রাতে নোহা নওরিনকে ছাদে টেনে নিয়ে যায়।
-কিছু বলবা?
নোহা হেসে উওর দেয়,
-তুমি ভিষন সাহসী।
-এমন কেন বললা?
–আমি সবটা জানি নওরিন! শরীর কলঙ্ক নিয়ে বেঁচে থাকা বড্ড কঠিন।এই সমাজ অন্যায়কারীর চেয়ে যার সাথে অন্যায় হয় তাকেই বেশি ঘৃনা করে।তাকেই অন্যায়ের জন্য দায়ী করে।আর সে যদি নারী হয় তাহলে সোনায় সোহাগা।ইচ্ছে মতো তার শরীরে কালি লাগানো যায়।মনের মাধুরি মিশিয়ে কালী লেপে দেয়।
নওরিন অবাক হয়ে তাকায়…
-এইসব আমায় কেন বলছো।
নোহা একটু হেসে উওর দেয়,
-ইশার সব সময় কমপ্লেইন আমাকে সবাই কেন এতো ভালোবাসে!
-কেন?
–আই আই ওয়াজ রেপড হোয়েন আই ওয়াজ অনলি এইট ইয়ারস ওল্ড।বড়বাবার ফ্রেন্ড,
লোকটা আমায় অনেক আদর করতো মাঝে মাঝে আসতো।এভাবেই বিশ্বাসি হয়ে উঠেছিলো৷ একদিন আমি ঘরে বসে বসে পড়ছিলাম।সেদিন বাড়িতে ছোট্ট একটা পিকনিকের আয়োজন করা হয়েছিলো।লোকটা হটাৎ করেই আমার রুমে আসে।প্রশ্ন করে বাবা কোথায়।আমি হাত উচিয়ে বাহিরে দেখিয়ে দেয়।ওনিও চলে যান। একটু পর আবার ফিরে আসেন।তারপর ওনি আমার পাশে বসে পড়েন।লোকটা হটাৎ করেই আমার জামার মধ্যে…
নোহা দাত দিয়ে ঠোঁটে কামড় দেয়।
সেদিন আমার প্রত্যেকটা চিৎকারের সাক্ষী ছিলো দাভাই।ছোট্ট দাভাই সেদিন বুকদিয়ে আগলে নিয়েছিলো আমাকে।কিন্তু সর্বনাশ কেউ আটকাতে পারেনি।তারপর থেকেই তো আমায় এত্তো ভালোবাসে।সব ঘটনারই একটা ভালো দিক আর একটা খারাপ দিক থাকে।দেখোনা যদি সেদিন ঘটনাটা না ঘটতো,আমাকে কি সবাই এতো এতো ভালো বাসতে?দাভাইও বাসতো না।ঘটনাটা বাড়ির বড়রা ছাড়া কেউ জানে না।কাওকে বলোনা নওরিন।
নোহা কথাটা বলে কান্না করে দেয়।
নওরিন নোহার হাত ধরে।সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করে,
নোহা নিজেকে সামলে নিয়ে উওর দেয়,
-জানো নওরিন আই হেইট মেন। পুরুষ মানুষগুলোকে আমার সহ্য হয় না।গা জ্বলে।ভীষন গাজ্বলে।বিয়ে আমি কিছুতেই করবো না।
-এই পুরুষ মানুষগুলোই কিন্তু দিন শেষে আমাদের আগলে রাখে।সবাই এক নয় নোহা…
নোহা একটু হাসার চেষ্টা করে উওর দেয়,
-বাদ দাও।আমাকে একটা কথা বলো ঐ সাগরকে কি দেখে ভালোবেসেছিলে তুমি?একেবারে ভীতু।থাকার মধ্যে শুধু চকলেট বয় লুকটায় আছে।তোমায় কিভাবে একা ফেলে পালিয়েছিলো বলো তো….
নওরিন ভয়ার্ত কন্ঠে তাকিয়ে আছে নোহার দিকে….
পেছন ফিরে তাকাতেই দেখে ইসরাক দাড়িয়ে দরজার কাছে হাত ভাজ করে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছে।
নোহা নওরিনের কানের কাছে এসে বলে উঠে,
-সব পুরুষমানুষই এক।কেউ নিজের ভেতরের রাক্ষসটাকে দমিয়ে রেখে ভালোমানুষের মুখোষ পড়ে থাকে আর কেউ মুখোশ ছিড়ে ফেলে রাক্ষস হয়ে বেঁচে থাকে।সবাই এক নওরিন।আই হেইট মেন
চলবে…..
(নতুন ক্যারেক্টা দেখে অনেকেই হাহাকার করছেন।আমিও ব্যক্তিগত ভাবে অনৈতিক কোনো সম্পর্ক সাপোর্ট করি না। এখন কথা হলো গল্প কি একজন দুইজনকে নিয়ে হয় বলুন?আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে চলার পথে কতো মানুষের সাথে মিশতে হয়।সবগুলো মানুষের সাথেই আলাদা আলাদা গল্পের সৃষ্টি হয়।যাই হোক গল্পটা অনেক বেশি টানার ইচ্ছে নেই।অল্প পর্বেই শেষ করবো।ধন্যবাদ)