প্রিয়োসিনী পর্ব ১৯
#নীরা_আক্তার
জিনাত সিকদার রাগ করে ঘরে এসে বসে আছেন।পৃথিবী উল্টে গেলেও সে আমান সিকদারের সাথে মেয়ের বিয়ে দেবে না।
একেই ছেলেটার চরিত্র ভালো না।তার উপর বউমার সাথে কেলেংকারী ঘটিয়ে রেখেছে।
ইমতিয়াজ সিকদার কিছুক্ষণ পর ঘরে আসে।স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে,
-ভালোই হলো ইশাকে আর দূরে পাঠাতে হবে না!ইশা আমান ঘরের ছেলে মেয়ে ঘরেই থাকবে।
জিনাত সিকদারের যেন সর্বাঙ্গ জ্বলে উঠলো….রাগে ফোস ফোস করতে করতে বলে উঠেন,
-দরকার পড়লে মেয়েকে কেটে নদীতে ভাসিয়ে দেবো তবুও তোমার ঐ গুনধর ছেলের সাথে বিয়ে দেবো না!
ইমতিয়াজ সিকদার ক্ষেপে গিয়ে তেড়ে আসে স্ত্রী-র দিকে,
জিনাত সিকদার স্বামীর চোখে চোখ রাখে,
-এই পরিবার আমাকে কখনো কিছু দেয় নি।আপনিও দেন নি।সারা জীবন তো নিজের সুখ, নারী,ভোগ বিলাসিতা, নিয়ে মেতে ছিলেন।আমি একা আমার সন্তানদের মানুষ করেছি বড় করেছি।সিকদার বাড়ির অহংকার আর দুশ্চরিত্রতার আঁচ লাগতে দেয় নি।আপনাদের মতো অসভ্য হতে দেয় নি।আমার ইসরাকের বিয়েটাও আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে করিয়ে দিলেন শুধু মাত্র আপনার ঐ গুনধর পুত্রের দোষ ঢাকতে। ইসরাকের জীবনটাতো শেষ এখন মেয়েটার জীবনও শেষ করে দিতে চান?
ইমতিয়াজ সিকদার কি বলবে ভেবে পায় না,
-সারা জীবন আপনি আমানের ভালোবাসায় অন্ধ ছিলেন।আমান কি চায়,আমান কি ভালোবাসে সেটাই দেখে গেছেন এখনো সেটাই দেখছেন….কখনো কি আপনার সন্তানদের কথা ভেবেছেন?
ইমতিয়াজ সিকদার শান্ত গলায় উওর দেয়,
–ইশাকে প্রশ্ন কর।ইশা যদি রাজি না থাকে তাহলে এই বিয়ে নিয়ে এবাড়িতে আর কোনো দ্বিতীয় কথা হবে না আর যদি ইশা রাজি থাকে তাহলে এই বিয়ে কেউ আটকাতে পারবে না। তুমিও না
-পুত্র ভালোবাসায় অন্ধ হয়ে গেছেন আপনি!নওরিনের সাথে ওর অবৈধ সম্পর্ক ছিলো….কি করে…..!!
-এই বিষয়ে আর একটাও কথা বলবা না।বার বার আমানকে জড়িয়ে বউমার নাম নিবা না।
নয়তো আমার চেয়ে খারাপ আর কেউ হবে না!
জিনাত সিকদার আরো কিছু বলতে যাবে, তার আগেই সে লক্ষ করে পর্দার আড়ালে ইশা দাড়িয়ে দাড়িয়ে তাদের কথা শুনছে,
জিনাত সিকদার মেয়েকে ধমক দেয়,
-কি চাই তোর এখানে?লুকিয়ে লুকিয়ে কি শুনেছিস।
ইশা পর্দার আড়াল থেকে বেরিয়ে মায়ের কাছে গিয়ে বসে
-মা আমি আমান ভাইকে ভালোবাসি।ছোট বেলা থেকেই ভালোবাসি…আমি
জিনাত সিকদার ইশাকে কষিয়ে একটা চড় বসিয়ে দেয়।
ইশা গালে হাত দিয়ে উঠে দাড়ায়।রাগে গজ গজ করতে করতে বলে উঠে,
–আমি আমান ভাইকেই বিয়ে করবো!
জিনাত সিকদার ইশাকে টেনে কাছে এনে আরো দুইটা চড় লাগিয়ে দেয়,
-নির্লজ্জ মেয়েছেলে। লজ্জা করলো না বাবা মায়ের সামনে দাড়িয়ে এইসব কথা বলতে।দরকার পড়লে তোকে কেটে ভাসিয়ে দেবো প্রাণে শেষ করে দেবো তবুও বিয়ে দেবো না।
–আমাকে মেরেই ফেলো।নয়লে আমি নিজেই মরে যাবো।আমান ভাইয়াকে ছাড়া মরে যাবো শুনেছো?
জিনাত সিকদার তার পায়ে থাকা স্লিপার খুলে ইশাকে মারতে যায়।ইমতিয়াজ সিকদার তাকে আটকে দেয়।
-ইশা মা যা নিজের ঘরে যা।
ইশা ঘরের দিকে ছুট লাগায়।
জিনাত সিকদার চেঁচাতে থাকে,
-আমি তোমাদের মা।কোনো রকম অন্যায়,বেয়াদবি সহ্য করবো না।তোমাদের এই শিক্ষা আমি দেই নি
ইমতিয়াজ সিকদার স্ত্রী কে শান্ত করান।জিনাত সিকদার বিছানায় বসে হাঁপাতে থাকে,
————
ইসরাক নওরিনের বাড়ির সামনে রাস্তার ধারে বসে আছে।কতোটা সময় কেটে গেছে তার খেয়াল নেই ইসরাকের।উঠতে ইচ্ছে করছে না।কোথাও যেতে ইচ্ছে করছে না।
নওরিন সবে মাত্র গোসল সেড়ে বারান্দায় এসে দাড়িয়েছে।বাহিরে চোখ পড়তেই লক্ষ করে ইসরাক রাস্তায় বসে আছে।দপ করে নওরিনের মেজাজটা খারাপ হয়ে যায়।
“এই লোকটা এখানে কেন?”
ঘরে এসে ফোনটা হাতে নেয়।ইসরাকের নাম্বারে ডায়াল করে।
একবার বাজতেই ইসরাক কল ধরে,
-কি চাই আপনার?ঘর বাড়ি কিছুই নেই নাকি?
-মানে?
-ওভাবে রাস্তায় বসে আছেন কেন?
-দাড়িয়ে থাকতে কষ্ট হচ্ছে তাই বসলাম।
-তাহলে বাড়ি যান।এভাবে কেউ বসে থাকে নাকি?আমার বাবার সম্মান নেই?বাড়ির জামায় রাস্তায় বসে লোকজন কি বলবে?
-তোমায় খুব দেখতে ইচ্ছে করছে।একবার আসবা?দেখেই চলে যাবো!
নওরিন কিছু একটা ভেবে বলে উঠে,
-ভেতরে আসুন।আপনাকে মিষ্টি খাওয়াবো।আপনার জন্য একটা গুড নিউজ আছে।
-কিহ্।ডাকছো আমায়?
-হুম্ম আসুন।
ইসরাক উঠে গাড়ির কাছে যায়। রিপোর্ট গুলো গাড়িতে ছুঁড়ে মেরে হাটা ধরে নওরিনের বাড়ির দিকে।
বাড়ির ভেতরে ঢুকতেই লক্ষ করে বাড়ি ভর্তি মানুষজন।
ইসরাককে দেখে নওরিনের মেজো ভাই রেগে যায়।কিন্তু নওরিন এসে ভাইকে থামিয়ে দেয়।ইসরাককে নিয়ে নিজের ঘরে চলে যায়,
-এতো লোকজন কেন?এখনো ডিভোর্সই তো হয় নি…তার আগেই পাত্র পক্ষকে ডেকে খবর পাঠিয়ে দিয়েছো?
নওরিন পেছন ফিরে তাকায়,ইসরাককে বা গালে আস্তে করে চড় মারে।
ইসরাক গালে হাত দিয়ে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে থাকে,
-এতো সাহস তোমার? আমার গায়ে হাত দাও
নওরিন ইসরাকের পিঠে একটা কিল দেয়,
-ইচ্ছে করছে গল্পের নায়ক দের মতো বেল্ট খুলে পিটিয়ে আপনার পিঠের ছাল চামড়া তুলে দেই।নিন বেল্টটা খুলে আমাকে দিন
-কি সাহস
-হুম অনেক সাহস।ওনারা মেজো ভাবির বাপের বাড়ির লোকজন।মেজো ভাবির বাবা, মা,চাচা চাচী আর বোন।তার ভাইয়েরও আসার কথা ছিলো কিন্তু এখনো এসে পৌছাই নি। ভাবি বড়লোক বাড়ির আদরের দুলালি ছিলো।ভাইয়াকে ভালোবেসে সব ছেড়ে ছুড়ে পালিয়ে এসেছে।বিয়ের তিন বছর পর আজকে প্রথম ওনারা ভাই-ভাবিকে মেনে নিলো।
-তাই নাকি?
-হু।ওহ আসল কথাটাই তো বলা হয় নি।মেজো ভাবির বাচ্চা হবে!!!
নিন মিষ্টি খান……
ইসরাক ভ্রু কুচকে তাকায়।
-এই জন্য ডাকলে?
-হুম্ম।বাড়িতে নতুন অতিথি আসবে।হাজার হলেও আপনি বাড়ির জামায়।এরকম আনন্দের সময় আপনাকে তো আর বাহির থেকে তাড়িয়ে দিতে পারি না।
–আমি তো ভাবলাম আমাদের বাচ্চা হবে…ধুর…মনটাই খারাপ করে দিলা!
নওরিন মুখ বাকিয়ে তাকিয়ে থাকে ইসরাকের দিকে
ইসরাক ওয়াশরুমে চলে যায়।চোখে মুখে পানি দিয়ে বের হয়ে এসে বিছানায় বসে
,
-আপনার সাথে কিছু কথা আছে!
-আবার কি কথা?
–আমি আজকেই মেজো ভাইকে আমাদের ডিভোর্সের কথা জানিয়েছি।ভাইয়া বলেছে খুব তারাতারি হয়ে যাবে।
-ডিভোর্সের ভুত মাথা থেকে নামেনি?
-নাহ্ প্লিজ।আপনার সাথে সম্পর্ক রাখা সম্ভব না!
-এই তো কতো মিষ্টি করে কথা বলছিলে হটাৎ কি হলো তোমার?
–সবাই আমাকে পাগলই মনে করে।কেউ কেউ মনে করে আত্ম সন্মানহীন।আসলে আমার সমস্যা হলো আমি মানুষের মিষ্টি কথায় খুব দ্রুত সব ভুলে যাই।কেউ শত আঘাত করার পরও যদি একটু আদর করে হাত বাড়িয়ে দেয় ধরে ফেলি।কিন্তু এবার আর আমি আপনাদের ভাইবোনের কথায় ভুলবো না!না আপনাকে ক্ষমা করবো না ইশাকে।
ইসরাক বিছানায় গা এলিয়ে দেয়,
নওরিন অবাক চোখে তাকায় ইসরাকের দিকে।কি অদ্ভুত।ইশার ব্যাপারে কিছু জিঙ্গেস করলো না কেন?
ইসরাক প্রশ্ন করে,
-নওরিন তুমি আসলেই একটা পাগলী।আর বড্ড সহজ সরল। পৃথিবীতে এতো ভালো মানুষের ভাত নাই।
-ভালো বলেই তো আপনার মতো ভুত পালতেছি।উঠুন। এই ঘামা নোংরা শার্ট পরে বিছানায় শুলেন কেন?
ইসরাক নওরিনকে কাছে টেনে নেয়!
–আমি পাগল হয়ে যাবো নওরিন। তোমাকে ছাড়া কি করে বাঁচবো বলো তো…অবশ্য আমি তো মরেই যাবো!
নওরিন ইসরাকের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়।
–আমি কাওকে বলিনি আমার জন্য মরতে।এটা যার যার নিজের ইচ্ছে।
ইসরাক নওরিনের হাত টেনে ধরে।দুহাতে একটা গভীর চুমু খায়।নওরিন হাত ছাড়িয়ে নেয়,
-এইসব লুতুপুতু করে লাভ নেই।আমি গলবো না।
বাহির থেকে ভাই ভাবি তাদের ডাকছে।
ইসরাক আর নওরিন ড্রইং রুমে চলে আসে,
সবাই ড্রইং রুমে বসা।ইসরাকে দেখে তিশা ভাবির ভাই তিয়াশ ইসরাকের দিকে এগিয়ে আসে।
-ইসরাক তুই এখানে…?
ইসরাক তিয়াশকে দেখে মুচকি হাসে।
-তুই এখানে?
–এটা আমার বোন তিশার শ্বশুর বাড়ি।কিন্তু তুই!
-নওরিন আমার স্ত্রী।এটা আমারও শ্বশুর বাড়ি দোস্ত
[তিয়াশ ইসরাকের বেস্ট ফ্রেন্ডদের মধ্যে একজন।কলেজে তারা একসাথেই পড়তো।সে পেশায় একজন ডাক্তার]
তিয়াশ ইসরাকের সাথে হ্যান্ডশেক করে গলা মেলায়।
-ইসরাক ভাই তোর জন্য চেম্বারে কতোক্ষন অপেক্ষা করেছি জানিস? রিপোর্টস গুলো নিয়ে এলি না কেন?
ইসরাক থতমত খেয়ে যায়,
–আসলে সময় হয় নি।বাদ দে পরে চেক করে নিস!
তিয়াশ আর ইসরাক সবার থেকে আলাদা হয়ে নওরিনে ঘরে চলে যায়।বাঁকি কথা সেখানেই হবে,
নওরিন ভ্রু কুচকে তাকায়।তারপর রান্না ঘরে চলে যায় সে।এতোক্ষণ মাথায় ছিলো না ইসরাকে তো কিছু খেতেই দেওয়া হয় নি এদিকে তিয়াশও লেটে আসায় তারো খাওয়া হয় নি!
নওরিন দুজনের জন্যই খাবার নিয়ে ঘরে চলে যায়।
ইসরাক একটু বিরক্ত হয়,
-খাবো না প্লিজ।
-খেতে হবে…
-অস্ব…
-এতোই যখন অস্বস্তি হচ্ছে….এগুলো পড়ে আছেন কেন।চেন্জ করে নিন।কাল থেকে এক জামা পড়ে আছেন।কেমন নোংরা নোংরা লাগছে
-আমি কি জামা কাপড় নিয়া আসছি?
-ওয়েট
নওরিন তার বড় ভাইয়ের কিছু কাপড়চোপড় এনে দেয়।ইসরাক সেগুলো নিয়ে ওয়াশ চলে যায়।শাওয়ার নিয়ে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে আসতেই নওরিন তাদের খাবার সার্ভ করে দেয়!
________________
ড্রইং রুমে সিনিওর সিটিজেনরা সবাই যে যার মতো গল্প করছিলো।।তারা আজকে তিশা আর নওরিনের মেজো ভাই নিবিড়কে প্রথমবারের মতো বাড়ি নিয়ে যাবে।কিন্তু নিবিড় যেতে চায় না।কাল নওরিনের বার্থ ডে আজই যদি চলে যায় তাহলে মাঝরাতে বোনকে সার্প্রাইজ দিবে কি করে!
সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় আজ তারা চলে যাবে তিয়াশকে রেখে যাবে।কাল জন্মদিন পালন করে তিয়াশ মেয়ে জামাইকে বাড়ি নিয়ে আসবে!
__________
এদিকে সিকদার বাড়িতে দুপুরের পর থেকেই ঝড় চলছে।বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে নেমে এলো তাও জিনাত সিকদার নিজেকে শান্ত করতে পারছে না।সে যেন পাগল হয়ে গিয়েছে।একেই তো ইসরাক বাড়ি ফিরছে না তারউপর ইশার কথাগুলো বার বার কানে বাজছে তার।রাগে গা জ্বলছে।
তিনি শোয়া থেকে উঠে বসেন।বোনকে কল করেন।এই মুহূর্তে যদি বোন পাশে থাকতো তাহলে হয়তো কোনো উপায় বের করে দিতো।
ইশার মনে অনেক প্রশ্ন কেন হটাৎ করে আমানভাই তাকে বিয়ে করতে চাইছে?এই সব শত শত চিন্তা নিয়ে আমানকে খুজতে থাকে।আমানের সাথে কথা বলা প্রয়োজন। সারা বাড়ি কোথায়ও আমান নেই।অনেক খোঁজা খুজির পর ইশা নোহার ঘরের দিকে যায়,
এই মেয়ে বড্ড গায়ে পড়া।হয়তো দেখা গেলো আমানকে ফুসলিয়ে ফাসলিয়ে নিজের ঘরে নিয়ে গিয়েছে।তারপর ভালো মন্দ বুঝাচ্ছে….
ইশা নোহার ঘরে যেতেই দেখে আমান আর নোহা বারান্দায় দাড়িয়ে কথা বলছে।ইশার রাগে গা জ্বলে উঠে।আড়ি পাততে থাকে তাদের কথা শোনার জন্য…..
কিন্তু আমান তাকে দেখে ফেলে….
ইশা থতমত খেয়ে যায়,
–আসলে তোমাকে কোথাও দেখছিলাম না তাই
-কিছু বলবি!
-না মানে একটু পার্সোনাল কথা ছিলো যার তার সামনে বলা যাবে না।
নোহা ফোঁস করে উঠে
-যার তার সামনে মানে?আমাকে কি তোর যে সে মনে হয়?
ইশা উওর দিতে চেয়েও চুপ হয়ে যায়।আমানের সামনে ঝগড়া করাটা ঠিক হবে না।
আমান নোহাকে ধমকিয়ে চুপ করে দেয়,
-যা কথা বলার পরে বলিস।আমি ফোন করবো তোকে।আপাতোতো আমি চলে যাচ্ছি।
ইশা চমকে উঠে,
-কোই যাবা থেকে গেলেই পারতে!এটা তো তোমারও বাড়ি।নওরিন নেই তোমার অসুবিধা হবে না।
-নাহ্ বিয়েটা হয়ে যাক তারপর থাকবো
আমান বেরিয়ে যায়।ইশা আমানের পেছন পেছন যেতে নিলে নোহা ইশার হাত টেনে ধরে,
-বারে বারে ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান এবার ঘুঘু তোমার বধিব পরাণ
-হাত ছাড় কি বলিস এই সব।
-নাটক করে হাতে চাঁদ পেয়ে গেলি সোনায় বাঁধানো কপাল তোর।এমন কপাল যেন ঘরে ঘরে সবার হয়!
ইশা ভ্রু কুচকে তাকায় নোহার দিকে,
নোহা ফোন থেকে একটা ভিডিও বার করে ইশার সামনে ধরে,
-দেখে নে…. তোর কালকের কনফেশন।
কাল আমি ব্যাগ ফেলে গিয়েছিলাম সেটা নিতে এসেই তোর আর নওরিনের কথপোকথন আমার কানে আসে।আমি সুযোগ বুঝে রেকর্ড করে নেই।তোর মতো ক্রিমিনাল কে তো আবার প্রমান ছাড়া ধরাই যাবে না।
ইশা ভয়ার্ত চোখে তাকায় নোহার দিকে,
-এতো সহজে চাঁদকে তোর হাতে পেতে দেবো না।দাভাই নওরিনকে নিয়ে ফিরুক।সবার সামনে এটা প্লে করবো। তারপর দেখ তোর কি অবস্থা হয়। এতোগুলা মানুষের জীবন নিয়ে খেলেছিস তুই তোর লজ্জাও করে না না?
ইশা ভয়ে কেঁপে উঠে,
-তুই না আমার বোন….
কথা বলতে বলতে নোহার হাত থেকে ফোনটা নিয়ে মেঝেতে ছুড়ে দেয়।ফোনটা ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যায়।
ঘটনাটা এতো দ্রুত ঘটেছে যে নোহাও চমকে যায়।
-তোর বিখ্যাত ডায়ালগটা মনে আছে,
পাগলা ষাঢ়ের চেয়ে পাগলা প্রেমিক বেশি ভয়ংকর। আমি তোকে বলছি পাগলা প্রেমিকের চেয়ে পাগলা প্রেমিকা বেশি ভয়ংকর।
ইশা ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে নিলে নোহা ইশার হাত টেনে ধরে,
ইশা একটা চড় মারতে গিয়েও থেমে যায়,
-নিজেকে এতো চালাক ভাবিস না ইশা।আমি নওরিন নয়।আমি সিকদার বাড়ির মেয়ে।তুই পার্ফেক্ট চোর হলে আমিও পার্ফেক্ট পুলিশ।
নোহা ঘর থেকে দ্রুত বেরিয়ে যায়।এক্ষুনি নওরিনদের বাড়ি যাবে সে।অনেক তামাশা হয়েছে।
নোহাকে বের হতে দেখেই ইশার বুক কেঁপে উঠে,সাথে সাথে সে আমানকে ফোন দেয়,দুইবার রিং হতেই আমান রিসিভ করে,
-তুমি কথাই?
-এই তো অনেকটাই দূরে চলে এসেছি…কেন?
-যেখানে আছো সেখানেই দাড়িয়ে থাকো আমি আসছি।
-কেন? কিছু কি হয়েছে?
–আমান ভাইয়া তুমি না আমাকে বিয়ে করতে চাও।আমি এক্ষুনি তোমায় বিয়ে করবো।প্লিজ।
-মাথা খারাপ হয়ে গেছে তোর?
-মা রাজি নয়।ভাইয়াও রাজি হবে না
-তাহলে বাদ দে,
-না আমি কিন্তু সুইসাইড করবো বলে দিলাম।
আমান একটু ভাবে তারপর কিছু একটা চিন্তা করে বলে উঠে,
-ঠিক আছে আয়!
ইশা মুচকি হাসি দিয়ে ছুট লাগায় আমানের কাছে।তাদের বিয়েতে আর কেউ বাঁধা দিতে পারবে না।একবার বিয়ে হয়ে গেলে আর কেউ তাদের আলাদা করতে পারবে না!
_________________
তিয়াশ আর ইসরাক বাড়ির নিচে একটা ছোট্ট টি স্টলে বসে আছে,
তিয়াশ বার বার ইসরাকের রিপোর্টগুলো চেক করছে।ইসরাক চা খেতে খেতে তিয়াশকে বলে উঠে,
-এতোবার চেক করলেই রিপোর্ট পাল্টে যাবে নাকি?যা হওয়ার তা তো হয়েই গেছে।
তিয়াশ ইসরাকের দিকে তাকায়,
–আমার আগে এগুলো কোনো ডাক্তারকে দেখিয়েছিস?
ইসরাক জোরে নিঃশ্বাস নেয়
-হুম্ম
-কি বলেছে?
ইসরাক চায়ে চুমুক দিতে দিতে বলে উঠে,
-বলেছে আমার ব্রেইন টিউমার হয়েছে।এই তো।
-ইসরাক চিন্তা করিসনা।সবে সবে টিউমারের সূচনা হয়েছে।এমন কেসে ৭০% পেশেন্টকে রেডিও থেরাপি দিলেই ভালো হয় যায়।
–আর না হলে?
তিয়াশ চুপ করে যায়। তারপর বেশ জোড় দিয়ে বলে উঠে,
-হবে না কেন!অবশ্যয় হবে।
ইসরাক মুচকি হাসে
-ভাবি জানে?
-কে নওরিন।নাহ্।কি করে জানবে ও তো ডিভোর্স দিবো ডিভোর্স দিবো বলে পাগল হয়ে যাচ্ছে।আমার হেলথের কথা শোনার সময় কোথায়!
তিয়াশ জোর করে মুখে হাসি এনে বলে উঠে,
-চিন্তা করিস না সব ঠিক হবে যাবে!
বারান্দা থেকে নওরিন সবকিছু লক্ষ্য করছিলো।তিয়াশকে অনেকগুলো কাগজ ঘাটতে দেখে মনের মধ্যে সন্দেহ জাগে তার!
ইসরাক আর তিয়াশ উঠে দাড়ায় বাড়ি ফিরবে বলে।পেছনে ঘুরতেই দেখে তাদের সামনে নোহা দাড়িয়ে আছে…..
চলবে…..
(ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন প্লিজ)
#প্রিয়োসিনী
#নীরা_আক্তার
#পর্ব_(এক্সট্রা)
আমান গাড়িতে বসে অপেক্ষা করছে ইশার জন্য।ইশা গাড়ির কাছে এসে দাড়ালে আমান গাড়ি থেকে নেমে ইশার কাছে এসে দাড়ায় ।ইশা হাপাতে থাকে,
–আমান ভাই চলো বিয়ে করবো।
আমান বিরক্তের সাথে বলে উঠে,
-ফাজলামির একটা সীমা থাকা দরকার।এভাবে বিয়ে হয় নাকি?
ইশা মুখ বাঁকিয়ে বলে উঠে,
-সবাই আমাদের বিয়ের বিরুদ্ধে এখন বিয়ে না করলে আর আমাদের বিয়ে হবে না।
আমান কিছুটা বিরক্ত হয়।বিরক্তের স্বরেই বলে উঠে,
-অনেক পাগলামো ছাগলামো করেছিস এখন আমাকে একটু রেহায় দে।জীবনটা তো আমার শেষ হয়েই গেছে।বাড়ি চল বম্মা বড় আব্বুকে আমি রাজি করাবো।
-যাবো না
-তোর বিয়ে হবে আর এলাকার লোকজন জানবে না তা কি হয়।চল বাড়ি চল
আমান ইশাকে অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসে।জিনাত সিকদার ইশার উপর ভীষন রেগে যায়।রাগে গজ গজ করতে করতে ইশাকে মারতে তেড়ে আসেন ।
আমান বম্মাকে আটকিয়ে দেয়।বম্মার হাত দুটো শক্ত করে ধরে,
-আমাকে বিশ্বাস করো বম্মা ঠকবে না।
যে তোমাদের ঠকিয়েছে তার রূপটা দেখতে পাবে
ইমতিয়াজ সিকদার আমানকে সে দিনের জন্য বিদায় করে দেয়।
ইসরাককে ফোন করে ডেকে পাঠায়।
পরিস্থিতি ক্রমশ্য ঘোলাটে হচ্ছে।ইসরাককে তার প্রয়োজন।
______________
এভাবে হটাৎ নোহাকে দেখে চমকে যায় ইসরাক,
-কি হয়েছে?হটাৎ এভাবে এলি?কোনো সমস্যা?
-নাহ বাড়ি চলো দাভাই!
-কেন?
-দরকার আছে যাবে না?
-বাড়িতে তো বিয়ে নিজের বোনের বিয়ের দাওয়াত পাও নি?
ইসরাক নোহার দিকে ভ্রু কুচকে তাকায় -কিসের বিয়ে?
নোহা ইসরাককে ডিটেইলস জানায়।
ইসরাকে রাগ হচ্ছে।ভীষন রাগ হচ্ছে।
-দাভাই চলো এক্ষুনি বাড়ি যাবো …..গাড়ি বার করো!
ইসরাক নওরিনকে ফোন করে।সে চলে যাচ্ছে এটা নওরিনের জানা দরকার
নোহা ইসরাককে থামিয়ে দেয়,
-দাভাই তুমি দাড়াও আমি দৌড় দিয়ে নওরিনের সাথে কথা বলে আসি।
নোহা ছুট লাগায় বাড়ির ভেতরে।নওরিন নোহাকে দেখে ভীষণ খুশি হয়।
-কেমন আছো সখি?
-ভালো।তুমি?
–আমি খুব ভালো আছি।কাল না তোমার জন্মদিন।কাল তোমার জীবনের সবচেয়ে স্মরনীয় দিন হয়ে থাকবে কথা দিলাম।তোমার জন্মদিনের সেরা উপহার তুমি পাবে।
এতোটুকু বলেই নোহা নওরিনকে জড়িয়ে ধরে।
-দাভাইকে বাড়ি নিয়ে গেলাম সময় মতো তোমার কাছে দিয়ে যাবো।চিন্তা করো না।
নোহা নওরিনকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই বেরিয়ে যায়।
নওরিন অবাক চোখে তাকিয়ে আছে তার যাওয়ার দিকে,
ইসরাকও নওরিকে মেসেজে জানিয়ে দিয়ে বেরিয়ে পড়ে।তিয়াশ সেখানেই দাড়িয়ে দাড়িয়ে তাদের যাওয়া দেখতে থাকে
____________
জিনাত সিকদার, ইমতিয়াজ সিকদার সাথে দাদু-দীদা ড্রইং রুমে বসে আছে।আমানের সাথে ইশার বিয়েতে কারোরই তেমন কোনো সমস্যা নেই জিনাত সিকদার ব্যাতিত।
ইসরাক অমত করলেও নোহা তাতে সায় দেয়।
-হোক না বিয়েটা,ঝামেলা বিদায় হবে,
অনেক আলাপ আলোচনা করে ঠিক করাহয়
পরশু কিছুটা ঘরোয়া ভাবেই ইশা–আমানের বিয়েটা দিয়ে দেওয়া হবে।
নোহা চেয়ে ছিলো কালই বিয়েটা হোক।কিন্তু বিয়ের মতো একটা আয়োজনে একটু সময় তো দরকার।নোহা একটু হতাশ হয়।আরো একটা দিন তাকে চুপ করে থাকতে হবে,এ যে বড়ই কঠিন কাজ
আলাপ আলোচনা শেষ করে ইসরাক তার মেডিকেল পেপার গুলো আলমারিতে রেখে বারই হচ্ছিলো এমন সময় শিউলি পারভিন ,জিনাত সিকদারের আগমন ঘটে তার ঘরে,
-ইসরাক বাবা বস আমার কাছে
ইসরাক মায়ের কাছে গিয়ে বসে
-কোথাও যাবি?
-হুম্ম।নওরিনের কাছে যাবো
জিনাত সিকদার তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে,
–আমি চাই তুই ঐ বউকে তালাক দিয়ে দে।স্নেহার সাথে তোর বিয়ে ঠিক করেছি আমি।রাজি হয়ে যা
ইসরাক মায়ের দিকে একপলক তাকায়
-তুমি চাও স্নেহাকে আমি বিয়ে করি তাই তো?আচ্ছা ঠিক আছে করে নেবো।
ইসরাক আলমারি থেকে তার মেডিকেল রিপোর্ট গুলো বার করে শিউলী পারভিনের সামনে ছুড়ে মারে,
-এগুলো আমার রিপোর্ট। এখানে লিখা আছে আমার ব্রইন টিউমার হয়েছে আমি বড়জোর আর তিনমাস বেঁচে থাকবো।এই তিনমাসে জন্য যদি আপনি চান আমার সাথে স্নেহার বিয়ে দিয়ে দিতে পারেন।তারপর আমি মরে গেলে বিধবা মেয়ের জন্য অন্য ছেলে খুজিয়েন!নাহলে আগে থেকেই খুজে রাখিয়েন মরে গেলে সাথে সাথে বিয়ে দিতে পারবেন।
ইসরাক কথাগুলো বলেই হন হন করে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়…….
চলবে……
(কিছু বিষয় ক্লিয়ার করি….
আমি এই গল্পটাতে কারো ক্যারেক্টারই ১০০% পজিটিভ দেখায় নি।ইসরাককেও নয়।পরিস্তিতির উপর নির্ভর করে আমি ক্যারেক্টারগুলোকে মেইনটেইন করার চেষ্টা করেছি।যেমন ধরুন শুরুর দিকে যখন ইসরাক জানতো নওরিন একজন প্রেমিককে ঠকিয়ে অন্য কাওকে বিয়ে করতে চেয়েছিলো আর তার জন্যই তার ভাই মরতে বসেছিলো সে নওরিনকে অপছন্দ করেছে।এখানে আমি তার চরিত্রটাকে নেগেটিভ ভাবে দেখিয়েছি।তারপর কিছু জায়গায় মায়ের বাধ্য সন্তান যেটা সচরাচর সব সংসারেই হয়েই থাকে।ছেলেরা কখনো কখনো মাকে সাপোর্ট করে বউয়ের বিষয়গুলো না জেনেই।।।এখানেও আমি ইসরাককে নেগেটিভ দেখিয়েছি।আমি চাইলে ইসরাককে মহান নায়ক হিসেবে দেখাতে পারতাম যেখানে সে বউকে সবসময় সাপোর্ট করবে, ভালোবাসবে,এইসব আরকি।তাহলে পরিস্থিতির সাথে চরিত্রটা মানাতো না!!!আবার কিছু জায়গায় আমি নওরিনের প্রতি ইসরাকের এট্রাকশন,দায়া মায়া দেখানোর চেষ্টা করেছি যেখানে নওরিন তার ভাইয়ের দ্বারা অপমানিত অসহায় এক নারী।
ভালোবাসাও দেখিয়েছি যেখানে সে নওরিনের স্বাভাবের প্রেমে পড়েছে।
এবার আসি নওরিনের সেল্ফ রেস্পেক্ট নিয়ে,
ক্লাস নাইন টেনে পরা একটা মেয়ে যার সাথে এমন অদ্ভুত কিছু ঘটনা ঘটেছে,সে ঠিক কি ধরনের সেল্ফ রেসপেক্ট দেখাবে আমার বুঝে আসে নি।তাই ওভাবে চরিত্র সাজাতে পারি নি।
বিয়ের পর হাজার স্বপ্ন নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে আসে।তারপর পর পর অসন্মান গুলো যখন পেতে থাকে তখন মা বাবার কাছে সে ছুটে যায়।তার মা তাকে কঠিন স্বরে জানিয়ে দেয় সংসারে মানিয়ে নিতে হবে,তোমার অপমানের বোঝা আমরা নেবো না,যেটা অধিকাংশ সমাজেরই প্রেক্ষাপট।এরকম সিচুয়েশন যেখানে বাবা মা ভাই কেউ পাশে নেই।তার নিজেরও কিছু করার ক্ষমতা নেই,(সে চাকুরি করে না।নিজের খাবার জোগার করার মতোও যোগ্যতা নেই) সেখানে নওরিনের কেমন সেল্ফ রেস্পেক্ট দেখানো উচিত আমি বুঝতে পারি নাই।
তার কাছে দুইটা পথ খোলা ছিলো।শ্বাশুড়ি স্বামী এদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করে নিজে থেকে বাড়ি ছেড়ে রাস্তায় বের হয়ে যাওয়া বা তারা বার করে দিলে বাবা মায়ের কাছে গিয়ে অপমানিত হওয়া নয়তো মুখ বুজে সহ্য করা।
এই গল্পে ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে পড়ুয়া কলঙ্কিনী নওরিনকে ঠিক কিভাবে প্রতিবাদি,সেল্ফ রেসপেক্ট আলা মেয়ের চরিত্র দিতাম তা আমার মাথায় আসে নি।আমার মনে হয়েছে এই গল্পে একটু শান্ত, কম বুঝা,কম কথা বলা,কম বয়সি,চাপা গম্ভীর,সহজ সরল,সব পরিস্থিতি মানিয়ে নেওয়া এমন নায়িকাই বেশি মানাবে তাই নওরিনকে এমন ভাবে এক্সপ্রেসড করেছি।যার জন্য আমি খুবই দুঃখিত। আমি মোটেও কোনো মেয়েকে অসন্মান করার জন্য গল্প এভাবি লিখি নি।
এবার নওরিন–আর ইসরাকের মধ্যে কখনো রাগ কখনো ভালো এটা নিয়ে কিছু কথা বলি,
স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক গুলো এমনই হয়।টক ঝাল মিষ্টি সব মেশানো থাকে।
যেখানে ভুলবোঝাবুঝি থাকলে তাদের মধ্যে দুরত্বের সৃষ্টি হয়।আবার সব মিটে গেলে কাছা কাছি আসে।যদি গল্পের প্রেক্ষাপট কিছুটা আলাদা।
আমাদের সমাজে,অনেক মেয়েরা আছে যারা সামন্য কয়টা যৌতুকের জন্য স্বামীর হাতে মার খেয়েও দাঁত কামড়ে পড়ে থাকে।সেল্ফ রেসপেক্ট দিখিয়ে চলে যায় না।
শ্বাশুড়ি হাজার অপমান করলেও সংসার ছাড়ে না।
আবার স্বামীর অত্যাচারে জর্জরিত হয়ে বাপের বাড়ি চলে যায় দুইদিন পর সেই স্বামী ক্ষমা চাইলে তারই হাত ধরে আবার সংসারে ফিরে আসে।এটা বাস্তবতা। কোনো মেয়েই চায় না তার সংসার ভেঙ্গে ডিভোর্সি ট্যাগ লাগাতে।অথবা তালাক বা ডিভোর্স সব সমস্যার সমাধান নয়।
ইসরাক নওরিনকে ভুল বুঝেছে।ভুল বুঝে নওরিনকে কষ্ট দিয়েছে।এটা ভুল…যদিও স্ত্রী কে অসন্মান করা এক ধরনের ক্রাইম।বাট সে ভুল বুঝে করেছে কারণ তাদের সম্পর্ক টা শুরুই হয়েছে ভুল বোঝাবুঝির উপর নির্ভর করে।
এবার সিকদার বাড়ির সবার চরিত্র নিয়ে বলি,
আমি তাদের মাঝে রাগ,দম্ভ্য, প্রভাব, অতিরিক্ত বিলাসিতায় বিগড়ে যাওয়া কিছু চরিত্র ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি একটু সাইকো টাপস।জিদ্দি,একগুয়ে
ভালো মন্দ মিলিয়ে মানুষ।তাই কাউকেই ১০০% পজিটিভ দেখায় নি।
আর গল্পটা খুব বেশি বড় করার ইচ্ছে নেই আগেই বলেছি।চেষ্টা করবো দ্রুত ইতি টানতে ধন্যবাদ….)