বৃষ্টিময় প্রেম
পর্ব ৪২
লেখনীতে-তাসফিয়া হাসান তুরফা
এলোমেলো ভঙ্গিতে বিছানার মাঝে বসে আছি আমি। আমার একপাশে শাড়ির স্তুপ, অপরপাশে ছোট-খাট গহনাপত্রের সমাহার! স্বভাবসুলভ মেয়েলি অভ্যাসের কারণে পার্টিতে কোনটা পড়ে যাবো না যাবো সেটা ভাবতে ভাবতেই আধ-ঘন্টা খানেক পেরিয়ে গেছে ইতোমধ্যে! অথচ এখনও মনমতো শাড়ি বাছাই করতে পারিনি আমি৷ এরই মধ্যে পূর্ণ লম্বা শাওয়ার নিয়ে ফিরে আসলেন। আমায় এভাবে চিন্তিত বেশে বসে থাকতে দেখে হাতের তোয়ালা দিয়ে ভেজা চুল মুছতে মুছতে বললেন,
—কি হয়েছে? এভাবে সব জিনিসপত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রেখেছো কেন? কোথাও যাবে?
—কোথায় যাবো মানে? একেতো আপনি আমাকে পার্টির কথা কিছু বলেন নি তার মধ্যে এখন জিজ্ঞেস করছেন কোথায় যাবো? আপনি আদৌ আমাকে নিয়ে যেতে চাইছেন নাকি আমি বুঝতে পাচ্ছিনা। আপনার মতলবটা কি বলুন তো?
কোমড়ে হাত রেখে রাগী গলায় জিজ্ঞেস করলাম আমি। তবে আমার রাগ দেখেও পূর্ণর ভাবভঙ্গির বিশেষ পরিবর্তন হলোনা। স্বাভাবিকভাবেই তোয়ালেটা আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললেন,
—আপাতত মতলব হচ্ছে তোমার কালকে পড়ার শাড়ি সিলেক্ট করে দেওয়া। তুমি ততক্ষণ বারান্দায় যেয়ে ভেজা তোয়ালাটা নেড়ে দিয়ে এসো।
বলতে বলতেই আমায় হাত ধরে রীতিমতো বিছানা থেকে টেনে উঠালেন উনি। অগত্যা তোয়ালে নিয়ে বারান্দায় মেলে দিয়ে আসলাম আমি। পূর্ণ এতক্ষণে বিচক্ষণ চোখে শাড়িগুলো দেখতে শুরু করেছেন। একটি কালো রঙের শিফনের পাতলা শাড়ি দেখে মৃদু হাসলেন উনি, যেন মনে হয় উনার পছন্দ হলো! পরমুহুর্তেই কি যেন ভেবে চোখমুখ গম্ভীর করে শাড়িটাকে রিজেক্ট করলেন। এদিকে আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছি উনার কান্ড! অবশেষে একটি মোটা জর্জেটের লাল শাড়ি বাছাই করলেন। আমার দিক এগিয়ে এসে আমার উপর শাড়িটা ধরতেই মুখে হালকা হাসি ফুটে উঠলো উনার। গর্বিত স্বরে বললেন,
—শাড়ি সিলেক্টেড! তুমি এটা পড়ে যাবে কালকে। সিম্পলের মধ্যে গর্জিয়াস। পার্টির জন্য গুড এনাফ!
পূর্ণ শাড়িটা পাশে রেখে জুয়েলারি বক্স ঘেটে একটা মুক্তার মালা ও কানের দুলের সেট বের করলেন। শাড়ির পাশে সেটা রাখতে রাখতে বললেন,
—ব্যস, হয়ে গেছে। এর সাথে বিয়ের পরেরদিন তোমায় যে লালচুড়ি দিয়েছিলাম সেটা পড়বে। আর কিচ্ছু লাগবেনা।
আমি শুধু চুপচাপ মাথা নাড়লাম। উনি রুম থেকে বের হয়ে যেতে যেতে বললেন,
—এইটুক কাজ করার জন্য এত সময় লাগে? দেখো আমি কত তাড়াতাড়ি ডিসাইড করে দিলাম সব। তোমরা মেয়েরা পারোও বটে!
পূর্ণর কথা আমার মস্তিষ্কে ঢুকলেও সেটা নিয়ে মাথা ঘামালাম না। আমার ভাবনা উনার করা কাজকর্মে! কতটা সাবলীলভাবে আমার জন্য শাড়ি গহনা বাছাই করে দিলেন, অথচ উনাকে দেখলে কেউ কখনো ভাবতে পারবে এমন গম্ভীর লোকটা একান্তে নিভৃতে বউয়ের জন্য এসব করতে পারে? পূর্ণর আচরণে সবসময় বিস্ময় জেগে উঠে মনে। এ বিস্ময় যেন কখনো শেষ হবার নয়!
________________
পরেরদিন সন্ধ্যায় পার্টিতে যাওয়ার আগে প্রিয়ার রুমে বসে ওকে শাড়ি পড়তে সাহায্য করলাম৷ এ কয়দিন শাড়ি পড়তে পড়তে বেশ খানিকটা আয়ত্তে এসে গেছে আমার, নিজেও পড়তে পারি অন্যকেও পড়াতে পারি। প্রিয়া গুনগুন করে গান গাইছে আর মেকাপ করছে। নতুন নতুন প্রেমে পড়লে মানুষের যা যা হয় তার সবটা লক্ষণ ওর মধ্যে প্রকাশ পাচ্ছে! আমি শতভাগ নিশ্চিত যে প্রিয়া প্রেমে পড়েছে। তাও অপরিচিত কারও নয়, রায়হান ভাইয়ার প্রেমে পড়েছে! এ অঘটন কখন কিভাবে হলো জানার আগ্রহ জন্মাচ্ছে মনে তবুও সরাসরি ওকে জিজ্ঞেস করা হয়ে উঠছেনা। প্রিয়া অবশ্য নির্দ্বিধায় আমাকে দু-তিনবার রায়হান ভাইয়ের পছন্দ-অপছন্দ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছে৷ আমার সন্দেহ ওর প্রশ্নেই নিশ্চয়তা পায়! অবশেষে আর কৌতুহল দমাতে না পেরে ওকে প্রশ্ন করেই বসলাম,
—হঠাৎ রায়হান ভাইয়ের পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে তোমার এত চিন্তা হচ্ছে কেন বোন? প্রেমে পড়ে গেছো নাকি ভাইয়ার?
ভেবেছিলাম প্রিয়া হয়তো রাগ করবে নয়তো লজ্জা পাবে কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে সরল মুখে প্রিয়ার স্বীকারোক্তি,
—প্রেমে পড়েছি কিনা জানিনা তবে উনাকে আমার অনেক বেশি ভালো লেগেছে। তার শান্তশিষ্ট পারসোনালিটি, নরম স্বভাব আমাকে মুগ্ধ করেছে! আমি জানিনা একদিনে ভালোবাসা হয় কি না তবে আমার কাল থেকে শুধু তার কথাই মাথায় আসছে, ভাবী। উনি আসবেন শুনেই আমি পার্টিতে যাওয়ার জিদ করেছি ভাইয়ার বারণ সত্ত্বেও! তুমি আমাকে হেল্প করবে? উনার জীবনে কেউ আছে কি না এ বিষয়ে খোজ নিয়ে আমায় জানাবে প্লিজ?
প্রিয়ার প্রশ্নে থতমত খেয়ে গেলাম আমি! রায়হান ভাইয়ার জীবনে কেউ আছে কি না এটা আমি কিভাবে জানবো? এক ছাদের নিচে একসাথে বহুবছর থাকলেও আমার উনার সাথে এমন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করার মতো ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এখনও তৈরি হয়নি! আমি উনাকে জিজ্ঞেসও করতে পারবোনা এমন কিছু। তাই আমতা আমতা করে প্রিয়াকে বললাম,
—দেখ প্রিয়া, আমি তো এ ব্যাপারে তেমন কিছু বলতে পারবোনা। রায়হান ভাইয়ার সাথে এমন বিষয়ে কখনো কথা হয়নি আমার আর হওয়ার চান্সও নেই। আমার মনে হয় রাইসা জানবে। ও তোমার হেল্প করতে পারবে। ওর বড় ভাই কি না? রাইসাকেই না হয় বলো তুমি!
—এই না না, ভাবী। রাইসা ভাবীকে বলবেনা প্লিজ। সে তো রায়হান ভাইয়ার নিজের বোন তাই তাকে বলতে অসস্তি লাগবে আমার। আমার আর রায়হান ভাইয়ার মধ্যে কিছু হওয়ার আগে রাইসা ভাবীকে জানাতে চাইছিনা আমি। আশা করি তুমি বুঝবে? ভাবীকে কিছু বলবেনা প্লিজ?
—ঠিক আছে। রাইসাকে আমি কিছু বলবোনা। তবে তোমার যে অবস্থা, এখনি প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছো আমিই সন্দেহ করছিলাম তোমার উপর৷ তোমার ভাইদের বুঝতেও বেশি সময় লাগবেনা, বুঝেছো?
—এই রে! আমি এত বেশি এক্সাইটেড ছিলাম যে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারিনি তখন। এরপর থেকে আর কাউকে বুঝতে দিবোনা। তবে তুমি আমাকে কথা দেও তুমি এ ব্যাপারে কাউকে বলবেনা। এমনকি বড় ভাইয়াকেও না? প্রমিস করো আমায়? সবকিছু সেট হওয়ার আগে তুমি এমন ভাব করবে যেন তুমি কিছুই জানো নাহ!
—আমি না হয় প্রমিস করলাম কিন্তু উনি পরে জানতে পারলে রাগ করবেন।
কাচুমাচু মুখে বললাম আমি। পূর্ণকে যতদূর চিনি উনার বোনের এমন বিষয় তার থেকে লুকোনোর জন্য উনি অবশ্যই রাগ করবেন। তবে প্রিয়ার যুক্তিও ফেলতে পারলাম না যে সবকিছু ঠিক হওয়ার আগে কেন অযথা সবাইকে বলে বেড়াবো যেখানে এখনও কিছুই শুরুই হয়নি, সবটাই অনিশ্চিত!
প্রিয়ার সাথে কথাবার্তা বলে ওকে রেডি হতে দিয়ে নিজের রুমের দিকে পা বাড়ালাম আমি। উপরে যাওয়ার আগে রাইসার রুমে উকি মেরে দেখলাম ওর ইতোমধ্যেই অর্ধেক রেডি হওয়া শেষ! তার মানে এখন শুধু আমিই বাকি। জলদি রুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে রেডি হওয়া শুরু করলাম আমি। শাড়ি পড়া যেই না শেষ করেছি এমন সময় ওয়াশরুম থেকে পুরোপুরি রেডি হয়ে বের হলেন পূর্ণ। আমার পাশে দাঁড়িয়ে আয়নায় নিজের জেল দেওয়া চুল আঁচড়িয়ে সেট করলেন ঠিকমতো। অতঃপর পারফিউম লাগিয়ে হাতে ঘড়ি পড়তে পড়তে নিজের সব কাজ শেষ অতঃপর এক পলক তাকালেন আমার দিকে। আমাকে এখনও রেডি না হতে দেখি নিচু স্বরে চেচিয়ে বললেন,
—এখনও তুমি রেডি হওনি কেন, তুরফা? সবার রেডি হওয়া শেষ! তোমাকে রেখেই আমরা চলে যাই নাকি?
—যান৷ আমি যাবোনা।
নিরস মুখে বললাম আমি। এমনিতে প্রিয়ার কথায় মাথার মধ্যে চিন্তার ডালপালা গজিয়েছে তার মধ্যে উনার এত তাড়া! একটু দেরি হয়েছে বলে ছেড়ে যাওয়ার কথা বলছেন। আমাকে উদাস মুখে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে যেন খানিকটা নরম হয়ে গেলেন পূর্ণ! এগিয়ে এসে ধীর গলায় বললেন,
—কি হয়েছে তুর পাখির? কোন কারণে মন খারাপ?
উনার কথায় আমি চিন্তিত চোখে চাইলাম তার দিকে তবু মুখ ফুটে কিছু বললাম নাহ। শুধু “না-বোধক” মাথা নাড়লাম। কেননা উনাকে চাইলেও কিছু বলা যাবেনা এখন! আবার এদিকে প্রিয়ার লক্ষণ ভালোনা পার্টিতে যেয়ে না জানি কি করে বসে! দীর্ঘশ্বাস ফেলে মেকাপ করতে আরম্ভ করলাম আমি। হালকা মেকাপ করে গলায় তড়িঘড়ি করে মালা পড়তেই চুলের সাথে প্যাঁচ লেগে গেলো সেটি। হন্তদন্ত হয়ে খুলার চেস্টা করতেই পূর্ণ বিরক্তিকর চাহনি নিয়ে এগিয়ে আসলেন। দ্রুতহাতে যত্নসহকারে খুলে পড়িয়ে দিলেন মালাটি। অতঃপর ড্রেসিং টেবিল থেকে নিজেই কাচের চুড়িগুলো তুলে পড়িয়ে দিতে লাগলেন হাতে। চুড়ি পড়ানো শেষ করে আমায় আপাদমস্তক পরখ করে কপালের সামনের পড়ে থাকা এলোচুল কানের পেছনে গুজে দিয়ে খানিকটা কাছে এগিয়ে এলেন। দুর্বোধ্য হেসে বললেন,
—চলুন মিসেস তাজওয়ার চৌধুরী। আপনি এখন পার্টিতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত!
________________
পড়ন্ত সন্ধ্যায় রেস্টুরেন্টের ছাদে পার্টির আয়োজন করা হয়েছে। বলতে গেলে এটা অফিসিয়াল পার্টি হলেও আশেপাশের মানুষের আলোচনায় সেটা বুঝার জো নেই, কেননা অফিসের চাপে দীর্ঘদিন দেখা না হওয়া ভার্সিটির বন্ধুমহলরা একত্রে একদিন দেখা করার জন্য একত্রিত হয়েছে এখানে! তাই নামেই এটি অফিসিয়াল পার্টি, প্রকৃত অর্থে এখানে উপস্থিত কলিগ নামক বন্ধুদের কাছে তাদের গেট টুগেদার পার্টি! সজ্জিত ছাদের রেলিঙ ধরে দাঁড়িয়ে আছে রায়হান। তার স্থির দৃষ্টি রেস্টুরেন্টের নিচে গাড়ি থেকে নামা যুগলের উপর। গাড়ি থেকে নামছে তুরফা, তার শাড়ির আঁচল গাড়ির সিটে আটকে গেছে যা সযত্নে গাড়ি হতে ছাড়িয়ে নিলো পূর্ণ। অতঃপর তুরফার হাত ধরে তাকে এগিয়ে নিয়ে আসতে থাকলো রেস্টুরেন্টের দিকে।
যে দৃশ্য দেখে বুকের গহীনে অদৃশ্য এক দহন হতে থাকলো রায়হানের। অবশ্য এ অনুভুতি নতুন নয়, তুরফার বিয়ের পর থেকেই হচ্ছে তার মনে। প্রতিদিন ভুলবে ভুলবে করেও ভুলতে পারেনি তুরফাকে। বিগত দুই বছর ধরে আনমনেই কখন যে নীরবে ভালোবেসেছিলো তাকে নিজেও বুঝেনি রায়হান! যতদিনে বুঝেছে তার অনুভুতির প্রখরতা ততদিনে তুরফার জীবনে পূর্ণর আগমন ঘটেছে! হাজার চেয়েও কিছু বলতে পারেনি রায়হান, কারণ যেদিন তুরফার সাথে রায়হানের বিয়ের কথা উঠে সেদিন সে পূর্ণর চোখে তুরফার জন্য অনুভূতির তীব্রতা দেখেছিলো যা সে নিজের মাঝে দেখেনি!
রাইসার ইংগেজমেন্ট এর দিন পূর্ণ যখন সবার আড়ালে তুরফার জন্য মলম রেখে আসে সেটা আর কেউ না দেখলেও নজর এড়ায়নি রায়হানের! সেদিনই সে বুঝে গিয়েছিলো তার মতো আরও কেউ আছে যে তুরফাকে গোপনে ভালোবাসে, যার ভালোবাসার অপেক্ষা ও প্রখরতা রায়হানকেও ছাড়িয়ে যায়! অতঃপর তুরফার তাকে শুধুই বড় ভাইয়ের নজরে দেখা রায়হানকে তেতো সত্যের সম্মুখীন করায়! সেদিনই রায়হান সিদ্ধান্ত নেয় পূর্ণর ভালোবাসায় সে বাধা হয়ে দাঁড়াবেনা, তুরফা যদি তার হওয়ার থাকতো তবে তার হাতের কাছে এতবছর থেকেও মাঝখান দিয়ে পূর্ণ এসে ওকে ছিনিয়ে নিতে পারতোনা। এখানে দোষ তুরফারও নয়, পূর্ণরও নয় দোষটা রায়হানের নিয়তির! যা বাস্তবজ্ঞানসম্পন্ন হওয়ায় রায়হান মেনে নিয়েছে! তবুও বেহায়া মন তো মানেনা, বিরহের দাবানলে প্রতিনিয়ত পুড়ে ছাড়খার হয়ে যায় সে! কিভাবে এ থেকে বের হবে রায়হান ভেবে পায়না। ওর জীবনে কি এমন কেউ আসবে যে তার ভালোবাসার মলমে সেড়ে তুলতে পারবে ওর মনের ক্ষত? নিজের ভাবনায় মগ্ন ছিলো রায়হান। পাশ থেকে হঠাৎ মেয়েলি গন্ধে ভ্রু-যুগল কুঞ্চিত হয় তার! পাশ ফিরে দেখে হাসোজ্জল মুখে প্রিয়া দাঁড়িয়ে। কিন্তু ও এখানে কেন? প্রিয়াকে দেখে অবাক হয় রায়হান। তবে প্রিয়াকে স্বাভাবিক দেখা যায়। হাসিমুখেই বলে,
—কেমন আছেন?
—ভালো। তুমি এখানে কি করছো?
—কি করছি মানে? আমার ভাইয়েরা পার্টিতে এসেছে সাথে আমিও এসেছি। কেন আপনার ভালো লাগেনি আমাকে দেখে?
উদাস মুখে প্রশ্ন করে প্রিয়া। ওর এমন সোজাসাপ্টা প্রশ্নে থতমত খেয়ে যায় রায়হান। ইতস্ততভাবে বলে,
—না মানে, তোমাকে এখানে দেখবো আশা করিনি তাই একটু অবাক হয়েছি। ভালো করেছো এসে।
রায়হানের কথায় পুনরায় মুখে হাসি ফুটে প্রিয়ার। সে একদৃষ্টিতে চেয়ে থাকে তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সুদর্শন লোকটার দিকে! সে কি আদৌ বুঝবে তার প্রেমে কতটা ব্যাকুল হয়ে আছে প্রিয়ার ছোট্ট হৃদয়? মুগ্ধ চোখে রায়হানের দিকে তাকিয়ে ভাবতে থাকে প্রিয়া। একজনের মনে বিরহের আগুন, অপরজনের মনে প্রণয়ের চাওয়া। দুটি অতৃপ্ত হৃদয় কি তবে একে অপরের সান্নিধ্যে তৃপ্ত হবে?
#চলবে
.