#চিত্ত চিরে চৈত্রমাস
পর্ব ১৭
#মম_সাহা
.
রাতটা যেন হুট করেই প্রয়োজনের তুলনায় নিশ্চুপ হয়ে গিয়েছিল সেদিন। চিত্রা অপলক তাকিয়ে ছিলো তার বাবার দিকে। সে ভেবেছে বাবা হয়তো মজা করছে, পরমুহূর্তেই বাবা হয়তো হো হো করে হেসে উঠে বলবে, ‘কেমন ঢপ দিলুম, বলো তো?’- কিন্তু তেমন কিছুই হলো না। বাবার মুখটা গম্ভীর থেকে আরও গম্ভীর হলো। গাম্ভীর্যের সেই আবরণ যেন ছেয়ে গেলো প্রকৃতির মাঝেও। সোডিয়ামের মোহনীয় সেই হলুদ বর্ণ আলোটার মাঝেও কেমন অবিশ্বাস্যের উজ্জ্বলতা। চিত্রা বাবার দিকে তাকিয়ে বেশ খানিকটা সময় নীরব থেকে অবিশ্বাস্যকর কণ্ঠে বললো,
“আব্বু, কি বলছেন এসব?”
নুরুল সওদাগর খুব গোপনে শ্বাস ফেললেন। সে আর বেশিক্ষণ চিত্রার দিকে তাকিয়ে থাকতে পারলে না। বারান্দার বাহিরে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে বেশ রুক্ষ কণ্ঠে বললেন,
“সত্যিই বলছি সব। তুমি তখন দু’দিনের শিশু। নিষিদ্ধ পল্লির মহিলাদের সন্তান জন্ম দেওয়া নিষেধ। কিন্তু যদি সেই সন্তান মেয়ে হয় তাহলে তারা ধুমধাম করেই বরণ করে নেয় সেই সন্তানকে কারণ ভবিষ্যতে তাদের ব্যবসার লাভজনক মূলধন সেটা। তোমাকে যে জন্ম দিয়েছে, তোমার জন্মদাত্রী, সে চায় নি তার মতন এমন দোযখ তোমার ভাগ্যে জুটুক। তুমি জন্ম নিবে বলে তাকে হসপিটালে ভর্তি করানো হয়। তখন তোমার তুহিন ভাইজান ও অসুস্থ তাই আমরা সে হসপিটালে গিয়েছিলাম। তোমার জন্মদাত্রী হুট করেই তোমার মায়ের কোলে তোমাকে তুলে দিয়ে আকুতি মিনতি করে উঠলো। তার জীবনের ভয়ঙ্কর বর্ণনাও দিলো। তোমার মায়েরও শিশুদের প্রতি সহমর্মিতা বেশি ছিলো, তাই নিয়ে এলো তোমায়। এ বাড়ির কোনো মানুষ জানেনা তুমি কার মেয়ে। কেবল আমি আর তোমার মা জানি তোমার জন্মপরিচয়।”
চিত্রার নয়নে ঘেঁষে ততক্ষণে ঝরে পড়েছে কত অশ্রুকণা! ঘৃণায় ভরে উঠেছে আঙিনা। এক মুহূর্তে মিছে হয়ে গেলো তার এই জনম। কি নোংরা! কি বিচ্ছিরি অতীত! মনে হলো সে যেন কোনো নর্দমার কীট। সমাজের এক নোংরা মানুষ। আব্বু যে তাকে পছন্দ করতেন না, সেটাই তার প্রাপ্য। এত ভালোবাসা তো কভু তার প্রাপ্য ছিলো না।
নুরুল সওদাগর চায়ের কাপটা বারান্দার চওড়া গ্রিলটার উপর রাখলো। পাঞ্জাবির পকেট থেকে রুমাল বের করে মুছে নিলো তার মুখমন্ডল। মুখ মোছার নাম করে কিছু অশ্রুকণাও বোধহয় মুছে নিলেন। কে জানে, আঁধারের কোল ঘেষে যাওয়া গল্পের কথা!
পকেটের রুমাল পকেটে রেখে নুরুল সওদাগর গলা পরিষ্কার করে বললেন,
“তুমি তো জানলে তোমার অতীত। এখন একটা কথা রাখবে?”
চিত্রার কণ্ঠে তখনও কান্নার ছাপ। তবুও সে অস্ফুটস্বরে উচ্চারণ করলো,
“জি আব্বু, বলেন।”
“তুমি বিয়ে করে ফেলো চিত্রা। মনে করো না তোমায় অপছন্দ করি বলে সেটা বলছি। তুমি আমার দায়িত্বে ছিলে, আমি তোমার ভালো একটা ভবিষ্যৎ গড়ে দিতে চাই। আজ আছি কাল না ও থাকতে পারি। তোমার দায় ভার তখন কে নিবে? এ বাড়ির সবাই হয়তো তোমায় ভালোবাসে, কিন্তু আমরা না থাকলে তারা হয়তো ফিরেও চাইবে না, কারণ তোমার সাথে তাদের রক্তের সম্পর্ক নেই।”
চিত্রার অবুঝ মন পরপর ধাক্কায় তখন নিস্তব্ধ। রাতের দীর্ঘশ্বাস গুলো তখন বুকের ভেতর জমে জমে পাহাড় সমান হয়ে গেছে। এই পাহাড়ের ভীষণ ওজন নিতে পারছে না চিত্রা। কেমন দমবন্ধ হয়ে এসেছিল সেদিন। আবেগের বশেই কিংবা নিজের প্রতি ঘৃণা থেকে সে রাজি হয়ে গেলো বাবার প্রস্তাবে। হয়তো ঋণ শুধরানোর অপচেষ্টা টাও ছিলো।
সেদিনের কথা থামতেই বিরাট এক বিষাক্ত দীর্ঘশ্বাস ফেললো চিত্রা। সেদিন কাঁদলেও, আজ কাঁদছে না চিত্রা। হুট করে কি সে পাথর হয়ে গেলো?
বাহার তখনও নির্জীব। চোখের দৃষ্টি রাজপথে। হাতের চায়ের কাপের গরম গরম চা, এখন শরবত প্রায়। ভিতরের তরতাজা অনুভূতিও কেমন নিস্তেজ।
বাহারের নীরবতা ভয় জাগালো চিত্রার মনে। বাহার ভাই বুঝি আজ চির বিচ্ছেদ ঘোষণা করবে! ঘৃণার থুথু বুঝি তার উপর ছুঁড়ে মারবে বাহার ভাই! মারুক নাহয়। সে সহ্য করে নিবে। ঘৃণাটা তো আর তার দোষে পাবে না, অদৃষ্টের পরিহাস। তবে আক্ষেপ কিসের! আফসোস কিসের? নিজের ভাগ্য যদি সে নিজে গড়তো, তাহলে কি আর থু থু ফেলতে পারতো কেউ! না অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ রচিত করতো! তবুও যদি মানুষ তাকেই দোষী ভাবে, তবে মেনে নাহয় নিবে সে দোষ।
চিত্রার মনের ভুল ভাবনার কার্তুজকে ভেঙে গুড়িয়ে দিলো বাহার। হাতের চায়ের কাপটা পাশেই ছুঁড়ে ফেলে বেশ স্বাভাবিক কণ্ঠে বলে,
“তোমার কি সেসব শুনে নিজের উপর ঘৃণা জন্মেছিলো, রঙ্গনা!”
এমন পরিস্থিতি বাহারের এই প্রশ্নটা চিত্রা আশা করে নি। জীবনে তো আশা ছাড়াই কত কিছু হয়! ছোটো কণ্ঠে চিত্রা উত্তর দিলো,
“করাটা স্বাভাবিক না, বাহার ভাই?”
বাহার হাসলো। চিত্রার মাথায় স্নেহের হাত বুলিয়ে দিলো। এই প্রথম বোধহয় বাহার চিত্রাকে ছুঁয়ে দিলো তাও স্নেহের হাতে। কোনো লোভ, লালসা বিহীন। অতঃপর মিষ্টি করে বললো,
“অস্বাভাবিক সেটা। তুমি নিজেকে কেনো ঘৃনা করবে রঙ্গনা? তোমার বরং বুক ফুলিয়ে একটা ভীষণ স্বচ্ছ শ্বাস নেওয়া উচিৎ। তোমার জন্মদাত্রী, সে কোথা থেকে আসছে, কিবা তার পরিচয় সব ভুলে যাও, মনে রেখো সে কিন্তু মায়ের দায়িত্ব পালন করতে পিছ পা হন নি। এই যে সে তোমায় অন্য কারো কাছে দিয়ে ছিলো, তোমার কি মনে হয় তার উপর কম ঝড় গেছে এর জন্য? তাকে কি না কি সহ্য করতে হয়েছে তোমার ধরণা নেই। একটা কথা শুনেছো? জন্ম হোক যথাতথা, কর্ম হলো আসল। তোমার সাফল্য যখন আকাশ ছুঁয়ে দিবে, তোমার জন্ম পরিচয় তখন মরিচীকা।”
চিত্রা কেবল মনযোগ সহকারে শুনলো এই ছন্নছাড়া লোকটার কথা। মানুষটা কতটা গুছানো কেউ বুঝবে তার বাহ্যিক আবরণ দেখে?
চিত্রা লম্বা এক নিঃশ্বাস নিলো। শুদ্ধতম হাসি দিয়ে বললো,
“চলুন বাহার ভাই, ফেরা যাক।”
বাহারও ঘাঁড় কাত করে উঠে দাঁড়ালো। একটা রিক্সা ডাক দিয়ে বসিয়ে দিলো চিত্রাকে।
বাহারকে উঠতে না দেখে অবাক হলো চিত্রা। কপাল কুঁচকে প্রশ্ন করলো,
“আপনি যাবেন না?”
“তুমি যাও, আমি হেঁটে আসবো।”
বাহারের উত্তরে কুঁচকানো কপাল আরও কুঁচকালো। অবাক কণ্ঠে বললো,
“আমার সাথেই চলুন। হেঁটে আসার কি দরকার? আজ আমি আপনাকে বাড়ি অব্দি নাহয় নিয়ে গেলাম। কোনো একদিন আপনি পুরো শহর ঘুরাবেন।”
চিত্রার কথায় বিশেষ হেলদোল দেখালো না বাহার। পকেটে দু’হাত গুঁজে কোঁকড়ানো চুল গুলো দুলিয়ে বললো,
“আমি হিমু নই রঙ্গনা। আর না তুমি রূপা। আমরা আমাদের মতনই। আমি এক দরিদ্রতার কষাঘাতে পিষে যাওয়া মানব আর তুমি বাস্তবতার বেড়া কলে ঝলসে যাওয়া নারী। আমাদের গন্তব্য এক হলেও হয়তো পৌঁছানোর পদ্ধতি ভিন্ন। তাতে ক্ষতি কী? শেষ অব্দি যদি সন্ধি হয়, রাস্তা তবে ব্যাপার নয়।”
চিত্রার দিক থেকে নজর সরিয়ে বাহার একবারে হাঁটা ধরলো সোজা। চিত্রা কতক্ষণ তাকিয়ে রইলো সেই বাহারের দিকে। লোকটা যদি একটু পিছু ফিরে তাকায় সে আশায়। কিন্তু তা আর হলো কই? লোকটা তো আর তাকালো না। সবসময়ই চিত্রার আশা ভেঙে দিতে লোকটা প্রস্তুত। চিত্রা ছোটো শ্বাস ফেললো। থাক, সবার গল্পের বিবরণ এক হলেই সমস্যা। থাক না, বাহার রঙ্গনার গল্প কিছুটা অন্যরকম। ক্ষতি তো আর নেই।
(৪৬)
আজ অষ্টম তম দিনে পদার্পণ করলো মুনিয়া বেগম ছাড়া সওদাগর বাড়ির লোকজন। তুহিন ভাইজান খুঁজছে, নুরুল সওদাগর খুঁজছে তবে মুনিয়া বেগমের দেখা নেই। কেমন যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো মানুষটা। মানুষটার বাবার বাড়িতে কেউ নেই যে সেখানে যাবে। আপন বলতে এই স্বামীর বাড়িই ছিলো। উনার কলিগদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা চললো কিন্তু কেউ খোঁজ দিতে পারলো না মুনিয়া বেগমের।
চিত্রারও চোখ-মুখ ভীষণ শুকনো। মা তাকে যতটা যত্ন করতো, অতটা যত্ন আর কেইবা করবে? মুখে ছোটো ছোটো ব্রণ, চোখের নিচে কালো আস্তরণ। মেয়েটার মায়া মায়া মুখ খানার দিকে তাকালো কেমন হাহাকার করে উঠে বুক।
অন্যদিকে অহির মেজাজ আজকাল কিঞ্চিৎ ভালো। নওশাদ ছেলেটা প্রচুর জ্বালালেও বেশ সম্মান দেয় তাকে। অনেক বেশি সময়ও দেয়। হুটহাট রাস্তায় কোথা থেকে যেন এসর হাজির হয়ে যায়। ঝগড়া করতে মন্দ লাগে না।
খাবার টেবিলে দুপুরের খাবারের তোরজোর চলছে। অহি,চাঁদনী,অনয়,মাহাতাব, আফজাল সওদাগর, লতা বেগম সবাই ই খেতে বসেছে। রোজা সওদাগর এবং তার ননদ খাবার বেরে দিচ্ছেন। কাজের মেয়ে দোয়েল রান্নাঘর থেকে খাবার এনে দিচ্ছে।
আজ খাবার টেবিলে ঘটলো অন্যরকম ঘটনা। সবাই যখন খেতে ব্যস্ত দোয়েল তখন মাছের তরকারিটার বাটি টেবিলে এনে রাখলো। চিত্রার হঠাৎ ই দৃষ্টি আটকালো মাছের বাটিতে থাকা বড় মাথাটার দিকে। বয়সে ততটা ছোটো না হলেও চিত্রার আবদার গুলো বেশ ছোটোদের মতন। হুটহাট বলে বসে না ভেবেই কত আবদারের কথা।
যেমন আজই মাছের মাথাটা দেখে নিষ্প্রাণ চিত্রা ঝলমলে হাসি দিয়ে বলে উঠলো,
“বড় চাচীম্মা, আমায় কিন্তু মাথা দিবে আজ।”
সবাই চিত্রার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো। যাক, মেয়েটা নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে। আর বরাবরই চিত্রার জন্য বড় মাছের মাথাটা রাখা হয়। সে আবার বেশ মাছ প্রেমী। সবাইকে অবাক করে দিয়ে রোজা সওদাগর মাছের মাথাটা চাঁদনীর প্লেটে উঠিয়ে দিলো। চাঁদনী চিত্রার পাশে বসেই খাবার খাচ্ছিলো।
রোজা সওদাগরের এমন কান্ডে উপস্থিত সবাই হতভম্ব। চাঁদনী নিজেও অবাক হয়ে গেলো। রোজা সওদাগর সবাইকে তার দিকে এমন হতভম্ব দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে দেখে বোকা বোকা হেসে চিত্রাকে আদুরে স্বরে বললো,
“তোর আপার তো একটু বেশি পুষ্টি লাগবো, ক? হের তো অহন দুইজনের খাওয়া খাইতে হইবো তাই না? আমি তোরে বড় টুকরাটা দিবো। মাথাটা তোর আপা খাক, কেমন?”
চিত্রার হুট করেই কান্না চলে এলো কিন্তু সে প্রকাশ করলো না। এটা হওয়া টা তো স্বাভাবিক। সবাই কি আর মায়ের মতন হয়? চিত্রা খাবারটা কোনো মতে গিলে নিয়ে মাথা নাড়িয়ে কৃত্রিম হাসি দিয়ে বললো,
“না না চাচীম্মা, তুমি আপারেই দেও। আমি দেখছো কেমন বে*ক্ক*লের মতন আবদার করলাম। এখন তো বড় আপারই ভালো খাবার প্রয়োজন। তুমি ঠিক করেছো।”
কথার নিচে চাপা পরলো চিত্রার প্রগাঢ় অভিমান। চাঁদনী আপা তার প্লেট থেকে মাথাটা উঠিয়ে চিত্রার প্লেটে দিতে দিতে বললো,
“আম্মা, আপনিও না! আমাকে কখনো খেতে দেখেছেন মাথা? সবসময় তো চিতাবাঘই খায়। মেয়েটার পছন্দ। আপনিও না অদ্ভুত।”
“হ হ, খাবি কেমনে তোরা, তোদের চাচী তো চিত্রাকেই সবসময় দিতো। চিত্রা খাবে বলে কি তোরা খেতে পারবি না? সবারই তো হক আছে।”
রোজা সওদাগরের উত্তরটা কেমন মুখ ঝামটি মারলো। রসকষহীন কণ্ঠ। চিত্রা বড় আপার হাতটা ধরে ফেললো,খুব কষ্টে কান্না গিলে বললো,
“আপা দিও না গো, কারো হক মেরে খেতে পারবো না আমি।”
খাবার টেবিলে নিস্তব্ধ নিরবতা। সবাই কেমন ফ্যালফ্যাল, আহাম্মক হয়ে তাকিয়ে রইলো। চিত্রা এক মনে আলু ভাজা টুকু দিয়েই পরের ভাত টুকু মাখিয়ে নিলো। রোজা সওদাগর তাকে মাছ আর সাধলো না বরং বড় টুকরো টা সে তার মেয়ে জামাইয়ের থালায় উঠিয়ে দিলো। সবাই চোখ মেলে দেখলো এই স্বার্থপরতা। কারো মুখে কোনো শব্দ নেই। চিত্রা আর দু লোকমা ভাত গিলে কোনো মতে উঠে দাঁড়ালো। আর খাওয়া যে সম্ভব হচ্ছে না। এই খাবার যেন বিষের চেয়ে বিষাক্ত মনে হলো। মাহাতাবও আর মাছ ছুঁয়ে দেখলো না। শাশুড়ির একচোখা কাহিনীর নিরব প্রতিবাদ করে সেও চুপ করে খাবার পাত থেকে উঠে গেলো।
মেয়ে জামাইকে উঠে যেতে দেখে রোজা সওদাগর গদোগদো কণ্ঠে ডাক দিতেই তাচ্ছিল্য হাসি দিলো মাহাতাব। বেশ তাচ্ছিল্য কণ্ঠে বললো,
“যা খাওয়ালেন, পেট ভরে গেছে। আপনার মেয়েকে নাহয় আমার ভাগের মাছটাও দিয়ে দেন। আমার হকের জিনিসের প্রতি তত টান নেই।”
মাছ পাতে তুললো না অহিও। অপমানে গা শিরশির করে উঠলো রোজা সওদাগরের। সে মুখ বাঁকিয়ে বললো,
“ঘরের চেয়ে পরের টান বেশি এ বাড়ির মানুষের।”
চিত্রা তখন কেবল টেবিল ছেড়ে কিছুদূর গিয়েছে। বড় চাচীর কথায় ডুকরে উঠলো সে। ছুটে গেলো ঘরে। মা ছাড়া দুনিয়া কেমন আঁধার হয়ে গেলো তার! এতদিনের নিয়ম ভেঙে আপন মানুষের বদলে অষ্টাদশী ভেঙে চূর্ণবিচূর্ণ। এ বাড়িতে কেমন যেন বদলের সুর দেখা দিয়েছে। আর যে সুখের দিন নেই চিত্রার, তা বুঝতে তার বাকি রইলো না।
#চলবে…………….