#বিভ্রান্ত
“আমি মৃত মানুষদের দেখতে পাই ” সাইকিয়াট্রিস্ট রহমান সাহেবের উদ্দেশ্যে বলে উঠলো আরিফ। যেহেতু উনি একজন সাইকিয়াট্রিস্ট আরিফ ধরেই নিয়েছিল উনি চমকাবেন না কিন্তু কোন ভাবান্তর হবে না এতটাও ভাবে নি। আরিফ একটা প্রাইভেট ফার্মে চাকরী করে। সংসার বলতে মা, স্ত্রী শিউলি, ছয় মাসের ছেলে জারিফ আর একটা ছোট বোন। রহমান সাহেব চশমা ঠিক করতে করতে বললেন,
-কতদিন থেকে আপনার এ সমস্যা?
-খুব ছোটবেলা থেকে
-চিকিৎসা করিয়েছিলেন?
-হ্যাঁ , মা বেশ কয়েজন ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন
-আপনার কোন উন্নতি হয়নি?
-আসলে কোনো লাভ হয়নি কিন্তু মাকে শান্ত করার জন্য আমি মিথ্যা কথা বলেছিলাম যে আমি আর এসব কিছু দেখি না। আর তার কিছুদিন পর সত্যি সত্যি আমি ভালো হয়ে গেলাম। তারপর থেকে আমি সত্যিই আর মৃত মানুষ অথবা আত্মা দেখতে পেতাম না।
-তাহলে এখন আবার শুরু হলো কি করে?
-তিন বছর আগে আমার প্রথম স্ত্রী মারা গেছে। গত এক সপ্তাহ থেকে আমি তাকে দেখতে পাচ্ছি এখানে সেখানে, বুঝলাম পুরনো অসুখটা নতুন করে ফিরে এসেছে।
-আপনার কি মনে হয় কেন আপনি মৃত মানুষ দেখতে পান, তারা আপনার কাছে কি চায়?
-কেউ কেউ কোন প্রকার সাহায্য চায় কেউ কেউ আত্মীয় স্বজনের কাছে কোন খবর জানাতে বলে
-তারমানে আপনার স্ত্রীও আপনাকে কিছু বলতে চায়, আপনি তার সাথে কথা বলেছেন?
-না
-কেন বলুন তো ?একজন মৃত মানুষ আপনার আশেপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে, আপনি জানতে চাইবেন না সে কি চায়?
-আসলে তিন বছর আগে মারা গেলেও আমার মন থেকে আগেই উঠে গিয়েছিলো। ও মারা গিয়েছিল আত্মহত্যা করে। একটা বয়ফ্রেন্ড ছিল ওর , পরকীয়া বলা যেতে পারে যখন ব্যাপারটা আমার ফ্যামিলি জেনে গেল তখন নিজে থেকেই দড়িতে ঝুলে আত্মহত্যা করে।
-যদি তার বয় ফ্রেন্ড থাকতো তাহলে পালিয়ে গেলো না কেন, আত্মহত্যা কেন করলো?
-সেটা তো আমি জানি না হয়তো বয়ফ্রেন্ড তাকে নিতে অস্বীকার করেছে অথবা সামাজিক দায়বদ্ধতা
-আপনার বর্তমান স্ত্রী কেমন?
-ভালো আমার সবকিছু জানার পরও আমাকে বিয়ে করেছে। আমার দূর সম্পর্কের খালাতো বোন। আচ্ছা আপনি কি আমার কথা বিশ্বাস করছেন নাকি আমাকে পাগল ভাবছেন?
-আমি একজন সাইকিয়াট্রিস্ট, মানুষ যাকে পাগলের ডাক্তার বলে কিন্তু শব্দ টা ভুল এটাকে বাংলায় বলা যেতে পারে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ। মানুষের শরীরে যেমন রোগ হয় মনেরও তেমনি হয়। আর আমি মনের রোগের চিকিৎসক । রোগীর কথা আমি ভালোভাবে শুনবো তারপর দরকার মতো কাউন্সিলিং করবো লাগলে ওষুধ দিবো কিন্তু প্রথমেই তাকে পাগল ভাববো না , ভাবলে এই পেশায় থাকা সম্ভব না।
-তার মানে আপনি বিশ্বাস করেছেন?
-দেখুন আরিফ সাহেব আমি বিশ্বাস অবিশ্বাস কিছুই করছি না। হতে পারে এটা সত্যি কথা, হতে পারে এটা আপনার হ্যালুসিনেশন।
-তাহলে?
-আমি আপনাকে পরামর্শ দিতে পারি আপাতত আপনি আপনার মৃত স্ত্রীর সাথে কথা বলুন, সে কি চায় মনোযোগ দিয়ে শুনুন, এতদিন পর কেন ফিরে এসেছে সেটাও জানার চেষ্টা করুন। আচ্ছা আরিফ সাহেব আমার চেম্বারের ঠিকানা আপনাকে কে দিয়েছে?
-কেউ না আমি সাইকিয়াট্রিস্ট দেখাবো এই চিন্তাও আমার মাথায় ছিলনা কারণ ছোটবেলায় অনেকের শরণাপন্ন হয়েছি কোন লাভ হয়নি। অফিস থেকে ফিরছিলাম আপনার সাইনবোর্ড দেখলাম আর কেন যেন মনে হল অন্তত একবার পরামর্শ করে যাই।
-দেখুন বিষয়টা কেমন একটা কাকতালীয় ব্যাপার , তাই না? এই দুনিয়াতে অনেক কিছু ঘটে যেটা কাকতালীয়
-আমি আপনার কথার অর্থ বুঝতে পারছিনা আপনি আসলে কি বলতে চাচ্ছেন আমি কাকতালীয়ভাবে আমার মৃত স্ত্রীকে এখানে সেখানে দেখতে পাচ্ছি? আপনি বোধ হয় আমাকে বিশ্বাস করছেন না, অবশ্য কেও করে না।
-চা খাবেন ?রহমান সাহেব এড়িয়ে গেলেন কথাটা
-আমি জানতে চাইছি আপনি আমাকে বিশ্বাস করছেন কিনা? অস্থির ভাবে বলে উঠল আরিফ
-কিছুটা করছি আবার করছিও না
-আমি উঠি বিরক্ত সুরে আরিফ বললো
-আরে বসুন বসুন এত উত্তেজিত হওয়া ঠিক না আপনার উচিত আমাকে বিশ্বাস করা। আপনি যদি ডাক্তারকে বিশ্বাস করতে পারেন তাহলেই এই রোগ ভালো হবে। নিন চা খান, আসুন অসুখের বাইরে কিছু গল্প করি
-কি গল্প?
-আচ্ছা আমি আমার সম্পর্কেই বলি। আমার নাম তো আপনি জানেনই। আমার দেশের বাড়ি চাঁদপুরে কিন্তু খুব ছোটবেলা থেকেই আমরা ঢাকায় থাকি, কলাবাগান। বাবা-মা মারা যাওয়ার পর স্ত্রী আর দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে আমিও ওখানেই থাকি ,আপনি কি বোর ফিল করছেন?
-না একরাশ বিরক্তি নিয়ে আরিফ বললো
– দেখুন অসুখ ভালো করতে হলে আগে ডাক্তারের উপর আস্থা রাখতে হয়, বিশ্বাস করতে হয়। বুঝতে পারছি আপনি আমাকে বিশ্বাস করছেন না আচ্ছা আমি যদি আমার ব্যাংক লকারের পাসওয়ার্ডটা আপনাকে বলি তাহলে বিশ্বাস করবেন যেখানে আমার মায়ের বেশ কিছু গয়না আছে যেগুলো আমার স্ত্রীকে দেবার কথা ছিল মা মারা যাবার পর স্ত্রীকে আর সেগুলো দেয়া হয়নি
– পাসওয়ার্ড দিয়ে আমি কি করবো?
রহমান সাহেব তবু একটা নাম্বার বললেন,
-আমি আপনাকে বিশ্বাস করে পাসওয়ার্ড টা বললাম এখন আপনিও আমাকে বিশ্বাস করুন আপনার স্বার্থেই। আপাতত আমি আপনাকে কোন ওষুধ দেবো না কিন্তু যেটা বলেছি সেটা করুন । আপনার মৃত স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলুন তারপর আগামী সপ্তাহে আবার যোগাযোগ করুন আমার সাথে।
আরিফ ডাক্তারের চেম্বার থেকে বের হয়ে আসলো।
তার দ্বিতীয় স্ত্রী শিউলি ছেলেকে নিয়ে গেছে বাবার বাড়িতে। আরিফ বাড়িতে এসে হাতমুখ ধুয়ে চেয়ারে বসতেই মা চা নিয়ে আসলেন।
-কি হয়েছে রে বাবা কোন সমস্যা?
-না তো মা আরিফ কথাটা এড়িয়ে গেলো।
ঠিক রাত বারোটায় আরিফের ঘরের লাইট হঠাৎ জ্বলে আর নিভে গেল । আরিফ শুয়ে গিয়েছিল, ডিম লাইটের আলোতে আরিফ দেখলো সোফার এক কোণে তিথি চুপচাপ বসে আছে। আরিফের হঠাৎ সাইকিয়াট্রিস্টের কথা মনে পরলো। সে উঠে বসলো, লাইট জালালো। তিথি তখনও চুপচাপ বসে আছে।
-কেন আমাকে এখন আবার যন্ত্রণা দিচ্ছো মরার পরেও। তিথি চুপ করে থাকলো ।তোমার যদি কিছু বলার থাকে বলো, তারপর চলে যাও, তোমাকে চোখের সামনে দেখতে চাই না আরিফ একনাগাড়ে কথাগুলো বলতে থাকলো।
তিথি উঠে দাঁড়ালো ,আরিফকে হাতের ইশারায় তার পিছু পিছু যেতে বললো।
আরিফ পিছুপিছু গেলো । তিথি দারোয়ানের ঘরের সামনে এসে দাঁড়িয়ে গেলো তারপর হাতের ইশারায় দারোয়ান কে দেখিয়ে আস্তে আস্তে গেটের বাইরে চলে গেলো।
আরিফের মনে তখন সন্দেহের দানা বাঁধছে এসবের মানে কি?
আরিফ দারোয়াকে জোরে ধাক্কা দিয়ে টেনে তুললো, হিংস্রভাবে বলে উঠলো,
– তিথির সাথে কি করেছিস ? আরিফের মনে ধারণা জন্মে ছিল হয়তো তিথির সুইসাইডের সাথে কিংবা হত্যার সাথে জড়িত দারোয়ান।
আচমকা এই ধরনের প্রশ্নে দারোয়ান সিদ্দিক খুব ঘাবড়ে গেলো
-স্যার আমার কোন দোষ নেই
-তুই তিথির সাথে কি করেছিস সেটা বল, তুই ওকে মেরেছিস?
-স্যার আমাকে মাফ করে দেন ,আমি গরিব মানুষ আমার কোন দোষ নাই
আরিফ দারোয়ান এর কলার ছেড়ে দিয়ে শান্তভাবে বিছানায় বসলো ,তারপর বললো,
-সত্যি কথা বল না হলে জানে মেরে ফেলবো
-খালাম্মা ভাবিকে পছন্দ করতেন না , তিনি সবসময় চাইতেন উনার ভাগ্নির সাথে যেন আপনার বিয়ে হয় তাই প্রথমে উনার নামে আজেবাজে রটনা রটিয়ে ছিলেন
-তুই এসব কিভাবে জানিস?
-উনার মোবাইলে যেসব মেসেজ আর ফোন যেতো সেগুলো খালাম্মা আমাকে করতে বলেছিলেন । তিথি ভাবীর বিয়ের আগে একটা ছেলে বন্ধু ছিল কিন্তু বিয়ের পর আর তার সাথে কোন সম্পর্ক ছিল না খালাম্মা বলেছিলেন আমি যদি এরকম করি তাহলে আমার চাকরিটা পার্মানেন্ট হয়ে যাবে সাথে বেতন বাড়িয়ে দেবেন আর নয়তো চাকরি থেকে তাড়িয়ে দেবেন।
-কিন্তু আমি নিজে ওর মোবাইলে ওই লোকের সাথে কথা বলেছি
-স্যার একদিন বলেছেন সেটা আমার সাথেই, খালাম্মা বলে দিয়েছিল কি কি বলতে হবে, খুব কষ্টে শুদ্ধ উচ্চারণে আমি কথাগুলো বলেছিলাম , যতটুকু বলা হয়েছিল ঠিক ততটুকু বলেই ফোন কেটে বন্ধ করে দিয়েছিলাম
-কিন্তু ওকে মারলি কেন?
স্যার বিশ্বাস করেন আমি ভাবিকে মারি নাই, আমাকে শুধু বলা হয়েছিল আপনি অফিসে যাওয়ার পর তিন জন লোক আসবে যেন গেট খুলে দেই আমি তাদের কথা মোতাবেক শুধু গেট খুলে দিয়েছিলাম আর তারপরে শুনি ভাবি সুইসাইড করেছে। আমাকে মাফ করে দেন স্যার আমি কিছু করি নাই ।আমি গরিব মানুষ, আমার দুইটা বাচ্চা আছে চাকরী চলে গেলে আমি খেতাম কি? সিদ্দিক হু হু করে কাঁদতে লাগলো।
আরিফের মাথা কাজ করছে না। তিথি কে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল , ওর যে একটা সম্পর্ক ছিল সেটা জানতো ব্রেকআপ হবার পরে আরিফের সাথে রিলেশন হয় সম্পর্ক হওয়ার তিন মাসের মধ্যেই ওরা বিয়ে করে নেয়। মা একটু নিমরাজি ছিলেন বটে কিন্তু পরে মেনে নিয়েছিল। কিন্তু সিদ্দিক যে সত্যি বলছে তার কোন গ্যারান্টি নেই। মা এই ধরনের কাজ করতেই পারেন না। হঠাৎ করে আরিফের কেমন বমি পেলো। গা গুলিয়ে উঠলো। সারারাত ঘুম হলো না। ভোরের দিকে চোখ লেগে এলো, ঘুম থেকে উঠলো তখন সকাল এগারোটা। ওই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে তাকে। আরিফ রেডি হতে লাগলো মা চা নিয়ে এসে বললেন ” তুই ঘুমোচ্ছিলি তাই ডাকিনি ভাবলাম খুব ক্লান্ত, চা টা খেয়ে নে।”
মায়ের হাত থেকে কাপটা নেবার সময় আরিফের কেমন যেন মনে হতে লাগল এই হাত কি সত্যিই কোন খুনির হাত আরিফ আর চা টা খেতে পারল না , জরুরী কাজ আছে বলে বের হয়ে আসলো তাকে ওই সাইকিয়াট্রিস্ট, রহমান সাহেবের কাছে যেতে হবে যত দ্রুত সম্ভব।
কিন্তু একি! এখানে তো একটা কাপড়ের দোকান, কোন ডাক্তারের চেম্বার নেই।
আরিফ দোকানের ভিতরে গিয়ে ওই চেম্বারের কথা জিজ্ঞেস করলো।
এক কর্মচারী বলে উঠলো, ” সেটা তো প্রায় চার বছর আগের কথা ডাক্তার সাহেব মারা যাবার পরে এই জায়গাটা মালিক ভাড়া নেয়।
আরিফের মাথা বনবন করতে লাগলো।
সে একটা পার্কে এসে বসলো। চিন্তা করতে লাগলো, তার সাথে কি হচ্ছে ? তিথির সাথে কি হয়েছিল। সত্যি কি তিথি কে খুন করা হয়েছে আর এর সাথে তার মা জড়িত আছে? আর ডাক্তার যদি মারা যায় তাহলে কাল তার সাথে কথা বললো কেন ? তার মানে ডাক্তার তাকে কিছু জানাতে চাইছিলো, সেটা কি ? আরিফের হঠাৎ মনে পড়লো উনি একটা ব্যাংক লকারের পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন নিশ্চয়ই তার স্ত্রীকে এই সংবাদ পৌঁছে দেয়ার জন্য উনি আরিফকে দেখা দিয়েছিলেন । আরিফ খুঁজে খুঁজে কলাবাগানে ডাক্তারের ঠিকানায় পৌঁছে দেখলো পরিবারের অবস্থা তেমন একটা ভালো না। এই এতগুলো বছরে জমানো টাকার প্রায় সবই শেষ হয়ে গেছে, স্ত্রী গৃহিণী পরিবার-পরিজন আর কত সাহায্য করবে । আরিফ ভদ্রমহিলা কে বললেন আপনার স্বামী মানে রহমান সাহেব আপনাদের ব্যাংকের লকারে বেশকিছু গয়না রেখে গেছেন, চাবি নিশ্চয়ই আপনার কাছে আছে আর পাসওয়ার্ডটা আমার কাছে আছে। আরিফ নাম্বারটা ভদ্রমহিলাকে দিলেন, ভদ্রমহিলা অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে থাকলো।
-কিন্তু আপনি এসব কি করে জানেন? আমরা অনেকদিন ধরে পাসওয়ার্ড টা পাচ্ছি না, খুব কষ্টে জীবন যাপন করছি ওখানে প্রায় ৫০ ভরির মতো গয়না আছে
-আমি জানি, সব জানি, আসি তাহলে। আরিফ বের হয়ে আসলো।
তার মাথায় ঘুরতে থাকলো ডাক্তার সাহেব তাকে দিয়ে তার পরিবারের একটা উপকার করিয়ে নিয়েছেন তাহলে তিথিও কি তার কাছে সত্যিকার অর্থেই এসেছিল খুনি কে ধরার জন্য। আরিফ কি করবে? তার মাকে সরাসরি প্রশ্ন করবে, এতদিন পরে তার মা কি সাজা পাবে, সে কি পারবে তার মাকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে অথবা প্রমাণ করতে, এর সাথে আবার শিউলি জড়িত না তো, যদি শিউলি জড়িত থাকে তাহলে তাদের একমাত্র সন্তান জারিফের ভবিষ্যৎ কি হবে? অনেকগুলো প্রশ্ন কোন উত্তর নেই। আরিফ পুরোপুরি বিভ্রান্ত। কিচ্ছু বুঝতে পারছেনা, মনে হচ্ছে দুনিয়ার সমস্ত নির্জনতা তাকে গ্রাস করে নিক, সারা দুনিয়াতে কোন মানুষ না থাকুক সে একলা থাকতে চায় একদম একলা।