#অবন্তিকা_তৃপ্তি
কানের পাশে শোনা গেল গম্ভীর এক কণ্ঠস্বর;
— আমি এইখানে! এখনো ভয় পাচ্ছিস?
কানের পাশটায় গরম-নরম অনুভূতি দোলা দিল হঠাৎ। কাব্যের পুরুষালি; ভীষন শখের দেহটা কুহুর অনেকটাই কাছে। একটা হাত যখন কুহুর মাথার চুল বুলিয়ে দিতে দিয়ে আশ্বাস দিতে ব্যস্ত; টকজ্ঞ কাব্য হাত বাড়িয়ে সুইচ খুঁজছে বাতি জ্বালানোর জন্যে। ওটুকু অল্প মুহূর্তের; অল্প স্পর্শে কুহুর মনে হলো. . ওর পুরোটা দুনিয়া আবারও তোলপাড় হয়ে গেছে। ফোবিয়া যা ছিলো সব কোথাও পালিয়ে যেন দম ফুরালো।ঘর্মাক্ত কুহু আলগোছে কাব্যের জ্যাকেট মুঠোতে করতেই; কাব্য সুইচ খোজা ছেড়ে মাথায় নিচু করে অবাক হয়ে কুহুকে একবার দেখলো! কুহু কি সত্যই বেশি ভয় পাচ্ছে? কাব্য কুহুর হাতটা চেপে ধরলো; তারপর হাঁক দিল গলাটা ছেড়ে সিঁড়ির নিচের দিকে ঝুঁকে;
— কবির; অ্যাই কবির। জেনারেটর অন কর দ্রুত।
কবির নিচ থেকে গলা ছাড়লো প্রিয় কাব্য ভাইয়ের আদেশের বিপরীতে;
— জেনারেটর চলতাসে তো কাব্য ভাই।
কাব্য বিরক্ত হয়ে; কুহুকে আরো একবার ভালো করে দেখে নিয়ে চিৎকার করে বললো;
— সিঁড়ির লাইট কই গাধার বাচ্চা? সিড়িতে লাইন দিবি না?
— দেখতাসি ভাই।
কবির উত্তর দিয়ে জেনারেটর চেক করতে চলে গেলো। কাব্য কুহুর হাতটা ধরে ধরে ফোনের ফ্ল্যাশলাইট জ্বালালো এক হাতেই। কুহুর হাতটা চেপে ছোট বাচ্চাদের মতো ধরে ধরে নিচে নামতে লাগল। কুহুর যে হাতটা কাব্য ধরে রেখেছিল; ওই হাত ততক্ষণে ঘাম ছেড়ে দিয়েছে। কুহুর ফোনের ফ্ল্যাশলাইটে হা করে দেখে যাচ্ছে সুদর্শন; গম্ভীর; একরোখা তার কাব্য ভাইকে। কাব্যর সেদিকে মন নেই; ও দেখে না কুহুকে! ওর সম্পূর্ণ ধ্যান তখন কুহুকে কিভাবে অন্ধকার থেকে টেনে আনা যায়। ও তখনো ফোবিয়ায় আক্রান্ত কুহুকে নিয়ে সিঁড়ি মাপতে ব্যস্ত।
নিচে নামতে নামতেই বিদ্যুৎ চলে এলো; জেনারেটর বন্ধ হয়ে গেলো আপনা-আপনি। কাব্য কুহুর হাত ছেড়ে দিলো। কবির জেনারেটরে কারিগরি কি করছে দেখে ভ্রু কুচকে সেখানে গেল! কবির মাটিতে বসে কিছু দেখছে। কাব্য ওর পাশে দাড়িয়ে বললো;
— পেলি কিছু?
কবির হাত ঝাড়তে ঝাড়তে উঠে দাড়ালো। জবাবে বললো;
— পাইতাসি না। কালকে মিস্ত্রী ডাকা লাগবো ভাই।
কাব্য তবুও তাকিয়ে রইলো জেনারেটরের সার্কিটের দিকে। কবির বললো;
— আর মামায় তো সিড়িতে জেনারেটরের লাইন দেন নাই। ওই লাইন আনানো লাগবো কাইল। কুহু আপা তো একদিনেই খবর করে ফেলছেন। কুহু আপা; ঠিক আছেন এখন?
কুহু ওড়নার মধ্যে কপালের ঘাম মুছতে মুছতে ক্লান্ত স্বরে জবাব দিল;
— হ্যাঁ।
কাব্য এবার ওয়ালেট থেক টাকা বের করে কবিরকে দিয়ে বললো;
— আগামীকাল মিস্ত্রী ডেকে লাইন নিয়ে আসবি। আর এখন সামনের মোড়ের দোকান থেকে লাইট কিনে এনে সিঁড়িতে সেট করে দে।
কবির মাথা হেলিয়ে টাকা নিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে বেরিয়ে গেলো। কাব্য কুহুর দিকে এগিয়ে আসলে; কুহু বললো;
— আব্বুকে বললে আব্বুই টাকা দিয়ে লাগিয়ে নিত। আপনি কেন টাকা খরচ করলেন?
বাসার সবাই ছাদে। পুরো বিল্ডিং খালি; মানুষ থাকবে না। তাই কাব্য বেরিয়ে এসে কেচি গেইটের তালা লাগাতে লাগাতে জবাব দিল;
— তুই কি চাস আমি কিপটামি করি?
কুহু লজ্জা পেয়ে গেল. . সঙ্গেসঙ্গে নিজেকে শুধরে বললো;
— না, না. . তা বলবো কেন?’
কাব্য কিছু বললো না পাল্টাতে। শুধু তীক্ষ; সতর্ক চোখে রাস্তার এপাশ দেখে সড়ক ধরে হাঁটা শুরু করেলো দুজন। ডান পাশে একয় রিক্সা আসলে; কাব্য আলগোছে নীরব থেকে কুহুকে টেনে ওর বাম পাশে নিয়ে হাঁটা ধরলো। ছোট এই ব্যাপারটা কুহুর কি যে অসম্ভব ভালো লেগে গেল. . সেটুকু কিশোরী কুহু কাউকে বলে বোঝাতে পারছে না।
কাব্য জ্যাকেটের দু পাশের পকেটে হাত ঢুকিয়ে মাথাটা নিচু করে; একটা ছোট ইটের টুকরাকে জুতো দিয়ে ঠেলতে ঠেলতে বললো একসময়;
— টিউশনের স্যালারি পেয়েছি; তাই খরচ করা হচ্ছে।
কুহু কাব্যের দিকে হা করে তাকিয়ে এখনো। এই যে কাব্য যে ইউনিক ভঙ্গিতে হাঁটছে; তাকে দেখাচ্ছে এক পাক্কা হিরো! কুহু সেই দৃশ্য গিলতে গিলতে বললো;
— আব্বুকে বললেই আব্বু দিতেন। আপনি কেন শুধু. . .
কাব্য এইবার বিরক্ত হয়ে গেল। হাটা থামিয়ে কুহুর দিকে কড়া চোখে চেয়ে বলে উঠলো;
— দুশো টাকার জন্যে বিলাপ করে মরে যাচ্ছিস কেন, আশ্চর্য! চুপ করে হাঁটতে থাক; নো মোর এক্সট্রা টকিং!
বলে কাব্য কুহুকে সামনে ঠেলে দিলো হাঁটার জন্যে; নিজে পেছনে পেছনে এগুতে লাগলো। কুহু সামনে হাঁটার আগে একবার ওয়াবকে দেখে নিলো; কাব্য ওর তাকানো দেখে ভ্রু উচাতেই কুহু মাথা নড়িয়ে আবার সামনে ফিরে চুপচাপ হাঁটা শুরু করে। হয়তবা আজ কুহুর আর বলা হলো না. . আপনার টাকা খরচ হওয়া মানে তো আমার সংসারের খরচ হওয়া। আমাদের ভবিষ্যতের জন্যে সঞ্চয় করার চিন্তা আমি করবো না তো কে করবে আর? কটা বউ আপনার?
কিন্তু ওসব কথা বলা আর হয়নি. . কুহু লাজুক-লাজুক মেয়ে কি না! ওসব কথা বললে কাব্য ভাইয়ের একটা মাইর মাটিতে পড়বে না গ্যারান্টি! সব কুহুর পিঠে আর আব্বুর কানে।
—-
স্বপ্ন সুপারশপ থেকে বারবিকিউ সসের বোতল কিনে বিল দিতে ব্যস্ত কাব্য। পাশে কুহু কাব্যকে রেখেই হেটে হেঁটে দেখছে চকলেটের সেকশনটা। কাব্য টাকা মেটাতে মেটাতে কুহুকে একবার দেখলো। কুহু একটা ডেইরি মিল্কের প্যাকেট নেড়েছেড়ে দেখছে; পরপর দামটা দেখে আস্তে করে সেটা আবার জায়গায় রেখে দিল! কাব্যর চোখে সেটাও পড়লো বরাবরের ন্যায়! কুহু ঘুরাঘুরি শেষে হেলেদুলে কাব্যের পাশে এসে দাঁড়াতেই কাব্য টাকা মিটিয়ে ওয়ালেট পকেটে ঢুকাতে ঢুকাতে বলল;
—এগো তুই; আমি আসছি।
কুহু মাথা নাড়িয়ে এগুতে লাগল সামনের দিকে। কাব্য গিয়ে কুহুর ছুয়ে রাখা ডেইরি মিল্কের প্যাকেট কিনে নিয়ে সেটার আলাদা করে টাকা মিটিয়ে বেরিয়ে এলো। কুহু দরজা খুলে বাইরেই দাড়িয়ে ছিলো। কাব্য ওকে দেখে বলল;
— আয়।
কুহু কাব্যের পাশাপাশি হাঁটছে। কাব্যর হাতে স্বপ্নের সুপারশপ ব্যাগ। অপরহাতে ফোনটা স্ক্রল করছে; আবারও কাউকে মেসেজেস করছে। কুহু বারবার কাব্যের মেসেজিং দেখে আগ্রহ দমাতে না পেরে লুকিয়ে একবার উকি দিল; আবছা দেখল লেখা নামের পাশে;
~‘টামি!’~
এটা আবার কার নাম? কুহু ভ্রু কুচকাল; কার নাম হতে পারে এইটা। পরমুহূর্তে কুহুর কাব্যের বেস্ট ফ্রেন্ড তানিম ভাইয়ের কথা মনে পড়লো; কুহু তাই আর তেমন ভাবলো না। মাথা থেকে জেলাসির ভূত টেনে-হিচড়ে নামিয়ে দিয়ে সোজা হাঁটতে লাগল। কুহু চুপ করে ছিলো এতক্ষণ। কাব্য ফোন পকেটে ঢুকিয়ে গলিতে ঢুকল এইবার। নীরবে হাঁটতে থাকা কুহুর দিকে চেয়ে হঠাৎ পকেট থেকে ডেইরি মিল্কের প্যাকেট বের করে এগিয়ে ধরলো;
—নে ধর।
কুহু হাটা বন্ধ করে অবাক হয়ে তাকাল চকলেটটার দিকে; খুশিতে চোখমুখ ঝপঝপিয়ে উঠেছে যেমন। কাব্যের দিকে তাকিয়ে উচ্ছাস নিয়েই বললো;
— এটা তো আমেরিকান ভার্সন। ওনেক দাম; নিলেন কেন এটা? এতোগুলো টা. .
অর্ধেক বলেই কুহু জিহ্বা কাটলো। আবার টাকার হিসেব. .কাব্য ভাই হয়তো এইবার ওকে কিপ্টেই ভাববেন। কুহু আর আড়চোখে কাব্যের মুখের এক্সপ্রেশন দেখার চেষ্টা চালালো। আর হলোও তাই. . কাব্য চোখ রাঙানো দিল; বললো;
— সিরিয়াসলি? নাও, তোকে নিয়ে আমার রিয়্যালি টেনশন হচ্ছে। খেলে খা, নাহলে কায়াকে দিয়ে দিস।’
বলেই কাব্য কুহুর হাতে চকলেট ধরিয়ে দিয়ে সোজা হাটা ধরলো। গলির ভেতরে কুহুকে পাহাড় দেবার কিছু নেই. . সবাই চেনাজানা এইখানে। কাব্য ভাইকে খুব মানে এখানকার পোলাপান!
চকলেট হাতে কুহু থম হয়ে দাড়িয়ে এখনো। কাব্য ভাইয়ের দেওয়া গিফট. . কুহু কি এই সুযোগ হাত ছাড়া করে? কাব্য ভাই স্বয়ং দিয়েছে এই চকলেট। খাবেই ও; হাপুস-হুপুস করেই খাবে; চেটেপুটেই খাবে। খাওয়ার পর প্যাকেটটা আবারও সবসময়ের মতো ডায়েরিতে গাম দিয়ে লাগিয়ে রাখবে। কুহুর একটা কাব্য-কাব্য ডায়েরি আছে। যেখানে আজ অব্দি কাব্যের সাথে যেকোনো স্পেশাল মুহূর্তগুলো লিখে রাখে কুহু . . কুহু কাব্যের লুকিয়ে তোলা ছবি মিনি প্রিন্টার প্রিন্ট করে লাগিয়ে রেখেছে. . আর কিছু কিছু পৃষ্টায় কাব্যের হাতের লেখার একটা কপিও রেখেছে। পাগল-পাগল লাগে কুহুর আজকাল; প্রেমে পরেও মানুষ এতটা উন্মাদ হয় কখনো? নাকি কুহুর এই দুর্দশা?
কুহু চকলেট খুলে খেতে খেতে দৌড়ে এসে কাব্যের পাশটায় হাটা ধরলো। তারপর তার অর্ধেক খাওয়া চকলেট কাব্যের মুখের দিকে বাড়িয়ে দিল; মিষ্টি কণ্ঠে বললো;
— আপনি নিবেন?
কাব্য গম্ভীর কণ্ঠে স্রেফ জবাবটা দিল;
— সুগার খাইনা আমি।
কুহু তারপরেও বললো;
— একটু খেলে কি হয়? সুগার শরীরের জন্যে দরকারি; জানেন?
অযথা একটা বায়না। মূলত কাব্যের ঠোঁটের স্পর্শ করা জায়গা থেকে নিজে চকলেট খাবে দেখেই এই আবদার-টুকু করা হয়েছে। কখনো যদি কাব্য ভাই কি ওর এসব পাগলামি বুঝে ফেলেন ? রোজ রোজ মনে মনে যেসব পাগলামি করে কুহু: কাব্য ভাই কি ওসব শোনেন? মনের কথা কি কখনো শোনা যায়? যদি যেত …কাব্য ভাই নিশ্চয়ই মুখ-চোখ কুঁচকে বলতেন;
~ কুহুর মাথার ভেতরে নর্দমা ভরে গেছে মেঝো চাচ্চু। দ্রুত ওর মাথার ডাক্তার দেখাও। ~
ওই এক কাজই তো পারে সে. . কথায় কথায় আব্বুকে বিচার দেওয়া। কখনো নিজে এসে কুহুকে আদর দেখিয়ে; মাথায় হাত বুলিয়ে শুধরে দিলেও তো পারে। সে বললে কুহু একবাক্যে ভালো মেয়ে; লক্ষ্মী মেয়ে হয়ে যাবে।
কুহু হাঁটছে আর চকলেট খাচ্ছে। কাব্য আবার ফোন বের করে কাকে মেসেজ করছে যেন। কুহু আবারও দেখল নামটা— এবারেও টামি। কি মেসেজ করছে? পরমুহূর্তে একটু উকি দিতে গেলেই খেলো ধরা। কাব্য ফোন সরিয়ে কুহুর দিকে চেয়ে আছে. . তাও চোখ-মুখ কুচকে। কুহু ধরা পরে যাওয়ায় মুহূর্তেই কাচুমাচু ভঙ্গিতে অন্যপাশে মুখ ঘুরিয়ে চকলেটে ভাবলেশহীন কামড় বসাল। কাব্য ছোট নিঃশ্বাস ছেড়ে ফোন পকেটে ঢুকিয়ে রাখলো; কিছু প্রশ্ন করলো না তেমন।
——-
রাত বাজে তখন বারোটা বেজে দশ মিনিট। বারবিকিউ বানানো শেষ হয়েছে। কাব্য আর স্নিগ্ধ কিচেন এপ্রোন খুলে সবে ফ্যান ছেড়ে বসেছে ছাদে। মহু ওদেরকে ঠান্ডা লেবুর সরবত এনে দিয়েছে নিচ থেকে। স্নিগ্ধ খেতে খেতে কায়ার দিকে একবার তাকিয়ে কিছু একটা ইশারা করল; কায়া ওপাশে বসে চোখ রাঙাচ্ছে বারবার। স্নিগ্ধ ওসব চোখের রাগের পরোয়া করেনি কোনোকালেই. . বেপরোয়া প্রেনিক কি না! ও বসে বসে ওইখানেই মেসেজ করল; তারপর কায়াকে ইশারা করল মেসেজটা পড়তে। ওপাশে কায়া মেসেজ পড়ে;
— একবার; জাস্ট একটা কিস নেব। প্লিজ মেনে নে না, সোনা!
কায়া চোখ-মুখ কুচকে বিরক্ত ভঙ্গিতে রিপ্লাই করে;
— অসভ্য হচ্ছো আজকাল। এই আবদার জীবনেও মানবো না আমি।
স্নিগ্ধ মেসেজ পড়ে অসহায় ভঙ্গিতে কায়ার দিকে তাকালো। কায়া চোখের ইশারায় আবার সাজাতে স্নিগ্ধ রেগে এইবার আবার মেসেজ করে;
— আমার বন্ধুরা সবাই গার্লফ্রেন্ডকে কিস করা থেকে শুরু করে বেডরুম অব্দি চলে গেছে। অথচ রিলেশনের এক বছরেও হাতটাও ধরতে দিস না তুই. . চিল্লিয়ে কানের পোকা বের করে ফেলস। তুই বাল গার্লফ্রেন্ড কিসের জন্যে হইসোস. . বল আমারে।
কায়াও টিপ্পনি কেটে পাল্টা মেসেজ করে;
— তো বোনরে গার্লফ্রেন্ড বানাইতে কে বলছিল তোমারে?
বরাবরের ন্যায় বোন শব্দটা শোনে স্নিগ্ধ ক্ষেপে যায়; ক্ষ্যাপাটে ষাঁড়ের মতো ফুসতে ফুসতে রিপ্লাই করলো;
— বইন? তুই কোন এঙ্গেলে আমার নিজের বইন? আমার চাচাতো বইনের মামাত বোন। কত দূরের সম্পর্করে তুই এমনে অপমান করে দিলি? তোর কপালে আমার গাইল দুইটা।
কায়াও হাসি চেপে রিপ্লাই করল;
— যেমনি হোক কিন্তু বোন তো।
স্নিগ্ধ এবার বিরক্ত হয়ে হাল ছেড়ে গটগট করে লিখলো মেসেজে। কায়া পড়লো স্নিগ্ধ লিখেছে মেসেজে. . .
— তুই থাক তোর বইনগিরি নিয়ে। ফাসছি আমি; ভালো তো বাসছি আমি। তুই তো এখন কথাই শোনাবি, তোরই তো জিন্দেগি। শান্তি হয়ে বইসা থাক; জিতসস তুই. . . প্রাইজ তোরে দেওয়া হলো না এখন! ওটা আমি বাসর রাইতে দিমু।
কায়া এবার ঠোঁট টিপে হেসে স্নিগ্ধের দিকে মায়াবি চোখে তাকাল। ইচ্ছে হয়েছে. . বশ করে নিতে এই রাগী-কাঁচা ভাষার স্নিগ্ধ সিদ্দিককে। স্নিগ্ধ কায়ার জিতে যাওয়া ওই হাসি দেখে তেলেবেগুনে জলে যায়। চট করে কায়ার সামনে থেকে উঠে যায় জায়গা থেকে। উঠে নিচের থেকে গিয়ে মিউজিক বক্স নিয়ে আসে! সবার সামনে দাড়িয়ে গম্ভীর কণ্ঠে বললো;
— গানের কলি খেলব আমরা; চলো। মেয়ে পক্ষ আর ছেলেপক্ষ। আজ যে পক্ষ হারবে. . তারে উইনার পক্ষরে খাওয়াতে হবে। আমরা পোলারা ক্যান সবসময় কমলা খাটব? ওরাও খাটুক।
স্নিগ্ধের চোখে-মুখে আগুন জ্বলছে। কায়া তখনও ঠোঁট টিপে হেসে যাচ্ছে; হাসি থামছেই না. . ওর বড্ড মজা লাগছে স্নিগ্ধকে ক্ষ্যাপাতে পেরে।
#চলবে
তৃপ্তির ঘোষণা. . (সবাই পড়বেন)—