#অবন্তিকা_তৃপ্তি
‘কালচারাল প্রোগ্রাম ২০২৪’
প্রতিবছর এই একটা সপ্তাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার জন্যে স্বস্থির শ্বাস ফেলার একটা সময়। অদিতি তখন সবেই সুস্থ হয়ে ভার্সিটি এসেছে। ভার্সিটি এসে ও অবাক। সবাই রীতিমত কে কোন বিষয়ে অংশ নিবে, একদম হই-হল্লোর লাগিয়ে দিয়েছে। অদিতি ওদের এসব চুপচাপ দেখছিল। ওর হয়তো ইচ্ছে হচ্ছে, কিছু একটায় অংশ নিতে। অদিতিকে একপাশে কোনঠাসা হয়ে দাড়িয়ে থাকতে দেখে হঠাৎ পাশ থেকে ওর ব্যাচের একটা মেয়ে ওকে ইশারা করে চেঁচিয়ে উঠে বলে-
‘অ্যাই অদিতি, তুই গানে পার্টিসিপেট কর। তোর গলা তো ভালো।’
অদিতি সঙ্গেসঙ্গে মানা করে বসলো-‘না,না।আমি এসবে পারিনা।’
অদিতির মানা কি শুনলোই না। এই ব্যাচ থেকে পার্টিসিপেন্ট কম পরছিলো। তাই ব্যাচের সিআর তানিয়া এগিয়ে এসে অদিতির হাতে গানের লিস্ট জোর করে ধরিয়ে দিলো; অদিতির কাঁধে হাত রেখে মিষ্টি হেসে বলল —‘তুই পারবি রে, ট্রাই তো কর একবার। আর এগুলোতে পার্টিসিপেট করলে প্রফেসরদের নজরেও আসা যায়, জানিস সেটা?’
অদিতি তানিয়ার দিকে তাকাল। ওর গান গাওয়ার বড্ড শখ ছোট থেকেই। মাঝেমধ্যেই গুনগুন করে গান গাওয়াও হতো। তবে কোনো অনুষ্ঠানে কখনোই গাওয়া হইনি। বাবা শুনলে ঠ্যাং ভেঙে ঘরে বসিয়ে রাখবে, সেজন্যে।
হঠাৎ অদিতির মত বদলে গেল। ওর হঠাৎ কেন যে উড়তে ইচ্ছে হলো,কে জানে। ও আনমনে ভাবে, ওরা যেহেতু জোর করছে; গেয়েই ফেলা যাক।ও তাই এবার হালকা হেসে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিয়ে দিলো, হাতের গানের লিস্টটায় সাইন করে দিতে দিতে বললো-
‘গানের জন্যে আমার কাছে ইনস্ট্রুমেন্ট নেই। ভার্সিটি থেকে কি দিবে এগুলো?’
তানিয়া অদিতির হাত থেকে সাইন করা লিস্ট নিয়ে জমা করলো বাকি লিস্টের সঙ্গে। বললো-‘ হ্যাঁ দিবে। তুই চিন্তা নিস না।’
কথাটা বলে অদিতির কাঁধে চাপড় দিয়ে চলে গেল আবার সামনে।
‘গানের প্র্যাকটিজের এর জন্যে ডাকছে তোমাদের।’
জুনিয়র ছেলে এসে বলে গেল অদিতিদের ক্লাসরুমে। তানিয়া যেহেতু ওদের এই কাজের ভলেন্টিয়ার, তাই ও সবাইকে খুঁজে খুঁজে ডেকে নিয়ে গেল অডিটরিয়ামে। ওখানেই সামনের দুদিন গানের আসর বসবে।
অডিটরিয়ামে ইতিমধ্যেই অনেকগুলো গিটার, ড্রাম, মিউজিক ইনস্ট্রুমেন্ট রেখে দেওয়া। অদিতি গিয়ে দাঁড়ালো সবার মাঝে। তানিয়া অদিতিকে দেখে পাশের কয়েকটা ইনস্ট্রুমেন্ট দেখিয়ে দিয়ে বলল –
‘অদিতি; এখান থেকে চুজ করে নে ইনস্ট্রুমেন্ট আর প্র্যাক্টিস করা শুরু করে দে।’
অদিতি মাথা নাড়ালো। ও ধীরে ধীরে হেঁটে সবগুলো গিটার নেড়েচেরে দেখছিল। এখানের মধ্যে একটা নীল রঙের গিটার ভীষণ সুন্দর সবগুলোর মধ্যে,দেখে মনে হচ্ছে দামীও।
অদিতি খুশি হয়ে সেটাতেই হাত দিল,ভারি গিটারটা তুলে নিল নিজের হাতে।
ওরনা ভালো করে সামলে একটা চেয়ারে বসে গিটারের স্ট্রিংয়ে হাত নাড়িয়ে টুংটাং শব্দ করতেই হঠাৎ অডিটোরিয়ামে ঢুকলো অদিতির বুকের কাঁপুনি উঠিয়ে দেওয়া, সেই ধ্রুব ইয়ামিন। সেই একই হাঁটার নিজস্ব ভঙ্গি, গলায় ঝুলানো ষ্টার শেইপের লকেট। মাথার চুল এলোমেলো, আজও গায়ে মলিন টিশার্ট।
ধ্রুব অডিটরিয়ামে আসার সঙ্গে সঙ্গে হল জুড়ে একটা শোরগোল ছিলো, সেটা মুহূর্তেই বন্ধ হয়ে গেল। সবাই তাড়াহুড়োভাবে ব্যস্ত হয়ে যায় যার যার ইনস্ট্রুমেন্ট ঠিক করতে।
ধ্রুব নিজের মতো করে হেঁটে গিয়ে বসল নিজের জন্যে সবসময় বরাদ্দ করে রাখা চেয়ারটায়। অদিতি ধ্রুবকে দেখছে; সঙ্গে অনুভব করছে সেই একই যন্ত্রণাদায়ক বুকের কাঁপুনি। কেন বারবার, বারবার ধ্রুবকে দেখলেই এলোমেলো লাগে অদিতির নিজেকে। ধ্রুবকে দেখলেই মনে হয় ছুটে কোথাও পালিয়ে যেতে। এই ‘কেন’ গুলির উত্তর হয়তো কোথাও না কোথাও অদিতির কাছেই আছে। কিন্তু ভিতু অদিতি এসব নিজের মনের কোথাও জায়গা দিতেই চায়না। ও ছুটে, পালিয়ে যায় এই অনুভূতিগুলো থেকে।
অদিতি তানিয়ার কানের কাছে ঝুঁকে ডাকলো-
‘তানিয়া?’
তানিয়া সবার পারফরম্যানস নোট করছিল। অদিতির ডাক শুনে ওর দিকে ঝুকল, অদিতি ধীমে গলায় জিজ্ঞেস করল-
‘সিনিয়র ছেলেরাও আমাদের সঙ্গে একসঙ্গে পারফর্ম করবে?’
তানিয়া অদিতির কথা শুনে ওর দিকে ভ্রু নাড়িয়ে, পরপর আড়চোখে ধ্রুবর দিকে চেয়ে হঠাৎ শব্দ করে হেসে উঠল: ধ্রুবকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলতে লাগল- ‘আরে অদিতি; ধ্রুব ভাই তো আমাদের ভার্সিটির সেরা গায়ক। সব গানের পারফরমান্স উনিই জাজ করে তারপর স্টেজে পারফর্ম করার জন্য সিলেক্ট করেন। তুই এটাই জানিস না?’
অদিতি তানিয়ার এভাবে জোরে জোরে বলা কথায় রীতিমত ভরকে গেল, চোখ বড়বড় করে ধ্রুবর দিকে তাকাল। ধ্রুব তীক্ষ্ম চোখে তাকিয়ে রয়েছে ওর দিকে। অদিতিকে কি ভাবছে সে? ও যেচে তার খোঁজ নিচ্ছে? কিন্তু অদিতি তো ধ্রুবর কথা জিজ্ঞেস করেনি। ধ্রুব চেয়ে আছে এখনো; ওর চোখে-মুখে কিছুটা অবাক ভাব। হয়তো আশা করেনি, অদিতি ওর সম্বন্ধে জানতে চাইছে?
অদিতি অপ্রস্তুত ভাবে চোখ ফিরিয়ে নিল দ্রুত। তার দিকে আর একবারও চোখ দেওয়া যাবে না? কিভাবে যেন তাকায়, যেন চোখের ইশারায় অদিতিকে কিছু একটা বলে!
অদিতি গিটারে সুর তুলছে। ধ্রুব তখন ও আশেপাশে তাকিয়ে কিছু খুঁজছে। হঠাৎ অদিতির হাতের দিকে চোখ গেল। ওর হাতে ধ্রুবর সেই গিটার। ধ্রুব গিটারটা দেখে আবার অদিতির গোলগাল মুখের দিকে তাকাল। গম্ভীর স্বরে সবার মধ্যেই ডাকল-
‘অদিতি?’
অদিতি চমকে তাকাল। ধ্রুবর আচমকা ডাকে সবাই ওর দিকে তাকাল। অদিতি জবাব দিল- ‘‘জ-জী।’
ধ্রুব বরাবরের মতোই শান্ত স্বরে অদিতির হাতের গিটার ইশারা করে বললো-‘দ্যাটস ম্যাই গিটার।’
অদিতি নিজের হাতের গিটারের দিকে তাকাল। তারপর লজ্জায় পরে ধ্রুবর দিকে তাকাল। ধ্রুব তখনও অদিতির দিকে ভ্রু নাড়িয়ে দেখে যাচ্ছে।
অদিতি গিটার হাতে উঠে দাড়িয়ে ধ্রুবর দিকে গিটারটা বাড়িয়ে দিল। ধ্রুব হাত বাড়িয়ে অদিতির হাত থেকে নিলো সেটা।
তখন ঘটে গেল অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। গিটার নেওয়ার সময় ধ্রুবর হাতটা আচমকা ছুয়ে গেল অদিতির আঙুলগুলো। হঠাৎ পুরুষালি এমন রুক্ষ হাতের স্পর্শে অদিতি চমকে উঠে গিটারটাই হাত থেকে ফেলে দিল। সম্পূর্ণ অডিটরিয়ামে ঝমঝমিয়ে আওয়াজ হলো। ধ্রুব হতবম্ব চোখে একবার মেঝেতে পড়ে থাকা গিটার দেখে আরেকবার অদিতিকে মাথা তুলে দেখছে।ওর এত শখের, যত্নে রাখা গিটার!
অদিতি এমন একটা ঘটনায় ভীষণভাবে অপরাধবোধে ভুগল। দ্রুত গিটার মেঝে থেকে তুলে ধ্রুবর পাশের চেয়ারে রেখে দিল, আই-ঢাই করে উঠে বললো-‘আমি ভীষণ সরি, আমি বুঝতে পারিনি কিভাবে এটা…গিটার ভালো আছে বোধহয় এখনো। নষ্ট হয়নি সম্ভবত।’
অদিতি চোখ-মুখ কুচকে ধ্রুবকে বারবার সরি বলছে। ধ্রুব স্থির চোখে অদিতির মুখের দিকে চেয়ে রইল। একটাসময় নিজের চোখ সরিয়ে গিটার হাতে নিতে নিতে বললো-‘রিল্যাক্স, আমি চেক করছি,ওয়েট।’
অদিতি চুপচাপ গিয়ে বসল নিজের চেয়ার। ধ্রুব গিটারের স্ট্রিংয়ে আঙুল নাড়িয়ে সুর তোলার চেষ্টা করছে। অথচ সুরগুলো ছন্দপতন হচ্ছিল বারবার। অদিতি তীব্র অপরাধবোধ নিয়ে ধ্রুবকে দেখছে। ধ্রুব বিরক্তি হয়ে গিটারটা রেখে দিল। পাশ থেকে একটা ছেলে বললো-‘ভাই, গিটারটা ঠিক করাতে হবে বোধহয়।’
ধ্রুব হাত দেখিয়ে আটকে দিয়ে বললো-‘ আমি করে নিব এটা, তোরা প্র্যাক্টিজ শুরু করো। আমার যেতে হবে।’
ধ্রুব ইয়ামিন, পড়াশোনায় ফাঁকিবাজ হলেও গানের ব্যাপারে ও একটু অন্যরকম। ওর শখ এটা। যা ওর একাকিত্ব দূর করতে ব্যাবহার করে এসেছে ছোট থেকেই। ছোট থেকে বাসায় দরজা বন্ধ করে গান গাইত ও। তবে যখন থেকে ধ্রুবর অ্যাংসাইটি অ্যাটাক হওয়া শুরু হলো, ডাক্তারের কথামতো ধ্রুবকে তখন ভার্সিটির গানের প্রোগ্রামগুলোতে নাম জড়িয়ে দিলেন সৌরভ। বখাটে ধ্রুব ইয়ামিন এই একটা ব্যাপারে ভীষণ যত্নবান। ও নিজে থেকেই ভার্সিটির প্রোগ্রাম গান গায়, তবে আজ অব্দি কোনো পুরুষ্কার নেয়নি গানের জন্যে। ও এমনি, গান গাওয়া শেষ হলেই ওকে আর খুঁজে পাওয়া যায়না। ও ছুটে বেড়ায় নানাদিকে। পরবর্তীতে প্রফেসররা বিরক্ত হয়ে ধ্রুবকে প্রাইজ দেওয়াই বন্ধ করে দিয়েছেন।
সেসব কথা যাক! আপাতত সবাই প্র্যাক্টিস শুরু করেছে। অদিতি অন্য আরেকটা গিটার হাতে তুললো। ধ্রুবও আরেকজনের গিটার নিলো নিজের হাতে। ও আলগোছে সেটা হাতে নিয়ে স্ট্রিংয়ে হাত নাড়াতে নাড়াতে আরো একবার অদিতির দিকে তাকাল। ভাবে ও; সামান্য হাত ছুঁতেই এই মেয়ের এত করুন অবস্থা দেখে হঠাৎ করেই গম্ভীর ধ্রুবর কেন যেন হাসি পেয়ে গেল। এতটা নাজুক মেয়ে তো আর ঢাকা শহরে সবসময় দেখা হয়না ওর। বলতে চাইলে এই প্রথম।
অদিতি তখন আনমনে গুনগুন করছে। হঠাৎ করে ধ্রুবর মনে প্রশ্ন জাগলো: এই মেয়েটার গানের গলা কেমন? ও গান গাইলে ওর মুখের এক্সপ্রেশন কেমন হয়ে যায়? সুর তোলার সময় কি চোখ-বন্ধ করে সুর তোলে? গান গাইতে গেলে ওর মনে কি বাকি সবার মতো কেউ ভেসে উঠে?
এসব জানতে ইচ্ছে হওয়া অবশ্যই ভোগাস, একদম বেহুদা। তবুও ধ্রুব নিজের এই মনের বেহুদা চিন্তা থেকে নিজেকে দমাতে পারল না। আনমনা হয়ে রইল পুরোটাক্ষন।
দেখতে দেখতে অদিতির পালা এলো গান গাওয়ার। অদিতি আড়চোখে একবার ধ্রুবর দিকে তাকাল, ও ধ্রুবর সামনে গান গাইবে, মনেমনে অদ্ভুত একটা অস্বস্তি হচ্ছে ওর। তবুও অদিতি উঠে দাঁড়াল। গিটারে গানের সুর তোলার চেষ্টা করল, তারপর চোখ বুজে গলা ছাড়লো-
তখন তোমার একুশ বছর বোধহয়
আমি তখন অষ্টাদশীর ছোঁয়ায়
ধ্রুব পিপাসুর দৃষ্টিতে স্থির চেয়ে রইল অদিতির দিকে, ওর বুজে থাকা চোখ-দুটোর দিকে, ওর চিকন ঠোঁটের দিকে। গ্রামের ওই সাধারণ মেয়ের এই ছোট-ছোট অসাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলো বখাটে ধ্রুব ইয়ামিনকে ক্রমশ জড়িয়ে নিচ্ছে নিজের নেশায়।
অদিতি আবার গান ধরলও;
লজ্জা জড়ানো ছন্দে কেঁপেছি
ধরা পড়েছিল ভয়
তখন তোমার একুশ বছর বোধহয়
আমি তখন অষ্টাদশীর ছোঁয়ায়
গোপনের প্রেম গোপনে গিয়েছে ঝরে
আমরা দুজনে কখন গিয়েছি সরে
ফুলঝুড়ি থেকে ফুল ঝরে গেলে
মালা কিসে গাঁথা হয়
তখন তোমার একুশ বছর বোধহয়
আমি তখন অষ্টাদশীর ছোঁয়ায়
গান শেষ হলে সবাই করতালি দিল। অদিতি সবার দিকে চেয়ে মুচকি হাসলো; তক্ষুণি ধ্রুব ইয়ামিনি হৃদয় লুটিয়ে পরলো ওই নারীর তরে; হয়তো সেটা স্বয়ং ধ্রুব নিজেও বুঝেনি।
সবার গান গাওয়া শেষ হলো।ধ্রুব ওর নষ্ট গিটারটা কাঁধে ঝুলিয়ে বেরিয়ে এলো অডিটরিয়াম থেকে।
ধ্রুব বাইকের চাবি হাতে ঝুলিয়ে বাইকের দিকে এগুচ্ছে। পেছনে ওর সঙ্গ-পাঙ্গ। ধ্রুবর গিটার দেখে ইমন বলল-‘তোর গিটার নাকি ভাবি ভেঙ্গে ফেলেছে?’
ধ্রুব বিরক্ত হয়ে তাকাল ইমনের দিকে, বলল -‘ডোন্ট কল হার ভাবি।’
ইমন হেসে ফেলল, বললো-‘ যে গিটার তুই আমাদেরই ছুঁতে দিসনি কোনোদিন, গিটারের উপর ছোটবেলায় লিখে রাখতি যে ‘DONT TOUCH‘ ;এখন একটা বাইরের মেয়ে দ্য ফেইমাস ধ্রুব ইয়ামিনের গিটার নষ্ট করে ফেলল আর তুই কিছুই বললি না? তুই আমাদের সেটা বিশ্বাস করতে বলছিস তাইতো?’
পাশ থেকে সুমন টিপ্পনি কেটে বলল -‘ভাই, আপনি প্রেম পরার ২ নাম্বার স্টেজে আছেন, এটা কিন্তু ফাইনাল।’
রাজু টিপ্পনি কেটে বলল -‘ ভাই আজকাল দাড়ি না উঠা পোলাপান প্রেম করতেসে, আর আপনি কিনা প্রেম স্বীকার করতেই ভয় পাচ্ছেন?’
ধ্রুব ভ্রু কুচকে ফেলল, বলল —‘আমি ভয় পাচ্ছি?’
রাজু হেসে হেসেই বললো—‘হ্যা, পাচ্ছেনই তো।’
‘তোরে তো আমি—‘ ধ্রুব তেড়ে গেল রাজুর দিকে। রাজু দৌড় লাগাল। ধ্রুব ধরতে পেলে মান-ইজ্জত থাকবে না আর। রাস্তায়ই ধরে মাইর লাগাবে।
তখন হোস্টেলে যাচ্ছে অদিতি। ও কাঁধের ব্যাগ একহাতে চেপে অপরহাতে ফোনে কথা বলতে বলতে হাঁটছিল। ধ্রুব দৌড়ের সময় ওকে লক্ষ্য করেনি, অদিতি ফোনে কথা বলছিল দেখে ও ধ্রুবকে খেয়াল করেনই। তারপর; তারপর দুজনেই খেলো ধাক্কা একটা। অদিতির ফোন ছিটকে পরলো রাস্তায়। ও চোখ বড়বড় করে, টাল হারিয়ে পরে যেতে নিচ্ছিল। তবে সামলে নিল ধ্রুব।কৌশলে একহাতে চেপে ধরলো ওর পিঠ, অপরহাতে পাশে থাকা গাছ ধরে নিজেকেও একইসঙ্গে পরে যাওয়া থেকে আটকে ফেলল। অদিতি তখন হাতের আঙুল দিয়ে খামচে ধরেছে ধ্রুবর বুকের কাচের টিশার্ট।
বখাটে ধ্রুব ইয়ামিন এবং গ্রামের ছাপোষা অদিতি হায়াতের প্রেমের শুরুটা হয়তো এখন থেকে শুরু হয়েছিল!
#চলবে