একদিন বান্ধবীকে বলেছিলাম তোর সাথে যে মেয়েটা সবসময় থাকে তাকে আমার অনেক ভালো লাগে। খোঁজ খবর নিয়ে জেনেছি ওর বয়ফ্রেন্ড টয়ফ্রেন্ড কিছু নেই। তুই তো আমার ভালো বন্ধু। আমারে ওর সাথে প্রেম করায় দে আমি সত্যি সত্যিই তোর বান্ধবীকে অনেক বেশি ভালোবাসব,তোর থেকেও বেশি ভালোবাসব।
জবাবে বান্ধবী বলেছিল,
“দোস্ত এসব প্রেম ট্রেম ভালো না। কি হবে বল প্রেম করে? তুই চাইলে আমি তোর সাথে প্রেমিকার মতো করে কথা বলতে পারি। তবুও আমাকে এটা করতে বলিস না। যেখানে আমি প্রেম করি না সেখানে আমার বেস্টফ্রেন্ডকে করতে দিব কিভাবে? ও প্রেম করলে আমাকে ভুলে যাবে,আমারও প্রেম করতে মন চাইবে। তখন আমার কি হবে,বল? সত্যি বলতে আমি প্রেম করতে চাই না। রাগ করিস না দোস্ত।”
আমি সেদিনের পর থেকে প্রেম নামক ভূতটা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলেছিলাম। আর ভেবেছিলাম প্রেম আমার জন্য না,কারণ বান্ধবী আছে।
কিছুদিন পর সেই বান্ধবী আমাকে খুব ভালোবেসে বলল।
“আমিনুল দোস্ত,তুই তো আমার দোস্ত হস? অনেক ভালো দোস্ত,না?”
আমি বললাম,
“হয় হয়,তুই তো আমার অনেক ভালো বান্ধবী। তোরে দিয়া তো আমি গার্লফ্রেন্ডের অভাব পূরণ করতাম,না? যেসব বান্ধবী দিয়ে নিজের গার্লফ্রেন্ডর শূন্যতা পূরণ করা যায় তাদেরকে ভালো বন্ধু বলা যায়,তোকে না। তুই তো গার্লফ্রেন্ড হইবি দূরের কথা কারো বয়ফ্রেন্ড হতেও সাহায্য করস নাই। তুই বান্ধবী নামের কলঙ্ক।”
জবাবে বান্ধবী বলল।
“এভাবে বলিস না দোস্ত,তোর সাথে একটা ছেলে ঘুরে না? ওরে আমার খুব ভালো লাগছে। প্লিজ দোস্ত ওর ফোন নাম্বারটা দে। আর বলে দে আমি তোর খুব কাছের বান্ধবী,যদি পারিস প্রেম করিয়ে দে।”
আমি তখন বললাম।
“দোস্ত এসব প্রেম ট্রেম ভালো না। ও তোর সাথে প্রেম করলে তো আমাকে ভুলে যাবে,তখন তো আমার সময় কাটানোর মতো মানুষ থাকবে না। সেদিন যদি তোর বান্ধবীর সাথে প্রেমটা করায় দিতি তাহলে আজকে তোর রাস্তাটা ক্লিয়ার থাকত। এজন্য মনীষারা বলে গিয়েছেন। ভাবিয়া করিও কাজ,করিয়া ভাবিও না।”
তখন বান্ধবীর সোজাসাপ্টা উত্তর।
“দোস্ত আমার বান্ধবী এখনও সিঙ্গেল। আমি যেভাবেই হোক তোকে ওর সাথে প্রেম করায় দিব তবে তুইও আমার দিকটা দেখবি বল।”
আমি তখন বললাম।
“সত্যি বলতে তোর বান্ধবীর প্রতি এখন আর তেমন কোন ফিলিংস নাই আমার। ফিলিংসটা ট্রান্সফার হয়ে তোর দিকে এসেছে। তবুও তোর জন্য মেয়েটার সাথে কথা বলব। ওর নাম্বার দে। আমি জানি না তুই কি করবি। তবে মেয়েটার সাথে আমার প্রেম হলেই কেবল তোর কাজ করে দিব তার আগে না। তোর বান্ধবীর নাম্বার দে আর বলে দে আমার এক বন্ধু কথা বলবে। বাট আমার নাম বলবি না। ডিটেইলস কোনকিছুই বলবি না। আমি নিজ থেকে সবকিছু বলব আমার ভবিষ্যৎ গার্লফ্রেন্ডকে।”
সাতদিন পর বান্ধবী ফোন দিয়ে বলল।
“তুই আমার সাথে এটা করতে পারলি? এত বড় প্রতারণা করলি? আমি তোকে কত বিশ্বাস করতাম,আর তুই কিনা আমার সাথে এরকম করলি?”
আমি তখন না জানার ভান করে বললাম।
“আমি কি করলাম?”
তখন সে বলল,
“আজকে বান্ধবী তাঁর বয়ফ্রেন্ডকে আমার সাথে পরিচয় করায় দিছে। আমি যে ছেলেটার সাথে প্রেম করতে চাইছিলাম,মানে তোর বেস্টফ্রেন্ড সে আমার বান্ধবীর বয়ফ্রেন্ড। আমি নাকি তাকে তাঁর নাম্বার দিছি প্রেম করার জন্য। তুই ফোন না দিয়ে তোর বন্ধুকে ফোন দেওয়ালি কেন? তোকে প্রেম করার জন্য বলছিলাম তোর বন্ধুকে না।”
তখন আমি অট্টহাসি বললাম।
“বান্ধবী শোন,তোমার বান্ধবীর প্রতি আমার এখন আর কোন ফিলিংস নাই। যত ফিলিংস তোমার প্রতি। তাই আমার বন্ধুকে বলছি এই মেয়ের সাথে প্রেম কর। আমার বন্ধুরও হৃদয়মাঝারে অনেকদিন ধরে একটা গার্লফ্রেন্ডের হাহাকার করছিল,তাই সে আর না করেনি।”
বুঝলাম না বান্ধবী প্রতারক বলে ফোন রেখে দিল কেন? ফোন রাখার আগে বলল।
“আমি সারাজীবন সিঙ্গেল থাকব তবুও তোর মতো প্রতারকের সাথে প্রেম করব না।”
তখন আমি কাঁদতে কাঁদতে বললাম।
“হ আর আমার ফিলিংস তো খালি সারাজীবন তোমার প্রতিই থাকবে? এটা বুঝি ট্রান্সফার হবে না?”