গল্প সংসার
Moumita Chowdhury
আজ আমার স্বামী অনিক এর বিয়ে। খুব সুন্দর করে ছায়ামন্ডপটি সাজানো হয়েছে,আত্মীয় স্বজন ও সবাই সেজে গুজে এসেছে।দেখতে ভালো লাগছে সবাইকে।আমাকে অবশ্য কেউ নেমন্তন্ন করেন নি , কিন্তু আমিও বিয়েবাড়িতে হাজির আছি কিন্তু কেউ আমাকে পাত্তা দিচ্ছে না।আমার বাড়ি থেকে আমার মা বাবা রাও এসেছেন, ওনারা আসতে চান নি কিন্তু অনিকের কথা ফেলতে পারেন নি এছাড়া নাতিদের টানে বিয়েকে উপলক্ষ করে তারা এসেছেন।মা বাবা আমার ছোট ছেলেটিকে কোলে নিয়ে কিছুক্ষণ পরপর চোখ মুছতেছেন,
অনিকের সাথে আমার দীর্ঘদিন এর পরিচয় ছিল এরপর প্রণয়।আমাদের বিবাহিত জীবন ৬ বছরের একটু বেশি। আমাদের দুটো ছেলে সন্তান আছে। আমাদের ঘরে সুখ শান্তির কোন অভাব ছিল না। ভালোই কাটছিল দিনগুলো.অনিকের চাকরি আর আমার সংসার ধর্ম।
হয়তো ভাবছেন তাহলে কি এমন হলো যে আমার স্বামীকে আবার বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হলো। আচ্ছা সে কথা একটু পর বলছি….
নতুন বৌ কে ছায়ামন্ডপে নিয়ে আসা হয়েছে। সেদিকে বরং যাই।আমি ঠিক গিয়ে দাঁড়ালাম নতুন বৌ এর পিছনে, কারন এখন শুভদৃষ্টি হবে। দেখলাম অনিক মাথা নিচু করে এতক্ষণ সব মন্ত্র পাঠ করছিলেন এবার শুভদৃষ্টি,তাই উঠে দাঁড়িয়েছেন।উঠে দাঁড়ানোর পর আমি খেয়াল করলাম তার চোখের কোণে জল চিকচিক করছে। কেউ হয়তো এতো ভিড়ে সেই জল খেয়াল করবে না , কিন্তু আমি ঠিকই খেয়াল করেছি, আমি জানি এই জল হলো আমাকে বিসর্জন দিয়ে অন্য কাউকে গ্রহন করার জল।
আমার বুকের ভেতর টা ভেঙে চুরে যাচ্ছে, আমি অপলক দৃষ্টিতে অনিকের দিকে তাকিয়ে আছি, আমার চোখ বেয়ে লোনা জল ঝড়ছে, কিন্তু অনিক আমার চোখে চোখ রাখছে না, যে মানুষটা শুধুই আমার তার ভাগ অন্য কাউকে দিতে নিশ্চয় প্রতিটি মেয়ের ই এরকম কষ্ট হয়,
মালা বদল এর সময় অনিকের হাত কাপছে,আর আমার বুকটা, আমি কিছুতেই এই বিয়ের বাকী অংশ দেখতে পারবো না, আমার সাহস হচ্ছে না,আমি ভেতর থেকে ভেঙে চুরে যাচ্ছি।তাই আমি ঐ স্থান ত্যাগ করলাম।একটু আড়ালে গিয়ে বসলাম,আমার পাশে আমার বড় ছেলে এসে বসলো, ওকে দেখতে খুব সুন্দর লাগছে আজ ,বাবার বিয়েতে ম্যাচিং করে আমার দুই ছেলে কি সুন্দর ধুতি পাঞ্জাবি পরেছে, কারো যেন নজর না লাগে তাই আমার চোখের লেপ্টে যাওয়া কাজল আঙ্গুলে করে ওর কপালে দিয়ে দিলাম।আর ওর বাবার জীবনে নতুন বৌ আসছে , আমার ছেলেদের নতুন মা, নতুন সবকিছুর প্রতি আমার আগ্রহ থাকলেও এই নতুনকে আমি মানতে পারছি না, কিন্তু আমি না মানলে কি হবে, অনিক ছাড়া আর কেউ এই বিয়ের আগে আমার অনুমতি নেবার প্রয়োজন ও মনে করে নি।
থাক আমি আর কিছু ভাবতে পারছি না, আমার মাথাটা ঝিমঝিম করছে, বারবার করে মনে হচ্ছে কোন মিরাক্কেল হোক আর বিয়েটা না হোক, কিন্তু না বাস্তব জীবনে এরকম মিরাকেল হয় না, তাই শেষ পর্যন্ত সিঁদুর দান হয়ে গেল, অথচ আমার সিথিতেও তার দেয়া সিঁদুর জলজল করছে।
বিয়ে সম্পন্ন হলো। আমার সাধের সংসারে নতুন বৌ এর গৃহপ্রবেশ হলো, ভেবেছিলাম সিরিয়াল এর ভিলেনদের মতো কোন কিছু করে নতুন বৌ কে ফেলে দিব কিন্তু ইচ্ছে করলো না, নিজের ঘর, সংসার,স্বামী, সন্তান সবকিছুর অধিকার ই যখন নিজের ইচ্ছায় ছেড়ে দিয়েছি তখন এসব করে কি লাভ।
নতুন বৌ ঘরে ঢুকেই দেখলাম আমার সন্তানদের কাছে টেনে নিল।দেখে ভালো লাগলো আমি কিছুটা আশ্বস্ত হলাম, তবে সবকিছুর অধিকার এভাবে অন্যের হতে দেখে খুব কষ্ট হচ্ছিল কিন্তু এখন আর আমার এই কষ্ট দেখার মতো কেউ নেই, আমি নিজ হাতে শেষ করেছি তা।
আমার মা বাবা আমার রুমে এসে আমার সামনে অনেক কান্নাকাটি করলো কিন্তু আমি তাদের চোখের জল মুছলাম না, বাবা শুধু বারবার বলছিল রাগের মাথায় এই কাজটা তুই না করলেও পারতি মা, তাহলে এই দিনটা হয়তো আসতো না, অন্তত বাচ্চা দুটোর কথা ভেবে …………
আমি জানি আমি যা করেছি তা থেকে ফেরার আর কোন রাস্তা নেই, এই আফসোস আমাকে কুড়ে কুড়ে খাবে কিন্তু আমি চাইলেও আর সবকিছু ঠিক করতে পারবো না।
আজ বৌ ভাত
সবাই এখন বৌ ভাত এর প্রিপারেশন নিচ্ছে তাই সবাই ব্যাস্ত, আমি বেলকনিতে বসে আছি একমনে হঠাৎ দেখলাম অনিক এসে আমার পাশে এসে বসেছে , কিন্তু আমার দিকে তাকাচ্ছে না বরং মানিব্যাগ থেকে আমার ছবিটি বের করে দেখছে। অনিক এর ও অনেক অভিযোগ আমার উপর, সবকিছুই তো ঠিকঠাক ছিল কিন্তু হঠাৎ একদিন অর্পার ফোনে আমাদের সবকিছু শেষ হয়ে গেল।
আমার সাথে পরিচয় এর আগে অনিকের সাথে অর্পার পরিচয় ছিল,হয়তো সম্পর্ক ও। কিন্তু অর্পা হঠাৎ করে অন্য কাউকে বিয়ে করে ,এরপর কয়েকবছর পর অনিকের জীবনে আমি আসি। আমাকে অনিক সবটাই বলেছিল কিন্তু হঠাৎ একদিন অনিক অফিস থেকে ফেরার পর ও ওয়াশরুমে যায় সেই সময় অনিকের ফোন বেজে ওঠে এবং ট্রু কলারে আননোন নাম্বারে অর্পা শো করে। মুহুর্তে আমার মাথায় বাজ ভেঙে পড়ে। আমি কিছুতেই এটা মেনে নিতে পারিনি যে অর্পার সাথে অনিকের যোগাযোগ থাকতে পারে।অনিক ওয়াশরুম থেকে বের হলে আমি হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলি ও প্রচন্ড গালাগালি করি।অনিক অনেকবারই বলছিল অর্পার সাথে ওর কোন যোগাযোগ নেই কিন্তু আমি কিছুতেই বিশ্বাস করিনি , অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকি এবং এর এক পর্যায়ে অনিক আমার গায়ে হাত তোলে, নিজেকে সামলাতে না পেরে আমি দরজা আটকিয়ে দেই এবং এরপর………..
থাক সেসব কথা, আমি রাগের মাথায় যে সিদ্ধান্ত তখন নিয়েছিলাম তা ভুল ছিল,কারন সত্যি বলতে অর্পার সাথে অনিকের কোন যোগাযোগ ই ছিল না।অর্পার বাবা অসুস্থ ছিলেন ওনারা ও নেগেটিভ রক্ত দরকার ছিল,বাবা কে বাঁচাতে অর্পা অনিক কে ফোন করেছিল কারন অনিকের ও রক্তের গ্রুপ ও নেগেটিভ। কিন্তু যখন বুঝলাম তখন অনেকটা দেরী হয়ে গেছে।
অনিক এখনো আমার দিকে তাকাচ্ছে না অথচ আমি অনিকের দিকে তাকিয়ে আছি ও আমার ছবিটা হাতে নিয়ে বলছে আজ তুমি থাকলে তোমার সংসারে কেউ আসতে পারতো না,এক অর্পার ফোনে তুমি নিজেকে সামলাতে পারোনি সেই তুমি কিভাবে তোমার সংসারে অন্য কারো বিচরন কিভাবে সহ্য করবে।
আমিও সেটাই ভাবছি,আমি বেঁচে থাকলে হয়তো সহ্য করতে পারতাম না কিন্তু আমি তো সেদিন রাগের মাথায় নিজেই নিজেকে শেষ করেছিলাম।তাইতো আমার জায়গায় আজ অন্যকেউ।
আমি চলে যাবার পর আমার ছেলে দুটোর কষ্ট ছিল সবথেকে বেশি।বড় ছেলেটা সারাদিন মা মা করে কান্না করতো আর ছোটটা তো সারারাত না ঘুমিয়ে কান্না করতো। পালাক্রমে ১ মাস ২ মাস করে আমার মা বাবা শশুড় শাশুড়ি রা ছেলে দুটোকে দেখাশোনা করেছিল কিন্তু সবাই চাকুরীজীবী তাই পার্মানেন্ট কাউকে দরকার ছিল। শেষ পর্যন্ত সবাই মিলে ডিসিশন নিল অনিকের আবার বিয়ে দেবে।
আজ বৌ ভাত, রাতে ফুলশয্যার খাট সাজানো হলো আমি একবার ঘুরে দেখে আসলাম, আমার বুকের ব্যাথাটা বাড়তে শুরু করলো, আজকের পর আমার বলে আর কিছুই থাকলো না,বার বার শুধু সেদিনের রাগের মাথায় করা ভুলটার জন্য আফসোস হচ্ছিল।মনে হচ্ছিল কোনভাবে যদি আমি ফিরে আসতে পারতাম আমার সংসারে, আমার স্বামী সন্তানদের কাছে। কিন্তু তা আর হবার নয়।রাত বাড়ছে অনিক ও নববধূকে ঘরে নিয়ে আসা হলো ,আমি ঘর ছেড়ে বের হলাম এখানে আমি আর থাকতে পারবো না।
বৌভাত এর ৪/৫ দিনের মধ্যেই আত্মীয় স্বজন সবাই চলে গেল।বাসার লোকজন কাজে যোগদান করলো কিন্তু আমার অতৃপ্ত আত্মাটা এই সংসারে পরে রইলো।
আজ সবাই অফিসে গেছে । আমার ছোট ছেলেটা একটা গাড়ি নিয়ে ফ্লোরে বসে খেলছে,বড় ছেলেটা দেখলাম কেমন অসহায় হয়ে আছে এতদিন ওদের সাথে পরিচিত মুখ থাকলেও আজ ওদের নতুন মা একেবারেই অপরিচিত মুখ।
নতুন বৌ বিছানায় শুয়ে মোবাইলে নিজেদের বিয়ের ছবি দেখছে আমার বড় ছেলে এসে বললো আমার ক্ষুধা লেগেছে খেতে দাও , কিন্তু নতুন বৌ একমনে ছবি দেখা নিয়ে ব্যাস্ত। গত কয়েকদিনে এই বৌ এর ব্যাপারে যা ভেবেছিলাম সে আসলে তেমন নয় তার আসল চেহারা এটাই।সবাই চলে যেতে যেতে সে তার রুপ দেখাতে শুরু করলো।যে ছেলে আমার খাবার খেতে চাইতো না সে নিজের মুখে খাবার খেতে চাচ্ছে কিন্তু কেউ তাকে খাবার দিচ্ছে না, শেষমেশ সে নিজেই বিস্কুটের কৌটা হতে বিস্কিট নিয়ে খেয়ে নিল। ছোট ছেলেটা ফ্লোরে খেলতে খেলতে সেখানে পটি করে হাত দিয়ে মাখামাখি করছে সেদিকে নতুন বৌ এর কোন নজর নেই।
আমি কান্নায় ভেংগে পরলাম আমার বোকামির জন্য, বাচ্চাগুলো কি ভয়াবহ অসহায় এখন,একটু পর দেখলাম ছোট ছেলেটি পটি করেছে বলে নতুন বৌ তার উপর রাগ করে হাত ধরে টানতে টানতে বাথরুমে নিয়ে গেল, বাচ্চাটা আমার কান্না করছিল বলে মুখ চেপে ধরছিল। ছোট ছেলেটার কান্নার শব্দে বড় ছেলেটা দৌড়ে বাথরুমের সামনে এসে দাড়িয়ে আছে অসহায় এর মতো, বারবার বলছে ভাই কাঁদিস না,আমি তোর সাথে খেলা করবো। আমি অতৃপ্ত আত্মা হয়ে আমার ৩.৫ বছর ও ১.৫ বছর বয়সী বাচ্চাদের করুন দৃশ্য দেখছি, অথচ আমি আজ বেঁচে থাকলে ওদের শরীরে কেউ একটা টোকা ও দিতে পারতো না।
এরপর ২ দিন ছিল শুক্রবার ও শনিবার এই দু দিন আমার বাচ্চাদুটো অনেক ভালো ছিল, সবার ই অফিস ছুটি।সবার সামনে ঐ বৌ বাচ্চাদের অনেক আদর করতো।আমি মারা যাবার পর ওদের বাবা ও বাচ্চা দুটোকে আর বকাবকি করে না ।
কিন্তু আজ রবিবার আবার আমার বাচ্চাদুটোর কষ্ট শুরু হবে। আজ সবাই অফিসে চলে যাবার সাথে সাথেই নতুন বৌ কাঁথা মুড়ি দিয়ে বিছানায় শুয়ে পরলো।ড্রয়ইং রুমে আমার দুই ছেলে খেলছে খেলতে খেলতে আমার ছোট ছেলে হঠাৎ করে নতুন বৌ এর মোবাইল টি হাতে নেয়,দুই ভাই মিলে মোবাইলে কার্টুন দেখবে বলে কাড়াকাড়ি শুরু করে ফলে হাত থেকে পরে মোবাইল ভেঙে যায়, নতুন বৌ এর ঘুম ভাঙ্গে,এসেই মোবাইল এর অবস্থা দেখে আমার ছোট ছেলেকে প্রথমে মারতে শুরু করে। বড় ছেলে এসে বলে তুমি আমার ভাইকে মারছো কেন, এরপর বড় ছেলেটাকে ধাক্কা মেরে ফেলে পা দিয়ে লাথি মারে আর আমার অতৃপ্ত আত্মা ওদের চিৎকারে ছটফট করতে থাকে।ছোট ছেলেটি মারের চোটে ঠোঁট মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছিল আর মা মা বলে চিৎকার করে উঠে আমি আর কিছুতেই এই দৃশ্য সহ্য করতে না পেরে চিৎকার দিয়ে উঠি……
আমার এক লাফে বিছানায় বসে পরি, দেখলাম আমার সমস্ত শরীর কাঁপছে,চোখ দিয়ে জল ঝড়ছে আমার মুখ দিয়ে আওয়াজ বের হচ্ছে না। আমি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ৭ টা ১০ বাজে।তার মানে আমি এতক্ষন স্বপ্ন দেখছিলাম।এক লাফে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ালাম ,গত রাতের কথা ভাবলাম, অনিক অফিস থেকে ফেরার পর অর্পার ফোন কল দেখে অনিকের সাথে রাগারাগি করে আমি ঘরে দরজা দিয়ে শুয়েছিলাম, ঘুমানোর আগে রাগের মাথায় ভেবেছিলাম এর থেকে আমি মরেই যাব কিন্তু কখন যে ঘুমিয়ে গেছি টের ই পাইনি আর সারারাত ধরে আমি এমন স্বপ্ন দেখলাম।
আমি দৌড়ে পাশের রুমে গিয়ে দেখি আমার দুই ছেলে ঘুমাচ্ছে, ওদের মায়াবী দুই গালে আমি চুমু দিয়ে জড়িয়ে ধরলাম এরপর দেখলাম অনিক রান্নাঘরে কফি বানাচ্ছে,আমাকে দেখেই বললো রাগ কমলে ফ্রেশ হয়ে আস, বেলকনিতে বসে কফি খাব।আমি নিঃশব্দে বেলকনিতে অনিকের পাশে বসলাম, অনিক বললো কাল রাতে এভাবে রাগ করে যে একা একা শুয়ে পরলে তোমার ছোট ছেলে তো মা মা করতে করতে আমার পাশেই ঘুমিয়ে গেল।
আমি কফিতে চুমুক দিতে দিতে জিজ্ঞেস করলাম অর্পা কেন তোমাকে ফোন করেছিল। অনিক বললো আমি কিভাবে বললো আমি তো ফোন রিসিভ করিনি ওয়াশরুমে ছিলাম, ওয়াশরুম থেকে বের হতেই তো তুমি অশান্তি শুরু করলে। এরপর সারারাত আর ফোন হাতেও নেই নি আমি অনিকের ফোন হাতে নিয়ে দেখি যে হ্যা ঐ একবার ই কল এসেছিল , কিন্তু আমি তো স্বপ্নে দেখলাম অর্পার বাবার রক্ত দরকার এ জন্য ফোন করেছিল,স্বপ্ন যদি সত্যি হয় তবে তো অর্পাকে ফোন করা দরকার।
আমি ফোন হাতে নিয়ে ঐ নম্বরে ডায়াল করলাম। ওপাশ থেকে একটি মধুর কন্ঠের নারী বললো অর্পা বলছি আপনি কে। বললাম আপনি গতরাতে আমার স্বামী অনিকের নাম্বারে ৯.১৩ মিনিটে ফোন করেছিলেন।
অর্পা একটু সময় নিয়ে বললেন ও হ্যা অনিক সাহেব আমন্ত্রণ পেইজ হতে একটি শাড়ি অর্ডার করেছিলেন কিন্তু ডেলিভেরী চার্জটি এডভান্স না করেই ওনার নাম এড্রেস ফোন নাম্বার দিয়েছিলেন তারপর অনেকবার পেইজ থেকে ওনাকে নক করা হলেও উনি আর সিন করেন নি তাই ওনার মোবাইলে কল করে বলতে চেয়েছি যে ১৫০ টাকা এডভান্স না করলে প্রোডাক্ট পাঠানোর নিয়ম নেই।আমি আমন্ত্রন পেইজ এর ওনার অর্পা।
স্পিকারে এই কথা শোনার পর অনিক ও আমি দুজনেই হাসিতে গড়িয়ে পরলাম..
বি:দ্র :
আমরা মেয়েরা মা হবার পর আমাদের মাথায় সবসময় এই একটা ব্যাপার ঘুরপাক খায় যে আমি না থাকলে আমার সন্তানদের কি হবে।আমিও সবসময় এরকম ভাবি এবং প্রায় ই এরকম দুঃস্বপ্ন দেখি।
অন্তর্নিহিত মেসেজ :
*আমরা অনেক সময় রাগের মাথায় এমন ভুল সিদ্ধান্ত নেই যা আমাদের সুন্দর জীবনটাকে তছনছ করতে পারে।
*সুইসাইড কখনো কোনকিছুর সমাধান হতে পারে না, বরং বেঁচে থেকে লড়াই করার মাঝেই জীবনের সার্থকতা।
*চোখের দেখার মাঝেও ভুল থাকে
*সংসার জীবন যেমন কন্টকময় তেমন সংসারের থেকে বড় সুখ পৃথিবীতে আর কিছু নেই।
*মাতৃহারা ছোট ছোট সন্তানদের কষ্ট বর্ননাতীত।
*সব দুঃস্বপ্ন যেমন সত্যি হয় না তেমনি সব সৎমা রাও খারাপ হয় না আর সব অর্পা রাও অনিকের জীবনে ফিরে আসে না।