রায়হানের একটা ফাইল আঁটকে গেছে! কিছুতেই ছাড়াতে পারছে না। অফিসার ভয়ংকর রকমের কড়া। টাকা না দিলে ফাইল ছাড়বে না।
রায়হানের এক বন্ধু রবিন বলল, “আগামীকাল অফিসে যাবি।”
“গেলে কি হবে?”
“দেখি চেষ্টা করে।”
পরেরদিন রায়হান অফিসে আসল। বাবলু নামে অফিসারের সাথে দেখা করল। বাবলু সাহেব জিজ্ঞেস করল, “সব ব্যবস্থা করে এসেছেন? “
“জি স্যার।”
বাবলু সাহেব একটু হেসে বলল, “গুড! সব ব্যবস্থা করছি।”
এ সময় অফিসে কেউ একজন আসল। পিয়নটা এসে বাবলু সাহেবের কাছে ফিসফিস করে বলল,” স্যার, দুদক থেকে একজন অফিসার আসছেন। “
“বলো কী! আচ্ছা আমি আসছি।”
বাবলু সাহেব রায়হানের দিকে তাকিয়ে বলল, “আপনি একটু বসুন আমি আসছি।”
বাবলু সাহেব বেরিয়ে এসে দেখল। একজন লোক বসে আছেন। বাবলু সাহেবকে দেখে এগিয়ে এসে পরিচয় দিলো। “আমি রবিন দুদকের একজন অফিসার। “
“কি ব্যাপার বলুন স্যার?”
না আমি আসছি আমার এক বন্ধুর সাথে দেখা করতে। ওর বাসায় গেছিলাম। ওর বাসা থেকে বলল, “এই অফিসে এসেছে। “
“আসুন ভিতরে আসুন স্যার।”
দুদক অফিসার বাবলু সাহেবের রুমে এসে রায়হান কে দেখে বলল, “কী রে তুই এখানে?”
বাবলু সাহেব অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। “এটা আপনার বন্ধু স্যার?”
“হ্যাঁ। তোর এই অফিসে কাজ আছে আমাকে বলিসনি কেন!”
“তোকে বলার কি আছে! বাবলু সাহেব খুবই ভালো মানুষ! উনি এমনিতেই আমার ফাইল পাশ করে দিয়েছেন। উনি না থাকলে কী হত জানি না!”
দুদক অফিসার বলল, “ধন্যবাদ বাবলু সাহেব। আপনাদের মতো সৎ অফিসার আছে বলেই দেশটা এখনো টিকে আছে। “
রায়হানের ফাইল খুব ভালোভাবে পাশ হয়ে গেল। দশ লাখ টাকার চেক বাবলু সাহেব রায়হানকে দিয়ে বলল, “আপনার বন্ধু দুদক অফিসার বলবেন না!”
রায়হান একটু হাসল কিছুই বলল না। চেকটা নিয়ে বের হয়ে আসল। বাইরে এসে রবিন বলল, “কী রে কাজ হল?”
“হ্যাঁ, দারুণ অভিনয় করেছিস দোস্ত।”
রবিন তৃপ্তির হাসি দিয়ে বলল, “এখন খাওয়া দোস্ত।”
রায়হান রবিনকে নিয়ে একটা রেস্টুরেন্টে আসল। দুইজন ভালো খাওয়া দাওয়া করল। অনেকদিন পরে দশলাখ টাকার চেকটা পাওয়া গেল। একটু ভালোই খাওয়া দাওয়া হলো।
রায়হান পরেরদিন ব্যাংকে গেল চেকটা নিয়ে জমা দিতে। খাম থেকে চেকটা বের করে ব্যাংক জমা রশিদ লিখতে গিয়ে দেখল চেকটা দুদক অফিসার রবিনের নামে! এই চেক কখনোই ভাঙান সম্ভব না!
রায়হান খামটা ভালো করে চেক করল, খামের ভিতরে একটা ছোটো কাগজ পাওয়া গেল তাতে লেখা, “একজন সরকারি অফিসার এত বোকা হয়!”