আমাদের চারপাশে বহু মানুষ আছে যারা চায় রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হোক আবার এমন অনেক দল, সমর্থক আছে যারা ইসলাম প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখায়। আবার অনেকের কাছে তাদের প্রিয় আলেম বা দলকে ক্ষমতায় বসানোই হল যেন ইসলাম প্রতিষ্ঠা। যদিও সে আলেম বা তার সমর্থকরা কুফর, বিদআত এমনকি ক্ষমতা পাওয়ার জন্য শিরক, তাগুতের সাথে সমাঝোতায়ও রাজি আছে!
আসলে আমাদের অনেকের অন্তরের আকাঙ্ক্ষা ইসলাম রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠা হোক কিন্তু কর্ম, চিন্তাধারা তার বিপরীত। সঠিক ইসলামী বিদ্যার্জন না করলে কিভাবে বুঝবো কোনটা ইসলাম কোনটা কুফর, কোনটা হালাল ও কোনটা হারাম।
কারা সত্যি ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে চায় আর কারা আবেগ ব্যবহার করে ক্ষমতা হাসিল করতে চায় সেজন্য তাদের ক্ষমতা হাসিলের লড়াইকে জেহাদ আ্যখায়িত করে, পবিত্র জেহাদের ভুল ব্যাখা করে। বহু যুবক এমন আছে – ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে চায় অথচ হারাম খেলা দেখে এমনকি ইসলামী সিরিয়াল ভেবে হারাম বাদ্যযন্ত্র ও নারীর মুখ দেখে আসক্ত অথচ এসব সিরিয়ালে দেখানো অনেক কিছু কুরআন, সুন্নাহর বিপরীত। কেউ এসব খেলা, সিরিয়ালের বিরোধিতা করলে উল্টো রেগে যায়। এখন যদি কোন ইসলামী নেতা বা খলিফা এসে এসব বন্ধ করে দেয় তারা কি তা মেনে নিবে না বিরোধিতা করবে!?
বহু যুবক এজন্যই হয়তো বিরোধিতা করবে খলিফা বা শাসক সিগারেট বিক্রি নিষিদ্ধ করায় কারণ তারা আসক্ত। আবার অনেক মুরুব্বি ও আলেমরা আপত্তি জানাবে জর্দা বন্ধ করায়। হয়তো অন্য কোন অজুহাত দেখিয়ে শাসকের বিরোধিতা করবে। বহু নারীরা সহশিক্ষা বন্ধ বা পর্দা অপরিহার্য করলে প্রতিবাদে হয়তো সড়ক অবরোধ করবে!!
বহুলোকেই এজন্য মুসলিম শাসকের বিরোধিতা করবে কারণ তার সালাত তার পছন্দনীয় আলেমের মতো হয় না। তারা যেসব আমলকে ইসলাম জেনে এসেছে, ইসলাম প্রতিষ্ঠার পর সেসব আমলকে বিদআত ঘোষণা করা হয়েছে! মুসলিম শাসক এসে যখন জাতীয়তাবাদের পতাকার বদলে ইসলামের পতাকা উড়াবে বহু চেতনাধারী বিরোধিতা করবে! মিডিয়ার বক্তব্য শুনে ওদের উগ্রবাদী ঘোষণা করবে।
যখন সুদের ব্যাংকগুলো বন্ধ করে দিবে- মুসলিমদের বড্ড সেকেলে এবং এরকম ইসলাম উন্নয়নের পথে বাধা হিসেবে ঘোষণা করবে। বহু চেতনার নামে মূর্তি, শহীদ মিনার বা ভন্ড পীরদের মাজার ভেঙ্গে ফেলা হবে তখন কি সবাই মেনে নিবে!?
আসলে যে ইসলাম বেশিরভাগ লোক প্রতিষ্ঠা করতে চায় তা ইসলামের মডারেট রূপমাত্র যা রসুল (সা:) ও খেলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাহর সাথে অনেকটা সাংঘর্ষিক।খলিফা কেন কোরাইশ হতে হবে(এই বিষয়ে পোস্ট আছে), খেলাফত ও রাজতন্ত্রের পার্থক্য কি কি আজ সুস্পষ্ট না অনেকের কাছে।
কেন আহলে বায়াতে-হুসাইন (রা:), ঈমাম যায়েদ (রা,), মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ(রা:) বিদ্রোহ করে শাহাদাত বরন করলেন, ও ঈমাম আবু হানিফা রহ, ঈমাম মালেক রহ তাদের সমর্থন,সাহায্য করায় জুলুম নির্যাতন সহ্য করতে হলো!?
জাতির কাছে সুস্পষ্ট তুলে ধরা হয়নি বরং রাজতন্ত্রের প্রশংসা করে বহু ইতিহাস প্রচার করা হয়।
অথচ একদিকে ঈমাম আবু হানিফা রহ, ঈমাম মালেক রহ:সহ ঈমামগনের প্রশংসা করেছে ও তাদের নিয়ে বাড়াবাড়ি করছে অনেকে আবার তারা খেলাফত,আহলে বায়াতের পক্ষে নিয়ে জালেম শাসকের বিরোধিতা করেছেন তা গোপন রাখা হচ্ছে।
জালেম শাসকের অর্থ, সম্পদ, পদ, নির্যাতনের ভয় তুচ্ছ করে হক্বের পথে অটল ছিলেন আর বর্তমানের তাদের ভক্ত ও অনুসারী দাবিদাররা রাজতন্ত্রের সমর্থনে ওয়াজ করছে।
কাফেররা তাদের বহু আদর্শ ইসলামের নামে আমাদের ভেতর ঢুকিয়ে দিয়েছে!
ইসলাম প্রতিষ্ঠা পাবে যেভাবে পূর্বেও হয়েছিল! কিন্তু সে ইসলাম কি আমরা চাই, সেই ইসলামের বিদ্যা কি আমরা অর্জন করেছি?
আমরা কি আজও ইসলামের মূল বিষয়গুলো বুঝেছি,জানাচ্ছি বা ইসলাম প্রতিষ্ঠার পথে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া কি হচ্ছে!