কিছু জোড়া শালিকের গল্প পর্ব ১
#কাপুরুষ
লেখিকা: #Lucky_Nova (কপি নিষেধ )
আধো আধো চোখদুটি পুরো খুলতে চেষ্টা করতেই তীব্র আলোর ঝলকানিতে চোখ বন্ধ হয়ে এলো ক্যান্ডেলের। আলোটা খোলা জালানা দিয়ে আসছে। সূর্যের প্রখর আলোকরশ্মি।
চোখ খোলার চেষ্টা করেও পারলো না ক্যান্ডেল।
প্রচন্ড মাথা ধরেছে। ছিড়ে যাচ্ছে একদম। ক্যান্ডেল ডান হাতটা চুলের মধ্যে ডুবিয়ে দিয়ে চোখ আর কপাল খিচে কুচকালো। তারপর সময় নিয়ে চোখ খুললো আস্তে আস্তে।
উপরের ছাই রঙের ছাদেরটা চোখের দৃষ্টিতে স্পষ্ট হতেই ক্যান্ডেলের টনক নড়লো। দ্রুত মাথা ঘুরিয়ে ঘরটার এদিক ওদিক দেখে নিতেই চমকে উঠলো ক্যান্ডেল।
‘এটা কোথায়?’
প্রশ্নটা মগজে খেলতেই নিজের দিকে লক্ষ্য করলো ক্যান্ডেল। সেকেন্ডের মধ্যেই বিস্ফোরিত হয়ে উঠলো মুখশ্রী। ভয়ে অন্তরাত্মা কেঁপে উঠলো ক্যান্ডেলের। উঠে বসলো সে ধড়ফড়িয়ে।
গায়ে শুধুমাত্র একটা চাদর তার। আর কিছুই নেই।
গায়ের জামা কাপড়? সেগুলো কোথায়?
ঠোঁট আপন শক্তিতে ফাঁকা হয়ে গেলো তার।
দম আটকে আসতে লাগলো।
“এক মিনিট! কাল আমি ছিলাম নাইট ক্লাবে। এক পেগ, দুই পেগ, তিন…অহ শীট! পুরো বোতল শেষ করেছিলাম কালকে! তারপর?” আঙুল গুনে স্বগতোক্তি করতে গিয়েই চোখ ছানাবড়া হয়ে গেলো ক্যান্ডেলের।
আতঙ্কিত চোখে আবার চোখ বুলিয়ে নিলো ঘরটায়।
ছিমছাম একটা ঘর। বেশ পরিপাটি করে সাজানো। সাদা পর্দা ঝুলানো খোলা জালানার পাশেই কাঠের খাট। খাট সোজা সামনে একটা কাঠের আলমারি। তার পাশে ড্রেসিং টেবিল। আর এক কোণায় একটা বাথরুম। দেখেই বোঝা যাচ্ছে এটা ফ্ল্যাট বাসা।
কিন্তু কার?
চিন্তা করতে করতে মেঝেতে চোখ পড়লো ক্যান্ডেলের। সাথে সাথে ধক করে উঠলো ওর বুক। ওর গায়ের লাল পার্টি ড্রেসসহ সবকিছু পড়ে আছে সেখানে।
আর কিছু বুঝতে বাকি রইলো না ক্যান্ডেলের। ওর নিজের উপর নিজের রাগ হচ্ছে প্রচুর। সাথে রাগ হচ্ছে অজানা সেই লোকের উপর সে ওর নেশাগ্রস্থ অবস্থার সুযোগ নিয়েছে। না জানে কোন কাপুরুষের বাচ্চা সে! জানোয়ার। অধমর্ণ।
দাঁত কিড়মিড়িয়ে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করলো ক্যান্ডেল। যদিও প্রচন্ড রাগ হচ্ছে ওর যা নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব। ততক্ষণ অসম্ভব যতক্ষণ এই কাপুরুষটাকে উচিত শিক্ষা না দেবে।
দেরি না করে দ্রুত চাদর জড়ানো অবস্থায় উঠে দাঁড়িয়ে নিজের কাপড় নিয়ে বাথরুমে ঢুকে গেল ক্যান্ডেল।
কয়েক সেকেন্ডের মাথায় বেরিয়ে এলো ড্রেস পরে।
মেঝে থেকে ফটাফট নিজের পার্স ব্যাগটা তুলে নিলো। রাগে মাথার শিরা দপদপ করছে। পারলে ওই কাপুরুষের গলায় ছুরিই বসাবে ক্যান্ডেল। আর ছুরি না বসালেও কথা তো শোনাবেই শোনাবে।
ফোঁসফাঁস করতে করতে বেরিয়ে এলো ক্যান্ডেল। শক্ত চোখে তাকালো আশেপাশে। সামনেই বড় ডায়নিং। একপাশে কিচেন আছে। আর ক্যান্ডেল সে রুম থেকে বেরিয়েছে সেই রুমের পাশে, কয়েক হাত দূরত্বে আরো দুইটা রুম। আর অপর পাশে আরো দুইটা। মোট পাঁচটা বলতে গেলে।
ঢাকা শহরে এমন একটা বড়সড় ফ্ল্যাট নিয়ে থাকা মানে ছেলে নিশ্চয় বড়লোক। সাথে ক্যান্ডেল এটাও ধরে নিয়েছে ছেলে একা থাকে। নাহলে রাতের বেলা মেয়ে মানুষ তুলে আনবে কী করে?
ক্যান্ডেলের মন মেজাজ খারাপ হচ্ছে প্রচুর। নির্লজ্জটা কোন রুমে লুকিয়ে আছে?
ক্যান্ডেল হন্তদন্ত করে এগিয়ে সব রুমে গুলোতে তল্লাশি চালালো।
নাহ্! নেই তো। একটাতেও নেই।
পালিয়েছে?
ক্যান্ডেলের মেজাজ এখন তুঙ্গে। শেষ রুমটা থেকে বেরিয়ে আসতেই চোখে পড়লো কাঙ্ক্ষিত সেই কাপুরুষকে। সেই মূহুর্তেই কিচেনের সামনে দাঁড়িয়েছে সে। হয়তো কিচেনেই ছিলো। এপ্রন পরে আছে সে। ক্যান্ডেলকে দেখে দৃষ্টি তীক্ষ্ণ হয়ে গেলো তার।
ক্যান্ডেল অগ্নি দৃষ্টিতে তাকালো।
দেখতে ভদ্র সভ্য শ্যামবর্ণ সুপুরুষ মনে হলেও ক্যান্ডেলের কাছে সে শ্যামবর্ণ কাপুরুষ।
“হু আর ইউ?” প্রশ্ন ছুড়লো সেই কাপুরুষ।
ব্যস, গেলো ক্যান্ডেলের রাগ সাত আসমানে চড়ে।
“কাপুরুষ কোথাকার! লজ্জা করে না? হু আর ইউ মানে? আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে এখন চিনতেই পারছিস না আমি কে? আমাকে সহজসরল ভেবে ভুল করেছিস। পুলিশকে জানাবো আমি যে তুই কী করেছিস আমার সাথে।” আঙুল তুলে শাসালো ক্যান্ডেল।
রাগে পুরো শরীর জ্বলে যাচ্ছে ক্যান্ডেলের। বুক ওঠানামা করছে অবিরত। অগ্নি দৃষ্টিতে সে তাকিয়ে আছে সামনের কাপুরুষের দিকে।
লোকটার মুখোভাবও শক্তপোক্ত হয়ে গেছে। তুইতোকারি আর গালাগালগুলো হজম হয় নি বোধ হয়।
ক্যান্ডেল দুইপা এগিয়ে তিরিক্ষি মেজাজে হাত উলটে নাড়িয়ে বলল,”এখন চুপ ক্যান? কথা নাই আর? বুলি শেষ? দেখে তো ভদ্র সভ্য পুরুষ মনে হয়। কিন্তু বাস্তবে তো আস্ত নির্লজ্জ! মেয়ে দেখলেই হলো তাই না!? আস্ত কাপুরুষ!”
ক্যান্ডেলের কথায় তার চোখের দৃষ্টিতে প্রবল রাগ প্রকাশ পেলেও মুখে সীমিত হাসলো সে। ব্যঙ্গাত্মক হাসি।
যা দেখে ক্যান্ডেল আরো ফুঁসে উঠলো। তবে কিছু বলতে যাওয়ার আগেই সেই কাপুরুষ বলে উঠলো, “সুযোগ নিয়েছি বলতে কী বুঝাতে চাচ্ছো?”
তেঁতে উঠলো ক্যান্ডেল। একে তো বেহায়ামি করে ন্যাকা সাজেচ্ছে তার উপর আবার তুমি করে কথা বলছে ইতরটা।
“বাস্টার্ড। অসভ্য। বেহায়া।” দাঁতেদাঁত চিপে খর্খরে গলায় শব্দগুলো উচ্চারণ করলো ক্যান্ডেল।
চোয়াল শক্ত হয়ে গেলো কাপুরুষ লোকটার।
ক্যান্ডেল গর্জে উঠে বলল, “বুঝতে পারছিস না কী মিন করেছি? কোন সাহসে আমাকে নিজের বিছানায় নিয়ে এসেছিস? আর কোন সাহসেই বা আমাকে ছুঁয়েছিস? কোন সাহসে?” চেঁচিয়ে উঠলো ক্যান্ডেল।
চোখে রাগের আভাস মিললেও মুখটা নির্লিপ্ত করে ফেললো সে।
তেরছাভাবে স্বগোতক্তি করে বলল, “Oh! You mean s*x!”
ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলো ক্যান্ডেল। ভেবেই অবাক হলো যে কতোটা নির্লজ্জ হলে এই শব্দটা এভাবে মুখে আওড়াতে পারে মানুষ!
অবশ্য এদের মতো কাপুরুষদের থেকে এসবই আশা করা যায়।
বেশ কিছু কড়া কথা শুনাতে প্রস্তুতি নিলো ক্যান্ডেল। কিন্তু তার আগেই সেই সুদর্শন কাপুরুষ বলে উঠলো, “I am a neat freak. আমি যার তার সাথে s*x করি না। আর রাস্তার মেয়েদের সাথে তো একদমই না।”
কিছুক্ষণের জন্য থম মেরে গেলো ক্যান্ডেল। এমন অপমানে মুখটা দেখার মতো হয়ে গেলো তার।
কাপুরুষটা খেয়াল করলো সেটা। ক্যান্ডেলকে উচিত জবাব দিতে পেরেছে তাই বাঁকা হাসি হাসলো সে। যদিও রাগটা এখনো পোষায় নি পুরোপুরি। কারণ বাহিরের একটা মেয়ে তাকে আজ অনেক কথা শুনিয়ে দিয়েছে।
তবে ক্যান্ডেল দমে যাবার পাত্রী নয়। সে চট করে নিজেকে সামলে নিয়ে বলে উঠলো, “রাস্তারলোক মনে হয় তুই-ই। রাস্তার ছেলেদের মতো কাজ করে আবার বলে যার তার সাথে *** করি না! আমার কাপড় চোপড় গুলো তো জিন ভূতে এসে খুলেছিলো তাই না?”
“রাস্তার মেয়েরা নিজেই আসে। নিজেই খোলে। see! কে রাস্তার?! আমি না তুমি?” বলেই হাতের ইশারায় ক্যান্ডেলের উপর থেকে নিচ অব্দি ইশারা করলো কাপুরুষ লোকটা।
দাঁতেদাঁত চিপে হাত মুষ্টিবদ্ধ করলো ক্যান্ডেল।
বুকের কাছে হাত গুজে লোকটা দাম্ভিকতার সাথে বলল, “You can go and check CCTV footage. তারপর পুলিশ কেন? যাকে ইচ্ছা ডাকো। তবে কেসটা কে খাবে সেটাই দেখার বিষয় হবে তখন। I will be waiting. But for now, get the hell out of my sight.”
পুরো শরীরে আগুন জ্বলে উঠলো ক্যান্ডেলের। এতো অপমান! এতো অসভ্যতা! এর জবাব যে সুদে-আসলে ফিরিয়ে দিতেই হবে।
“দেখা যাবে কে রাস্তার আর কে না!” তীব্র আক্রোশ নিয়ে বলল ক্যান্ডেল।
“সিওর।” বলেই সে তূরী বাজিয়ে হাতের ইশারায় দরজা দেখিয়ে দিলো। অর্থাৎ ‘বেরিয়ে যাও’।
রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করে ধুপধাপ পা ফেলে বেরিয়ে এলো ক্যান্ডেল। কয়েক পা এগিয়ে যেতেই সশব্দে দরজাটা বন্ধ করার আওয়াজ এলো কানে।
দাঁত কিড়মিড়িয়ে ঘুরে তাকালো ক্যান্ডেল। রাগে নিজের হাতের পার্সটা ছুড়ে মারতে চাইলো ওই দরজায়। কিন্তু মারলো না।
এই কাপুরুষের অসভ্যতার উচিত জবাব দেবে ক্যান্ডেল। এজন্যই প্রথমে সিসিটিভি ভিডিও চেক করবে। নিজের সম্মানের যা হয় হোক। তাও এই কাপুরুষটাকে সে জেলে ঢুকিয়েই ছাড়বে।
দেরি না করে হন্তদন্ত করে লিফটে উঠলো ক্যান্ডেল।
সরাসরি রিসিপশনে গিয়ে ফুটেজ চেক করার কথা জানালো। যদিও তারা প্রথমে রাজি হচ্ছিলো না কিন্তু পরে তাদের নামেও মানহানির মামলা দেওয়ার ভয় দেখিয়ে রাজি করালো ক্যান্ডেল। ফলতঃ বাধ্য হয়ে রাজি হতেই হলো তাদের।
গতরাতের ভিডিও চালু করে দিলো তারা। ক্যান্ডেল বসলো কম্পিউটার স্ক্রিনের সামনে। ভিডিও টেনে টেনে কাঙ্ক্ষিত সময়টায় আনতেই নড়েচড়ে বসলো ক্যান্ডেল। চোখ মুখে আত্মবিশ্বাস আর অহংকার নিয়ে দেখতে শুরু করলো ভিডিও।
কিন্তু মুখের রঙটা সময়ের সাথে সাথে বিবর্ণ হয়ে যেতে লাগলো ক্যান্ডেলের। একপর্যায়ে বাংলার পাঁচের মতো রূপ ধারণ করলো তার বদনখানা। পিছনে না তাকিয়েও ক্যান্ডেল বুঝলো যে তার পিছনে থাকা সিকিউরিটি গার্ড আর রিসিপশনিস্ট ঠোঁটে ঠোঁট চিপে হাসছে।
লজ্জায়, অপমানে গাল লাল হয়ে গেলো ক্যান্ডেলের। ঠিক সেই মূহুর্তেই ভিডিওতে ঘটে যাওয়া একটা ঘটনা দেখে থমকে গেলো ক্যান্ডেল। পায়ের নিচের মাটি সরে গেলো যেন। এখন গলায় দড়ি দিলেও হয়তো পোষাবে না।
.
বারদুয়েক কলিং বেল বাজিয়ে দরজার পাশ ঘেঁষে দাঁড়ালো জয়িতা। এক হাতে কাপড়ের ব্যাগ ধরে রেখে অন্য হাতে শাড়ির আঁচল দিয়ে ঘামার্ত মুখ মুছে নিলো সে। গরম লাগছে প্রচুর। যার জন্য দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থাকতেও বিরক্ত লাগছে। এসি রুম, এসি গাড়ি ব্যবহার করতে করতে যা হয় আরকি!
মুখ দিয়ে ‘তিক’ করে বিরক্তি সূচক শব্দ বের করলো জয়িতা।
মিনিট খানেক অপেক্ষার পর দরজা খুলে গেলো।
“এতো সময় লাগে?”
“মাত্র তো এক মিনিটও হয় নি!”
“হয়ে আরো বেশি।” চোখ পাকালো জয়িতা। গটগট করে ঢুকে পড়লো ঘরে। ব্যাগ থেকে টিফিন বক্সগুলো বের করে ডায়নিং টেবিলের উপর রাখতে রাখতে বলল, “তোমার মা থাকে চিন্তায়। কী যে পাও একা একা থেকে! রান্নাও করা লাগে তোমার নিজের। খাওয়াদাওয়া ঠিকঠাক হয় না। সেই তো আমাদেরই ছুটে ছুটে আসা লাগে!”
“আমি কী আসতে বলি?” দরজা আটকাতে আটকাতে ভাবলেশহীন ভাবে বলল ইভান।
“সেই! আমদেরই যত টেনশন। এজন্যই আসি।” সরু চোখে তাকিয়ে বলল জয়িতা।
ইভান কথা বাড়ালো না। নিজের রুমে চলে গেলো সরাসরি। যতবার আসবে এসব নিয়ে বউদি আর মা কথা তুলবেই। এক কথা বার বার ভালো লাগে না। আর এমনিই একটা ম্যানারলেস মেয়ে মেজাজটা বিগড়ে দিয়ে গেছে একটু আগে। গতরাতেরও কম অপমান সহ্য করতে হয় নি। মেজাজ ভালো করার জন্য এখন কিছু করা দরকার। হয়তো গেম খেললে ভালো লাগবে।
ইভান বসে পড়লো পিসির সামনে।
তার বউদি এসেছে মানে একবারে ঘরদোর ঝেড়ে মুছে তবেই যাবে। সপ্তাহে একবার মা নাহলে বৌদি আসেই। ইভান পইপই করে বলেছে দরকার নেই। তাও তারা আসবেই।
বাসা থেকে অফিস অনেক দূরে হয়ে যায়। এজন্যই এই ফ্ল্যাটে থাকা। তাছাড়া অফিস থেকে ফ্রিতে থাকার জন্য এই ফ্ল্যাটটা দিয়েই দিয়েছে। শুধু রান্নাটাই কষ্ট করে করতে হয়। যদিও সে পারে মোটামুটি সব। মাংস আর মাছ প্রতি সপ্তাহে বাসা থেকেই দিয়ে যায়। আর কী লাগে?
আর তাছাড়া এমনিও সে একা থাকতে পছন্দ করে। ভালো লাগে তার।
দুপুর গড়াতেই ইভান ডায়নিংয়ে চলে গেলো। খাবার দাবার টেবিলে সাজিয়েই রাখা।
ইভান হাত ধুয়ে এসে চেয়ার টেনে বের করতে করতে জয়িতাকে উদ্দেশ্য করে বলল, “তুমি খাবা না?”
জয়িতা একটু দূরে দাঁড়িয়ে কোমরের পিছনে এক হাত গুজে ইভানের দিকে তাকিয়ে আছে। কেমন কটাক্ষ করে চেয়ে আছে যেন।
দেখে ইভান ভ্রু উঁচু করে নামালো,”কী?”
জয়িতা মুখে কিছুই বলছে না দেখে ভ্রু কুচকে ফেললো ইভান। জগটা হাতে নিয়ে গ্লাসে জল ঢালায় মনোযোগ দিয়ে বলল,”কী? কিছু হয়েছে?”
“প্রেম করছো ঠাকুরপো?” ঘাড় নাড়িয়ে কটাক্ষের চোখে সরাসরি প্রশ্ন করলো জয়িতা।
ইভান একবার সংকুচিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আবার পানি ঢালায় মনোযোগ দিলো। এই প্রশ্নটা মা আর বউদি মিলে এ পর্যন্ত কয়েক লক্ষবার করেছে হিসেব নেই।
বরাবরের মতোই নির্লিপ্ত কণ্ঠে উওর দিলো সে,”না।”
জয়িতা কোমড়ের পিছনে লুকিয়ে রাখা হাতটা সামনে আনলো এবার। মেয়েদের অতিব গোপনীয় একটা জিনিস মেলে ধরে ব্যঙ্গ করে বলল, “বলো না যে এটা তোমার, ঠাকুরপো?!”
সদ্য গ্লাসটা হাতে নিয়ে পানি খেতে যাচ্ছিলো ইভান। কিন্তু পানি আর খাওয়া হলো না। জয়িতার হাতের দিকে চোখ পড়তেই গ্লাসটা মুখ অব্দি এনেও হালকা নামিয়ে নিলো। মুখটা গম্ভীর হয়ে গেলো পলকেই।
পেয়ে বসলো জয়িতা।
চোখ মুখ পাকিয়ে বলল, “কী হলো? বলো এটা কার?”
মুখ ফুলিয়ে নিঃশ্বাস ফেললো ইভান। চোখমুখে প্রচন্ড বিরক্তি ভাব।
“তোমায় ভালো ভেবেছিলাম। এজন্যই এখানে থাকো? বিয়ের আগেই…!”
“অসম্ভব। ভুল ভাবছো তুমি।” জয়িতার কথার মাঝেই আগ্রাসী উওর দিয়ে শব্দ করে গ্লাসটা টেবিলে নামিয়ে রাখলো ইভান।
“তো এটা কী ঠাকুরপো?” হাতের জিনিসটা নাড়িয়ে বলল জয়িতা।
ইভান মুখ দিয়ে আবার নিঃশ্বাস ফেললো। চোখ মুখে অস্বস্তি দৃশ্যমান। সে ভাবতেও পারে নি ওই মেয়েটা এমন একটা জিনিস ফেলে যাবে। নাকি ইচ্ছে করেই রেখে গেছে কে জানে?
ওর বউদি যা মানুষ কাহিনী না বের করে ছাড়বে না। মহা ঝামেলার এক মানুষ। কিন্তু এই মানুষটাকে সে নিজের বোনের মতোই ভালোবাসে। যদিও প্রকাশ্যে কখনই সেটা বুঝতে দেয় না।
“মাকে বলবো?” চোখ পাকিয়ে বলল জয়িতা।
ইভান অস্বস্তিতে চোখ বন্ধ করে খুললো। সব জানাতেই হবে বউদিকে। নাহলে মাকে বললে মা অন্যকিছুই ভেবে বসবে।
চেয়ার টেনে বসলো ইভান। থমথমে গলায় বলল, “বসো, বলছি সব।”
বলতে দেরি জয়িতার ছুটে এসে বসতে দেরি নয়। চেয়ার টেনে মুখোমুখি বসে পড়েছে সে। খুব উৎসুক সব জানার জন্য। (লেখিকা-লাকি নোভা)
রাত সাড়ে দশটা কী এগারোটা। ইভান প্রজেক্টের কাজ শেষ করে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। সবে শুয়েছিল সে। সেই মুহুর্তে ধরাম ধরাম করে দরজায় করাঘাত শুরু করে দিলো কেউ। কলিং বেল থাকতেও এভাবে দরজা ধাক্কাধাক্কি অবশ্যই কোনো ভদ্র মানুষ করবে না। তাও আবার এতো রাতে।
চরম বিরক্ত হলো ইভান। সাদা একটা শার্ট হাতে তুলে নিয়ে গায়ে জড়াতে জড়াতে হেঁটে বেরিয়ে এসে চোখ রাখলো লুকিং গ্লাসে।
একটা মেয়ে দাঁড়ানো৷ গায়ে হাঁটু অব্দি লাল রঙের একটা পার্টি ড্রেস। বাম হাতে পার্স ব্যাগের ফিতা ধরে অন্যহাত দিয়ে দরজা ধাক্কাচ্ছে। মাথা ঝুঁকে রাখায় চেহারার সামনে তার বাদামিবর্ণের চুলগুলো এসে ভিড়েছে বলে মুখ দৃশ্যমান নয়। কিছুটা হরর সিনেমার ভূতেদের মতো দেখতে লাগছে।
শার্টের বোতাম আটকাতে গিয়েও আটকালো না ইভান। দরজার পাশে হাত রেখে তাকিয়ে রইলো লুকিং গ্লাসে। অবাক হচ্ছে সাথে বিরক্তও হচ্ছে। এতো রাতে এই মেয়ে এখানে কী চায়?
ইভানের ভাবনার ছেদ পড়লো মেয়েটার দরজায় করাঘাতে। হাত দিয়ে এমনকি পা দিয়েও দরজাটা ধাক্কাধাক্কি করছে সে।
“ওই দরজা খোল। পিয়াসের বাচ্চা। অসভ্য। @##@#। আমার সাথে চিটিং? সালা ##@#। তোকে পুলিশে দেবো আমি।” কতোগুলো গালিসহ কথাগুলো জড়ানো গলায় বলল ক্যান্ডেল। সোজা হয়ে দাঁড়াতেও পারছে না সে।
ইভান দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেললো। বুঝে গেলো যে এই মেয়ে মদ খেয়ে ভুল জায়গায় এসে ভুল প্রলাপ বকছে। অর্থাৎ মাতলামো করছে।
ক্যান্ডেল আরো কয়েকবার দরজায় করাঘাত করতেই ইভান বাধ্য হয়ে দরজা খুললো। এক হাত দরজায় অন্যহাত দেয়ালে ঠেকিয়ে সরু দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,”এটা কোনো পিয়াসের বাসা নয়। অন্য কোথাও গিয়ে মাতলামি করুন।”
ক্যান্ডেল পুরুষালি আওয়াজ পেয়ে মুখ উঁচিয়ে চোখ পিটপিটিয়ে তাকানোর চেষ্টা করলো। মুখ উঁচু করায় চেহারার সামনের চুলগুলো একটু সরে যেতেই ইভানের চোখে পড়লো এক আদুরে বাচ্চাসুলভ মুখশ্রী। নিষ্পাপ, বিশুদ্ধ। কিন্তু ড্রেস-আপ আর মাতলামো দেখে মনে হচ্ছে বড়লোকের গোল্লায় যাওয়া মেয়ে।
ক্যান্ডেল কয়েক সেকেন্ড শান্ত চোখে ইভানকে দেখতে চেষ্টা করতে লাগলো। আসলে নেশা করার কারণে ঝাপসা লাগছে সবকিছু।(লেখিকা-Lucky_Nova)
ইভান ভ্রু কিঞ্চিৎ কুচকে পরবর্তী শব্দ উচ্চারণের আগেই ক্যান্ডেল ঝাঁপিয়ে পড়লো ওর বুকে। শার্টের বোতামগুলো খোলা থাকায় ক্যান্ডেল পুরো মিশে গেলো ইভানের খালি বুকের সাথে।
হতবিহ্বল হয়ে গেলো ইভান। অস্বস্তিতে পরে গেলো ভীষণভাবে। রুষ্টভাবাপন্ন হয়ে ক্যান্ডেলকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে বলল, “অসভ্যতার জায়গা পান না?”
“না, পাই না। আজ তোমাকে খেয়েই ফেলবো আমি।”
চোয়াল শক্ত হয়ে গেলো ইভানের। এমনভাবে খোলা দরজার সামনে একটা ছেলেমেয়ের জড়াজড়ি অবশ্যই কেউ ভালো নজরে দেখবে না। যদিও এই ফ্লোরের বাকিরা সবাই নিজ নিজ ফ্ল্যাটের ভিতরে। এতো রাতে সবাই ঘুমের প্রস্তুতি নিচ্ছে হয়তো। তাও বলা যায় না।
“সরে দাঁড়ান। গার্ডসদের ডাকতে বাধ্য করবেন না।” বলে ক্যান্ডেলকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতেই ক্যান্ডেল ইভানের বুকে সজোরে এক কামড় বসালো।
আচমকা এমন আক্রমণে আর্তনাদ করে উঠলো ইভান।
জড়িয়ে ধরেই হেসে উঠলো ক্যান্ডেল।
মেজাজ তুঙ্গে উঠে গেল ইভানের।
“Are you crazy? Let go.” ধমকে উঠলো ইভান।
ক্যান্ডেল নাসূচক মাথা নেড়ে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো ইভানকে।
বিস্ময়ের চরম পর্যায়ে চলে গেলো ইভান। এর সাথে রাগের মাত্রাটাও বাড়ছে। গা ঘেঁষাঘেঁষি করা মেয়েদের ইভানের খুবই অসহ্য লাগে। সেখানে এক সম্পূর্ণ অচেনা অজানা মেয়ে তাকে এভাবে জড়িয়ে ধরে আছে। সাথে এমন আচরণও করছে।
একপ্রকার ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে গেলো দুজনের মধ্যে। একজন ছাড়াতে চায় আরেকজন শক্ত করে ধরে রাখতে চায়। পাল্লা চলছে। দুজনেই হারতে নারাজ। এদিকে তাদের ধস্তাধস্তির সময় করা ধমকাধমকি আর চেঁচামেচিতে পাশাপাশি থাকা ফ্ল্যাটগুলো থেকে কয়েকজন মধ্যবয়সী পুরুষ মহিলা ইতিমধ্যে বেরিয়ে এসেছে। আর বের হয়েই এভাবে আধখোলা শার্টের একটা পুরুষের সাথে কোনো রমনীকে ওভাবে জড়িয়ে ধরা অবস্থায় দেখে সবাই যে যার মতো সব ভেবে নিয়ে অবাক হচ্ছে বা নাক সিটকাচ্ছে। তাদের মুখোভাব আর অঙ্গভঙ্গি বলেই দিচ্ছে যে তারা ইভানকেই চরিত্রহীন ভাবছে।
নাহলে এতো রাতে একটা মেয়ের সাথে এসব করবে কেনো?
ইভান ভালোই অপ্রস্তুত হয়ে গেলো তাদের হাবভাব দেখে। যদিও দোষ তার নয়। তবে যার দোষ তার আশপাশ সমন্ধে এই মূহুর্তে কোনো ধ্যানজ্ঞানই নেই। সে তার মতো জড়িয়ে ধরে মুখ গুজে আছে।
আসলে এমনই হয়। যেখানে দোষ হয় মেয়েদের সেখানে ফেঁসে যায় ছেলেরা আর যেখানে দোষ ছেলেদের সেখানে ফাঁসে মেয়েরা। অদ্ভুত দুনিয়া।
“ঘরের বিষয় ঘরে মিটালেই তো পারেন।” বলল এক যুবক।
“আর ঘর! এসবকে কেচ্ছা বলে।” বলেই এক বয়স্ক মহিলা নাক সিটকালেন।
লজ্জায় অপমান ইভান দরজা বন্ধ করে দিলো সশব্দে। এমন ঝামেলা জানলে ইভান দরজাই খুলতো না জীবনেও।
“তোমার কী বিন্দুমাত্র লজ্জাশরম নেই? ছাড়তে বলেছি আমি।” কটমট স্বরে বলল ইভান।ক্যান্ডেল এতোক্ষণে ছেড়ে দাঁড়ালো। তার দৃষ্টি মেঝেতে নত। হুশজ্ঞান আছে বলে মনে হয় না।
মেয়েটা ছেড়ে দিয়েছে বলে হাঁফ ছাড়লো ইভান। রাগে মুখটা এখনো থমথমে তার।
ক্যান্ডেল বোকার মতো মেঝের এদিক ওদিক চোখ বুলিয়ে দ্রুতপদে এগিয়ে গেলো সামনের একটা রুমের দিকে।
হতবুদ্ধি হয়ে কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে থেকে ইভানও ওর পিছু পিছু ছুটলো।
“হেই! আজব তো। বের হতে বলেছি আমি আমার বাসা থেকে!”
ক্যান্ডেল এগিয়ে গিয়ে ধরাম করে শুয়ে পড়লো সেই রুমের বিছানায়।
হা হয়ে গেলো ইভান। একহাত কোমড়ে রেখে অন্যহাত নিজের চুলের মধ্যে চালিয়ে তীব্র বিরক্তিতে মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস ফেললো।
তারপর হাতের তর্জনী তুলে দরজার দিকে ইশারা করে জোর গলায় বলল,”গেট আউট।”
ক্যান্ডেলের নড়চড় নেই। সে চোখ বন্ধ করে আছে। ড্রেসটা হাঁটু থেকে আরেকটু উপরে উঠে এসেছে। চোখমুখে ছিটকে পড়ে আছে চুলগুলো। ঘরটা অন্ধকার হলেও ডায়নিং থেকে আলোর ঝলক এই রুমের দরজা ভেদ করে ঢোকার আবছাভাবে সব দৃশ্যমান।
ইভান বিরক্ত হয়ে এগিয়ে ক্যান্ডেলকে বাহু ধরে উঠানোর চেষ্টা করে বলল,”গেট আপ এন্ড গেট আউট।”
ক্যান্ডেল হাত ঘুরিয়ে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে ইভানের কলার ধরে টান দিলো।
ফলে ঝু্ঁকে এসে ক্যান্ডেলের দুপাশে হাত রাখতে হলো ইভানকে। শক্তপোক্ত মুখটা বিস্ময়ে ভয়ে গেলো তার।
তবে সেকেন্ডের মধ্যে দ্রুত নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে উঠে দাঁড়ালো ইভান। ক্যান্ডেল হেসে উঠলো খিলখিলিয়ে। যা দেখে ভ্রুকুটি করে চোখ পাকালো ইভান।
ক্যান্ডেল পাত্তা দিলো না। আসলে সে এসবে পাত্তা দেওয়ার অবস্থাতে নেই বলতে গেলে।
ক্যান্ডেল হেলেদুলে উঠে বসলো। ভ্রু বাঁকিয়ে ঠোঁট উলটে কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে রইলো মেঝের দিকে। এমন এলিয়েন টাইপ ব্যবহার দেখে ইভান সন্দিহান চোখে তাকালো। কিছু বলতে যাওয়ার আগেই ক্যান্ডেল নিজের জামা কাধ বরাবর টানতেই পিঠের চেইন খুলে গেলো শব্দ করে। জামাও নেমে এলো কাধ থেকে।
চোখ ছানাবড়া হয়ে গেলো ইভানের। দ্রুতো এগিয়ে ক্যান্ডেলের দুইহাত ধরে থামিয়ে ধমকে উঠলো, “এখনি বের হও। কোনো রকমের অসভ্যতা সহ্য করবো না আমি। তাই ভালোই ভালোয় বের হও।”
ক্যান্ডেল অবুঝের মতো সরু চোখের চেয়ে বোঝার চেষ্টা করতে লাগলো। চোখ পিটপিটিয়ে তাকালো ইভানের মুখের দিকে। এমন অদ্ভুত চাহনিতে ক্যান্ডলকে তাকিয়ে থাকতে দেখে খানিকটা দমে গেলো ইভান। তবে কয়েক সেকেন্ডের মাথায় দৃষ্টি তীক্ষ্ণ করলো। ক্যান্ডেলের দৃষ্টি ইভানের পুরো মুখ জুড়ে বিচরণ করছে ততক্ষণে।
আচমকা ইভানকে হতবাক করে দিয়ে একটা কাজ করে বসলো ক্যান্ডেল। সেকেন্ডের মাথায় তড়িৎ বেগে ছিটকে সরে গেলো ইভান। বাকরুদ্ধ হয়ে গেলো কিছু সময়ের জন্য।
কিন্তু ক্যান্ডেলের হাবভাবে পরিবর্তন দেখা গেলো না। সে ঝিমানো চোখ ঠোঁট উলটে সামনের দিকে তাকিয়ে রইলো।
ইভান এবার মেয়েটাকে বেশ কয়েকটা কথা শুনিয়ে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করবে ভাবলো। কিন্তু তা আর হয়ে উঠলো না। কারণ তার আগেই ক্যান্ডেল পুনরায় নিজের পোশাক খুলতে শুরু করলো। আরেকদফা চমকে উঠলো ইভান। কালবিলম্ব না করে দাঁতেদাঁত চিপে বেরিয়ে গেলো ওই রুম থেকে। সোজা নিজের ঘরে গিয়ে বন্ধ করে দিলো দরজা।
সব শুনে হেসেই লুটোপুটি খাচ্ছে জয়িতা। পারলে এবার মেঝেতেই লুটিয়ে পড়ে সে।
ইভান ছোটছোট চোখ করে তাকিয়ে রইলো জয়িতার দিকে। কামড় বসানোসহ আরো দুইটা বিষয় ইভান লুকিয়ে গেলো জয়িতার থেকে। সেগুলো বলাটা ঠিক হবে না ভেবেই লুকিয়ে গেলো। এমনি এটুকুতেই জয়িতা ওকে জ্বালিয়ে মারবে।
“মেয়ের তেজ আছে বলতে হবে! আর তুমিও পারো! এভাবে অপমান করে দিলা?” হো হো করে হেসে উঠলো জয়িতা।
“সব বলেছি। এখন দয়া করে এসব মাকে বলো না।” ভরাট গলায় বলল ইভান।
জয়িতা তখনো হেসেই কুটিকুটি। ভারি মজা পেয়েছে সে৷
“ভাবো তোমার সাথে ওই মেয়ের বিয়ে হলে কেমন হবে?” বলেই হাসতে লাগলো জয়িতা।
“হোয়াট ননসেন্স!” চোখমুখ বাজেভাবে কুচকে ফেললো ইভান।
(চলবে…)
লেখিকা লাকি নোভা
সম্পূর্ণ গল্পের লিংক একসাথে