কিছু জোড়া শালিকের গল্প পর্ব ২৫
: #নতুন_সূচনা
লেখিকা : #Lucky_Nova(কপি নিষেধ)
দুই সপ্তাহ পরের বিয়ে যখন হুট করে এগিয়ে আনা হয় তখন বোধহয় এমন হুলুস্থুল অবস্থাই হয়।
অবশ্য বিয়ে এগিয়ে আনার পিছনেও যথার্থ কারণ আছে ইশারার। তার মনে হয় ইভান যেকোনো সময়ে ‘বিয়ে করবো না’ বলে বেঁকে বসতে পারে।
এতোদিন বলে কয়ে যেহেতু রাজি করাতে পারেন নি, তাই এখন যেহেতু রাজি হয়েছে সেহেতু কোনোরকম রিস্ক না নেওয়াই ভালো। এজন্যই জলদি বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
যার বিয়ে তাকেও এ বিষয়ে কিছু জানান নি। জরুরি দরকারে ভোর বেলায় বাসায় ডেকে নিয়ে এসে বিয়ের জন্য রেডি হতে বলে দিয়েছেন।
ইভান অবশ্য দ্বিরুক্তি করতে চেয়েছিল কিন্তু তিনি বলেছেন সবাইকে জানানো হয়ে গেছে। এমনকি সবাই এসেও পড়বে। সবাই বলতে গুটিকয়েক কাছের আত্মীয়স্বজন।
বাধ্য হয়ে মানতেই হয়েছে ইভানকে। এছাড়া আর উপায়ও ছিল না।
তবে বিয়ে এতোটা এগিয়ে আনায় যে সে একা অবাক হয়েছে এমন নয়। ক্যান্ডেলও হয়েছে। এমন অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে বিয়ে এগিয়ে আসায় বেশ ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেছে ও।
ও তো এটাই বুঝতে পারছে না যে বিয়েটা এতো জলদি এগিয়ে আনার কারণ কী! নাকি ইভানই বিয়ে করার জন্য পাগল হয়ে গেছে! কিন্তু ভাব তো এমন যেন বিয়ে নিয়ে তার কোনো মাথাব্যথাই নেই!
সে কি নাটক করছে তাহলে?
“কিরে! কী এতো ভাবছিস তুই বল তো?” মায়ের ডাকে হুঁশ ফিরলো ক্যান্ডেলের।
চকিতে তাকাতেই বিরক্তিমাখা কণ্ঠে তাড়া দিয়ে বললেন, “গাড়িতে বসে থাকবি! নামবি না? দেরি হচ্ছে তো!”
ক্যান্ডেল ব্যগ্র চোখে তাকালো মায়ের মুখপানে।
কোলের উপরের সাদা গাউনের অংশটা মুঠোয় চেপে ধরে অনুনয়ী চাহনিতে বলল, “এতো তাড়াতাড়ি কেন বিয়ে দিচ্ছো আমাকে? আরেকটু অপেক্ষা করা যেত না?”
মেয়ের কথায় ভ্রু কুচকালেন ক্যাথি। কাল হতে কয়েকশো বার এই এক প্রশ্ন নানাভাবে করেই চলেছে ক্যান্ডেল।
প্রথম কয়েকবার শান্তভাবে বুঝিয়ে বলেছেনও তিনি। কিন্তু তারপরও ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে একই প্রশ্ন বারবার শুনতে শুনতে রীতিমতো অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন।
“না, আর অপেক্ষা করা যেতো না। এখন এসব না বলে চুপচাপ নেমে আয়। দেরি করলে বিয়েই হবে না দেখিস।” চোখ রাঙালেন তিনি।
ক্যান্ডেল মুখটা করুণ করলো। ঢিমে স্বরে বলল, “না হোক। কয়েকদিন পরে করি না!”
ধৈর্যের সীমা লঙ্ঘন হলো তার। খরখরে গলায় মেয়েকে শাসিয়ে বললেন, “মার খাবি তুই? বাচ্চাদের মতো শুরু করেছিস! নাম জলদি।”
ক্যান্ডেল আরো কিছু বলতে চাচ্ছিলো। কিন্তু তার আগেই জয়িতা এসে হাজির হলো সেখানে।
জিজ্ঞাসুক দৃষ্টিতে চেয়ে বলল, “কিছু হয়েছে?”
“আর বলিস না! বাচ্চামি করছে। নামতে বল তো ওকে।” আহাজারি করে বললেন ক্যাথি।
জয়িতা অবাক চোখে তাকালো ক্যান্ডেলের দিকে। ওর বিব্রতকর ভঙ্গি দেখে হাসলো মৃদুভাবে। ঝুঁকে গিয়ে ক্যান্ডেলের হাত ধরে অভয় দিয়ে বলল, “বুঝেছি। বিয়ের আগে সবারই এমন নার্ভাস লাগে। পরে ঠিক হয়ে যাবে। দেখি, আসো।”
ক্যান্ডেল শুকনো মুখে একঝলক তাকালো মায়ের দিকে। তিনিও নীরব চোখের চাহনিতে ভর্ৎসনা করতেই আর রা করতে পারলো না ও। অগত্যা নামতে হলো জয়িতার হাত ধরে।
এগিয়ে গিয়ে চার্চের দরজার সামনে দাঁড়াতেই গাউনটা ঠিকঠাক করে গুছিয়ে দিলেন ক্যাথি স্র জয়িতা।
সোহান রয় নিজের মেয়ের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন ততক্ষণে। মেয়ের দিকে মুগ্ধতা মাখা দৃষ্টিতে তাকিয়ে স্বগতোক্তি করে বললেন, “বারবি ডল লাগছে একদম।”
ক্যান্ডেল মৃদু হাসলো।
সোহান মেয়ের দুইগাল হাতের মাঝে নিয়ে পরম যত্নে চুমু খেলেন কপালে। অতঃপর মাথার উপরের পাতলা সাদা ওড়নার এক অংশ দিয়ে ঢেকে দিলেন মুখটা। নিজের ডান হাতটা ক্যান্ডেলের উদ্দেশ্যে বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, “Let’s go.”
ক্যান্ডেল কয়েক মুহূর্ত তাকালো বাড়িয়ে রাখা হাতের দিকে। তারপর আলগোছে লম্বা শ্বাস নিয়ে আলতো করে বা হাতটা রাখলো হাতটার উপরে।
সোহান প্রশস্ত হাসলেন। ক্যান্ডেলকে নিয়ে ধীর পায়ে এগিয়ে যেতে লাগলেন ভেতরে।
প্রতিটা পদক্ষেপের সাথে সাথে হৃদস্পন্দন বাড়তে লাগলো ক্যান্ডেলের। বিনা কারণেই এলোমেলো দৃষ্টিতে একবার চোখ তুলে সামনে তাকাতেই পাতলা আবরণীর মধ্যে থেকেই ইভানের গাম্ভীর্যে ভরা দৃষ্টির সাথে চোখাচোখি হয়ে গেল। সঙ্গে সঙ্গেই যেন অদ্ভুত এক আড়ষ্টভাব আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরলো ওকে। চট করে দৃষ্টি নামিয়ে নিলো ও। আর তাকালো না।
বেদীর সামনের জায়টায় এসে থামলেন সোহান। ইভানের দিকে মুক্ত চাহনিতে চেয়ে ভরসার মৃদু হাসিসমেত মেয়ের হাতটা বাড়িয়ে দিলেন ওর দিকে।
ইভান সুক্ষ্ণ এক লাজুক হাসির সাথে হাতটা ধরলো। এটুকু স্পর্শেই যেন ভেতরে ভেতরে চমকে উঠলো ক্যান্ডেল। অজানা কারণেই বারকয়েক ঢোক গিলে গলা ভিজালো ও। সামান্য পদক্ষেপে সামনাসামনি দাঁড়ানোর সময় কিছুতে বেধে পড়ে যাবার উপক্রম হতেই অন্যহাতে ওর বাহু আগলে ধরলো ইভান।
অপ্রস্তুত হয়ে তাকালো ক্যান্ডেল৷ চোখে চোখ পড়তেই দ্রুত ঠিক হয়ে দাঁড়ালো ক্যান্ডেল।
উপস্থিত সবাই প্রথমে চমকে গেলেও পরমুহূর্তে মিটমিটিয়ে হাসতে লাগলো।
ক্যান্ডেল আর মাথা তুললো না। সবার সামনে এভাবে হোঁচট খাওয়ায় লজ্জায় শিয়র অবনত করে রইলো ও।
বিয়ে পড়ানো শুরু হলো করলেন যাজক।
নীল বলাকওয়া ছাড়াই ধপ করে পাশে এসে বসে পড়তেই চমকে গেল ত্রয়ী। পাতলা লাল ওড়না দিয়ে গলা অব্দি টানা ঘোমটার আড়াল থেকে বড়ো বড়ো চোখের দৃষ্টি মেলে তাকালো ও।
নীল প্রশস্ত হেসে মাদকতা মেশানো চাহনিতে চাইতেই লাজুক ভঙ্গিতে তড়িঘড়ি করে চোখ নামালো ত্রয়ী।
নীল হালকা ঝুঁকে ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে ফিসফিসিয়ে বলল, “খুব সুন্দর লাগছে তোমাকে।”
সামান্য এই উক্তিতে সারা শরীর লজ্জায় শিরশির করে উঠলো ত্রয়ীর।
কিছুক্ষণ নতমুখী হয়েই চুপচাপ বসে রইলো ও। তারপর হঠাৎ করেই ঘাড় ফিরিয়ে অন্যত্র তাকালো।ইতস্তত করে বিড়বিড়িয়ে বলে উঠলো, “আ…আপনাকেও।”
ভূতের মুখে রামনাম শুনলে যেমন অবাক হয় তেমন অবাক হলো নীল। কিছুক্ষণ বিস্মিত চোখে তাকিয়ে রইলো ত্রয়ীর দিকে।
ত্রয়ী তখনো ওর বিপরীতে দৃষ্টি ঘুরিয়ে রেখেছে। একদমই এদিকে ফিরছে না। তবে ঘোমটার আড়াল থেকেও লাজুক মুখখানা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে তার।
নীল প্রশস্ত হাসলো। ভ্রু উঁচু করে ফিচেল গলায় বলল, “মিথ্যে কেন বলছ? তুমি তো আমার দিকে তাকাওই নি। এইযে এখনো তো ওদিকে ঘুরে আছ!”
ত্রয়ী থতমত খেলো খানিক।
এই কথার কী উত্তর দেবে এখন? ও কি আর সরাসরি চেয়ে থেকে দেখেছে নাকি লোকটার মতো! বাড়ি ভর্তি লোকজনের সামনে সে নাহয় একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকতে পারে। কিন্তু ওর তো চক্ষুলজ্জা বলে কিছু আছে নাকি! তাছাড়া ওভাবে না তাকিয়েও তো দেখা যায়। সেভাবেই দেখেছে। কিন্তু সেটাও বা কীভাবে বলবে!
বিভ্রান্তিতে পড়লো ত্রয়ী। ঠোঁটে ঠোঁট চিপে চুপ করে রইলো তাই।
নীল কিছুক্ষণ সন্দিহান চোখে তাকিয়ে থেকে বক্রোক্তি করে বলল, “By any chance, তুমি কি লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছিলে?”
এমন উদ্ভট প্রশ্নে চমকে উঠলো ত্রয়ী। ঢোক গিললো অকপটে।
আচ্ছা ঝামেলায় পড়া গেল তো! এখন তো মনে হচ্ছে বলাটাই ভুল হয়েছে। নির্ঘাত কথার প্যাচে প্যাচিয়ে মেরে ফেলবে ওকে।
নীল রয়েসয়ে খানিক চেপে এলো ত্রয়ীর দিকে। গায়ের সাথে গা ঘেঁষে বসতেই পুরো শরীর শিরশির করে উঠলো ত্রয়ীর। চকিত ভঙ্গিতে ঝটপট সরে গিয়ে জড়ানো গলায় বলল, “কেউ দেখলে কী ভাববে!”
নীল ফের চেপে এলো। ভ্রুকুটি করে পাত্তাহীনভাবে বলল, “আমার বিয়ে করা বউয়ের পাশে বসেছি আমি, এতে কার কী! তাছাড়া চুমু-টুমু তো আর খাচ্ছি না।”
নীলের এমন ঠোঁটকাটা প্রত্যুত্তরে চোখ ছানাবড়া হলো ত্রয়ীর। বুকের মধ্যে হাতুড়ি পেটা শুরু হলো যেনো। নড়েচড়ে আবার সরে বসতে উদ্যত হবার আগেই নীল থমথমে গলায় বলল, “নড়বা না। চুপচাপ বসো। তোমার কারণেই সবাই বেশি বেশি তাকাবে এদিকে।”
ত্রয়ী ঢোক গিলে চুপচাপ বসলো।
কিন্তু কয়েক সেকেন্ডও বোধহয় অতিবাহিত হতে পারলো না তার আগেই সেখানে হাজির হলো নীলের কাজিনগুলো।
যাদের মধ্যে গোলাপি শাড়ি পরা মেয়েটা কোমড়ে হাত রেখে বলল, “বউকে অনেক দেখেছ ভাইয়া। এখন একবারে বাসর ঘরে দেখো। ভাবীকে নিতে এসেছি আমরা। সে ফ্রেশ হবে, তারপর তাকে সাজাবো আমরা। দেখি, চলো তো ভাবী।”
নীল সরু দৃষ্টিতে তাকালো। তবে কিছু বলার আগেই বাধ্য মেয়ের মতো উঠে দাঁড়ালো ত্রয়ী।
অবাক হলো নীল।
মেয়েটা তৃপ্তির হাসি দিয়ে ত্রয়ীর হাতটা ধরলো। তারপর নীলের দিকে তাকিয়ে আহামরি ভাব ধরে বলল, “বাহ! অনেক ভদ্র বউ পেয়েছ তো ভাইয়া! ভাবীকে দেখে এখন তোমারো উচিত এমন নম্র-ভদ্র হওয়া।”
নীল চোখ রাঙানি দিয়ে তাকাতেই ভড়কে গিয়ে ত্রয়ীকে নিয়ে কেটে পড়লো ওরা।
গাড়ির ভেতর জবুথবু হয়ে বসলো ক্যান্ডেল। গাড়ির দরজা লাগিয়ে দুরুদুরু বুকে আড়চোখে ইভানের দিকে তাকালো একবার।
সেই মুহূর্তে সেও ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে একঝলক তাকাতেই চোখাচোখি হয়ে গেল৷ ক্যান্ডেল নিমিষেই ঝটপট দৃষ্টি ফিরিয়ে নিলো। অগোছালোভাবে পলক ঝাপটিয়ে সঙ্গিন মুখ করে নড়েচড়ে বসলো ও।
তবে সামনের দিকে দৃষ্টি রেখেও ও বুঝলো লোকটার গাম্ভীর্যে পরিপূর্ণ একজোড়া চোখ ওর দিকেই স্থবির হয়ে আছে।
ভেতরে ভেতরে কেমন যেনো শিহরণ বয়ে গেল ওর। অস্থিরতা ভর করলো বুকে। শ্বাস আটকে আসতে লাগলো।
ওর অস্থিরতাকে শতভাগ বাড়িয়ে দিয়ে ইভান আচমকা খুব কাছে এগিয়ে আসতেই পিলে চমকালো ওর। আশঙ্কিত, বড়ো বড়ো চোখ মেলে তাকিয়ে একদম সিটিয়ে গেল সীটের সাথে।
ইভান খুব নির্বিকার ভঙ্গিতে ওর কাছ ঘেঁষে সামনের দিকে ঝুঁকে গাড়ির দরজা খুললো। তারপর খুব স্বাভাবিক ভাবে গাড়ির দরজার বাহিরে রয়ে যাওয়া ড্রেসের অংশগুলো একহাতে ভেতরে গুছিয়ে দিয়ে দরজা বন্ধ করলো। অতঃপর সরে গিয়ে বসলো স্বস্থানে।
ক্যান্ডেল থমকালো। বোকার মতো পলক ঝাপটালো কয়েকবার। শেষে নিজের নির্বুদ্ধিতা বুঝে সোজা হয়ে বসলো চুপচাপ।
ত্রয়ীকে সাজিয়ে গুছিয়ে গেস্ট রুমে নিয়ে এলো গোলাপি শাড়ি পরা মেয়েটা। ওর নাম কথা। নীলের মামাতো বোন।
সে ত্রয়ীকে ডিভানে বসিয়ে দিতে দিতে বলল, “কষ্ট করে একটু বসে থাকা লাগবে ভাবী। বাসরঘর সাজানো হয়নি এখনো। আরেকটু অপেক্ষা করো।”
ত্রয়ী বসতেই সেদিনের কুকুরটা এসে ঢুকলো ঘরে। লেজ নাড়তে নাড়তে ত্রয়ীর পাশে এসে দাঁড়াতেই কথা সেটার দিকে একপলক তাকিয়ে বলল, “যাক ভালো, এলভির সাথে থাকো তুমি। আমি ওদিকে গিয়ে হেল্প করি। একা ভয় করবে?”
দ্রুত মাথা ঝাকিয়ে ‘না’ জানিয়ে দিলো ত্রয়ী।
কথা মুচকি হাসলো। বলল, “ভাইয়া কিন্তু এখন মোটেও তোমার কাছে আসতে পারবে না। বুঝছো! কারণ বউ, বাসরঘর দুটোর জন্য আজ অনেক
টাকা গুনতে হবে তাকে। তারপরই পাবে তোমাকে। আর তোমাকেও ততোক্ষণ সবুর করতে হবে।”
কথার ইঙ্গিতপূর্ণ বাক্যে কিছুটা অপ্রস্তুত হলো ত্রয়ী। এলোমেলো দৃষ্টিতে তাকালো এদিকওদিক।
“আসছি আমি একটু পরেই।” বলতে বলতে বেরিয়ে গেল কথা।
সে বেরিয়ে যেতেই মুক্ত শ্বাস ফেললো ত্রয়ী। এতক্ষণ পর সহজ, স্বাভাবিক হয়ে বসলো ও। সেই থেকে এতসময় ধরে এদের উলটোপালটা কথায় কান ঝালাপালা হয়ে আছে ওর।
এখন আর যাই হোক, অন্তত এসব ঠোঁটকাটা কথাবার্তা তো শুনতে হবে না ওকে!
ত্রয়ী এলভির দিকে তাকালো। সে লেজ নাড়িয়ে আরেকটু কাছাকাছি এগিয়ে আসতেই অধর ছড়িয়ে হাসলো ত্রয়ী। হাত দিয়ে মাথায় উপর আলতো করে ছুঁয়ে দিতেই আহ্লাদিত হয়ে কোলের উপর দুটো পা তুলে দিলো ও।
এলভির এমন কাণ্ডে ত্রয়ীর ঠোঁটের হাসিটা প্রসারিত হলো আরো।
আদুরে ভঙ্গিতে এলভির গায়ে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে গলার কাছের নেমপ্লেটে আরেকবার চোখ আটকালো ত্রয়ীর। সেটা হাতে ধরেই হাসিটা স্তিমিত হলো ওর।
হঠাৎই মনে হলো, ফার্স্টলাভ কে ছিল তার? আর থাকলে তো কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু এখনো নাকি সেই মেয়েটা তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এতোই গুরুত্বপূর্ণ হলে তাকে কেন বিয়ে করলো না সে!
এমন নানা রকম প্রশ্ন উদ্ভব হতে লাগলো মন মস্তিষ্কে। যার সবটার উত্তরই অজানা ওর।
ক্যান্ডেল ল্যাগেজ খুলতে উদ্যত হতেই মীরা নামের মেয়েটা বলল, “থাক থাক, ভাবী তুমি গিয়ে ফ্রেশ হও। আমি তোমার ল্যাগেজের কাপড় গুছিয়ে আলমারিতে রেখে দিচ্ছি। দেখি দেও।”
ক্যান্ডেল দ্বিরুক্তি করার আগেই মীরা ল্যাগেজটা টেনে নিয়ে সরিয়ে রাখলো আলমারির পাশে।
ক্যান্ডেল অপ্রকৃতস্থ হয়ে বলল, “আমার কাপড় নিবো না?”
মীরা ভোলাভালা হাসি দিয়ে বলল, “এগুলো না, শাড়ি পড়তে হবে। তুমি বরং এই তোয়ালেটা নিয়ে শাওয়ারে ঢুকে পরো, আমি শাড়িটা নিয়ে আসছি। আর ভেতরে ঢুকে এই ড্রেসটা দিয়ে দেও। এতো সুন্দর ড্রেসটা ভিজে গেলে সমস্যা।”
ক্যান্ডেল মাথা নেড়ে সায় জানালো। অতঃপর ওদের সাধুসুলভ ব্যবহার আর মিটমিটে হাসির পেছনে থাকা দুষ্টু মতলবের বিন্দুবিসর্গও আন্দাজ না পেরে ওদের কথামতোই সব করলো।
ফলতঃ ঝামেলায় পড়ে গেল লম্বা শাওয়ারের শেষে।
শাড়ি তো দূর, মেয়েগুলোর হাসাহাসি আর কথাবার্তার টু শব্দও এলো না আর। বেশ অবাক হলো ক্যান্ডেল।
অগত্যা বাথরুমের দরজা অল্প খানিকটা খুলে রুমে উঁকি দিলো ও।
পুরো রুমটায় চোখ বুলিয়েও যখন একটা মানুষকেও না দেখলো তখন বেশ অবাকই হলো।
একটু আগেও তো কতগুলো মেয়ে ছিল এখানে। এটুকু সময়ে উধাও হয়ে গেল কোথাও!
তার চেয়েও বড়ো কথা, ওকে কাপড় চোপড় না দিয়েই ওরা গায়েব হয়ে গেল কেন!
বারকয়েক পলক ঝাপটিয়ে বোকার মতো চেয়ে রইলো ক্যান্ডেল।
আচমকাই কাপড়ের বিষয়টা মাথায় আসতেই অবান্তর চিন্তায় চোখ ছানাবড়া হলো ওর। চট করে ল্যাগেজের উদ্দেশ্যে আশেপাশে চোখ বুলালো।
তবে ওর অবাঞ্চিত ধারণা সত্যি হলো৷ পুরো রুমটায় অতবড়ো ল্যাগেজটার বিন্দুমাত্র হদিস পাওয়া গেল না।
ক্যান্ডেল থমকালো। এতক্ষণে পুরো বিষয়টা পানির মতো পরিষ্কার হতেই বুকের পানি শুকিয়ে গেল ওর। এমন বেজার পরিস্থিতিও আসতে পারে তা ঘুণাক্ষরেও টের পায় নি ও।
শুকনো মুখে জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে কিয়ৎপল বিভ্রান্তিকর চাহনিতে চেয়ে রইলো ও।
এখন আলমারিতে খোঁজাটাই একমাত্র রাস্তা। সেখানে কিছু না থাকলে আজ খুব লজ্জায় পড়তে হবে ওকে।
ক্যান্ডেল অস্বস্তিকর নিঃশ্বাস ফেললো। অবশেষে বেরিয়ে এলো তোয়ালে প্যাচানো শরীরে।
তড়িঘড়ি করে আলমারির দিকে এগিয়ে দুইপাল্লা খুললো। জহুরি চোখে সেটার ভেতরে চোখ বুলাতেই ভ্রু খুব বাজেভাবে কুচকে গেল ওর। স্তম্ভিত চোখে ঝুলিয়ে রাখা অপ্রীতিকর ড্রেসগুলো হাত দিয়ে নেড়েচেড়ে দেখতেই পায়ের নিচের মাটি সরে গেল ওর।
এসব কী! আর ওর জামাকাপড় কোথায়!
হকচকিয়ে গেল ক্যান্ডেল। রাগে, দুঃখে শরীর জ্বলতে লাগলো ওর।
বুঝতে পারলো না এখন কী পরবে। কারণ যা রেখে গেছে তা মোটের পরার মতো না। ওসব পরা, না পরা সমান।
মুখটা করুণ করে আরেকবার চিরুনি তল্লাশি করে খুঁজলো ও। কিন্তু বিনিময়ে পরার মতো কিছুই পেল না বলে মুখটা বিবর্ণ হয়ে গেল।
ঠিক তখনি ওর নাজেহাল অবস্থার ষোলকলা পূর্ণ করতেই যেনো রুমে ঢুকলো ইভান।
ভূত দেখার মতো চমকে তাকালো ক্যান্ডেল।
ততোক্ষণে ওর আদ্যোপান্ত চোখ বুলিয়ে ইভান নিজেও অবাক হলো।
ওর বিস্ময়কর চাহনির সাথে চোখাচোখি হতেই ধরফর করে ঘাড় ফিরালো ক্যান্ডেল। দুইপা এগিয়ে আলমারি ঘেঁষে দাঁড়িয়ে ড্রয়ারের হ্যান্ডেলটা চেপে ধরলো হাতের মুঠোয়।
বড়ো বড়ো নিঃশ্বাস নিতে নিতে চোখ খিঁচল। মনে মনে স্বগতোক্তি করলো, It’s ok, It’s ok. Be normal, be normal.
স্বাভাবিক থাকতে চেষ্টা করেও পারলো না ও। শরীর তিরতির করে কাঁপতে লাগলো। চোখ বুজে গাঁট হয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকার চেষ্টা করলো।
সেকেন্ড কতক পেরিয়ে যখন ঘাড়ের কাছটায় উষ্ণ নিঃশ্বাসের উপস্থিতি টের পেলো তখন ঝটপট চোখ খুললো ও। ইভান যে একদম ওর পিছনে, খুব ঘনিষ্ঠ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সেটা আঁচ করতে পেরেই চরমভাবে শিউরে উঠলো। জড়সড় হয়ে নড়েচড়ে উঠতেই ইভান ওর কানের কাছে ফিচেল গলায় বলে উঠলো, “You are looking damn hot.”
চমকে গেল ক্যান্ডেল। চকিত দৃষ্টিতে বড়ো বড়ো চোখ মেলে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাতেই চোখাচোখি হয়ে গেল একজোড়া সুডোল, বক্র চাহনিবিশিষ্ট চোখের সাথে। যার ঠোঁটের আগার মুচকি হাসিতে চরম অসভ্যতামির বহিঃপ্রকাশ।
ক্যান্ডেল একটু ভড়কালো। ঘুরে দাঁড়িয়ে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে চাইতেই দুইপাশে হাত রেখে আটকে দিলো ইভান।
থমকালো ক্যান্ডেল। অনুরণিত দৃষ্টিতে তাকালো ইভানের দিকে।
লোকটার পুরুষালি, গভীর দৃষ্টি ওর সর্বাঙ্গে ঘুরছে বুঝতেই একরাশ আড়ষ্টতায় ডুবে গেল ও। চকিতেই তোয়ালেটা অযথাই টেনেটুনে নিতে লাগলো।
ইভান চোখে হাসলো। চোখ তুলে আলমারির ভেতরে থাকা ড্রেসগুলোর দিকে তাকালো।
এতক্ষণে পুরো বিষয়টা বুঝে ফেললেও শুধুমাত্র ক্যান্ডেলকে হেনস্তা করতেই শঠভাবে বলল, “এতো ট্রান্সপারেন্ট ড্রেসও পরতে বলিনি আমি। কিন্তু তুমি পরতে চাইলে সমস্যা নেই। আমি তো বলেছিই আমি বেডরুমে এলাও করবো।”
কথাটা কর্ণধার হতেই রাগে লজ্জায় দাঁত কিটকিট করলো ক্যান্ডেল। পালটা জবাব দিতে গিয়েও দিলো না। দিয়ে কী হবে!
যেমন কাজিন তেমন তাদের ভাই। সব Pervert, অসভ্যের দল।
ক্যান্ডেল কুঞ্চিত ভ্রুতে ফোঁস করে বিরক্তিকর নিঃশ্বাস ফেললো। এভাবে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অসংলগ্ন চাহনি আর কথাবার্তা শোনার মানেই হয় না। এরচেয়ে চাদর মুড়িয়ে শুয়ে পড়াই ভালো। অন্তত সকাল অব্দি এছাড়া উপায় নেই আর।
তাই দৃষ্টি ফিরিয়ে রেখেই গমগমে গলায় বলল, “সরো।”
ইভান সরলো না। স্থির, সটান হয়ে দাঁড়িয়েই রইলো একভাবে।
ভ্যাবাচেকা খেলো ক্যান্ডেল। কুঞ্চিত চোখে তাকিয়ে কিছু বলার আগেই ইভান ওর গায়ের তোয়ালেটার দিকে ইশারা করলো। গম্ভীর গলায় বলল, “এটা খোলো।”
আচমকা এমন উদ্ভট কথায় প্রচন্ডরকম ভড়কে গেল ক্যান্ডেল। বিস্ফোরিত চোখমুখে ইভানের দিকে তাকিয়ে চটপট দু’হাতে তোয়ালেটা আঁকড়ে ধরলো। থরথরিয়ে উঠলো সারা শরীর। অপ্রকৃতস্থ কণ্ঠে বলল, “মানে!”
ইভান ভাবলেশহীন ভাবে তাকালো। বাঁকা গলায় বলল, “এভাবে তাকানোর কিছুই নেই। এই তোয়ালেটা আমার। ফ্রেস হবো আমি।”
ক্যান্ডেল হকচকালো। কয়েক সেকেন্ড চেয়ে রইলো বোকার মতো। ত্রাসে পরিপূর্ণ ভীত কণ্ঠে বলল, “আ..আমি কী পরবো তাহলে?”
“তুমি কী পরবা সেটা আমি কীভাবে বলব?” ইভানের পাত্তাহীন কথার ধরণে ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল ক্যান্ডেল। খুব বিপদে পড়লো মনে হলো। তটস্থ হয়ে বলল, “অন্য… অন্য তোয়ালে নেও।”
“আমার এটাই লাগবে।” একরোখা মনোভাবের সাথে বলল ইভান।
ক্যান্ডেল বড়ো বড়ো চোখে তাকালো।
ইভানের টানটান চোখের চাহনি, ঠোঁটের কোণের উদ্দেশ্যপূর্ণ বাঁকা দেখে যা বোঝার বুঝে গেল ও।
সে ইচ্ছে করেই ওকে জব্দ করতে চাচ্ছে। চাইলেই পারে অন্য একটা তোয়ালে নিয়ে আসতে। কিন্তু তা আনলে তো ওকে হয়রানি করা হবে না। তাইনা!
“তুমি দিবা, নাকি আমি নিয়ে নেবো?”
লাফিয়ে উঠলো ক্যান্ডেল। জড়সড় হয়ে পেছনে চেপে গিয়ে দরাজ কণ্ঠে বলল, “একদম না! ভুলেও না।”
“তো তাড়াতাড়ি দেও।”
ইভানের গম্ভীর, নির্বিকার কণ্ঠে রাগে দাঁতে দাঁত চিপলো ও। এমন আস্ত একটা অসভ্য লোক জীবনেও দেখেনি ও।
শুধু সুযোগের অপেক্ষা। বজ্জাত লোকটাকে দেখিয়ে দেবে তখন।
দাঁত কিড়মিড় করে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেললো ক্যান্ডেল। একপলক তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে কাটকাট গলায় বলল, “আমার ল্যাগেজটা ওরা নিয়ে গেছে। ওটায় আছে আমার জামাকাপড়। দয়া করে ওটা নিয়ে আসো তাহলেই হবে।”
“আমি কেন আনবো?” ইভানের গম্ভীর গোছের গা-ছাড়া কথার ধাঁচে শরীর জ্বলতে লাগলো ক্যান্ডেলের।
বুঝলো, লোকটা প্রতিশোধ নেবার জন্য কোমর বেঁধে নেমেছে আজ। উদ্দেশ্য হলো ওকে হেনস্তা আর হয়রানি করা।
তাই আর কথা বাড়ালো না ক্যান্ডেল। অগত্যা ঘুরে তাকালো আলমারিতে ঝুলতে থাকা ড্রেসগুলোর দিকে। ব্যগ্রভাবে চোখ বুলালো। প্রচন্ড অস্বস্তির সাথে হাত বাড়িয়ে একটা ড্রেস বের করে নিতে যেতেই ওর হাত ধরে থামিয়ে দিলো ইভান।
চমকালো ক্যান্ডেল। বিস্মিত চোখে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাতেই চোখাচোখি হলো গম্ভীর চোখজোড়ার সাথে।
ইভান অতি ঘনিষ্ঠ হয়ে এসে কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল, “আমি চাই তুমি আমাকে পরো।”
ক্যান্ডেল ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল। বোকার মতো পলক ফেললো বারকয়েক। অবশেষে ঠোঁট নাড়িয়ে কিছু বলতে নিতেই আচমকা ওকে কোলে তুললো ইভান।
চমকে উঠলো ও। বড়ো বড়ো চোখ মেলে ইভানের দিকে তাকাতেই তার রাশভারি চোখের অন্যরকম চাহনি দেখে ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল ও। ফাঁকা একটা ঢোক নেমে গেল গলা বেয়ে।
ইভান ওকে ফুল সজ্জিত বিছানায় নিয়ে শোয়াতেই ভড়কে গেল ও। হঠাৎ এমন উদ্ভট ব্যবহার হজম করতে বেশ বেগ পেতে হলো ওকে।
তটস্থ হয়ে আগেভাগে বলল, “কী করতে চাইছ তুমি!”
ইভান ততোক্ষণে মধ্যকার দূরত্ব শূন্যের কোটায় নামিয়ে এনে রাশভারি কণ্ঠে কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলল, “বাসর রাতে তোমার লিগ্যাল হাসবেন্ড তোমার সাথে কী করতে চাইতে পারে বোঝো না?”
(চলবে…)
[ কিছু কথা – খ্রিস্টান ধর্মের বিয়েতে কিস বিষয়ক ব্যাপারটা ক্লিয়ার করি শুনেন –
গতদিন একজন কমেন্ট বলেছেন
“কিস করার নিয়ম বাধ্যতামূলক, নাহলে খ্রিস্টানদের বিয়ে অসম্পূর্ণ থাকে।”
আর “কোনো ধর্ম সম্পর্কে লেখার আগে সেই ধর্ম বিষয়ে সবকিছু জানা আবশ্যক।”
এটা পড়ে আমি ‘থ’ মেরে কিছু সময় বসে ছিলাম।
কারণ প্রথমত, বিয়ের শুরু হওয়ার পরে আমি শেষ অব্দি বিয়েটা লিখিনি।
সো কিস হয়নি কিনা সেটা আপনি কীভাবে নিশ্চিত হলেন? কিস হয়নি এটাও লিখিনি, কিস হয়েছে সেটাও লিখিনি। পুরো বিয়েটাই লিখিনি। ইচ্ছা ছিলো লেখার, তবে টাইম পাইনি।
তার চেয়েও বড়ো কথা, এটা একদমই আপনার ভুল ধারণা যে কিস না করলে বিয়ে অসম্পূর্ণ থাকবে।
কোনো বিষয়ে বলতে হলে প্রথমে আপনাকেও জানতে হবে।
আমার অনেক ফ্রেন্ড খ্রিস্টান। বর্তমানে আমার রুমমেটও খ্রিস্টান + এ অব্দি আমি অনেক খ্রিস্টান বিয়ে attend করেছি।
ক্যাথলিক চার্চেই কিসটা বেশির ভাগ হয়। অন্য চার্চে খুব রেয়ার। তবে যারা কিস করতে সাচ্ছন্দ্য বোধ করে তারা করতে পারে। যদি বোধ না করে, লজ্জা বা অস্বস্তি লাগে, তবে তারা করে না।
এই কিসটা যে বাধ্যতামূলক তা সম্পূর্ণ আপনাদের ভুল ধারণা।
বিশ্বাস না হলে গুগোলে সার্চ দেন যে
”is it compulsory to kiss in christian marriage?”
স্পষ্ট লেখা আসবে “বাইবেলে এমন নিয়মই নেই।”
(আমি কমেন্টে স্ক্রিনশট দিয়ে দিলাম, দেখে নিবেন।)
সব দেশে করাও হয়না কিস।
বিদেশেই করা হয়। বলতে গেলে বিদেশে এটা হয়ই। ওদের দেশে এমনটা ন্যাচারাল!
আমাদের বাংলাদেশে হয়না সব বিয়েতে।
আপনি যদি গুগলে বিশ্বাসী না হন তাহলে পার্শ্ববর্তী চার্চে জিজ্ঞাসাবাদ করেন যে কিস করটা বাইবেলের নিয়ম কিনা। আর বিয়ে অসম্পূর্ণ থাকবে কিনা।
আমার খ্রিস্টান ফ্রেন্ডগুলো অন্তত ভুল নিউজ দিবে না আমাকে। আমি তাদের থেকে জেনেছি।
এমনকি নিজে দাড়িয়ে থেকে বিয়ে দেখেছি। এমনকি এ বিষয়ে জানি৷
আমাকে প্রশ্ন করেছেন যে, জেনে তারপর লেখা উচিত।
আমি জেনে তবেই লিখেছি।
আর অন্য ধর্মের নিয়মও ভঙ্গ করিনি।
আমার খুব ভালো ভাবেই জানা আছে যে, ধর্ম বিষয়ে উলটাপালটা লিখলে লেখক বা লেখিকাকে বাজেভাবে হেনস্তা হতে হয়।
ধর্ম বিষয় নিয়ে আমি যতো ভয় পাই, বাঘকেও অতোটা পাইনা।
তবে আপনি বললেন যে আপনি বিয়েতে কিস করতে দেখছেন, জানেন আর শুনেছেন।
এখানেই আপনার ভুল জানা, শোনা আর দেখাতে হয়তো টিভির মুভিতে দেখেছেন।
যাইহোক বদ্ধমূল ধারণা থেকে বেরিয়ে আসুন। কারণ আজ আমি না জেনে থাকলে আপনার এই ভুল ধরণাটাকেই সত্যি ভেবে নিতাম। আর পরবর্তীতে অন্যদেরও ভুল জানাতাম। তাই যেটা নিয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকবে সেটা নিয়ে কনফিডেন্সের সাথে বলুন। কিন্তু না থাকলে ধারণা নিন তারপর বলুন।
আপনি বলেছেন বিষয়টা বাজেভাবে না নিতে। আমি নিই নি৷ তবে যে জিনিসটা আমার ভালো লাগে নি সেটা হলো আপনি নিশ্চিত না হয়েই কমেন্টে লিখেছেন, “অন্য ধর্মের নিয়ম ভঙ্গ হয়েছে।
অন্য ধর্ম বিষয় আমি না জেনে লিখেছি।
আর বিয়ে অসম্পূর্ণ।”
অথচ আমি কোনো ভুল করিনি।
ধন্যবাদ।
(আমার খ্রিস্টান ফ্রেন্ডটাকে আমি মাত্র জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কি বিয়েতে কিস করবা?
সে বলল, না। কারণ সে কম্ফোর্ট ফিল করেনা + তাদের এটা বাধ্যতামূলক না।)
(আশা করি আমি বিষয়টা সব পাঠকদেরই ক্লিয়ার করতে পারলাম।)