কালোবউ পর্ব ১৩
লেখিকাঃ Tahmima Toma
পর্বঃ১৩
আকাশঃ মেঘলা আর রুপ সারপ্রাইজ পেতে প্রস্তুত হও। তোমাদের জন্য যে বিগ সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে হাহাহাহা(ডেভিল হাসি)
লিজাঃ কী রে এতদিন পর ভার্সিটি আসার টাইম হলো??
মেঘলাঃ জানিসতো পায়ে ব্যাথা পেয়েছিলাম।
লিজাঃ জানি জানি তোর মতো একপিস সারা দেশ খোঁজে পাওয়া যাবে না। বিয়ের পরদিনই গাছে ওঠে গেছিস পেয়ারা পাড়তে,,,,, হাহাহ।
মেঘলাঃ দেখ একদম হাসবি না। এমনিতেই এখন পেয়ারার সিজন না সেই কতদিন আগে খেয়েছি তাই সামনে পেয়ে আর কিছু মনে ছিলো না।
লিজাঃ আচ্ছা যা হাসবো না। এখন ক্লাসে চল।
মেঘলাঃ চল,,,,,,
সজীবঃ মেঘলা দাড়া তোর সাথে আমার কথা আছে।
মেঘলাঃসজীব পথ ছাড় তোর সাথে আমার কোন কথা নেই( ক্লাসের দিকে যেতেই কোথা থেকে সজীব এসে সামনে দাড়ালো। সজীব আমাদের সাথে একই ডিপার্টমেন্টে পড়ে। ভার্সিটির সবার ক্রাশবয়, বাবার অনেক টাকাও আছে। এক কথায় বড়লোক বাবার বিগড়ে যাওয়া ছেলে তবু সব মেয়ে এর পিছনে ঘুরে সাথে সিনিয়র আপুরাও। সজীবের সাথে পরিচয়টা কাকতালীয়। লাইব্রেরীতে বই পড়তে গিয়ে। বুকশেলফ থেকে কয়েকটা বই নিয়ে পেছনে ঘুরতে সজীবের সাথে ধাক্কা লেগে বই সব নিচে পড়ে যায়। অনেকটা সিনেমাটিক স্টাইলে। কাকতালীয় বললাম কারণ সজীবকে কখনো কেউ লাইব্রেরীতে দেখেনি। সেদিন কেন গিয়েছিল সেটা অবশ্য পড়ে জানতে পারি। dare পুরণ করতে সেটা একটা প্লান ছিলো মাত্র। তারপর ও নিজে থেকেই ফ্রেন্ডশিপ করতে চায় কিন্তু মানা করে দেই। কারণ ছোটবেলা থেকে আমার ছেলে বন্ধু নেই শুধু একজন আছে আবির। লিজা আর আবিরের সাথে বন্ধুত্ব কবে থেকে সেটা মনেও করতে পারি না। হয়তো ক্লাস ওয়ান থেকে। আবিরের কথা অন্যদিন বলবো। আজ এই সজীবেরটাই বলি। অনেকদিন রিকোয়েস্ট করার পর ওর সাথে ফেন্ডশিপ করি। প্রথম থেকেই সন্দেহ হয়েছিলো ভার্সিটির ক্রাশবয় আমার সাথে ফ্রেন্ডশিপ করতে পেছনে ঘুরছে। তাই ফ্রেন্ডশিপ করতে চাইনি কিন্তু পড়ে বাধ্য হই। এর জন্য ভার্সিটির অনেক মেয়েদের কথা শুনতে হয়েছে আমাকে। কিছুদিনের মধ্যে সজীবের সাথে ভালো বন্ধুত্ব হয়ে যায়, তুমি থেকে সোজা তুই। আমি, লিজা আর সজীব অনেক জায়গায় ঘুরতেও গেছি, ফুসকা খাওয়া, পার্কে বসে বাদাম খাওয়া অনেক কিছু। হঠাৎ করে একদিন একজন এসে জানায় সজীব আমার সাথে যা করছে সব ডেয়ার। সজীব যদি আমার সাথে ১ মাস প্রেম আর তারপর ব্রেকআপ করে ছ্যাকা দিতে পারে তাহলে ওর এক বন্ধু ওদের সব বন্ধুদের ১০ দিনের কক্সবাজার টুরের খরচ দেবে আর না পারলে সজীব দেবে। আমাকে টার্গেট করার কারণ ভার্সিটির সব মেয়ে সজীবের জন্য পাগল কিন্তু আমার মতো একটা কালো মেয়ে যে কোনদিন সজীবের দিকে ফিরে তাকিয়েও দেখিনি তাই। সজীবেরও সেটা ইগোতে লেগেছিলো তাই রাজি হয়ে যায়। সেদিন অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম কিন্তু সজীবকে কিছু বলিনি। তারপর দিনই সজীব সারা ভার্সিটির সামনে আমাকে প্রপোজ করে আর আমি না করে দেই। ওকে শুধু বলেছিলাম তুই কারো ভালোবাসা পাওয়াতো দূর বন্ধুত্ব পাওয়ারও যোগ্য না। তারপর আর ভার্সিটি আসিনি অনেকদিন আবার এর মধ্যে বিয়ের ঝামেলায় আসা হয়নি।)
সজীবঃ আমার কথাটা একবার শোন প্লিজ।
মেঘলাঃ দেখ সজীব আমি সব জানি তুই ডেয়ার পূরণ করতে সব করেছিস। কিন্তু কাজটা ঠিক করিসনি। আমি তোকে বন্ধু ভেবেছিলাম।
সজীবঃ একটা ভুলের জন্য আমাদের বন্ধুত্বটা নষ্ট করিস না প্লিজ।
মেঘলাঃ যেটা শুরুই হয়েছিলো মিথ্যে দিয়ে সেটা কীভাবে রাখি??
সজীবঃ সরি বলছিতো,,, দেখ মিথ্যে বলে শুরু করলেও এখন তোদের মত বন্ধু আমি হারাতে চাই না (হাত জোর করে বসে) প্লিজ মাফ করে দে,,,,
মেঘলাঃ আরে আরে কী করছিস?? আচ্ছা ঠিক আছে আমি মাফ করে দিলাম। কিন্তু নেক্সট টাইম এমন কিছু করলে আর মাফ করবো না।
সজীবঃ আর করবো না প্রমিস,,,,,,(তোর মাফ পাওয়ার ধার ধারে কে?? এই মাফটা করে জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল করলি। আমার সব বন্ধুদের সামনে আমাকে হাঁসির পাত্র বনিয়েছিস তোকে এমনি এমনি ছেড়ে দিবো?? যে মেয়েরা আমাকে দেখলে ফিদা হয়ে যেতো এখন তারা আমাকে দেখলে হাসে এর শাস্তি তোকে পেতে হবে মেঘলা,,,,, (শয়তানি হাসি দিয়ে) চল এখন ক্লাসে যাই।
মেঘলাঃ হ্যা চল,,,,,(ক্লাস শেষ করে আমি, লিজা আর সজীব ফুসকা খেলাম। সজীব প্রথম দিকে খেতো না আমাদের সাথে মিশে এখন খায়। খাওয়া শেষে সজীব ওর বাইক নিয়ে চলে গেলো আর লিজাও চলে গেলে। আমি গাড়ি থেকে যেখানে নেমেছিলাম সেখানে এসে গাড়িতে ওঠে পড়লাম। ড্রাইভারকে এখানেই আসতে বলেছিলাম তাই আগে এসেই ওয়েট করছে। বাড়ি এসে দেখি চাঁদ আগেই এসে গেছে। জোহরের নামাজ পড়ে খেয়ে নিলাম আমি, মা আর চাঁদ। তারপর একটু ঘুমিয়ে পড়লাম। আছরের নামাজ পড়ে নিলাম। তারপর চাঁদ আর আমি গার্ডেনের ভিতরে একটা টেবিল আর বসার জায়গা আছে ওপরে ছাতার মতো ঐ বাড়িরটার মতোই প্রায় সেখানে এসে বসলাম।)
চাঁদঃ বিকেল উপভোগ করার জন্য ঐ বাড়িটা পারফেক্ট,, তাই না ভাবি???
মেঘলাঃ এখানেও ভালোই সুইমিং পুল, গার্ডেন, ফলের গাছ সবি আছে শুধু পুকুরটার কমতি আছে। কিন্তু এখানে নিরিবিলিতে থাকার সুযোগ নেই চারদিকে গার্ড ঘুরছে।
চাঁদঃ সেই জন্যইতো ভালো লাগে না। দেখো কেমন বড় বড় গান নিয়ে ঘুরছে,, বিরক্ত লাগছে। ছোটবেলা থেকে এসবের মধ্যেই বড় হয়েছি তাই অভ্যস্ত হয়ে গেছিলাম। কিন্তু ৩ বছর মুক্ত জীবনযাপন করে এখন এসব দম বন্ধ লাগে।
মেঘলাঃ তুমি মাত্র ৩ বছর মুক্ত থেকে এখন এমন জীবন ভালো লাগছে না। তাহলে আমারটা ভাবো,,,,,, একটা বন্য পাখিকে হঠাৎ সোনার খাঁচায় বন্দী করলে যেমন অবস্থা হয় আমারও তেমন হয়েছে। সোনার খাঁচায় বন্দী করে, ভালো ভালো খাবার দিয়ে আমরা ভাবি পাখিটা মনে হয় কত সুখে আছে। কিন্তু আমরা এটা জানি না এই সোনার খাঁচা আর ভালো খাবারের থেকে খড়কুটোর তৈরী বাসা আর মুক্ত আকাশে উড়ে খাবার খোঁজে বেড়ানো তাদের জন্য কতটা সুখের কতটা শান্তির।(কেন জানি না চোখ থেকে এক ফোটা পানি অজান্তেই গড়িয়ে পড়লো। আমিও কী সুখে আছি এই অট্টালিকায়?? এর থেকে টিনের চালায় বৃষ্টির ঝমঝম শব্দ শুনে মায়ের কোলে মাথা রেখে শান্তিতে ঘুমাতাম। যা এই অট্টালিকার বিলাসবহুল বেডে পারি না। মায়ের কোলে যে ভালোবাসায় ভরপুর ছিলো যা এখানে এক বিন্দুও নেই। তাইতো সুখ খোঁজে পাই না এই বিলাসবহুল জীবনে। আমিতো এমন বিলাসবহুল জীবন চাইনি। চেয়েছিলাম ভালোবাসায় ভরপুর একটা ছোট কুঁড়েঘরের সংসার। )
চাঁদঃ ভাবি,,,,,, তোমার কী হয়েছে??
মেঘলাঃ কিছু না (চোখ মুছে) মার কথা খুব মনে পড়ছে,,,,,,,,,,
চাঁদঃ ফোন করে কথা বলে নিয়ো।
মেঘলাঃ হুম,,,,,, ভেতরে চলো গল্প করতে করতে সন্ধ্যা হয়ে গেছে সে খেয়াল আছে?
চাঁদঃ হুম চলো,,,
মেঘলাঃ(রুমে এসে মাগরিবের নামাজ পড়ে নিলাম। নামাজ পড়ে ওঠে দাঁড়াতেই চাঁদ রুমে এলো)
চাঁদঃ ভাবি তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও ভাইয়া ফোন করেছিলো। ভাইয়া এসে ফ্রেস হয়েই ফাংশনের জন্য বের হয়ে যাবে আমাদের নিয়ে। আমাদের রেডি হয়ে থাকতে বলেছে।
মেঘলাঃ চাঁদ আমি না গেলে হয় না???
চাঁদঃ এসব কী বলছো ভাবি??
মেঘলাঃ দেখো চাঁদ তোমার ভাইয়া আর আমার বিয়ের কথা কেউ জানে না এখানে। তাই আমি না গেলে প্রবলেম হবে না।
চাঁদঃ কিন্তু ভাইয়া,,,,?
মেঘলাঃ কিছু হবে না( তুমিতো বুঝতে পারছো না তোমার ভাইয়া আমাকে ওখানে নিয়ে যে অপমান করবে না তার কী নিশ্চিয়তা আছে?? বাড়িতে করে ঠিক আছে কিন্তু এত মানুষের সামনে অপমান করলে যে সয্য করতে পারবো না। আর এই পরিবেশটাও নতুন আমি মানিয়ে নিতে পারবো কি না তাও জানি না)
চাঁদঃ কী ভাবছো ভাবি??
মেঘলাঃ কিছু না তুমি যাও রেডি হয়ে নাও।
চাঁদঃ ওকে,,,,(চলে যেতে গিয়ে ফিরে এলাম) এই প্যাকেটগুলো রাখো ভাইয়া তোমার জন্য পাঠিয়েছে।
মেঘলাঃ( প্যাকেটগুলো নিয়ে আলমারিতে তোলে রাখলাম)
আকাশঃ( সন্ধ্যার পরই বাসায় চলে এলাম। রেডি হয়ে আবার ফাংশনে যেতে হবে। গাড়ি গেইটের ভেতরে পার্ক করে বাসার কলিংবেলের বাজালে মা খোলে দিলো।) তুমি রেডি হয়ে গেছো।
মাঃ হ্যা,,,,
আকাশঃ চাঁদ আর মেঘলা??
মাঃ চাঁদের আর একটু সময় লাগবে আর মেঘলা নাকি যাবে না।
আকাশঃ মানে???(রাগি গলায়)
মাঃ চাঁদকে নাকি বলছে ও যাবে না।
আকাশঃ আচ্ছা তোমরা ওয়েট করো আমি দেখছি।
মাঃ আচ্ছা,,,,,,
আকাশঃ (রুমে এসে দেখি মেঘলা রুমে নেই তাই বেলকনিতে গেলাম। দোলনায় বসে দোল খাচ্ছে চোখ বন্ধ করে। হাত ধরে এক টানে সামনে দাড় করালাম)
মেঘলাঃ (চোখ বন্ধ করে দোলনায় বসে ছিলাম। হঠাৎ হাত ধরে কেউ দাড় করাতে ভয় পেয়ে যাই। তাড়াতাড়ি চোখ খোলে দেখি আগুনের মতো চোখ করে আকাশ আমার দিকে তাকিয়ে আছে।) ক,,,কী হয়েছে??
আকাশঃ তোমার সাহস কীভাবে হয় আমার কথা অমান্য করার??(গাল চেপে মুখটা উপরের দিকে করে)
মেঘলাঃ ক,,,, কী করেছি আমি??
আকাশঃ আমি রেডি হতে বলেছিলাম কিনা??
মেঘলাঃ হ,,,,,হুম বলেছিলেন।
আকাশঃ তুমি না করেছো কোন সাহসে??
মেঘলাঃ আ,,,আসলে,,,,,,,,,,,
আকাশঃ ১০ মিনিট,,, জাস্ট ১০ মিনিট সময় দিলাম তোমাকে যেই প্যাকেটগুলো পাঠিয়েছি সেগুলো পড়ে রেডি হয়ে আমার সামনে আসবে। নাউ গো
মেঘলাঃ আমার কথা,,,,,
আকাশঃ i say go(ধমক দিয়ে)
মেঘলাঃ (রুমে এসে আলমারি থেকে প্যাকেটগুলো বের করে চাঁদের রুমে চলে এলাম। চাঁদকে দেখে আমি থ,,,। অনেক সুন্দর সাদা একটা গ্রাউন পড়েছে। দেখেই বুঝা যাচ্ছে অনেক দামী হবে, মুখে হালকা মেকআপ, আর সাদা হিজাব। আমার সামনে সাদা পরি দাঁড়িয়ে আছে।)
চাঁদঃ ভাবি তুমি???
মেঘলাঃ (ওর চোখের কোন থেকে একটু কাজল কানের পিছনে লাগিয়ে দিলাম।) আমার ছোট বোনটার ওপর যেন কারো নজর না লাগে। অসম্ভব সুন্দর লাগছে। (মিষ্টি হেসে)
চাঁদঃ কী যে বলো না ভাবি??(লজ্জা পেয়ে) তুমি এখানে আর হাতে প্যাকেটগুলো কেন??
মেঘলাঃ আমাকে ১০ মিনিট সময় দেওয়া হয়েছে রেডি হওয়ার জন্য(মু্খ গোমরা করে)
চাঁদঃ হাহাহা আমি বলেছিলাম।
মেঘলাঃ মজা নিচ্ছো??
চাঁদঃ না হিহিহি,,,, এখন আসো তোমাকে সাজিয়ে দেই।
মেঘলাঃ(একটা একটা প্যাকেট খুলতেই নীল রঙের একটা গ্রাউন বের হলো। চাঁদেরটার মতোই শুধু কালার ভিন্ন, সাথে হিজাব, কিছু জুয়েলারি মনে হচ্ছে ডায়মন্ডের আর জুতো)
চাঁদঃ ওয়াও সব সেম। আমার সব সাদা আর তোমারগুলো নীল। দেখো তোমার জুয়েলারি গুলোও ব্লু ডায়মন্ডের।
মেঘলাঃ হুম,,,,,,
চাঁদঃ তুমি ওয়াশরুম থেকে আগে গ্রাউনটা পড়ে আসো।
মেঘলাঃ আচ্ছা,,,,,( এরপর চাঁদ আমাকে সাজিয়ে দিলো। মেয়েটা এই কাজ ভালোই পারে। বেশি টাইম নেয়নি ১ ঘন্টায় হয়ে গেছে হিহিহি)
চাঁদঃ ওয়াও ভাবি তোমাকে দেখে আমিইতো ক্রাশ খেয়ে গেলাম।
মেঘলাঃ তুমি যে কী বলো না চাঁদ?? শুধু তোমার ভাইয়ার যেন কথা না শুনতে হয় ফাংশনে গিয়ে আমাকে সাথে নেওয়ায়,,,তাহলেই হবে।
চাঁদঃ ভাবি তুমি কিন্তু আমার সাজানোকে অপমান করছো। তুমি বলতে চাইছো আমি খারাপ সাজাই??
মেঘলাঃ আরে বাবা সেটা কখন,,,,,,
আকাশঃ চাঁদ তোদের আজ হবে নাকি ফাংশন শেষ হলে তোদের সাজা শেষ হবে??
চাঁদঃ হয়ে গেছে আসছি,,,,,
মেঘলাঃ(আমি আর চাঁদ বাইরে আসতেই দেখলাম মা আর উনি ড্রয়িংরুমের সোফায় বসে আছে। আবাক হওয়ার বিষয় উনিও আজ নীল পড়েছে। কালো শার্টের ওপর নীল কোট আর নীল প্যান্ট। চুলগুলো জেল দিয়ে সেট করা ফর্সা গালে খোঁচা খোঁচা চাপ দাঁড়ি। অনেক হ্যান্ডসাম লাগছে আবার ক্রাশ খেলাম উনার ওপর।)
আকাশঃ(সামনে তাকাতেই দাঁড়িয়ে গেলাম। দুটো পরী দাঁড়িয়ে আছে সামনে। দুজনেই হালকা মেকআপ আর গ্রাউনে পরী লাগছে। একজন সাদা পরী আর একজন মায়া পরী। চাঁদ সবসময় সুন্দর করে সাজাতে পারে। হালকা সাজেই অসম্ভব সুন্দর লাগছে দুটোকে। ড্রেসটাও মানিয়েছে ভালো। আর মেঘলা,,,,,,,আমি মাঝে মাঝে কনফিউজড হয়ে যাই। কে বেশি সুন্দরী মেঘলা নাকি রুপ। খালি চোখে দেখলে রুপ আর গভীরভাবে দেখলে রুপের থেকে হাজারগুন বেশি সুন্দরী মেঘলা। ওর চোখ, নাক, গাল, ঠোঁট সব যেনো আলাদা সৌন্দর্য দিয়ে তৈরি।)
চাঁদঃ কী হলো ভাইয়া?? ভাবিকে দেখে হুঁশ উড়ে গেছে??হিহিহিহি
আকাশঃ হুম,,,,,, না মানে ভাবছি এই দুই পেতনী দেখে ফাংশন রেখে না সবাই ভয়ে পালায়,,,,,।
চাঁদঃ ভাইয়া,,,,,,,,,,,
আকাশঃ এই কানের পোকা মেরে ফেলবি নাকি?? এখন কাকের মতো কা কা না করে চল। নাহলে ফাংশনই শেষ হয়ে যাবে। (বেরিয়ে এলাম সবাই। মা আর চাঁদ পেছনে, মেঘলা আমার পাশে আর আমি ড্রাইভ করছি। সামনে পেছনে একটা করে গার্ডের গাড়ি। আগামীকাল থেকে সারাদেশ আবার চৌধুরী গ্রুব অব কোম্পানির নাম শুনবে। গার্ড বাড়াতে হবে, পুরনো শত্রুগুলো আবার মাথা চাঁড়া দেবে। গাড়ি ড্রাইভ করছি আর বারবার মেঘলার দিকে তাকাচ্ছি। ইচ্ছে করে না বারবার চোখ চলে যাচ্ছে।)
মেঘলাঃ (উনি বারবার আড়চোখে তাকাচ্ছে। কারণটা বুঝতে পারছি না। লজ্জাও করছে আবার অদ্ভুত চিন্তা মাথায় আসছে। যেমন মনে হচ্ছে উনি এটা ভাবছেন আমাকে ফাংশনে নিয়ে ভুল করছে কি না। কিন্তু চোখ দেখে তা মনে হচ্ছে না। কেমন যেন এই দৃষ্টি,,, যা আমার পরিচিত নয়। হঠাৎ গাড়ি থামতেই ভাবনা থেকে বেড়িয়ে এলাম।)
আকাশঃ নামো সবাই,, এসে পড়েছি।
মেঘলাঃ( এত মানুষ কেন?? লাইটের আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছে, কত সাংবাদিক,,, এসবের সাথে আমি অভ্যস্ত নই। আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে। আমরা গাড়ি থেকে নামতেই কিছু সাংবাদিক উনাকে ঘিরে ধরলো। আর গার্ডরা সবাইকে সরিয়ে ভেতরে যাওয়ার রাস্তা করে দিলো। ভেতরে ঢুকে সামনে তাকিয়ে আমি অবাক। একজনকে দেখে যেন কথা বলতে ভুলে গেছি। আজ তিনটা বছর পর এত আপন মানুষটাকে দেখছি)
আকাশঃ(মেঘলার দৃষ্টি অনুসরণ করে সামনে তাকাতেই মুখটা রাগে লাল হয়ে গেলো)
চলবে,,,,,,,,