#কালোবউ
লেখিকাঃ Tahmina Toma
কালোবউ পর্ব ১৮
আকাশঃ মা আগামীকাল বাড়িতে পার্টি আছে।
মাঃ কীসের পার্টি??
আকাশঃ কীসের পার্টি মানে?? বাবা যে পার্টি দিতো এওয়ার্ড ফাংশনের পরে সেই পার্টি।
মাঃ ওহ্ ঠিক আছে।
চাঁদঃ ওয়াও পার্টি???? কতদিন পর আবার পার্টি।
আকাশঃ কাল আর এ কলেজ যাবে না।
চাঁদঃ না,,,, যাবো তো,,,,, ফ্রেন্ডদের ইনভাইট করে চলে আসবো।
মাঃ মেঘলা তুইও তোর ফ্রেন্ডদের ইনভাইট করে আছিস। তোর বাড়ির সবাইকে আমি বলছি।
মেঘলাঃ কিন্তু মা,,,,,,,,,,,,
মাঃ কিন্তু কী আবার??
মেঘলাঃ কিছু না,,,,,,(খেয়ে সবাই যে যার রুমে চলে এলাম। সজীবকে বললে যদি আবার কোন ঝামেলা করে। আবার শুধু লিজাকে বললেও জানলে ঝামেলা করবে)
আকাশঃ কী ভাবছো??
মেঘলাঃ (উনাকে সজীবের কথা বলবো?? না না থাক আবার ওল্টো বুঝবে) কিছু না।
আকাশঃ তাহলে দাঁড়িয়ে আছো কেন?? ঘুমিয়ে পড়ো।
মেঘলাঃ হুমম,,,(সোফায় শুয়ে পড়লাম। উনিও বেডে শুয়ে পড়েছে। সকালটা প্রতিদিনের মতোই আযান শুনে শুরু হলো। আজকেও উনাকে ডেকে তুলতে হলো।)
আকাশঃ (প্রতিদিন একই সময় একই স্বপ্ন কেন দেখছি আমি?? কেন??)
মেঘলাঃ (ব্রেকফাস্ট করে যে যার কাজে চলে এলাম। সকাল থেকে বাড়ি সাজানো শুরু হয়ে গেছে)
চাঁদঃ ভাবি আগে আমার কলেজে চলো। ফ্রেন্ডদের বলেই চলে আসবো। তারপর তোমার সাথে তোমার ভার্সিটি যাবো।
মেঘলাঃ আচ্ছা ঠিক আছে।(চাঁদের কলেজে ওর ফ্রেন্ডদের ইনভাইট করে ভার্সিটি এসে লিজাকে ফোন দিলাম।) কোথায় তুই??
লিজাঃ বকুলতলায়,,, তুই??
মেঘলাঃ গেটের সামনে,,, (আসে পাশের ছেলেগুলো চাঁদের দিকে কেমন করে তাকিয়ে আছে) তুই বস আমি আসছি।
লিজাঃ ওকে
মেঘলাঃ (চাঁদকে নিয়ে বকুলতলায় গেলাম।) কেমন আছিস??
লিজাঃ এইতো,,, সাথে এই পিচ্চি পরী কে রে??
মেঘলাঃ ওর নামই চাঁদ,,,,
লিজাঃ ওয়াও এই পিচ্চিতো অনেক কিউট।
চাঁদঃ আমি একদম পিচ্চি না। ইন্টার ১ম বর্ষে পড়ি(গাল ফুলিয়ে)
লিজাঃ ও মা গাল ফুলিয়ে আরো কিউট লাগছে।
মেঘলাঃ হয়েছে তোর আর বলতে হবে না। সন্ধ্যায় বাসায় পার্টি আছে চলে আছিস।
লিজাঃ না রে ইয়ার তুই তো আব্বু কে চিনিস,, যেতে দেবে না।
মেঘলাঃ আমি আঙ্কেলের সাথে কথা বলে এসেছি আসার সময়। আঙ্কেল রাজি হয়েছে(মুচকি হেসে)
লিজাঃ সত্যি,,,,,,,,,,,,,,,
মেঘলাঃ হুম সত্যি,,, বিকেলের মধ্যে চলে আসবি।
লিজাঃ ওক্কে বেবী।
সজীবঃ আরে মেঘলা কখন এলি?? সাথে কে,,,,,,(মেয়েটার দিকে তাকিয়ে কথা বন্ধ হয়ে গেছে। এতো কিউট একদম ছোট্ট পরী। অনেক আটা ময়দা সুন্দরী দেখছি এমন ন্যাচারাল বিউটি দেখিনি। কে এই মেয়ে??)
মেঘলাঃ এইতো এখনই এসেছি?? সাথে আমার ননদ চাঁদনি।
সজীবঃ চেহারার সাথে নামের মিল আছে,,,,এতো চাঁদনী নয় পুরো চাঁদটাই(বিরবির করে)
মেঘলাঃ কিছু বললি,,?
সজীবঃ ক,,কই নাতো?? তা হঠাৎ ওকে নিয়ে এলি সাথে??
মেঘলাঃ ক্লাস করবো না শুধু তোদের ইনভাইট করতে এসেছি।
সজীবঃ ক,,,,কিসের ইনভাইট( এর বিয়ে নয়তো?? না না এই প্রথম সজীব মির্জার কাউকে দেখে প্রথম ভালোবাসার অনুভূতি নাড়া দিয়েছে এভাবে হারাতে পারে না। আর এত পিচ্চির বিয়ে হয় কীভাবে??)
মেঘলাঃ এমনি একটা পার্টি আছে বাসায়। সন্ধ্যায় চলে আছিস।
সজীবঃ(এতো মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি। বাট বাড়িতে কেউ বললো না কেন ইনভাইটেশন আছে?? সবার মুডও কেমন গম্ভীর বাড়িতে। তাতে আমার কী?? আকাশ চৌধুরীর বোন এতো সুন্দর জানাই ছিলো না।) ওকে চলে আসবো।
মেঘলাঃ ( ভার্সিটি থেকে চাঁদ শপিংমলে নিয়ে গেলো। দুজনে কিছু কেনাকাটা করে বাসায় চলে এলাম। বাসায় এসে দেখি বাবা- মা চলে এসেছে। ড্রয়িংরুমের সোফায় বসে আছে। দৌঁড়ে গিয়ে জরিয়ে ধরে কান্না করে দিলাম।) মা,,,
মেঘলার মাঃ আরে পাগলি কাঁদছিস কেন??
মেঘলাঃ কতদিন পর তোমাদের দেখলাম (আব্বাকে জড়িয়ে ধরে)
আব্বাঃ পাগলি একটা তাই এভাবে কাঁদতে হয়??
মেঘলাঃ ভাই কোথায়?
আব্বাঃ সন্ধ্যার আগে চলে আসবে। ওর অফিস আছে তো।
মেঘলাঃ আচ্ছা,,,,,,, তোমরা খেয়েছো???
আকাশের মাঃ না কিছু খেতে দেয়নি,,, তোর জন্য বসিয়ে রেখেছি।
মেঘলাঃ আমি তাই বললাম নাকি??(মাথা নিচু করে)
চাঁদঃ আসসালামু আলাইকুম আঙ্কেল-আন্টি,,, কেমন আছেন আপনারা ??
আব্বাঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম মা ভালো আছি।
মেঘলার মাঃ তুমি কেমন আছো??
চাঁদঃ আমি ভালো আছি।
আকাশের মাঃ তোরা যা ফ্রেস হয়ে নে।
মেঘলাঃ মা-আব্বা তোমরা বসে গল্প করো। আমি আসছি।
আব্বাঃ আচ্ছা যা,,,
মেঘলাঃ (রুমে এসে তাড়াতাড়ি ফ্রেস হয়ে নিচে গেলাম আবার। গল্প করতে লাগলাম মা আর আব্বার সাথে। লান্সের আগে উনি চলে এলেন। আমরা সবাই তখন ড্রয়িংরুমে গল্প করছি)
আকাশঃ(বাসায় এসে দেখি মেঘলার বাবা-মা চলে এসেছে) আসসালামু আলাইকুম বাবা-মা,,,,কেমন আছেন??
আব্বাঃ ওয়ালাইকুম আসসালম আমরা ভালো আছি বাবা তুমি কেমন আছো??
আকাশঃ ভালো আছি,, আচ্ছা আপনারা বসুন আমি ফ্রেস হয়ে আসছি। মেঘলা একটু এসো তো দরকার আছে।
মেঘলাঃ(চোখ বড়বড় করে তাকালাম। এর আবার কী হলো??)
আকাশঃ কী হলো আসো??
মেঘলার মাঃ তুই এখনো বসে আছিস কেন?? জামাই বাবাজী ডাকছে তো (বিরবির করে)
মেঘলাঃ হুম,,, আসছি(যতসব ঢং,,,এমনি ভালো করে কথা বলে না এখন সবার সামনে লজ্জায় ফেললো)
আকাশঃ (রুমে এসে ড্রেসিংটেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে টাই খুলছি আর মেঘলা দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আমার দিকে চোখ ছোটছোট করে তাকিয়ে আছে।) হোয়াট??
মেঘলাঃ আমাকে ডেকে আনলেন কেন??
আকাশঃ বাহ্ বেশ ভালো,,, বাবা-মাকে দেখে গলার স্বর চেঞ্জ হয়ে গেছে।
মেঘলাঃ ক,,,কই,,,,,, আমি জিজ্ঞেস করলাম ডাকলেন কেন??
আকাশঃ( শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে বললাম) ডেকে এনেছি যাতে তোমার মা-বাবা মনে করে আমি তোমাকে চোখে হারায়। (মুচকি হেঁসে)
মেঘলাঃ (কতবড় বদমাশ লোক) আপনি একটা রাক্ষস, ডেভিল, জিরাফ, গন্ডার, হাতি, গরু, মহিষ, তেলাপোকা, টিকটিকি, এনাকন্ডা, পঁচা ডিম, পঁচা আলো, পঁচা কুমড়া, সাতদিনের বাসি করলার তরকারি আর,,,,,
আকাশঃ আর (কী অদ্ভুত সব কথা না না এগুলোতো গালি দিচ্ছে তাও এমন অদ্ভুত। রাগ করার বদলে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি। এটা কী মেঘলা?? নাকি অন্য কেউ?? যে আমার সামনে কথা বলতে তোতলায় সে আমাকে এসব বলছে?? আমি শকড হয়ে গেছি। ওর সামনে এসে দাড়ালাম) আর কী??
মেঘলাঃ আর,,, আর,,,,, এখন মনে পড়ছে না। সব কিছুর একটা লিমিট আছে। আপনি আমার সাথে কী শুরু করেছেন?? যা ইচ্ছে বলবেন যা ইচ্ছে করবেন। আমি কী খেলনা পুতুল?? যদি যোগ্য মনে না হয় বিয়ে কেন করেছেন??
আকাশঃ এত রাগ,,,??(আজ কেন জানি না ওর কথায় রাগ হচ্ছে না ভালো লাগছে। এতদিন মনে হয়েছে মাটির পুতুল বিয়ে করেছি। ভেঙে ফেললেও কিছু বলবে না। এমন মানুষ ভালোলাগে বলেন??) আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই করেছি।
মেঘলাঃ আবার ইচ্ছে হলে তাড়িয়েও দেবেন। আপনি তাড়িয়ে দিলে সমাজের কথা আর সয্য করতে পারবো না আমি। মরা ছাড়া উপায় থাকবে না।
আকাশঃ মেঘলা,,,,,,,,(শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। ওকে হারানোর কথা ভাবতেও আমার দম বন্ধ হয়ে আসে)
মেঘলাঃ (উনি জড়িয়ে ধরায় আমার হুঁশ ফিরলো। রাগের মাথায় আজ কীসব বলে দিয়েছি। এখন ভয়ে দম বন্ধ হয়ে আসছে। কী আছে কপালে আল্লাহ জানে??)
চলবে,,,,,
লেখার টাইম পাইনি তাই যতটা লিখতে পেরেছি সেটাই দিলাম সরি আপু/ভাইয়ারা