.
লেখিকাঃ Tahmina Toma
কালোবউ পর্ব ২০
আবিদঃ আবিদা,,,,,রুপ,,,,,,,
মেঘলাঃ (গার্ডেনে যে যার মতো এনজয় করছে। বাবা, মা, মামা, আকাশের মা আর রুপ আপু বাসায় ড্রয়িংরুমে কথা বলছে। ভাইয়ের আর যাওয়া হয়নি। গার্ডেনের এক পাশে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। আকাশ গেস্টদের সামলাচ্ছে,,,,, আমি আর লিজা দাঁড়িয়ে সব দেখছি)
মাহিনঃ(আব্বার মতো ভুল আমি করবো না। মা হয়তো খুশি ছিলো আব্বাকে পেয়ে। কিন্তু প্রতিনিয়ত কষ্ট পেত তার পরিবারের জন্য। আড়ালে অনেক কাঁদতো। আমি চাই না চাঁদ আমার এক মাসের ভালোবাসার জন্য তুমি তোমার পরিবারের ১৭ বছরের ভালোবাসা ফেলে এসো। আমাকে তুমি একসময় ঠিক ভুলে যাবে। আকাশের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লাম। গরীবের জন্য ভালোবাসা বিলাসিতা ছাড়া কিছু না।)
চাঁদঃ কী করছেন মাহিন??
মাহিনঃ মাহিন,,,,??? মাহিন ভাইয়া থেকে সোজা মাহিন?? আমি তোমার থেকে ৪ বছরের বড়,,, তুমি আমাকে নাম ধরে ডাকছো??
চাঁদঃ নিজের জামাইকে কেউ ভাইয়া বলে??
মাহিনঃ চাঁদ তুমি কিন্তু এবার বাড়াবাড়ি করছো,,
চাঁদঃ বাড়াবাড়ি করছি নাকি কম কম করছি সেটা পড়ে দেখা যাবে এখন চলুন ডান্স করবো।
মাহিনঃ আমি ডান্স করতে পারি না।
চাঁদঃ পাড়তে হবে না চলুন,,,,,
মাহিনঃ আরে,,,,,,,,,,,(জোড় করে টেনে এনে আমার চারপাশে ঘুরে ডান্স করছে। এমন করলে আমি কী করে শক্ত করবো নিজেকে??)
সজীবঃ may i dance with you??(মেঘলার দিকে হাত বাড়িয়ে)
মেঘলাঃ(অবাক হয়ে একবার সজীবের দিকে তাকাচ্ছি আর একবার লিজার দিকে) আ,,,,মি
সজীবঃ আরে চলতো,,,,,,,,
মেঘলাঃ (আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে হাত ধরে টেনে নিয়ে ডান্স করতে লাগলো) সজীব ছাড় আমাকে আমি ডান্স করবো না।
সজীবঃ আরে ইয়ার শুধু ডান্সইতো করতে বলছি প্রেম করতে তো বলিনি।
মেঘলাঃ সজীব আমার এসব ভালো লাগে না ছাড়,,,,
সজীবঃ (আমার আবার কোথায় ভালো লাগছে তোর সাথে ডান্স করতে?? যার সাথে করতে চেয়েছি তার সাথে তোর ভাই করছে। আমিও নাহয় খেলাটা শুরুই করে দি। প্রথমে তোর সংসারে আগুন লাগাবো তারপর তোর ননদ আর ভাইয়েরা মনে। ভেবেছিলাম অপমানের কথা ভুলে তোর স্বামীর ভুল ভাঙাই দিবো কিন্তু তোর ননদ সেটা করতে দিলো কই। এখন আমার বুকে যে আগুন জ্বলছে সে আগুনে সবাই পুড়বি।)
,,,,,,,,,,সজীবের সাথে মালটা কে রে??
,,,,,,,,,আরে ওটা আকাশ চৌধুরীর বৌ। কালো হলে কী হবে ফিগার দেখেছিস,,,,,,,একদম মাখন ???
,,,,,,,,,সজীবের এক্স ওটা। আকাশ চৌধুরীর টাকা বেশি তাই সজীবকে ছেড়ে আকাশ চৌধুরীকে ধরেছে।
,,,,,আর এখন পুরনো ভালোবাসা জেগে ওঠেছে।
আকাশঃ (চোখের সামনে সজীব আর মেঘলা ডান্স করছে। আর পাশ থেকে সজীবের বন্ধুরা এসব কমেন্ট করছে। ইচ্ছে করছে সবকটাকে পুতে ফেলি। সজীব মেঘলাকে ছুয়ে ডান্স করছে সেটা চোখের সামনে দেখে আর এসব শুনে নিজেকে ঠিক রাখা পসিবল না। হাতের জুসের গ্লাসটা ভেঙে গেছে হাতের চাপে। তোকে বলেছিলাম মেঘলা আমি ছাড়া অন্যকেউ তোর একটা লোম স্পর্শ করলেও খুব খারাপ হয়ে যাবে। কথাটা তোর মাথায় ঢুকেনি আজ খুব ভালো করে বুঝিয়ে দেবো আমার কথা অমান্য করার ফল। এখন এদের কিছু করলে সিনক্রিয়েট হবে)
মাহিনঃ(অনেক হয়েছে এখানে আর থাকা পসিবল না। চাঁদকে সরিয়ে চলে এলাম)
আকাশঃ মাহিন,,,,,,
মাহিনঃ হ্যাঁ ভাইয়া,,,,,,,
আকাশঃ পার্টির বাকিটা তুমি একটু সামলে নাও। আমার একটা কাজ পড়ে গেছে।
মাহিনঃ (এরা ভাইবোন আমাকে পাইছেটা কী?? যেতেই পারছি না এখান থেকে) ওকে ভাইয়া।
আকাশঃ হুম,,,,,(লিজার সামনে গিয়ে) লিজা সবাই ডান্স করছে তুমি এখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন??
লিজাঃ এমনি ভাইয়া,,
আকাশঃ চলো আমার সাথে,, আমরাই নিরামিষ হয়ে দাঁড়িয়ে আছি( লিজাকে কিছু বলতে না দিয়ে ডান্স করতে শুরু করলাম। সজীব পার্টনার চেঞ্জ করছে না,,, একবার ঘুরানোর সময় লিজা গেলো সজীবের কাছে আর মেঘলা আমার কাছে) খুব ভালো লাগে পুরুষ মানুষের স্পর্শ। আমি স্পর্শ করিনি বলে অন্যকারো স্পর্শ পেতে চলে এসেছিস??(বাজেভাবে টাচ করছি আর বলছি)
মেঘলাঃ (উনার কথা শুনে নিজের ওপর ঘেন্না হচ্ছে। আমি কী এত নিচ?? দাঁতে দাঁত চেপে উনার স্পর্শ সয্য করার চেষ্টা করছি। অনেক পেইনফুল স্পর্শ করছে ব্যাথা পাচ্ছি। উনার দিকে তাকাতেও ভয় হচ্ছে। রাগে পুরো মুখ লাল হয়ে গেছে ভয়ংকর লাগছে দেখতে।)
আকাশঃ এখন কেন কথা বলছিস না?? মানা করেছিলাম তোকে আমি ছাড়া তোর একটা লোমও যেন কেউ স্পর্শ করতে না পারে আমার কথা তোর মাথায় ঢুকেনি। ডান্স করতে চলে এসেছিস পুরনো প্রেমিকের সাথে??
মেঘলাঃ কী,,,,বলছেন কে পুরনো প্রেমিক??
আকাশঃ চুপপপপ,, একটা কথাও বলবি না। আজ আমিও দেখবো তোর কত স্পর্শ লাগে। চল,,,,,
মেঘলাঃ ক,,,কোথায় যাবো??? কী সব বাজে বকছেন???
আকাশঃ চুপপপপ( চোখ গরম করে মেঘলার দিকে তাকিয়ে) একটা কথাও বলবি না।(এতক্ষণ অনেক কষ্টে রাগ কন্ট্রোল করে রেখেছি আর পারছি না। মেঘলার হাত ধরে টেনে গাড়ির দরজা খুলে গাড়ির ভেতরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে আমিও ওঠে পরলাম) সিটবেল লাগা,,,,
মেঘলাঃ (কাঁপা হাতে সিটবেল লাগিয়ে নিলাম। কোথায় নিয়ে যাচ্ছে উনি??)
আকাশঃ(রাগে ইচ্ছে করছে খুন করে ফেলি। ফুল স্প্রিডে গাড়ী চালাচ্ছি মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে ফার্মহাউসে চলে এসেছি। এখানে শুধু দারোয়ান আর কেয়ারটেকার থাকে এখন। গাড়ি থেকে নেমে মেঘলার হাত ধরে টেনে আমার রুমে নিয়ে এসে বেডে ছোঁড়ে দিলাম)
মেঘলাঃ (নিজেকে কোরবানির গরু মনে হচ্ছে। টেনে হিঁচড়ে নিয়ে এসে বেডে ফেলেছে) কী করেছি আমি?? এখানে কেন এনেছেন??
আকাশঃ তোর যাতে কষ্ট করে আর পুরনো প্রেমিকের কাছে যেতে না হয় তার ব্যবস্থা করতে।
মেঘলাঃ Enough is enough ,,,,,, নিজেকে কী মনে করেন আকাশ চৌধুরী?? আপনি যা বলেন আপনি যা করেন তাই ঠিক আর দুনিয়ার সবাই ভুল। সেই গতকাল থেকে শুরু করেছেন পুরনো স্পর্শ, পুরনো প্রেমিক। কে পুরনো প্রেমিক?? কীসের পুরনো প্রেমিক?? আমি আপনাদের মতো সোসাইটি থেকে বড় হয়নি। হাজারটা প্রেম করে বেড়াবো। ছোটবেলা থেকে মানুষের কথা শুনে শুনে বড় হয়েছি। পরিবারের মানুষ ছাড়া সবাই বাকা চোখে তাকাতো। বাবা-মা, ভাই সবাই সুন্দর এই মেয়ে কার মতো হয়েছে?? বাবা-মা বিয়ে দিবে কী করে?? বাবারতো টাকাও নেই যৌতুক দিয়ে বিয়ে দেবে। ছোটবেলা থেকে এসব শুনে নিজের মধ্যে গুটিয়ে গিয়েছিলাম। আব্বা সবসময় বলতো লেখাপড়া করে অনেক বড় হতে হবে তোমাকে। তখন আর কেউ বলবে না মেঘলা কালো,,, তখন বলবে মেঘলা অনেক বড় মানুষ হয়েছে,,, । সেটা মাথায় ঢুকিয়ে নিয়েছিলাম। পড়ালেখা ছাড়া কোনদিকে তাকালামও না। কিন্তু আমার এত শান্তস্বভাবও যেন মানুষের চোখের কাটা হয়ে গেছে। ভার্সিটি ক্রাশবয়ের টার্গেট হতে হলো। আমার সাথে প্রেমের অভিনয় করে তারপর ব্রেকআপ করে ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়ার প্লান আমার অহংকার। তার দিকে তাকাইনি সেটা নাকি আমার অহংকার। ভালো বন্ধুর মুখোশ পড়ে তার প্লান সাকসেসফুল করতে শুরু করে দিলো। কিন্তু তার দুর্ভাগ্য অথবা আমার সৌভাগ্য আমি আগেই সব জেনে গেছি। কিন্তু বন্ধুত্বের সম্পর্কটা আমার কাছে অনেক দামী সেটা বিষিয়ে দিয়েছে। আর তার মধ্যেই আমার মায়ের অতিরিক্ত বাস্তবতাবাদী স্বভাব আমার ভাগ্য আপনার সাথে জোরে দিলো। তো এখন বলেন মিস্টার আকাশ চৌধুরী কোথায় পেলেন আমার প্রেমিক??
আকাশঃ তাহলে সজীব মির্জা কে??
মেঘলাঃ যার টার্গেট হতে হয়েছিলো,,,,
আকাশঃ তাহলে এই ছবিগুলো কী মিথ্যা?? এগুলোতো এডিট করা না আমি যাচাই করে দেখেছি। (মেঘলার সামনে ফোন ঢিল দিয়ে)
মেঘলাঃ (ফোনে আমার আর সজীবের অনেক ছবি। কখনো সজীব আমাকে ফুসকা খাইয়ে দিচ্ছে, আমি ওকে দিচ্ছি, পার্কে বসে বাদাম খাচ্ছি, পাশাপাশি হাঁটছি, লাস্ট ছবি গতকাল আমি পড়ে যাচ্ছিলাম আর সজীব আমার কোমর ধরে আটকেছে সেটা। কিন্তু একটা ছবিতেও লিজা নেই। কিন্তু এই প্রত্যেকটা সময়ে লিজা আমাদের সাথে ছিলো। সজীব লিজাকেও খাইয়ে দিয়েছে। ছবিগুলো দেখলে যে কেউ বলবে আমরা প্রেমিক প্রেমিকা এমন এঙ্গেলে তোলা।)
আকাশঃ এগুলো মিথ্যা?? (রেগে ধমক দিয়ে)
মেঘলাঃ প্রত্যেকটা ছবি সত্যি। আমার কাছেও কিছু ছবি আছে সেগুলো দেখুন। (আমার ফোনটা এগিয়ে দিলাম)
আকাশঃ (এই ছবিগুলোতে সজীব মেঘলা আর লিজা। প্রত্যেকটা সময় লিজা আছে। সজীব লিজাকে ফুসকা খাইয়ে দিচ্ছে যেমন মেঘলাকে দিয়েছে। তবে কী আমি যা জেনেছি সব ভুল???)
মেঘলাঃ আপনি যে শেষ ছবি দেখিয়েছেন সেটা গতকাল হোঁচট খেয়ে পড়ে যাচ্ছিলাম সজীব ধরেছে। আজ আমি ইচ্ছে করে ওর সাথে ডান্স করতে যাইনি জোর করে নিয়ে গেছে। লিজার থেকে জেনে নিয়েন।
আকাশঃ (মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লাম সোফায়। এতদিন আমি যা জেনেছি সব মিথ্যা। আর এই মিথ্যাকে বিশ্বাস করে মেঘলাকে কষ্ট দিয়েছি। ক্ষমা করবেতো মেঘলা আমাকে। সামান্য একটা বিষয় খোঁজে বের করতে পারলাম না। ভার্সিটির যাকেই জিজ্ঞেস করিয়েছি সবাই বলেছে মেঘলা সজীবের প্রেমিকা। মেঘলা সজীবের থেকে ধনী ছেলে পেয়ে বিয়ে করে নিয়েছে,,,,,,,, এক মিনিট বিয়ের সময়তো মেঘলা আমার আসল পরিচয়ই জানতো না। জানবে কীভাবে আমি সজীবের থেকে ধনী??এটা আমার মাথায় আসেনি। আজ কথাটা সত্যি বুঝতে পারছি রাগলে মানুষের বুদ্ধি লোপ পায়। কী বলবো এখন মেঘলাকে?? ওকে করা অপমানগুলো চোখের সামনে ভাসছে।) মেঘলা,,,,,
মেঘলাঃ থাক আর বলতে হবে না। আমি জানি না মিথ্যা বলে কেন বিয়ে করেছিলেন?? কিন্তু আমার জায়গাটা দেখিয়ে দিয়েছেন প্রতিনিয়ত,,,,,,
আকাশঃ (মেঘলাকে আর বলতে না দিয়ে বলতে শুরু করলাম) বাবা চলে যেতেই সব কেমন ওলট পালট হয়ে গেছে। জানো আগে গরীবদেরকে একদমই সয্য করতে পরতাম না। বাবা তাদের খুব ভালোবাসতো। বাবা মায়ের খুব আদরের ছিলাম। কথায় আছে না বেশি আদরে বাদর হয়। কিছু চাওয়ার আগেই পেয়ে যেতাম। পড়াশোনায় বরাবরই টপ ছিলাম কিন্তু কলেজে ওঠে কেমন একটু একটু করে বদলে যেতে থাকলাম। পড়াশোনা বাদ দিয়ে সারাদিন বন্ধুদের সাথে আড্ডা ঘুরাঘুরি এসব করতাম। ইন্টার প্রথম বর্ষে টপ করা ছাত্র টেনেটুনে পাশ। বাবার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়লো। খবর নিয়ে দেখে পড়াশোনা বাদ দিয়ে এসব করছি। লন্ডন পাঠানোর সব ব্যবস্থা করে ফেললো। আমি যাবো না,,,,,, বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলাম বাবা গার্ড দিয়ে তুলে আনলেন। জোর করে পাঠিয়ে দিলেন লন্ডন। আমিও জেদ করে পড়াশোনা শুরু করলাম আবার। বিজনেসের ওপর পিএইচডি করে দেশে ফিরলাম। এবার আর বাবা কন্ট্রোল করতে পারেনি। বাবার ওপর রাগ করে আবার যা ইচ্ছে তাই করতে লাগলাম। পার্টি, ঘুরাঘুরি, বন্ধুদের সাথে আড্ডা এসব নিয়েই থাকতাম। একদিন আমার বন্ধু বিজয়ের বাড়ি গিয়ে প্রথম দেখি রুপকে। বিজয়ের ছোটবোন বেলি’র বান্ধবী,,,,,
মেঘলাঃ রুপ আপু,,,
আকাশঃ হুম রুপ,,,,, ভালো লেগে গিয়েছিলো প্রথম দেখেই। রুপেরও হয়তো ভালো লেগেছিলো আমায়। কথা বলতে বলতে একসময় প্রপোজ করলাম। রাজিও হয়ে গেলো। শুরু হলো আমাদের প্রেম। রুপ যা চাইতো চাওয়ার সাথে সাথে পেয়ে যেতো। শপিং যেতে চাইলে ক্রেডিটকার্ড দিয়ে দিতাম। সব ঠিকঠাকই চলছিলো,, হঠাৎ বাবার মৃত্যু সব পাল্টে দিলো। বাবা মারা যাওয়ার পরদিন একজন ফোন দিয়ে বললো রুপ নাকি রেস্টুরেন্টে রবিন মির্জার সাথে ডেটিং করছে। সেখানে গিয়ে দেখি হাত ধরে বসে আসে দুজন। রবিনকে কলার ধরে তুলে থাপ্পড় দিতে গেলে রুপ হাত ধরে ফেলে। আমি চৌধুরী বাড়ির যোগ্য উত্তরাধিকারী হতে পারিনি। বাবার টাকায় ফুটানি করতাম, বাবা নেই এখন আমার দু’টাকার দামও নেই এমন অনেক কথা শুনায় আমাকে হয় ভরা রেস্টুরেন্টে। সবাই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মজা দেখছিলো। তিন দিন আগে যে আকাশ চৌধুরীর নাম শুনলে মাথা তুলার সাহস হতো না সেদিন সেই আকাশ চৌধুরীর ওপর সবাই হেসেছে। মা গিয়েছিলো রুপের সাথে কথা বলতে তাকেও অপমান করেছে। ঘুরে দাড়ালাম আবার। এখন আর সেই অহংকারী আকাশ চৌধুরী নেই। সময় বুঝিয়ে দিয়েছে ধনী হতে সময় লাগে রাস্তায় নামতে সময় লাগে না। এখন বাবার মতোই ভালোবাসি গরীবদের। কিন্তু প্রতিশোধের আগুন বুকে দাউদাউ করে জ্বলছিলো। নিজের অপমান মেনে নিলেও জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান,,, আপন মানুষ মায়ের অপমান কীভাবে মেনে নিবো??
মেঘলাঃ (উনি রুপ আপুকে ভালোবাসতো। চোখের পানি বাঁধ মানছে না এসব শুনে।)
আকাশঃ রুপের সবচেয়ে দূর্বল জায়গা হচ্ছো তুমি। ওর সামনে তোমাকে অপমান করলে বুঝতে পারবে আপনজনের অপমান কতটা কষ্ট দেয়। তোমার জীবন নষ্ট হওয়ার জন্য নিজেকে অপরাধী মনে করে তিলেতিলে শেষ হয়ে যাবে এটা চেয়েছিলাম। কিন্তু তোমার সামনে এলে সব ভুলে যেতাম। ইচ্ছে করতো না তোমাকে কষ্ট দিতে। তাই ভেবে নিয়েছিলাম তোমাকে কষ্ট দেবো না অন্যভাবে প্রতিশোধ নেবো কিন্তু সেদিন অফিসে এই ছবি আর একটা চিঠি আসে। যাচাই করে দেখি সব সত্যি। তুমিও ধোকা দিয়েছো আমাকে তাই রুপের থেকে বেশী তোমার ওপর রাগ ওঠে গিয়েছিলো। তাই এত অপমান এত কিছু করেছি।
মেঘলাঃ বাহ্ মাস্টার প্লান। আমার দোষটা কোথায় ছিলো বলতে পারেন?? রুপ আপুর দূর্বল জায়গা বলে আমাকে বেছে নিলেন। একবার ভাবলেন না বিনা দোষে আমার জীবনটা শেষ হয়ে যাবে। পাহাড়ের কিনারায় দাঁড়িয়ে ছিলাম আপনি ধাক্কা দিয়ে ফেলেই দিলেন।
আকাশঃ মেঘলা আমার কথাটা শুনো,,,,,,
মেঘলাঃ আর কিছু শোনার নেই। আপনার প্লান সাকসেসফুল হয়েছে। সবার সামনে অপমান করে আপনার আর আপনার মায়ের অপমানের বদলা নিয়েছেন। কিন্তু অপমানটা কী আমি করেছিলাম? কেউ ভালোবাসে না আর যে ভালোবাসলো তার ভালোবাসা আজ আমার কাল হলো। আমার সাথেই এমন কেন হয় বলুনতো। আপনি সাকসেসফুল,,, আমার জীবন নষ্ট হওয়ার জন্য আপু নিজেকেই দায়ী করবে। এবারতো অন্তত আমার মুক্তির সময় হয়েছে তাইনা মিস্টার আকাশ চৌধুরী।
আকাশঃ মানে?????
চলবে,,,,,,,